ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বৈশ্বিক সম্পর্কের পুনর্গঠন সম্ভাবনা, বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করার ইঙ্গিত

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বৈশ্বিক সম্পর্কের পুনর্গঠন সম্ভাবনা, বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করার ইঙ্গিত

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। তাঁর নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতিতে নতুন করে আশার আলো দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ট্রাম্প তার টুইটে বলেছেন, সংখ্যালঘু হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর যে নৃশংস আক্রমণ ও লুট চলছে, তা তিনি নিন্দা করছেন। তিনি বলেছেন, তার নেতৃত্বে এ ধরনের হামলা ঘটতো না, এবং বাইডেন প্রশাসন বিশ্বজুড়ে হিন্দুদের অধিকার অবহেলিত রেখেছে। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার প্রতি তার অঙ্গীকারে, ট্রাম্প বলেছেন, তিনি হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করবেন এবং আমেরিকায় চরমপন্থী বামদের বিরোধিতামূলক আচরণের বিরুদ্ধে লড়বেন। ট্রাম্পের এই ঘোষণা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জন্য নতুন আশাবাদের জন্ম দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ৬ নভেম্বর: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈশ্বিক পরিসরে নতুন কৌশলগত পরিবর্তন আনতে যাচ্ছেন। “আমেরিকা প্রথম” নীতি এবং স্থিতিশীলতা আনার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সংকটাপন্ন অঞ্চলে ভিন্নধর্মী প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি থেকে চীনের সাথে সম্পর্ক পুনঃনির্মাণ, মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় তার প্রতিশ্রুতি উঠে এসেছে।

ট্রাম্প তাঁর বার্তায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আমেরিকার হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও স্বাধীনতার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর হ্রাস, এবং আমেরিকার উৎপাদন খাতের সুরক্ষার জন্য তিনি আবারও কাজ করার প্রতিজ্ঞা করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই নতুন অধ্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের সকল দেশ শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার দিকে আরও এগিয়ে যাবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

রাশিয়া, ইউক্রেন ও ন্যাটো
নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ একদিনের মধ্যে বন্ধ করতে পারেন। তবে কীভাবে তা করবেন সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দেননি। তার প্রশাসনের দুই সাবেক নিরাপত্তা প্রধানের গবেষণা অনুসারে, ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা অব্যাহত রাখা হলেও কিয়েভকে শান্তি আলোচনায় বসার শর্ত দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে রাশিয়াকে প্রলুব্ধ করতে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হতে পারে। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ন্যাটোর প্রতি সন্দেহ পোষণ করেন এবং ইউরোপকে আমেরিকার প্রতিরক্ষা খরচে নির্ভরশীল হওয়ার জন্য সমালোচনা করেছেন।

মধ্যপ্রাচ্য
ইউক্রেনের মতোই মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প শান্তি আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় হামাস ইসরায়েলের ওপর আক্রমণ করতো না। তার প্রশাসনের সময় ইরানের ওপর কঠোর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। তিনি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দেন এবং সেখানে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর করেন। ট্রাম্প প্রশাসন আব্রাহাম চুক্তির মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ও বেশ কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে, তবে এটি ফিলিস্তিনিদের অধিকতর একঘরে অবস্থায় নিয়ে আসে।

চীন ও বাণিজ্য
চীনের সাথে ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি মার্কিনিদের কর্মসংস্থান রক্ষায় কেন্দ্রীভূত ছিল। প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি চীনকে “কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী” আখ্যা দিয়ে আমদানির উপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন। ট্রাম্প বলেন, তার পুনর্নির্বাচিত হলে তিনি তীব্র শুল্কের মাধ্যমে চীনের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেবেন, বিশেষ করে তাইওয়ানের উপর চীনা আক্রমণের সম্ভাবনা প্রতিরোধ করতে।

তারিখ ০৬.১১.২০২৪