চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের দৌলাতদিয়াড় গ্রামের এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে অঞ্জলি প্রামাণিক (৫০) নামের এই নারীকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে এবং বাড়ি থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশসহ গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং তদন্ত কাজ শুরু করে। নিহতের পরিবার শোকাহত ও আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা, ২০ অক্টোবর: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় আজ রোববার সকালে অঞ্জলি প্রামাণিক (৫০) নামের এক গৃহবধূকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আলুকদিয়া ইউনিয়নের দৌলাতদিয়াড় গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় তাঁর নিজ বাড়িতে এই নির্মম ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা হত্যাকাণ্ডের পর ঘর থেকে নগদ ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। অঞ্জলি প্রামাণিক ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা নরসুন্দর গণেশ প্রামাণিকের স্ত্রী। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে একা ছিলেন, আর তাঁর স্বামী গণেশ প্রামাণিক স্থানীয় আলুকদিয়া বাজারে তাঁর সেলুনে ছিলেন।
বেলা ১১টার দিকে গণেশ প্রামাণিকের ভাতিজি ঐশি বিশ্বাস (১৭), যিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী, অসুস্থ পিসিকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে তাঁদের বাড়িতে আসেন। তবে গেট ভেতর থেকে বন্ধ থাকায় বারবার ধাক্কা দিয়ে সাড়া না পেয়ে ঐশি প্রতিবেশী মিতালী সূত্রধরকে সহায়তার জন্য ডাকেন। এরপর মিতালী সূত্রধরের সহায়তায় কয়েকজন কিশোর প্রাচীর টপকে গেট খুলে দেয়। ঘরে ঢুকে তাঁরা অঞ্জলি প্রামাণিকের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান।
পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে সদর থানা-পুলিশ, গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এর একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নিহতের দেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। এ সময় বাড়ির ভেতরে নিহতের স্বজনদের আহাজারি শোনা যায়।
নিহতের স্বামী গণেশ প্রামাণিক জানান, বাড়িতে জমি বিক্রির বায়নার টাকা এবং কিছু স্বর্ণালংকার ছিল। ঘটনার পর খুনিরা নগদ টাকা ও কিছু স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে বলে ধারণা করছেন তিনি। তবে তাঁর পরিবার কারও সাথে শত্রুতার কোনো ঘটনা মনে করতে পারছে না। গণেশ প্রামাণিক আরও বলেন, তিনি এই হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত নন।
নিহতের পরিবারের সূত্রে জানা যায়, ২০ বছর আগে গণেশ-অঞ্জলি দম্পতির একমাত্র সন্তান সঞ্চিতা বিশ্বাস শ্বশুরবাড়িতে পারিবারিক অশান্তির কারণে আত্মহত্যা করেন। এরপর থেকেই গণেশ-অঞ্জলি দম্পতি তাঁদের দৌলাতদিয়াড়ের আধাপাকা টিনশেডের বাড়িতে একসঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী জানান, এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সদর থানা-পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং সিআইডি তদন্ত শুরু করেছে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে এবং ঘটনার কারণ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনায় আতঙ্কিত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর প্রশ্ন তুলেছেন।
তারিখ ২৬.১০.২০২৪