ওয়াশিংটন, ৮ অক্টোবর: যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সময় তাদের অধিকার সুরক্ষিত দেখতে চায়। সম্প্রতি, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ বেড়েছে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তার দেশত্যাগের পর থেকে। এ প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত উভয়েই বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত উভয়েই বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবগুলো শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে পারে।
বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সময় তাদের সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সম্প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে, বিশেষ করে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তার দেশত্যাগের পর থেকে। এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্র চায় যে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করা হোক।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা চাই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত হোক, যেভাবে সারা বিশ্বেই সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা চাই।” তিনি আরও জানান যে, ধর্মীয় মৌলবাদীদের দ্বারা হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর যে হুমকি সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।
এই বক্তব্যটি এমন একটি সময়ে এসেছে, যখন বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় তাদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা উদযাপন করছে এবং বিভিন্ন এলাকায় পূজা মণ্ডপে আক্রমণ ও নিরাপত্তার অভাব দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতায় অন্তত ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও রয়েছেন।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তার দেশত্যাগের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠেছে। সাময়িক সরকার গঠনের পর থেকে, দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ বেড়ে গেছে এবং সহিংসতার মাত্রা বাড়ছে। সাময়িক সরকারের প্রধান, ড. ইউনুসের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান যে, তারা যেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শন করে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
ভারতও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবগুলো যেন শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যাতে তারা নির্ভয়ে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারে।
এদিকে, বাংলাদেশে ধর্মীয় সহিংসতার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ বেড়ে গেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশে সহিংসতায় ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও রয়েছেন। তবে, এখনো পর্যন্ত এই সহিংসতায় জড়িত কাউকেই বিচারের আওতায় আনা হয়নি। এটি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক এবং উদ্বেগের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলের দাবি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নির্যাতন এবং সহিংসতা চলছে, তা বন্ধ করা এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ধর্মীয় সহিংসতা এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার কারণে হিন্দু সম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারছে না। অনেক পূজা মণ্ডপে আক্রমণ হয়েছে, মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়েছে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত উভয়েই বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবগুলো শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে পারে।
সূত্র: প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া
তারিখ ০৯.১০.২০২৪