বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ তুলেছে। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সনাতন সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের প্রতিবাদ জানায়। একই সঙ্গে ইসকন সম্পর্কে অপপ্রচার এবং চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকার সমালোচনা করা হয়। পরিষদ আট দফা দাবি তুলে ধরে, যার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
ঢাকা, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪: দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনা অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ। শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে সনাতন সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার আচার্য। তিনি জানান, “ইতিহাসে বহুবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন হয়েছে, কিন্তু এর কোনো সুষ্ঠু প্রতিকার পাওয়া যায়নি। ফলে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নির্যাতিতরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন, যা সামাজিক সম্প্রীতিকে হুমকির মুখে ফেলছে।”
লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, ইসকনকে সনাতন ধর্মাদর্শ থেকে আলাদা করার উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। পরিষদ বলেছে, “ইসকন সনাতন ধর্মের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার সনাতন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা।”
পরিষদের নেতারা সরকারকে ইসকনবিরোধী উসকানিমূলক প্রচারণার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, “সরকার যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে এর দায় সরকারের ওপরই বর্তাবে।”
চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে সাম্প্রতিক ঘটনার প্রসঙ্গে পরিষদ সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে উল্লেখ করে। তাদের মতে, এই ভূমিকা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা সঞ্চারে ব্যর্থ হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সভাপতি হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন সহসভাপতি অশোক তরু, প্রধান সমন্বয়ক শ্যামল রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়, মানিক চন্দ্র সরকার, এবং বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায়।
পরিষদ দাবি করে, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে নাগরিক জীবনে স্থায়ী ক্ষতির সৃষ্টি হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, যেন সব সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
তারিখ: ১৭.১১.২০২৪