ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দের প্রয়োজন নেই: বাংলাদেশ সরকারের সওয়াল

ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দের প্রয়োজন নেই: বাংলাদেশ সরকারের সওয়াল

বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি বাদ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, দেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা উচিত। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে তিনি মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন তুলেছেন। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

ঢাকা, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের জন্য হাইকোর্টে সওয়াল করা হয়েছে। এ সংশোধনীতে ২০১১ সালে শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলোর মধ্যে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবারের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দের আর প্রয়োজন নেই।

ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশিস রায়চৌধুরীর বেঞ্চে শুনানি চলাকালে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘‘দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। সংবিধানের মূল আস্থা এবং বিশ্বাস আল্লাহর প্রতি স্থাপন করা উচিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোতে আঘাত করা হয়েছে।’’

২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে ধর্মনিরপেক্ষতাসহ ‘জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র এবং গণতন্ত্র’ পুনর্বহাল করা হয়েছিল। এটি বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালের সংবিধানের মূল নীতিগুলোর অংশ ছিল। তবে জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং জেনারেল হুসেন মুহম্মদ এরশাদের আমলে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয়, যা ধর্মনিরপেক্ষতার উপর প্রভাব ফেলে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘‘আমরা চাই সংবিধানে আল্লাহর প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। এটি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিশ্বাস ও মানসিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’’ তিনি আরও জানান, পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বাতিল করা হয়েছিল, যা তিনি মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেন।

ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে সমালোচনার মধ্যে, আদালত বিষয়টি নিয়ে শুনানি চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দেশের সংস্কৃতি, ধর্ম এবং সমাজের বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করাই সংবিধানের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

শুনানির রায় এবং সংবিধানের ভবিষ্যৎ পরিবর্তন দেশের রাজনীতি ও সমাজে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

তারিখ: ১৫.১১.২০২৪