বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘকে AIUDF-এর চিঠি

বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘকে AIUDF-এর চিঠি

অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (AIUDF) প্রধান বদরুদ্দিন আজমল বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংখ্যালঘুদের জীবন, সম্পত্তি এবং ধর্মীয় স্থান রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। আজমল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দোষীদের কঠোর শাস্তির মাধ্যমে ভবিষ্যতের সহিংসতা প্রতিরোধের দাবি জানিয়েছেন।

গৌহাটি, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪: অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (AIUDF) প্রধান এবং তিনবারের সাংসদ মৌলানা বদরুদ্দিন আজমল রবিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারকে চিঠি লিখে বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের প্রতি চলমান সহিংসতা এবং নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংখ্যালঘুদের জীবন, সম্পত্তি এবং ধর্মীয় স্থান রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

চিঠিতে আজমল অভিযোগ করেন যে কিছু গোষ্ঠী হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের সরকার যথাযথ নিরাপত্তা দিতে পারছে না। তিনি লিখেছেন, “এই চলমান সংকট শুধু হিন্দু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ফেলছে না, বরং তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রেখে দিচ্ছে। শিশুদের বেড়ে ওঠা এমন একটি পরিবেশে হচ্ছে যেখানে তাদের প্রতিনিয়ত ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে হচ্ছে।”

আজমল আরও বলেন, “এই ধরনের কার্যকলাপ মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। তারা প্রতিনিয়ত হুমকির মধ্যে বসবাস করছে, যা একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”

AIUDF নেতার মতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত অবিলম্বে পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জীবন এবং তাদের ধর্মীয় স্থান সুরক্ষিত করা। তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারকে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে, যাতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং দোষীদের যথাযথ শাস্তি দেওয়া হয়।

আজমল আরও বলেন, “মানবাধিকারের সুরক্ষা সব দেশের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। এই অপরাধের দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হলে ভবিষ্যতে সহিংসতা রোধ করা সম্ভব হবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।”

এছাড়াও, চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংহতি এবং সমর্থন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আজমল আশা প্রকাশ করেন যে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের সরকারের সাথে কাজ করে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবে।

এই চিঠির মাধ্যমে বদরুদ্দিন আজমল দক্ষিণ এশিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চান। তিনি উল্লেখ করেন যে, এটি শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব রয়েছে যাতে প্রতিটি মানুষের অধিকার রক্ষিত হয়।

আজমলের চিঠি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন এবং মানবাধিকার কর্মীরা এই চিঠির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য আওয়াজ তুলেছেন।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আজমলের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত করবে।

আজমল চিঠির শেষে উল্লেখ করেছেন যে, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই চিঠির মাধ্যমে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পক্ষে দাঁড়াবে এবং তাদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”

তারিখ: ৩০.১২.২০২৪