কুয়াকাটায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব পালনে ভক্তদের ঢল। পূর্ণিমা লগ্নে পাপ মোচন ও পুণ্যলাভের আশায় সাগরে পুণ্যস্নান করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। রাস পূজা উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কীর্তন, ভাগবৎ পাঠ ও আরতিতে মুখরিত কুয়াকাটা।
পটুয়াখালী, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪: পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় শত বছরের পুরোনো রাস উৎসব উদ্যাপন উপলক্ষে ভক্ত ও তীর্থযাত্রীদের ঢল নেমেছে। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল থেকেই কুয়াকাটার শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির প্রাঙ্গণ এবং আশপাশ এলাকা টইটম্বুর হয়ে ওঠে। জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব দিকে ২ কিমি এবং পশ্চিম দিকে ১ কিমি এলাকাজুড়ে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
রাস পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কাজল বরণ দাস জানান, শুক্রবার ভোর ৫টা ৪৩ মিনিটে পূর্ণিমা শুরু হয়ে শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৩টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত চলবে। এ সময় ভক্তরা পাপ মোচন ও পুণ্যলাভের আশায় সমুদ্রস্নান করবেন।
উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পুরোহিত ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মন্ডল জানান, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রাতভর কীর্তন, ভাগবৎ পাঠ ও আরতি অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের শিল্পী কবিতা ঘোষ শ্রীকৃষ্ণের লীলাকীর্তনে অংশগ্রহণ করেন।
শনিবার ভোরে সূর্যোদয়ের আগে ভক্তদের বিশাল সমাবেশ দেখা যাবে। অনেকেই নিজেদের মানত পূরণে পূজায় অংশ নেবেন। রাস উৎসবে অংশ নিতে আসা ভক্ত সৌমির বলেন, “সারা বছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করি। গত পাঁচ বছর ধরে এখানে এসে সমুদ্রস্নান করছি এবং মানত পূরণ করছি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, এবারের রাস উৎসবে প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা, উপজেলা এবং পৌর প্রশাসন মিলে নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। টুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং গ্রাম পুলিশের সমন্বয়ে পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবীবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার থেকেই পুরো কুয়াকাটা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দুষ্কৃতকারীদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে।
কুয়াকাটায় রাস উৎসব শুধু ধর্মীয় নয়, বরং এটি হাজারো ভক্ত ও দর্শনার্থীর জন্য একটি মিলনমেলার স্থান। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করছে স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকেরা।
তারিখ: ১৫.১১.২০২৪