এটি এই বিভাগটির বহু পৃষ্ঠার মুদ্রণযোগ্য দর্শন। মুদ্রণ করতে এখানে ক্লিক করুন.

এই পৃষ্ঠার নিয়মিত দৃশ্যে ফিরে আসুন.

জ্ঞানকোষ - সংবিধান, ঐতিহ্য ও জ্ঞানচর্চার ভান্ডার

আমাদের জ্ঞানকোষ বিভাগে সংবিধান, সমাজব্যবস্থা, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় ঐতিহ্য সম্পর্কিত মূল্যবান তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এখানকার প্রতিটি পোস্টের লক্ষ্য—জ্ঞানকে সহজ ভাষায় সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া, সচেতনতা বাড়ানো এবং সমাজগঠনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করা।

1 - আমাদের সংবিধান

স্বাগতম আমাদের সংবিধান অংশে — বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ-এর গঠন, নেতৃত্ব নির্বাচন, সদস্যপদ ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন কমিটির দায়িত্ববণ্টন সম্পর্কে এখানে স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়েছে। এই অংশের লক্ষ্য সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও পরিচালনার নিয়ম পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা।

1.1 - 1️⃣ সদস্যপদ ব্যবস্থা

বাংলাদেশ হিন্দু সমাজের সদস্যপদ কাঠামো এমনভাবে সাজানো যে সবাই একটি সংগঠিত, স্বচ্ছ ও কমিউনিটি-ভিত্তিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্ত হতে পারে। সদস্যরা তাদের অংশগ্রহণ, অবদান ও সেবা দেওয়ার প্রস্তুতি অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করেন।

প্রতিটি নতুন সদস্যকে অবশ্যই একজন বিদ্যমান সদস্য পরিচয় করিয়ে দেবেন।

সংক্ষিপ্ত ধারণা

বাংলাদেশ হিন্দু সমাজের সদস্যপদ কাঠামো নিশ্চিত করে যে যেকোনো ব্যক্তি একটি পরিষ্কার, সুশৃঙ্খল ও কমিউনিটি-কেন্দ্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্ত হতে পারেন। সদস্যরা তাদের কাজের ধরন, অবদান ও সেবার মনোভাব অনুযায়ী ভিন্ন ভূমিকা নেন।


🔹 সদস্য পরিচিতি নিয়ম

  • প্রতিটি নতুন সদস্যকে বিদ্যমান সদস্য পরিচয় করিয়ে দেবেন।
  • শুরুতে সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট একমাত্র পরিচয়দাতা হিসেবে কাজ করবেন।
  • একজন সদস্য এক সময়ে শুধু একটি ইউনিটে থাকতে পারেন, তবে চাইলে ইউনিট বদলাতে পারবেন এবং সুবিধা হারাবেন না।

🔹 ভোটিং ক্ষমতা কাঠামো

যে সদস্য যতজনকে পরিচয় করিয়ে দেবেন, তার ভোটিং ক্ষমতা তত বাড়বে:

  • যদি A মোট ১০০ জনকে পরিচয় করান → ভোটিং ক্ষমতা = ১০১

  • যদি B কাউকে পরিচয় না করান → ভোটিং ক্ষমতা =

  • ভোটিং ক্ষমতা পরবর্তী স্তরের সদস্য পরিচিতি থেকেও বাড়তে থাকে:

    • যদি A-এর ১০০ সদস্য আরও ১০০০ জনকে পরিচয় করান → A-এর ভোটিং ক্ষমতা হবে ১১০১

এতে একটি স্বচ্ছ, যোগ্যতা-ভিত্তিক নেতৃত্ব কাঠামো তৈরি হয়।


🔹 সদস্যদের তিন ধরন

1️⃣ Friend (সহযোগী)

  • কোনো ফি নেই
  • ভোট দিতে পারবেন না, নির্বাচনেও দাঁড়াতে পারবেন না
  • কোনো সুবিধা দাবি করতে পারবেন না
  • মূল ভূমিকা: নৈতিক সহযোগিতা ও শুভেচ্ছা

2️⃣ Beneficiary (সুবিধাভোগী)

  • সদস্যপদ ফি প্রদান করেন
  • ভোট দিতে পারেন
  • নির্বাচন করতে পারেন না
  • কমিউনিটি সেবা ও সুবিধা পেতে পারেন

3️⃣ Volunteer (স্বেচ্ছাসেবক)

  • সদস্যপদ ফি প্রদান করেন
  • ভোট দিতে পারেন
  • শুধু স্বেচ্ছাসেবকরাই নির্বাচন করতে পারবেন
  • কোনো সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন না
  • প্রধান ভূমিকা: সেবা, নেতৃত্ব, কমিউনিটি কাজ

🔹 সদস্যপদ প্রক্রিয়া

  1. বিদ্যমান সদস্য নতুন ব্যক্তিকে Friend হিসেবে নিবন্ধন করেন।

  2. Friend যদি সেবা বা সহায়তা চান → ইউনিট কমিটি তাকে Beneficiary করে দেয়।

  3. ইউনিট কমিটি Friend-দের Volunteer হতে উৎসাহ দেয়।

  4. Volunteer হতে হলে:

    • কমপক্ষে ১০ জন Friend পরিচয় করাতে হবে
    • নির্বাচন করার আগে ১ বছর সক্রিয়ভাবে সেবা করতে হবে

🔹 বার্ষিক নবায়ন

প্রতি বছর দুর্গাপূজা (অক্টোবর/নভেম্বর) সময়:

  • সদস্যরা ক্যাটাগরি পরিবর্তন করতে পারবেন
  • ইউনিট পরিবর্তন করতে পারবেন
  • সব রেকর্ড হালনাগাদ হবে

1.2 - 2️⃣ নির্বাচন প্রক্রিয়া

বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ বহুস্তরভিত্তিক, গণতান্ত্রিক এবং ওজন-ভিত্তিক ভোটিং পদ্ধতি অনুসরণ করে। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে স্থানীয় ইউনিট থেকে কেন্দ্রীয় স্তর পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়।

👉 প্রতিটি ভোটার তাঁর নিজস্ব ভোটশক্তি অনুযায়ী ভোট দেন

ভূমিকা

বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ একটি বহুস্তরভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, ও ওজন-ভিত্তিক ভোটিং ব্যবস্থা অনুসরণ করে। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে—ইউনিট থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত— ধাপে ধাপে নেতৃত্ব নির্বাচন হয়।


🔹 বার্ষিক নির্বাচন সময়সূচি

1️⃣ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ – ইউনিট প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ভোটার: ভলান্টিয়ার + বেনিফিশিয়ারি
  • প্রতিটি ভোটার তাঁর ভোটশক্তি অনুযায়ী ভোট দেন

2️⃣ দ্বিতীয় সপ্তাহ – উপজেলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ভোটার: নবনির্বাচিত ইউনিট প্রেসিডেন্টরা
  • ভোটের ওজন = সেই ইউনিটের মোট ভলান্টিয়ার + বেনিফিশিয়ারি সংখ্যা

3️⃣ তৃতীয় সপ্তাহ – জেলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ভোটার: নবনির্বাচিত উপজেলা প্রেসিডেন্টরা
  • ভোটের ওজন = সংশ্লিষ্ট উপজেলার মোট ভলান্টিয়ার + বেনিফিশিয়ারি

4️⃣ চতুর্থ সপ্তাহ – কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ভোটার: জেলা প্রেসিডেন্টরা
  • ভোটের ওজন = তাদের জেলার মোট ভলান্টিয়ার + বেনিফিশিয়ারি

🔹 অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থা

  • বেশিরভাগ নির্বাচন অনলাইনে হয়
  • দ্রুত, স্বচ্ছ ও নিরাপদ ফল নিশ্চিত করে
  • সারাদেশের অংশগ্রহণ সহজ ও বিস্তৃত করে

1.3 - 3️⃣ কমিটি কাঠামো

বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ তিনটি শক্তিশালী কিন্তু ভারসাম্যপূর্ণ কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যা গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত, দীর্ঘমেয়াদি স্থিরতা এবং কার্যকর পরিচালনা নিশ্চিত করে।

👉 পার্মানেন্ট কমিটি থাকে: কেন্দ্র, জেলা, উপজেলা, সিটি ও ইউনিট পর্যায়ে

সংক্ষিপ্ত ধারণা

বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ কমিটির মাধ্যমে চলে। এগুলো একসঙ্গে গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত, ধারাবাহিকতা এবং কাজের দক্ষতা নিশ্চিত করে।


🔹 তিন ধরনের কমিটি

1️⃣ সুপ্রিম কমিটি

  • প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টিদের নিয়ে গঠিত

  • আজীবন মেয়াদ

  • সর্বোচ্চ স্তরের নীতি নির্ধারণ করে

  • সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সদস্য যোগ বা বাদ দিতে পারে

  • গঠনে থাকে:

    • সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট
    • সুপ্রিম ভাইস-প্রেসিডেন্ট
    • পার্মানেন্ট সদস্যরা

2️⃣ পার্মানেন্ট কমিটি

  • কেন্দ্র, জেলা, উপজেলা, সিটি ও ইউনিট—সকল স্তরে থাকে

  • সদস্যদের নিয়োগ দেন সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট

  • আজীবন মেয়াদ

  • প্রধান উদ্দেশ্য:

    • ধারাবাহিকতা বজায় রাখা
    • তত্ত্বাবধান করা
    • সংবিধানিক শুদ্ধতা রক্ষা করা
  • ২/৩ ভোটে এক্সিকিউটিভ কমিটির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারে


3️⃣ এক্সিকিউটিভ কমিটি

  • দৈনন্দিন পরিচালনা ও নেতৃত্বের দায়িত্বে
  • কেন্দ্র, জেলা, উপজেলা, সিটি ও ইউনিট—সকল স্তরে থাকে
  • সভাপতি প্রতি বছর নির্বাচিত হন
  • সর্বোচ্চ ১০ জন সদস্য নিয়োগ দিতে পারেন
  • দৈনন্দিন কাজ, উন্নয়ন প্রকল্প, ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে
  • সভাপতির ভেটো ক্ষমতা থাকে
  • সভাপতি পার্মানেন্ট কমিটিকে ২৪ ঘণ্টা আগে জানিয়ে সদস্য যোগ বা বাদ দিতে পারেন

1.4 - 4️⃣ কমিটি স্তর

সমাজ একটি ধাপে সাজানো, উপর থেকে পরিচালিত কিন্তু স্থানীয়ভাবে ক্ষমতায়িত কাঠামোর মাধ্যমে চলে। প্রতিটি স্তর তার উপরের স্তরকে রিপোর্ট করে, ফলে সমন্বয় সহজ হয়।

👉 এই কাঠামো জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করে।

সংক্ষিপ্ত ধারণা

সমাজ একটি ধাপে সাজানো, উপরমুখী কিন্তু স্থানীয়ভাবে শক্তিশালী কাঠামোর মাধ্যমে চলে। প্রতিটি স্তর তার উপরের স্তরে রিপোর্ট করে, তাই কাজের প্রবাহ ঠিক থাকে।


🔹 কাঠামোর ধাপ

  1. সুপ্রিম কমিটি
  2. কেন্দ্রীয় স্থায়ী ও কার্যনির্বাহী কমিটি
  3. জেলা স্থায়ী ও কার্যনির্বাহী কমিটি
  4. উপজেলা স্থায়ী ও কার্যনির্বাহী কমিটি
  5. সিটি কর্পোরেশন কমিটি (উপজেলা স্তরের সমান্তরাল)
  6. ইউনিট স্থায়ী ও কার্যনির্বাহী কমিটি

🔹 দায়িত্বসমূহ

  • সুপ্রিম স্তর: জাতীয় নীতি, দেবোত্তর ট্রাস্ট, আর্থিক নিরীক্ষা
  • কেন্দ্রীয় স্তর: জাতীয় বাস্তবায়ন ও কৌশল
  • জেলা স্তর: সমন্বয় ও তদারকি
  • উপজেলা স্তর: দৈনন্দিন পর্যবেক্ষণ
  • ইউনিট স্তর: মাঠ পর্যায়ের কাজ, সদস্য সংগ্রহ, সেবা প্রদান

এই কাঠামো জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বজায় রাখে।


1.5 - 5️⃣ আর্থিক কাঠামো ও রাজস্ব বণ্টন

বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ একটি স্বচ্ছ রাজস্ব-বণ্টন মডেলে পরিচালিত হয়, যেখানে প্রতিটি স্তর প্রয়োজনীয় সম্পদ পায় এবং একই সঙ্গে উপরস্থ স্তরের কাছে জবাবদিহি বজায় থাকে।

👉 সুপ্রিম কমিটি প্রতি বছর অডিট পরিচালনা করে

সংক্ষিপ্ত ধারণা

বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ এমন একটি রাজস্ব-বণ্টন কাঠামো অনুসরণ করে যা স্বচ্ছ, সহজ ও জবাবদিহিমূলক। এতে প্রতিটি প্রশাসনিক স্তর নির্দিষ্ট অংশ পায় এবং বাকিটা উর্ধ্বতন স্তরে যায়।


🔹 রাজস্ব প্রবাহ (৫০% উর্ধ্বমুখী বণ্টন)

উদাহরণ: যদি একটি ইউনিট ১০০ টাকা আয় করে—

  • ইউনিট রেখে দেবে ৫০
  • ৫০ পাঠাবে → উপজেলা
  • উপজেলা রাখবে ২৫ → পাঠাবে ২৫ → জেলা
  • জেলা রাখবে ১২.৫০ → পাঠাবে ১২.৫০ → কেন্দ্র
  • কেন্দ্র রাখবে ৬.২৫ → পাঠাবে ৬.২৫ → সুপ্রিম কমিটি

🔹 ব্যয়ের নিয়ম

  • নির্বাহী সভাপতি চলতি বছরের ফান্ড কমিউনিটি উন্নয়নে স্বাধীনভাবে ব্যয় করতে পারবেন
  • আগের বছরের ফান্ড ব্যয় করতে হলে পার্মানেন্ট কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন
  • সুপ্রিম কমিটি প্রতি বছর অডিট পরিচালনা করে

1.6 - 6️⃣ বার্ষিক বাজেট কাঠামো

প্রতি বছর ১ জানুয়ারি নবনির্বাচিত সভাপতি দায়িত্ব নেন এবং সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পিত আর্থিক প্রস্তুতি শুরু করেন।

👉 একটি ৫২-সপ্তাহের বাজেট প্রস্তুত করুন

ভূমিকা

প্রতি বছর ১ জানুয়ারি নবনির্বাচিত সভাপতি দায়িত্ব গ্রহণের পরেই সংগঠিত আর্থিক পরিকল্পনা শুরু করেন।


🔹 পদক্ষেপ

  1. নবনির্বাচিত সভাপতি দায়িত্ব নেন

  2. তাঁরা স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে যুক্ত হন

  3. সর্বোচ্চ ১০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে নির্বাহী কমিটি গঠন করেন

  4. জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে:

    • একটি ৫২-সপ্তাহের বাজেট তৈরি করুন
    • স্থায়ী কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন নিন
  5. বাজেট পুরো বছরের জন্য কার্যকর হয়


1.7 - 7️⃣ নতুন ইউনিট গঠন

সম্প্রসারিত এলাকায় বা সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে কমিউনিটি সেবা বাড়াতে ও সংগঠনের পরিধি শক্তিশালী করতে নতুন ইউনিট গঠন করা হয়।

👉 রাজস্ব সব কমিটির মধ্যে ভাগ করা হয়

সংক্ষিপ্ত ধারণা

বর্ধমান বা কম-সেবাপ্রাপ্ত এলাকায় কমিউনিটি সেবা পৌঁছাতে এবং সংগঠনের কাজ বিস্তৃত করতে নতুন ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়।


🔹 নতুন ইউনিট গঠনের ধাপ

  1. সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট একটি নতুন পার্মানেন্ট কমিটি গঠন করেন

  2. ন্যূনতম ৫ জন পার্মানেন্ট সদস্য নিয়োগ করা হয়

  3. পার্মানেন্ট সদস্যরা ১০০ জন ভলান্টিয়ার সংগঠিত করেন

  4. কমিউনিটি মিটিংয়ে নতুন এক্সিকিউটিভ কমিটি নির্বাচন হয়

  5. ভলান্টিয়াররা দেবোত্তর ট্রাস্টগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখে

  6. ভলান্টিয়াররা স্থানীয় বিনিয়োগকারী চিহ্নিত করে

  7. সুপ্রিম ট্রাস্ট দেবোত্তর জমিতে উন্নয়ন করে:

    • ইজারা
    • নির্মাণ
    • ব্যবসায়িক উন্নয়ন (হাসপাতাল, হোটেল, হোস্টেল, কোচিং সেন্টার, দোকান, পশুপালন, মাইক্রোক্রেডিট)
  8. ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক প্রকল্পে স্থানীয় কর্মসংস্থান তৈরি হয়

  9. রাজস্ব সব স্তরের কমিটির মধ্যে বণ্টন করা হয়


1.8 - 8️⃣ দেবোত্তর সম্পত্তি উন্নয়ন মডেল

সমাজ অবহেলিত দেবোত্তর (হিন্দু ট্রাস্ট) সম্পত্তি রক্ষা, পুনর্জীবিত করা এবং অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয় করতে কাজ করে।

👉 স্থানীয় ছোট ব্যবসাগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেলে পরিচালিত হয়

সংক্ষিপ্ত ধারণা

সমাজ অবহেলিত দেবোত্তর (হিন্দু ট্রাস্ট) সম্পত্তি রক্ষা, পুনর্গঠন এবং অর্থনৈতিকভাবে ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে কাজ করে।


🔹 সিস্টেম কীভাবে কাজ করে

  • সুপ্রিম ট্রাস্ট দেবোত্তর ট্রাস্টিদের কাছ থেকে জমি/ভবন ইজারা নেয়

  • বিনিয়োগকারীরা উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ প্রদান করেন

  • সুপ্রিম ট্রাস্ট জমি আধুনিকায়ন করে বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপযোগী করে

  • প্রকল্পগুলোর মধ্যে থাকতে পারে:

    • হোটেল / হোস্টেল
    • স্কুল / কোচিং সেন্টার
    • দোকান ও বাজার এলাকা
    • দুগ্ধ / প্রাণিসম্পদ প্রকল্প
    • মাইক্রো-এন্টারপ্রাইজ ও মাইক্রোফাইন্যান্স
  • স্থানীয় ছোট ব্যবসা ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেলে পরিচালিত হয়

  • আয় ভাগ করা হয়:

    • স্থানীয় ইউনিট
    • উপজেলা ও জেলা
    • সেন্ট্রাল কমিটি
    • সুপ্রিম ট্রাস্ট

1.9 - 9️⃣ বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ – সংবিধান

এখানে বাংলাদেশ হিন্দু সমাজের পূর্ণ সংবিধানের একটি সহজ-সরল ইংরেজি সংস্করণের বাংলা রূপ দেওয়া হলো।

👉 একজন ব্যক্তি শুধু একটি ইউনিটের সদস্য হতে পারেন। তবে ইচ্ছা করলে অন্য ইউনিটে স্থানান্তর হতে পারবেন, কোনো সুবিধা হারাবেন না।

এটি বাংলাদেশ হিন্দু সমাজের পূর্ণ সংবিধানের একটি সরল সংস্করণ।

1. সদস্যপদ

1.1 নতুন সদস্য পরিচয় করানো

কোনো নতুন সদস্যকে অবশ্যই একজন বিদ্যমান সদস্য পরিচয় করাবেন। শুরুতে সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট-ই সব নতুন সদস্যকে পরিচয় করাবেন। পরে যাঁরা আসবেন, তাঁরাও আরও সদস্য আনবেন। এভাবে স্বাভাবিকভাবে কমিউনিটি বড় হবে।

একজন ব্যক্তি শুধু একটি ইউনিটের সদস্য হতে পারবেন। তবে ইউনিট বদল করলেও সদস্য সুবিধা একই থাকবে।


1.2 ভোটের ক্ষমতা ও তার বৃদ্ধি

একজন সদস্য যতজনকে পরিচয় করান—সরাসরি বা তাদের মাধ্যমে—তত বেশি ভোটশক্তি পান।

  • যদি সদস্য A মোট ১০০ জন আনেন, তাঁর ভোটশক্তি = ১০০ + ১ = ১০১
  • সদস্য B কাউকে না আনলে তাঁর ভোটশক্তি =

এই ভোটশক্তির পার্থক্যেই নির্বাচন ফল নির্ধারিত হয়। যেমন, যদি A ভোট দেন X-কে আর B ভোট দেন Y-কে, তবে X জেতেন ১০০ ভোটে (১০১ – ১ = ১০০)।

ভোটশক্তির বংশগত বৃদ্ধি

ভোটশক্তি পুরো ডাউনলাইন যোগ করে বাড়ে।
যদি A ১০০ জন আনেন, এবং সেই ১০০ জন মিলে আরও ১০০০ জন আনেন, তবে A-এর ভোটশক্তি = ১ + ১০০ + ১০০০ = ১১০১


2. সদস্যদের ধরণ

সংগঠনে তিন ধরনের সদস্য থাকবে:


2.1 বন্ধু সদস্য

  • যেকোনো বিদ্যমান সদস্য পরিচয় করান
  • কোনো ফি নেই
  • ভোট দিতে পারবেন না
  • নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না
  • সুবিধা পাবেন না
  • মূল ভূমিকা—কমিউনিটিকে সমর্থন ও উৎসাহ দেওয়া

2.2 বেনিফিশিয়ারি সদস্য

  • সদস্য ফি দিতে হবে
  • ভোট দিতে পারবেন
  • নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না
  • সুবিধা নিতে পারবেন
  • কল্যাণসেবা, সহায়তা ও বিভিন্ন সুবিধা পাবেন

2.3 স্বেচ্ছাসেবক সদস্য

  • সদস্য ফি দিতে হবে
  • ভোট দিতে পারবেন
  • নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন (শুধু ভলান্টিয়াররাই দাঁড়াতে পারবেন)
  • সুবিধা পাবেন না
  • ভূমিকা—সেবা, নেতৃত্ব ও সংগঠনের দায়িত্ব পালন

3. সদস্যভুক্তি প্রক্রিয়া

  1. কোনো বিদ্যমান সদস্য আগ্রহী ব্যক্তির নাম–ফোন–ইমেইল সংগ্রহ করেন
  2. তাঁকে পরিচয়দাতার নামে Friend Member হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়
  3. Friend Member সাহায্য চাইলে ইউনিট কমিটি তাঁকে
    Beneficiary Member করতে পারে
  4. নতুবা ইউনিট কমিটি তাঁকে Volunteer Member হতে উৎসাহিত করে

ভলান্টিয়ার হওয়ার শর্ত

  • অন্তত ১০ জন Friend Member পরিচয় করাতে হবে
  • অন্তত ১ বছর সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে
    (নির্বাচনে দাঁড়ানো বা এক্সিকিউটিভ কমিটিতে যোগ দিতে হলে)

বার্ষিক শ্রেণি পরিবর্তন

প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় (অক্টো–নভে):

  • সদস্যরা তাদের শ্রেণি বদল করতে পারবেন
    • (Beneficiary → Volunteer বা Volunteer → Beneficiary ইত্যাদি)
  • ইউনিট পরিবর্তনও করতে পারবেন

4. বার্ষিক নির্বাচন ব্যবস্থা

নির্বাচন ধাপে ধাপে হয়: ইউনিট → উপজেলা → জেলা → কেন্দ্র।


4.1 ইউনিট প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ডিসেম্বরে প্রথম সপ্তাহে
  • ভোটার: সেই ইউনিটের সব ভলান্টিয়ার ও বেনিফিশিয়ারি
  • প্রত্যেকে নিজের ভোটশক্তি অনুযায়ী ভোট দেন

4.2 উপজেলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ডিসেম্বরে দ্বিতীয় সপ্তাহে
  • ভোটার: নতুন নির্বাচিত সব ইউনিট প্রেসিডেন্ট
  • ভোটের ওজন = সেই ইউনিটে মোট ভলান্টিয়ার + বেনিফিশিয়ারি সংখ্যা

4.3 জেলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ডিসেম্বরে তৃতীয় সপ্তাহে
  • ভোটার: সংশ্লিষ্ট জেলার নতুন উপজেলা প্রেসিডেন্টরা
  • ভোটের ওজন = ওই উপজেলার ভলান্টিয়ার + বেনিফিশিয়ারি সংখ্যা

4.4 কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

  • ডিসেম্বরে চতুর্থ সপ্তাহে
  • ভোটার: নতুন নির্বাচিত সব জেলা প্রেসিডেন্ট
  • ভোটের ওজন = জেলায় মোট ভলান্টিয়ার + বেনিফিশিয়ারি

4.5 অনলাইন ভোটিং

বেশিরভাগ নির্বাচন অনলাইনে হবে—দ্রুত, স্বচ্ছ ও নির্ভুল ফলের জন্য।


5. কমিটির ধরণ

সংগঠনে তিন ধরনের কমিটি থাকবে:


5.1 সুপ্রিম কমিটি

  • মূল ট্রাস্টের ট্রাস্টিদের নিয়ে গঠিত
  • অন্তর্ভুক্ত:
    • সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট
    • সুপ্রিম ভাইস প্রেসিডেন্ট
    • লাইফটাইম মেম্বাররা
  • মেয়াদ: আজীবন
  • সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা
  • ট্রাস্টিরা সংখ্যাগরিষ্ঠে:
    • কাউকে অপসারণ করতে পারেন
    • নতুন সদস্য নিয়োগ করতে পারেন

5.2 স্থায়ী কমিটি

সব স্তরে থাকে:

  • কেন্দ্র
  • জেলা
  • উপজেলা
  • সিটি কর্পোরেশন
  • ইউনিট

মূল বৈশিষ্ট্য

  • শুরুতে সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট সদস্য নিয়োগ করেন (ন্যূনতম ৫ জন)
  • মেয়াদ: আজীবন
  • সেক্রেটারি প্রধান
  • নতুন নির্বাচিত এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থায়ী সদস্য হন
  • দৈনন্দিন কাজে যুক্ত হতে পারবেন না
  • এক্সিকিউটিভ কমিটির সিদ্ধান্ত দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে বাতিল করতে পারেন
  • বিরোধ হলে পরের স্তরের স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়

চেক সই

শুধু পার্মানেন্ট কমিটি সেক্রেটারি এবং এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট যৌথভাবে সই করবেন।


5.3 কার্যনির্বাহী কমিটি

আছে—

  • কেন্দ্র
  • জেলা
  • উপজেলা
  • সিটি কর্পোরেশন
  • ইউনিট

মূল বৈশিষ্ট্য

  • প্রধান: প্রেসিডেন্ট (বার্ষিক নির্বাচন)
  • সর্বোচ্চ ১০ জন সদস্য মনোনয়ন দিতে পারেন (যোগ্য ভলান্টিয়ারদের মধ্যে)
  • সব দৈনন্দিন দায়িত্ব তাদের
  • প্রেসিডেন্টের ভেটো ক্ষমতা আছে
  • সদস্য অপসারণ/নিয়োগ করতে পারেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেক্রেটারিকে জানিয়ে

চেক সই

চেক সই হবে—

  • স্থায়ী কমিটি সেক্রেটারি
  • এক্সিকিউটিভ কমিটি প্রেসিডেন্ট

6. কমিটির শ্রেণিবিন্যাস

  1. সুপ্রিম কমিটি – সর্বোচ্চ নীতি কর্তৃপক্ষ
  2. কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটি – দীর্ঘমেয়াদি কৌশল
  3. কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি – জাতীয় কার্যক্রম
  4. জেলা স্থায়ী & কার্যনির্বাহী কমিটিs
  5. উপজেলা স্থায়ী & কার্যনির্বাহী কমিটিs
  6. সিটি কর্পোরেশন কমিটিs
  7. ইউনিট স্থায়ী & কার্যনির্বাহী কমিটিs

সব কমিটি উপরের কমিটির অধীনে কাজ করে।


7. রাজস্ব বণ্টন ব্যবস্থা

সব ফি, দান ও আয়ের বণ্টন উপরের স্তরে ওঠে।

উদাহরণ:

একটি ইউনিট ১০০ টাকা আয় করলে—

  • ইউনিট রাখে ৫০ টাকা
  • ৫০ টাকা উপজেলা যায়
  • উপজেলা রাখে ২৫, পাঠায় ২৫ জেলা
  • জেলা রাখে ১২.৫, পাঠায় ১২.৫ কেন্দ্র
  • কেন্দ্র রাখে ৬.২৫, পাঠায় ৬.২৫ সুপ্রিম কমিটি

টাকা ব্যবহার

  • এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট কমিউনিটি উন্নয়নে টাকা ব্যবহার করতে পারেন
  • আগের বছরের টাকা খরচে স্থায়ী কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন চাই
  • সুপ্রিম কমিটি বার্ষিক অডিট করে

8. বার্ষিক বাজেট

১ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্টরা দায়িত্ব নেন। তাঁরা স্থায়ী কমিটির সদস্য হন এবং সর্বোচ্চ ১০ জন ভলান্টিয়ার নিয়ে এক্সিকিউটিভ কমিটি করেন।

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তাঁরা—

  • পূর্ণ ৫২-সপ্তাহের বাজেট তৈরি করেন
  • স্থায়ী কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন নেন

9. নতুন ইউনিট গঠন

যেখানে নতুন ইউনিট সম্ভব:

  1. সুপ্রিম প্রেসিডেন্ট ন্যূনতম ৫ সদস্যের স্থায়ী কমিটি তৈরি করেন
  2. সদস্যরা অন্তত ১০০ ভলান্টিয়ার জোগাড় করেন
  3. কমিউনিটিকে সক্রিয় করা হয়, গণতান্ত্রিকভাবে এক্সিকিউটিভ কমিটি গঠিত হয়
  4. ভলান্টিয়াররা দেবোত্তর সম্পত্তি ট্রাস্টগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখে
  5. স্থানীয় বিনিয়োগকারী চিহ্নিত ও উৎসাহিত করা হয়

জমি ও ব্যবসায়িক মডেল

  • সুপ্রিম ট্রাস্ট দেবোত্তর ট্রাস্ট থেকে জমি/বিল্ডিং লিজ নেয়

  • বিনিয়োগকারীরা উন্নয়ন করে

  • প্রকল্পসমূহ:

    • হোটেল, হোস্টেল
    • স্কুল, কোচিং সেন্টার
    • দোকান
    • গবাদি ও কৃষি প্রকল্প
    • মাইক্রোফাইন্যান্স
  • ব্যবসা ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেল-এ চলবে

লাভ বণ্টন

সুপ্রিম ট্রাস্ট আয় সংশ্লিষ্ট সব কমিটি ও অংশীদারদের মধ্যে ভাগ করবে।


1.10 - 🔟 সদস্য ফি ও কাঠামো

আমরা একটি সহজ নীতি অনুসরণ করি যাতে পক্ষপাত বা স্বার্থের সংঘর্ষ না হয়: যারা সুবিধা নেবে তারা সিদ্ধান্তে অংশ নেবে না; এবং যারা সিদ্ধান্ত নেবে তারা কোনো সুবিধা নেবে না।

👉 শুধুমাত্র আর্থিকভাবে অবদানকারী সদস্যদেরই থাকবে ভোটাধিকার

সময়ের সাথে দেখা গেছে—অনেকে সামাজিক বা কমিউনিটি কাজে জড়ালেও ধীরে ধীরে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। কারণ—অনেক মত, অনেক তর্ক, কিন্তু কাজ এগোয় খুব কম। যখন ব্যক্তিগত যোগাযোগ বা বিনিয়োগ থাকে না, তখন মানুষ ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়।

কিন্তু কেউ সামান্য ফি দিলেও—তাদের দায়বদ্ধতা বাড়ে। তারা চায় তাদের দেওয়া টাকা সঠিকভাবে, স্বচ্ছভাবে, এবং অর্থবহ কাজে ব্যবহার হোক। এই কারণেই সক্রিয় সদস্যদের অবশ্যই সদস্য ফি প্রদান করতে হয়। আর্থিকভাবে অবদান রাখার পরেই তারা ভোটাধিকার পায়।

আমরা একটি সহজ নীতি মানি—যারা সুবিধা নেন তারা সিদ্ধান্ত নেবেন না; আর যারা সিদ্ধান্ত নেন তারা কোনো সুবিধা নেবেন না।


সদস্যপদ ধরণ

🟦 বন্ধু

  • বার্ষিক ফি: 0 টাকা
  • সময় প্রতিশ্রুতি: মাসে অন্তত ১ দিন
    Friend সদস্যরা শুভাকাঙ্ক্ষী—বর্তমান কোনো সদস্য তাদের পরিচয় করান। তারা ফি দেন না, ভোটাধিকার নেই, নির্বাচন করতে পারেন না, এবং কোনো সুবিধাও পান না।

🟩 বেনিফিশিয়ারি

  • বার্ষিক ফি: 100 টাকা
  • সময় প্রতিশ্রুতি: সপ্তাহে অন্তত ১ দিন
    Beneficiary সদস্যরা সামান্য ফি দেন এবং সুবিধা গ্রহণের যোগ্য হন। তারা ভোট দিতে পারেন, কিন্তু নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন না

🟧 স্বেচ্ছাসেবক

  • বার্ষিক ফি: 1,000 টাকা
  • সময় প্রতিশ্রুতি: সপ্তাহে অন্তত ১ দিন
    স্বেচ্ছাসেবক পূর্ণ সদস্য ফি দেন, ভোট দিতে পারেন, এবং নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন। তবে তারা কোনো সুবিধা নিতে পারবেন না

আমরা কাকে খুঁজছি?

আমরা কাজ করি বহু ক্ষেত্রে—স্বাস্থ্যসেবা, আইনি সহায়তা, কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট, ঐতিহ্য রক্ষা, জীবিকাশ্রয়, ডকুমেন্টেশন, ডিজিটাল অপারেশন ইত্যাদি।
যে কেউ আন্তরিক মন নিয়ে কাজ করতে চাইলে স্বাগত। ভাল কাজের ইচ্ছাই এখানে প্রধান যোগ্যতা।

যে কোনোভাবে অবদান রাখতে ইচ্ছুক সবার জন্য আমাদের দরজা খোলা।

👉 সদস্য হতে আবেদন করুন—আপনার যাত্রা এখান থেকেই শুরু।


সদস্যপদ নির্দেশিকা

আমাদের নিয়ম খুব সহজ, যাতে যে কেউ সহজে যুক্ত হতে পারে:

  • আমরা ধর্মবিশ্বাসে বাধা দিই না—যে কোনো ধর্ম বা নাস্তিকতা গ্রহণযোগ্য।
  • আমরা খাদ্যাভ্যাসে বাধা দিই না—নিরামিষ, আমিষ—সবই গ্রহণযোগ্য।
  • কোনো নির্দিষ্ট পোশাকের নিয়ম নেই; স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি সম্মান থাকলেই যথেষ্ট।
  • ব্যক্তিগত উপাসনা ও আচার সম্পূর্ণ আপনার নিজের বিষয়।
  • ব্যক্তিগত জীবনযাপনে আমরা হস্তক্ষেপ করি না।

আমরা কিভাবে কাজ করি

  • সব যোগাযোগ ডিজিটাল—প্রিন্টেড কপি নয় (আইনগত প্রয়োজনে ছাড়া)।
  • সব হিসাব-নিকাশ, নথি ও রেকর্ড ডিজিটালি রাখা হয়।
  • নির্দিষ্ট অফিস সময় নেই; কাজ সময়মতো সম্পন্ন হলেই যথেষ্ট।
  • মূল দল সপ্তাহান্তে বৈঠক করে; অন্যরা সুবিধামতো যোগ দেয়।
  • সব সদস্যের কর্মকাণ্ড ডিজিটাল রিমোট সিস্টেমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

সদস্য প্রয়োজনীয়তা

স্বচ্ছতা ও যোগাযোগ বজায় রাখতে প্রত্যেক সদস্যের থাকতে হবে:

  1. নিজস্ব Gmail অ্যাকাউন্ট (অফিস ইমেইল নয়)
  2. একটি স্মার্টফোন (অ্যান্ড্রয়েড বা iOS)
  3. Telegram অ্যাপ ইনস্টল করা ও সক্রিয়
  4. অবশ্যই @BangladeshHinduSamaj অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করতে হবে

নতুন সদস্যদের প্রথম কাজ

টেলিগ্রাম চ্যানেলে গিয়ে সর্বশেষ সদস্যপদ পোস্টে মন্তব্য করুন:

  • আপনার নাম
  • দেশ / রাজ্য / জেলা / উপজেলা / এলাকা
  • যে ইউনিটে যোগ দিতে চান

এই ধাপ সম্পন্ন করার পরেই সদস্যপদ প্রক্রিয়া এগোবে।

সব কাজের যোগাযোগ কেবলমাত্র টেলিগ্রামেই হবে।
Email, WhatsApp, বা ফোনে কোনো কাজের যোগাযোগ অনুমোদিত নয়।


2 - টেকনোলজি

এই বিভাগে আমরা আমাদের কাজকে এগিয়ে নিতে যে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করি, সেগুলি নিয়ে আলোচনা করি। টুলস, প্ল্যাটফর্ম, কার্যপদ্ধতি থেকে শুরু করে সেরা অনুশীলন—সবই এখানে সহজ ভাষায় তুলে ধরা হবে। আমরা কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করি, কেন ব্যবহার করি, এবং কীভাবে এগুলো আমাদের কাজকে আরও শক্তিশালী করে তোলে—এই স্থান আপনাকে সেসব বিষয়েই আপডেট রাখবে।

2.1 - কীভাবে Telegram অ্যাকাউন্ট সেটআপ করবেন

বাংলাদেশ হিন্দু সমাজের সদস্য হতে গেলে আপনার একটি টেলিগ্রাম একাউন্ট থাকা আবশ্যক। কারন সদস্যদের মধ্যকার সমস্ত যোগাযোগ একমাত্র টেলিগ্রামের মাধ্যমেই হয়। আমরা সবাই রিমোট ওয়ার্ক প্রণালীতে (remote work mode) কাজ করি। আপনি যেখানেই থাকুন না কেনো, আপনি আপনার হোম ডিস্ট্রিকের জন্য কাজ করতে পারবেন দূরে থেকেও।
কীভাবে Telegram অ্যাকাউন্ট সেটআপ করবেন
কীভাবে Telegram অ্যাকাউন্ট সেটআপ করবেন

বাংলাদেশ হিন্দু সমাজের সদস্য হতে গেলে আপনার একটি টেলিগ্রাম একাউন্ট থাকা আবশ্যক। কারন সদস্যদের মধ্যকার সমস্ত যোগাযোগ একমাত্র টেলিগ্রামের মাধ্যমেই হয়। আমরা সবাই রিমোট ওয়ার্ক প্রণালীতে (remote work mode) কাজ করি। আপনি যেখানেই থাকুন না কেনো, আপনি আপনার হোম ডিস্ট্রিকের জন্য কাজ করতে পারবেন দূরে থেকেও। আমাদের সমস্ত সাপ্তাহিক মিটিং হবে টেলিগ্রাম গ্রুপ ভিডিও / অডিও কলে। মুখোমুখি মিটিং হবে প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার অথবা কোন বিশেষ অনুষ্টানে।

নিজের নিরাপত্তার জন্য আপনার ফোন নম্বর অপরিচিত কাউকে বা সোশাল সাইটে শেয়ার করবেন না। এজন্য টেলিগ্রামে আপনার ফোন নম্বর গোপন রাখুন। এজন্য টেলিগ্রাম একাউন্ট তৈরি করার পর, টেলিগ্রামে একটা ইউজারনেম (username) তৈরী করুন। ইউজারনেমের পেছনে _bdh যোগ করবেন। ধরুন আপনার নাম Pranab Kumar Sen, তাহলে ইউজারনেম নিন, pranab_bdh, এটা না পেলে pranabkumar_bdh, অথবা pranab1_bdh বা pranab2_bdh নিন।

টেলিগ্রাম কী?

টেলিগ্রাম একটি মেসেজিং অ্যাপ, যা গতি এবং নিরাপত্তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এটি অত্যন্ত দ্রুত, সহজ এবং বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। আপনি একই সময়ে সব ডিভাইসে টেলিগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন— আপনার বার্তাগুলি আপনার ফোন, ট্যাবলেট বা কম্পিউটারের যেকোনো সংখ্যক ডিভাইসে সহজেই লিঙ্ক হয়। টেলিগ্রাম বিশ্বের শীর্ষ ৫টি সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপের মধ্যে একটি, যার ৯৫ কোটির বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে।

টেলিগ্রামে আপনি যেকোনো ধরণের বার্তা, ছবি, ভিডিও এবং ফাইল (যেমন doc, zip, mp3 ইত্যাদি) পাঠাতে পারেন, পাশাপাশি ২,০০,০০০ সদস্য পর্যন্ত গ্রুপ বা সীমাহীন শ্রোতার জন্য চ্যানেল তৈরি করতে পারেন। আপনি ফোন কন্টাক্টে বার্তা পাঠাতে পারেন বা ব্যবহারকারীর নামের মাধ্যমে মানুষকে খুঁজে পেতে পারেন। ফলে, টেলিগ্রাম হল SMS এবং ইমেলের সম্মিলিত একটি মাধ্যম, যা আপনার ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক যোগাযোগের সব চাহিদা পূরণ করতে পারে।

টেলিগ্রাম কিভাবে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে আলাদা?

হোয়াটসঅ্যাপের বিপরীতে, টেলিগ্রাম একটি ক্লাউড-ভিত্তিক মেসেঞ্জার যেখানে নিরবচ্ছিন্ন সিঙ্ক থাকে। এর ফলে, আপনি আপনার বার্তাগুলি একাধিক ডিভাইস থেকে একসাথে অ্যাক্সেস করতে পারেন, যেমন ট্যাবলেট এবং কম্পিউটার, এবং একবারে ২ জিবি পর্যন্ত ফটো, ভিডিও এবং ফাইল (ডক, জিপ, এমপিথ্রি, ইত্যাদি) শেয়ার করতে পারেন।

টেলিগ্রাম আপনার ডিভাইসে ১০০ এমবি-এরও কম জায়গা নেয় – আপনি আপনার সমস্ত মিডিয়া ক্লাউডে রাখতে পারেন, কিছু মুছতে না হয় – শুধু ক্যাশ পরিষ্কার করে স্থান মুক্ত করুন।

টেলিগ্রামের মাল্টি-ডেটা সেন্টার অবকাঠামো এবং এনক্রিপশনের কারণে এটি দ্রুত এবং অনেক বেশি নিরাপদ। এর সাথে, টেলিগ্রামে ব্যক্তিগত মেসেজিং বিনামূল্যে এবং চিরকাল বিনামূল্যেই থাকবে – কোনো বিজ্ঞাপন, সাবস্ক্রিপশন ফি নেই।

কোন ডিভাইসগুলোতে টেলিগ্রাম ব্যবহার করা যায়

আপনি স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং এমনকি কম্পিউটারেও টেলিগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন। iOS (11.0 এবং তার উপরের), Android (6.0 এবং তার উপরের) জন্য অ্যাপ রয়েছে, একটি নেটিভ macOS অ্যাপ এবং Windows, macOS, ও Linux-এর জন্য একটি ইউনিভার্সাল ডেস্কটপ অ্যাপ রয়েছে। এছাড়াও, টেলিগ্রাম ওয়েব ব্যবহার করে দ্রুত কিছু কাজ সেরে নিতে পারেন।

কীভাবে টেলিগ্রাম ইনস্টল করবেন?

অ্যান্ড্রয়েডের জন্য গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপস ইনস্টল করুন

গুগল প্লে থেকে টেলিগ্রাম ডাউনলোড করুন।

অইফোনের জন্য Apple App Store থেকে অ্যাপস ইনস্টল করুন

Apple App Store থেকে টেলিগ্রাম ডাউনলোড করুন।

অ্যান্ড্রয়েডের জন্য টেলিগ্রাম (সরাসরি ডাউনলোড)

আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের জন্য টেলিগ্রাম এখান থেকে সরাসরি ডাউনলোড করতে পারেন। এই সংস্করণে কম সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং এটি সরাসরি telegram.org থেকে স্বয়ংক্রিয় আপডেট পায়।

এই Telegram লিংকে ভিডিওতে দেখানো হয়েছে কীভাবে আপনার Android ডিভাইসে টেলিগ্রাম ইনস্টল করতে হয়।

কিভাবে ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি Telegram .APK ইনস্টল করবেন?

আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের জন্য সর্বশেষ Telegram সংস্করণ টেলিগ্রাম ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারেন।

বাইরের উৎস থেকে .APK ডাউনলোড করার সময়, যেমন ওয়েবসাইট বা অন্যান্য অ্যাপ থেকে, আপনাকে ইনস্টল করার জন্য আপনার ডিভাইসে একটি প্রাসঙ্গিক অনুমতি সক্রিয় করতে হবে। আপনার ফোন সে কোম্পানীর, সেই অনুযায়ী পারমিশান দিতে হবে, নীচে দেখুন।

Google Pixel: Settings > Apps and notifications > Advanced > Special app access > Install unknown apps > আপনার ব্রাউজার অ্যাপ নির্বাচন করুন > Allow from this source

Huawei (Android 8 এবং আগের): Settings > Security & privacy > More > Install unknown apps > আপনার ব্রাউজার অ্যাপ নির্বাচন করুন > Allow app installs

Huawei (Android 10+): Settings > Security > More settings > Install apps from external sources > আপনার ব্রাউজার অ্যাপ নির্বাচন করুন > Allow app installs

Motorola: Settings > Apps & notifications > আপনার ব্রাউজার অ্যাপ নির্বাচন করুন > Install unknown apps > Allow from this source

Oppo: Settings > Additional settings > Safety & Privacy > Install Apps from Unknown Source > OK

OnePlus: Settings > Apps & notifications > Special app access > Install unknown apps > আপনার ব্রাউজার অ্যাপ নির্বাচন করুন > Allow from this source

Sony: Settings > Apps & notifications > Special app access > Install unknown apps > আপনার ব্রাউজার অ্যাপ নির্বাচন করুন > Allow from this source

Samsung (Android 8 এবং আগের): Settings > Lock screen and security > Unknown sources > OK

Samsung (Android 10+): Settings > Apps > Special access > Install unknown apps > আপনার ব্রাউজার অ্যাপ নির্বাচন করুন > Allow from this source

Xiaomi (Android 8 এবং আগের): Settings > Additional settings > Privacy > Unknown sources > OK

Xiaomi (Android 10+): Settings > Privacy protection > Special permissions > Install unknown apps > আপনার ব্রাউজার অ্যাপ নির্বাচন করুন > Allow from this source

কীভাবে Telegram অ্যাকাউন্ট সেটআপ করবেন

অ্যান্ড্রয়েডের মোবাইল অ্যাপে কীভাবে Telegram অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন

ধাপ ১: Telegram অ্যাপটি খুলুন
আপনার মোবাইল ফোনে Telegram আইকনটি খুঁজে নিন এবং সেটিতে ক্লিক করুন।

আইকনটি খুঁজে নিন

ধাপ ২: “Start Messaging” এ ক্লিক করুন
Telegram অ্যাপটি খোলার পর, “Start Messaging” বাটনে ক্লিক করে অ্যাকাউন্ট তৈরি প্রক্রিয়া শুরু করুন।

Start Messaging

ধাপ ৩: আপনার দেশ নির্বাচন করুন, মোবাইল নম্বর লিখুন এবং তীর চিহ্নে ক্লিক করুন
এখন আপনার দেশের নাম নির্বাচন করুন এবং মোবাইল নম্বর দিন যাতে আপনি কলের মাধ্যমে লগইন করতে পারেন। দেশের নাম এবং মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর তীর চিহ্নে ক্লিক করুন পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য।

মোবাইল নম্বর লিখুন

ধাপ ৪: কলের জন্য অপেক্ষা করুন
আপনার নম্বর দেওয়ার পর একটি মিসড কলের মাধ্যমে আপনার নম্বর নিশ্চিত করার জন্য অপেক্ষা করুন।

একটি মিসড কলের

ধাপ ৫: আপনার নাম লিখুন এবং তীর চিহ্নে ক্লিক করুন
এখন আপনার প্রথম এবং শেষ নাম লিখুন যা আপনার টেলিগ্রাম প্রোফাইলে প্রদর্শিত হবে এবং পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য তীর চিহ্নে ক্লিক করুন।

নাম লিখুন

ধাপ ৬: Telegram অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে
এখন আপনার Telegram অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেছে। এখন আপনি ভয়েস এবং ভিডিও কল, টেক্সট মেসেজিংসহ অনেক কিছু করতে পারবেন।

অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেছে

আইফোনে কীভাবে Telegram অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন

ধাপ ১: Telegram অ্যাপটি খুলুন

Telegram অ্যাপটি চালু করতে, আপনার ডিভাইসে Telegram অ্যাপটি খুঁজে বের করুন এবং সেটিতে ক্লিক করুন।

Telegram অ্যাপ খুলুন

ধাপ ২: “Start Messaging” এ ক্লিক করুন

Telegram অ্যাপটি খোলার পর, “Start Messaging” বোতামে ক্লিক করুন পরবর্তী ধাপে যেতে।

Start Messaging এ ক্লিক করুন

ধাপ ৩: দেশ নির্বাচন করুন, মোবাইল নম্বর দিন এবং “Continue” তে ক্লিক করুন

এখন আপনাকে আপনার মোবাইল নম্বর যাচাই করতে হবে। প্রথমে আপনার দেশ নির্বাচন করুন, তারপর মোবাইল নম্বরটি প্রবেশ করান। এরপর “Continue” বোতামে ক্লিক করুন।

দেশ নির্বাচন করুন, মোবাইল নম্বর দিন, “Continue” তে ক্লিক করুন

ধাপ ৪: যাচাইকরণ কোড প্রবেশ করান

এই ধাপে একটি ছোট কোড, যা OTP নামে পরিচিত, আপনার মোবাইল নম্বর বা Telegram-এ পাঠানো হবে। কেবল কোডটি প্রবেশ করান এবং আপনি এই ধাপটি সম্পন্ন করতে পারবেন।

কোড প্রবেশ করান

ধাপ ৫: Telegram অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে

এখন আপনার Telegram অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে এবং আপনি সহজেই Telegram-এর সেটিংসে গিয়ে আপনার অ্যাকাউন্টে যেকোনো পরিবর্তন করতে পারবেন। এভাবেই আপনি আপনার iPhone থেকে সহজেই একটি Telegram অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন।

Telegram অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে

কীভাবে ইউজারনেম সেটআপ করবেন

আপনার টেলিগ্রাম ইউজারনেম তৈরি করুন – অ্যান্ড্রয়েড

আপনার টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টকে আমাদের সদস্যপদ বিবরণে সংযুক্ত করতে হলে আপনাকে আপনার টেলিগ্রাম ইউজারনেম জানাতে হবে। এই পৃষ্ঠাটি আপনাকে কীভাবে আপনার টেলিগ্রাম ইউজারনেম খুঁজে পাবেন বা তৈরি করবেন তা দেখাবে।

  1. টেলিগ্রাম অ্যাপটি চালু করুন।
  2. মেনু (Hamburger Menu) নির্বাচন করুন।
  3. সেটিংস মেনু অপশনটি নির্বাচন করুন।

Telegram সেটিংস মেনু

যদি আপনার ইতিমধ্যেই একটি ইউজারনেম থাকে, তবে এটি এখানে দেখানো হবে, নিচের ছবির মতো:

Telegram ইউজারনেম

যদি আপনি আপনার ইউজারনেম যোগ করতে বা সম্পাদনা করতে চান, তাহলে শুধু ইউজারনেম এলাকার উপর ট্যাপ করুন এবং নতুন একটি প্রবেশ করান।

Telegram সম্পাদনা

এই ইউজারনেমটি সাবধানে মনে রাখুন কারণ আপনাকে এটি আমাদের দিতে হবে।

টেলিগ্রাম ইউজারনেম – আইওএস

প্রথমে নিশ্চিত করুন আপনার ডিভাইসে Telegram ইনস্টল করা আছে।

আপনার Telegram অ্যাকাউন্টকে আমাদের সদস্য বিবরণের সাথে সংযুক্ত করতে হলে, আপনাকে আপনার Telegram Username জানাতে হবে। এই পৃষ্ঠাটি আপনাকে কীভাবে আপনার Telegram Username পেতে হবে তা দেখাবে।

Telegram অ্যাপ লোড করুন:

  1. Settings আইকনটি নির্বাচন করুন (নিচের ছবিতে সবুজ রঙে 1 নম্বর দিয়ে চিহ্নিত)

Telegram Settings

  1. আপনার ইউজারনেমটি আপনার আইকনের নিচে থাকবে (সবুজ রঙে username দিয়ে চিহ্নিত)
  2. যদি আপনার ইউজারনেম সম্পাদনা করতে চান (অথবা যদি নতুন তৈরি করতে হয়), তাহলে Edit বাটনে ক্লিক করুন (সবুজ রঙে 2 নম্বর দিয়ে চিহ্নিত)

যদি আপনি উপরের দ্বিতীয় বিকল্পটি নির্বাচন করে ইউজারনেম সম্পাদনা করতে চান, তাহলে আপনি একটি নতুন স্ক্রিনে নিয়ে যাওয়া হবে যা নিচের ছবির মতো দেখাবে।
আপনার ইউজারনেমটি যদি সম্পাদনা করতে চান, (সবুজ রঙে বৃত্ত দিয়ে চিহ্নিত) তাহলে সেটিতে ক্লিক করুন, এবং এটি আপনাকে নতুন ইউজারনেম তৈরির জন্য সম্পাদনা স্ক্রিনে নিয়ে যাবে।

Telegram username

এই ইউজারনেমটি সাবধানে লিখে রাখুন কারণ এটি পরে প্রয়োজন হবে।

টেলিগ্রামে আপনার ফোন নম্বর গোপন রাখুন

নিজের নিরাপত্তার জন্য আপনার ফোন নম্বর অপরিচিত কাউকে বা সোশাল সাইটে শেয়ার করবেন না। এজন্য টেলিগ্রামে আপনার ফোন নম্বর গোপন রাখুন। কীভাবে গোপন করবেন তা নীচে দেখুন।

  1. টেলিগ্রাম খুলুন।
  2. তিনটি বার (Hamburger Menu) আইকনে ট্যাপ করে “Settings” নির্বাচন করুন।
  3. Privacy and Security এ যান এবং তারপর Phone Number সেকশনে যান।

Telegram Privacy

  1. “Who can see my phone number” এর অধীনে বেছে নিন:
    • My contacts: কেবলমাত্র আপনার ফোন কন্টাক্টে সেভ করা ব্যক্তিরা আপনার ফোন নম্বর দেখতে পারবে।
    • Nobody: আপনার ফোন নম্বর সবাই থেকে লুকিয়ে রাখুন।
    • Everybody: আপনার ফোন নম্বর সবার জন্য দৃশ্যমান করুন যারা আপনার সাথে চ্যাট শুরু করে।

Telegram phone

যদি আপনি “Nobody” বেছে নেন, তাহলে আপনি আরও নির্ধারণ করতে পারবেন “Who can find you by your number”: হয় “everybody” বা “your contacts”। এটি আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে কে আপনার প্রোফাইল খুঁজে পেতে বা আপনার সাথে চ্যাট করতে পারবে, এমনকি তাদের কাছে আপনার ফোন নম্বর থাকলেও।

Telegram Nobody

টেলিগ্রাম ব্যবহারের সময় সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নিচের পদক্ষেপগুলো নিন:

  • মেসেজের এনড-টু-এনড এনক্রিপশন নিশ্চিত করতে সবসময় Secret Chats ব্যবহার করুন।
  • আপনার লোকেশন রক্ষা করতে People Nearby ফিচারটি বন্ধ করে দিন।
  • আপনার IP ঠিকানা গোপন রাখতে VPN ব্যবহার করুন।

টেলিগ্রাম বেসিকস

প্রশ্ন: আমি কাকে বার্তা পাঠাতে পারি?

আপনি টেলিগ্রাম ব্যবহারকারী যাদের ফোন কন্টাক্টে রয়েছে, তাদের বার্তা পাঠাতে পারেন। এছাড়াও, আপনি টেলিগ্রামের সার্চ ফিল্ডে কারো ইউজারনেম লিখে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন - এর জন্য তাদের ফোন নম্বর জানার প্রয়োজন নেই।

প্রশ্ন: আমাকে কে যোগাযোগ করতে পারে?

যারা আপনার ফোন নম্বর জানে বা যাদের আপনি প্রথমে মেসেজ পাঠিয়েছেন, তারা টেলিগ্রামে আপনাকে যোগাযোগ করতে পারে।

যদি তারা আপনার ফোন নম্বর না জানে, তবে তারা নিচের ক্ষেত্রে আপনাকে খুঁজে পেতে পারে:

  • যখন আপনি এবং তারা একই গ্রুপের সদস্য হন।
  • আপনি যদি একটি পাবলিক ইউজারনেম সেট করেন। অন্যরা গ্লোবাল সার্চ ব্যবহার করে আপনার ইউজারনেম দিয়ে আপনাকে খুঁজে পেতে পারে।
  • আপনি যদি ‘পিপল নিয়ারবাই’ বিভাগে প্রদর্শিত হতে সাইন ইন করেন (এটি ডিফল্টভাবে বন্ধ থাকে)।

প্রশ্ন: আমি কিভাবে জানবো আমার কন্টাক্টে কারা টেলিগ্রাম ব্যবহার করছে?

আপনার কন্টাক্টে যারা টেলিগ্রাম ব্যবহার করছেন তারা আপনার কন্টাক্ট তালিকার উপরে প্রদর্শিত হবে। তাদের প্রোফাইল ছবি থাকবে।

প্রশ্ন: আমি কিভাবে আমার বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানাবো?

iOS: প্রাথমিক আমন্ত্রণগুলি সাধারণ SMS বার্তা হয়। আপনার ক্যারিয়ারের মাধ্যমে এরা স্ট্যান্ডার্ড আউটগোয়িং SMS হিসাবে চার্জ হবে (যদি iMessage এর মাধ্যমে না পাঠানো হয়)। অবশ্যই, বন্ধুদের এখানে আনার জন্য আপনার অন্য বিকল্পও রয়েছে। অন্য কোনো মেসেজিং পরিষেবা ব্যবহার করে ডাউনলোড লিংক পাঠানোর চেষ্টা করুন: ইমেল, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, বাস্তব টেলিগ্রাম — আপনি নাম দিন। লিংক: https://telegram.org/dl/

Android: অ্যাপ মেনু খুলুন (চ্যাট তালিকায় ডানদিকে সোয়াইপ করুন) > ‘ইনভাইট ফ্রেন্ডস’ নির্বাচন করুন। তারপর কোন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে আপনি আমন্ত্রণ পাঠাতে চান তা নির্বাচন করুন।

আপনার বন্ধুকে একটি t.me লিংক দিয়ে আপনার ইউজারনেম পাঠাতে পারেন, যাতে তারা আপনার ফোন নম্বর ছাড়াই সহজেই আপনাকে টেলিগ্রামে খুঁজে পায়।

প্রশ্ন: টিক চিহ্নগুলি কী বোঝায়?

  • এক টিক — বার্তাটি টেলিগ্রামের ক্লাউডে পৌঁছেছে এবং আপনার বন্ধুকে জানানো হয়েছে যদি তিনি বিজ্ঞপ্তি অনুমতি দেন।
  • দুই টিক — বার্তাটি পড়া হয়েছে (আপনার বন্ধু টেলিগ্রাম খুলেছেন এবং বার্তাটি দেখেছেন)।

আমাদের কাছে বার্তাগুলির জন্য ‘ডিভাইসে ডেলিভার করা হয়েছে’ স্ট্যাটাস নেই, কারণ টেলিগ্রাম আপনি যত খুশি ডিভাইসে চালাতে পারেন। সেক্ষেত্রে কোন বিশেষ ডিভাইসের জন্য সেই টিক চিহ্নটি হবে?

প্রশ্ন: আমি কি আমার ‘লাস্ট সিন’ সময় লুকাতে পারি?

আপনি প্রাইভেসি এবং সিকিউরিটি সেটিংসে কে এই তথ্য দেখতে পাবে তা বেছে নিতে পারেন।

মনে রাখবেন যে আপনি যাদের সাথে আপনার ‘লাস্ট সিন’ শেয়ার করেন না, তারা আপনার লাস্ট সিন দেখতে পাবে না। তবে তারা একটি আনুমানিক লাস্ট সিন মান দেখতে পাবে। এটি স্টলকারদের দূরে রাখে তবে বুঝতে সাহায্য করে যে কেউ টেলিগ্রামে অ্যাক্সেসযোগ্য কিনা। চারটি সম্ভাব্য আনুমানিক মান রয়েছে:

  • সম্প্রতি দেখা গেছে — ১ সেকেন্ড থেকে ২-৩ দিনের মধ্যে যেকোনো সময়
  • সপ্তাহের মধ্যে দেখা গেছে — ২-৩ থেকে সাত দিনের মধ্যে
  • মাসের মধ্যে দেখা গেছে — ৬-৭ দিন থেকে এক মাসের মধ্যে
  • অনেক দিন আগে দেখা গেছে — এক মাসের বেশি (এটি ব্লক করা ব্যবহারকারীদের জন্যও সর্বদা প্রদর্শিত হয়)

প্রশ্ন: কে আমাকে ‘অনলাইন’ দেখতে পারে?

‘লাস্ট সিন’ নিয়মগুলি আপনার অনলাইন স্ট্যাটাসের জন্যও প্রযোজ্য। আপনি যাদের সাথে আপনার লাস্ট সিন শেয়ার করছেন, তারা শুধুমাত্র আপনাকে অনলাইনে দেখতে পাবে।

কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে কারণ কখনও কখনও এটি স্পষ্ট যে আপনি অনলাইনে আছেন। লাস্ট সিন সেটিংস নির্বিশেষে, আপনি যদি নিম্নলিখিতগুলি করেন তবে লোকেরা আপনাকে অনলাইনে দেখতে পাবে:

  • একজনের সাথে একক চ্যাটে বা একটি গ্রুপে যেখানে আপনারা উভয়ই সদস্য, সেখানে মেসেজ পাঠান।
  • তারা আপনাকে পাঠানো একটি মেসেজ পড়ুন।
  • তাদের চ্যাটে বা একটি গ্রুপে যেখানে আপনারা উভয়ই সদস্য, সেখানে ‘টাইপিং…’ স্ট্যাটাস প্রদর্শন করুন।

প্রশ্ন: পিপল নিয়ারবাই কী?

‘পিপল নিয়ারবাই’ একটি ঐচ্ছিক বৈশিষ্ট্য যা টেলিগ্রাম ব্যবহারকারীদের স্থানীয় গ্রুপগুলি অন্বেষণ করতে, তাদের এলাকায় বন্ধু খুঁজে পেতে বা কাছাকাছি লোকেদের সাথে দ্রুত কন্টাক্ট শেয়ার করতে দেয়।

আপনি এটি কন্টাক্টসে > ‘ফাইন্ড পিপল নিয়ারবাই’ খুঁজে পাবেন এবং Android-এ সরাসরি সাইড মেনুতে পাবেন।

যখন আপনার স্ক্রিনে পিপল নিয়ারবাই বিভাগটি খোলা থাকে, তখন খুব কাছের লোকেরা আপনাকে সেখানে দেখতে পাবে – যাতে সহজে কন্টাক্ট শেয়ার করা যায়। আপনি যদি বিভাগটি না খোলেন, অন্যরা কখনও আপনাকে ‘পিপল নিয়ারবাই’-তে দেখতে পাবে না।

প্রশ্ন: আমি কি আমার বার্তাগুলি মুছে ফেলতে পারি?

হ্যাঁ। আপনি যেকোনো সময় যেকোনো বার্তা যা আপনি পাঠিয়েছেন বা পেয়েছেন, যেকোনো একক কথোপকথনে উভয় পক্ষের জন্য মুছে ফেলতে পারেন (গ্রুপে, শুধুমাত্র আপনার নিজের বার্তাগুলি)। আপনি উভয় প্রান্তে পুরো চ্যাট ইতিহাসও সাফ করতে পারেন। টেলিগ্রামে, মুছে ফেলা বার্তাগুলি চ্যাটে কোনো চিহ্ন রেখে যায় না।

ফরোয়ার্ড করা বার্তাগুলির জন্য গোপনীয়তা সেটিংসের সাথে মিলিয়ে, এটি টেলিগ্রামে বার্তা বিনিময়কে মুখোমুখি কথোপকথনের মতো করে তোলে (যেখানে কোনো রেকর্ডার নেই)। এর ফলে ব্যবহারকারীরা আর বছরের পর বছর চ্যাটে ডেটা জমা হওয়ার বিষয়ে চিন্তা করতে হয় না। এক কথোপকথনে উভয় পক্ষই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকে যে কী তাদের অনলাইন পরিচয়ে অন্তর্ভুক্ত থাকবে বা থাকবে না।

প্রশ্ন: আমি কি টেলিগ্রামের মাধ্যমে কল করতে পারি?

হ্যাঁ! আপনি এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্টেড ভয়েস কল এবং ভিডিও কল করতে পারেন।

যদি আপনি আরও অংশগ্রহণকারী চান, তবে আপনি আপনার তৈরি কোনো একটি গ্রুপে একটি ভয়েস চ্যাট শুরু করার চেষ্টা করতে পারেন। ভয়েস চ্যাটগুলি গ্রুপে একটি সরাসরি এফেমেরাল আলাপের স্তর যোগ করে। এগুলি টিমের জন্য ভার্চুয়াল অফিস স্পেস বা যেকোনো কমিউনিটির জন্য অনানুষ্ঠানিক লাউঞ্জ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। যদিও ভয়েস চ্যাটগুলি গ্রুপ কল নয়, তবে এগুলি অনুরূপ লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।

প্রশ্ন: আমি ইমোজি কীভাবে ব্যবহার করতে পারি?

আপনার ইনপুট ফিল্ডে একটি শব্দ টাইপ করুন এবং প্রাসঙ্গিক ইমোজি পরামর্শগুলি পেয়ে যান। আপনি “:” টাইপ করে যেকোনো কীওয়ার্ড লিখে ইমোজি সার্চও করতে পারেন – যেমন :heart।

আপনার ভাষায় ইমোজির জন্য অনুপস্থিত কীওয়ার্ডগুলি এই ইন্টারফেস ব্যবহার করে পরামর্শ করতে পারেন (এটি ইংরেজির জন্য পরামর্শ খুলবে, বাম মেনু থেকে আপনার ভাষায় পরিবর্তন করতে ভুলবেন না)।

তারিখ ১৬.০৮.২০২৪

2.2 - কিভাবে ফ্রি VPN অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন, একটি বিস্তারিত গাইড

আমাদের সব সদস্যকে অনুরোধ করব, VPN ব্যবহারের পদ্ধতি ভালোভাবে শিখে রাখুন এবং প্রয়োজনে তা ব্যবহার করতে সক্ষম হোন। কখনো যদি কর্তৃপক্ষ আমাদের সাইট, টেলিগ্রাম, ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ ব্লক করে দেয়, তাহলে VPN ব্যবহার করে সহজেই এগুলোতে প্রবেশ করতে পারবেন।
কিভাবে ফ্রি VPN অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন
কিভাবে ফ্রি VPN অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন

কেনো VPN ব্যবহার করবেন

আমাদের সব সদস্যকে অনুরোধ করব, VPN ব্যবহারের পদ্ধতি ভালোভাবে শিখে রাখুন এবং প্রয়োজনে তা ব্যবহার করতে সক্ষম হোন। কখনো যদি কর্তৃপক্ষ আমাদের সাইট, টেলিগ্রাম, ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ ব্লক করে দেয়, তাহলে VPN ব্যবহার করে সহজেই এগুলোতে প্রবেশ করতে পারবেন। এজন্য এখনই আপনার মোবাইল ফোনে ProtonVPN অ্যাপ ইনস্টল করে রাখুন। বাংলাদেশে কি VPN বৈধ? হ্যাঁ, বাংলাদেশে VPN বৈধ। আপনার ডেটা এনক্রিপ্ট করুন, আইপি ঠিকানা গোপন করুন এবং বিনা বাধায় ইন্টারনেট ব্যবহার করুন। তবে, VPN ব্যবহার করে বা না করে, আমরা কখনোই আইন বা লাইসেন্স ভঙ্গ করার পক্ষে নই।

ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN) একটি সাইবারসিকিউরিটি টুল যা আপনার ইন্টারনেট সংযোগকে এনক্রিপ্ট করে এবং অনলাইনে আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করে। VPN আপনার ডিভাইস এবং সার্ভারের মধ্যে একটি এনক্রিপ্টেড টানেল স্থাপন করে আপনার আইপি ঠিকানা গোপন করে, যাতে আপনার ডেটা অনাহূত নজরদারি থেকে সুরক্ষিত থাকে। এর মূল লক্ষ্য হল আপনার অনলাইন নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা বৃদ্ধি করা, আপনার ডিভাইসকে অনলাইন হুমকি থেকে রক্ষা করা এবং আপনাকে সেন্সরশিপ ও নজরদারি ছাড়াই একটি নিরবচ্ছিন্ন অনলাইন অভিজ্ঞতা উপভোগ করার সুযোগ প্রদান করা। এটি আপনার আসল ঠিকানা লুকিয়ে রাখে এবং আপনাকে অনলাইনে গোপনীয়তা দেয়, বিশেষ করে পাবলিক Wi-Fi ব্যবহারের সময়।

বাংলাদেশে VPN ব্যবহার করার কারণ

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশন (BTRC) নিয়মিতভাবে ইন্টারনেটে সেন্সরশিপ করে, বিশেষ করে রাজনৈতিক বিষয়বস্তু এবং সামাজিক মাধ্যমের পোস্টগুলোর ক্ষেত্রে। সম্প্রতি, BTRC একটি বৃহৎ পর্যায়ের নজরদারি প্রোগ্রাম শুরু করেছে এবং এমন নতুন আইন প্রস্তাব করেছে যা আপনার ইন্টারনেট ডেটা সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে পারে। এজন্য VPN ব্যবহার করে অনলাইন সেন্সরশিপ এবং নজরদারি এড়িয়ে চলুন।

ফ্রি ProtonVPN অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন

আপনি যদি একটি ফ্রি VPN অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান, তাহলে এই সহজ ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

ধাপ ১: প্রোটন VPN-এর ওয়েবসাইটে যান

আপনার ওয়েব ব্রাউজারে protonvpn.com/free-vpn লিংকটি ওপেন করুন এবং “Get Proton VPN Free” বাটনে ক্লিক করুন। এছাড়াও, আপনি হোমপেজ থেকে “Create account” বাটনেও ক্লিক করতে পারেন।

VPN1

ধাপ ২: সাইনআপ পেজে যান

উপরের লিংক থেকে “Get Proton VPN Free” বাটনে ক্লিক করার পর আপনাকে “Create your Proton Account” পেজে নিয়ে যাওয়া হবে। যদি আপনি হোমপেজ থেকে আসেন, তাহলে সাইনআপ পেজে “Get Proton Free” বাটনে ক্লিক করতে হবে।

VPN2

ধাপ ৩: একটি রিকভারি ইমেইল ঠিকানা প্রদান করুন

রিকভারি ইমেইলটি আপনার পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে বা হারিয়ে ফেললে পুনরায় সেট করার জন্য প্রয়োজন হবে, যাতে আপনি সহজেই আপনার অ্যাকাউন্টে পুনরায় অ্যাক্সেস পেতে পারেন। ইমেইল এন্টার করার পর “Start using Proton VPN” বাটনে ক্লিক করুন।

VPN3

ধাপ ৪: পাসওয়ার্ড সেট করুন

আপনার পাসওয়ার্ড সেট করতে, আপনি চাইলে সিস্টেম দ্বারা জেনারেট করা পাসওয়ার্ড “Continue with this password” বাটনে ক্লিক করে গ্রহণ করতে পারেন।

অথবা, “Choose my own password” বাটনে ক্লিক করে আপনার পছন্দের পাসওয়ার্ড সেট করতে পারেন। পাসওয়ার্ডটি কনফার্ম করার পর “Set new password” বাটনে ক্লিক করুন।

VPN4

VPN5

ধাপ ৫: প্রোটন VPN ফ্রি প্ল্যান ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত

এখন আপনি প্রোটন VPN ফ্রি প্ল্যান ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত। আপনাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে Downloads পেজে নিয়ে যাওয়া হবে, যেখানে আপনি আপনার ডিভাইসের জন্য প্রোটন VPN ক্লায়েন্ট ডাউনলোড করতে পারবেন।

VPN6

ফ্রি প্ল্যানে কি সুবিধা পাবেন?

প্রোটন VPN ফ্রি প্ল্যানের মাধ্যমে আপনি পাঁচটি দেশের সার্ভারে কানেক্ট করতে পারবেন: নেদারল্যান্ডস, জাপান, রোমানিয়া, পোল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র। ফ্রি ব্যবহারকারীরা এক সময়ে মাত্র একটি ডিভাইস কানেক্ট করতে পারবেন।

এখনই প্রোটন VPN ফ্রি ব্যবহার শুরু করুন এবং ইন্টারনেটে নিরাপদে ব্রাউজ করুন!

কীভাবে Proton VPN Android অ্যাপ ব্যবহার করবেন

ধাপ ১: Proton VPN ডাউনলোড করুন এবং লগইন করুন

Play Store থেকে Proton VPN Android অ্যাপ ডাউনলোড এবং ইনস্টল করুন। ওপেন সোর্স Android অ্যাপটি F-Droid-এও পাওয়া যায় অথবা GitHub থেকে APK হিসেবে ডাউনলোড করা যায়। আপনার Android স্মার্টফোনে ইনস্টল করার পর, Proton VPN অ্যাপটিতে আপনার Proton VPN ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

Android-এর জন্য Proton VPN ডাউনলোড করুন

ধাপ ২: একটি সার্ভারে সংযোগ স্থাপন করুন

আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার অবস্থানের জন্য দ্রুততম VPN সার্ভারে সংযোগ করতে পারেন অথবা আপনার প্ল্যানে উপলব্ধ যে কোনো নির্দিষ্ট সার্ভার বেছে নিতে পারেন।

আপনার ডিভাইস এবং VPN সার্ভারের মধ্যে ডেটা এনক্রিপ্ট করা থাকে, অর্থাৎ:

  • আপনার ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী আপনার কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না।
  • ওয়েবসাইটগুলো শুধুমাত্র সেই VPN সার্ভারের IP ঠিকানা দেখতে পাবে যা আপনি ব্যবহার করছেন।

আপনি যখন সংযুক্ত থাকবেন, তখন আপনার IP ঠিকানা পরীক্ষা করে VPN সার্ভারের ঠিকানা দেখতে পারেন।

কীভাবে iPhone এবং iPad-এ Proton VPN ব্যবহার করবেন

ধাপ ১: Proton VPN ডাউনলোড করুন এবং লগইন করুন

App Store থেকে Proton VPN অ্যাপটি ডাউনলোড করুন এবং এটি আপনার iPhone বা iPad-এ ইনস্টল করুন। ইনস্টল করার পর, অ্যাপটি চালু করুন এবং আপনার Proton VPN ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

iOS-এর জন্য Proton VPN ডাউনলোড করুন

ধাপ ২: একটি সার্ভারে সংযোগ স্থাপন করুন

আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার অবস্থানের জন্য দ্রুততম VPN সার্ভারে সংযোগ করতে পারেন অথবা আপনার প্ল্যানে উপলব্ধ যে কোনো নির্দিষ্ট সার্ভার বেছে নিতে পারেন।

আপনার ডিভাইস এবং VPN সার্ভারের মধ্যে ডেটা এনক্রিপ্ট করা থাকে, অর্থাৎ:

  • আপনার ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী আপনার কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না।
  • ওয়েবসাইটগুলো শুধুমাত্র সেই VPN সার্ভারের IP ঠিকানা দেখতে পাবে যা আপনি ব্যবহার করছেন।

আপনি যখন সংযুক্ত থাকবেন, তখন আপনার IP ঠিকানা পরীক্ষা করে VPN সার্ভারের ঠিকানা দেখতে পারেন।

VPN নিষেধাজ্ঞা কী?

VPN নিষেধাজ্ঞা হলো সীমাবদ্ধতা যা সরকার, সংস্থা এবং ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীরা (ISP) VPN ব্যবহারের বিরুদ্ধে আরোপ করে। এসব প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট পরিবেশে VPN নিষিদ্ধ করে যাতে ব্যবহারকারীরা সেন্সরশিপ এড়াতে বা তাদের অনলাইন কার্যকলাপ গোপন করতে না পারে। VPN নিষিদ্ধ করার জন্য প্রযুক্তির মাধ্যমে VPN ট্র্যাফিক শনাক্ত এবং ব্লক করা হয়, যার ফলে VPN সেবায় প্রবেশ সীমাবদ্ধ বা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।

VPN কি ব্লক করা যেতে পারে?

হ্যাঁ, VPN নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থা ইন্টারনেট সেন্সরশিপ প্রয়োগ বা অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক সুরক্ষার উদ্দেশ্যে VPN এর উপর বিধিনিষেধ আরোপ করে।

কিভাবে বুঝবেন আপনার VPN ব্লক হয়েছে কি না?

আপনার VPN ট্র্যাফিক ব্লক হয়ে গেলে নিম্নলিখিত সমস্যাগুলি হতে পারে:

  • কানেকশনের সমস্যা।
  • কোনো VPN সার্ভারের সাথে সংযোগ করতে না পারা।
  • ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে অক্ষমতা।
  • VPN-এ সংযুক্ত হওয়ার পরেও IP ঠিকানা না পরিবর্তন হওয়া।
  • নির্দিষ্ট নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হলে VPN কাজ না করা।

VPN ব্লক এড়ানোর উপায় কী?

যদি আপনি VPN ব্লক এড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন, তবে নিশ্চিত হয়ে নিন এটি আইনত বৈধ এবং স্থানীয় আইন ও আপনার নেটওয়ার্ক প্রোভাইডারের নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অন্যথায়, এই ধরনের পদক্ষেপ আইনগত দায়বদ্ধতার কারণ হতে পারে। তবে, যদি VPN ব্লক এড়ানোর উদ্দেশ্য অবৈধ না হয়, তাহলে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি চেষ্টা করতে পারেন:

  • VPN প্রোটোকল পরিবর্তন করুন।
  • মোবাইল ডেটায় স্যুইচ করুন।

VPN কীভাবে ব্লক করা হয়?

যে সমস্ত সরকার বা কোম্পানি তাদের নাগরিক বা কর্মচারীদের VPN ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে চায়, তারা বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে এই সাইবার নিরাপত্তা টুলগুলি ব্লক করতে। প্রথমত, একটি কোম্পানি বা সরকারি কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দিষ্ট VPN সার্ভিসের ব্যবহৃত IP ঠিকানার একটি তালিকা সংগ্রহ করে এবং সেই IP গুলি নেটওয়ার্কে ব্লকলিস্ট করে। এছাড়াও, একটি ফায়ারওয়াল কনফিগার করে VPN পোর্টগুলি ব্লক করা সম্ভব। এর কার্যপ্রণালী সহজ: আপনি যদি একটি ব্লক করা পোর্টের মাধ্যমে কোনো সার্ভারে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন, ফায়ারওয়াল বা সিস্টেম সেই অনুরোধটি প্রত্যাখ্যান করবে এবং আপনার ডিভাইস ও সার্ভারের মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ করবে।

সরকার এবং সংস্থাগুলি ডিপ প্যাকেট ইন্সপেকশন (DPI) নামক একটি পদ্ধতি, যা প্যাকেট স্নিফিংয়ের একটি ধরন, ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর নেটওয়ার্কে VPN ট্র্যাফিক শনাক্ত করে। এটি আপনার কম্পিউটার ও সার্ভারের মধ্যে চলমান ডেটার টুকরোগুলি বিশ্লেষণ করে এবং VPN প্রোটোকলের জন্য নির্দিষ্ট নিদর্শন ও সিগনেচার সনাক্ত করে। একবার এটি VPN সংযোগগুলি সনাক্ত করলে, VPN কার্যকলাপ বন্ধ করে দেয়।

তারিখ ১৭.০৮.২০২৪

3 - হিন্দু সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সামাজিক সংস্কার

এই ব্লগ বিভাগে হিন্দু সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সামাজিক সংস্কার–সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। মন্দির–আশ্রম ও দেবোত্তর সম্পত্তির ঐতিহ্য রক্ষা, উৎসব-সংস্কৃতি, কমিউনিটি নেতৃত্ব গঠন, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ, এবং সংগঠনের নানান কার্যক্রম—এসব বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এখানে নিয়মিত পোস্ট প্রকাশিত হয়। এটি আমাদের ইতিহাস, পরিচয় ও সামষ্টিক শক্তিকে আরও সুসংগঠিত ও দৃঢ় করার একটি জ্ঞানভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম।

3.1 - শক্তিপীঠসমূহ : শক্তির সাধনা ও পবিত্র তীর্থভ্রমণ

শক্তিপীঠসমূহ : শক্তির সাধনা ও পবিত্র তীর্থভ্রমণ

হিন্দুধর্মের শক্তি–উপাসনার মূল কেন্দ্রগুলি হল শক্তিপীঠ। দেবী সতীর দেহাংশ বা অলৌকিক শক্তির প্রতীকী প্রকাশস্থল হিসেবে পরিচিত এই তীর্থগুলি ভক্তদের আস্থার, সাধনার এবং আধ্যাত্মিক জাগরণের অনন্য কেন্দ্র। এই বিভাগে আমরা ভারতের বিভিন্ন শক্তিপীঠের ইতিহাস, পুরাণকথা, ধর্মীয় গুরুত্ব, যাত্রাপথ ও দর্শনীয় স্থানসমূহ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত নিবন্ধসমূহ উপস্থাপন করছি।

3.1.1 - যশোরেশ্বরী শক্তিপীঠ, সাতক্ষীরা

যশোরেশ্বরী শক্তিপীঠ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামে অবস্থিত। যশোরেশ্বরী নামের অর্থ “যশোরের দেবী”। এখানে সতীর করকমল বা পাণিপদ্ম পতিত হয়। এখানে দেবীর নাম যশোরেশ্বরী, ভৈরব হলেন চণ্ড।
যশোরেশ্বরী শক্তিপীঠ, সাতক্ষীরা
যশোরেশ্বরী শক্তিপীঠ, সাতক্ষীরা

যশোরেশ্বরী শক্তিপীঠ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামে অবস্থিত। যশোরেশ্বরী নামের অর্থ “যশোরের দেবী”। এখানে সতীর করকমল বা পাণিপদ্ম পতিত হয়। এখানে দেবীর নাম যশোরেশ্বরী, ভৈরব হলেন চণ্ড।

শক্তিপীঠ

শক্তিপীঠ হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থগুলির অন্যতম। লোকবিশ্বাস অনুসারে, শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থগুলিতে দেবী দাক্ষায়ণী সতীর দেহের নানান অঙ্গ প্রস্তরীভূত অবস্থায় রক্ষিত আছে। সাধারণত ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়ে থাকলেও, শাস্ত্রভেদে পীঠের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। পীঠনির্ণয় তন্ত্র গ্রন্থে শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১। শিবচরিত গ্রন্থে ৫১টি শক্তিপীঠের পাশাপাশি ২৬টি উপপীঠের কথাও বলা হয়েছে। কুব্জিকাতন্ত্র গ্রন্থে এই সংখ্যা ৪২। আবার জ্ঞানার্ণবতন্ত্র গ্রন্থে পীঠের সংখ্যা ৫০। ভারতীয় উপমহাদেশের নানা স্থানে এই শক্তিপীঠগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সকল শক্তিপীঠসমূহে শক্তিদেবী ভৈরবের সাথে অবস্থান করেন।

পৌরাণিক কাহিনী

কিংবদন্তি অনুসারে, সত্য যুগের কোনও এক সময়ে মহাদেবের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার শশুর দক্ষ রাজা বৃহস্পতি নামে এক যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। কন্যা সতী দেবী তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ‘যোগী’ মহাদেবকে বিবাহ করায় দক্ষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। মহাদেব ও সতী দেবী ছাড়া প্রায় সকল দেব-দেবীকে দক্ষ নিমন্ত্রণ করেছিলেন। মহাদেবের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সতী দেবী মহাদেবের অনুসারীদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।

কিন্তু সতী দেবী আমন্ত্রিত অতিথি না হওয়ায় তাকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। অধিকন্তু দক্ষ মহাদেবকে অপমান করেন। সতী দেবী তার স্বামীর প্রতি পিতার এ অপমান সহ্য করতে না পেরে যোগবলে আত্মাহুতি দেন।

এ খবর শুনে শোকাহত মহাদেব রাগান্বিত হয়ে দক্ষর যজ্ঞ ভণ্ডুল করেন এবং সতী দেবীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। জগৎ সংসার ধ্বংস হবার উপক্রম হয়। অন্যান্য দেবতা অনুরোধ করে এই নৃত্য থামান এবং বিষ্ণুদেব তার সুদর্শন চক্র দ্বারা সতী দেবীর মৃতদেহ ছেদন করেন। এতে সতী মাতার দেহখণ্ডসমূহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে এবং পবিত্র পীঠস্থান (শক্তিপীঠ) হিসেবে পরিচিতি পায়।

ইতিহাস

ধারনা করা হয় যে, মন্দিরটি আনারি নামের এক ব্রাহ্মণ কর্তৃক নির্মিত হয়। তিনি এই যশোরেশ্বরী শক্তিপীঠের ১০০টি দরজা নির্মাণ করেন। কিন্তু মন্দিরটি কখন নির্মিত হয় তা জানা যায়নি।

পরবর্তীকালে লক্ষ্মণ সেন ও প্রতাপাদিত্য কর্তৃক তাদের রাজত্বকালে এটির সংস্কার করা হয়েছিল।কথায় আছে যে মহারাজা প্রতাপাদিত্য়ের সেনাপতি এখানকার জঙ্গল থেকে একটি আলৌকিক আলোর রেখা বের হয়ে মানুষের হাতুর তালুর আকারের একটি পাথরখণ্ডের উপর পড়তে দেখেন। পরবর্তীতে প্রতাপদিত্ত্য কালীর পূজা করতে আরম্ভ করেন এবং এই কালী মন্দিরটি নির্মাণ করেন।

তৎকালিন জমিদার বাবু মায়ের নামে প্রায় ২০০ বিঘা জমি দান করেছিলেন। কিন্তু আজ প্রভাবশালী ভুমিদস্যুরা জাল দলিল সৃষ্টি করে মায়ের মন্দীরের সব জমি দখল করে ভোগদখল করছে।

মূর্তি

তন্ত্রচূড়ামণিতে বলা হয়েছে— ‘যশোরে পানিপদ্ম দেবতা যশোরেশ্বরী,/চণ্ডশ্চ ভৈরব যত্র তত্র সিদ্ধ ন সংশয়।’

অর্থাৎ যশোরে সতীর পাণিপদ্ম বা করকমল পড়েছে। দেবীর নাম যশোরেশ্বরী, ভৈরব হলেন চণ্ড। এই সতীপীঠে কায়মনোবাক্যে পুজো করলে ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ হয় বলে সর্বসাধারণের বিশ্বাস।

মন্দির-বেদির ওপর প্রতিষ্ঠিত মাতৃ প্রতিমার শুধু মুখমণ্ডলই দৃষ্টিগোচর হয়। শ্রীযশোরেশ্বরীর কণ্ঠের নিচে তার শ্রীহস্ত ও শ্রীচরণ কিছুই নজরে পড়ে না। মূর্তির অবয়ব পুরোটাই মখমলে আবৃত।

শ্রীযশোরেশ্বরীর পুজো তন্ত্রমতেও হয়।প্রতিবছর মন্দিরে খুব ধুমধাম করে শ্যামাপুজো হয়। মা ভীষণ জাগ্রত। শ্যামাপুজোয় এই মন্দিরে হাজার হাজার ভক্ত পুজো দেন। মানত করেন। বড় করে হোমযজ্ঞ হয়। মাকে নানা অলংকারে সাজানো হয়। মন্দিরের সামনে তিনদিন মেলা বসে। ছাগবলি হয়।

মূল মন্দির সংলগ্ন স্থানে নাটমন্দির নামে একটি বৃহ মঞ্চমণ্ডপ নির্মাণ করা হয়েছিল যেখান হতে দেবীর মুখমণ্ডল দেখা যায়। এটি লক্ষ্মণ সেন বা মহারাজা প্রতাপাদিত্য কর্তৃক ত্রয়োদশ শতাব্দীতে নির্মাণ করা হয়েছিল ।কিন্তু কারা এটি নির্মাণ করেছিল তা জানা যায়নি। ১৯৭১ সালের পর এটি ভেঙে পড়ে। সেই সুদৃশ্য, লম্বা-চওড়া বিরাট নাটমন্দিরের আজ কিছুমাত্র অবশিষ্ট নেই। এখন শুধুমাত্র স্তম্ভগুলি দেখা যায়। দু-একটা স্তম্ভ কয়েকশো বছরের নীরব সাক্ষী হয়ে ইটের পাঁজর বের করে দাঁড়িয়ে আছে কোনওরকমে। একদা মন্দিরের চারদিকে সুউচ্চ প্রাচীর ছিল। মূল মন্দিরটি বাদে আর সবকিছুই আজ কালের গর্ভে বিলীন। মন্দিরের নওবতখানা এখন ভগ্নস্তূপ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার যশোরেশ্বরী কালী মন্দির পরিদর্শন করেছেন ২৭ মার্চ ২০২১। ইতিমধ্যে মন্দির ও প্রাচীর রঙ করে প্রাচীরের ভাঙা অংশ মেরামত করা হয়েছে। মন্দিরের প্রবেশদ্বারে প্রায় ২০০ বছরের পুরনো বটতলা অংশের গর্ত বন্ধ করে ইট-পাথরের মিশ্রণে দৃষ্টিনন্দন বিস্তৃত চাতাল গড়ে তোলা হয়েছে।

গুগল ম্যাপে লোকেশান

সূত্র: উইকিপিডিয়া

তারিখ ২৭.০১.২০২২

3.1.2 - শ্রীশৈল শক্তিপীঠ, সিলেট

শ্রীশৈল বাংলাদেশের সিলেট শহরের ৩ কি.মি. উত্তর-পূর্বে দক্ষিণ সুরমা জৈনপুর গ্রামে অবস্থিত একটি শক্তিপীঠ। এখানে সতী দেবীর গ্রীবা (গন্ডদেশের পেছন দিক) পতিত হয়েছিল। এখানে দেবী মহালক্ষ্মী ও ভৈরব সর্বানন্দ।
শ্রীশৈল শক্তিপীঠ, সিলেট
শ্রীশৈল শক্তিপীঠ, সিলেট

শ্রীশৈল বাংলাদেশের সিলেট শহরের ৩ কি.মি. উত্তর-পূর্বে দক্ষিণ সুরমা জৈনপুর গ্রামে অবস্থিত একটি শক্তিপীঠ। এখানে সতী দেবীর গ্রীবা (গন্ডদেশের পেছন দিক) পতিত হয়েছিল। এখানে দেবী মহালক্ষ্মী ও ভৈরব সর্বানন্দ।

শক্তিপীঠ

শক্তিপীঠ হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থগুলির অন্যতম। লোকবিশ্বাস অনুসারে, শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থগুলিতে দেবী দাক্ষায়ণী সতীর দেহের নানান অঙ্গ প্রস্তরীভূত অবস্থায় রক্ষিত আছে। সাধারণত ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়ে থাকলেও, শাস্ত্রভেদে পীঠের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। পীঠনির্ণয় তন্ত্র গ্রন্থে শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১। শিবচরিত গ্রন্থে ৫১টি শক্তিপীঠের পাশাপাশি ২৬টি উপপীঠের কথাও বলা হয়েছে। কুব্জিকাতন্ত্র গ্রন্থে এই সংখ্যা ৪২। আবার জ্ঞানার্ণবতন্ত্র গ্রন্থে পীঠের সংখ্যা ৫০। ভারতীয় উপমহাদেশের নানা স্থানে এই শক্তিপীঠগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সকল শক্তিপীঠসমূহে শক্তিদেবী ভৈরবের সাথে অবস্থান করেন।

পৌরাণিক কাহিনী

কিংবদন্তি অনুসারে, সত্য যুগের কোনও এক সময়ে মহাদেবের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার শশুর দক্ষ রাজা বৃহস্পতি নামে এক যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। কন্যা সতী দেবী তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ‘যোগী’ মহাদেবকে বিবাহ করায় দক্ষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। মহাদেব ও সতী দেবী ছাড়া প্রায় সকল দেব-দেবীকে দক্ষ নিমন্ত্রণ করেছিলেন। মহাদেবের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সতী দেবী মহাদেবের অনুসারীদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।

কিন্তু সতী দেবী আমন্ত্রিত অতিথি না হওয়ায় তাকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। অধিকন্তু দক্ষ মহাদেবকে অপমান করেন। সতী দেবী তার স্বামীর প্রতি পিতার এ অপমান সহ্য করতে না পেরে যোগবলে আত্মাহুতি দেন।

এ খবর শুনে শোকাহত মহাদেব রাগান্বিত হয়ে দক্ষর যজ্ঞ ভণ্ডুল করেন এবং সতী দেবীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। জগৎ সংসার ধ্বংস হবার উপক্রম হয়। অন্যান্য দেবতা অনুরোধ করে এই নৃত্য থামান এবং বিষ্ণুদেব তার সুদর্শন চক্র দ্বারা সতী দেবীর মৃতদেহ ছেদন করেন। এতে সতী মাতার দেহখণ্ডসমূহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে এবং পবিত্র পীঠস্থান (শক্তিপীঠ) হিসেবে পরিচিতি পায়।

ইতিহাস

কথিত এই যে, দেবীর গ্রীবার পতন হয়েছিল একটি শিলার ওপর, এই শিলাই পূজিতা হতেন আদিকাল থেকে। এই পীঠ বহুকাল গুপ্ত ছিল। বাংলার দ্বাদশ থেকে ত্রয়োদশ শতকের মাঝে এখানে রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছিল। সে সময় দেবীপ্রসাদ দাশ নামক এক ব্যক্তি রাস্তার কাজের জন্য কিছু শ্রমিককে নিযুক্ত করেন। রাস্তা মেরামতের সময় মাটি খুড়লে একটি কালো শিলা বের হয়ে আসে। কিছুতেই সেই শিলাকে সড়ানো যাচ্ছিলো না। এক শ্রমিক শাবল দিয়ে শিলাকে দুখণ্ড করে দিলো এবং সাথে সাথে পাশের জঙ্গল থেকে একটি বালিকা বের হয়ে সেই শ্রমিক কে চড় মারলো এবং সকলকে হতবাক করে নিমিষে সেই বালিকা হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো। সেই রাত্রে দেবীপ্রসাদকে মা মহালক্ষ্মী স্বপ্নাদেশ দিয়ে বললেন –তুই এই স্থানে আমাকে প্রতিষ্ঠা করে নিত্য পূজোর ব্যবস্থা কর।

ধনী দেবীপ্রসাদ লক্ষ ইট দিয়ে দেবীর মন্দির তৈরির ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু পরদিন রাতেই আবার স্বপ্নাদেশ পেলেন –আমি বদ্ধ থাকতে চাইনা, আমার মন্দির নির্মাণের প্রয়োজন নেই, আমাকে তুই উন্মুক্ত অবস্থায় রাখিস, আমি উন্মুক্ত অবস্থাতেই পূজিত হতে চাই।

দেবীর আদেশাক্রমে দেবীপ্রসাদ সেইরকম ব্যবস্থা করলেন।

দেবীর মতোই ভৈরব সর্বানন্দ প্রথমে অজ্ঞাত ছিলেন। একদিন এক মহান সাধক ব্রহ্মানন্দ গিরি শ্রীহট্টে আসলেন এবং দেবীর সাধনাতে সিদ্ধ হয়েছিলেন। সেই সাধক সাধনাবলে জানতে পারলেন, দেবী মহালক্ষ্মীর পশ্চিমদিকে রয়েছে একটি টিলা এবং সেই টিলার মধ্যেই ভগবান শিব আছেন। একদিন গভীর রাতে সেই সাধক তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সেই টিলায় উঠে জানালেন, এই স্থানেই দেবীর ভৈরব আছেন।

কিন্তু দুঃখের বিষয়, ১২৮১ বঙ্গাব্দে সেই ভৈরব উদ্ধার করার আগেই তিনি দেহত্যাগ করেন। আচার্য শঙ্করের দশনামী সম্প্রদায়ের সাধক ব্রহ্মানন্দ গিরির এক শিষ্য ছিল, তিনিও বড় সাধক ছিলেন। তাঁর নাম ছিলো বিরজানাথ ন্যায়বাগীশ, ১২৮৬ বঙ্গাব্দের মাঘ মাসে তিনি এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন। স্বপ্নে তিনি দেখলেন তাঁর গুরুদেব ব্রহ্মানন্দ গিরি দুজন শিষ্যকে নিয়ে সেই শিবটিলায় উঠে বলছেন –এখানে দেবীর ভৈরব আছেন, আমি তাঁকে প্রকাশ করবো।

মাটি খুঁড়ে শিবলিঙ্গটি দেখতে পেলেন। স্বপ্নভঙ্গহতেই বিরজানাথ দেখতে পেলেন তাঁর দুজন শিষ্য কৈলাসচন্দ্র ভট্টাচার্য ও কৃষ্ণকুমার ভট্টাচার্য বাড়ীতে এসেছেন। অলৌকিকভাবে তাঁরা দুইজনেও একই স্বপ্ন দেখেছেন এবং দুই শিষ্যই গুরুদেবকে স্বপ্নটি বৃতান্ত বললেন। গুরুদেব বিরজানাথ যখন বুঝলেন তারা তিনজনই একই রাত্রে একই স্বপ্ন দেখেছেন, তখন কালবিলম্ব না করেই গুরুদেব বিরজানাথ দুই শিষ্য সমেত সেই টিলায় উঠে মাটি খনন করতেই গৌরীপট্টসহিত শিবলিঙ্গ উঠে আসলো। এভাবে দেবীর ভৈরব প্রকট হলেন ।

মূর্তি

তন্ত্র মতে – “গ্রীবা পপাত শ্রীহট্টে সর্বসিদ্ধি প্রদায়িনী। দেবীতত্র মহালক্ষ্মী সর্বনন্দশ্চ ভৈরব।।”

এখানে সতী দেবীর গ্রীবা (গন্ডদেশের পেছন দিক) পতিত হয়েছিল। ফলে উক্ত স্থানটি “গ্রীবামহাপীঠ” নামে পরিচিতি লাভ করে। দেবী এখানে মহালক্ষ্মী হিসেবে পূজিত হন এবং অনতিদূরে ঈশান কোণে গোটাটিকর গ্রামে “সর্বানন্দ ভৈরব” নামে পীঠরক্ষী শিব মন্দির অবস্থিত।

গুগল ম্যাপে লোকেশান

সূত্র: উইকিপিডিয়া

তারিখ ২৭.০১.২০২২

3.1.3 - সুগন্ধা শক্তিপীঠ, বরিশাল

সুগন্ধা শক্তিপীঠ বাংলাদেশের বরিশালের ১০ মাইল উত্তরে শিকারপুর গ্রামে অবস্থিত। এখানে সতী দেবীর নাসিকা পতিত হয়েছিল । এখানে দেবী সুনন্দা ও ভৈরব ত্র্যম্বক। এখানকার ভৈরব ত্রয়ম্বক যার মন্দিরটি ঝালকাঠি থেকে ৫ মাইল দক্ষিণে পোনাবালিয়ায় অবস্থিত।
সুগন্ধা শক্তিপীঠ, বরিশাল
সুগন্ধা শক্তিপীঠ, বরিশাল

সুগন্ধা শক্তিপীঠ বাংলাদেশের বরিশালের ১০ মাইল উত্তরে শিকারপুর গ্রামে অবস্থিত। এখানে সতী দেবীর নাসিকা পতিত হয়েছিল । এখানে দেবী সুনন্দা ও ভৈরব ত্র্যম্বক। এখানকার ভৈরব ত্রয়ম্বক যার মন্দিরটি ঝালকাঠি থেকে ৫ মাইল দক্ষিণে পোনাবালিয়ায় অবস্থিত।

শক্তিপীঠ

শক্তিপীঠ হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থগুলির অন্যতম। লোকবিশ্বাস অনুসারে, শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থগুলিতে দেবী দাক্ষায়ণী সতীর দেহের নানান অঙ্গ প্রস্তরীভূত অবস্থায় রক্ষিত আছে। সাধারণত ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়ে থাকলেও, শাস্ত্রভেদে পীঠের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। পীঠনির্ণয় তন্ত্র গ্রন্থে শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১। শিবচরিত গ্রন্থে ৫১টি শক্তিপীঠের পাশাপাশি ২৬টি উপপীঠের কথাও বলা হয়েছে। কুব্জিকাতন্ত্র গ্রন্থে এই সংখ্যা ৪২। আবার জ্ঞানার্ণবতন্ত্র গ্রন্থে পীঠের সংখ্যা ৫০। ভারতীয় উপমহাদেশের নানা স্থানে এই শক্তিপীঠগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সকল শক্তিপীঠসমূহে শক্তিদেবী ভৈরবের সাথে অবস্থান করেন।

পৌরাণিক কাহিনী

কিংবদন্তি অনুসারে, সত্য যুগের কোনও এক সময়ে মহাদেবের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার শশুর দক্ষ রাজা বৃহস্পতি নামে এক যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। কন্যা সতী দেবী তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ‘যোগী’ মহাদেবকে বিবাহ করায় দক্ষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। মহাদেব ও সতী দেবী ছাড়া প্রায় সকল দেব-দেবীকে দক্ষ নিমন্ত্রণ করেছিলেন। মহাদেবের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সতী দেবী মহাদেবের অনুসারীদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।

কিন্তু সতী দেবী আমন্ত্রিত অতিথি না হওয়ায় তাকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। অধিকন্তু দক্ষ মহাদেবকে অপমান করেন। সতী দেবী তার স্বামীর প্রতি পিতার এ অপমান সহ্য করতে না পেরে যোগবলে আত্মাহুতি দেন।

এ খবর শুনে শোকাহত মহাদেব রাগান্বিত হয়ে দক্ষর যজ্ঞ ভণ্ডুল করেন এবং সতী দেবীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। জগৎ সংসার ধ্বংস হবার উপক্রম হয়। অন্যান্য দেবতা অনুরোধ করে এই নৃত্য থামান এবং বিষ্ণুদেব তার সুদর্শন চক্র দ্বারা সতী দেবীর মৃতদেহ ছেদন করেন। এতে সতী মাতার দেহখণ্ডসমূহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে এবং পবিত্র পীঠস্থান (শক্তিপীঠ) হিসেবে পরিচিতি পায়।

ইতিহাস

নদীমাতৃক বাংলাদেশে এক সময় পোনাবালিয়া ও সামরাইলের পাশ দিয়ে পবিত্র সুগন্ধা নদী প্রবাহিত হতো । কিন্তু কালের করাল গ্রাসে আজ সে নদী নাব্যতা, স্রোত হারিয়ে ক্ষীণ স্রোতা হয়েছে- যার নাম সোন্ধ । সুগন্ধা নদীর পূর্ব পাড়ে দেবীপীঠ পশ্চিম পাড়ে দেবীর ভৈরব ত্র্যম্বকেশ্বর বিরাজমান ।

একসময় এখানে গভীর জঙ্গল ছিল। দিনেরবেলাতেও লোকজন যেতে ভয় পেতেন । সেই সময় শিকারপুরের খুব ধনী ভূস্বামী শ্রীরাম রায় একদিন স্বপ্নে মহাদেবের আদেশ পেলেন । স্বপ্ন দেখা মাত্রই পরদিন রাম রায় প্রচুর লোকজন নিয়ে সেই মহাদেবের খোঁজে জঙ্গলে তল্লাশি করতে গেলেন ।

সে সময় জঙ্গলে কিছু রাখাল বালক গোরু চড়াচ্ছিল । রাখাল বালক গন এইরকম একটা অলৌকিক ঢিপির সন্ধান জানতো । তারা একটা ঘটনা বলল।

ঘটনা টা এই । রাখাল দের গোরু গুলো আগের মতো আর দুগ্ধ প্রদান করছিল না। গোরুর মালিক ভাবল রাখাল রাই নিশ্চয়ই দুধ চুরি করে গোরু চড়ানোর সময় । একদিন গোরুর মালিক ভাবল হাতে নাতে চোর গুলোকে ধরবে । তারপর রাজার কাছে নালিশ জানাবে । এই ভেবে একদিন মালিক রাখাল দের পিছু নিলো চুপিসারে । জঙ্গলে গোরু গুলো যখন তৃন খাচ্ছিল্ল- মালিক লুকিয়ে দেখছিল। হঠাত মালিক দেখলো গোরু গুলো একে একে জঙ্গলে ঢুকে একটা উচু ঢিপিতে নিজেরাই বাঁট থেকে দুধ দিচ্ছে। মালিক ভাবল গোরু গুলো এমন করছে কেন? ঐ ঢিপিতে কি আছে ? ভেবে মালিক নিজে জঙ্গলের শুকনো কাঠ খড় জোগার করে ঐ ঢিপিতে আগুন ধরিয়ে দিলো । লেলিহান আগুনের শিখা যখন লকলক করে উঠছিল- মালিক দেখলো একটি কৃষ্ণ বর্ণা বালিকা সেই ঢিপি থেকে দৌড়ে পাশে জলাশয়ে প্রবেশ করলো ।

রাখাল দের কাছে এই শুনে ধনী রাম রায় সেই ঢিপির কাছে পৌছে খনন করার আদেশ দিলো। খনন করতেই লিঙ্গ মূর্তি বের হল । রাম রায় ভাবল এই লিঙ্গ তিনি গৃহে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করে নিত্যসেবা করবেন । কিন্তু আশ্চর্য কত শত লোক মিলেও সেই লিঙ্গ তুলতে পারলো না । সেইদিন রাতে ভগবান ভোলানাথ আবার রাজাকে স্বপ্নে বললেন- ‘আমাকে ঐখানেই প্রতিষ্ঠা করো । মনে রাখবে আমার বিহারের স্থানে কোনো আচ্ছাদন থাকবে না।’ বিত্তশালী রাম রায় সেই ভাবেই বাবাকে স্থাপন করে নিত্য পূজার ব্যবস্থা করলেন ।

অপরদিকে আর একটি ঘটনা । শিকারপুর গ্রামে পঞ্চানন চক্রবর্তী নামে একজন নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ বাস করতো । সে ছিল সৎ, ধার্মিক, মানব প্রেমিক। একদা স্বপ্নে মা কালী তাকে দর্শন দিয়ে বললেন- “সুগন্ধার গর্ভে আমি শিলারূপে বিরাজিতা আছি। তুমি আমাকে সেখান থেকে তুলে এনে প্রতিষ্ঠা ও পূজোর ব্যবস্থা করো।” চক্রবর্তী মশাই সেই স্বপ্নাদেশে দেখানো জায়গা থেকে মায়ের পাষাণ মূর্তি তুলে প্রতিষ্ঠা ও নিত্য পূজা করতে লাগলেন । গ্রামের লোকেরা এসে যে যা পারে- তাই দিয়ে মায়ের সেবা করতে লাগলো ।

মূর্তি

ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্যে লেখা আছে – “সুগন্ধায় নাসিকা পড়িল চক্রহতা । ত্র্যম্বক ভৈরব তাহে সুনন্দা দেবতা ।।”

দুঃখের বিষয় পুরনো মূর্তি চুরি হয়ে গেছে ।তবে সতী মায়ের প্রস্তরীভূত দেবী অংশ এখানে কোথায়- তা কেউ জানেন না। বর্তমানে সেখানে দেবী উগ্রতারার মূর্তি বিরাজিতা। তাকেই দেবী সুগন্ধা রূপে পূজা করা হয় । দেবী খড়্গ, খেটক, নীলপদ্ম, নর মুণ্ডের কঙ্কাল ধারণ করে আছেন । মাথার ওপর কার্ত্তিক, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব , গণেশ বিরাজমান । এই মূর্তি বৌদ্ধ তন্ত্রের উগ্রতারার ।

সুগন্ধা শক্তিপীঠের দেবীর প্রাচীন মন্দির এখন আর নেই। এখন যেটা আছে সেটা নবনির্মিত ।

বৌদ্ধ তন্ত্রে তারা সাধনার বিশেষ প্রণালী দেখা যায়- সেই মতেই তারা মায়ের উপাসনা হয়।

গুগল ম্যাপে লোকেশান

সূত্র: উইকিপিডিয়া

তারিখ ২৭.০১.২০২২

3.1.4 - ভবানীপুর শক্তিপীঠ, বগুড়া

ভবানীপুর শক্তিপীঠ বাংলাদেশের বগুড়া জেলার শেরপুরে করতোয়াতটে অবস্থিত সতী মাতা তারার একান্ন শক্তিপীঠের অন্যতম। এখানে সতীর বাম পায়ের নূপুর পতিত হয়। এখানে দেবীর নাম অপর্ণা, ভৈরব হলেন বামেশ (বামন)।
ভবানীপুর শক্তিপীঠ, বগুড়া
ভবানীপুর শক্তিপীঠ, বগুড়া

ভবানীপুর শক্তিপীঠ বাংলাদেশের বগুড়া জেলার শেরপুরে করতোয়াতটে অবস্থিত সতী মাতা তারার একান্ন শক্তিপীঠের অন্যতম। এখানে সতীর বাম পায়ের নূপুর পতিত হয়। এখানে দেবীর নাম অপর্ণা, ভৈরব হলেন বামেশ (বামন)।

শক্তিপীঠ

শক্তিপীঠ হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থগুলির অন্যতম। লোকবিশ্বাস অনুসারে, শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থগুলিতে দেবী দাক্ষায়ণী সতীর দেহের নানান অঙ্গ প্রস্তরীভূত অবস্থায় রক্ষিত আছে। সাধারণত ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়ে থাকলেও, শাস্ত্রভেদে পীঠের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। পীঠনির্ণয় তন্ত্র গ্রন্থে শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১। শিবচরিত গ্রন্থে ৫১টি শক্তিপীঠের পাশাপাশি ২৬টি উপপীঠের কথাও বলা হয়েছে। কুব্জিকাতন্ত্র গ্রন্থে এই সংখ্যা ৪২। আবার জ্ঞানার্ণবতন্ত্র গ্রন্থে পীঠের সংখ্যা ৫০। ভারতীয় উপমহাদেশের নানা স্থানে এই শক্তিপীঠগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সকল শক্তিপীঠসমূহে শক্তিদেবী ভৈরবের সাথে অবস্থান করেন।

পৌরাণিক কাহিনী

কিংবদন্তি অনুসারে, সত্য যুগের কোনও এক সময়ে মহাদেবের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার শশুর দক্ষ রাজা বৃহস্পতি নামে এক যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। কন্যা সতী দেবী তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ‘যোগী’ মহাদেবকে বিবাহ করায় দক্ষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। মহাদেব ও সতী দেবী ছাড়া প্রায় সকল দেব-দেবীকে দক্ষ নিমন্ত্রণ করেছিলেন। মহাদেবের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সতী দেবী মহাদেবের অনুসারীদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।

কিন্তু সতী দেবী আমন্ত্রিত অতিথি না হওয়ায় তাকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। অধিকন্তু দক্ষ মহাদেবকে অপমান করেন। সতী দেবী তার স্বামীর প্রতি পিতার এ অপমান সহ্য করতে না পেরে যোগবলে আত্মাহুতি দেন।

এ খবর শুনে শোকাহত মহাদেব রাগান্বিত হয়ে দক্ষর যজ্ঞ ভণ্ডুল করেন এবং সতী দেবীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। জগৎ সংসার ধ্বংস হবার উপক্রম হয়। অন্যান্য দেবতা অনুরোধ করে এই নৃত্য থামান এবং বিষ্ণুদেব তার সুদর্শন চক্র দ্বারা সতী দেবীর মৃতদেহ ছেদন করেন। এতে সতী মাতার দেহখণ্ডসমূহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে এবং পবিত্র পীঠস্থান (শক্তিপীঠ) হিসেবে পরিচিতি পায়।

ইতিহাস

কথিত আছে যে এখানে একদা একজন শাঁখাওয়ালা (শাঁখা নির্মাতা) ভবানীপুর মন্দিরের ধারের গভীর জঙ্গলের পাশের একটি পুকুরের ধার অতিক্রম করছিলেন। এমন সময় সিঁথিতে সিঁদুর দেয়া একটি ছোট মেয়ে তার কাছে গিয়ে বলেছিল যে সে নাটোর রাজবাড়ির রাজকন্যা।

সে শাঁখাওয়ালার কাছ থেকে এক জোড়া শাঁখা কিনল এবং বলল যে শাঁখাওয়ালা যেন নাটোরের মহারাণীকে বলেন যে প্রাসাদের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা ঝুড়ি থেকে তার শাঁখার দাম দিয়ে দেন। শাঁখাওয়ালা মেয়েটির বিনীত কথায় মুগ্ধ হয়ে তাকে শাঁখা দিয়ে দিলেন।

শাঁখাওয়ালার মুখ থেকে ছোট মেয়েটির কথা শুনে মহারাণী লোকজন ও সেই শাঁখাওয়ালাকে নিয়ে মেয়েটির বলা জায়গায় গেলেন। শাঁখাওয়ালার প্রার্থনা শুনে মা ভবানী সেই শাঁখা-পুকুর থেকে তার দুই হাতের শাঁখা তুলে দেখালেন। মহারানী ও সেখানে উপস্থিত লোকজন এতে বিস্মিত হলেন এবং মা ভবানীর (মা তারার) মহিমা এই উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ল।

পরবর্তীতে নাটোর রাজপরিবার থেকে এই পুকুরের সংস্কার করা হয় এবং বর্তমানে এই কিংবদন্তির শাঁখা-পুকুরে তীর্থযাত্রীরা স্নান করেন।

মূর্তি

তন্ত্রচুড়ামণিতে আছে – “করতোয়াতটে কর্ণে বামে বামনভৈরবঃ। অপর্ণা দেবতা যত্র ব্রহ্মরূপাকরুদ্রবঃ।।” এই শক্তিপীঠের শক্তি দেবী অপর্ণা এবং ভৈরব বামেশ (বামন) নামে পরিচিত।

চার একর (১২ বিঘা) জমির ওপর প্রাচীর বেষ্টিত মন্দির চত্বর। এছাড়া আছে, মূলমন্দির, বেলবরণ তলা, শিব মন্দির ৪টি, পাতাল ভৈরব শিব মন্দির, গোপাল মন্দির, বাসুদেব মন্দির ও নাট মন্দির/আটচালা। উত্তরাংশে সেবা অঙ্গন, পবিত্র শাঁখা পুকুর, স্নানঘাট দুটি, বেষ্টনী প্রাচীরের বাইরে চারটি শিব মন্দির ও একটি পঞ্চমুন্ড আসন।

প্রভাতী ও বাল্যভোগ, দুপুরে পূজা ও অন্নভোগ, সন্ধ্যায় আরতি ও ভোগের ব্যবস্থা আছে। প্রতি দিন মন্দিরে আগত ভক্তরা মিষ্টান্ন ও অন্ন ভোগ দিতে পারেন ও পরে প্রসাদ গ্রহণ করতে পারেন। মাঘী পূর্ণিমা (মাঘ-ফাল্গুন), রাম নবমী (চৈত্র-বৈশাখ), শারদীয় দূর্গাপূজা, দীপান্বিতা শ্যামাপূজা এবং নবান্ন (অগ্রহায়ণ মাসে তিথি অনুযায়ী)।

মন্দির তত্ত্বাবধান

পূর্ব পাকিস্তান আমলে প্রণয়নকৃত শত্রু সম্পত্তি আইন বা দেবোত্তর বা অর্পিত সম্পত্তি আইন নামক কালো আইনের অপপ্রয়োগের কারণে নাটোরের রানী হতে প্রাপ্ত মা ভবানীর অনেক সম্পত্তি সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বেহাত হয়েছে বা বেহাত হওয়ার উপক্রম হয়েছে যেগুলো পুনরুদ্ধার হওয়া প্রয়োজন।

সাংবাদিক দীপঙ্কর চক্রবর্তী মা ভবানীর বেদখলকৃত প্রায় ৫০০ একর দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধারের ব্যাপারে সোচ্চার হওয়ার জন্য গত ০২/১০/২০০৪ তারিখে বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন আততায়ীদের হাতে নিহত হওয়ার পর দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর গত হলেও প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে শাস্তি দেয়ার পরিবর্তে তামাসা করা হয়েছে ।

২০০৭ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি তৎকালীন যৌথ বাহিনী (বিশেষ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী) ভক্তদের জন্য নির্মাণাধীন অতিথিশালা ভেঙ্গে ফেলে।

গুগল ম্যাপে লোকেশান

সূত্র: উইকিপিডিয়া

তারিখ ২৭.০১.২০২২

3.1.5 - সীতাকুণ্ড শক্তিপীঠ, চট্টগ্রাম

বাংলাদেশের সীতাকুন্ডের নিকটে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উপরে অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির অন্যতম বিখ্যাত শক্তিপীঠ। এই স্থানে দেবীর ডান হাত পতিত হয়েছে। এই পীঠের অধিষ্ঠাত্রী দেবীর নাম ভবানী এবং পীঠরক্ষক ভৈরবের নাম চন্দ্রশেখর।
সীতাকুণ্ড শক্তিপীঠ, চট্টগ্রাম
সীতাকুণ্ড শক্তিপীঠ, চট্টগ্রাম

বাংলাদেশের সীতাকুন্ডের নিকটে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উপরে অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির অন্যতম বিখ্যাত শক্তিপীঠ। এই স্থানে দেবীর ডান হাত পতিত হয়েছে। এই পীঠের অধিষ্ঠাত্রী দেবীর নাম ভবানী এবং পীঠরক্ষক ভৈরবের নাম চন্দ্রশেখর।

শক্তিপীঠ

শক্তিপীঠ হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থগুলির অন্যতম। লোকবিশ্বাস অনুসারে, শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থগুলিতে দেবী দাক্ষায়ণী সতীর দেহের নানান অঙ্গ প্রস্তরীভূত অবস্থায় রক্ষিত আছে। সাধারণত ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়ে থাকলেও, শাস্ত্রভেদে পীঠের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। পীঠনির্ণয় তন্ত্র গ্রন্থে শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১। শিবচরিত গ্রন্থে ৫১টি শক্তিপীঠের পাশাপাশি ২৬টি উপপীঠের কথাও বলা হয়েছে। কুব্জিকাতন্ত্র গ্রন্থে এই সংখ্যা ৪২। আবার জ্ঞানার্ণবতন্ত্র গ্রন্থে পীঠের সংখ্যা ৫০। ভারতীয় উপমহাদেশের নানা স্থানে এই শক্তিপীঠগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সকল শক্তিপীঠসমূহে শক্তিদেবী ভৈরবের সাথে অবস্থান করেন।

পৌরাণিক কাহিনী

কিংবদন্তি অনুসারে, সত্য যুগের কোনও এক সময়ে মহাদেবের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার শশুর দক্ষ রাজা বৃহস্পতি নামে এক যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। কন্যা সতী দেবী তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ‘যোগী’ মহাদেবকে বিবাহ করায় দক্ষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। মহাদেব ও সতী দেবী ছাড়া প্রায় সকল দেব-দেবীকে দক্ষ নিমন্ত্রণ করেছিলেন। মহাদেবের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সতী দেবী মহাদেবের অনুসারীদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।

কিন্তু সতী দেবী আমন্ত্রিত অতিথি না হওয়ায় তাকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। অধিকন্তু দক্ষ মহাদেবকে অপমান করেন। সতী দেবী তার স্বামীর প্রতি পিতার এ অপমান সহ্য করতে না পেরে যোগবলে আত্মাহুতি দেন।

এ খবর শুনে শোকাহত মহাদেব রাগান্বিত হয়ে দক্ষর যজ্ঞ ভণ্ডুল করেন এবং সতী দেবীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। জগৎ সংসার ধ্বংস হবার উপক্রম হয়। অন্যান্য দেবতা অনুরোধ করে এই নৃত্য থামান এবং বিষ্ণুদেব তার সুদর্শন চক্র দ্বারা সতী দেবীর মৃতদেহ ছেদন করেন। এতে সতী মাতার দেহখণ্ডসমূহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে এবং পবিত্র পীঠস্থান (শক্তিপীঠ) হিসেবে পরিচিতি পায়।

ইতিহাস

সংস্কৃত রাজমালা গ্রন্থানুসারে প্রায় ১২০৪ খৃস্টাব্দে গৌড়ের বিখ্যাত আদিশূর বংশের রাজা বিশ্বম্ভর শূর জলপথে চন্দ্রনাথ মন্দির দর্শনের চেষ্টা করেন। নিগমকল্পতরুর কবি জয়দেব গোস্বামী সুদীর্ঘকাল চন্দ্রনাথ ধামে বসবাস করেন। ত্রিপুরা রাজ্যের শিবভক্ত রাজা ধন্যমানিক্য চন্দ্রনাথ মন্দিরে প্রসাদ প্রেরণ করতেন। এমন কি তিনি এখান থেকে শিবমূর্তি নিজ রাজ্যে স্থানান্তরের চেষ্টা করেন।

মূর্তি

সীতাকুণ্ড অপরূপ প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্যের লীলাভূমি । এ এলাকাকে হিন্দুদের বড় তীর্থস্থান বলাই ভালো । এখানের সর্বোচ্চ পাহাড় চুড়ায় অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির । আর অন্যান্য আরো রয়েছে বড়বাজার পূজা মন্ডপ, ক্রমধেশ্বরী কালী মন্দির, ভোলানন্দ গিরি সেবাশ্রম, কাছারী বাড়ী, শনি ঠাকুর বাড়ী, প্রেমতলা, শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী সেবাশ্রম, শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম, গিরিশ ধর্মশালা, দোল চত্বর, ননী গোপাল সাহা তীর্থযাত্রী নিবাস, তীর্থ গুরু মোহন্ত আস্তানা, বিবেকানন্দ স্মৃতি পঞ্চবটি, জগন্নাথ আশ্রম, শ্রীকৃষ্ণ মন্দির,শংকরমঠ ও আশ্রম, বিশ্বনাথ মন্দির, মহাশ্মশানভবানী মন্দির, স্বয়ম্ভুনাথ মন্দির,গয়াক্ষেত্র, জগন্নাথ মন্দির, বিরুপাক্ষ মন্দির, পাতালপুরী, অন্নপূর্ণা মন্দির ইত্যাদি। সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ মন্দির তীর্থযাত্রীদের জন্য এক পবিত্র স্থান। এর পুরনো নাম ছিলো “সীতার কুন্ড মন্দির”।

এই মন্দিরে প্রতিবছর শিবরাত্রি তথা শিবর্তুদশী তিথিতে বিশেষ পূজা হয়; এই পূজাকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ডে বিশাল মেলা হয়। সীতাকুন্ড চন্দ্রনাথ পাহাড় এলাকা বসবাসকারী হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর বাংলা ফাল্গুন মাসে (ইংরেজি ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস) বড় ধরনের একটি মেলার আয়োজন করে থাকে। যেটি শিবর্তুদশী মেলা নামে পরিচিত। এই মেলায় বাংলাদেশহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য সাধু এবং নারী-পুরুষ যোগদান করেন।এই মেলা দোলপূর্ণিমা পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। প্রতি বছর পবিত্র এই তীর্থস্থানে ১০-২০ লক্ষাদিক তীর্থযাত্রীর আগমণ ঘটে ।

গুগল ম্যাপে লোকেশান

সূত্র: উইকিপিডিয়া

তারিখ ২৭.০১.২০২২