এটি এই বিভাগটির বহু পৃষ্ঠার মুদ্রণযোগ্য দর্শন। মুদ্রণ করতে এখানে ক্লিক করুন.

এই পৃষ্ঠার নিয়মিত দৃশ্যে ফিরে আসুন.

সংবাদ ২০২৫

এই অংশে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে সর্বশেষ ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ খবর, নির্যাতন-নিপীড়নের আপডেট, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়সহ সব ধরনের প্রাসঙ্গিক সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করা হয়। এটি কমিউনিটির বাস্তব চিত্র তুলে ধরার একটি নির্ভরযোগ্য উৎস।

অফিসের চাপে মহিলার আত্মহত্যা, সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

চট্টগ্রামের বোয়ালখালিতে শুক্লা দে অফিসের চাপে আত্মহত্যা, ৪ কর্মীকে অভিযোগ।
অফিসের চাপে মহিলার আত্মহত্যা, সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

চট্টগ্রামের বোয়ালখালিতে অফিসের কাজের চাপে আত্মহত্যা করেন শুক্লা দে (৩৮), এক বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মী। শুক্লার বেতন থেকে অনৈতিকভাবে টাকা কাটা হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এই চাপে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তার স্বামী সিদুল পাল সংস্থার ৪ জন কর্মীকে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

চট্টগ্রাম, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫: চট্টগ্রামের বোয়ালখালির শুক্লা দে নামের এক মহিলা আত্মহত্যা করেছেন অফিসের চাপে। মৃত মহিলার বয়স ৩৮ বছর, তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের মা। শুক্লা দে একটি বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা, ‘রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।

অভিযোগ, শুক্লার বেতন থেকে অনৈতিকভাবে টাকা কাটা হচ্ছিল সংস্থার দ্বারা। এই প্রক্রিয়ায় তিনি মানসিক চাপের শিকার হন। শুক্লা ঋণের কিস্তি আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন, কিন্তু ঋণের কিস্তি সময়মতো আদায় করতে ব্যর্থ হলে তাঁর ওপর অফিস থেকে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। এই চাপের কারণে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

শুক্লার স্বামী সিদুল পাল এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংস্থার ৪ জন কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, শুক্লা এই চাপের কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তার অভিযোগ অনুযায়ী, শুক্লা বেতন থেকে যে টাকা কাটা হচ্ছিল, তা ঋণের কিস্তি আদায় না করতে পারার জন্য। এরপর গত শনিবার সন্ধ্যায় তিনি রান্নাঘরে আত্মঘাতী হন।

অভিযুক্ত চারজন কর্মী হলেন কাঞ্চন দেবনাথ (৪৫ বছর), নন্দন (৪০ বছর), চিনু বিশ্বাস (৪২ বছর) এবং পলাশ নাথ (৪৩ বছর)। সিদুল পালের অভিযোগ থেকে জানা যায়, শুক্লা ২০২৩ সালের মে মাসে এই সংস্থায় কাজ শুরু করেন। তবে ৫ অগস্টের পর থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ের কাজের গতি কমতে থাকে। এই সময় ঋণ গ্রাহকদের সঙ্গে কঠিন মোকাবিলা করতে হলে শুক্লা বাধ্য হন, যা তাঁর কাজকে আরও জটিল করে তোলে।

অপরদিকে, ঋণের কিস্তি আদায় করতে না পারার কারণে অফিস থেকে শুক্লার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। তাঁর মাসিক বেতন থেকে অনাদায় ঋণের সমপরিমাণ টাকা কেটে রাখা হচ্ছিল এবং শেষ পর্যন্ত তাকে দূরের একটি ব্রাঞ্চে বদলি করা হয়। এই সকল ঘটনা শুক্লাকে মানসিকভাবে প্রবলভাবে প্রভাবিত করেছিল।

গত শনিবার সন্ধ্যায় শুক্লা আত্মঘাতী হন। তার স্বামী সিদুল পাল এই ঘটনার পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, এই ৪ জন কর্মী আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার জন্য দায়ী। তবে পুলিশ মামলা গ্রহণ করলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি, বলে জানা গেছে।

এই ঘটনা শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে ব্যাপক প্রশ্ন তুলে ধরেছে। শ্রম আইনের প্রয়োগ ও কর্মসংস্থানের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে আরও বেশি দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠেছে।

তারিখ: ০৭.০১.২০২৫

সংখ্যালঘু অধিকারে, নতুন প্ল্যাটফর্ম, বিশাল জমায়েত

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সংখ্যালঘু অধিকারে ১৩ প্ল্যাটফর্ম, বড় জমায়েত হয়েছে।
সংখ্যালঘু অধিকারে, নতুন প্ল্যাটফর্ম, বিশাল জমায়েত

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ১৩টি নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠিত হয়। গত পাঁচ মাসে চট্টগ্রাম, রংপুর ও ঢাকায় বড় জমায়েত করা হয়েছে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায়। এই আন্দোলনের পেছনে কারা আছে, তা নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন, তারা জানবেন এদের পেছনে বাংলাদেশী নিপীড়িত সনাতন ধর্মবালম্বীরাই আছেন।

ঢাকা, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫: গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন পর্যন্ত ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ১৩টি নতুন প্ল্যাটফর্ম (মোর্চা বা জোট) তৈরি হয়েছে। এসব প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে গত পাঁচ মাসে একক বা যৌথভাবে বিশাল জমায়েত করা হয়েছে চট্টগ্রাম, রংপুর ও ঢাকায়। এই ঘটনাগুলো দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দাবিতে হঠাৎ করে এত প্ল্যাটফর্ম তৈরি হওয়ার পেছনে কারা আছে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে।

সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা বিভিন্ন পুরোনো সংগঠনের নেতারা বলছেন, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় জটিল পরিস্থিতির মধ্যে আছে। কিন্তু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবারের মতো এত বড় আন্দোলন আর হয়নি। এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে নতুন প্ল্যাটফর্মগুলো।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলার প্রতিবাদে এবার যে মাত্রায় আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছে, তা বিগত কয়েক দশকে দেখা যায়নি।

নতুন যেসব প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। এই জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তাঁর ডাকে গত অক্টোবর ও নভেম্বরে চট্টগ্রামে এবং রংপুরে বিশাল দুটি সমাবেশ হয়, যা দেশের বাইরেও আলোচনার জন্ম দেয়। চিন্ময় কৃষ্ণ একসময় ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তারের পর তাঁকে গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে পুলিশের সঙ্গে তাঁর অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট ছাড়াও সংখ্যালঘুদের আরেকটি নতুন প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই দুটি প্ল্যাটফর্মের জন্ম হয়। কাছাকাছি সময়ে আত্মপ্রকাশ করা অন্য প্ল্যাটফর্মগুলো হলো বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিক, বাংলাদেশ সনাতনী সচেতন ছাত্রসমাজ, সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন, সনাতনী অধিকার আন্দোলন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট, সনাতন অধিকার মঞ্চ, সনাতনী ছাত্রসমাজ, বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতা, বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটি এবং সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এসব প্ল্যাটফর্মের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, নেতৃত্বে রয়েছেন মূলত সাধু-সন্ন্যাসী (মন্দির-মঠের পুরোহিত) ও শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় ঠিক কতটি সংগঠন কাজ করছে, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য কারও কাছে নেই। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে বিভিন্ন নামে হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার আদায়ে ৫০টির বেশি সংগঠন সক্রিয়। নতুন যে ১৩টি প্ল্যাটফর্ম ও সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে, তার মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়কেন্দ্রিক সংগঠনই ১১টি।

নতুন প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে আট দফা দাবি তোলা হয়েছে। প্রথম দফা হলো ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় ‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। এ ছাড়া সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনসহ অন্যান্য দাবিও রয়েছে।

এসব দাবির বিষয়ে গত ১৩ আগস্ট সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙগে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে দাবি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধান উপদেষ্টা।

তবে নতুন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ইতিবাচকভাবেই দেখেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও। তিনি বলেন, যেকোনো জাতিগোষ্ঠীর দুঃখ-বেদনা তুলে ধরার অধিকার আছে। এ ধরনের সমস্যা তুলে না ধরা গেলে সেটা আরও জটিল আকার ধারণ করে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষে এই আন্দোলনগুলো স্বতঃস্ফূর্ত এবং নতুন প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজন বোধ করে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।

তারিখ: ০৭.০১.২০২৫

চুরির সময় দেখে ফেলায় সাংবাদিকের মা–বাবাকে পিটিয়ে জখম: ফরিদপুরের পুলিশ সুপার

ফরিদপুরের মধুখালীতে চুরির সময় সাংবাদিকের বাবা-মাকে পিটিয়ে আহত, চোর গ্রেপ্তার।
চুরির সময় দেখে ফেলায় সাংবাদিকের মা–বাবাকে পিটিয়ে জখম: ফরিদপুরের পুলিশ সুপার

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় সাংবাদিক সৌগত বসুর বাবা-মাকে লাঠি দিয়ে আক্রমণ করা হয়, যার ফলে তারা আহত হয়। পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল জানান, পল্লব কুমার রায় (১৯) নামের এক তরুণকে এই অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আদালতে চুরির এবং আক্রমণের অপরাধ স্বীকার করেছেন।

ফরিদপুর, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫: ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় সাংবাদিক সৌগত বসুর মা-বাবাসহ তিনজনকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় পল্লব কুমার রায় (১৯) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই তথ্য আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান।

পুলিশ সুপার বলেন, “এই তিনজনকে পিটিয়ে আহত করেছেন পল্লব কুমার রায়। তাঁদের কোপ দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটি কোনো ডাকাতির ঘটনা নয়, কিংবা এ ঘটনার পেছনে বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।” পল্লব গতকাল রোববার আদালতে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামে আজকের পত্রিকা-এর ঢাকার নিজস্ব প্রতিবেদক সৌগত বসুর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এই হামলায় সৌগত বসুর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু বসু (৬৫), মা কাকলী বসু (৬০) এবং প্রতিবেশী কিশোরী প্রীতি মালো (১৫) আহত হন। শনিবার সৌগত বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে চুরির অভিযোগে একটি মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল জানান, মামলা হওয়ার পর শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পল্লব কুমার রায়কে ডুমাইন খেয়াঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার আদালতে পল্লব স্বীকার করেন, তিনি নেশা করার টাকা সংগ্রহ করার জন্য চুরির উদ্দেশ্যে ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন। বাড়ির মালিক শ্যামলেন্দু বসু তাঁকে দেখে ফেলায় তিনি ওই তিনজনকে একটি স্টিলের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পালিয়ে যান। আদালতের নির্দেশে গতকাল রাতে পল্লবকে কারাগারে পাঠানো হয়।

পল্লব মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের বটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, যিনি গাঁজা সেবন করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আগে চুরির কোনো অভিযোগ ছিল না বলে জানা যায়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা, সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) ইমরুল হাসান, মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোক্তার হোসেনসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

আহত শ্যামলেন্দু বসু এবং কাকলী বসু বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। সংবাদ সম্মেলনে সৌগত বসু প্রথম আলোকে পুলিশের কাজে প্রশ্ন তুলেন। তিনি বলেন, “গ্রেপ্তার হওয়া পল্লব এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাঁদের নাম পুলিশকে দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা বর্তমানে সপরিবার আত্মগোপনে আছেন। কিন্তু পুলিশ তা আমলে নেয়নি।” তিনি আরো বলেন, “প্রথম দিকে পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও পরের দিকে যোগাযোগ করেনি।”

পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল সৌগত বসুর বক্তব্যের প্রতিবাদে বলেন, “বাদী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন। পুলিশ তদন্ত করে যা পেয়েছে, তার ভিত্তিতেই আসামি শনাক্ত করা হয়েছে। আলামতও উদ্ধার করা হয়েছে। আসামি দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।”

এই ঘটনা প্রকাশে সাংবাদিক সমাজ এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সতর্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যারা এই ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।

তারিখ: ০৭.০১.২০২৫

শ্রীপুরে ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পরিয়ে টাকা ছিনতাই, এসআই প্রত্যাহার

শ্রীপুরে ব্যবসায়ী সবুজ সরকারকে হাতকড়া পরিয়ে টাকা ছিনতাই, পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার।
শ্রীপুরে ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পরিয়ে টাকা ছিনতাই, এসআই প্রত্যাহার

গাজীপুরের শ্রীপুরের হানু মার্কেট এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পরিয়ে দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, এসআই আবদুল কুদ্দুসকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী সবুজ সরকার মুঠোফোন ব্যবসা করেন। তিনি ফেসবুকে সেলফি শেয়ার করে ঘটনার প্রমাণ দেন।

গাজীপুর, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫: গাজীপুরের শ্রীপুরের হানু মার্কেট এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পরিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় শ্রীপুর থানার মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল কুদ্দুসকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই ঘটনার পটভূমিতে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে বলেন, “ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পড়ানো সংক্রান্ত ঘটনায় কর্তৃপক্ষ ওই এসআইকে ক্লোজড (প্রত্যাহার) করে গাজীপুর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করেছে।”

ঘটনার কেন্দ্রীয় ব্যক্তি হচ্ছেন সবুজ সরকার, যিনি মুঠোফোন সরঞ্জামের ব্যবসা করেন। তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে আটক করে তাঁর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ছিনতাই করার অভিযোগ উঠেছে এসআই আবদুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে। সবুজ সরকার জানান, গত শুক্রবার তাঁকে হানু মার্কেট এলাকা থেকে আটক করেন এসআই আবদুল কুদ্দুস। সেই সময় তিনি মুঠোফোনে সেলফি তুলে ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। গতকাল রোববার ওই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর এই ঘটনা জনসমক্ষে আসে।

সবুজ সরকার বিস্তৃত বিবরণ দেন, “আমাকে এক স্বজনের কথায় গত শুক্রবার হানু মার্কেট এলাকা থেকে আটক করেন এসআই আবদুল কুদ্দুস। আটক করে তিনি আমাকে হাতকড়া পরিয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পাশের একটি লোহার পাইপের সঙ্গে আটকে রাখেন। আটক করে তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন। আটক থাকা অবস্থায় আমি সেলফি তুলে রাখি। টাকা নেওয়ার পর ওই পুলিশ সদস্য আমাকে ছেড়ে দেন।”

সবুজ সরকার আরও বলেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তিনি উল্লেখ করেন, “পারিবারিক জমি নিয়ে এক স্বজনের সঙ্গে বিরোধের জেরে তাঁকে এইভাবে হেয়ানি করে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন ওই পুলিশ সদস্য।” তবে এসআই আবদুল কুদ্দুস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পুলিশ প্রশাসনের এই কার্যক্রম সম্পর্কে জয়নাল আবেদীন বলেন, “এই ধরনের ঘটনা আমাদের প্রতি জনগণের বিশ্বাসকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে। আমরা এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করব এবং দোষী প্রমাণিত হলে আইনসম্মত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

এই ঘটনা শ্রীপুর এবং গাজীপুরের স্থানীয় জনগণের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। ব্যক্তিগত ক্ষতি এবং বিশ্বাসঘাতকতার এই ঘটনা পুলিশের প্রতি জনগণের বিশ্বাসকে আহত করেছে। সবুজ সরকারের সেলফি এবং তার ফেসবুক পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পেয়েছে।

এই ঘটনায় পুলিশ বাহিনী কী ধরনের বৈধানিক এবং আন্তঃনির্বাহী ব্যবস্থা নেবে এবং কতটা দ্রুত এই বিষয়টি সমাধান করতে পারে, তা নিয়ে অপেক্ষায় আছে জনসাধারণ। পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে জয়নাল আবেদীন আশ্বাস দিয়েছেন যে, তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তারিখ: ০৭.০১.২০২৫

বাউফলে ১৪ ঘণ্টা পরও অপহৃত শিবু বণিককে উদ্ধার করা যায়নি, অন্যদের ধর্মঘট

পটুয়াখালীর বাউফলে ব্যবসায়ী শিবু বণিক অপহরণের ১৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাঁর খোঁজ মেলেনি। দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে তাঁকে ট্রলারে তুলে অপহরণ করে। পরিবার ও ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে আছেন। পুলিশ উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।
বাউফলে ১৪ ঘণ্টা পরও অপহৃত শিবু বণিককে উদ্ধার করা যায়নি, অন্যদের ধর্মঘট

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরে শুক্রবার রাত সোয়া ১০টায় ব্যবসায়ী শিবু বণিককে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে। দুর্বৃত্তরা দোকানের দুই কর্মচারীকে বেঁধে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে। ১৪ ঘণ্টা পরও শিবু বণিকের সন্ধান মেলেনি। ঘটনার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট পালন করছেন। পরিবার ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। পুলিশ নদী ও আশপাশের এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশের দাবি, প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশার কারণে অভিযানে অসুবিধা হচ্ছে।

পটুয়াখালী, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরে শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে দুর্বৃত্তরা ব্যবসায়ী শিবু বণিককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে। অপহরণের ১৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। শিবু বণিকের পরিবারের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

শিবু বণিক কালাইয়া বন্দরের একজন পরিচিত ব্যবসায়ী। তিনি চাল, ডাল, আটা সহ বিভিন্ন পণ্যের পাইকারি বিক্রেতা এবং কয়েকটি কোম্পানির পরিবেশক। ঘটনার সময় তিনি দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দোকানের কর্মচারী শংকর দাস জানান, রাত সোয়া ১০টার দিকে ৮-১০ জন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত দোকানে ঢুকে সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে এবং শিবু বণিক ও দুই কর্মচারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে।

দুর্বৃত্তরা দোকানের ক্যাশে থাকা পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে এবং এক পর্যায়ে শিবু বণিককে বেঁধে ট্রলারে করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় শিবু বণিকের বাসায় অন্য কোনো স্বজন উপস্থিত ছিলেন না।

এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে কালাইয়া বন্দরের পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছেন। ব্যবসায়ীরা শিবু বণিককে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানান। ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. নূরুল আমিন বলেন, “এমন ঘটনা বাউফলে আগে কখনো ঘটেনি। ১৩ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ শিবু বণিককে উদ্ধার করতে পারেনি, এটি হতাশাজনক।”

এদিকে, শিবু বণিকের স্বজন সনজিৎ বণিক বলেন, “তাঁর ডায়াবেটিক ও হৃদ্‌রোগ আছে। সময়মতো ওষুধ না খেলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। আমরা তাঁর দ্রুত উদ্ধারের অনুরোধ জানাচ্ছি।”

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তাঁরা কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়িতে বিষয়টি জানান। কিন্তু নৌ পুলিশ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। কালাইয়া নৌ পুলিশের পরিদর্শক গাজী সালাউদ্দিন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা খবর পাওয়ার পরই বাউফল থানা পুলিশের সহযোগিতায় ট্রলার নিয়ে অভিযান চালাই। সারা রাত নদীতে খুঁজেছি, কিন্তু প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশার কারণে স্পিডবোট চালানো সম্ভব হয়নি।”

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে আমি রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। আশপাশের থানাগুলোতে বার্তা পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশের একাধিক দল নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।”

এই ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কালাইয়া বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তারা পুলিশের তৎপরতায় সন্তুষ্ট নন এবং শিবু বণিককে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

অপরদিকে, স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এই ঘটনায় দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে। তবে কুয়াশা ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অভিযান চালাতে অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের কর্মকর্তারা।

বাউফলের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন শিবু বণিকের নিরাপদ উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে। তারা বলেছেন, এই ধরনের ঘটনা যদি দ্রুত সমাধান না করা হয়, তাহলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বাড়বে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়তে পারে।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং শিবু বণিকের খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

ফরিদপুরে হিন্দু সাংবাদিকের মা এবং মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে ধারাল অস্ত্রের কোপ

ফরিদপুরে দুষ্কৃতীদের হামলায় হিন্দু মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু বসু ও তার স্ত্রী আহত হয়েছেন। চুরি করতে গিয়ে বাধা পেয়ে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। আহতদের ফরিদপুর মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
ফরিদপুরে হিন্দু সাংবাদিকের মা এবং মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে ধারাল অস্ত্রের কোপ

ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার মাইন গ্রামে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় শ্যামলেন্দু বসু (৬৮) এবং তার স্ত্রী কাকলী বসু (৬০) দুষ্কৃতীদের হামলায় গুরুতর আহত হন। চুরি করতে গিয়ে বাধা পেয়ে দুষ্কৃতীরা তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। স্থানীয়দের চিৎকারে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আহতদের মধুখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।

ফরিদপুর, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার মাইন গ্রামে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুর্বৃত্তদের হামলায় হিন্দু মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু বসু (৬৮) এবং তার স্ত্রী কাকলী বসু (৬০) গুরুতর আহত হন। জানা যায়, শ্যামলেন্দু বসু এবং তার স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন যখন দুর্বৃত্তরা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। দুর্বৃত্তরা চুরি করতে এসেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শ্যামলেন্দু বসুর ছেলে সৌগত বসু একজন সাংবাদিক এবং তিনি ঢাকায় থাকেন। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। শ্যামলেন্দু বসু এবং কাকলী বসু তাদের দৈনন্দিন কাজ শেষে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ৮-১০ জন দুর্বৃত্ত মুখোশ পরে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। চুরি করতে গিয়ে শ্যামলেন্দু বসু এবং তার স্ত্রী বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।

শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে, এবং তার মাথার হাড় ভেঙে যায়। তার স্ত্রী কাকলী বসুও গুরুতর আহত হন। এ সময় বাড়িতে থাকা এক নাবালিকা তরুণীও হামলায় সামান্য আহত হয়। শ্যামলেন্দু বসু এবং কাকলী বসুর চিৎকার শুনে এলাকাবাসীরা সেখানে জড়ো হন, কিন্তু ততক্ষণে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে মধুখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসক অর্ণব জানান, শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে, এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জীবন কুমার মন্ডল জানান, হামলার সময় শ্যামলেন্দু বসু এবং কাকলী বসু অজ্ঞান হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরাই তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

ফরিদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে।

সাংবাদিক সৌগত বসু বলেন, গ্রামে তাদের কারো সঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই। তার বাবা-মা ছাড়া বাড়িতে আর কেউ থাকেন না। তার মা আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন এবং এই ঘটনায় তারা আরও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, মধুখালি এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়েছে। তারা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন। এই ঘটনার পর থেকে গ্রামবাসীরা আতঙ্কে রয়েছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলাকারীদের শনাক্ত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

বাউফলে ব্যবসায়ী শিবু বনিককে অস্ত্রের মুখে অপহরণ, কর্মচারীদের বেঁধে টাকা লুট

পটুয়াখালীর বাউফলে শিবু বনিক নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। দোকান থেকে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। বন্দরের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানান।
বাউফলে ব্যবসায়ী শিবু বনিককে অস্ত্রের মুখে অপহরণ, কর্মচারীদের বেঁধে টাকা লুট

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরে শিবু বনিক নামের এক ব্যবসায়ীকে শুক্রবার রাতে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। রাত সোয়া ১০টার দিকে দোকান বন্ধের প্রস্তুতিকালে ৮-১০ জনের একটি মুখোশধারী দল তার দোকানে হামলা চালায়। তারা শিবু বনিক ও দুই কর্মচারীকে বেঁধে ফেলে এবং দোকানের ক্যাশ থেকে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে নেয়। পরে শিবু বনিককে বেঁধে ট্রলারে করে নিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে এবং ব্যবসায়ীরা দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

পটুয়াখালী, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরের মার্চেন্টপট্টি এলাকায় শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে এক ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। শিবু বনিক (৬৫) নামের এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিবু বনিক দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের একজন বড় পাইকারি ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি চাল, ডাল, আটা এবং অন্যান্য খাদ্যপণ্য পাইকারি বিক্রয় করে থাকেন।

শুক্রবার রাতে, দোকান বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শিবু বনিক। সারাদিনের লেনদেনের হিসাব শেষে কর্মচারীদের সঙ্গে তিনি দোকানে অবস্থান করছিলেন। রাত সোয়া ১০টার দিকে হঠাৎ করে ৮-১০ জনের একটি মুখোশধারী সশস্ত্র দল দোকানে ঢোকে। তারা শিবু বনিকসহ তার দুই কর্মচারী শংকর (৩৪) এবং তাপস (৩৫) কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে।

সন্ত্রাসীরা শংকর ও তাপসকে হাত পা বেঁধে ফেলে এবং দোকানের ক্যাশ থেকে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে। এরপর তারা শিবু বনিককে বেঁধে একটি ট্রলারে উঠিয়ে অপহরণ করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।

এ ঘটনা মুহূর্তেই বন্দরে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে জড়ো হন এবং শিবু বনিককে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানাতে থাকেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে পড়ে যান এবং রাতভর তারা দোকানপাট বন্ধ রেখে নিরাপত্তার জন্য অবস্থান নেন।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, “আমরা বিষয়টি শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে এবং ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “দোকানে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। আশা করি দ্রুতই আমরা অপহরণকারীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হব।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কালাইয়া বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পুলিশের টহল ব্যবস্থা যথাযথ নয় এবং নিরাপত্তার অভাবেই এমন ঘটনা ঘটছে।

বন্দরের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বলেন, “আমরা পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি, দ্রুত শিবু বনিককে উদ্ধার করতে এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ধরনের ঘটনা ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।”

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, “এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা চাই দ্রুত অপহৃত ব্যবসায়ীকে ফিরিয়ে আনা হোক।”

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক বলেন, “আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে। ঘটনাটি খুবই উদ্বেগজনক এবং আমরা এটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”

এ ঘটনার পর থেকে কালাইয়া বন্দরের ব্যবসায়ীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী রাতের বেলা দোকান খোলা রাখার বিষয়ে ভাবছেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আরও নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছেন।

তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং পুলিশ আশা করছে শিগগিরই অপহরণকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

নড়াইলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

নড়াইলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কর্মী সম্মেলন ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন অপর্ণা রায় দাস। জেলার তিন উপজেলার সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
নড়াইলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

নড়াইলের রুপগঞ্জ নিশিনাথতলা মন্দির প্রাঙ্গণে শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কর্মী সম্মেলন ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি অপর্ণা রায় দাস এবং সভাপতিত্ব করেন অশোক কুন্ডু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমীর বসু, মনিরুল ইসলাম ও দেবাশীষ রায় মধু। জেলার তিন উপজেলার সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সম্প্রীতি বজায় রাখার বার্তা দেওয়া হয় এবং সংগঠনের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়।

নড়াইল, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: নড়াইলের রুপগঞ্জ নিশিনাথতলা মন্দির প্রাঙ্গণে শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের নড়াইল জেলা শাখার উদ্যোগে কর্মী সম্মেলন ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অপর্ণা রায় দাস। তিনি তার বক্তব্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নড়াইল জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক কুন্ডু। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু। তার বক্তব্যে তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতির গুরুত্ব এবং সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করার বিষয়ে আলোকপাত করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের ট্রাস্টি সমীর বসু। তিনি তার বক্তব্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

এছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য দেবাশীষ রায় মধু, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জুলফিকার আলী মন্ডল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী হাসান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার রিজভী জর্জ।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মানিক লাল তার বক্তব্যে সংগঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের উপর আলোকপাত করেন। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক জয় দেব রায়, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক খন্দকার ফসিয়ার রহমান এবং সদস্য সচিব মঞ্জুরুল সাঈদ বাবুও সভায় বক্তব্য দেন।

সম্মেলনে জেলার তিন উপজেলার সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন বিপুল সংখ্যায় অংশগ্রহণ করেন। তারা সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এ সম্মেলনে সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন।

এই সম্মেলন ও সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং সনাতন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি জোরদার করা। বক্তারা তাদের বক্তব্যে সনাতন সম্প্রদায়ের কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এবং ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে এ ধরনের সম্মেলন আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

উপস্থিত সবার অংশগ্রহণ এবং উদ্দীপনায় সম্মেলনটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়। সমাবেশ শেষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যেখানে স্থানীয় শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

মার্কিন কংগ্রেসে প্রথমবার চারজন হিন্দু প্রতিনিধি নির্বাচিত

১১৯তম মার্কিন কংগ্রেসে প্রথমবারের মতো চারজন হিন্দু প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। সুহাস সুব্রণিয়ম, রাজা কৃষ্ণমূর্তি, রো খান্না ও শ্রী থানেদার এই সম্মান অর্জন করেছেন। এটি মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
মার্কিন কংগ্রেসে প্রথমবার চারজন হিন্দু প্রতিনিধি নির্বাচিত

১১৯তম মার্কিন কংগ্রেসে একসঙ্গে চারজন হিন্দু প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, যা মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবার ঘটল। নির্বাচিত এই চারজন হলেন সুহাস সুব্রণিয়ম, রাজা কৃষ্ণমূর্তি, রো খান্না এবং শ্রী থানেদার। মার্কিন কংগ্রেসে সংখ্যালঘু ধর্মীয় প্রতিনিধিদের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ সংখ্যা। কংগ্রেসে মাত্র ১৪ জন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, যারা খ্রিস্টান বা জিউয়িশ নন। তাদের মধ্যে চারজন হিন্দু ছাড়াও চারজন মুসলিম, তিনজন বৌদ্ধ এবং তিনজন একেশ্বরবাদী রয়েছেন। এই অর্জন মার্কিন রাজনীতিতে ধর্মীয় বৈচিত্র্য এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপস্থিতি বৃদ্ধি করছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: ১১৯তম মার্কিন কংগ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে ৩ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে শুরু হয়েছে, যেখানে প্রথমবারের মতো চারজন হিন্দু প্রতিনিধি একসঙ্গে নির্বাচিত হয়েছেন। মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সুহাস সুব্রণিয়ম, রাজা কৃষ্ণমূর্তি, রো খান্না এবং শ্রী থানেদার এই নির্বাচনে জয়লাভ করে জনতার প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান কংগ্রেসে মোট ১৪ জন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন যারা খ্রিস্টান বা জিউয়িশ নন। তাদের মধ্যে চারজন হিন্দু, চারজন মুসলিম, তিনজন বৌদ্ধ এবং তিনজন একেশ্বরবাদী রয়েছেন। এই তালিকায় সুহাস সুব্রণিয়ম, রাজা কৃষ্ণমূর্তি, রো খান্না এবং শ্রী থানেদার হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

এছাড়া, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নারী প্রমীলা জয়পাল হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে নির্বাচিত হয়েছেন, যদিও তিনি তাঁর ধর্মীয় পরিচয় ‘অনির্দিষ্ট’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন। আরেক ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রতিনিধি ড. অমি বেরা নিজেকে একেশ্বরবাদী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। ড. বেরা বর্তমান কংগ্রেসে ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রতিনিধিদের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র সদস্য।

মার্কিন কংগ্রেসের অধিকাংশ সদস্যই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। খ্রিস্টানদের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন জিউয়িশ জনপ্রতিনিধিরা, যারা মোট আসনের প্রায় ৬ শতাংশ দখল করেছেন। এই মুহূর্তে কংগ্রেসে ৩১ জন জিউয়িশ প্রতিনিধি রয়েছেন। তালিকার তৃতীয় স্থানে মুসলিম এবং হিন্দু জনপ্রতিনিধিরা যৌথভাবে রয়েছেন। নির্বাচিত চারজন মুসলিম জনপ্রতিনিধির মধ্যে রয়েছেন আন্দ্রে কারসন, ইলহান ওমর, রশিদা তলিব এবং লতিফা সাইমন।

এই কংগ্রেসে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে রয়েছেন ডেরেম ট্রাম, যিনি ক্যালিফোর্নিয়ার ৪৫তম কংগ্রেসীয় জেলা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ১১৯তম মার্কিন কংগ্রেসে তৃতীয় বৌদ্ধ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

সিকিউ রোল কলের পরিসংখ্যান অনুসারে, রিপাবলিকান জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ৯৮ শতাংশ নিজেদের খ্রিস্টান হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এই সংখ্যা ৭৫ শতাংশ। মাত্র তিনজন রিপাবলিকান রয়েছেন যারা খ্রিস্টান নন, যেখানে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এই সংখ্যা ৬৬। আরও ২১ জন ডেমোক্র্যাট জানিয়েছেন যে তারা নির্দিষ্ট করে কোনও ধর্মে বিশ্বাসী নন।

এই নির্বাচনের মাধ্যমে মার্কিন রাজনৈতিক অঙ্গনে ধর্মীয় বৈচিত্র্যের উপস্থিতি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এটি শুধুমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য নয়, বরং সমস্ত সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীর জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল নারীকে মারধর, বাড়িতে আগুন, চেয়ারম্যান অভিযুক্ত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জমি বিরোধে ফিলোমিনা হাসদা আহত, বাড়িতে আগুন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল নারীকে মারধর, বাড়িতে আগুন, চেয়ারম্যান অভিযুক্ত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রাজাবিরাট এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে সাঁওতাল নারী ফিলোমিনা হাসদা (৫৫) মারধর এবং তার বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ফিলোমিনা বর্তমানে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার ছেলে ব্রিটিশ সরেন জানান যে, চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের পৈত্রিক জমির উপর মাটি ভরাট করতে গেলে এই ঘটনা ঘটে।

গাইবান্ধা, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রাজাবিরাট এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক সাঁওতাল নারী, ফিলোমিনা হাসদা (৫৫), মারধরের শিকার হন এবং তার বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ফিলোমিনা বর্তমানে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ফিলোমিনা হাসদার ছেলে ব্রিটিশ সরেন মিডিয়ার সাথে কথা বলতে গিয়ে জানান, “গতকাল সকাল ১০টার দিকে গ্রামের পাশে সাঁওতালদের পৈত্রিক জমি, যা বাঙালিরা দখল করে নিয়েছে, সেই জমিতে রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মাটি ভরাট করছিলেন। জায়গাটি আগে পতিত অবস্থায় ছিল। হঠাৎ করে চেয়ারম্যান সেই জমিতে মাটি ভরাট করছেন দেখে গ্রামের কয়েকজন সাঁওতাল যুবক বাধা দিতে যায়। তখন চেয়ারম্যানের সামনেই তার লোকজন আমার খালাতো ভাই নিকোলাস মুর্মুকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। আমরা কিছু দূরে আলুর খেতে কাজ করছিলাম। খালাতো ভাইকে মারধরের কথা শুনে আমি প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে লাঠি দিয়ে মারতে আসেন। এসময় আমার মা চেয়ারম্যানের লাঠি ধরতে গেলে চেয়ারম্যান তার কানে উপর্যুপরি থাপ্পড় দেন। এতে মা মাটিতে পড়ে যান এবং তার কান দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে।”

ব্রিটিশ সরেন আরও বলেন, “সকালে সাড়ে ১১টার দিকে ভাইয়েরা মাকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে দুপুর ১২টার দিকে আমি আবার আলুর খেতে গেলে চেয়ারম্যানের অনুসারী ২০-২৫ জন লোক আমাকে বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করে এবং হুমকি দিয়ে চলে যায়।” বিকেলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা ফিলোমিনাকে রেফার করলে তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ব্রিটিশ সরেন জানান, “মা এখনো সেখানে চিকিৎসাধীন।”

“রাত ১১টার দিকে শুনি চেয়ারম্যানের লোকজন আমাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। তবে একটি ঘর পুড়ে গেছে,” বলেন তিনি।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম এই ঘটনায় তার অবস্থান জানিয়ে বলেন, “১০-১২ বছর আগে স্থানীয় এক বাঙালি মালিকের কাছ থেকে ১৬ শতক জমি কিনেছিলাম। সেই জমিতে মাটি ভরাট করতে গেলে ব্রিটিশ সরেনসহ কয়েকজন সাঁওতাল যুবক বাধা দেয়। আমার লোকজন তাদের তাড়িয়ে দেয়। আমার কাছে জমির দলিল আছে। জমিও আমার নাম রেকর্ড হয়েছে। আমি ব্রিটিশ সরেনের মাকে মারধর করিনি।”

তবে সাঁওতালদের দাবি অনুযায়ী, বাঙালিরা ভুয়া দলিলপত্র তৈরি করে এই জমি দখলে নিয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ বাগদা-ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, “আগে রাজাবিরাট গ্রামে অনেক সাঁওতাল পরিবার ছিল। তবে স্বাধীনতার পর থেকে তাদের প্রায় ২৫০ বিঘা জমি স্থানীয় বাঙালিরা নানাভাবে দখলে নিয়েছে। সে কারণে সেখান থেকে অনেক সাঁওতাল পরিবার অন্য জায়গায় চলে গেছে।” ফিলিমন বাস্কে জানান, “ব্রিটিশ সরেনের মাকে মারধর ও বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আমরা প্রতিবাদ সভা করব। এখন সরেজমিনে দেখতে যাচ্ছি। পরে থানায় যাব।”

ফিলোমিনা হাসদার বাড়িতে আগুন দেওয়ার বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, “তাদের বাড়িতে কারা আগুন দিয়েছে আমি জানি না। সেসময় আমি থানায় ছিলাম।” তবে স্থানীয় দুই প্রত্যক্ষদর্শী জানান যে, সকালে চেয়ারম্যান নিজে সাঁওতালদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি এবং ফিলোমিনা হাসদাকে মারধর করেন।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম এই বিষয়ে বলেন, “ঘটনাটি তদন্ত করতে একজন অফিসারকে সেখানে পাঠিয়েছি। শুনেছি জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে ঝামেলা হয়েছে। একজন সাঁওতাল নারীকে কানে থাপ্পড় দিয়েছেন (চেয়ারম্যান)। আর রাতে বাড়িতে কে আগুন দিয়েছে সেটা কেউ দেখেনি। আমার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। চেয়ারম্যান হোক আর যেই হোক ছাড় দেওয়া হবে না।”

তারিখ: ০৬.০১.২০২৫

বাঘারপাড়ায় পুলিশ পরিচয়ে দুই বাড়িতে ডাকাতি, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট

যশোরের বাঘারপাড়ায় পুলিশ-পরিচয় দিয়ে দুই বাড়িতে ডাকাতি; টাকা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার লুট।
বাঘারপাড়ায় পুলিশ পরিচয়ে দুই বাড়িতে ডাকাতি, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় পুলিশের পরিচয় দিয়ে দুই বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার ভোরে বরভাগ গ্রামে পশুপতি ও বিশ্বনাথ দেবনাথের বাড়িতে ঢুকে ডাকাত দল টাকা, মোবাইল ফোন এবং স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। তারা পুলিশের পোশাক পরে এসেছিল, যা এই ডাকাতির নাটকীয়তা বাড়িয়ে তুলেছে।

যশোর, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় আজ শনিবার ভোরে দুই বাড়িতে পুলিশের পরিচয় দিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার শিকার হন বরভাগ গ্রামের প্রবীণ পশুপতি দেবনাথ (৭০) এবং তাঁর ভাই বিশ্বনাথ দেবনাথ (৫২)। ডাকাত দল তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়।

বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম প্রথম আলোকে বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” ঘটনার বিস্তারিত জানতে গেলে বোঝা যায়, ভোর সোয়া চারটার দিকে ছয়টি মোটরসাইকেলে করে ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১২ থেকে ১৪ জন ব্যক্তি এই দুই ভাইয়ের বাড়িতে এসেছিল। তাদের কয়েকজন ডিবি পুলিশের মতো পোশাক পরা ছিল, অন্যদের গায়ে পুলিশের ‘নেভি-ব্লু’ জ্যাকেটের মতো দেখতে জ্যাকেট ছিল, তবে পোশাকের গায়ে কিছু লেখা ছিল না। সবাই সাধারণ প্যান্ট পরে এসেছিল। একজনের কাছে একটি পিস্তল এবং ওয়াকিটকি দেখা গিয়েছিল।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা বলেন, এই ব্যক্তিরা প্রথমে বিশ্বনাথ দেবনাথের ঘরের সামনে গিয়ে ডাকতে শুরু করে। তারা বলেন যে, “চট্টগ্রাম থেকে কিছু লোক অবৈধ অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে আছে” এবং তাই থানা থেকে তল্লাশি করতে এসেছেন। নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে, দরজা না খুললে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকবেন বলে জানান। অবশেষে দরজা খুলে দিলে তারা ঘরে ঢুকে পুলিশের মতো করে বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি শুরু করে।

এ সময় তাদের কয়েকজন পাশের পশুপতি দেবনাথের বাড়িতে ঢোকেন। ডাকাত দল এক পর্যায়ে পশুপতি দেবনাথ এবং বিশ্বনাথ দেবনাথের ছেলে ব্রজেশ্বর দেবনাথকে (২৫) প্লাস্টিকের তালা দিয়ে পেছন থেকে দুই হাত আটকে রাখে। তারপরে বাড়িতে থাকা বিশ্বনাথ দেবনাথ, তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে বসিয়ে রাখে এবং ঘরের আলমারির চাবি নিয়ে নেয়। তারা দুই বাড়ির সব কক্ষের আসবাব ও বাড়ির পারিবারিক মন্দিরে থাকা বিভিন্ন পূজার উপকরণ ওলট-পালট করতে থাকে।

পশুপতি দেবনাথের ছেলে দেবপ্রসাদ দেবনাথ বলেন, “প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে ডাকাতি চলে। ডাকাত দল আমার কাকার ঘর থেকে ৯০ হাজার টাকা, আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার, একটি আইফোন ও একটি মুঠোফোন এবং আমার বাবার ঘর থেকে পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার, পাঁচ হাজার টাকা এবং আমার মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও মোটরসাইকেলের কাগজপত্র নিয়ে যায়।” ডাকাতি শেষে তারা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, “আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে আমরা থানায় অভিযোগ করব।”

এই ঘটনা অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে, বিশেষ করে যেহেতু ডাকাতরা পুলিশের পরিচয় দিয়ে কাজ করেছিল। এটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টি করেছে এবং পুলিশের প্রতি বিশ্বাসকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে। স্থানীয় পুলিশ এখন এই ঘটনার তদন্তে ব্যস্ত এবং ভুক্তভোগীদের মালামাল ফিরে পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তারিখ: ০৬.০১.২০২৫

মৌলভীবাজারের বড়লেখা আশ্রমে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট

মৌলভীবাজারের বড়লেখার আদিত্যের মহাল শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর আশ্রমে হামলা, সেবায়েতরা আক্রান্ত, পুলিশ তদন্তে ব্যস্ত।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা আশ্রমে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী আদিত্যের মহাল শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সেবা আশ্রমে বুধবার (১ জানুয়ারি ২০২৫) সকালে হামলা হয়। হামলাকারীদের আক্রমণে আশ্রমের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেবায়েতদের শারীরিক আক্রমণ করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে, মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রচেষ্টা চলছে।

মৌলভীবাজার, ০১ জানুয়ারি, ২০২৫: মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী আদিত্যের মহাল শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সেবা আশ্রমে বুধবার সকালে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। সকাল ৯টার দিকে একদল অজ্ঞাত ব্যক্তি আশ্রমে প্রবেশ করে ভাঙচুর এবং লুটপাট করে। এই হামলায় আশ্রমের ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, হামলাকারীরা আশ্রমের ভেতরে ঢুকে প্রার্থনার স্থান, মূর্তি, এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী ভাঙচুর করে। তারা সেবায়েতদেরও মারধর করে, যার ফলে আশ্রমের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেবায়েতরা আত্মরক্ষায় নিরস্ত হয় এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন।

ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যাপারটি সম্পর্কে জানিয়েছেন যে, আশ্রমের কর্তৃপক্ষের ওপরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। পুলিশ তদন্তের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে যোগাযোগ করছে, ক্যামেরা ফুটেজ খুঁজছে এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে ব্যস্ত।

স্থানীয় জনগণ এই ঘটনায় শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শাস্তির দাবি জানিয়েছে। বড়লেখা উপজেলার বাসিন্দা জানিয়েছেন যে এই ধরনের ঘটনা তাদের নিরাপত্তার অনুভূতিকে ক্ষুণ্ণ করে এবং আশ্রমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন। কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এই ঘটনা শুধু আশ্রমকে নয়, আমাদের সম্প্রদায়কেও আঘাত করেছে। আমরা আশা করি যে প্রশাসন দ্রুত বিচার করবে এবং দোষীদের শাস্তি দেবে।”

ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এই ঘটনাকে নিন্দা করেছেন এবং আশ্রমের পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, “এই ধরনের হামলা আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের মূলকে আঘাত করে। আমরা আশা করি যে জোরদার তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি মিলবে।” আশ্রমের সেবায়েতরা প্রকাশ করেছেন যে এই হামলা তাদের নৈতিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, “আমরা চাই যে প্রশাসন আমাদের সাহায্য করে এবং এই ধরনের ঘটনা আবার ঘটতে না দেয়।”

স্থানীয় প্রশাসন এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ আশ্রমের পুনর্গঠনের জন্য একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন। তারা আশ্রমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াতে এবং সেবায়েতদের পুনর্বাসনের জন্য প্রোগ্রাম তৈরি করতে ব্যস্ত।

যেহেতু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে হামলা এবং লুটপাটের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই এই ঘটনা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশ্নকে আরো স্পষ্ট করে তুলেছে। স্থানীয় জনগণ এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় আশা করা হচ্ছে যে দ্রুত বিচার হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন সম্ভব হবে। এই ঘটনা জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তাকেও উন্মোচন করেছে, যেখানে সকলের সুরক্ষা এবং শান্তি বজায় রাখা প্রয়োজন।

তারিখ: ০৬.০১.২০২৫

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনে জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ চায় গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন

গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন (GBHC) বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন রুখতে জাতিসংঘে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে। তারা বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন ও সংখ্যালঘুদের জন্য সুরক্ষিত এলাকা গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। ভারত সরকারকেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান করা হয়েছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনে জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ চায় গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন

গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন (GBHC) শুক্রবার আগরতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে তারা জাতিসংঘ এবং ভারত সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে। দাবির মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সুরক্ষিত এলাকা গঠন। GBHC নির্বাহী সুশান্ত দাস বাংলাদেশ সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও নির্যাতনে জড়িত। অন্য এক নির্বাহী পুষ্পিতা সিনহা জানান, বাংলাদেশে হিন্দুদের ভারতীয় গুপ্তচর বলা হচ্ছে এবং ভারতীয় পতাকার অবমাননা হচ্ছে।

টরন্টো, ০৩ জানুয়ারি, ২০২৫: টরন্টো ভিত্তিক গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন (GBHC) শুক্রবার আগরতলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করে। তারা দাবি করেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতন বন্ধে GBHC জাতিসংঘ এবং ভারত সরকারের কাছে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উত্থাপন করেছে।

GBHC জানায়, তাদের প্রথম দাবি হলো বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা। তাদের মতে, এই উদ্যোগ সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষায় সহায়ক হবে। দ্বিতীয়ত, সংখ্যালঘুদের জন্য নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এছাড়াও, বাংলাদেশ সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা করার দাবি জানানো হয়েছে।

GBHC নির্বাহী সদস্য সুশান্ত দাস ভারত সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন যাতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরাসরি সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনে অংশ নিচ্ছে এবং লুটপাট করছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণে পরিচালিত এই নির্যাতন বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করা উচিত।”

পুষ্পিতা সিনহা, GBHC-এর আরেক নির্বাহী, সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ‘ভারতীয় গুপ্তচর’ বলে অভিযুক্ত করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুলে ভারতীয় পতাকার অবমাননা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসন হিজবুত তাহরিরের মতো জঙ্গি সংগঠনের সহযোগিতায় অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে।

সিনহা বলেন, “বাংলাদেশে শিক্ষক, অধ্যাপক, মুক্তমনা চিন্তাবিদ এবং মুক্তিযোদ্ধারা হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের পক্ষে কথা বলার কারণে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের নির্বাচনী তালিকা থেকে হিন্দু প্রার্থীদের নাম বেছে বেছে বাদ দেওয়া হচ্ছে।”

GBHC-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তারা ভারত সরকারকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।

GBHC-এর এই সংবাদ সম্মেলন বিভিন্ন মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামীতে তারা জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার কাছে বিষয়টি আরও ব্যাপকভাবে উত্থাপন করবে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

আইনি প্রহসনে এখনও বন্দি প্রভু, ঢাকাকে দিল্লির কড়া বার্তা, ‘সুবিচার করুন’

চট্টগ্রাম আদালত ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন খারিজ করেছে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত চিন্ময়ের পক্ষে ১১ জন আইনজীবী সওয়াল করলেও জামিন মঞ্জুর হয়নি। ভারত দ্রুত সুবিচার দাবি করেছে।
আইনি প্রহসনে এখনও বন্দি প্রভু, ঢাকাকে দিল্লির কড়া বার্তা, ‘সুবিচার করুন’

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করেছে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত চিন্ময়ের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী সওয়াল করলেও আদালত নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে চিন্ময়কে হাজির করেনি। ভার্চুয়াল শুনানিতে জামিন নামঞ্জুর হয়। ভারত সরকার দ্রুত সুবিচারের দাবি জানিয়েছে। ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে চিন্ময়কে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ২৬ তারিখ চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার শুনানিতে জামিন খারিজ হয়।

চট্টগ্রাম, ০৩ জানুয়ারি, ২০২৫: গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলাম ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করেছেন। সকাল সোয়া ১০টায় ভার্চুয়াল শুনানিতে চিন্ময়ের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন আইনজীবীর দল সওয়াল করে। তবে নিরাপত্তার কারণে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালতে আইনজীবীদের উপস্থিতিতে ভার্চুয়াল শুনানিতেই জামিন আবেদন খারিজ হয়।

শুক্রবার বিদেশমন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। আমরা দ্রুত সুবিচারের দাবি জানাচ্ছি।” বাংলাদেশে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়ের বিরুদ্ধে ইউনুস সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহের এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হতে পারে।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিমউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে বলেছে, এটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা এবং এর সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন। আদালত এই যুক্তি মেনে নিয়ে চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করেছে। আইনগতভাবে কেউ ক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ রয়েছে।

গত ২৫ নভেম্বর বিকেলে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরের দিন, ২৬ নভেম্বর তাঁকে চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়। শুনানির পর আদালত চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করে। এই গ্রেপ্তারের পর বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ভারত সরকারও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে দ্রুত সুবিচারের আবেদন জানায়।

তবে, চিন্ময়ের গ্রেপ্তারির পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে আরেকটি শুনানির তারিখ নির্ধারিত ছিল, কিন্তু চিন্ময়ের আইনজীবীদের উপর হামলার হুমকি পাওয়ার কারণে ৫১ জন আইনজীবীর কেউই আদালতে সওয়াল করতে আসেননি। ফলে সেই শুনানি পিছিয়ে ২ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়।

এরই মধ্যে, বাংলাদেশে ইউনুস সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রাখার নানা পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট।

ভারতের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও, বাংলাদেশ সরকার এখনও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। প্রায় দেড় মাস ধরে চিন্ময় প্রভু কারাগারে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ভারত আরও একবার চিন্ময়ের দ্রুত সুবিচারের দাবি জানিয়েছে।

বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর চলমান নিপীড়ন এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারি দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত সরকার এই বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছে এবং বাংলাদেশের প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ

আদালত হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করেছে। চট্টগ্রাম আদালতে নিরাপত্তা জোরদারের মধ্যে ৩০ মিনিটের শুনানি শেষে বিচারক এমদাদুল ইসলাম এই সিদ্ধান্ত নেন। দাসের গ্রেফতার নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম আদালত বৃহস্পতিবার হিন্দু সন্ন্যাসী ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করেছে। আদালত ৩০ মিনিটের শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর না করার সিদ্ধান্ত নেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, যিনি আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ISKCON) প্রাক্তন সন্ন্যাসী, তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে ঢাকা বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর গ্রেফতার নিয়ে বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কলকাতা ISKCON-এর সহ-সভাপতি রাধা রমন দাস বাংলাদেশ সরকারকে ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: বাংলাদেশের চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা আদালত বৃহস্পতিবার হিন্দু সন্ন্যাসী এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করেছেন। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া এই সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে করা মামলায় ৩০ মিনিটের শুনানি শেষে বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

শুনানির সময় আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল এবং এই শুনানিতে ১১ জন আইনজীবী অংশ নেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে দাখিল করা জামিন আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, দাস দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, যার মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা। তাঁর আইনজীবীরা দাবি করেন যে, দাসকে একটি মিথ্যা ও সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের একটি স্থানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করেছিলেন, যা বাংলাদেশে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভের সূত্রপাত করে। চট্টগ্রাম আদালত ভবনের সামনে ২৭ নভেম্বর দাসের অনুসারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে একজন আইনজীবীর মৃত্যু ঘটে। এর পর থেকেই এই বিষয়টি বাংলাদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।

এর আগে ১১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করে। সেই সময় আদালত জানিয়েছিল, দাসের পক্ষে কোনো আইনজীবীর পত্র বা আইনগত চিঠি আদালতে জমা পড়েনি, যা জামিন পেতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে বৃহস্পতিবারের শুনানিতে এই বিষয়টি মীমাংসিত হওয়া সত্ত্বেও জামিন মঞ্জুর করা হয়নি।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ভারতের কলকাতার ISKCON সহ-সভাপতি রাধা রমন দাস বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। ANI সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এই খবর অত্যন্ত দুঃখজনক। গোটা বিশ্ব এই ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রত্যাশা করছিল যে চিন্ময় প্রভু নতুন বছরে মুক্তি পাবেন। কিন্তু ৪২ দিন পরেও তাঁর জামিন আবেদন খারিজ হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।”

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং হিন্দু সংগঠন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের দ্রুত মুক্তির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁর গ্রেফতার এবং জামিন খারিজের ঘটনায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সমর্থকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এবং দাসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন।

বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলাগুলি সাধারণত বাংলাদেশে কঠোরভাবে পরিচালিত হয় এবং জামিন পেতে দীর্ঘ সময় লাগে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীরা আশা প্রকাশ করেছেন যে, উচ্চ আদালতে আপিলের মাধ্যমে দাসের মুক্তি সম্ভব হবে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

৪৩তম বিসিএসে সংখ্যালঘু ৭১ জনের নিয়োগ বাতিল বিতর্ক

৪৩তম বিসিএসে নিয়োগের গ্যাজেট বাতিল করে নতুন গ্যাজেটে সংখ্যালঘু ৭১ জনের নাম বাদ পড়েছে। ‘বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ’ এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে গ্যাজেট সংশোধনের দাবি জানিয়েছে।
৪৩তম বিসিএসে সংখ্যালঘু ৭১ জনের নিয়োগ বাতিল বিতর্ক

৪৩তম বিসিএসে ২৬৭ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৭১ জন সংখ্যালঘু। ‘বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ’ এই ঘটনায় ধর্মীয় বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছে। ৩০ ডিসেম্বর প্রকাশিত দ্বিতীয় গ্যাজেটে আগে সুপারিশ পাওয়া ১৬৮ জনের নাম বাদ যায়, যা প্রথম গ্যাজেটে ছিল। সংগঠনটি দ্রুত নতুন গ্যাজেট প্রকাশের দাবি জানায়, যাতে বাদ পড়া সংখ্যালঘুদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রার্থীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়েও সুস্পষ্ট জবাব পাননি।

ঢাকা, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত দ্বিতীয় গ্যাজেটে ৪৩তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত ১৬৮ জন প্রার্থীর নাম বাদ পড়েছে। এর মধ্যে ৭১ জন সংখ্যালঘু প্রার্থী। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সরব হয়েছে ‘বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ’। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত ধর্মীয় বিভেদকে প্রতিফলিত করে এবং এটি সাম্প্রতিক সময়ের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তারা অবিলম্বে এই গ্যাজেট বাতিল করে নতুন একটি গ্যাজেট প্রকাশের দাবি জানিয়েছে, যাতে বাদ পড়া সংখ্যালঘুদের নাম পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

প্রথম গ্যাজেটটি প্রকাশিত হয়েছিল গত বছরের ১৫ অক্টোবর। এতে সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ১,৮৯৬ জন প্রার্থীকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের ঘোষণা করা হয়। প্রার্থীদের আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে যোগদান করতে বলা হয়। তবে ৩০ ডিসেম্বরের গ্যাজেটে দেখা যায়, প্রথম গ্যাজেটে নাম থাকা ১৬৮ জনের নাম বাদ পড়েছে।

সংখ্যালঘু সংগঠনটির দাবি, এই ১৬৮ জনের মধ্যে ৭১ জনই হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের। এই ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বাদ পড়া প্রার্থীদের অনেকেই সরাসরি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়েছেন এবং তাদের নাম কেন বাদ পড়েছে তা জানতে চেয়েছেন। কিন্তু তারা সুস্পষ্ট কোনো জবাব পাননি।

এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ সালে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ৪৩তম বিসিএস থেকে ২,১৬৩ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করে। প্রায় ১০ মাস পরে ১৫ অক্টোবর প্রথম গ্যাজেট প্রকাশিত হয়, তবে সেই গ্যাজেটে ৯৯ জন প্রার্থীর নাম বাদ যায়। এরপর ডিসেম্বরের গ্যাজেটে আরও ১৬৮ জনের নাম বাদ যায়, ফলে মোট বাদ পড়া প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৭ জন।

বিসিএস গ্যাজেট থেকে এত সংখ্যক প্রার্থী আগে কখনও বাদ পড়েননি। তথ্য অনুসারে, ৪১তম বিসিএসে ৬৭ জন, ৪০তম বিসিএসে ৩৪ জন, ৩৭তম বিসিএসে ৬১ জন, ৩৮তম বিসিএসে ৭৫ জন এবং ৩৬তম বিসিএসে ৩৮ জন প্রার্থী বাদ পড়েছিলেন। তবে এবার সেই সংখ্যা ২৬৭-এ পৌঁছেছে, যা নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে।

‘বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ’ মনে করে, সংখ্যালঘু প্রার্থীদের বাদ দেওয়ার মাধ্যমে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে আঘাত হানবে। তারা আশা প্রকাশ করেছে যে, সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই গ্যাজেট সংশোধন করবে এবং সংখ্যালঘু প্রার্থীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

সুনামগঞ্জ দোয়ারাবাজার সীমান্তে দুই ভারতীয় নাগরিক আটক বিজিবির হাতে

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে অনুপ্রবেশের দায়ে দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বিজিবি। আটককৃতরা ভারতের শিলংয়ের বাসিন্দা। বিজিবি জানায়, তাঁদের থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
সুনামগঞ্জ দোয়ারাবাজার সীমান্তে দুই ভারতীয় নাগরিক আটক বিজিবির হাতে

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বুধবার বিকেলে বাংলাবাজার ও দমদমিয়া সীমান্ত থেকে বিজিবি সদস্যরা তাঁদের আটক করেন। আটককৃতরা হলেন শিলংয়ের লোকাস (৫৫) এবং ব্লোমিং স্টার (৩২)। বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বিজিবির ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সুনামগঞ্জ, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দুইজন ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে। বুধবার বিকেলে উপজেলার বাংলাবাজার ও দমদমিয়া সীমান্তে টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করেন। সন্ধ্যার দিকে বিজিবির ৪৮ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।

আটককৃত ভারতীয় নাগরিকদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন ভারতের শিলংয়ের বার্মনটিলা গ্রামের লোকাস, যার বয়স ৫৫ বছর। অপরজন হলেন ব্লোমিং স্টার, ৩২ বছর বয়সী, যিনি শিলংয়ের ওয়ামলিংক গ্রামের বাসিন্দা। বিজিবি জানায়, লোকাসকে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার বিওপির আওতাধীন এলাকা কলাউরা থেকে আটক করা হয়। অন্যদিকে ব্লোমিং স্টারকে দমদমিয়া সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়।

বিজিবির ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আটক দুই ভারতীয় নাগরিককে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে তদন্ত শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলে অনুপ্রবেশের ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটে থাকে। তবে বিজিবির নিয়মিত টহল এবং সতর্ক অবস্থানের কারণে অনুপ্রবেশকারীরা দ্রুত আটক হয়ে থাকে। সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবির সদস্যরা দিনরাত টহল পরিচালনা করছেন।

এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা বিজিবির তৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় মাঝে মধ্যেই ভারতীয় নাগরিকরা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে এবং যে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটককৃতদের কাছ থেকে কোনো অবৈধ সামগ্রী পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরা ভুলক্রমে সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করতে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

বিজিবির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি প্রযুক্তির ব্যবহারও বাড়ানো হচ্ছে। সীমান্তে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ রোধে কাজ চলছে।

আটক দুই ভারতীয় নাগরিককে আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে। বিজিবি আশা করছে, দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে কমে আসবে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

সাবেক ইসকন সন্ন্যাসীের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী আদালতে দাঁড়াবেন। ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
সাবেক ইসকন সন্ন্যাসীের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী

জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে ১১ জন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নেবেন। তাঁদের নেতৃত্বে আছেন অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য। ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালতে জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে একটি ঘটনায় তিনি অভিযুক্ত হন এবং ২৫ নভেম্বর গ্রেপ্তার হন। তাঁর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ২৭ নভেম্বর বিক্ষোভে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

ঢাকা, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: সাবেক ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন আইনজীবী অংশ নিতে যাচ্ছেন, যার নেতৃত্বে রয়েছেন অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবারের শুনানির জন্য আইনজীবীদের এই দলটি ঐক্যবদ্ধভাবে চিন্ময়ের পক্ষে আইনি লড়াই করবে।

অ্যাডভোকেট ভট্টাচার্য জানান, আইনজীবী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে তাঁরা চিন্ময়ের জামিন নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। তিনি বলেন, চিন্ময়ের পক্ষ থেকে ভকিলতনামা পাওয়ার পর তিনি এই মামলায় আইনগতভাবে প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং সুপ্রিম কোর্ট এবং চট্টগ্রাম বারের সদস্য হওয়ায় স্থানীয় কোনও আইনজীবীর অনুমোদন ছাড়াই তিনি মামলাটি পরিচালনা করতে পারবেন।

চট্টগ্রামের একটি আদালত ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছে, যা এর আগে আইনজীবীর অনুপস্থিতির কারণে স্থগিত করা হয়েছিল।

অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে একটি ঘটনার সময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনার পর ২৫ নভেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। চিন্ময়ের গ্রেপ্তারের পর ২৭ নভেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, যার ফলে একজন আইনজীবী নিহত হন এবং আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ইসকন কলকাতা জানিয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে দেখতে আসা দুই ভিক্ষুকে আটক করা হয়েছে এবং বাংলাদেশের একটি ইসকন কেন্দ্রে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে বিরাজমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (MEA)। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা সরকারের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস - বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ঘটনায় ইসকনের ২৪০ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। চিন্ময় দাসসহ ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব তদন্তাধীন। ইসকনের পক্ষ থেকে এই তথ্যকে ভুল বলা হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস - বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ঘটনায় ইসকনের ২৪০ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে বলে জানিয়েছে বিএফআইইউ। ২০২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৩৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা জমা ছিল এবং ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। চিন্ময় দাসের নামে তিন কোটি ৯২ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। ইসকন এই তথ্য অস্বীকার করেছে। গত ২৫ অক্টোবর পতাকা অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের হয় এবং ২৫ নভেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার হন। এই ঘটনায় বাংলাদেশে উত্তেজনা বিরাজ করছে। (সূত্রঃ আজতক)

ঢাকা, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: বাংলাদেশে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে কোটি কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের ঘটনা। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) জানিয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব থেকে ২৪০ কোটি টাকার সন্ধান মিলেছে।

বিএফআইইউ-এর তথ্য অনুযায়ী, ইসকনের নামে ২০২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৩৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা জমা ছিল এবং এর মধ্যে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকে জমা রয়েছে ১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। পাশাপাশি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে তিন কোটি ৯২ লাখ টাকা জমা ছিল, যার প্রায় পুরো অর্থই ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএফআইইউ বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়ে ইসকন এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছিল। তদন্ত শুরু হয়েছে এই বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস ও ব্যয় সংক্রান্ত বিষয়ে। কারা এই অর্থ জমা দিয়েছে এবং কোন কোন খাতে তা ব্যয় হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।

এদিকে যাঁদের ব্যাংক হিসাব তদন্তের আওতায় এসেছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, কার্ত্তিকচন্দ্র দে, অনিক পাল, সরোজ রায়, সুশান্ত দাস, বিশ্ব কুমার সিংহ, চণ্ডীদাস বালা, জয়দেব কর্মকার, লিপিরানী কর্মকার, সুধামা গৌর দাস, লক্ষণ কান্তি দাশ, প্রিয়তোষ দাশ, রূপন দাস, রূপন কুমার ধর, আশিস সন্ন্যাসী, জগদীশ চন্দ্র অধিকারী ও সজল দাস।

তবে ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস এই তথ্যকে ভুল বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশে ইসকনের এত সংখ্যক অ্যাকাউন্ট নেই এবং রিপোর্টে সময়কাল সম্পর্কেও স্পষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। ইসকনের ব্যাংক হিসাব আলাদা এবং ভক্তদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব আলাদা।”

এই ঘটনা শুরু হয় গত ২৫ অক্টোবর, যখন চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের এক সমাবেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বক্তৃতা দেন। অভিযোগ ওঠে, সেই সমাবেশে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপি নেতা ফিরোজ খান চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেন এবং ৩১ অক্টোবর তিনি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা এবং তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময়ের জামিন আবেদন করার সময় আদালতের বাইরে প্রচুর মানুষ জড়ো হন এবং চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এই বিক্ষোভে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভ দমনে পুলিশের কড়া পদক্ষেপে একজন আইনজীবীর মৃত্যু হয় এবং আরও কয়েকজন আহত হন। এরপর থেকেই বাংলাদেশে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে এবং বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

ইসকনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার এবং তাঁকে কেন্দ্র করে ছড়ানো তথ্যের অনেকটাই বিভ্রান্তিকর এবং এটি ইসকনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। সংগঠনটি দাবি করেছে, তারা সব সময় আইন মেনে চলে এবং তাদের অর্থ লেনদেনও স্বচ্ছ।

তবে সরকারি সংস্থাগুলি জানিয়েছে, তারা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছে এবং সকল তথ্য ও প্রমাণ বিশ্লেষণ করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক থেকে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের সনাতন সম্প্রদায়ের অনেকেই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ন্যায্য বিচার দাবি করেছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ চলছে এবং জনগণের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও মতামত দেখা যাচ্ছে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

চিন্ময় প্রভুর জামিন শুনানি আজ, বাংলাদেশের নজর আদালতের দিকে

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আটক ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি আজ। নিরাপত্তাহীনতায় ৫১ আইনজীবী আদালতে যাননি। প্রবীণ আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ অসুস্থ। তিন হিন্দু আইনজীবী আজ মামলা লড়বেন। বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে ভারতও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
চিন্ময় প্রভুর জামিন শুনানি আজ, বাংলাদেশের নজর আদালতের দিকে

গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাঁর জামিন আবেদন বারবার খারিজ হয়েছে। ৫১ আইনজীবী প্রাণভয়ে শুনানিতে অংশ নেননি। প্রবীণ আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ ভারতে চিকিৎসাধীন। আজ তিন হিন্দু আইনজীবী আদালতে সওয়াল করবেন। ভারতের উদ্বেগ ও কূটনৈতিক চাপের মুখে ইউনুস সরকার নমনীয় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সেনাপ্রধানও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন। আজকের শুনানি বাংলাদেশের রাজনীতি ও হিন্দু সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ঢাকা, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অভিযোগে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয় তাঁকে, তবে জামিনের আবেদন একাধিকবার খারিজ হয়ে যায়। এর পর থেকে বাংলাদেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। হিন্দু সম্প্রদায়ের একাংশ এবং বিভিন্ন সংগঠন তাঁর মুক্তির দাবি জানায়।

চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারের পর আদালতের বাইরে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে একজন আইনজীবী গুরুতর আহত হয়ে আইসিইউ-তে ভর্তি হন। হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি, এই ঘটনা চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানোর চেষ্টা।

গত ৩ ডিসেম্বর তাঁর জামিনের শুনানি ছিল। কিন্তু ‘প্রাণভয়ে’ ৫১ জন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হননি। তাঁদের দাবি, চিন্ময় প্রভুর হয়ে সওয়াল করলে তাঁদের জীবনও ঝুঁকির মুখে পড়বে। এর ফলে শুনানি পিছিয়ে যায় এবং নতুন তারিখ ধার্য করা হয় ২ জানুয়ারি।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট অভিযোগ করেছে, চিন্ময় প্রভুর মুক্তি আটকাতে অন্তর্বর্তীকালীন ইউনুস সরকারের পরিকল্পনায় ৭০ জন হিন্দু সন্ন্যাসীর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মূল লক্ষ্য, যাতে কেউ চিন্ময় প্রভুর পক্ষে আদালতে দাঁড়াতে সাহস না দেখান।

প্রবীণ আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ সাহসিকতার সঙ্গে চিন্ময় প্রভুর পক্ষে দাঁড়ান, তবে চট্টগ্রাম আদালতে শারীরিক হেনস্থার শিকার হন তিনি। কয়েক সপ্তাহ পর তিনি ভারতে চিকিৎসার জন্য আসেন এবং এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। রবীন্দ্র ঘোষ আজকের শুনানিতে উপস্থিত হতে পারবেন না, তবে তাঁর অনুপস্থিতিতেও তিনজন হিন্দু আইনজীবী চিন্ময় প্রভুর হয়ে আদালতে লড়াই করবেন।

ভারত এই ঘটনার প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেপ্তারের ঘটনা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে কূটনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি সম্প্রতি ঢাকা সফর করেছেন এবং বিষয়টি আলোচনায় আসে।

গতকাল বাংলাদেশের সেনাপ্রধান এক বিবৃতিতে বলেন, আগামী দিনে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসও প্রয়াত ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে শ্রদ্ধা জানাতে ভারতীয় দূতাবাসে যান এবং রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মার সঙ্গে বৈঠক করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দু নির্যাতন, উচ্চ মূল্যবৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ইউনুস সরকারের উপর চাপ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজকের শুনানিতে নমনীয় হতে পারে সরকার।

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় এবং আন্তর্জাতিক মহল আজকের শুনানির দিকে বিশেষভাবে নজর রাখছে। আদালতের রায়ের উপর নির্ভর করবে চিন্ময় প্রভুর ভবিষ্যৎ এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সরকারের অবস্থান।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

চট্টগ্রামে হিন্দু যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল মৌলবাদীরা

চট্টগ্রামে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে হিন্দু যুবক প্রান্ত তালুকদারকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর পক্ষে ফেসবুকে পোস্ট করায় এই হামলা হয় বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ প্রান্তকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
চট্টগ্রামে হিন্দু যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল মৌলবাদীরা

চট্টগ্রামে প্রান্ত তালুকদার নামে এক হিন্দু যুবককে ফেসবুকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর সমর্থনে পোস্ট করার অভিযোগে অপহরণ ও মারধর করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে প্রান্তকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে। পুলিশ লালখান বাজার এলাকা থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে। প্রান্ত বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদিও ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিন শুনানি ঘিরে উত্তেজনার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: চট্টগ্রামে এক হিন্দু যুবককে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে। জানা গেছে, চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর সমর্থনে ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে প্রান্ত তালুকদার নামের যুবককে মৌলবাদীরা অপহরণ করে ও মারধর করে। ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাতে, যখন প্রান্ত তালুকদার পতেঙ্গা কাঠগড় এলাকায় নিজের বাড়িতে ছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রান্তের অপহরণের দৃশ্য পাড়ার একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে, যা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টার দিকে খুলশি থানার লালখান বাজার এলাকা থেকে প্রান্ত তালুকদারকে উদ্ধার করা হয়। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ লালখান বাজারের আমিন সেন্টারের পার্কিংয়ে গিয়ে দেখে, সেখানে কিছু লোক প্রান্তকে ঘিরে রেখেছে। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। মারধরের ফলে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রান্তকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এই ঘটনার পেছনে কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, প্রান্ত তালুকদার ফেসবুকে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর পক্ষে একটি পোস্ট করেছিলেন। গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এরপর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।

প্রান্তের পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যাবেলায় অচেনা কিছু ব্যক্তি তাঁদের বাড়ির আশপাশে ঘোরাফেরা করছিল। পরিবারের সামনেই প্রান্তকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।

খুলশি থানার ওসি মুজিবুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্মীয় বিদ্বেষ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেপ্তারের পর থেকেই চট্টগ্রাম এবং আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর শুনানির সময় আদালত চত্বরে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হন। তখন পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত হন। তাঁর হত্যার ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যে চন্দন দাস নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে।

চন্দন দাসকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানায়, সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডে আরও ১৫ থেকে ২০ জন ব্যক্তি জড়িত ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের মতে, অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং দ্রুতই তাদের গ্রেফতার করা হবে।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম আদালতে আজ চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিন শুনানির কথা রয়েছে। প্রান্ত তালুকদারের ওপর হামলার ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা দাবি করেছেন, এই ধরনের হামলা সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ তৈরি করছে।

প্রান্ত তালুকদারের ওপর হামলা এবং চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেপ্তার বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি সম্প্রতি ঢাকা সফর করেন এবং বিষয়টি বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ে উত্থাপন করেন।

তবে এখনও পর্যন্ত প্রান্ত তালুকদারের ওপর হামলার ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রান্ত তালুকদার একজন শিক্ষিত যুবক এবং তাঁর বিরুদ্ধে আগে কোনো অভিযোগ ছিল না। তাঁরা দাবি করেছেন, এ ধরনের ঘটনা সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিপন্থী।

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় এবং নাগরিক সমাজ এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, প্রান্ত তালুকদারের উপর হামলার ঘটনায় তারা কোনও ধরনের গাফিলতি করবে না এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

বাংলাদেশি হিন্দুরা ভারতে আসতে চায় না: হিমন্ত বিশ্ব শর্মা

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, বাংলাদেশের হিন্দুরা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিপক্কভাবে সামলাচ্ছে এবং ভারতে আসতে আগ্রহী নয়। প্রধানমন্ত্রী মোদী তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা বেড়েছে, তবে তারা হিন্দু নয়।
বাংলাদেশি হিন্দুরা ভারতে আসতে চায় না: হিমন্ত বিশ্ব শর্মা

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, বাংলাদেশের হিন্দুরা তাদের দেশে থেকে পরিস্থিতি সামলাচ্ছে এবং ভারতে আশ্রয়ের জন্য আগ্রহী নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাদের সুরক্ষার জন্য কাজ করছেন। তিনি জানান, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর লোক ভারতে প্রবেশ করেছে, তবে তাদের কেউই হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়। বরং তারা মূলত বাংলাদেশের বস্ত্র শিল্পের শ্রমিক, যারা ভারতে কাজের সন্ধানে এসেছেন। শর্মা বলেন, বাংলাদেশে বস্ত্রশিল্প ধসে পড়ার কারণে শ্রমিকরা ভারতে প্রবেশ করছে এবং অনেক ভারতীয় বস্ত্র মালিক তাদের উৎসাহিত করছেন।

গুয়াহাটি, ০১ জানুয়ারি, ২০২৫: অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বুধবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে যথেষ্ট পরিপক্কতার সাথে সামলাচ্ছে এবং ভারতে আশ্রয়ের জন্য কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তিনি জানান, অতীতে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ভারতে এসেছিল, কিন্তু বর্তমানে তারা তাদের নিজ দেশে থাকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত কাজ করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও জানান, গত বছরের অগস্ট মাসে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলায় বহু বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নয়াদিল্লি এসব ঘটনা গুরুত্বের সাথে নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এদিকে, অসমে গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দলের মতো বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠন বাংলাদেশের হিন্দুদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করেছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রচারক সুমন কুমার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাংলাদেশের হিন্দুদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার আবেদন করেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, গত পাঁচ মাসে অসম এবং ত্রিপুরায় প্রায় এক হাজার বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে, কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ছিল না।

তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, আটক হওয়া ব্যক্তিরা মূলত বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পে কাজ করা শ্রমিক, যারা ভারতে বস্ত্র শিল্পে কাজের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের বস্ত্র শিল্পের পতনের ফলে প্রচুর শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে, যার ফলে তারা ভারতে আশ্রয় খুঁজছে। ভারতীয় বস্ত্র মালিকরা সস্তায় শ্রম পাওয়ার আশায় তাদের কাজে নিয়োগ দিচ্ছেন।

হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, এটি একটি উদ্বেগজনক বিষয়, কারণ অতীতে এত বেশি অনুপ্রবেশকারী শনাক্ত হয়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের মানুষ বর্তমানে অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছে এবং তাদের অনেকেই ভারতে কাজের সন্ধানে প্রবেশ করছে। তবে, অসম সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে এবং অনুপ্রবেশকারীদের আটক করে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নিচ্ছে।

তিনি বলেন, অসম সরকার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আটক করতে আগ্রহী নয়, কারণ তারা কারাগারে জায়গার সংকট তৈরি করতে চায় না। বরং, আটককৃতদের নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে, বিশেষ করে তামিলনাড়ুতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা গেছে। বাংলাদেশে টেক্সটাইল শিল্প ধসে পড়ার কারণে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন ইউনিটে তারা কাজের জন্য যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা অতীতেও বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক অনুপ্রবেশের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, এই সমস্যা শুধু অসম নয়, বরং সমগ্র দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির উপর প্রভাব ফেলছে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫