চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে সরব বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ, কলকাতায় ব্যারিকেডের নীচে চাপা পড়ে আহত একাধিক

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে সরব বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ, কলকাতায় ব্যারিকেডের নীচে চাপা পড়ে আহত একাধিক

ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ঘিরে উত্তাল হয়েছে কলকাতা। সন্ন্যাসীর মুক্তির দাবিতে সরব বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ, কলকাতায় ব্যারিকেডের নীচে চাপা পড়ে আহত একাধিক। তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কলকাতায় সনাতনী সমাজের মিছিলেও উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কয়েকজন। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশেও প্রতিবাদ চলছে।

কলকাতা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ঘিরে কলকাতার সনাতনী সমাজ পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। বৃহস্পতিবার শিয়ালদা স্টেশন থেকে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই-কমিশনের দফতর পর্যন্ত এই মিছিল আয়োজিত হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা সন্ন্যাসীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সরব হন। তবে বেকবাগানের কাছে পৌঁছাতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান মিছিলকারীরা। সংঘর্ষে আহত হন দুই মিছিলকারী এবং এক পুলিশ কর্মকর্তা। বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। মিছিল থেকে বারবার ‘বিচার চাই’ স্লোগান শোনা যায়।

তিন মাস আগে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতি হলেও দেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগ অব্যাহত। এর মধ্যেই সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে। ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় গ্রেফতার করে।

এ ঘটনায় বাংলাদেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় সংখ্যালঘুরা মিছিল ও অবস্থান বিক্ষোভ করছে। অনেকে রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ইসকনও সরব হয়েছে। এক্স-হ্যান্ডেলে (পূর্ববর্তী টুইটার) ইসকন লিখেছে, “বিশ্বের যে কোনও জায়গায় সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ইসকনের কোনও সম্পর্ক নেই। এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ তীব্র নিন্দনীয়।”

ভারত সরকারকেও এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছে ইসকন। তারা চায়, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি নিশ্চিত করা হোক।

কলকাতার মিছিল ও সংঘর্ষের পর বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চ স্পষ্ট করেছে যে, এই আন্দোলন আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে। একইসঙ্গে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টিও সামনে এনেছে ভারত। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লির তরফ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

ইতিমধ্যেই কলকাতা ও বাংলাদেশে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে। প্রতিবাদকারীদের দাবি, “এই অন্যায় গ্রেফতারি মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ন্যায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।”

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪