রাজশাহী, ১৪ আগস্ট – বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক কুমার ঘটকের পৈতৃক বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনা নিয়ে রাজশাহীতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। নগরের ঘোড়ামারা মহল্লার মিয়াপাড়ায় অবস্থিত এই বাড়ি ভাঙার খবর জানার পর বুধবার দুপুরে স্থানীয় চলচ্চিত্রকর্মীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। সেখানে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় তাদের।
ঠিকাদারের দাবি অনুযায়ী, কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বাড়িটি ভাঙা হয়েছে। তবে কলেজের অধ্যক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি ভেঙেছে তাদের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
ঋত্বিক ঘটকের জীবনের শুরুর সময়টা কেটেছে রাজশাহীর এই বাড়িতে। এখানেই তিনি রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়াশোনা করেন এবং সাহিত্য ও নাট্যচর্চায় যুক্ত ছিলেন। তাঁর স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়ি একসময় সাহিত্য ও নাট্য আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল। বাড়িটির একটি অংশ ২০১৯ সালে ভেঙে সাইকেল গ্যারেজ তৈরির চেষ্টা হয়েছিল, যা নিয়ে তখনও ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছিল।
চলচ্চিত্রকর্মীদের দাবি, বাড়ি ভাঙার পর এখন সেখানে কেবল ইটের স্তূপ পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শ্রমিকদের ভাষ্যমতে, তারা কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাজ করছেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে এবং দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানিয়েছেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা ও আইসিটি) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজও পর্যালোচনা করা হচ্ছে, যা তদন্তে সহায়ক হতে পারে। প্রশাসন ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিতে চায় এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
চলচ্চিত্রকর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁরা ঋত্বিক ঘটকের নামে স্থায়ীভাবে কিছু নির্মাণের দাবি তুলেছেন। জেলা প্রশাসনও এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে যে, ভবিষ্যতে একটি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে যা ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি ধরে রাখবে।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ ১৫.০৮.২০২৪