9️⃣ বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ – সংবিধান

এখানে বাংলাদেশ হিন্দু সমাজের পূর্ণ সংবিধানের একটি সহজ-সরল ইংরেজি সংস্করণের বাংলা রূপ দেওয়া হলো।

👉 একজন ব্যক্তি শুধু একটি ইউনিটের সদস্য হতে পারেন। তবে ইচ্ছা করলে অন্য ইউনিটে স্থানান্তর হতে পারবেন, কোনো সুবিধা হারাবেন না।

এটি বাংলাদেশ হিন্দু সমাজের পূর্ণ সংবিধানের একটি সরল সংস্করণ।

1. সদস্যপদ

1.1 নতুন সদস্য পরিচয় করানো

কোনো নতুন সদস্যকে অবশ্যই একজন বিদ্যমান সদস্য পরিচয় করাবেন। শুরুতে সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট-ই সব নতুন সদস্যকে পরিচয় করাবেন। পরে যাঁরা আসবেন, তাঁরাও আরও সদস্য আনবেন। এভাবে স্বাভাবিকভাবে কমিউনিটি বড় হবে।

একজন ব্যক্তি শুধু একটি ইউনিটের সদস্য হতে পারবেন। তবে ইউনিট বদল করলেও সদস্য সুবিধা একই থাকবে।


1.2 ভোটের ক্ষমতা ও তার বৃদ্ধি

একজন সদস্য যতজনকে পরিচয় করান—সরাসরি বা তাদের মাধ্যমে—তত বেশি ভোটশক্তি পান।

  • যদি সদস্য A মোট ১০০ জন আনেন, তাঁর ভোটশক্তি = ১০০ + ১ = ১০১
  • সদস্য B কাউকে না আনলে তাঁর ভোটশক্তি =

এই ভোটশক্তির পার্থক্যেই নির্বাচন ফল নির্ধারিত হয়। যেমন, যদি A ভোট দেন X-কে আর B ভোট দেন Y-কে, তবে X জেতেন ১০০ ভোটে (১০১ – ১ = ১০০)।

ভোটশক্তির বংশগত বৃদ্ধি

ভোটশক্তি পুরো ডাউনলাইন যোগ করে বাড়ে।
যদি A ১০০ জন আনেন, এবং সেই ১০০ জন মিলে আরও ১০০০ জন আনেন, তবে A-এর ভোটশক্তি = ১ + ১০০ + ১০০০ = ১১০১


2. সদস্যদের ধরণ

সংগঠনে তিন ধরনের সদস্য থাকবে:


2.1 বন্ধু সদস্য

  • যেকোনো বিদ্যমান সদস্য পরিচয় করান
  • কোনো ফি নেই
  • ভোট দিতে পারবেন না
  • নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না
  • সুবিধা পাবেন না
  • মূল ভূমিকা—কমিউনিটিকে সমর্থন ও উৎসাহ দেওয়া

2.2 বেনিফিশিয়ারি সদস্য

  • সদস্য ফি দিতে হবে
  • ভোট দিতে পারবেন
  • নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না
  • সুবিধা নিতে পারবেন
  • কল্যাণসেবা, সহায়তা ও বিভিন্ন সুবিধা পাবেন

2.3 স্বেচ্ছাসেবক সদস্য

  • সদস্য ফি দিতে হবে
  • ভোট দিতে পারবেন
  • নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন (শুধু ভলান্টিয়াররাই দাঁড়াতে পারবেন)
  • সুবিধা পাবেন না
  • ভূমিকা—সেবা, নেতৃত্ব ও সংগঠনের দায়িত্ব পালন

3. সদস্যভুক্তি প্রক্রিয়া

  1. কোনো বিদ্যমান সদস্য আগ্রহী ব্যক্তির নাম–ফোন–ইমেইল সংগ্রহ করেন
  2. তাঁকে পরিচয়দাতার নামে Friend Member হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়
  3. Friend Member সাহায্য চাইলে ইউনিট কমিটি তাঁকে
    Beneficiary Member করতে পারে
  4. নতুবা ইউনিট কমিটি তাঁকে Volunteer Member হতে উৎসাহিত করে

ভলান্টিয়ার হওয়ার শর্ত

  • অন্তত ১০ জন Friend Member পরিচয় করাতে হবে
  • অন্তত ১ বছর সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে
    (নির্বাচনে দাঁড়ানো বা এক্সিকিউটিভ কমিটিতে যোগ দিতে হলে)

বার্ষিক শ্রেণি পরিবর্তন

প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় (অক্টো–নভে):

  • সদস্যরা তাদের শ্রেণি বদল করতে পারবেন
    • (Beneficiary → Volunteer বা Volunteer → Beneficiary ইত্যাদি)
  • ইউনিট পরিবর্তনও করতে পারবেন

4. বার্ষিক নির্বাচন ব্যবস্থা

নির্বাচন ধাপে ধাপে হয়: ইউনিট → উপজেলা → জেলা → কেন্দ্র।


4.1 ইউনিট প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ডিসেম্বরে প্রথম সপ্তাহে
  • ভোটার: সেই ইউনিটের সব ভলান্টিয়ার ও বেনিফিশিয়ারি
  • প্রত্যেকে নিজের ভোটশক্তি অনুযায়ী ভোট দেন

4.2 উপজেলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ডিসেম্বরে দ্বিতীয় সপ্তাহে
  • ভোটার: নতুন নির্বাচিত সব ইউনিট প্রেসিডেন্ট
  • ভোটের ওজন = সেই ইউনিটে মোট ভলান্টিয়ার + বেনিফিশিয়ারি সংখ্যা

4.3 জেলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ডিসেম্বরে তৃতীয় সপ্তাহে
  • ভোটার: সংশ্লিষ্ট জেলার নতুন উপজেলা প্রেসিডেন্টরা
  • ভোটের ওজন = ওই উপজেলার ভলান্টিয়ার + বেনিফিশিয়ারি সংখ্যা

4.4 কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ডিসেম্বরে চতুর্থ সপ্তাহে
  • ভোটার: নতুন নির্বাচিত সব জেলা প্রেসিডেন্ট
  • ভোটের ওজন = জেলায় মোট ভলান্টিয়ার + বেনিফিশিয়ারি

4.5 অনলাইন ভোটিং

বেশিরভাগ নির্বাচন অনলাইনে হবে—দ্রুত, স্বচ্ছ ও নির্ভুল ফলের জন্য।


5. কমিটির ধরণ

সংগঠনে তিন ধরনের কমিটি থাকবে:


5.1 সুপ্রিম কমিটি

  • মূল ট্রাস্টের ট্রাস্টিদের নিয়ে গঠিত
  • অন্তর্ভুক্ত:
    • সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট
    • সুপ্রিম ভাইস প্রেসিডেন্ট
    • লাইফটাইম মেম্বাররা
  • মেয়াদ: আজীবন
  • সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা
  • ট্রাস্টিরা সংখ্যাগরিষ্ঠে:
    • কাউকে অপসারণ করতে পারেন
    • নতুন সদস্য নিয়োগ করতে পারেন

5.2 স্থায়ী কমিটি

সব স্তরে থাকে:

  • কেন্দ্র
  • জেলা
  • উপজেলা
  • সিটি কর্পোরেশন
  • ইউনিট

মূল বৈশিষ্ট্য

  • শুরুতে সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট সদস্য নিয়োগ করেন (ন্যূনতম ৫ জন)
  • মেয়াদ: আজীবন
  • সেক্রেটারি প্রধান
  • নতুন নির্বাচিত এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থায়ী সদস্য হন
  • দৈনন্দিন কাজে যুক্ত হতে পারবেন না
  • এক্সিকিউটিভ কমিটির সিদ্ধান্ত দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে বাতিল করতে পারেন
  • বিরোধ হলে পরের স্তরের স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়

চেক সই

শুধু পার্মানেন্ট কমিটি সেক্রেটারি এবং এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট যৌথভাবে সই করবেন।


5.3 কার্যনির্বাহী কমিটি

আছে—

  • কেন্দ্র
  • জেলা
  • উপজেলা
  • সিটি কর্পোরেশন
  • ইউনিট

মূল বৈশিষ্ট্য

  • প্রধান: প্রেসিডেন্ট (বার্ষিক নির্বাচন)
  • সর্বোচ্চ ১০ জন সদস্য মনোনয়ন দিতে পারেন (যোগ্য ভলান্টিয়ারদের মধ্যে)
  • সব দৈনন্দিন দায়িত্ব তাদের
  • প্রেসিডেন্টের ভেটো ক্ষমতা আছে
  • সদস্য অপসারণ/নিয়োগ করতে পারেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেক্রেটারিকে জানিয়ে

চেক সই

চেক সই হবে—

  • স্থায়ী কমিটি সেক্রেটারি
  • এক্সিকিউটিভ কমিটি প্রেসিডেন্ট

6. কমিটির শ্রেণিবিন্যাস

  1. সুপ্রিম কমিটি – সর্বোচ্চ নীতি কর্তৃপক্ষ
  2. কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটি – দীর্ঘমেয়াদি কৌশল
  3. কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি – জাতীয় কার্যক্রম
  4. জেলা স্থায়ী & কার্যনির্বাহী কমিটিs
  5. উপজেলা স্থায়ী & কার্যনির্বাহী কমিটিs
  6. সিটি কর্পোরেশন কমিটিs
  7. ইউনিট স্থায়ী & কার্যনির্বাহী কমিটিs

সব কমিটি উপরের কমিটির অধীনে কাজ করে।


7. রাজস্ব বণ্টন ব্যবস্থা

সব ফি, দান ও আয়ের বণ্টন উপরের স্তরে ওঠে।

উদাহরণ:

একটি ইউনিট ১০০ টাকা আয় করলে—

  • ইউনিট রাখে ৫০ টাকা
  • ৫০ টাকা উপজেলা যায়
  • উপজেলা রাখে ২৫, পাঠায় ২৫ জেলা
  • জেলা রাখে ১২.৫, পাঠায় ১২.৫ কেন্দ্র
  • কেন্দ্র রাখে ৬.২৫, পাঠায় ৬.২৫ সুপ্রিম কমিটি

টাকা ব্যবহার

  • এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট কমিউনিটি উন্নয়নে টাকা ব্যবহার করতে পারেন
  • আগের বছরের টাকা খরচে স্থায়ী কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন চাই
  • সুপ্রিম কমিটি বার্ষিক অডিট করে

8. বার্ষিক বাজেট

১ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্টরা দায়িত্ব নেন। তাঁরা স্থায়ী কমিটির সদস্য হন এবং সর্বোচ্চ ১০ জন ভলান্টিয়ার নিয়ে এক্সিকিউটিভ কমিটি করেন।

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তাঁরা—

  • পূর্ণ ৫২-সপ্তাহের বাজেট তৈরি করেন
  • স্থায়ী কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন নেন

9. নতুন ইউনিট গঠন

যেখানে নতুন ইউনিট সম্ভব:

  1. সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট ন্যূনতম ৫ সদস্যের স্থায়ী কমিটি তৈরি করেন
  2. সদস্যরা অন্তত ১০০ ভলান্টিয়ার জোগাড় করেন
  3. কমিউনিটিকে সক্রিয় করা হয়, গণতান্ত্রিকভাবে এক্সিকিউটিভ কমিটি গঠিত হয়
  4. ভলান্টিয়াররা দেবোত্তর সম্পত্তি ট্রাস্টগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখে
  5. স্থানীয় বিনিয়োগকারী চিহ্নিত ও উৎসাহিত করা হয়

জমি ও ব্যবসায়িক মডেল

  • সুপ্রিম ট্রাস্ট দেবোত্তর ট্রাস্ট থেকে জমি/বিল্ডিং লিজ নেয়

  • বিনিয়োগকারীরা উন্নয়ন করে

  • প্রকল্পসমূহ:

    • হোটেল, হোস্টেল
    • স্কুল, কোচিং সেন্টার
    • দোকান
    • গবাদি ও কৃষি প্রকল্প
    • মাইক্রোফাইন্যান্স
  • ব্যবসা ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেল-এ চলবে

লাভ বণ্টন

সুপ্রিম ট্রাস্ট আয় সংশ্লিষ্ট সব কমিটি ও অংশীদারদের মধ্যে ভাগ করবে।