ঢাকা, ৮ অক্টোবর: বাংলাদেশ সরকার দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সাধারণত একদিনের ছুটি থাকলেও, এবার তা বাড়িয়ে দুই দিন করা হয়েছে, যার সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো মিলিয়ে মোট চার দিনের ছুটি থাকবে। এই ঘোষণা হিন্দু সম্প্রদায়ের আট দফা দাবির প্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও করেছে। সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে পূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, এবং বিভিন্ন স্তরে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু উদযাপনের আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার এ বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার দুর্গাপূজার জন্য মোট চার দিন ছুটি থাকবে, যা আগে ছিল একদিন। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯ শতাংশ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। কিন্তু সম্প্রতি দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। আগস্ট মাসে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিলে, হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন।
এই অতিরিক্ত ছুটির ঘোষণা হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে উত্থাপিত আট দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে। আজাদ বলেন, “এতদিন বাংলাদেশে দুর্গাপূজার জন্য কেবল একদিন ছুটি ঘোষণা করা হতো, কিন্তু এবার দুই দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং এর সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে মোট চার দিন ছুটি থাকবে।”
আজাদ আরও জানান, এই অতিরিক্ত ছুটি কার্যকর করা হবে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে, যা আজই জারি করা হবে। তিনি বলেন, “সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগস্ট মাসে পরিবর্তনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ফলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।”
সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দুর্গাপূজা চলাকালীন সকল প্রকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সতর্ক থাকতে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উত্তেজনাপূর্ণ বা বিভেদমূলক বক্তব্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। পূজা উদযাপন কমিটিগুলোকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে মণ্ডপগুলো সার্বক্ষণিক তদারকির আওতায় থাকে।
এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে মন্দির ও মণ্ডপের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়লেও, সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে এবং আশ্বাস দিয়েছে যে, কোনো ধরনের আক্রমণ সহ্য করা হবে না। ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেন বলেছেন, “যারা ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের দেশের সকল সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকার রক্ষার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
অন্যদিকে, হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে। তাদের আশা, অতিরিক্ত ছুটি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে তারা এবার শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারবেন।
সূত্র: নিউজ ডেস্ক
তারিখ ০৯.১০.২০২৪