চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে সনাতন ধর্মাবলম্বী সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ আট দফা দাবিতে গণসমাবেশের আয়োজন করেছে। আজ শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ থেকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সমাবেশ শেষে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় ট্রাইব্যুনাল গঠন, সংখ্যালঘু কমিশন প্রতিষ্ঠা, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটিসহ আট দফা দাবি জানিয়েছেন। সমাবেশে হাজারো নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমবেত হন।
চট্টগ্রাম, ২৫ অক্টোবর: চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আজ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ আট দফা দাবিতে এক গণসমাবেশের আয়োজন করেছে। সমাবেশে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত হাজারো সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ বিভিন্ন স্লোগান ও ফেস্টুনসহ অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশে বক্তারা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশের প্রধান বক্তা, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “আমাদের উৎখাতের চেষ্টা হলে এর পরিণাম ভয়াবহ হবে।” তিনি আরও বলেন, “যত নিপীড়ন করা হবে, সনাতনী সম্প্রদায় ততই ঐক্যবদ্ধ হবে এবং দাবি আদায়ে আমাদের আন্দোলন চলবে।” চিন্ময় কৃষ্ণ দাস জানান, লালদীঘি মাঠে সমবেত সাধুরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার ও দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য ঢাকার দিকে লংমার্চ করবে।
সমাবেশে প্রধান আটটি দাবির মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার কার্যকর করতে ট্রাইব্যুনাল গঠন, সংখ্যালঘু কমিশন প্রতিষ্ঠা, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিনের ছুটি। “আমার মাটি আমার মা, এ দেশ ছেড়ে যাব না” স্লোগানে মুখরিত মাঠে উপস্থিত বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের পুরোহিত ও মহারাজরা একসঙ্গে অংশগ্রহণ করেন এবং সমাবেশে একাধিক দাবির পক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
বক্তৃতায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস আরও বলেন, “কেউ যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালায়, তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব।” তিনি জানান, বর্তমান সময়ে দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন বেড়ে চলেছে এবং প্রশাসনও এ ব্যাপারে অবহিত। তিনি জানান, শুধু সংখ্যালঘু পরিচয়ের কারণে অনেককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিন্দু ছাত্রদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই গণসমাবেশে অন্যান্য বক্তারা তাদের বক্তব্যে জানান, দেশে বর্তমানে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষায় কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। পটিয়া পাঁচরিয়া তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ রবীশ্বরানন্দ পুরী মহারাজ বলেন, “এই দেশ আমাদের এবং আমরা এর অধিকার রক্ষা করব।” তিনি জানান, সংখ্যালঘু অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। কৈবল্যধাম আশ্রমের মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য বলেন, “সনাতনী সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ হওয়া এখন সময়ের দাবি।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন শংকর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ তপনানন্দ গিরি মহারাজ, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী এবং অন্যান্য মঠ-মন্দিরের পুরোহিত ও মহারাজরা।
তারিখ ২৫.১০.২০২৪