পাবনায় ফেসবুকে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে হিন্দু তরুণ গ্রেপ্তার

পাবনায় ফেসবুকে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে হিন্দু তরুণ গ্রেপ্তার

পাবনার চাটমোহরে ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে প্রশান্ত কুমার সাহা (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানার পর প্রতিবাদে মিছিল করে এবং বল্লভপুরের মহাদেব মন্দিরে হামলা চালায়। এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মন্দিরে হামলার ঘটনায় সেবায়েত বাসুদেব গোস্বামী অজ্ঞাতনামা ২০০–২৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত প্রশান্তকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

পাবনা, ১২ নভেম্বর ২০২৪: পাবনার চাটমোহরে ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে প্রশান্ত কুমার সাহা (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতের দিকে পাবনার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রশান্ত কুমার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন হোসেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মামলাটি করেন, যা দণ্ডবিধির ২৯৫, ২৯৫ (ক) ও ১৫৩ ধারায় দায়ের করা হয়।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম জানান, প্রশান্ত কুমারের ফেসবুক পোস্টের পর বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার এজাহার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতে প্রশান্ত কুমার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দেন, যা স্থানীয়দের মাঝে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে রোববার রাতে স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল বের করে এবং বল্লভপুরের সর্বজনীন মহাদেব মন্দিরে হামলা চালায়। এ সময় মন্দিরে কিছু প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে, যা সেখানকার পরিবেশে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হামলায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করে।

স্থানীয়দের উত্তেজনা প্রশমনে আটকদের পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা ফাঁড়ি ঘেরাও করে তাঁদের মুক্তির দাবি জানায়। একপর্যায়ে আটক ব্যক্তিদের ছেড়ে দিলে জনতা শান্ত হয় এবং চলে যায়। চাটমোহর উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার দত্ত জানান, একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে পুরো ঘটনার সূত্রপাত হয়। পোস্টটি করা প্রশান্ত ঢাকায় থাকেন, তবে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে প্রতিবাদ করেন এবং মন্দিরে হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।

এদিকে, মন্দিরে হামলার ঘটনায় চাটমোহর থানায় সেবায়েত বাসুদেব গোস্বামী অজ্ঞাতনামা ২০০–২৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন।

ওসি মনজুরুল আলম জানান, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তারিখ: ১৩.১১.২০২৪