বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের উত্তর বাহিনীর মহাশ্মশানে এক মৃত নারীর লাশের মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁর ছেলে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। শ্মশানের তত্ত্বাবধায়ক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্বৃত্তরা সমাধিস্থল খুঁড়ে লাশের মাথা নিয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং নিজেদের স্বজনদের সমাধি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে শ্মশানে ভিড় করেছেন। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়েছে।
বগুড়া, ০৯ নভেম্বর ২০২৪: বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের উত্তর বাহিনীর মহাশ্মশানে এক মৃত নারীর লাশের মাথা চুরি যাওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত। মৃত নারী গোলাপী সরকার (৫৩) ছিলেন শহরের উত্তরসাহা পাড়া মহল্লার বাসিন্দা। তাঁর ছেলে রঞ্জিত সরকার জানান, বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা শ্মশানের ভিতরে প্রবেশ করে তাঁর মায়ের সমাধিস্থল খুঁড়ে লাশের মাথা কেটে নিয়ে যায়।
শ্মশানের তত্ত্বাবধায়ক প্রমোদ সরকার জানান, বৃহস্পতিবার দিনের বেলায় শ্মশানের কোনো সমাধিতে মাটি খোঁড়ার কোনো চিহ্ন ছিল না। তবে রাতে দুর্বৃত্তরা শ্মশানের ভিতরে ঢুকে গোলাপী সরকারের সমাধিস্থল খুঁড়ে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটায়। শুক্রবার সকালে প্রমোদ সরকার ঘটনাটি জানতে পেরে মৃত নারীর পরিবারকে খবর দেন।
খবর পেয়ে গোলাপী সরকারের স্বামী সুরেশ সরকার এবং ছেলে রঞ্জিত সরকার সমাধিস্থলে যান এবং সেখানে সমাধির মাটি খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পান। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল সরকার জানান, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, সমাধিস্থলের মাটি সরানো হয়েছে এবং লাশের মাথা ধারালো কিছু দিয়ে কেটে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, সমাধিস্থলের আশপাশে একাধিক মানুষের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছেন।
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ দূরবর্তী অঞ্চল থেকে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হন। তাঁরা নিজেদের স্বজনদের সমাধি পরীক্ষা করতে শ্মশানে ভিড় করেন এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের দাবি জানান। অনেকেই এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং জানান, শেরপুর উত্তর বাহিনী মহাশ্মশানটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন উপজেলার মৃতদের সৎকারে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এমন মর্মান্তিক ও ভীতিকর ঘটনার কথা এই শ্মশানের ইতিহাসে এই প্রথম ঘটল বলে জানান পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং শেরপুরের সাবেক কাউন্সিলর চন্দন কুমার দাস।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তদন্তের মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করা হবে। আমরা ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে আরও ঘটতে পারে, যদি না যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তারিখ: ১০.১১.২০২৪