ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য সবাইকে একত্রে কাজ করার আহ্বান সেনাপ্রধানের

ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য সবাইকে একত্রে কাজ করার আহ্বান সেনাপ্রধানের

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সবাইকে একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে আয়োজিত পবিত্র কঠিন চীবর দান উৎসব ও জাতীয় বৌদ্ধধর্মীয় মহাসম্মেলনে তিনি বলেন, সব ধর্মের মানুষ মিলে দেশের উন্নয়নে কাজ করা প্রয়োজন। সেনাপ্রধান পার্বত্য জেলায় শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং সেখানকার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য যেকোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।

ঢাকা, ৮ নভেম্বর ২০২৪: বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ওপর গুরুত্বারোপ করে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ মিলে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। তিনি আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে অনুষ্ঠিত পবিত্র কঠিন চীবর দান উৎসব ও জাতীয় বৌদ্ধধর্মীয় মহাসম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সেনাপ্রধান বলেন, “বাংলাদেশে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসঙ্গে মিলে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। আমরা সবাই মিলে দেশ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করতে চাই।” অনুষ্ঠান চলাকালে আজানের সময় ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজান চলাকালীন এখানে সবাই কিছুক্ষণের জন্য থেমে যায়, এটি ধর্মীয় বোঝাপড়া ও সম্প্রীতির সুন্দর উদাহরণ।”

অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা অংশ নেন। সেনাপ্রধান এ উপলক্ষে জানান, “দুর্গাপূজায়ও আমরা নিরাপত্তা দিয়েছি এবং সুন্দরভাবে তা উদ্‌যাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও যেকোনো ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সহায়তা প্রদান করা হবে।”

পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি-সম্প্রীতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলে কিছুটা শান্তি ও সম্প্রীতির অভাব রয়েছে, যা আমরা পূরণ করতে চাই। পাহাড়ি ও বাঙালি উভয়ের মধ্যে সহাবস্থানের সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে চাই।” তিনি আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যকে সম্মান করে রক্ষা করা হবে। এটি দেশের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ এবং সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হবে।

সেনাপ্রধান পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা ও পর্যটনের সম্ভাবনাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে। পাশাপাশি এখানে স্কুল-কলেজ, মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর শিক্ষা ও উন্নয়নকে সহায়তা করা হবে, যাতে তাঁরা ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারেন।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিদেশি কূটনীতিকদের উদ্দেশে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, বাংলাদেশে শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য বিভিন্ন দেশের সহায়তা একটি উল্লেখযোগ্য অবদান। বিশেষ করে, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের বৌদ্ধমন্দির নির্মাণে আর্থিক সহায়তা করেছেন। এর ফলে দেশের বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা উপকৃত হচ্ছেন, যা একটি চমৎকার উদাহরণ হয়ে আছে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ন্যুয়েন মান কুঅং এবং অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন।

সেনাপ্রধানের বক্তব্যে ধর্মীয় সহাবস্থান ও শান্তি প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরে সব ধর্মের মানুষকে একসঙ্গে থাকার ও ভালোবাসার আহ্বান জানানো হয়।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪