ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশনের বৈঠকে সংখ্যালঘু, নারী ও শিশুসহ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনি কাঠামো দ্রুত সংশোধনের তাগিদ দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রয়োজন। বৈঠকে বৈধ পন্থায় দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির পথনকশা নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে সম্ভাব্য সুযোগসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ঢাকা, ৫ নভেম্বর: রাজধানী ঢাকার এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশনের বৈঠকে সংখ্যালঘু, নারী ও শিশুসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মানবাধিকার, সুশাসন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগে সহযোগিতা প্রদানেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইইউ। বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) আইন কাঠামোর আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার তাগিদ জানানো হয়।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং ইইউর পক্ষে নেতৃত্ব দেন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা পাম্পালোনি। বৈঠকে বাংলাদেশে গুম হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে তদন্ত কার্যক্রমের বিষয়ে ইইউ জানায়, সরকারের গৃহীত উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সনদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো কিছু আইনের সংশোধন এবং বিরোধী মত দমনের অভিযোগের বিষয়ে ইইউ আশাবাদী।
বৈঠকে ইইউ জানায়, যেসব বাংলাদেশি বর্তমানে ইইউ দেশগুলোতে অবৈধ অবস্থায় আছেন, তাদের বৈধকরণের জন্য বাংলাদেশ পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। পাশাপাশি বৈধভাবে দক্ষ কর্মী পাঠাতে ইইউ একটি পথনকশা প্রস্তুত করছে, যাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কেয়ারগিভিং, নির্মাণ শিল্প, পর্যটন, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, জাহাজ নির্মাণসহ ১০টি খাতকে প্রাধান্য দিয়ে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ অতিরিক্ত তিন বছর পর্যন্ত বর্তমান শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বলে ইইউ জানায়। এরপর ১২-১৫ শতাংশ শুল্কারোপের আওতায় এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধার সুযোগ থাকবে। এ জন্য বাংলাদেশকে আর্থিক খাত সংস্কার, শ্রম অধিকার উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়। ইইউ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশনগুলো মেনে চলার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে।
উল্লেখ্য, ইইউর পক্ষ থেকে জানানো হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা জরুরি।
তারিখ ০৫.১১.২০২৪