চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়েছে। ২৫ অক্টোবর লালদীঘির মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মহাসমাবেশের দিন জাতীয় পতাকার ওপর ইসকনের গেরুয়া পতাকা স্থাপন করার অভিযোগে এ মামলা দায়ের করেন ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ ইতোমধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস নামে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী এ মামলাকে সনাতনীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেন। এই হলো গণতান্ত্রিক নতুন বাংলাদেশ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করলেও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা খেতে হয়, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং মামলা বাতিল করার দাবী জানাই।
চট্টগ্রাম, ৩১ অক্টোবর: চট্টগ্রাম শহরের নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থিত স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ (চন্দন কুমার ধর প্রকাশ) ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় ফিরোজ খান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি জাতীয় পতাকার উপর ইসকনের গেরুয়া পতাকা স্থাপন করে।
মামলার এজাহারে বিভিন্ন পর্যায়ের হিন্দু নেতৃবৃন্দের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে আছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, অজয় দত্ত, লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারী, গোপাল দাশ, কথক দাশ, প্রকৌশলী অমিত ধর, রনি দাশ, রাজীব দাশ, কৃষ্ণ কুমার দত্ত, জিকু চৌধুরী, নিউটন দে, তুষার চক্রবর্তী, মিথুন দে, রুপন ধর, রিমন দত্ত, সুকান্ত দাশ, বিশ্বজিৎ গুপ্ত, রাজেশ চৌধুরী এবং হৃদয় দাস। পুলিশ ইতোমধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রমাণ সংগ্রহ করে রাজেশ ও হৃদয়কে গ্রেপ্তার করেছে বলে কোতোয়ালি থানার ওসি ফজলুল কাদের চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া বিভিন্ন হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে সনাতন জাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে ২৫ অক্টোবর লালদীঘির মাঠে মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখানে অংশ নিতে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার সনাতনী সমবেত হয়। মামলার অভিযোগ অনুসারে, চন্দন কুমার ধরসহ ৯ জন প্রধান আসামির ইন্ধনে আরও ১০ জন জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা স্থাপন করেন, যা স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের জন্ম দেয়।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর এক ভিডিও বার্তা প্রকাশিত হয়। এতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, “এই আন্দোলন সনাতনীদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে; এটা বর্তমান সরকার কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়।” তিনি এই মামলাকে সনাতনীদের আট দফা দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা বলে উল্লেখ করেন।
কোতোয়ালি থানার ওসি ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আরও আসামিদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
তারিখ ৩১.১০.২০২৪