আমাদের আন্দোলন অহিংস, ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে: সনাতনী জাগরণ জোট

আমাদের আন্দোলন অহিংস, ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে: সনাতনী জাগরণ জোট

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতারা আজ ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তাদের আন্দোলন কখনোই সহিংস ছিল না এবং কিছু দুর্বৃত্ত তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। তারা দাবি করেছেন, সম্প্রতি চট্টগ্রামে এক আইনজীবী হত্যাকাণ্ডের পেছনে ধর্মীয় উসকানির ইঙ্গিত রয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় তারা তীব্র প্রতিবাদ জানান।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতারা নিজেদের আন্দোলনকে অহিংস এবং শান্তিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন। তারা অভিযোগ করেছেন যে, কিছু দুর্বৃত্ত তাদের আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের প্রতিনিধি সুমন রায় এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমাদের আন্দোলন কখনো সহিংস ছিল না। গতকাল (সোমবার) রাতে শাহবাগে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যে কিছু দুর্বৃত্ত ঢুকে আমাদের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করেছে।” সুমন রায় আরও দাবি করেন, চট্টগ্রামে সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকাণ্ডের পেছনে ধর্মীয় বিদ্বেষ রয়েছে এবং বর্তমানে চট্টগ্রামে অন্য হিন্দু আইনজীবীরাও ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জামিন দেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়। যদি তার জামিন না দেওয়া হয়, তবে জোটের পক্ষ থেকে কারাগারের উদ্দেশে লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়। তারা দাবি করেছেন, ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ তার বিরুদ্ধে অযৌক্তিক পদক্ষেপ নিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করার পর, সনাতনী জাগরণ জোটের সমর্থকরা ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে গিয়ে তার অবস্থান সম্পর্কে তথ্য জানতে চান। তবে সেখানে তাদের কোনো সঠিক উত্তর দেয়া হয়নি। এর পরেই, জোটের সমর্থকরা শাহবাগ থানার অনুমতি নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। কিন্তু সেখানে কিছু উগ্রবাদী ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র ও রড নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে জোটের প্রায় ৩০ জন সমর্থক আহত হন, যার মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর এবং দুই নারী সমর্থক শারীরিকভাবে নিগ্রহের শিকার হন।

জোটের নেতারা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ হামলা প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা তাদের মধ্যে আরও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তারা হামলায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন প্রথমে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাকচ হয়ে যাওয়ার পর, মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করা হয়েছে। আগামীকাল এই আপিলের শুনানি হবে এবং জোটের নেতারা আশা করছেন যে, আদালত তার জামিন মঞ্জুর করবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জোটের অন্যান্য প্রতিনিধি অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী, পলাশ কান্তি দে, তন্ময় মৌলিক প্রমুখ। তারা সরকারের কাছে সনাতনী সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানান এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪