ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে পেট্রলবোমা হামলা এবং সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে স্বর্ণের মুকুট চুরির ঘটনায় ভারতের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই হামলা ও চুরির ঘটনা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থানগুলোতে পরিকল্পিত আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই বিবৃতি এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ প্রকাশ করেছেন।
নয়াদিল্লি, ১২ অক্টোবর: ঢাকার পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে পেট্রলবোমা হামলা এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে স্বর্ণের মুকুট চুরির ঘটনায় ভারত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ শনিবার এক বিবৃতিতে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের ধর্মীয় স্থানগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই বিবৃতি এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ প্রকাশ করেছেন।
ভারতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে হামলা এবং সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে স্বর্ণের মুকুট চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করার একটি পরিকল্পিত আক্রমণ। আমরা আশা করছি, বাংলাদেশের সরকার হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”
পেট্রলবোমা হামলার ঘটনা ঘটে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকায়। স্থানীয়দের মতে, পূজামণ্ডপের পাশে গলিতে দাঁড়িয়ে কয়েকজন যুবক পূজার মঞ্চ লক্ষ্য করে একটি বোতল ছুড়ে মারেন। এতে পেট্রলবোমার বিস্ফোরণ ঘটে এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবকরা হামলাকারীদের থামাতে গেলে তারা ছুরিকাঘাত করেন, এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং মণ্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে, সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে স্বর্ণের মুকুটটি চুরি হয়েছে। মন্দিরের প্রতিমার মাথায় পরানো এই স্বর্ণের মুকুটটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালে তার বাংলাদেশ সফরের সময় উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। মুকুট চুরির ঘটনায় মন্দির কর্তৃপক্ষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, এটি একটি সুপরিকল্পিত চুরি এবং এর সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা চলছে।
এই ধরনের হামলা ও চুরির ঘটনায় বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দুর্গাপূজার মতো বৃহৎ উৎসবের সময় এ ধরনের হামলা ও চুরির ঘটনা আরও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ধরনের আক্রমণগুলিকে নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে।
তারিখ ১৩.১০.২০২৪