আইনজীবী হত্যায় আটক ছয়জনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

আইনজীবী হত্যায় আটক ছয়জনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

চট্টগ্রামে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ, যাদের ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, পুলিশের ওপর হামলা এবং আইনজীবী হত্যার ঘটনায় ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল হত্যার নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করেছে।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনকে আটক করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত এই ছয়জনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আজ বুধবার এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয় যে, এই ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত মঙ্গলবার সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ছয় সদস্যও রয়েছেন, যাদের কাছ থেকে ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এই হত্যার ঘটনায় প্রথম আলোকে বলেন, বিক্ষোভকারীরা সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তিনি এ হত্যাকাণ্ডকে অত্যন্ত দুঃখজনক হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এর দ্রুত বিচার দাবি করেন।

এদিকে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন এবং এ বিষয়ে একটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনা উচিত।’’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) জানায়, সাইফুল ইসলাম হত্যার পর পুলিশ সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা ও আইনজীবী হত্যার ঘটনায় ৩০ জনকে আটক করেছে। গত রাতেই নগরের কোতোয়ালি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটককৃতদের গ্রেপ্তার করা হয়। আটকদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন দলের সদস্য, এবং পুলিশ এখন তাদের সংশ্লিষ্টতা যাচাই-বাছাই করছে।

সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেছেন, ‘‘এই ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। হত্যাকাণ্ড ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে।’’

সাম্প্রতিক সময়ে, সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলি বিচারের দাবি জানিয়েছে এবং সবার কাছে শান্তি ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এর মধ্যে, চট্টগ্রামের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভও অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এই ঘটনা একদিকে যেমন চট্টগ্রামের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করেছে, তেমনি দেশের অন্য অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে উদ্বেগও সৃষ্টি করেছে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪