চাই চিন্ময়ের নিঃশর্ত মুক্তি, বাংলাদেশে  অশান্তির মাঝে বার্তা হাসিনার

চাই চিন্ময়ের নিঃশর্ত মুক্তি, বাংলাদেশে অশান্তির মাঝে বার্তা হাসিনার

চট্টগ্রাম আদালতের বাইরে সংঘর্ষে আইনজীবীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশজুড়ে উত্তেজনা। সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের অনুগামীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ওই আইনজীবী নিহত হন। এ ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। পাশাপাশি, চিন্ময়ের মুক্তির দাবি তুলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রাম আদালতের বাইরে সংঘর্ষে আইনজীবীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। গত মঙ্গলবার সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে আদালতে হাজির করার সময় তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩৭ জন আহত হন। সংঘর্ষের মধ্যেই নিহত হন একজন আইনজীবী।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “একজন আইনজীবী পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দোষীরা সন্ত্রাসী। তাদের শাস্তি পেতেই হবে।” হাসিনা আরও উল্লেখ করেন, যদি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার না হয়, তবে এর দায় অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর বর্তাবে।

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনার পর তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। আদালতের বাইরে প্রিজ়ন ভ্যানে তোলার সময় চিন্ময়ের অনুগামীরা প্রতিবাদ করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

শেখ হাসিনা তাঁর বিবৃতিতে চিন্ময়ের মুক্তির দাবিও তুলেছেন। তিনি বলেন, “একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।” তাঁর এই বক্তব্য আওয়ামী লীগ সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার দাবি দীর্ঘদিনের। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন একত্রিত হয়ে ‘সনাতনী জাগরণ মঞ্চ’ গঠন করে। চিন্ময়কৃষ্ণ দাস এই মঞ্চের একজন মুখপাত্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

চিন্ময়ের আহ্বানে ঢাকার শহিদ মিনার চত্বর এবং চট্টগ্রামসহ একাধিক স্থানে হাজার হাজার সংখ্যালঘু মানুষ সমবেত হন। এ ধরনের আন্দোলনের কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত সরকারও। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন জানান, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকার বারবার অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি বলেন, “সংখ্যালঘু-সহ বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সে দেশের সরকারের দায়িত্ব।”

এই ঘটনাগুলি সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা ও পদক্ষেপের দাবি তুলেছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪