এটি এই বিভাগটির বহু পৃষ্ঠার মুদ্রণযোগ্য দর্শন। মুদ্রণ করতে এখানে ক্লিক করুন.

এই পৃষ্ঠার নিয়মিত দৃশ্যে ফিরে আসুন.

সংবাদ

এই অংশে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে সর্বশেষ ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ খবর, নির্যাতন-নিপীড়নের আপডেট, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়সহ সব ধরনের প্রাসঙ্গিক সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করা হয়। এটি কমিউনিটির বাস্তব চিত্র তুলে ধরার একটি নির্ভরযোগ্য উৎস।

সংবাদ ২০২৫

এই অংশে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে সর্বশেষ ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ খবর, নির্যাতন-নিপীড়নের আপডেট, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়সহ সব ধরনের প্রাসঙ্গিক সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করা হয়। এটি কমিউনিটির বাস্তব চিত্র তুলে ধরার একটি নির্ভরযোগ্য উৎস।

অফিসের চাপে মহিলার আত্মহত্যা, সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

চট্টগ্রামের বোয়ালখালিতে শুক্লা দে অফিসের চাপে আত্মহত্যা, ৪ কর্মীকে অভিযোগ।
অফিসের চাপে মহিলার আত্মহত্যা, সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

চট্টগ্রামের বোয়ালখালিতে অফিসের কাজের চাপে আত্মহত্যা করেন শুক্লা দে (৩৮), এক বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মী। শুক্লার বেতন থেকে অনৈতিকভাবে টাকা কাটা হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এই চাপে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তার স্বামী সিদুল পাল সংস্থার ৪ জন কর্মীকে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

চট্টগ্রাম, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫: চট্টগ্রামের বোয়ালখালির শুক্লা দে নামের এক মহিলা আত্মহত্যা করেছেন অফিসের চাপে। মৃত মহিলার বয়স ৩৮ বছর, তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের মা। শুক্লা দে একটি বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা, ‘রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।

অভিযোগ, শুক্লার বেতন থেকে অনৈতিকভাবে টাকা কাটা হচ্ছিল সংস্থার দ্বারা। এই প্রক্রিয়ায় তিনি মানসিক চাপের শিকার হন। শুক্লা ঋণের কিস্তি আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন, কিন্তু ঋণের কিস্তি সময়মতো আদায় করতে ব্যর্থ হলে তাঁর ওপর অফিস থেকে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। এই চাপের কারণে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

শুক্লার স্বামী সিদুল পাল এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংস্থার ৪ জন কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, শুক্লা এই চাপের কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তার অভিযোগ অনুযায়ী, শুক্লা বেতন থেকে যে টাকা কাটা হচ্ছিল, তা ঋণের কিস্তি আদায় না করতে পারার জন্য। এরপর গত শনিবার সন্ধ্যায় তিনি রান্নাঘরে আত্মঘাতী হন।

অভিযুক্ত চারজন কর্মী হলেন কাঞ্চন দেবনাথ (৪৫ বছর), নন্দন (৪০ বছর), চিনু বিশ্বাস (৪২ বছর) এবং পলাশ নাথ (৪৩ বছর)। সিদুল পালের অভিযোগ থেকে জানা যায়, শুক্লা ২০২৩ সালের মে মাসে এই সংস্থায় কাজ শুরু করেন। তবে ৫ অগস্টের পর থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ের কাজের গতি কমতে থাকে। এই সময় ঋণ গ্রাহকদের সঙ্গে কঠিন মোকাবিলা করতে হলে শুক্লা বাধ্য হন, যা তাঁর কাজকে আরও জটিল করে তোলে।

অপরদিকে, ঋণের কিস্তি আদায় করতে না পারার কারণে অফিস থেকে শুক্লার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। তাঁর মাসিক বেতন থেকে অনাদায় ঋণের সমপরিমাণ টাকা কেটে রাখা হচ্ছিল এবং শেষ পর্যন্ত তাকে দূরের একটি ব্রাঞ্চে বদলি করা হয়। এই সকল ঘটনা শুক্লাকে মানসিকভাবে প্রবলভাবে প্রভাবিত করেছিল।

গত শনিবার সন্ধ্যায় শুক্লা আত্মঘাতী হন। তার স্বামী সিদুল পাল এই ঘটনার পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, এই ৪ জন কর্মী আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার জন্য দায়ী। তবে পুলিশ মামলা গ্রহণ করলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি, বলে জানা গেছে।

এই ঘটনা শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে ব্যাপক প্রশ্ন তুলে ধরেছে। শ্রম আইনের প্রয়োগ ও কর্মসংস্থানের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে আরও বেশি দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠেছে।

তারিখ: ০৭.০১.২০২৫

সংখ্যালঘু অধিকারে, নতুন প্ল্যাটফর্ম, বিশাল জমায়েত

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সংখ্যালঘু অধিকারে ১৩ প্ল্যাটফর্ম, বড় জমায়েত হয়েছে।
সংখ্যালঘু অধিকারে, নতুন প্ল্যাটফর্ম, বিশাল জমায়েত

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ১৩টি নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠিত হয়। গত পাঁচ মাসে চট্টগ্রাম, রংপুর ও ঢাকায় বড় জমায়েত করা হয়েছে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায়। এই আন্দোলনের পেছনে কারা আছে, তা নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন, তারা জানবেন এদের পেছনে বাংলাদেশী নিপীড়িত সনাতন ধর্মবালম্বীরাই আছেন।

ঢাকা, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫: গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন পর্যন্ত ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ১৩টি নতুন প্ল্যাটফর্ম (মোর্চা বা জোট) তৈরি হয়েছে। এসব প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে গত পাঁচ মাসে একক বা যৌথভাবে বিশাল জমায়েত করা হয়েছে চট্টগ্রাম, রংপুর ও ঢাকায়। এই ঘটনাগুলো দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দাবিতে হঠাৎ করে এত প্ল্যাটফর্ম তৈরি হওয়ার পেছনে কারা আছে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে।

সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা বিভিন্ন পুরোনো সংগঠনের নেতারা বলছেন, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় জটিল পরিস্থিতির মধ্যে আছে। কিন্তু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবারের মতো এত বড় আন্দোলন আর হয়নি। এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে নতুন প্ল্যাটফর্মগুলো।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলার প্রতিবাদে এবার যে মাত্রায় আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছে, তা বিগত কয়েক দশকে দেখা যায়নি।

নতুন যেসব প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। এই জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তাঁর ডাকে গত অক্টোবর ও নভেম্বরে চট্টগ্রামে এবং রংপুরে বিশাল দুটি সমাবেশ হয়, যা দেশের বাইরেও আলোচনার জন্ম দেয়। চিন্ময় কৃষ্ণ একসময় ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তারের পর তাঁকে গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে পুলিশের সঙ্গে তাঁর অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট ছাড়াও সংখ্যালঘুদের আরেকটি নতুন প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই দুটি প্ল্যাটফর্মের জন্ম হয়। কাছাকাছি সময়ে আত্মপ্রকাশ করা অন্য প্ল্যাটফর্মগুলো হলো বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিক, বাংলাদেশ সনাতনী সচেতন ছাত্রসমাজ, সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন, সনাতনী অধিকার আন্দোলন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট, সনাতন অধিকার মঞ্চ, সনাতনী ছাত্রসমাজ, বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতা, বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটি এবং সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এসব প্ল্যাটফর্মের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, নেতৃত্বে রয়েছেন মূলত সাধু-সন্ন্যাসী (মন্দির-মঠের পুরোহিত) ও শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় ঠিক কতটি সংগঠন কাজ করছে, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য কারও কাছে নেই। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে বিভিন্ন নামে হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার আদায়ে ৫০টির বেশি সংগঠন সক্রিয়। নতুন যে ১৩টি প্ল্যাটফর্ম ও সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে, তার মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়কেন্দ্রিক সংগঠনই ১১টি।

নতুন প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে আট দফা দাবি তোলা হয়েছে। প্রথম দফা হলো ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় ‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। এ ছাড়া সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনসহ অন্যান্য দাবিও রয়েছে।

এসব দাবির বিষয়ে গত ১৩ আগস্ট সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙগে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে দাবি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধান উপদেষ্টা।

তবে নতুন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ইতিবাচকভাবেই দেখেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও। তিনি বলেন, যেকোনো জাতিগোষ্ঠীর দুঃখ-বেদনা তুলে ধরার অধিকার আছে। এ ধরনের সমস্যা তুলে না ধরা গেলে সেটা আরও জটিল আকার ধারণ করে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষে এই আন্দোলনগুলো স্বতঃস্ফূর্ত এবং নতুন প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজন বোধ করে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।

তারিখ: ০৭.০১.২০২৫

চুরির সময় দেখে ফেলায় সাংবাদিকের মা–বাবাকে পিটিয়ে জখম: ফরিদপুরের পুলিশ সুপার

ফরিদপুরের মধুখালীতে চুরির সময় সাংবাদিকের বাবা-মাকে পিটিয়ে আহত, চোর গ্রেপ্তার।
চুরির সময় দেখে ফেলায় সাংবাদিকের মা–বাবাকে পিটিয়ে জখম: ফরিদপুরের পুলিশ সুপার

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় সাংবাদিক সৌগত বসুর বাবা-মাকে লাঠি দিয়ে আক্রমণ করা হয়, যার ফলে তারা আহত হয়। পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল জানান, পল্লব কুমার রায় (১৯) নামের এক তরুণকে এই অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আদালতে চুরির এবং আক্রমণের অপরাধ স্বীকার করেছেন।

ফরিদপুর, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫: ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় সাংবাদিক সৌগত বসুর মা-বাবাসহ তিনজনকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় পল্লব কুমার রায় (১৯) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই তথ্য আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান।

পুলিশ সুপার বলেন, “এই তিনজনকে পিটিয়ে আহত করেছেন পল্লব কুমার রায়। তাঁদের কোপ দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটি কোনো ডাকাতির ঘটনা নয়, কিংবা এ ঘটনার পেছনে বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।” পল্লব গতকাল রোববার আদালতে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামে আজকের পত্রিকা-এর ঢাকার নিজস্ব প্রতিবেদক সৌগত বসুর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এই হামলায় সৌগত বসুর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু বসু (৬৫), মা কাকলী বসু (৬০) এবং প্রতিবেশী কিশোরী প্রীতি মালো (১৫) আহত হন। শনিবার সৌগত বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে চুরির অভিযোগে একটি মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল জানান, মামলা হওয়ার পর শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পল্লব কুমার রায়কে ডুমাইন খেয়াঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার আদালতে পল্লব স্বীকার করেন, তিনি নেশা করার টাকা সংগ্রহ করার জন্য চুরির উদ্দেশ্যে ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন। বাড়ির মালিক শ্যামলেন্দু বসু তাঁকে দেখে ফেলায় তিনি ওই তিনজনকে একটি স্টিলের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পালিয়ে যান। আদালতের নির্দেশে গতকাল রাতে পল্লবকে কারাগারে পাঠানো হয়।

পল্লব মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের বটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, যিনি গাঁজা সেবন করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আগে চুরির কোনো অভিযোগ ছিল না বলে জানা যায়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা, সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) ইমরুল হাসান, মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোক্তার হোসেনসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

আহত শ্যামলেন্দু বসু এবং কাকলী বসু বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। সংবাদ সম্মেলনে সৌগত বসু প্রথম আলোকে পুলিশের কাজে প্রশ্ন তুলেন। তিনি বলেন, “গ্রেপ্তার হওয়া পল্লব এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাঁদের নাম পুলিশকে দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা বর্তমানে সপরিবার আত্মগোপনে আছেন। কিন্তু পুলিশ তা আমলে নেয়নি।” তিনি আরো বলেন, “প্রথম দিকে পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও পরের দিকে যোগাযোগ করেনি।”

পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল সৌগত বসুর বক্তব্যের প্রতিবাদে বলেন, “বাদী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন। পুলিশ তদন্ত করে যা পেয়েছে, তার ভিত্তিতেই আসামি শনাক্ত করা হয়েছে। আলামতও উদ্ধার করা হয়েছে। আসামি দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।”

এই ঘটনা প্রকাশে সাংবাদিক সমাজ এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সতর্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যারা এই ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।

তারিখ: ০৭.০১.২০২৫

শ্রীপুরে ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পরিয়ে টাকা ছিনতাই, এসআই প্রত্যাহার

শ্রীপুরে ব্যবসায়ী সবুজ সরকারকে হাতকড়া পরিয়ে টাকা ছিনতাই, পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার।
শ্রীপুরে ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পরিয়ে টাকা ছিনতাই, এসআই প্রত্যাহার

গাজীপুরের শ্রীপুরের হানু মার্কেট এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পরিয়ে দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, এসআই আবদুল কুদ্দুসকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী সবুজ সরকার মুঠোফোন ব্যবসা করেন। তিনি ফেসবুকে সেলফি শেয়ার করে ঘটনার প্রমাণ দেন।

গাজীপুর, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫: গাজীপুরের শ্রীপুরের হানু মার্কেট এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পরিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় শ্রীপুর থানার মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল কুদ্দুসকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই ঘটনার পটভূমিতে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে বলেন, “ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পড়ানো সংক্রান্ত ঘটনায় কর্তৃপক্ষ ওই এসআইকে ক্লোজড (প্রত্যাহার) করে গাজীপুর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করেছে।”

ঘটনার কেন্দ্রীয় ব্যক্তি হচ্ছেন সবুজ সরকার, যিনি মুঠোফোন সরঞ্জামের ব্যবসা করেন। তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে আটক করে তাঁর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ছিনতাই করার অভিযোগ উঠেছে এসআই আবদুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে। সবুজ সরকার জানান, গত শুক্রবার তাঁকে হানু মার্কেট এলাকা থেকে আটক করেন এসআই আবদুল কুদ্দুস। সেই সময় তিনি মুঠোফোনে সেলফি তুলে ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। গতকাল রোববার ওই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর এই ঘটনা জনসমক্ষে আসে।

সবুজ সরকার বিস্তৃত বিবরণ দেন, “আমাকে এক স্বজনের কথায় গত শুক্রবার হানু মার্কেট এলাকা থেকে আটক করেন এসআই আবদুল কুদ্দুস। আটক করে তিনি আমাকে হাতকড়া পরিয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পাশের একটি লোহার পাইপের সঙ্গে আটকে রাখেন। আটক করে তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন। আটক থাকা অবস্থায় আমি সেলফি তুলে রাখি। টাকা নেওয়ার পর ওই পুলিশ সদস্য আমাকে ছেড়ে দেন।”

সবুজ সরকার আরও বলেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তিনি উল্লেখ করেন, “পারিবারিক জমি নিয়ে এক স্বজনের সঙ্গে বিরোধের জেরে তাঁকে এইভাবে হেয়ানি করে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন ওই পুলিশ সদস্য।” তবে এসআই আবদুল কুদ্দুস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পুলিশ প্রশাসনের এই কার্যক্রম সম্পর্কে জয়নাল আবেদীন বলেন, “এই ধরনের ঘটনা আমাদের প্রতি জনগণের বিশ্বাসকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে। আমরা এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করব এবং দোষী প্রমাণিত হলে আইনসম্মত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

এই ঘটনা শ্রীপুর এবং গাজীপুরের স্থানীয় জনগণের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। ব্যক্তিগত ক্ষতি এবং বিশ্বাসঘাতকতার এই ঘটনা পুলিশের প্রতি জনগণের বিশ্বাসকে আহত করেছে। সবুজ সরকারের সেলফি এবং তার ফেসবুক পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পেয়েছে।

এই ঘটনায় পুলিশ বাহিনী কী ধরনের বৈধানিক এবং আন্তঃনির্বাহী ব্যবস্থা নেবে এবং কতটা দ্রুত এই বিষয়টি সমাধান করতে পারে, তা নিয়ে অপেক্ষায় আছে জনসাধারণ। পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে জয়নাল আবেদীন আশ্বাস দিয়েছেন যে, তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তারিখ: ০৭.০১.২০২৫

বাউফলে ১৪ ঘণ্টা পরও অপহৃত শিবু বণিককে উদ্ধার করা যায়নি, অন্যদের ধর্মঘট

পটুয়াখালীর বাউফলে ব্যবসায়ী শিবু বণিক অপহরণের ১৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাঁর খোঁজ মেলেনি। দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে তাঁকে ট্রলারে তুলে অপহরণ করে। পরিবার ও ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে আছেন। পুলিশ উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।
বাউফলে ১৪ ঘণ্টা পরও অপহৃত শিবু বণিককে উদ্ধার করা যায়নি, অন্যদের ধর্মঘট

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরে শুক্রবার রাত সোয়া ১০টায় ব্যবসায়ী শিবু বণিককে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে। দুর্বৃত্তরা দোকানের দুই কর্মচারীকে বেঁধে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে। ১৪ ঘণ্টা পরও শিবু বণিকের সন্ধান মেলেনি। ঘটনার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট পালন করছেন। পরিবার ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। পুলিশ নদী ও আশপাশের এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশের দাবি, প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশার কারণে অভিযানে অসুবিধা হচ্ছে।

পটুয়াখালী, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরে শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে দুর্বৃত্তরা ব্যবসায়ী শিবু বণিককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে। অপহরণের ১৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। শিবু বণিকের পরিবারের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

শিবু বণিক কালাইয়া বন্দরের একজন পরিচিত ব্যবসায়ী। তিনি চাল, ডাল, আটা সহ বিভিন্ন পণ্যের পাইকারি বিক্রেতা এবং কয়েকটি কোম্পানির পরিবেশক। ঘটনার সময় তিনি দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দোকানের কর্মচারী শংকর দাস জানান, রাত সোয়া ১০টার দিকে ৮-১০ জন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত দোকানে ঢুকে সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে এবং শিবু বণিক ও দুই কর্মচারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে।

দুর্বৃত্তরা দোকানের ক্যাশে থাকা পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে এবং এক পর্যায়ে শিবু বণিককে বেঁধে ট্রলারে করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় শিবু বণিকের বাসায় অন্য কোনো স্বজন উপস্থিত ছিলেন না।

এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে কালাইয়া বন্দরের পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছেন। ব্যবসায়ীরা শিবু বণিককে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানান। ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. নূরুল আমিন বলেন, “এমন ঘটনা বাউফলে আগে কখনো ঘটেনি। ১৩ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ শিবু বণিককে উদ্ধার করতে পারেনি, এটি হতাশাজনক।”

এদিকে, শিবু বণিকের স্বজন সনজিৎ বণিক বলেন, “তাঁর ডায়াবেটিক ও হৃদ্‌রোগ আছে। সময়মতো ওষুধ না খেলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। আমরা তাঁর দ্রুত উদ্ধারের অনুরোধ জানাচ্ছি।”

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তাঁরা কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়িতে বিষয়টি জানান। কিন্তু নৌ পুলিশ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। কালাইয়া নৌ পুলিশের পরিদর্শক গাজী সালাউদ্দিন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা খবর পাওয়ার পরই বাউফল থানা পুলিশের সহযোগিতায় ট্রলার নিয়ে অভিযান চালাই। সারা রাত নদীতে খুঁজেছি, কিন্তু প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশার কারণে স্পিডবোট চালানো সম্ভব হয়নি।”

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে আমি রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। আশপাশের থানাগুলোতে বার্তা পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশের একাধিক দল নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।”

এই ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কালাইয়া বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তারা পুলিশের তৎপরতায় সন্তুষ্ট নন এবং শিবু বণিককে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

অপরদিকে, স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এই ঘটনায় দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে। তবে কুয়াশা ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অভিযান চালাতে অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের কর্মকর্তারা।

বাউফলের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন শিবু বণিকের নিরাপদ উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে। তারা বলেছেন, এই ধরনের ঘটনা যদি দ্রুত সমাধান না করা হয়, তাহলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বাড়বে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়তে পারে।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং শিবু বণিকের খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

ফরিদপুরে হিন্দু সাংবাদিকের মা এবং মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে ধারাল অস্ত্রের কোপ

ফরিদপুরে দুষ্কৃতীদের হামলায় হিন্দু মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু বসু ও তার স্ত্রী আহত হয়েছেন। চুরি করতে গিয়ে বাধা পেয়ে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। আহতদের ফরিদপুর মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
ফরিদপুরে হিন্দু সাংবাদিকের মা এবং মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে ধারাল অস্ত্রের কোপ

ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার মাইন গ্রামে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় শ্যামলেন্দু বসু (৬৮) এবং তার স্ত্রী কাকলী বসু (৬০) দুষ্কৃতীদের হামলায় গুরুতর আহত হন। চুরি করতে গিয়ে বাধা পেয়ে দুষ্কৃতীরা তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। স্থানীয়দের চিৎকারে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আহতদের মধুখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।

ফরিদপুর, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার মাইন গ্রামে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুর্বৃত্তদের হামলায় হিন্দু মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু বসু (৬৮) এবং তার স্ত্রী কাকলী বসু (৬০) গুরুতর আহত হন। জানা যায়, শ্যামলেন্দু বসু এবং তার স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন যখন দুর্বৃত্তরা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। দুর্বৃত্তরা চুরি করতে এসেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শ্যামলেন্দু বসুর ছেলে সৌগত বসু একজন সাংবাদিক এবং তিনি ঢাকায় থাকেন। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। শ্যামলেন্দু বসু এবং কাকলী বসু তাদের দৈনন্দিন কাজ শেষে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ৮-১০ জন দুর্বৃত্ত মুখোশ পরে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। চুরি করতে গিয়ে শ্যামলেন্দু বসু এবং তার স্ত্রী বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।

শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে, এবং তার মাথার হাড় ভেঙে যায়। তার স্ত্রী কাকলী বসুও গুরুতর আহত হন। এ সময় বাড়িতে থাকা এক নাবালিকা তরুণীও হামলায় সামান্য আহত হয়। শ্যামলেন্দু বসু এবং কাকলী বসুর চিৎকার শুনে এলাকাবাসীরা সেখানে জড়ো হন, কিন্তু ততক্ষণে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে মধুখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসক অর্ণব জানান, শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে, এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জীবন কুমার মন্ডল জানান, হামলার সময় শ্যামলেন্দু বসু এবং কাকলী বসু অজ্ঞান হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরাই তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

ফরিদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে।

সাংবাদিক সৌগত বসু বলেন, গ্রামে তাদের কারো সঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই। তার বাবা-মা ছাড়া বাড়িতে আর কেউ থাকেন না। তার মা আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন এবং এই ঘটনায় তারা আরও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, মধুখালি এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়েছে। তারা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন। এই ঘটনার পর থেকে গ্রামবাসীরা আতঙ্কে রয়েছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলাকারীদের শনাক্ত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

বাউফলে ব্যবসায়ী শিবু বনিককে অস্ত্রের মুখে অপহরণ, কর্মচারীদের বেঁধে টাকা লুট

পটুয়াখালীর বাউফলে শিবু বনিক নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। দোকান থেকে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। বন্দরের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানান।
বাউফলে ব্যবসায়ী শিবু বনিককে অস্ত্রের মুখে অপহরণ, কর্মচারীদের বেঁধে টাকা লুট

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরে শিবু বনিক নামের এক ব্যবসায়ীকে শুক্রবার রাতে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। রাত সোয়া ১০টার দিকে দোকান বন্ধের প্রস্তুতিকালে ৮-১০ জনের একটি মুখোশধারী দল তার দোকানে হামলা চালায়। তারা শিবু বনিক ও দুই কর্মচারীকে বেঁধে ফেলে এবং দোকানের ক্যাশ থেকে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে নেয়। পরে শিবু বনিককে বেঁধে ট্রলারে করে নিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে এবং ব্যবসায়ীরা দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

পটুয়াখালী, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরের মার্চেন্টপট্টি এলাকায় শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে এক ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। শিবু বনিক (৬৫) নামের এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিবু বনিক দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের একজন বড় পাইকারি ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি চাল, ডাল, আটা এবং অন্যান্য খাদ্যপণ্য পাইকারি বিক্রয় করে থাকেন।

শুক্রবার রাতে, দোকান বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শিবু বনিক। সারাদিনের লেনদেনের হিসাব শেষে কর্মচারীদের সঙ্গে তিনি দোকানে অবস্থান করছিলেন। রাত সোয়া ১০টার দিকে হঠাৎ করে ৮-১০ জনের একটি মুখোশধারী সশস্ত্র দল দোকানে ঢোকে। তারা শিবু বনিকসহ তার দুই কর্মচারী শংকর (৩৪) এবং তাপস (৩৫) কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে।

সন্ত্রাসীরা শংকর ও তাপসকে হাত পা বেঁধে ফেলে এবং দোকানের ক্যাশ থেকে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে। এরপর তারা শিবু বনিককে বেঁধে একটি ট্রলারে উঠিয়ে অপহরণ করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।

এ ঘটনা মুহূর্তেই বন্দরে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে জড়ো হন এবং শিবু বনিককে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানাতে থাকেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে পড়ে যান এবং রাতভর তারা দোকানপাট বন্ধ রেখে নিরাপত্তার জন্য অবস্থান নেন।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, “আমরা বিষয়টি শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে এবং ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “দোকানে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। আশা করি দ্রুতই আমরা অপহরণকারীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হব।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কালাইয়া বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পুলিশের টহল ব্যবস্থা যথাযথ নয় এবং নিরাপত্তার অভাবেই এমন ঘটনা ঘটছে।

বন্দরের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বলেন, “আমরা পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি, দ্রুত শিবু বনিককে উদ্ধার করতে এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ধরনের ঘটনা ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।”

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, “এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা চাই দ্রুত অপহৃত ব্যবসায়ীকে ফিরিয়ে আনা হোক।”

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক বলেন, “আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে। ঘটনাটি খুবই উদ্বেগজনক এবং আমরা এটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”

এ ঘটনার পর থেকে কালাইয়া বন্দরের ব্যবসায়ীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী রাতের বেলা দোকান খোলা রাখার বিষয়ে ভাবছেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আরও নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছেন।

তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং পুলিশ আশা করছে শিগগিরই অপহরণকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

নড়াইলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

নড়াইলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কর্মী সম্মেলন ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন অপর্ণা রায় দাস। জেলার তিন উপজেলার সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
নড়াইলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

নড়াইলের রুপগঞ্জ নিশিনাথতলা মন্দির প্রাঙ্গণে শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কর্মী সম্মেলন ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি অপর্ণা রায় দাস এবং সভাপতিত্ব করেন অশোক কুন্ডু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমীর বসু, মনিরুল ইসলাম ও দেবাশীষ রায় মধু। জেলার তিন উপজেলার সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সম্প্রীতি বজায় রাখার বার্তা দেওয়া হয় এবং সংগঠনের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়।

নড়াইল, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: নড়াইলের রুপগঞ্জ নিশিনাথতলা মন্দির প্রাঙ্গণে শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের নড়াইল জেলা শাখার উদ্যোগে কর্মী সম্মেলন ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অপর্ণা রায় দাস। তিনি তার বক্তব্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নড়াইল জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক কুন্ডু। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু। তার বক্তব্যে তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতির গুরুত্ব এবং সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করার বিষয়ে আলোকপাত করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের ট্রাস্টি সমীর বসু। তিনি তার বক্তব্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

এছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য দেবাশীষ রায় মধু, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জুলফিকার আলী মন্ডল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী হাসান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার রিজভী জর্জ।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মানিক লাল তার বক্তব্যে সংগঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের উপর আলোকপাত করেন। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক জয় দেব রায়, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক খন্দকার ফসিয়ার রহমান এবং সদস্য সচিব মঞ্জুরুল সাঈদ বাবুও সভায় বক্তব্য দেন।

সম্মেলনে জেলার তিন উপজেলার সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন বিপুল সংখ্যায় অংশগ্রহণ করেন। তারা সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এ সম্মেলনে সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন।

এই সম্মেলন ও সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং সনাতন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি জোরদার করা। বক্তারা তাদের বক্তব্যে সনাতন সম্প্রদায়ের কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এবং ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে এ ধরনের সম্মেলন আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

উপস্থিত সবার অংশগ্রহণ এবং উদ্দীপনায় সম্মেলনটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়। সমাবেশ শেষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যেখানে স্থানীয় শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

মার্কিন কংগ্রেসে প্রথমবার চারজন হিন্দু প্রতিনিধি নির্বাচিত

১১৯তম মার্কিন কংগ্রেসে প্রথমবারের মতো চারজন হিন্দু প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। সুহাস সুব্রণিয়ম, রাজা কৃষ্ণমূর্তি, রো খান্না ও শ্রী থানেদার এই সম্মান অর্জন করেছেন। এটি মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
মার্কিন কংগ্রেসে প্রথমবার চারজন হিন্দু প্রতিনিধি নির্বাচিত

১১৯তম মার্কিন কংগ্রেসে একসঙ্গে চারজন হিন্দু প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, যা মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবার ঘটল। নির্বাচিত এই চারজন হলেন সুহাস সুব্রণিয়ম, রাজা কৃষ্ণমূর্তি, রো খান্না এবং শ্রী থানেদার। মার্কিন কংগ্রেসে সংখ্যালঘু ধর্মীয় প্রতিনিধিদের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ সংখ্যা। কংগ্রেসে মাত্র ১৪ জন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, যারা খ্রিস্টান বা জিউয়িশ নন। তাদের মধ্যে চারজন হিন্দু ছাড়াও চারজন মুসলিম, তিনজন বৌদ্ধ এবং তিনজন একেশ্বরবাদী রয়েছেন। এই অর্জন মার্কিন রাজনীতিতে ধর্মীয় বৈচিত্র্য এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপস্থিতি বৃদ্ধি করছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: ১১৯তম মার্কিন কংগ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে ৩ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে শুরু হয়েছে, যেখানে প্রথমবারের মতো চারজন হিন্দু প্রতিনিধি একসঙ্গে নির্বাচিত হয়েছেন। মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সুহাস সুব্রণিয়ম, রাজা কৃষ্ণমূর্তি, রো খান্না এবং শ্রী থানেদার এই নির্বাচনে জয়লাভ করে জনতার প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান কংগ্রেসে মোট ১৪ জন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন যারা খ্রিস্টান বা জিউয়িশ নন। তাদের মধ্যে চারজন হিন্দু, চারজন মুসলিম, তিনজন বৌদ্ধ এবং তিনজন একেশ্বরবাদী রয়েছেন। এই তালিকায় সুহাস সুব্রণিয়ম, রাজা কৃষ্ণমূর্তি, রো খান্না এবং শ্রী থানেদার হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

এছাড়া, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নারী প্রমীলা জয়পাল হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে নির্বাচিত হয়েছেন, যদিও তিনি তাঁর ধর্মীয় পরিচয় ‘অনির্দিষ্ট’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন। আরেক ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রতিনিধি ড. অমি বেরা নিজেকে একেশ্বরবাদী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। ড. বেরা বর্তমান কংগ্রেসে ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রতিনিধিদের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র সদস্য।

মার্কিন কংগ্রেসের অধিকাংশ সদস্যই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। খ্রিস্টানদের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন জিউয়িশ জনপ্রতিনিধিরা, যারা মোট আসনের প্রায় ৬ শতাংশ দখল করেছেন। এই মুহূর্তে কংগ্রেসে ৩১ জন জিউয়িশ প্রতিনিধি রয়েছেন। তালিকার তৃতীয় স্থানে মুসলিম এবং হিন্দু জনপ্রতিনিধিরা যৌথভাবে রয়েছেন। নির্বাচিত চারজন মুসলিম জনপ্রতিনিধির মধ্যে রয়েছেন আন্দ্রে কারসন, ইলহান ওমর, রশিদা তলিব এবং লতিফা সাইমন।

এই কংগ্রেসে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে রয়েছেন ডেরেম ট্রাম, যিনি ক্যালিফোর্নিয়ার ৪৫তম কংগ্রেসীয় জেলা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ১১৯তম মার্কিন কংগ্রেসে তৃতীয় বৌদ্ধ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

সিকিউ রোল কলের পরিসংখ্যান অনুসারে, রিপাবলিকান জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ৯৮ শতাংশ নিজেদের খ্রিস্টান হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এই সংখ্যা ৭৫ শতাংশ। মাত্র তিনজন রিপাবলিকান রয়েছেন যারা খ্রিস্টান নন, যেখানে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এই সংখ্যা ৬৬। আরও ২১ জন ডেমোক্র্যাট জানিয়েছেন যে তারা নির্দিষ্ট করে কোনও ধর্মে বিশ্বাসী নন।

এই নির্বাচনের মাধ্যমে মার্কিন রাজনৈতিক অঙ্গনে ধর্মীয় বৈচিত্র্যের উপস্থিতি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এটি শুধুমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য নয়, বরং সমস্ত সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীর জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল নারীকে মারধর, বাড়িতে আগুন, চেয়ারম্যান অভিযুক্ত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জমি বিরোধে ফিলোমিনা হাসদা আহত, বাড়িতে আগুন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল নারীকে মারধর, বাড়িতে আগুন, চেয়ারম্যান অভিযুক্ত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রাজাবিরাট এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে সাঁওতাল নারী ফিলোমিনা হাসদা (৫৫) মারধর এবং তার বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ফিলোমিনা বর্তমানে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার ছেলে ব্রিটিশ সরেন জানান যে, চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের পৈত্রিক জমির উপর মাটি ভরাট করতে গেলে এই ঘটনা ঘটে।

গাইবান্ধা, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রাজাবিরাট এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক সাঁওতাল নারী, ফিলোমিনা হাসদা (৫৫), মারধরের শিকার হন এবং তার বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ফিলোমিনা বর্তমানে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ফিলোমিনা হাসদার ছেলে ব্রিটিশ সরেন মিডিয়ার সাথে কথা বলতে গিয়ে জানান, “গতকাল সকাল ১০টার দিকে গ্রামের পাশে সাঁওতালদের পৈত্রিক জমি, যা বাঙালিরা দখল করে নিয়েছে, সেই জমিতে রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মাটি ভরাট করছিলেন। জায়গাটি আগে পতিত অবস্থায় ছিল। হঠাৎ করে চেয়ারম্যান সেই জমিতে মাটি ভরাট করছেন দেখে গ্রামের কয়েকজন সাঁওতাল যুবক বাধা দিতে যায়। তখন চেয়ারম্যানের সামনেই তার লোকজন আমার খালাতো ভাই নিকোলাস মুর্মুকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। আমরা কিছু দূরে আলুর খেতে কাজ করছিলাম। খালাতো ভাইকে মারধরের কথা শুনে আমি প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে লাঠি দিয়ে মারতে আসেন। এসময় আমার মা চেয়ারম্যানের লাঠি ধরতে গেলে চেয়ারম্যান তার কানে উপর্যুপরি থাপ্পড় দেন। এতে মা মাটিতে পড়ে যান এবং তার কান দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে।”

ব্রিটিশ সরেন আরও বলেন, “সকালে সাড়ে ১১টার দিকে ভাইয়েরা মাকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে দুপুর ১২টার দিকে আমি আবার আলুর খেতে গেলে চেয়ারম্যানের অনুসারী ২০-২৫ জন লোক আমাকে বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করে এবং হুমকি দিয়ে চলে যায়।” বিকেলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা ফিলোমিনাকে রেফার করলে তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ব্রিটিশ সরেন জানান, “মা এখনো সেখানে চিকিৎসাধীন।”

“রাত ১১টার দিকে শুনি চেয়ারম্যানের লোকজন আমাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। তবে একটি ঘর পুড়ে গেছে,” বলেন তিনি।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম এই ঘটনায় তার অবস্থান জানিয়ে বলেন, “১০-১২ বছর আগে স্থানীয় এক বাঙালি মালিকের কাছ থেকে ১৬ শতক জমি কিনেছিলাম। সেই জমিতে মাটি ভরাট করতে গেলে ব্রিটিশ সরেনসহ কয়েকজন সাঁওতাল যুবক বাধা দেয়। আমার লোকজন তাদের তাড়িয়ে দেয়। আমার কাছে জমির দলিল আছে। জমিও আমার নাম রেকর্ড হয়েছে। আমি ব্রিটিশ সরেনের মাকে মারধর করিনি।”

তবে সাঁওতালদের দাবি অনুযায়ী, বাঙালিরা ভুয়া দলিলপত্র তৈরি করে এই জমি দখলে নিয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ বাগদা-ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, “আগে রাজাবিরাট গ্রামে অনেক সাঁওতাল পরিবার ছিল। তবে স্বাধীনতার পর থেকে তাদের প্রায় ২৫০ বিঘা জমি স্থানীয় বাঙালিরা নানাভাবে দখলে নিয়েছে। সে কারণে সেখান থেকে অনেক সাঁওতাল পরিবার অন্য জায়গায় চলে গেছে।” ফিলিমন বাস্কে জানান, “ব্রিটিশ সরেনের মাকে মারধর ও বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আমরা প্রতিবাদ সভা করব। এখন সরেজমিনে দেখতে যাচ্ছি। পরে থানায় যাব।”

ফিলোমিনা হাসদার বাড়িতে আগুন দেওয়ার বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, “তাদের বাড়িতে কারা আগুন দিয়েছে আমি জানি না। সেসময় আমি থানায় ছিলাম।” তবে স্থানীয় দুই প্রত্যক্ষদর্শী জানান যে, সকালে চেয়ারম্যান নিজে সাঁওতালদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি এবং ফিলোমিনা হাসদাকে মারধর করেন।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম এই বিষয়ে বলেন, “ঘটনাটি তদন্ত করতে একজন অফিসারকে সেখানে পাঠিয়েছি। শুনেছি জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে ঝামেলা হয়েছে। একজন সাঁওতাল নারীকে কানে থাপ্পড় দিয়েছেন (চেয়ারম্যান)। আর রাতে বাড়িতে কে আগুন দিয়েছে সেটা কেউ দেখেনি। আমার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। চেয়ারম্যান হোক আর যেই হোক ছাড় দেওয়া হবে না।”

তারিখ: ০৬.০১.২০২৫

বাঘারপাড়ায় পুলিশ পরিচয়ে দুই বাড়িতে ডাকাতি, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট

যশোরের বাঘারপাড়ায় পুলিশ-পরিচয় দিয়ে দুই বাড়িতে ডাকাতি; টাকা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার লুট।
বাঘারপাড়ায় পুলিশ পরিচয়ে দুই বাড়িতে ডাকাতি, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় পুলিশের পরিচয় দিয়ে দুই বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার ভোরে বরভাগ গ্রামে পশুপতি ও বিশ্বনাথ দেবনাথের বাড়িতে ঢুকে ডাকাত দল টাকা, মোবাইল ফোন এবং স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। তারা পুলিশের পোশাক পরে এসেছিল, যা এই ডাকাতির নাটকীয়তা বাড়িয়ে তুলেছে।

যশোর, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫: যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় আজ শনিবার ভোরে দুই বাড়িতে পুলিশের পরিচয় দিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার শিকার হন বরভাগ গ্রামের প্রবীণ পশুপতি দেবনাথ (৭০) এবং তাঁর ভাই বিশ্বনাথ দেবনাথ (৫২)। ডাকাত দল তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়।

বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম প্রথম আলোকে বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” ঘটনার বিস্তারিত জানতে গেলে বোঝা যায়, ভোর সোয়া চারটার দিকে ছয়টি মোটরসাইকেলে করে ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১২ থেকে ১৪ জন ব্যক্তি এই দুই ভাইয়ের বাড়িতে এসেছিল। তাদের কয়েকজন ডিবি পুলিশের মতো পোশাক পরা ছিল, অন্যদের গায়ে পুলিশের ‘নেভি-ব্লু’ জ্যাকেটের মতো দেখতে জ্যাকেট ছিল, তবে পোশাকের গায়ে কিছু লেখা ছিল না। সবাই সাধারণ প্যান্ট পরে এসেছিল। একজনের কাছে একটি পিস্তল এবং ওয়াকিটকি দেখা গিয়েছিল।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা বলেন, এই ব্যক্তিরা প্রথমে বিশ্বনাথ দেবনাথের ঘরের সামনে গিয়ে ডাকতে শুরু করে। তারা বলেন যে, “চট্টগ্রাম থেকে কিছু লোক অবৈধ অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে আছে” এবং তাই থানা থেকে তল্লাশি করতে এসেছেন। নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে, দরজা না খুললে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকবেন বলে জানান। অবশেষে দরজা খুলে দিলে তারা ঘরে ঢুকে পুলিশের মতো করে বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি শুরু করে।

এ সময় তাদের কয়েকজন পাশের পশুপতি দেবনাথের বাড়িতে ঢোকেন। ডাকাত দল এক পর্যায়ে পশুপতি দেবনাথ এবং বিশ্বনাথ দেবনাথের ছেলে ব্রজেশ্বর দেবনাথকে (২৫) প্লাস্টিকের তালা দিয়ে পেছন থেকে দুই হাত আটকে রাখে। তারপরে বাড়িতে থাকা বিশ্বনাথ দেবনাথ, তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে বসিয়ে রাখে এবং ঘরের আলমারির চাবি নিয়ে নেয়। তারা দুই বাড়ির সব কক্ষের আসবাব ও বাড়ির পারিবারিক মন্দিরে থাকা বিভিন্ন পূজার উপকরণ ওলট-পালট করতে থাকে।

পশুপতি দেবনাথের ছেলে দেবপ্রসাদ দেবনাথ বলেন, “প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে ডাকাতি চলে। ডাকাত দল আমার কাকার ঘর থেকে ৯০ হাজার টাকা, আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার, একটি আইফোন ও একটি মুঠোফোন এবং আমার বাবার ঘর থেকে পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার, পাঁচ হাজার টাকা এবং আমার মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও মোটরসাইকেলের কাগজপত্র নিয়ে যায়।” ডাকাতি শেষে তারা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, “আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে আমরা থানায় অভিযোগ করব।”

এই ঘটনা অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে, বিশেষ করে যেহেতু ডাকাতরা পুলিশের পরিচয় দিয়ে কাজ করেছিল। এটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টি করেছে এবং পুলিশের প্রতি বিশ্বাসকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে। স্থানীয় পুলিশ এখন এই ঘটনার তদন্তে ব্যস্ত এবং ভুক্তভোগীদের মালামাল ফিরে পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তারিখ: ০৬.০১.২০২৫

মৌলভীবাজারের বড়লেখা আশ্রমে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট

মৌলভীবাজারের বড়লেখার আদিত্যের মহাল শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর আশ্রমে হামলা, সেবায়েতরা আক্রান্ত, পুলিশ তদন্তে ব্যস্ত।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা আশ্রমে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী আদিত্যের মহাল শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সেবা আশ্রমে বুধবার (১ জানুয়ারি ২০২৫) সকালে হামলা হয়। হামলাকারীদের আক্রমণে আশ্রমের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেবায়েতদের শারীরিক আক্রমণ করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে, মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রচেষ্টা চলছে।

মৌলভীবাজার, ০১ জানুয়ারি, ২০২৫: মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী আদিত্যের মহাল শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সেবা আশ্রমে বুধবার সকালে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। সকাল ৯টার দিকে একদল অজ্ঞাত ব্যক্তি আশ্রমে প্রবেশ করে ভাঙচুর এবং লুটপাট করে। এই হামলায় আশ্রমের ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, হামলাকারীরা আশ্রমের ভেতরে ঢুকে প্রার্থনার স্থান, মূর্তি, এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী ভাঙচুর করে। তারা সেবায়েতদেরও মারধর করে, যার ফলে আশ্রমের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেবায়েতরা আত্মরক্ষায় নিরস্ত হয় এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন।

ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যাপারটি সম্পর্কে জানিয়েছেন যে, আশ্রমের কর্তৃপক্ষের ওপরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। পুলিশ তদন্তের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে যোগাযোগ করছে, ক্যামেরা ফুটেজ খুঁজছে এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে ব্যস্ত।

স্থানীয় জনগণ এই ঘটনায় শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শাস্তির দাবি জানিয়েছে। বড়লেখা উপজেলার বাসিন্দা জানিয়েছেন যে এই ধরনের ঘটনা তাদের নিরাপত্তার অনুভূতিকে ক্ষুণ্ণ করে এবং আশ্রমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন। কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এই ঘটনা শুধু আশ্রমকে নয়, আমাদের সম্প্রদায়কেও আঘাত করেছে। আমরা আশা করি যে প্রশাসন দ্রুত বিচার করবে এবং দোষীদের শাস্তি দেবে।”

ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এই ঘটনাকে নিন্দা করেছেন এবং আশ্রমের পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, “এই ধরনের হামলা আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের মূলকে আঘাত করে। আমরা আশা করি যে জোরদার তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি মিলবে।” আশ্রমের সেবায়েতরা প্রকাশ করেছেন যে এই হামলা তাদের নৈতিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, “আমরা চাই যে প্রশাসন আমাদের সাহায্য করে এবং এই ধরনের ঘটনা আবার ঘটতে না দেয়।”

স্থানীয় প্রশাসন এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ আশ্রমের পুনর্গঠনের জন্য একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন। তারা আশ্রমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াতে এবং সেবায়েতদের পুনর্বাসনের জন্য প্রোগ্রাম তৈরি করতে ব্যস্ত।

যেহেতু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে হামলা এবং লুটপাটের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই এই ঘটনা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশ্নকে আরো স্পষ্ট করে তুলেছে। স্থানীয় জনগণ এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় আশা করা হচ্ছে যে দ্রুত বিচার হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন সম্ভব হবে। এই ঘটনা জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তাকেও উন্মোচন করেছে, যেখানে সকলের সুরক্ষা এবং শান্তি বজায় রাখা প্রয়োজন।

তারিখ: ০৬.০১.২০২৫

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনে জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ চায় গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন

গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন (GBHC) বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন রুখতে জাতিসংঘে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে। তারা বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন ও সংখ্যালঘুদের জন্য সুরক্ষিত এলাকা গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। ভারত সরকারকেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান করা হয়েছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনে জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ চায় গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন

গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন (GBHC) শুক্রবার আগরতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে তারা জাতিসংঘ এবং ভারত সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে। দাবির মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সুরক্ষিত এলাকা গঠন। GBHC নির্বাহী সুশান্ত দাস বাংলাদেশ সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও নির্যাতনে জড়িত। অন্য এক নির্বাহী পুষ্পিতা সিনহা জানান, বাংলাদেশে হিন্দুদের ভারতীয় গুপ্তচর বলা হচ্ছে এবং ভারতীয় পতাকার অবমাননা হচ্ছে।

টরন্টো, ০৩ জানুয়ারি, ২০২৫: টরন্টো ভিত্তিক গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন (GBHC) শুক্রবার আগরতলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করে। তারা দাবি করেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতন বন্ধে GBHC জাতিসংঘ এবং ভারত সরকারের কাছে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উত্থাপন করেছে।

GBHC জানায়, তাদের প্রথম দাবি হলো বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা। তাদের মতে, এই উদ্যোগ সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষায় সহায়ক হবে। দ্বিতীয়ত, সংখ্যালঘুদের জন্য নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এছাড়াও, বাংলাদেশ সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা করার দাবি জানানো হয়েছে।

GBHC নির্বাহী সদস্য সুশান্ত দাস ভারত সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন যাতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরাসরি সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনে অংশ নিচ্ছে এবং লুটপাট করছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণে পরিচালিত এই নির্যাতন বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করা উচিত।”

পুষ্পিতা সিনহা, GBHC-এর আরেক নির্বাহী, সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ‘ভারতীয় গুপ্তচর’ বলে অভিযুক্ত করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুলে ভারতীয় পতাকার অবমাননা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসন হিজবুত তাহরিরের মতো জঙ্গি সংগঠনের সহযোগিতায় অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে।

সিনহা বলেন, “বাংলাদেশে শিক্ষক, অধ্যাপক, মুক্তমনা চিন্তাবিদ এবং মুক্তিযোদ্ধারা হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের পক্ষে কথা বলার কারণে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের নির্বাচনী তালিকা থেকে হিন্দু প্রার্থীদের নাম বেছে বেছে বাদ দেওয়া হচ্ছে।”

GBHC-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তারা ভারত সরকারকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।

GBHC-এর এই সংবাদ সম্মেলন বিভিন্ন মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামীতে তারা জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার কাছে বিষয়টি আরও ব্যাপকভাবে উত্থাপন করবে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

আইনি প্রহসনে এখনও বন্দি প্রভু, ঢাকাকে দিল্লির কড়া বার্তা, ‘সুবিচার করুন’

চট্টগ্রাম আদালত ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন খারিজ করেছে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত চিন্ময়ের পক্ষে ১১ জন আইনজীবী সওয়াল করলেও জামিন মঞ্জুর হয়নি। ভারত দ্রুত সুবিচার দাবি করেছে।
আইনি প্রহসনে এখনও বন্দি প্রভু, ঢাকাকে দিল্লির কড়া বার্তা, ‘সুবিচার করুন’

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করেছে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত চিন্ময়ের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী সওয়াল করলেও আদালত নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে চিন্ময়কে হাজির করেনি। ভার্চুয়াল শুনানিতে জামিন নামঞ্জুর হয়। ভারত সরকার দ্রুত সুবিচারের দাবি জানিয়েছে। ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে চিন্ময়কে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ২৬ তারিখ চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার শুনানিতে জামিন খারিজ হয়।

চট্টগ্রাম, ০৩ জানুয়ারি, ২০২৫: গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলাম ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করেছেন। সকাল সোয়া ১০টায় ভার্চুয়াল শুনানিতে চিন্ময়ের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন আইনজীবীর দল সওয়াল করে। তবে নিরাপত্তার কারণে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালতে আইনজীবীদের উপস্থিতিতে ভার্চুয়াল শুনানিতেই জামিন আবেদন খারিজ হয়।

শুক্রবার বিদেশমন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। আমরা দ্রুত সুবিচারের দাবি জানাচ্ছি।” বাংলাদেশে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়ের বিরুদ্ধে ইউনুস সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহের এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হতে পারে।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিমউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে বলেছে, এটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা এবং এর সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন। আদালত এই যুক্তি মেনে নিয়ে চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করেছে। আইনগতভাবে কেউ ক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ রয়েছে।

গত ২৫ নভেম্বর বিকেলে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরের দিন, ২৬ নভেম্বর তাঁকে চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়। শুনানির পর আদালত চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করে। এই গ্রেপ্তারের পর বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ভারত সরকারও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে দ্রুত সুবিচারের আবেদন জানায়।

তবে, চিন্ময়ের গ্রেপ্তারির পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে আরেকটি শুনানির তারিখ নির্ধারিত ছিল, কিন্তু চিন্ময়ের আইনজীবীদের উপর হামলার হুমকি পাওয়ার কারণে ৫১ জন আইনজীবীর কেউই আদালতে সওয়াল করতে আসেননি। ফলে সেই শুনানি পিছিয়ে ২ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়।

এরই মধ্যে, বাংলাদেশে ইউনুস সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রাখার নানা পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট।

ভারতের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও, বাংলাদেশ সরকার এখনও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। প্রায় দেড় মাস ধরে চিন্ময় প্রভু কারাগারে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ভারত আরও একবার চিন্ময়ের দ্রুত সুবিচারের দাবি জানিয়েছে।

বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর চলমান নিপীড়ন এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারি দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত সরকার এই বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছে এবং বাংলাদেশের প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে।

তারিখ: ০৪.০১.২০২৫

সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ

আদালত হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করেছে। চট্টগ্রাম আদালতে নিরাপত্তা জোরদারের মধ্যে ৩০ মিনিটের শুনানি শেষে বিচারক এমদাদুল ইসলাম এই সিদ্ধান্ত নেন। দাসের গ্রেফতার নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম আদালত বৃহস্পতিবার হিন্দু সন্ন্যাসী ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করেছে। আদালত ৩০ মিনিটের শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর না করার সিদ্ধান্ত নেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, যিনি আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ISKCON) প্রাক্তন সন্ন্যাসী, তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে ঢাকা বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর গ্রেফতার নিয়ে বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কলকাতা ISKCON-এর সহ-সভাপতি রাধা রমন দাস বাংলাদেশ সরকারকে ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: বাংলাদেশের চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা আদালত বৃহস্পতিবার হিন্দু সন্ন্যাসী এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করেছেন। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া এই সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে করা মামলায় ৩০ মিনিটের শুনানি শেষে বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

শুনানির সময় আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল এবং এই শুনানিতে ১১ জন আইনজীবী অংশ নেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে দাখিল করা জামিন আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, দাস দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, যার মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা। তাঁর আইনজীবীরা দাবি করেন যে, দাসকে একটি মিথ্যা ও সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের একটি স্থানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করেছিলেন, যা বাংলাদেশে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভের সূত্রপাত করে। চট্টগ্রাম আদালত ভবনের সামনে ২৭ নভেম্বর দাসের অনুসারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে একজন আইনজীবীর মৃত্যু ঘটে। এর পর থেকেই এই বিষয়টি বাংলাদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।

এর আগে ১১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করে। সেই সময় আদালত জানিয়েছিল, দাসের পক্ষে কোনো আইনজীবীর পত্র বা আইনগত চিঠি আদালতে জমা পড়েনি, যা জামিন পেতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে বৃহস্পতিবারের শুনানিতে এই বিষয়টি মীমাংসিত হওয়া সত্ত্বেও জামিন মঞ্জুর করা হয়নি।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ভারতের কলকাতার ISKCON সহ-সভাপতি রাধা রমন দাস বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। ANI সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এই খবর অত্যন্ত দুঃখজনক। গোটা বিশ্ব এই ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রত্যাশা করছিল যে চিন্ময় প্রভু নতুন বছরে মুক্তি পাবেন। কিন্তু ৪২ দিন পরেও তাঁর জামিন আবেদন খারিজ হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।”

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং হিন্দু সংগঠন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের দ্রুত মুক্তির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁর গ্রেফতার এবং জামিন খারিজের ঘটনায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সমর্থকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এবং দাসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন।

বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলাগুলি সাধারণত বাংলাদেশে কঠোরভাবে পরিচালিত হয় এবং জামিন পেতে দীর্ঘ সময় লাগে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীরা আশা প্রকাশ করেছেন যে, উচ্চ আদালতে আপিলের মাধ্যমে দাসের মুক্তি সম্ভব হবে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

৪৩তম বিসিএসে সংখ্যালঘু ৭১ জনের নিয়োগ বাতিল বিতর্ক

৪৩তম বিসিএসে নিয়োগের গ্যাজেট বাতিল করে নতুন গ্যাজেটে সংখ্যালঘু ৭১ জনের নাম বাদ পড়েছে। ‘বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ’ এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে গ্যাজেট সংশোধনের দাবি জানিয়েছে।
৪৩তম বিসিএসে সংখ্যালঘু ৭১ জনের নিয়োগ বাতিল বিতর্ক

৪৩তম বিসিএসে ২৬৭ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৭১ জন সংখ্যালঘু। ‘বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ’ এই ঘটনায় ধর্মীয় বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছে। ৩০ ডিসেম্বর প্রকাশিত দ্বিতীয় গ্যাজেটে আগে সুপারিশ পাওয়া ১৬৮ জনের নাম বাদ যায়, যা প্রথম গ্যাজেটে ছিল। সংগঠনটি দ্রুত নতুন গ্যাজেট প্রকাশের দাবি জানায়, যাতে বাদ পড়া সংখ্যালঘুদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রার্থীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়েও সুস্পষ্ট জবাব পাননি।

ঢাকা, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত দ্বিতীয় গ্যাজেটে ৪৩তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত ১৬৮ জন প্রার্থীর নাম বাদ পড়েছে। এর মধ্যে ৭১ জন সংখ্যালঘু প্রার্থী। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সরব হয়েছে ‘বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ’। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত ধর্মীয় বিভেদকে প্রতিফলিত করে এবং এটি সাম্প্রতিক সময়ের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তারা অবিলম্বে এই গ্যাজেট বাতিল করে নতুন একটি গ্যাজেট প্রকাশের দাবি জানিয়েছে, যাতে বাদ পড়া সংখ্যালঘুদের নাম পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

প্রথম গ্যাজেটটি প্রকাশিত হয়েছিল গত বছরের ১৫ অক্টোবর। এতে সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ১,৮৯৬ জন প্রার্থীকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের ঘোষণা করা হয়। প্রার্থীদের আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে যোগদান করতে বলা হয়। তবে ৩০ ডিসেম্বরের গ্যাজেটে দেখা যায়, প্রথম গ্যাজেটে নাম থাকা ১৬৮ জনের নাম বাদ পড়েছে।

সংখ্যালঘু সংগঠনটির দাবি, এই ১৬৮ জনের মধ্যে ৭১ জনই হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের। এই ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বাদ পড়া প্রার্থীদের অনেকেই সরাসরি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়েছেন এবং তাদের নাম কেন বাদ পড়েছে তা জানতে চেয়েছেন। কিন্তু তারা সুস্পষ্ট কোনো জবাব পাননি।

এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ সালে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ৪৩তম বিসিএস থেকে ২,১৬৩ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করে। প্রায় ১০ মাস পরে ১৫ অক্টোবর প্রথম গ্যাজেট প্রকাশিত হয়, তবে সেই গ্যাজেটে ৯৯ জন প্রার্থীর নাম বাদ যায়। এরপর ডিসেম্বরের গ্যাজেটে আরও ১৬৮ জনের নাম বাদ যায়, ফলে মোট বাদ পড়া প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৭ জন।

বিসিএস গ্যাজেট থেকে এত সংখ্যক প্রার্থী আগে কখনও বাদ পড়েননি। তথ্য অনুসারে, ৪১তম বিসিএসে ৬৭ জন, ৪০তম বিসিএসে ৩৪ জন, ৩৭তম বিসিএসে ৬১ জন, ৩৮তম বিসিএসে ৭৫ জন এবং ৩৬তম বিসিএসে ৩৮ জন প্রার্থী বাদ পড়েছিলেন। তবে এবার সেই সংখ্যা ২৬৭-এ পৌঁছেছে, যা নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে।

‘বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ’ মনে করে, সংখ্যালঘু প্রার্থীদের বাদ দেওয়ার মাধ্যমে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে আঘাত হানবে। তারা আশা প্রকাশ করেছে যে, সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই গ্যাজেট সংশোধন করবে এবং সংখ্যালঘু প্রার্থীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

সুনামগঞ্জ দোয়ারাবাজার সীমান্তে দুই ভারতীয় নাগরিক আটক বিজিবির হাতে

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে অনুপ্রবেশের দায়ে দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বিজিবি। আটককৃতরা ভারতের শিলংয়ের বাসিন্দা। বিজিবি জানায়, তাঁদের থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
সুনামগঞ্জ দোয়ারাবাজার সীমান্তে দুই ভারতীয় নাগরিক আটক বিজিবির হাতে

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বুধবার বিকেলে বাংলাবাজার ও দমদমিয়া সীমান্ত থেকে বিজিবি সদস্যরা তাঁদের আটক করেন। আটককৃতরা হলেন শিলংয়ের লোকাস (৫৫) এবং ব্লোমিং স্টার (৩২)। বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বিজিবির ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সুনামগঞ্জ, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দুইজন ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে। বুধবার বিকেলে উপজেলার বাংলাবাজার ও দমদমিয়া সীমান্তে টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করেন। সন্ধ্যার দিকে বিজিবির ৪৮ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।

আটককৃত ভারতীয় নাগরিকদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন ভারতের শিলংয়ের বার্মনটিলা গ্রামের লোকাস, যার বয়স ৫৫ বছর। অপরজন হলেন ব্লোমিং স্টার, ৩২ বছর বয়সী, যিনি শিলংয়ের ওয়ামলিংক গ্রামের বাসিন্দা। বিজিবি জানায়, লোকাসকে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার বিওপির আওতাধীন এলাকা কলাউরা থেকে আটক করা হয়। অন্যদিকে ব্লোমিং স্টারকে দমদমিয়া সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়।

বিজিবির ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আটক দুই ভারতীয় নাগরিককে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে তদন্ত শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলে অনুপ্রবেশের ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটে থাকে। তবে বিজিবির নিয়মিত টহল এবং সতর্ক অবস্থানের কারণে অনুপ্রবেশকারীরা দ্রুত আটক হয়ে থাকে। সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবির সদস্যরা দিনরাত টহল পরিচালনা করছেন।

এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা বিজিবির তৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় মাঝে মধ্যেই ভারতীয় নাগরিকরা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে এবং যে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটককৃতদের কাছ থেকে কোনো অবৈধ সামগ্রী পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরা ভুলক্রমে সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করতে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

বিজিবির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি প্রযুক্তির ব্যবহারও বাড়ানো হচ্ছে। সীমান্তে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ রোধে কাজ চলছে।

আটক দুই ভারতীয় নাগরিককে আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে। বিজিবি আশা করছে, দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে কমে আসবে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

সাবেক ইসকন সন্ন্যাসীের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী আদালতে দাঁড়াবেন। ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
সাবেক ইসকন সন্ন্যাসীের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী

জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে ১১ জন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নেবেন। তাঁদের নেতৃত্বে আছেন অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য। ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালতে জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে একটি ঘটনায় তিনি অভিযুক্ত হন এবং ২৫ নভেম্বর গ্রেপ্তার হন। তাঁর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ২৭ নভেম্বর বিক্ষোভে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

ঢাকা, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: সাবেক ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন আইনজীবী অংশ নিতে যাচ্ছেন, যার নেতৃত্বে রয়েছেন অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবারের শুনানির জন্য আইনজীবীদের এই দলটি ঐক্যবদ্ধভাবে চিন্ময়ের পক্ষে আইনি লড়াই করবে।

অ্যাডভোকেট ভট্টাচার্য জানান, আইনজীবী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে তাঁরা চিন্ময়ের জামিন নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। তিনি বলেন, চিন্ময়ের পক্ষ থেকে ভকিলতনামা পাওয়ার পর তিনি এই মামলায় আইনগতভাবে প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং সুপ্রিম কোর্ট এবং চট্টগ্রাম বারের সদস্য হওয়ায় স্থানীয় কোনও আইনজীবীর অনুমোদন ছাড়াই তিনি মামলাটি পরিচালনা করতে পারবেন।

চট্টগ্রামের একটি আদালত ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছে, যা এর আগে আইনজীবীর অনুপস্থিতির কারণে স্থগিত করা হয়েছিল।

অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে একটি ঘটনার সময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনার পর ২৫ নভেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। চিন্ময়ের গ্রেপ্তারের পর ২৭ নভেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, যার ফলে একজন আইনজীবী নিহত হন এবং আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ইসকন কলকাতা জানিয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে দেখতে আসা দুই ভিক্ষুকে আটক করা হয়েছে এবং বাংলাদেশের একটি ইসকন কেন্দ্রে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে বিরাজমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (MEA)। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা সরকারের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস - বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ঘটনায় ইসকনের ২৪০ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। চিন্ময় দাসসহ ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব তদন্তাধীন। ইসকনের পক্ষ থেকে এই তথ্যকে ভুল বলা হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস - বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ঘটনায় ইসকনের ২৪০ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে বলে জানিয়েছে বিএফআইইউ। ২০২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৩৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা জমা ছিল এবং ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। চিন্ময় দাসের নামে তিন কোটি ৯২ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। ইসকন এই তথ্য অস্বীকার করেছে। গত ২৫ অক্টোবর পতাকা অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের হয় এবং ২৫ নভেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার হন। এই ঘটনায় বাংলাদেশে উত্তেজনা বিরাজ করছে। (সূত্রঃ আজতক)

ঢাকা, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: বাংলাদেশে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে কোটি কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের ঘটনা। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) জানিয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব থেকে ২৪০ কোটি টাকার সন্ধান মিলেছে।

বিএফআইইউ-এর তথ্য অনুযায়ী, ইসকনের নামে ২০২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৩৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা জমা ছিল এবং এর মধ্যে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকে জমা রয়েছে ১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। পাশাপাশি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে তিন কোটি ৯২ লাখ টাকা জমা ছিল, যার প্রায় পুরো অর্থই ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএফআইইউ বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়ে ইসকন এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছিল। তদন্ত শুরু হয়েছে এই বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস ও ব্যয় সংক্রান্ত বিষয়ে। কারা এই অর্থ জমা দিয়েছে এবং কোন কোন খাতে তা ব্যয় হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।

এদিকে যাঁদের ব্যাংক হিসাব তদন্তের আওতায় এসেছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, কার্ত্তিকচন্দ্র দে, অনিক পাল, সরোজ রায়, সুশান্ত দাস, বিশ্ব কুমার সিংহ, চণ্ডীদাস বালা, জয়দেব কর্মকার, লিপিরানী কর্মকার, সুধামা গৌর দাস, লক্ষণ কান্তি দাশ, প্রিয়তোষ দাশ, রূপন দাস, রূপন কুমার ধর, আশিস সন্ন্যাসী, জগদীশ চন্দ্র অধিকারী ও সজল দাস।

তবে ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস এই তথ্যকে ভুল বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশে ইসকনের এত সংখ্যক অ্যাকাউন্ট নেই এবং রিপোর্টে সময়কাল সম্পর্কেও স্পষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। ইসকনের ব্যাংক হিসাব আলাদা এবং ভক্তদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব আলাদা।”

এই ঘটনা শুরু হয় গত ২৫ অক্টোবর, যখন চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের এক সমাবেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বক্তৃতা দেন। অভিযোগ ওঠে, সেই সমাবেশে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপি নেতা ফিরোজ খান চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেন এবং ৩১ অক্টোবর তিনি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা এবং তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময়ের জামিন আবেদন করার সময় আদালতের বাইরে প্রচুর মানুষ জড়ো হন এবং চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এই বিক্ষোভে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভ দমনে পুলিশের কড়া পদক্ষেপে একজন আইনজীবীর মৃত্যু হয় এবং আরও কয়েকজন আহত হন। এরপর থেকেই বাংলাদেশে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে এবং বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

ইসকনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার এবং তাঁকে কেন্দ্র করে ছড়ানো তথ্যের অনেকটাই বিভ্রান্তিকর এবং এটি ইসকনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। সংগঠনটি দাবি করেছে, তারা সব সময় আইন মেনে চলে এবং তাদের অর্থ লেনদেনও স্বচ্ছ।

তবে সরকারি সংস্থাগুলি জানিয়েছে, তারা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছে এবং সকল তথ্য ও প্রমাণ বিশ্লেষণ করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক থেকে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের সনাতন সম্প্রদায়ের অনেকেই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ন্যায্য বিচার দাবি করেছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ চলছে এবং জনগণের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও মতামত দেখা যাচ্ছে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

চিন্ময় প্রভুর জামিন শুনানি আজ, বাংলাদেশের নজর আদালতের দিকে

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আটক ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি আজ। নিরাপত্তাহীনতায় ৫১ আইনজীবী আদালতে যাননি। প্রবীণ আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ অসুস্থ। তিন হিন্দু আইনজীবী আজ মামলা লড়বেন। বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে ভারতও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
চিন্ময় প্রভুর জামিন শুনানি আজ, বাংলাদেশের নজর আদালতের দিকে

গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাঁর জামিন আবেদন বারবার খারিজ হয়েছে। ৫১ আইনজীবী প্রাণভয়ে শুনানিতে অংশ নেননি। প্রবীণ আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ ভারতে চিকিৎসাধীন। আজ তিন হিন্দু আইনজীবী আদালতে সওয়াল করবেন। ভারতের উদ্বেগ ও কূটনৈতিক চাপের মুখে ইউনুস সরকার নমনীয় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সেনাপ্রধানও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন। আজকের শুনানি বাংলাদেশের রাজনীতি ও হিন্দু সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ঢাকা, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অভিযোগে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয় তাঁকে, তবে জামিনের আবেদন একাধিকবার খারিজ হয়ে যায়। এর পর থেকে বাংলাদেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। হিন্দু সম্প্রদায়ের একাংশ এবং বিভিন্ন সংগঠন তাঁর মুক্তির দাবি জানায়।

চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারের পর আদালতের বাইরে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে একজন আইনজীবী গুরুতর আহত হয়ে আইসিইউ-তে ভর্তি হন। হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি, এই ঘটনা চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানোর চেষ্টা।

গত ৩ ডিসেম্বর তাঁর জামিনের শুনানি ছিল। কিন্তু ‘প্রাণভয়ে’ ৫১ জন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হননি। তাঁদের দাবি, চিন্ময় প্রভুর হয়ে সওয়াল করলে তাঁদের জীবনও ঝুঁকির মুখে পড়বে। এর ফলে শুনানি পিছিয়ে যায় এবং নতুন তারিখ ধার্য করা হয় ২ জানুয়ারি।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট অভিযোগ করেছে, চিন্ময় প্রভুর মুক্তি আটকাতে অন্তর্বর্তীকালীন ইউনুস সরকারের পরিকল্পনায় ৭০ জন হিন্দু সন্ন্যাসীর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মূল লক্ষ্য, যাতে কেউ চিন্ময় প্রভুর পক্ষে আদালতে দাঁড়াতে সাহস না দেখান।

প্রবীণ আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ সাহসিকতার সঙ্গে চিন্ময় প্রভুর পক্ষে দাঁড়ান, তবে চট্টগ্রাম আদালতে শারীরিক হেনস্থার শিকার হন তিনি। কয়েক সপ্তাহ পর তিনি ভারতে চিকিৎসার জন্য আসেন এবং এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। রবীন্দ্র ঘোষ আজকের শুনানিতে উপস্থিত হতে পারবেন না, তবে তাঁর অনুপস্থিতিতেও তিনজন হিন্দু আইনজীবী চিন্ময় প্রভুর হয়ে আদালতে লড়াই করবেন।

ভারত এই ঘটনার প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেপ্তারের ঘটনা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে কূটনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি সম্প্রতি ঢাকা সফর করেছেন এবং বিষয়টি আলোচনায় আসে।

গতকাল বাংলাদেশের সেনাপ্রধান এক বিবৃতিতে বলেন, আগামী দিনে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসও প্রয়াত ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে শ্রদ্ধা জানাতে ভারতীয় দূতাবাসে যান এবং রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মার সঙ্গে বৈঠক করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দু নির্যাতন, উচ্চ মূল্যবৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ইউনুস সরকারের উপর চাপ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজকের শুনানিতে নমনীয় হতে পারে সরকার।

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় এবং আন্তর্জাতিক মহল আজকের শুনানির দিকে বিশেষভাবে নজর রাখছে। আদালতের রায়ের উপর নির্ভর করবে চিন্ময় প্রভুর ভবিষ্যৎ এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সরকারের অবস্থান।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

চট্টগ্রামে হিন্দু যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল মৌলবাদীরা

চট্টগ্রামে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে হিন্দু যুবক প্রান্ত তালুকদারকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর পক্ষে ফেসবুকে পোস্ট করায় এই হামলা হয় বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ প্রান্তকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
চট্টগ্রামে হিন্দু যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল মৌলবাদীরা

চট্টগ্রামে প্রান্ত তালুকদার নামে এক হিন্দু যুবককে ফেসবুকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর সমর্থনে পোস্ট করার অভিযোগে অপহরণ ও মারধর করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে প্রান্তকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে। পুলিশ লালখান বাজার এলাকা থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে। প্রান্ত বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদিও ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিন শুনানি ঘিরে উত্তেজনার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫: চট্টগ্রামে এক হিন্দু যুবককে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে। জানা গেছে, চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর সমর্থনে ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে প্রান্ত তালুকদার নামের যুবককে মৌলবাদীরা অপহরণ করে ও মারধর করে। ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাতে, যখন প্রান্ত তালুকদার পতেঙ্গা কাঠগড় এলাকায় নিজের বাড়িতে ছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রান্তের অপহরণের দৃশ্য পাড়ার একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে, যা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টার দিকে খুলশি থানার লালখান বাজার এলাকা থেকে প্রান্ত তালুকদারকে উদ্ধার করা হয়। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ লালখান বাজারের আমিন সেন্টারের পার্কিংয়ে গিয়ে দেখে, সেখানে কিছু লোক প্রান্তকে ঘিরে রেখেছে। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। মারধরের ফলে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রান্তকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এই ঘটনার পেছনে কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, প্রান্ত তালুকদার ফেসবুকে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর পক্ষে একটি পোস্ট করেছিলেন। গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এরপর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।

প্রান্তের পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যাবেলায় অচেনা কিছু ব্যক্তি তাঁদের বাড়ির আশপাশে ঘোরাফেরা করছিল। পরিবারের সামনেই প্রান্তকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।

খুলশি থানার ওসি মুজিবুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্মীয় বিদ্বেষ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেপ্তারের পর থেকেই চট্টগ্রাম এবং আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর শুনানির সময় আদালত চত্বরে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হন। তখন পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত হন। তাঁর হত্যার ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যে চন্দন দাস নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে।

চন্দন দাসকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানায়, সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডে আরও ১৫ থেকে ২০ জন ব্যক্তি জড়িত ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের মতে, অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং দ্রুতই তাদের গ্রেফতার করা হবে।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম আদালতে আজ চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিন শুনানির কথা রয়েছে। প্রান্ত তালুকদারের ওপর হামলার ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা দাবি করেছেন, এই ধরনের হামলা সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ তৈরি করছে।

প্রান্ত তালুকদারের ওপর হামলা এবং চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেপ্তার বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি সম্প্রতি ঢাকা সফর করেন এবং বিষয়টি বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ে উত্থাপন করেন।

তবে এখনও পর্যন্ত প্রান্ত তালুকদারের ওপর হামলার ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রান্ত তালুকদার একজন শিক্ষিত যুবক এবং তাঁর বিরুদ্ধে আগে কোনো অভিযোগ ছিল না। তাঁরা দাবি করেছেন, এ ধরনের ঘটনা সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিপন্থী।

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় এবং নাগরিক সমাজ এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, প্রান্ত তালুকদারের উপর হামলার ঘটনায় তারা কোনও ধরনের গাফিলতি করবে না এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

বাংলাদেশি হিন্দুরা ভারতে আসতে চায় না: হিমন্ত বিশ্ব শর্মা

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, বাংলাদেশের হিন্দুরা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিপক্কভাবে সামলাচ্ছে এবং ভারতে আসতে আগ্রহী নয়। প্রধানমন্ত্রী মোদী তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা বেড়েছে, তবে তারা হিন্দু নয়।
বাংলাদেশি হিন্দুরা ভারতে আসতে চায় না: হিমন্ত বিশ্ব শর্মা

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, বাংলাদেশের হিন্দুরা তাদের দেশে থেকে পরিস্থিতি সামলাচ্ছে এবং ভারতে আশ্রয়ের জন্য আগ্রহী নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাদের সুরক্ষার জন্য কাজ করছেন। তিনি জানান, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর লোক ভারতে প্রবেশ করেছে, তবে তাদের কেউই হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়। বরং তারা মূলত বাংলাদেশের বস্ত্র শিল্পের শ্রমিক, যারা ভারতে কাজের সন্ধানে এসেছেন। শর্মা বলেন, বাংলাদেশে বস্ত্রশিল্প ধসে পড়ার কারণে শ্রমিকরা ভারতে প্রবেশ করছে এবং অনেক ভারতীয় বস্ত্র মালিক তাদের উৎসাহিত করছেন।

গুয়াহাটি, ০১ জানুয়ারি, ২০২৫: অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বুধবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে যথেষ্ট পরিপক্কতার সাথে সামলাচ্ছে এবং ভারতে আশ্রয়ের জন্য কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তিনি জানান, অতীতে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ভারতে এসেছিল, কিন্তু বর্তমানে তারা তাদের নিজ দেশে থাকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত কাজ করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও জানান, গত বছরের অগস্ট মাসে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলায় বহু বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নয়াদিল্লি এসব ঘটনা গুরুত্বের সাথে নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এদিকে, অসমে গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দলের মতো বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠন বাংলাদেশের হিন্দুদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করেছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রচারক সুমন কুমার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাংলাদেশের হিন্দুদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার আবেদন করেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, গত পাঁচ মাসে অসম এবং ত্রিপুরায় প্রায় এক হাজার বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে, কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ছিল না।

তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, আটক হওয়া ব্যক্তিরা মূলত বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পে কাজ করা শ্রমিক, যারা ভারতে বস্ত্র শিল্পে কাজের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের বস্ত্র শিল্পের পতনের ফলে প্রচুর শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে, যার ফলে তারা ভারতে আশ্রয় খুঁজছে। ভারতীয় বস্ত্র মালিকরা সস্তায় শ্রম পাওয়ার আশায় তাদের কাজে নিয়োগ দিচ্ছেন।

হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, এটি একটি উদ্বেগজনক বিষয়, কারণ অতীতে এত বেশি অনুপ্রবেশকারী শনাক্ত হয়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের মানুষ বর্তমানে অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছে এবং তাদের অনেকেই ভারতে কাজের সন্ধানে প্রবেশ করছে। তবে, অসম সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে এবং অনুপ্রবেশকারীদের আটক করে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নিচ্ছে।

তিনি বলেন, অসম সরকার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আটক করতে আগ্রহী নয়, কারণ তারা কারাগারে জায়গার সংকট তৈরি করতে চায় না। বরং, আটককৃতদের নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে, বিশেষ করে তামিলনাড়ুতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা গেছে। বাংলাদেশে টেক্সটাইল শিল্প ধসে পড়ার কারণে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন ইউনিটে তারা কাজের জন্য যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা অতীতেও বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক অনুপ্রবেশের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, এই সমস্যা শুধু অসম নয়, বরং সমগ্র দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির উপর প্রভাব ফেলছে।

তারিখ: ০২.০১.২০২৫

সংবাদ ২০২৪

এই অংশে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে সর্বশেষ ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ খবর, নির্যাতন-নিপীড়নের আপডেট, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়সহ সব ধরনের প্রাসঙ্গিক সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করা হয়। এটি কমিউনিটির বাস্তব চিত্র তুলে ধরার একটি নির্ভরযোগ্য উৎস।

হঠাৎ বুকে ব্যথা রবীন্দ্রের! চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী গেলেন এসএসকেএম-এ

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন মামলার আগে আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি রবীন্দ্রের চিকিৎসা চলছে। ২ জানুয়ারি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি চট্টগ্রামে নির্ধারিত হয়েছে। রবীন্দ্রের অসুস্থতা মামলার গতিপ্রকৃতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
হঠাৎ বুকে ব্যথা রবীন্দ্রের! চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী গেলেন এসএসকেএম-এ

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানির আগে তাঁর আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। রবীন্দ্র হৃদরোগ ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে ভর্তি হয়েছেন। ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি রয়েছে, তবে রবীন্দ্রের অসুস্থতা শুনানিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ইতিমধ্যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির জন্য ১ জানুয়ারি ইসকন কলকাতা মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

কলকাতা, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানির আগে তাঁর আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রবীন্দ্র ঘোষ বর্তমানে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জানা গেছে, রবীন্দ্র হৃদরোগ, প্রস্রাবজনিত সমস্যা এবং পুরনো অস্ত্রোপচারের সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবীন্দ্র বলেন, “বুকের ভিতর চিনচিনে ব্যথা রয়েছে। অসুস্থতা বোধ করছি। সাত-আট জন চিকিৎসক আমাকে পরীক্ষা করেছেন। তাঁরা ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।”

উল্লেখ্য, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশের কারাগারে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাঁকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০২৪ সালের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। ২৫ নভেম্বর তাঁকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে মামলার শুনানির সময় আদালতের বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক আইনজীবী নিহত হন এবং ১০ জন হিন্দু সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি নির্ধারিত হয়েছে। রবীন্দ্র ঘোষ জানিয়েছেন, “মামলার জন্য অনেক চিন্তা রয়েছে। বুধবার আমার দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হলে আমি ফিরতে পারব কি না, নিশ্চিত নই। তবে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে ২০ জন আইনজীবী প্রস্তুত রয়েছেন।”

রবীন্দ্র ঘোষের অসুস্থতার মধ্যে মঙ্গলবার তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ ব্যারাকপুরে রবীন্দ্রের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহ এবং প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ রবীন্দ্রের সঙ্গে দেখা করেন এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির জন্য তাঁদের সমর্থন জানান।

ইসকন জানিয়েছে, ১ জানুয়ারি কলকাতা ইসকন মন্দিরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আরোগ্যের জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। সারা বিশ্ব থেকে হিন্দু সম্প্রদায় এই বিষয়ে সংহতি প্রকাশ করছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি ক্রমেই প্রবল হয়ে উঠছে।

তারিখ: ০১.০১.২০২৫

বছরশেষে চট্টগ্রামের জেলে কেমন আছেন চিন্ময় প্রভু?

বাংলাদেশের কারাবন্দি হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গুরুতর অসুস্থ। ইসকন তাঁর আরোগ্যের জন্য ১ জানুয়ারি প্রার্থনার আয়োজন করছে। ২ জানুয়ারি জামিন শুনানির আগে বর্ষীয়ান আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ তাঁর জামিনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।
বছরশেষে চট্টগ্রামের জেলে কেমন আছেন চিন্ময় প্রভু?

বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কারাবন্দি রয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, তাঁকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। ১ জানুয়ারি ইসকন কলকাতা মন্দিরে তাঁর আরোগ্যের জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করেছে। বর্ষীয়ান আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ ২ জানুয়ারি তাঁর জামিন শুনানির আগে মুক্তির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা তাঁর গ্রেফতারের কারণ।

চট্টগ্রাম, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪: হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বর্তমানে কারাগারে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। বাংলাদেশের হিন্দু সংগঠনগুলি অভিযোগ করেছে যে, তাঁকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আরোগ্য কামনায় ইসকন কলকাতা মন্দিরে আগামী ১ জানুয়ারি একটি বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। ইসকনের মুখপাত্র রাধারমন দাস জানিয়েছেন, এই প্রার্থনার উদ্দেশ্য হল চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সুস্থতা কামনা করা এবং তাঁর জামিন নিশ্চিত করা।

২০২৪ সালের ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামে একটি সমাবেশের আয়োজন করেছিল, যেখানে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ভাষণ দেন। সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। বিএনপি নেতা ফিরোজ খান রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করেন এবং ৩১ অক্টোবর ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এই মামলার প্রেক্ষিতেই ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয় এবং চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।

২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আদালতের বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক আইনজীবী নিহত হন এবং ১০ জন হিন্দুকে গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে কোনো আইনজীবী যাতে মামলা না লড়েন, তার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে বর্ষীয়ান আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ এই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। ২ জানুয়ারি তাঁর জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া, আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা করার ঘটনায় অভিযুক্ত চন্দন দাসকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, চন্দন দাস কিরিচ দিয়ে সাইফুল ইসলামকে কুপিয়েছিলেন এবং তাঁকে গ্রেফতার করা হয় কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেল স্টেশনের কাছ থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের সময় চন্দন দাসের পরনে কমলা রঙের গেঞ্জি এবং কালো প্যান্ট ছিল। পুলিশের মতে, প্রাপ্ত ভিডিয়ো ফুটেজ থেকে চন্দন দাসকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং আরও ১৫-২০ জন ব্যক্তি আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে মারধর করেছিলেন। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, দুইজন হেলমেট পরা ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র নিয়ে সাইফুলকে কুপিয়ে হত্যা করেন।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি এবং তাঁর আরোগ্য কামনায় ইসকনের আয়োজন করা প্রার্থনা সভা বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন মহলে গুরুত্ব পাচ্ছে। সারা বিশ্ব থেকে হিন্দু সম্প্রদায় এই বিষয়ে সংহতি প্রকাশ করছে।

তারিখ: ৩০.১২.২০২৪

ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আর্জি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা চেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বারস্থ হয়েছেন আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা। তাঁরা চান চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি এবং সংখ্যালঘুদের জন্য ‘কম্প্রিহেনসিভ মাইনরিটি প্রোটেকশন অ্যাক্ট’।
ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আর্জি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমবর্ধমান অত্যাচারের অভিযোগ তুলে আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বাংলাদেশে ইসলামি শক্তির উত্থানে তাঁদের অস্তিত্ব সংকট তৈরি হয়েছে। তাঁরা চাইছেন চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ‘কম্প্রিহেনসিভ মাইনরিটি প্রোটেকশন অ্যাক্ট’ চালু হোক। একইসঙ্গে তাঁরা বাংলাদেশকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান, যাতে দেশে ধর্মীয় ও জাতিগত হিংসা বন্ধ করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্র, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪: আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন বছরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দায়িত্ব গ্রহণের আগে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাঁর কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন। বাংলাদেশি হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের সংগঠন এই উদ্যোগ নিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, বাংলাদেশে ইসলামি শক্তির উত্থান তাঁদের অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ ও নিপীড়নের ঘটনা বেড়েছে।

২০২৪ সালের ৫ অগস্ট বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা আন্দোলনের ফলে সেদিনই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং ভারতে আশ্রয় নেন। এর পর বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়, যার নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেল বিজয়ী মহম্মদ ইউনুস। নতুন সরকারের শপথ নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় পরিস্থিতি অনেকটাই অস্থির হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জেলায় সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা সামনে এসেছে। একইসঙ্গে চট্টগ্রামের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করার পর উত্তেজনা চরমে ওঠে।

চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের বিচার চলাকালীন ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং এক আইনজীবী নিহত হন। চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা এই ঘটনার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে মেমোরেন্ডাম জমা দেন। তাঁদের দাবি, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।

উক্ত মেমোরেন্ডামে তাঁরা ‘কম্প্রিহেনসিভ মাইনরিটি প্রোটেকশন অ্যাক্ট’ চালু করার দাবি করেছেন। তাঁদের মতে, এই আইনের মাধ্যমে সংখ্যালঘু সংগঠন এবং ব্যক্তিদের সাংবিধানিক সুরক্ষা প্রদান করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে তাঁরা বাংলাদেশে ঘৃণ্য অপরাধ ও ঘৃণা ভাষণের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন। সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক নির্বাচকমণ্ডলী গঠনের প্রস্তাবও তাঁরা উত্থাপন করেছেন, যা তাঁদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় চর্চার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

এদিকে, শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে তাঁর প্রত্যর্পণ চেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বেড়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন মসজিদে আওয়ামি লিগের ফিরে আসার বার্তা প্রদর্শিত হচ্ছে, যা দেশে রাজনৈতিক বিভাজনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘুদের এই আবেদন বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার নতুন প্রশাসন যদি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমীকরণে পরিবর্তন আসতে পারে। আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতির উপর নতুন আলোকপাত করবে। তাঁদের আশা, ট্রাম্প প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বন্ধ হবে এবং একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হবে।

তারিখ: ৩০.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘকে AIUDF-এর চিঠি

অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের নেতা বদরুদ্দিন আজমল বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারকে চিঠি লিখেছেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় স্থানের সুরক্ষার দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘকে AIUDF-এর চিঠি

অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (AIUDF) প্রধান বদরুদ্দিন আজমল বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংখ্যালঘুদের জীবন, সম্পত্তি এবং ধর্মীয় স্থান রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। আজমল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দোষীদের কঠোর শাস্তির মাধ্যমে ভবিষ্যতের সহিংসতা প্রতিরোধের দাবি জানিয়েছেন।

গৌহাটি, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪: অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (AIUDF) প্রধান এবং তিনবারের সাংসদ মৌলানা বদরুদ্দিন আজমল রবিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারকে চিঠি লিখে বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের প্রতি চলমান সহিংসতা এবং নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংখ্যালঘুদের জীবন, সম্পত্তি এবং ধর্মীয় স্থান রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

চিঠিতে আজমল অভিযোগ করেন যে কিছু গোষ্ঠী হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের সরকার যথাযথ নিরাপত্তা দিতে পারছে না। তিনি লিখেছেন, “এই চলমান সংকট শুধু হিন্দু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ফেলছে না, বরং তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রেখে দিচ্ছে। শিশুদের বেড়ে ওঠা এমন একটি পরিবেশে হচ্ছে যেখানে তাদের প্রতিনিয়ত ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে হচ্ছে।”

আজমল আরও বলেন, “এই ধরনের কার্যকলাপ মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। তারা প্রতিনিয়ত হুমকির মধ্যে বসবাস করছে, যা একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”

AIUDF নেতার মতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত অবিলম্বে পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জীবন এবং তাদের ধর্মীয় স্থান সুরক্ষিত করা। তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারকে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে, যাতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং দোষীদের যথাযথ শাস্তি দেওয়া হয়।

আজমল আরও বলেন, “মানবাধিকারের সুরক্ষা সব দেশের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। এই অপরাধের দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হলে ভবিষ্যতে সহিংসতা রোধ করা সম্ভব হবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।”

এছাড়াও, চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংহতি এবং সমর্থন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আজমল আশা প্রকাশ করেন যে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের সরকারের সাথে কাজ করে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবে।

এই চিঠির মাধ্যমে বদরুদ্দিন আজমল দক্ষিণ এশিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চান। তিনি উল্লেখ করেন যে, এটি শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব রয়েছে যাতে প্রতিটি মানুষের অধিকার রক্ষিত হয়।

আজমলের চিঠি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন এবং মানবাধিকার কর্মীরা এই চিঠির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য আওয়াজ তুলেছেন।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আজমলের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত করবে।

আজমল চিঠির শেষে উল্লেখ করেছেন যে, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই চিঠির মাধ্যমে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পক্ষে দাঁড়াবে এবং তাদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”

তারিখ: ৩০.১২.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণের মুক্তি চেয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিবৃতি

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে। তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার করা হয়, যা পরিষদ মিথ্যা ও হয়রানিমূলক বলে দাবি করেছে। পরিষদ ১৯ জন আসামির বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণের মুক্তি চেয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিবৃতি

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আজ একটি বিবৃতিতে সনাতনী নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক, যা বিএনপি নেতা ফিরোজ খান দায়ের করেছিলেন। গত ২৫ নভেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং ২৬ নভেম্বর জামিন আবেদন খারিজ হয়। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জন আসামির অব্যাহতি দাবি করেছে পরিষদ।

ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ রবিবার একটি বিবৃতিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির জন্য জোরালো দাবি জানিয়েছে। পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক। পরিষদ দাবি করেছে যে, এই মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।

গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে বিএনপি নেতা ফিরোজ খান রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেন। তবে, পরবর্তীতে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও মামলা এখনও চলমান রয়েছে।

এরপর গত ২২ নভেম্বর রংপুরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে আরও একটি বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ২৫ নভেম্বর তাঁকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর জামিন আবেদন খারিজ করা হয়। আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয় এবং সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

ঐক্য পরিষদের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি সনাতনী সম্প্রদায়কে হয়রানি এবং দমন করার জন্য করা হয়েছে। পরিষদ সরকারের কাছে আবেদন করেছে, এই ধরনের হয়রানিমূলক মামলার অবসান ঘটিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এবং অন্যান্য ১৮ জনকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।

এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো আন্দোলনে নেমেছে। ইসকনসহ অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আরোগ্যের জন্য প্রার্থনার আয়োজন করছে। কলকাতা ইসকন মন্দিরে আগামী ১ জানুয়ারি বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির জন্য সমবেত প্রার্থনা করা হবে।

আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ, যিনি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন, সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং বর্তমানে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রবীন্দ্র ঘোষের অসুস্থতার কারণে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও কারাবাস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রদায়ের দাবি, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এর মাধ্যমে সনাতনী সম্প্রদায়কে দুর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে এবং সরকার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারাও মতামত দিয়েছেন।

ঐক্য পরিষদের বিবৃতি অনুযায়ী, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস একজন বিশিষ্ট ধর্মীয় নেতা এবং তাঁর গ্রেফতার ও কারাবাস সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর চাপ সৃষ্টির প্রচেষ্টা। পরিষদ এই ঘটনাকে সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকার ও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে মনে করছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের একাধিক সংগঠন একত্র হয়ে আন্দোলনে নেমেছে। তাঁরা বলছে, এই ধরনের মামলা ও হয়রানি বন্ধ করতে না পারলে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানির দিন ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর মুক্তি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক মহলে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

তারিখ: ৩০.১২.২০২৪

নড়াইলে হিন্দু নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগের ঘটনায় আটক ১

নড়াইলে সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী হিন্দু ইউপি সদস্যকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগে হত্যার অভিযোগে ফারুক মোল্যা নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ধর্ষণের পর বিষ প্রয়োগ করা হয়। ভুক্তভোগী হাসপাতালে মৃত্যুর আগে ছেলেকে নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
নড়াইলে হিন্দু নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগের ঘটনায় আটক ১

নড়াইল সদর উপজেলায় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের এক নারী হিন্দু ইউপি সদস্যকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও বিষপ্রয়োগে হত্যার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার টিসিবির পণ্য বিতরণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় যুবক রাজিবুল পাওনা টাকার অজুহাতে তাঁকে ডেকে নেন। এরপর কয়েকজন মিলে তাঁকে ধর্ষণ করে এবং বিষ খাইয়ে দেয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান। পুলিশ ইতিমধ্যে একজনকে আটক করেছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। নিহতের পরিবার দোষীদের ফাঁসি দাবি করেছেন।

নড়াইল, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪: নড়াইল সদর উপজেলায় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের এক নারী হিন্দু ইউপি সদস্যকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগে হত্যার ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে। আজ শনিবার ভোরে মাগুরার শালিখা উপজেলার হরিশপুর এলাকা থেকে অভিযুক্ত ফারুক মোল্যাকে আটক করা হয়। ফারুক মোল্যা (৫০) নড়াইল সদর উপজেলার দৌলতপুর এলাকার ওসমান মোল্যার ছেলে।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে। তিনি বলেন, ‘পরিবারের অভিযোগ আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ঘটনার পর থেকেই আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং একজনকে ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে।’

নিহত নারী ইউপি সদস্যের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে তিনি টিসিবির মালামাল বিতরণ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে স্থানীয় যুবক রাজিবুল পাওনা টাকা দেওয়ার অজুহাতে তাঁকে ফোন করেন। পরে তিনি টাকা নিয়ে ইউনিয়নের এক ব্যক্তির বাড়িতে গেলে রাজিবুলসহ আরও কয়েকজন মিলে তাঁকে ধর্ষণ করে এবং দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

বাড়িতে ফেরার পর তিনি ঘটনার ভয়ে কাউকে কিছু জানাননি। তবে শারীরিক অসুস্থতা বাড়লে পরদিন বুধবার সকালে তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ছেলের কাছে তাঁর ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা জানান এবং দোষীদের নাম উল্লেখ করেন।

বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর ছেলে বলেন, ‘মা মৃত্যুর আগে আমার হাতে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। মা যখন ঘটনার কথা বলছিলেন, তখনই তিনি আমার হাতের ওপর মারা যান। আমি মায়ের হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তি চাই, তাঁদের ফাঁসি চাই। আমার মায়ের ন্যায়বিচার ছাড়া আমার আর কিছু চাওয়ার নেই।’

যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বজলুর রশীদ জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণের পর তাঁকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে। তাঁর শরীরে ধর্ষণের ক্ষত ছিল এবং পেটে বিষের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ভিসেরা প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর আরও বিস্তারিত জানা যাবে।’

এ ঘটনায় নিহত নারীর পরিবার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করছি এবং দ্রুত ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা হবে।’

এদিকে, অভিযুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ জানায়, দ্রুত অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।

নড়াইলের এই ঘটনাটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নারীদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পরিবার ও স্থানীয়রা দোষীদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। তাঁরা দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

তারিখ: ২৯.১২.২০২৪

নড়াইলে হিন্দু ইউপি সদস্যকে ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগে হত্যা

নড়াইলে সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী হিন্দু ইউপি সদস্যকে ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগের অভিযোগে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি। যশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবার ধর্ষণ ও চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
নড়াইলে হিন্দু ইউপি সদস্যকে ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগে হত্যা

নড়াইল সদর উপজেলার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের এক নারী হিন্দু ইউপি সদস্যকে ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় রাজিবুলসহ কয়েকজন তাঁকে ধর্ষণ করে এবং চাঁদা দাবি করে। মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়, যার কারণে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। মৃত্যুর আগে তিনি ছেলেকে ঘটনার বর্ণনা দেন। ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার লাশ গ্রামে পৌঁছায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন।

নড়াইল, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪: নড়াইল সদর উপজেলার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের এক নারী হিন্দু ইউপি সদস্যকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শুক্রবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর মরদেহ নড়াইলের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই নারী (৫০) নড়াইল সদর উপজেলার একটি ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে টিসিবির মালামাল বিতরণ শেষে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। স্থানীয় যুবক রাজিবুল পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে তাঁকে ফোন করেন। এরপর টাকা নিতে গেলে রাজিবুলসহ কয়েকজন তাঁকে ধর্ষণ করে এবং দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, নারী ইউপি সদস্য ধর্ষণের পর বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলে তাঁর মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে তিনি কিছু বলেননি, তবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরদিন বুধবার সকালে অসুস্থতা বাড়লে তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তিনি ছেলের কাছে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন এবং অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করেন। কাঁদতে কাঁদতে নিহত ওই নারীর ছেলে বলেন, “মায়ের সঙ্গে হওয়া ঘটনার বর্ণনা দিতে দিতে আমার হাতের ওপর মা মারা যান। যারা এসব করেছে, আমি তাদের কঠিন শাস্তি চাই। আমার মায়ের বিচার চাই।”

যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) বজলুর রশীদ জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে ধর্ষণ করে বিষ খাওয়ানো হয়েছে। ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে এবং ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এদিকে, অভিযুক্ত রাজিবুল ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা আত্মগোপনে রয়েছে।

শুক্রবার রাতে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম জানান, পুলিশ ইতোমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করেছে এবং ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় জনগণ ঘটনার দ্রুত তদন্ত এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।

এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে। তবে, অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং বিচার না হলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রশাসনের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তারিখ: ২৯.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় নেতাদের উদ্বেগ

বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু ও মুসলিম ধর্মীয় নেতারা। তারা সরকারের কাছে তাত্ক্ষণিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে শান্তি এবং সহনশীলতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় নেতাদের উদ্বেগ

বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর চলমান সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় নেতারা। ‘হিন্দু সনাতনী সংঘঠন’ এবং ‘অল ইন্ডিয়া ইমামস অর্গানাইজেশন’ এর গুরুত্বপূর্ণ নেতারা একত্রিত হয়ে এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। অল ইন্ডিয়া ইমামস অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধী ফাইজেন মুনীর জাতিগত সহনশীলতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর জোর দিয়ে বলেছেন, ‘প্রতিটি সম্প্রদায়ের নিজের ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে’। হিন্দু সনাতনী সংঘঠনের এক নেতা শান্তির প্রতীক হিসেবে কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

কলকাতা, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪: পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় নেতারা সম্প্রতি বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর চলমান সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই উদ্বেগ প্রকাশের পেছনে পশ্চিমবঙ্গের ‘হিন্দু সনাতনী সংঘঠন’ এবং ‘অল ইন্ডিয়া ইমামস অর্গানাইজেশন’ এর নেতৃবৃন্দের এক যৌথ মিটিংয়ে আলোচনাটি উঠে এসেছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা নিয়মিতভাবে ঘটে চলেছে এবং তার প্রেক্ষিতে দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতারা একত্রিত হয়ে এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাদের দাবি, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত যাতে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা এবং সামাজিক শান্তি স্থাপন করা যায়।

ফাইজেন মুনীর, যিনি অল ইন্ডিয়া ইমামস অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধিত্ব করছেন, সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার। মানুষকে নিজেদের বিশ্বাস পালন করতে কোনও ভয় থাকা উচিত নয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর এই ধরনের হামলা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।” তিনি আরও বলেন যে, তাদের সংগঠন এই সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবে এবং এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানাবে।

বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। নির্দিষ্ট সময়ে ইসলামিক উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলির দ্বারা হিন্দুদের বাড়িঘরে আক্রমণ এবং হিন্দু মহিলাদের উপর নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে, বিশেষ করে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ঘটনায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এবং হিন্দুদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এর ফলে, সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি বাড়ছে।

হিন্দু সনাতনী সংঘঠনের একজন নেতা এই পরিস্থিতিতে শান্তির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধে সহনশীলতা ও শান্তির শিক্ষাই প্রধান। আমাদের কর্তৃপক্ষের উচিত এই সহিংসতা বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাতে এর ফলে আরও বড় সমস্যা সৃষ্টি না হয়।” তিনি আরও যোগ করেন, “এটি শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ইস্যু।”

এছাড়া, কলকাতার ইস্কন মন্দিরের উপ-প্রধান রাধারামণ দাস, যারা দীর্ঘদিন ধরে শান্তির পক্ষে কাজ করছেন, এই পরিস্থিতিতে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “আমরা প্রতিদিন বাংলাদেশে শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি। আমরা চাই না যে, এই সহিংসতা বাড়িয়ে আমাদের একে অপরের প্রতি বিশ্বাস ও সহানুভূতির সম্পর্ক ভেঙে পড়ুক।” তিনি আরও বলেন যে, সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি এবং সহাবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।

এছাড়া, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগও ব্যক্ত করা হয়েছে। দেশের মধ্যে চলমান অস্থিরতা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংকটজনক অবস্থায় পৌঁছেছে, যা সমাজের সব স্তরের মানুষের জন্য বিপদজনক হতে পারে। এতে, ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে বিশ্বাসের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি দেশের ভেতরে শত্রুতা ও বিভাজন বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ধরনের সমস্যা সমাধানে ধর্মীয় নেতাদের একত্রিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, জাতিগত বৈষম্য এবং সহিংসতা বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, এবং তা হতে হবে বাংলাদেশের সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে।

সামগ্রিকভাবে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় নেতাদের এই যৌথ উদ্যোগ একটি সাহসী পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। তারা তাদের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য একত্রিত হয়ে সহিংসতা, বৈষম্য এবং ধর্মীয় সংঘর্ষের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন। এর ফলে, তাদের আহ্বান সরকারের এবং আন্তর্জাতিক সমাজের কাছ থেকে দ্রুত প্রতিক্রিয়া পেতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তারিখ: ২৯.১২.২০২৪

'সভ্য সমাজে এসব চলে না', বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন রুখতে সর্বধর্ম সিদ্ধান্ত এপারে

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ভারতের ধর্মীয় প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে গিয়ে সরকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাবেন। তাদের উদ্দেশ্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
'সভ্য সমাজে এসব চলে না', বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন রুখতে সর্বধর্ম সিদ্ধান্ত এপারে

বাংলাদেশে একের পর এক হিন্দু নির্যাতনের ঘটনার বিরুদ্ধে ভারতীয় ধর্মীয় নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে, ভারতীয় ধর্মীয় প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়ে বাংলাদেশে সফরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা সেখানে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং কেন হিন্দুদের উপর বারবার নির্যাতন করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শোনা যাচ্ছে, তবে নির্যাতন থামছে না। ধর্মীয় নেতারা বলেন, সংখ্যালঘু নারীদের ধর্ষণ, জোর করে ধর্মান্তরিত করা এবং হত্যা সহ একাধিক অপরাধের ঘটনায় তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে শান্তি ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা চেয়ে আবেদন করবেন।

কলকাতা, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের একাধিক ঘটনা সামনে আসার পর, উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি অত্যাচারের অভিযোগটি এই মুহূর্তে শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ অন্যান্য জায়গায়ও তীব্র প্রতিবাদের সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে, ভারতীয় ধর্মীয় নেতারা একত্রিত হয়ে বাংলাদেশের দিকে নজর দিচ্ছেন। তারা সেখানে সরকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করতে এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট পদক্ষেপের দাবি জানাতে চান।

এছাড়া, বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও এই ঘটনার বিরুদ্ধে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অল ইন্ডিয়া ইমাম অর্গানাইজেশন সহ বেশ কিছু ধর্মীয় সংগঠন ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এই নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকারকে শান্তি বজায় রাখার এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। এর আগে, মহানির্বানী আখড়ার স্বামী পরমাত্মানন্দ মহারাজও এই ধরনের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন এবং বলেন, “নিরীহ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার এবং ধর্ষণের মতো অপরাধের ঘটনা আমাদের সভ্যতার পরিপন্থী।” তিনি আরও বলেন, “মৌলবাদী শক্তি মানুষের কল্যাণ করতে পারে না, বরং এই ধরনের সহিংসতা সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে।”

এই সমস্ত ধর্মীয় নেতারা এখন একত্রিত হয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা বাংলাদেশে গিয়ে সরাসরি সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন। তাদের উদ্দেশ্য হলো, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া এবং এই ধরনের নির্যাতন থামানো। তারা বলেন, “এতদিন ধরে যে নির্যাতন চলছে তা আর সহ্য করা যায় না।” এছাড়াও, তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছেন, “এটি একটি সভ্য দেশ, যেখানে মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”

এদিকে, স্বামী পরমাত্মানন্দ মহারাজ সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে আরও বলেন, “আমরা একের পর এক শুনছি, নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, তাদের ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে। এগুলো সহ্য করা যায় না। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের দাবী পৌঁছাতে চাই।” তিনি আরও বলেন, “এভাবে সভ্য দেশে একে একে হিন্দুদের হত্যা করা, নারীদের ওপর নির্যাতন করা—এটা মোটেই কাম্য নয়।”

এছাড়া, অল ইন্ডিয়া ইমাম অর্গানাইজেশনও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমরা ধর্মগত ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু এই ধরনের অত্যাচার মেনে নেওয়া যায় না।” তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, “আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানাই, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন এবং সেখানে শান্তি বজায় রাখুন। এই ধরনের সহিংসতা বন্ধ করুন।”

প্রসঙ্গত, ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বারবার এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠে এসেছে। তবুও, একের পর এক নতুন ঘটনা সামনে আসছে। এর মধ্যে, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু প্রতিনিধিরাও এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম, কলকাতার ইসকন মন্দিরের উপ-সভাপতি রাধারামন দাস বলেছেন, “আমরা নিয়মিত এই পরিস্থিতির সমাধানে প্রার্থনা করছি এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করার চেষ্টা করছি।” এমনকি, তিনি সরকারের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছেন যে, সরকার দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিক, যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।

ভারতের ধর্মীয় নেতারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তারা ঘোষণা করেছেন যে, তারা বাংলাদেশে যাবেন এবং সেখানে গিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তারা আরও বলেছেন, “আমরা বাংলাদেশে গিয়ে সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলব কেন হিন্দুদের বিরুদ্ধে বারবার নির্যাতন হচ্ছে, কেন সংখ্যালঘুদের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না।”

এমনকি, একাধিক ভারতীয় নেতার মতে, “বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর এমন অত্যাচারের ঘটনা অনেকদিন ধরে ঘটছে এবং সরকার তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এই ধরনের সহিংসতা থামানো খুবই জরুরি।” ধর্মীয় নেতা এবং সংগঠনগুলো এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানিয়েছেন যে, তাদের প্রতিবাদ বন্ধ হবে না, যতদিন না নির্যাতন বন্ধ হবে এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।

তারিখ: ২৯.১২.২০২৪

বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ, মুখ বন্ধ করতে বিষ খাইয়ে খুন হিন্দু মহিলাকে

নড়াইলে এক হিন্দু নারী ইউপি সদস্যকে গণধর্ষণের পর বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। যশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যু হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন চলতে থাকায় সব ধর্মের ধর্মগুরুরা বাংলাদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ, মুখ বন্ধ করতে বিষ খাইয়ে খুন হিন্দু মহিলাকে

নড়াইলে এক হিন্দু নারীকে গণধর্ষণের পর বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার তাঁকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় এবং মুখ বন্ধ করতে বিষ খাইয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার যশোর হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। এর আগে নাটোর ও খাগড়াছড়িতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ধর্মীয় নেতারা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বাংলাদেশে পরিদর্শনে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। নড়াইলের ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ বিষয়টি স্বীকার করেছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)

নড়াইল, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ধারাবাহিক নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে চলেছে। সর্বশেষ ঘটনায় বাংলাদেশের নড়াইলে এক হিন্দু নারীকে গণধর্ষণের পর বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ সামনে এসেছে। নিহত ওই নারী মাইজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে ওই নারীকে স্থানীয় যুবকরা টিসিবির মালামাল বিতরণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ডেকে নেয়। তাঁকে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। ঘটনার পর ধর্ষকদের নাম প্রকাশের হুমকি দিলে তাঁর মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

এই ঘটনার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। “ভয়েস অফ বাংলাদেশি হিন্দুজ” নামে একটি সংগঠন দাবি করেছে, জামাতের নেতারা এই ঘটনায় জড়িত। ইসকনের কলকাতা শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস এই পোস্টটি শেয়ার করে নিন্দা জানিয়েছেন।

একই সময়ে নাটোর ও খাগড়াছড়িতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও হত্যার ঘটনা ঘটে। নাটোরে কাশিমপুর শ্মশানকালী মন্দিরের সেবায়েতকে হত্যা করা হয় এবং খাগড়াছড়িতে ইসকনের ঘনিষ্ঠ এক ভক্তের মাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেস সচিব সফিকুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী। তারা দ্রুত বাংলাদেশে গিয়ে পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ধর্মীয় নেতারা মনে করছেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে হলে এ ধরনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার জরুরি।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তবে, অভিযুক্তরা এখনো পলাতক রয়েছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা জানিয়েছেন, তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। তারা মনে করেন, দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীরা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন বন্ধ করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। তারা আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সরকারের প্রতি সুরক্ষা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের জীবন আজ হুমকির মুখে। আমরা নিরাপত্তা চাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করেছে। তারা বলছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।

নড়াইলের এই ঘটনা বাংলাদেশসহ পুরো উপমহাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মানুষ আশা করছে, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা নিরাপদে বসবাস করতে পারবেন।

তারিখ: ২৯.১২.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিশানায়, শঙ্কা

চলতি মাসের শেষ থেকে আগামী বছরের শুরু পর্যন্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার পরিকল্পনা করেছে জঙ্গি সংগঠনগুলি। গোয়েন্দা রিপোর্টে ২৫টি নির্দিষ্ট এলাকায় হামলার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ রয়েছে, যেখানে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্য রয়েছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিশানায়, শঙ্কা

বাংলাদেশে চলতি মাসের শেষ থেকে আগামী বছরের শুরু পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার পরিকল্পনা করেছে জঙ্গি সংগঠনগুলি, এমন তথ্য দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৫টি নির্দিষ্ট এলাকাকে হামলার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আক্রমণ হতে পারে। হামলার পরিকল্পনাকারী সংগঠনগুলির মধ্যে রয়েছে জেএমবি এবং হিযবুত তাহরীর। পাকিস্তান থেকে আনা অস্ত্র বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে মজুত করা হয়েছে। গোয়েন্দা রিপোর্টে এসব হামলা প্রতিহত করতে প্রশাসনের জন্য পরামর্শও দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

ঢাকা, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪: চলতি মাসের শেষ থেকে আগামী বছরের শুরু পর্যন্ত বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর কিছু জঙ্গি সংগঠন আক্রমণের পরিকল্পনা করেছে, এমন তথ্য পাওয়া গেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে। গোয়েন্দা রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে, দেশের ২৫টি নির্দিষ্ট এলাকাকে হামলার লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই হামলার উদ্দেশ্য মূলত আতঙ্ক সৃষ্টি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভেঙে দেওয়া। হামলার সম্ভাব্য স্থানগুলি এবং সেখানে কতটা ঝুঁকি রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত মূল্যায়নও করা হয়েছে।

গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, এসব হামলার পেছনে থাকা প্রধান সংগঠনগুলি হল জামাতুল মুজাহিদিন (জেএমবি), হিযবুত তাহরীর এবং অন্যান্য উগ্রপন্থী সংগঠন। পাকিস্তান থেকে আনা অস্ত্র দেশের বিশেষ কিছু জায়গায় মজুত করা হয়েছে। এসব অস্ত্র বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে এবং সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে জমা রাখা হয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, খুলনা জেলার কোয়রা উপজেলা, চট্টগ্রামের বাঁশখালি, চট্টগ্রাম সদর, খাগড়াছড়ি পার্বত্য অঞ্চলের দীঘিনালা, লালমণিরহাট জেলার রামগড়, গুলমারা, হাতিবান্ধা, কালীগঞ্জ, যশোরের মণিরামপুর এবং কুমিল্লা ডিভিশনের সোনাগাজি, দাগানভুঁইয়া, দেবীদ্বার, চৌদ্দগ্রাম, চান্দিনাসহ বেশ কিছু এলাকায় হামলার পরিকল্পনা রয়েছে।

গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব অঞ্চলে হামলার পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট স্থানগুলিতে সজাগ থাকতে হবে। বিশেষভাবে যশোর জেলার মণিরামপুর, যা ইতিমধ্যেই সাম্প্রদায়িক অশান্তির জন্য পরিচিত, সেখানে হামলার জন্য উর্বর স্থান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সুনামগঞ্জের জামাইগঞ্জে হামলা হলে সেখানে প্রতিবাদ হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে, তবে, অন্যান্য এলাকাগুলিতে হামলা করা হলে কোনও বড় বাধা আসবে না।

জঙ্গি সংগঠনগুলির মধ্যে জামাতুল মুজাহিদিন (জেএমবি) এবং হিযবুত তাহরীর মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করে তাদের ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। পাকিস্তান এবং মায়ানমারের আরাকান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনের সমর্থনে এগুলি সংগঠিত হচ্ছে। স্থানীয় জঙ্গি সংগঠনগুলির অস্ত্র সরবরাহ এবং প্রশিক্ষণের কাজ বাংলাদেশ থেকে বাইরে থেকে করা হচ্ছে।

গোয়েন্দা রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যে অস্ত্রগুলো পাকিস্তান থেকে আনা হয়েছে, তা বাংলাদেশে কয়েকটি স্থানে মজুত করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এলাকা হল লালমণিরহাটের হাতিবান্ধা, কালীগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর এবং চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের দীঘিনালা ও মহাছড়ি। এসব অঞ্চলের কাছে মায়ানমার সীমান্ত থাকায় অস্ত্র আমদানির সুবিধা রয়েছে এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এখানেই।

এ ধরনের হামলা প্রতিহত করার জন্য গোয়েন্দা রিপোর্টে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, দেশের ভিতরে এবং বাইরের রাষ্ট্রের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্যের সমন্বয় বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে, যাতে জঙ্গিদের অস্ত্র এবং অন্যান্য সরবরাহের লাইনটিকে কেটে দেওয়া যায়। দ্বিতীয়ত, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশেষত দুর্গাপুজোর মতো স্পর্শকাতর সময়ে একত্রে অনেক লোকের সমাবেশ না করার বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রশাসন, পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় বাড়ানোর উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। রিপোর্টের শেষে বলা হয়েছে, সকল সম্প্রদায়ের নেতাদের মধ্যে সমন্বয় এবং একযোগে কাজ করলে এই ধরনের পূর্বপরিকল্পিত হামলা ঠেকানো সম্ভব হবে।

গোয়েন্দা রিপোর্টে আরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে অর্থনৈতিক পুঁজি তৈরি করতে হবে এবং এ বিষয়ে সকলের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। এছাড়া, বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে যাতে তারা আত্মবিশ্বাসী এবং নিরাপদ বোধ করতে পারে।

এই ধরনের জঙ্গি হামলা এবং তাদের পরিকল্পনা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য বড় ধরনের বিপদ হতে পারে, তবে সরকারের সঠিক পদক্ষেপ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সক্রিয় মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এগুলি প্রতিহত করা সম্ভব হবে।

তারিখ: ২৯.১২.২০২৪

[আষাঢ়ে গল্প] মেঘনায় সারবাহী জাহাজে সাত খুন

[আষাঢ়ে গল্প] চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে সারবাহী জাহাজে সাতজনকে হত্যার ঘটনায় লস্কর আকাশ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। বেতন ও ছুটি না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে জাহাজের মাস্টারকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার পর বাকিদের হত্যা করেন আকাশ। তদন্তে র‍্যাব নিশ্চিত হয়েছে তিনিই একমাত্র খুনি।
[আষাঢ়ে গল্প] মেঘনায় সারবাহী জাহাজে সাত খুন

[আষাঢ়ে গল্প] চাঁদপুরের মেঘনায় সারবাহী জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় লস্কর আকাশ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। নিয়মিত বেতন ও ছুটি না পাওয়ায় ক্ষোভ থেকে তিনি প্রথমে মাস্টারকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেন। পরে ধরা পড়ার ভয়ে বাকি ছয়জনকেও হত্যা করেন। ঘটনার পর পালিয়ে গিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। নিহত ব্যক্তিদের ফোন নিজের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ায় প্রযুক্তির মাধ্যমে র‍্যাব তাঁর অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ হত্যার দায় স্বীকার করেন। তাঁর কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গ্লাভস, ফোন ও রক্তমাখা পোশাক উদ্ধার করা হয়।

চাঁদপুর, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪: চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীর ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করা সারবাহী এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাতজনকে হত্যার ঘটনায় ওই জাহাজের লস্কর আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। মঙ্গলবার রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‍্যাব-১১ ও র‍্যাব-৬-এর যৌথ অভিযানে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রেপ্তার আকাশ মণ্ডল বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর গ্রামের জগদীশ মণ্ডলের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর পালানোর সময় নিহত ব্যক্তিদের পাঁচটি মুঠোফোন নিজের ব্যাগে নিয়ে যান আকাশ। এর মধ্যে জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার ও গুরুতর আহত সুকানি জুয়েলের ফোনও ছিল। ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে র‍্যাব তাঁর অবস্থান শনাক্ত করে এবং চিতলমারীতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিকভাবে আকাশ পুরো ঘটনা অস্বীকার করলেও পরে নিহতদের মুঠোফোন তাঁর ব্যাগ থেকে উদ্ধার করার পর তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন। আকাশ মণ্ডল জানান, নিয়মিত বেতন–ভাতা ও ছুটি না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রথমে মাস্টারকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেন। এরপর অন্য কর্মচারীরা জীবিত থাকলে ঘটনা প্রকাশ পেয়ে যাবে বলে বাকি সবাইকে হত্যা করেন তিনি।

র‍্যাবের ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আকাশকে অন্তত ১২ বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং প্রতিবারই তিনি একই তথ্য দিয়েছেন। আকাশ জানান, তিনি বরিশালের একটি দোকান থেকে ঘুমের ওষুধ কিনেছিলেন এবং বাজার করার কথা বলে ট্রলারে করে পালিয়েছিলেন। র‍্যাব তাঁর দেওয়া প্রতিটি তথ্য যাচাই করে সত্যতা নিশ্চিত করে।

ঘটনার রাতে আকাশ জাহাজের সব কর্মচারীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী একে একে ছয়জনকে হত্যা করেন। কিন্তু একজন আহত অবস্থায় বেঁচে যান, যা পরে তদন্তের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তারের সময় আকাশের কাছ থেকে একটি গ্লাভস, একটি ব্যাগ, ঘুমের ওষুধের খালি পাতা, নিহত ব্যক্তিদের ব্যবহৃত পাঁচটি ফোন, আকাশের ব্যবহৃত দুটিসহ মোট সাতটি মুঠোফোন এবং বিভিন্ন জায়গায় রক্তমাখা নীল রঙের একটি জিনস প্যান্ট উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব-১১-এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন কুমিল্লা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত সোমবার এমভি আল-বাখেরা জাহাজ থেকে পাঁচজনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। গুরুতর আহত তিনজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর নিহতদের স্বজনরা শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন। জাহাজের মালিক মাহবুব মোর্শেদ বাদী হয়ে চাঁদপুরের হাইমচর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে প্রযুক্তির মাধ্যমে আকাশের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আকাশ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন এবং হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

র‍্যাবের কর্মকর্তারা জানান, আকাশ মণ্ডল হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও তিনি নিজের পরিচয় গোপন রাখতেন। জাহাজের অন্যান্য কর্মচারীরা তাঁকে ইরফান নামে চিনতেন। নিজের পরিচয় লুকিয়ে তিনি এই হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করেন।

মেজর সাকিব হোসেন বলেন, “আমরাও অবাক হয়েছি যে আকাশ একাই সাতজনকে হত্যা করেছেন। এমন ঘটনা খুবই বিরল। তবে তিনি যা বলেছেন, তার সবকিছুই আমরা যাচাই করে সত্যতা পেয়েছি। তদন্ত চলমান রয়েছে এবং বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন শিগগিরই জমা দেওয়া হবে।”

তারিখ: ২৯.১২.২০২৪

ঢাকায় লঞ্চে বিষপ্রয়োগে হিন্দু মা-মেয়ের মৃত্যু, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ঢাকার সদরঘাটে বিষক্রিয়ায় মা-মেয়ের মৃত্যু হয়। পুলিশ বিধান দাশকে গ্রেপ্তার করে, যিনি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেন। নিহত মাধুরী বিশ্বাসের স্বামী পিংকু মজুমদার হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তদন্তে উঠে আসে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের তথ্য।
ঢাকায় লঞ্চে বিষপ্রয়োগে হিন্দু মা-মেয়ের মৃত্যু, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ঢাকার সদরঘাটে বিষক্রিয়ায় মা-মেয়ের মৃত্যু হয়। মাধুরী বিশ্বাস ও তাঁর মেয়ে শ্রেষ্ঠা ৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সদরঘাটে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর মাধুরীর মৃত্যু হয়। পুলিশ তদন্তে বিধান দাশের সন্ধান পায়, যিনি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেন। জানা যায়, মাধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে বিধানের, যা পরে বিয়ের চাপের মুখে তাকে ক্ষিপ্ত করে তোলে। ৪ ডিসেম্বর লঞ্চে বিষপ্রয়োগের মাধ্যমে মা-মেয়েকে হত্যা করেন বিধান। মাধুরীর স্বামী পিংকু মজুমদার হত্যার কঠোর শাস্তি দাবি করেন।

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪: ঢাকার সদরঘাটে ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক ঘটনার পর তদন্তে উঠে এসেছে বিষক্রিয়ার মাধ্যমে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য। ৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের ৪ নম্বর গেটের সামনে অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন ৩৪ বছর বয়সী মাধুরী বিশ্বাস এবং তাঁর ছয় বছর বয়সী মেয়ে শ্রেষ্ঠা। স্থানীয় এক ব্যক্তি তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেই রাতেই মাধুরীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। মেয়েটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ ডিসেম্বর মারা যায়।

পুলিশের তদন্তে উঠে আসে যে, পটুয়াখালীর বিধান দাশের সঙ্গে মাধুরীর পরিচয় হয়েছিল মুঠোফোনে। সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর তাঁরা বরিশালে দেখা করেন এবং পরে ঢাকায় আসেন। ৪ ডিসেম্বর লঞ্চে ওঠার আগে বিধান বরিশাল থেকে কীটনাশক কিনে নিয়ে আসেন। রাতের মধ্যেই লঞ্চে মাধুরী ও শ্রেষ্ঠার মুখে বিষ ঢেলে দেন এবং তাঁদের অচেতন অবস্থায় সদরঘাটে রেখে পালিয়ে যান। পুলিশ বিধানকে গ্রেপ্তার করে এবং তিনি ১৬৪ ধারায় আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেন।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার জানান, পুলিশ প্রথমে মাধুরীর পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। পরে তাঁর আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। মাধুরীর স্বামী পিংকু মজুমদার জানান, স্ত্রী ও মেয়ে ২৮ নভেম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়ে চিকিৎসার জন্য খুলনায় গিয়েছিলেন। তাঁরা রাতে বাড়ি ফেরার কথা ছিল, কিন্তু ফেরেননি। পরে স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি ঢাকায় ছুটে আসেন এবং স্ত্রীর মরদেহ গ্রহণ করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসমান গনি জানান, বিধান দাশ এবং মাধুরী বিশ্বাসের মধ্যে সম্পর্কের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। বিধান জানান, মাধুরী তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন এবং এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি পরিকল্পনা করেন তাঁদের হত্যার। ৪ ডিসেম্বর লঞ্চে উঠার আগে বরিশালের একটি দোকান থেকে কীটনাশক কেনেন বিধান। লঞ্চে মধ্যরাতে মাধুরী ও শ্রেষ্ঠার মুখে বিষ ঢেলে দেন এবং সদরঘাটে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান।

তারিখ: ২৯.১২.২০২৪

জামায়াতে ইসলামী - আমরা মেজরিটি মাইনোরিটি মানি না

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা মেজরিটি-মাইনোরিটি মানি না, সকল নাগরিক সমমর্যাদাবান। শান্তিপূর্ণ মানবিক বাংলাদেশ গড়তে আমরা একসাথে কাজ করবো।’ তিনি দলটির ইতিহাসের নির্যাতন এবং আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেছেন রংপুরে পথসভায়।
জামায়াতে ইসলামী - আমরা মেজরিটি মাইনোরিটি মানি না

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমির শফিকুর রহমান রংপুরের পাগলাপীর বাজারে এক পথসভায় বলেন, জামায়াতে ইসলামী জনগণের সমমর্যাদা নিশ্চিত করতে চায় এবং কোনও সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন করতে চায় না। তিনি আরও বলেন, জামায়াত শান্তিপূর্ণ, মানবিক বাংলাদেশ গঠনে কাজ করবে, যেখানে সকলের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। এছাড়া, তিনি জামায়াতের ওপর অতীত সরকারের নির্যাতনের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগকে তীব্র সমালোচনা করেন। শফিকুর রহমান দাবি করেন যে, ১৩ বছর জামায়াতে ইসলামীকে দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখা হয়েছিল এবং দলের নিবন্ধন পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের শাসনকে তিনি দেশের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

রংপুর, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান রংপুরের পাগলাপীর বাজারে অনুষ্ঠিত এক পথসভায় বক্তৃতা দেন। এ সময় তিনি বলেন, “আমরা মেজরিটি-মাইনোরিটি মানি না।” তার মতে, বাংলাদেশের সকল নাগরিকের মধ্যে সমমর্যাদা থাকা উচিত এবং দেশের জন্য সবাই এক হয়ে কাজ করা জরুরি। তিনি মন্তব্য করেন, “ছোট্ট একটা দেশ, এত ভাগ কিসের আবার? জাতীয় স্বার্থে আমরা সবাই এক। কারণ, দেশ বাঁচলে আমিও বাঁচব, সবাই বাঁচবে। অশান্তি হলে সবাইকে তা ভোগ করতে হবে।” তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি দেশের সব সম্প্রদায়কে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান এবং শান্তিপূর্ণ, মানবিক বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে দায়িত্ব পেলে তা মালিক হিসেবে নয়, পাহারাদার হিসেবে পালন করবে। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, তার নেতাকর্মীরা জনগণের দিকে তাকাবেন, নিজেদের দিকে নয়। তিনি জানিয়ে দেন, যদি তার কর্মীরা কারও ব্যক্তিগত সম্পদে নজর দেয়, তবে তিনি কঠোর ব্যবস্থা নেবেন। এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি দলের কর্মীদের সতর্ক করেন যে, দলের রাজনৈতিক কাজকর্মে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার বজায় রাখতে হবে।

তিনি পূর্ববর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, জামায়াতে ইসলামীকে অত্যন্ত নির্যাতন করা হয়েছে। শফিকুর রহমান বলেন, “বিগত ১৩ বছর সারা দেশে আমাদের অফিস সিলগালা ছিল। আমাদের দলকে নির্বাচন কমিশন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল এবং প্রতীক ও নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, এই সময়কালে, “দেশে দখলদারি-চাঁদাবাজি হয়েছে। এখনো হচ্ছে। শুধু ফ্ল্যাগ বদল হয়েছে; ডান হাত থেকে বাম হাতে গেছে।” এর মাধ্যমে তিনি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি এবং তার দলের প্রতি অত্যাচারের কথা তুলে ধরেন।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে “বাংলাদেশকে শোষণ করেছে” এবং বিচার বিভাগসহ সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। শফিকুর রহমান মন্তব্য করেন, “দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সেনাবাহিনীকে শেষ করে দিল, বিডিআর ধ্বংস করে দিল।” তার মতে, এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং তাকে ক্ষমা করার অধিকার আওয়ামী লীগকে কেউ দিতে পারে না।

পথসভায় উপস্থিত জামায়াতের অন্যান্য নেতারা, যেমন রংপুর সদর উপজেলার আমির মো. মাজহারুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবুল হাসনাত মো. আব্দুল হালিম এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, শফিকুর রহমানের সঙ্গে একমত পোষণ করে বক্তব্য রাখেন। তারা শফিকুর রহমানের শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান সমর্থন করেন এবং দেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান একসঙ্গে কাজ করার মধ্যেই দেখতে পান।

এদিকে, জামায়াতে ইসলামী কর্তৃপক্ষ বারবার এই দাবি করেছে যে, তাদের দলের নেতাকর্মীরা জনগণের সেবায় নিবেদিত। তারা শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে দলের সদস্যদের আরও উন্নত ও স্বচ্ছ আচরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, যাতে জনগণের বিশ্বাস অর্জন করা যায় এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দেশের কল্যাণে কাজ করা যায়। জামায়াতের নেতারা দাবি করেছেন, একমাত্র শান্তি এবং ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

শফিকুর রহমানের বক্তব্যটি জামায়াতের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে, যেখানে দলের রাজনৈতিক অবস্থান, উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তার কথায়, দেশের সকল জনগণকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যা শুধু ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে নয়, বরং সকল নাগরিকের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান।

তারিখ: ২৪.১২.২০২৪

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি: সন্ত্রস্ত ও ব্যথিত

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আর কত সইতে হবে’ প্রবন্ধে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বাড়বাড়ন্ত এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্ধকার দিকগুলি তুলে ধরা হয়েছে, যা জাতীয়ভাবে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি: সন্ত্রস্ত ও ব্যথিত

বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবন্ধ ‘আর কত সইতে হবে’ বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর চলমান অত্যাচারের পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে শুরু করে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে মৌলবাদী শক্তির উত্থান এবং তার ফলে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের কথা উল্লেখ করেছেন। বিশেষত, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে নৃশংসতা চলছে, তা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে, যদি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর প্রতিকার না করা হয়। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪: বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবন্ধ ‘আর কত সইতে হবে’ একটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং উদ্বেগজনক আলোচনা। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বেড়েই চলেছে। প্রবন্ধের মধ্যে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোকপাত করেছেন, যেখানে মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এই গোষ্ঠীগুলি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। তিনি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের উপর পাকিস্তানিদের দ্বারা চালানো অত্যাচারের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন। সেখানে ৩০ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি এবং লক্ষ লক্ষ মানুষকে দেশছাড়া করা হয়েছিল।

বন্দ্যোপাধ্যায় আরও উল্লেখ করেন, ১৯৭২ সালে নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে সম্মানিত করার পরেও, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি অবিচারের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর চালানো আক্রমণগুলির কথা উল্লেখ করেছেন, যা সম্প্রতি আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতি বিশেষ করে ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর আরও খারাপ হয়ে উঠেছে, যখন বাংলাদেশের মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলি তাদের আগ্রাসী কৌশলগুলি বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনাগুলি অতীতের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে, হিন্দুদের উপর আক্রমণ, মন্দিরের ভাঙচুর, এবং ধর্মীয় স্থানগুলির প্রতি অবমাননা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবন্ধে বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন যে, এই ধরনের ঘটনার পেছনে মৌলবাদী শক্তির ষড়যন্ত্র রয়েছে, যারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চাইছে। এর সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে দেশটির রাজনৈতিক সংকট, যেখানে রাজনৈতিক ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলি ধর্মকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে।

তিনি আরও মন্তব্য করেছেন যে, যদি এই পরিস্থিতির প্রতিকার না করা হয়, তাহলে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে। জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা’ এবং নজরুল ইসলামের কবিতার প্রতি বিদ্বেষ এবং এগুলির বিরুদ্ধে কট্টরপন্থী কার্যক্রম বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা গেছে। এই বিষয়গুলি জাতীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতি অবমাননা, যা দেশের জনগণের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে।

বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা এবং অত্যাচারের পেছনে রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় লক্ষ্যগুলির অবস্থানও উল্লেখযোগ্য। মুসলিম মৌলবাদীরা মনে করছেন, বাংলাদেশ যদি একটি ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়, তবে দেশটি ধর্মীয় আদর্শ অনুযায়ী পরিচালিত হবে এবং এর ফলে আরব দেশগুলির সাহায্যও আসবে। তবে, বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, এই মতবাদটি ভুল এবং বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, পাকিস্তান ইসলামী দেশ হওয়া সত্ত্বেও, আরব দেশগুলি থেকে উপযুক্ত মূল্য ছাড়া তেল প্রাপ্তি অসম্ভব।

এছাড়া, প্রবন্ধে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপরও সমালোচনা করা হয়েছে। তিনি মনে করেন যে, মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি এখন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সঠিকভাবে বুঝতে পারছেন না এবং তার ভুল ধারণার কারণে দেশের ভবিষ্যত অন্ধকারে পড়তে পারে। তিনি পরামর্শ দেন যে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বন্ধ করার জন্য সরকারকে তৎপর হতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রবন্ধের মাধ্যমে একটি দৃঢ় বার্তা দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে প্রতিবাদ হতে হবে এবং এই সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক শক্তির সম্মিলিত ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “যে দেশের জনগণ নিজেদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষা করতে পারবে না, সেই দেশ কখনোই সুস্থ হতে পারে না।”

এই প্রবন্ধে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি, প্রবন্ধকার এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও আহ্বান করেছেন। তিনি মনে করেন, যদি এই অত্যাচার বন্ধ না হয়, তবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থান আরও অবনতির দিকে যাবে এবং জাতীয় ঐক্য ও শান্তির সম্ভাবনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তারিখ: ২৪.১২.২০২৪

জ্যাক সুলিভান এবং ইউনুসের আলোচনায় মানবাধিকার ও সহায়তার প্রতিশ্রুতি

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে কথা বলেন। তারা মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সহযোগিতার কথা জানান।
জ্যাক সুলিভান এবং ইউনুসের আলোচনায় মানবাধিকার ও সহায়তার প্রতিশ্রুতি

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সোমবার বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে কথা বলেছেন। উভয়ে মানবাধিকার রক্ষার এবং সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সুলিভান ইউনুসকে বাংলাদেশের কঠিন সময়ের নেতৃত্বের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং জাতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি একটি উন্নত, স্থিতিশীল এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন পুনঃব্যক্ত করেন। ৮৪ বছর বয়সী ইউনুস গত ৮ আগস্ট বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন, যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং ভারতে পালিয়ে যান।

যুক্তরাষ্ট্র, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪: যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সোমবার বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। এই আলোচনায় উভয়ে মানবাধিকার রক্ষা এবং সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে একমত হন।

সুলিভান আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা এবং গণতন্ত্রের জন্য তার সমর্থন অব্যাহত রাখবে। “যুক্তরাষ্ট্র একটি উন্নত, স্থিতিশীল এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চায়,” সুলিভান বলেছেন। তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য সুদৃঢ় ভবিষ্যৎ গড়তে সাহায্য করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন। সুলিভান জানান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক এবং আর্থিক চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

এদিকে, বাংলাদেশের ৮৪ বছর বয়সী প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস ৮ আগস্ট শপথ নিয়েছেন। এর পরের দিন, ৫ আগস্ট, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং ভারতে পালিয়ে যান, এই সময় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো অস্থির হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের জনগণ ওই সময় বিক্ষোভ ও আন্দোলনে যোগ দেয়, যা হাসিনার সরকারের পতনের দিকে নিয়ে যায়।

বাংলাদেশে সরকার পতনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষত হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বেড়ে যায়। মন্দিরগুলোতে আক্রমণ এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নানা ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এই সহিংসতা আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ১৩ ডিসেম্বর হোয়াইট হাউস জানায়, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক যোগাযোগ উপদেষ্টা জন কিরবি বলেছেন, “বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে, যা দেশের নিরাপত্তা এবং সামাজিক শান্তির জন্য বড় হুমকি সৃষ্টি করছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে জনগণের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার জন্য বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য ব্যবস্থা নেবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, এই সময় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কেবল দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপরও এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এই সংকটের সমাধান না হলে, বাংলাদেশকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটের মোকাবিলা করতে হবে, যা ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতি এবং গণতন্ত্রের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সুলিভানের মন্তব্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথ নির্দেশ করতে সহায়তা করতে পারে, তবে সঠিক পদক্ষেপ এবং স্থিতিশীল নির্বাচনের আয়োজন খুবই জরুরি।

এছাড়া, ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে এবং জনগণের সমর্থন অর্জন করতে সক্ষম হয়, তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হতে পারে। তবে, বর্তমানে বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটছে, তা দেশটির দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুলিভান এবং ইউনুসের মধ্যে হওয়া এই আলোচনাটি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে।

তারিখ: ২৪.১২.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু আক্রমণের বিরুদ্ধে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভীণা সিক্রী

ভীণা সিক্রী, বাংলাদেশে ভারতের প্রাক্তন হাইকমিশনার, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ বাড়ানোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য তিনি একটি চিঠি লিখেছেন এবং বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন দাবি করেছেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু আক্রমণের বিরুদ্ধে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভীণা সিক্রী

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রাক্তন হাইকমিশনার ভীণা সিক্রী। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য একটি চিঠি লিখেছেন, যেখানে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আলোচনা। সিক্রী এই আক্রমণগুলিকে ‘জাতিগত নির্মূল’ এবং ‘বিপজ্জনক’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বাংলাদেশের জনগণের বর্তমান প্রশাসনের প্রতি অসন্তোষের কথা তুলে ধরে দ্রুত ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান। এছাড়া, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা সম্পর্কে সতর্ক করে দেন তিনি, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।

ঢাকা, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভীণা সিক্রী, বাংলাদেশের জন্য ভারতের প্রাক্তন হাইকমিশনার, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান আক্রমণ ও নির্যাতন সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে এবং এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিবাদও উঠেছে। বিশেষত, ট্রাম্পের নির্বাচনী বক্তব্য ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আলোচনা উল্লেখযোগ্যভাবে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে ‘জাতিগত নির্মূল’ এবং ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

একটি সাক্ষাৎকারে, সিক্রী বলেছিলেন, “বিশ্বব্যাপী সম্প্রদায়ের সদস্যরা, বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশের প্রবাসীরা, এ বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।” তিনি আরও জানান যে, একাধিক আন্তর্জাতিক রিপোর্ট এবং সংস্থা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ এবং অত্যাচারের বিষয়টি তুলে ধরেছে। তার মতে, এটি আর একটি চুপচাপ থাকতে পারে না এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

সিক্রী আরও দাবি করেছেন যে, এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজন করা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনকে এই বিষয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য তাড়াহুড়ো করা উচিত, যেহেতু দেশটির নাগরিকদের মধ্যে বর্তমান সরকার সম্পর্কে অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, “বাংলাদেশে যদি অতি শীঘ্রই কার্যকর নির্বাচন না হয়, তবে দেশটি রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে পারে।”

তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও সতর্কতা প্রকাশ করেছেন। তার মতে, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবের কারণে অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। “যদি এই সংকট চলতে থাকে, তবে বাংলাদেশে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, যা দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে,” সিক্রী যোগ করেন।

এছাড়া, সিক্রী মন্তব্য করেছেন যে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ বাড়ানোর কারণে দেশটির আন্তর্জাতিক ইমেজও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আরও আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সামাজিক আন্দোলনকারী এবং সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকেও এই পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তৃত প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশে যারা বসবাস করেন, তারা তাদের দেশীয় সরকারের কাছে এই আক্রমণের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

এখন, ভীণা সিক্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এবং বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে জীবনযাপন করছে এবং সময় এসেছে, তাদের জন্য একটি স্থিতিশীল এবং গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার।

তিনি আরও বলেছেন, “যদি বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার ব্যবহার করতে না পারে, তবে তাদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।” সিক্রী মনে করেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাছাড়া, নির্বাচন উপলক্ষে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী কমিশনের প্রয়োজনীয়তা এবং সেই নির্বাচনের ফলাফল যাতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, সে বিষয়ে তিনি জোর দিয়েছেন।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি, দেশের মানুষের জন্য রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকারও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। সিক্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “এই সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান না হলে, সেখানকার জনগণ আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে পারে।”

সিক্রী এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করেছেন যখন বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারও বাড়ছে। তাদের প্রতিদিনের জীবন এবং নিরাপত্তা হুমকির মুখে। এই পরিস্থিতি শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিষয়েও পরিণত হয়েছে।

এভাবে, ভীণা সিক্রী একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি একটি গুরুতর আহ্বান।

তারিখ: ২৪.১২.২০২৪

আইনজীবী হত্যার তদন্ত কমিটি থেকে পাঁচ সদস্যেরই পদত্যাগ

চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার তদন্ত কমিটি থেকে সবাই সরে দাঁড়িয়েছেন। কমিটির সদস্যরা নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পদত্যাগ করেছেন। আদালত চত্বরে সংঘর্ষে সাইফুল নিহত হন। মামলায় ১১ জন গ্রেফতার হয়েছেন। তদন্তে বিচারকের নেতৃত্ব দাবি করেছেন আইনজীবীরা।
আইনজীবী হত্যার তদন্ত কমিটি থেকে পাঁচ সদস্যেরই পদত্যাগ

চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে পাঁচ সদস্যের সবাই সরে দাঁড়িয়েছেন। কমিটির প্রধান আবদুস সাত্তারসহ সদস্যরা নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার আশঙ্কায় পদত্যাগ করেছেন। সাইফুল হত্যার ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়েছে এবং ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইনজীবীরা মনে করেন, বিচারকের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুরের পর আদালত চত্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং সংঘর্ষের সময় সাইফুল নিহত হন। এ ঘটনায় আরও ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি থেকে সকল সদস্য সরে দাঁড়িয়েছেন। কমিটির সদস্যদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আদালত চত্বরে সংঘর্ষ এবং আইনজীবী হত্যার বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং এই ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। আইনজীবীরা এই তদন্ত পরিচালনা করলে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মনে করেন তারা।

গত শনিবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। কমিটির প্রধান আইনজীবী মহম্মদ আবদুস সাত্তার বলেন, “আদালত চত্বরে সংঘর্ষ, ভাঙচুর এবং আইনজীবী সাইফুল হত্যার ঘটনা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। পুলিশ, প্রশাসন এবং আদালতের কর্মকর্তাদের এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে ছয়টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে। আইনজীবীরা যদি এই ঘটনার তদন্ত করেন, তবে নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।”

আবদুস সাত্তার আরও বলেন, “আমরা মনে করি, আইনজীবী হত্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তদন্ত বিচারকের নেতৃত্বে হওয়া উচিত। তাই আমরা সবাই পদত্যাগ করেছি।”

সাইফুল হত্যার তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির প্রধান ছিলেন আবদুস সাত্তার। গত বুধবার তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন এবং তার দুদিন আগেই কমিটির বাকি চারজন সদস্য পদত্যাগ করেন।

উল্লেখ্য, চিন্ময়কৃষ্ণ দাস নামে এক ব্যক্তির জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সে সময় আইনজীবী সাইফুল পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার শিকার হন। চিন্ময়কৃষ্ণ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন এবং গত ২৬ নভেম্বর তার জামিন আবেদন খারিজ হয়। জামিন খারিজের পর আদালত চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং এই সংঘর্ষের মধ্যেই সাইফুল নিহত হন।

সাইফুল চিন্ময়কৃষ্ণ দাস বা সরকারের কোনো পক্ষের আইনজীবী ছিলেন না। তিনি আইনজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।

সাইফুল হত্যার ঘটনায় তার বাবা ও ভাই দুটি মামলা করেছেন। পুলিশ তিনটি মামলা দায়ের করেছে এবং আরও একটি মামলা অন্য পক্ষ থেকে হয়েছে। মোট ছয়টি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি আদালত চত্বরে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় আরও ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আইনজীবী সাইফুল হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রামের আইনজীবী মহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছেন, আদালত চত্বরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং আইনজীবী হত্যার ঘটনায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদনের পরবর্তী শুনানি আগামী ২ জানুয়ারি নির্ধারিত রয়েছে। আইনজীবীরা এই শুনানির দিকে বিশেষ নজর রাখছেন।

চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষ এবং আইনজীবী হত্যার এই ঘটনা বাংলাদেশের বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর প্রশ্ন তুলেছে। আইনজীবীরা মনে করেন, আদালত চত্বরে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বিচার প্রক্রিয়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির নেতারা দাবি করেছেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। তারা আরও বলেন, এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে সে বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক হতে হবে।

সাইফুল হত্যার ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। আইনজীবী মহলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন ও বিচার বিভাগ এই ঘটনার দ্রুত তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

তারিখ: ২৩.১২.২০২৪

ছোট্ট একটা দেশ, এত ভাগ কিসের আবার: শফিকুর রহমান

জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশ বাঁচলে সবাই বাঁচবে। তিনি সংখ্যালঘু নির্যাতনের অপপ্রচার বলে দাবি করেন এবং শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি সকল সম্প্রদায়কে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
ছোট্ট একটা দেশ, এত ভাগ কিসের আবার: শফিকুর রহমান

জামায়াত আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশে কোনো অশান্তি হলে সবাইকে তার প্রভাব ভোগ করতে হবে। তিনি জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার। তিনি সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। সিলেটে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, জামায়াত ইসলামী অতীতে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে এবং আগামীতে শান্তিপূর্ণ মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়। সভায় বিভিন্ন ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার বার্তা দেন।

ঢাকা, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪: জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে কেউ নিরাপদ নয় যদি দেশে অশান্তি বিরাজ করে। তিনি বলেন, “আমরা সাফ বলেছি, আমরা মেজরিটি-মাইনোরিটি মানি না। এ দেশের যারা নাগরিক, তারা সবাই সমমর্যাদাবান গর্বিত নাগরিক।” তিনি আরও বলেন, “ছোট্ট একটা দেশ, এত ভাগ কিসের? জাতীয় স্বার্থে আমরা সবাই এক। কারণ, দেশ বাঁচলে আমিও বাঁচব, সবাই বাঁচবে। অশান্তি হলে সবাইকে তা ভোগ করতে হবে।”

গতকাল শনিবার রাতে সিলেট নগরের জিন্দাবাজার এলাকার একটি অভিজাত রেস্তোরাঁর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে এই সভার আয়োজন করে সিলেট মহানগর জামায়াত। সভায় বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, “বিগত সরকারের আমলে জামায়াত ইসলামী সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে। ১৩ বছর ধরে সারা দেশে আমাদের অফিস সিলগালা ছিল, আমাদের দলের প্রতীক ও নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমন চাপ আর কোনো দল পায়নি।”

তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্টের আগে দেশে দখলদারি ও চাঁদাবাজি হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। শুধু ফ্ল্যাগ বদল হয়েছে; ডান হাত থেকে বাম হাতে গেছে।”

শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা সব সম্প্রদায়ের মানুষকে নিয়ে জাতীয় স্বার্থে কাজ করব এবং শান্তির বাংলাদেশ গড়ব। আমরা দায়িত্ব পেলে মালিক হিসেবে নয়, পাহারাদার হিসেবে কাজ করব। আমাদের নেতা-কর্মীদের সম্পদ নির্বাচনের আগে যেমন ছিল, নির্বাচনের পরও তেমনই থাকবে। জনগণের স্বার্থের দিকে তাকিয়ে কাজ করতে হবে। কর্মীদের স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, কারও সম্পদের দিকে নজর দেওয়া যাবে না। যদি এর ব্যতিক্রম ঘটে, আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা অধিকাংশ ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার বলে মন্তব্য করেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, “বিগত সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সম্প্রদায়গুলোকে পক্ষ-বিপক্ষে উপস্থাপন করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। আমরা বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চাই।”

তিনি আরও বলেন, “কিছু ঘটনা রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে, তবে আমরা তাও সমর্থন করি না। আইন মেনে সবাইকে চলতে হবে।”

সভায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। মহানগর সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর সঞ্চালনায় এই সভায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিলেট রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী চন্দ্রনাথানন্দজি মহারাজ, সিলেট বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ সংঘ্যানন্দ মহাথের, সিলেট প্রেসবিটারিয়ান মিশনমণ্ডলীর সভাপতি ডিকন নিঝুম সাংমা, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ সিলেট জেলার সভাপতি গোপীকা শ্যাম পুরকায়স্থ, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মৃত্যুঞ্জয় ধর, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মলয় পুরকায়স্থ, জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রজত কান্তি ভট্টাচার্য এবং মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রদীপ দেব।

সভায় উপস্থিত নেতারা ধর্মীয় সম্প্রীতি ও জাতীয় ঐক্যের ওপর জোর দেন এবং বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রোধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

তারিখ: ২৩.১২.২০২৪

'এমনটা নয় যে বাংলাদেশের সব হিন্দুকে ভারতে নিয়ে আসতে হবে…', মত তথাগত রায়ের

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বিজেপি নেতা তথাগত রায় মন্তব্য করেছেন, নির্যাতিত হিন্দুদের ভারতে আনা উচিত নয় বরং বাংলাদেশকে চাপে রাখা প্রয়োজন। তিনি কূটনৈতিক সম্পর্ক ডাউনগ্রেড, বাণিজ্য বন্ধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রফতানি নিষিদ্ধের পরামর্শ দিয়েছেন।
'এমনটা নয় যে বাংলাদেশের সব হিন্দুকে ভারতে নিয়ে আসতে হবে…', মত তথাগত রায়ের

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা তথাগত রায় মন্তব্য করেছেন, নির্যাতিত হিন্দুদের ভারতে আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। তিনি মনে করেন, ভারতকে এমন চাপ সৃষ্টি করতে হবে যাতে বাংলাদেশ নির্যাতন বন্ধে বাধ্য হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টে তিনি জানান, ভারত ইজরায়েল নয় যে সব হিন্দুর দায়িত্ব নিতে পারবে। তিনি কূটনৈতিক সম্পর্ক ডাউনগ্রেড, আকাশ ও সমুদ্রসীমা বন্ধ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রফতানি নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

কলকাতা, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের বিষয়ে ভারতের বিজেপি নেতারা সাম্প্রতিক সময়ে সরব হয়েছেন। বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১ কোটি শরণার্থী ভারতে প্রবেশ করতে পারে। সীমান্তে বিএসএফ কড়া নজরদারি চালাচ্ছে এবং বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা হিন্দুদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।

মেঘালয় ও ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। তবে তিনি বলেছেন, পৃথিবীর সব নির্যাতিত হিন্দুদের ভারতে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। গতকাল এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তথাগত রায় লিখেছেন, “পৃথিবীতে হিন্দুর উপর অত্যাচার শুধু পাকিস্তান বা বাংলাদেশেই হয়, তার মানে এই নয় যে সমস্ত হিন্দুকে ভারতে নিয়ে আসতে হবে।”

তিনি বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদন শেয়ার করেছেন যেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন বিষয়ে ভারত কিভাবে চাপে রাখতে পারে সে বিষয়ে তিনি মতামত দিয়েছেন। দিল্লির স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কট্যাঙ্ক মনোহর পারিকর আইডিএসএ-র সিনিয়র ফেলো স্মৃতি এস পট্টনায়কের বক্তব্যও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্মৃতি পট্টনায়ক বলেছেন, “ভারত ইজরায়েল নয়। তারা যেমন সব ইহুদির দায়িত্ব নিয়েছে, ভারত তেমন সব হিন্দুর দায়িত্ব নিতে পারে না।” এই মন্তব্যের জবাবে তথাগত রায় লেখেন, “তাহলে যেখানে হিন্দুর উপর অত্যাচার হচ্ছে ভারতের কর্তব্য কি সেটাকে চুপ করে দেখা?”

তথাগত রায় আরও বলেন, “পৃথিবীর বহু দেশে হিন্দুরা শান্তিতে বসবাস করছে, কিন্তু পাকিস্তান ও বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। ভারতকে সেখানেই সক্রিয় হতে হবে। তবে তার মানে এই নয় যে সমস্ত হিন্দুকে ভারতে আনতে হবে। বরং এমন চাপ সৃষ্টি করতে হবে যাতে তারা নির্যাতন বন্ধ করতে বাধ্য হয়। আজকের ভারত সেই শক্তি রাখে।”

তিনি আরও বলেছেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক ডাউনগ্রেড করা যেতে পারে। বাংলাদেশের জন্য ভারতের আকাশসীমা বন্ধ করা যেতে পারে। বাংলাদেশগামী জাহাজের জন্য ভারতের সমুদ্রসীমাও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। বাংলাদেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় তৈরি পোশাক শিল্প থেকে, সেই খাতে কাঁচামাল রফতানি বন্ধ করা যেতে পারে। এছাড়া আলু, পেঁয়াজ, চাল, ডিমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের রফতানিও বন্ধ করা হতে পারে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের নদীগুলোর জল আটকে দেওয়ার বিষয়েও ভাবা যেতে পারে, যা বাংলাদেশকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলবে এবং হিন্দু নির্যাতন বন্ধ করতে বাধ্য করবে।”

তথাগত রায়ের এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ তার বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন, আবার কেউ কেউ বলেছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

বাংলাদেশ সরকার এখনও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে এই ধরনের মন্তব্য নিয়ে আলোচনা চলছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারত যদি এই ধরনের পদক্ষেপ নেয় তাহলে তা কেবল কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটাবে না, বরং অর্থনৈতিক সম্পর্কেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। ভারতের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, যা দুই দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তথাগত রায়ের এই মন্তব্য ভারত ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ককে নতুন এক মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

তারিখ: ২৩.১২.২০২৪

ঢাকা মানছে না দিল্লির সংখ্যালঘু নির্যাতন-তথ্য

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের সংখ্যা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২২০০টি ঘটনা উল্লেখ করলেও বাংলাদেশ তা বিভ্রান্তিকর বলছে। এই প্রেক্ষাপটে নাটোর, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহে সংখ্যালঘুদের ধর্মস্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মানছে না দিল্লির সংখ্যালঘু নির্যাতন-তথ্য

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের পরিসংখ্যান নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ দাবি করেছেন, ২০২৩ সালে নভেম্বর পর্যন্ত ২২০০টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ সরকারের দাবি, এই সংখ্যা বিভ্রান্তিকর এবং প্রকৃত সংখ্যা ১৩৮টি। একই সময় নাটোর, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহে সংখ্যালঘু উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। নাটোরে সেবায়েত তরুণকুমার দাসকে হত্যা ও লুটপাট করা হয়। অন্যান্য হামলায় ধর্মস্থানে ভাঙচুর চালানো হয়।

ঢাকা, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের সংখ্যা নিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ সম্প্রতি সংসদে বলেছেন, ২০২৩ সালে নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ২২০০টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

এই পরিসংখ্যান নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়েছে। ইউনূস সরকারের প্রেসসচিব শফিকুল আলম শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের যে সংখ্যা প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। এর সঙ্গে সত্যের মিল নেই।”

শফিকুল আলম দাবি করেছেন, সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৩৮টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। আরও বলা হয়েছে, এই ১৩৮টি ঘটনার মধ্যে ৯৭টি ঘটেছে অগস্টের ৪ থেকে ৮ তারিখের মধ্যে, যখন ইউনূস সরকার ক্ষমতায় ছিল না।

এদিকে, গত ৪৮ ঘণ্টায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের চারটি উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ময়মনসিংহ, দিনাজপুর এবং নাটোরে এসব হামলা হয়।

নাটোরে শুক্রবার রাতে ধর্মস্থানে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। উপাসনালয়ের গ্রিল ভেঙে ঢুকে সেবায়েত তরুণকুমার দাস (৫৫)-কে পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলে এবং লুটপাট চালায়। কয়েক লক্ষ টাকার সামগ্রী এবং অর্থ লুট করে তারা। যাওয়ার সময় সেবায়েতকে হত্যা করা হয়।

শনিবার সকালে স্থানীয়রা উপাসনালয়ে গিয়ে ভোগের ঘর থেকে তাঁর হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু হয়েছে, তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলায় শুক্রবার রাতে একদল মৌলবাদী সংখ্যালঘুদের উপাসনালয়ে হামলা চালায়। তারা ইসকন-বিরোধী স্লোগান দেয় এবং উপাসনালয়ে ভাঙচুর চালায়। আতঙ্কিত সংখ্যালঘুরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।

এছাড়া বৃহস্পতি ও শুক্রবার ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাটায় মৌলবাদীরা একটি ধর্মস্থানে হামলা চালায়।

বিলজোরা এলাকার পলাশকান্দায়ও একটি ধর্মস্থানে হামলা করে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে গ্রেফতার করেছে।

সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকারের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছে জামায়াতে ইসলামীর প্রধান শফিকুর রহমান। মৌলভীবাজারে এক কর্মীসভায় তিনি বলেন, “আপনারা নিজেদের চেহারা এক বার আয়নায় দেখুন— ভারতের সংখ্যালঘুদের প্রতি কী আচরণ করা হয়, সেটাও দেখা উচিত।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভারত বরাবর বাংলাদেশের সমাজকে বিভক্ত করে এসেছে। শফিকুর রহমান বলেন, “স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি-বিপক্ষের শক্তি, সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু— ভারত নানা ভাবে বাংলাদেশকে বিভক্ত করেছে। তাদের উদ্দেশ্য টুকরো টুকরো জাতিকে গোলাম বানানো সহজ করা।”

বাংলাদেশের সরকার এই ধরনের হামলার ঘটনাগুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও এখনো স্পষ্ট কোনো পদক্ষেপের কথা জানানো হয়নি। পুলিশ ও প্রশাসন বলছে, ঘটনাগুলোর তদন্ত চলছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করতে সময় লাগবে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তারা দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় অনেকেই আতঙ্কিত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের সংখ্যা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সরকারের মতবিরোধ কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে। এ ধরনের ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

তারিখ: ২৩.১২.২০২৪

মৌলভীবাজারের সীমান্তে হিন্দু দিনমজুরের লাশ উদ্ধার, রহস্যময় মৃত্যু

মৌলভীবাজারের পাথারিয়া পাহাড়ের সীমান্তে নিখোঁজের একদিন পর হিন্দু দিনমজুর গোপাল ভাগতির লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেলেও মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত নয়। স্থানীয় চা-শ্রমিকরা লাশ দেখতে পায়। পুলিশ ও বিজিবি তদন্ত করছে।
মৌলভীবাজারের সীমান্তে হিন্দু দিনমজুরের লাশ উদ্ধার, রহস্যময় মৃত্যু

মৌলভীবাজারের বড়লেখার পাথারিয়া পাহাড়ের সীমান্ত থেকে নিখোঁজ হিন্দু দিনমজুর গোপাল ভাগতির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গোপাল শনিবার বাঁশ কাটতে গিয়ে আর ফেরেননি। রোববার সকালে সীমান্তের কাছে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় চা-শ্রমিকরা পরিবারকে খবর দেয়। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকলেও মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। বিজিবি জানায়, কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি হলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

মৌলভীবাজার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পাথারিয়া পাহাড়ের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে এক হিন্দু দিনমজুরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গোপাল ভাগতি (৩৫) নামে ওই দিনমজুর শনিবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। রোববার দুপুরে স্থানীয় চা-শ্রমিকদের মাধ্যমে তাঁর লাশের খোঁজ মেলে। গোপাল ভাগতি স্থানীয় সমনভাগ চা-বাগানের বাসিন্দা এবং অখিল ভাগতির ছেলে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, তবে কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোপাল শনিবার সকালে সীমান্ত সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় বাঁশ কাটতে যান। সেদিন রাতে তিনি বাড়ি না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু কোথাও তাঁর সন্ধান মেলেনি।

রোববার সকালে স্থানীয় কিছু চা-শ্রমিক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৩৯১ ও ১৩৯২ নম্বর সীমান্তখুঁটির মধ্যে শূন্য রেখার ২০০ গজ অভ্যন্তরে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁরা বিষয়টি গোপালের পরিবারকে জানালে, পরিবার গিয়ে লাশটি শনাক্ত করে।

খবর পেয়ে বিজিবি এবং বড়লেখা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের আওতায় থাকা ওই সীমান্ত এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, গোপালের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে সেটি কী ধরনের আঘাত, তা এখনও পরিষ্কার নয়। পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি হলে বিস্তারিত জানা যাবে।

তিনি আরও জানান, সীমান্তে টহলরত বিজিবির দল কোনো ধরনের গোলাগুলির শব্দ শোনেনি। তাই ঘটনাটি রহস্যজনক। এ ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত চলছে।

গোপালের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গোপাল প্রতিদিনই বাঁশ কাটার জন্য পাহাড়ি এলাকায় যেতেন। তবে তিনি কখনো এত গভীরে সীমান্তের কাছে যাননি বলে দাবি করেন তাঁরা।

পুলিশ জানিয়েছে, লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা মনে করছেন, এটি কোনো দুর্ঘটনা না হলে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডও হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি পুলিশ বা বিজিবি।

গোপাল ভাগতির লাশ উদ্ধারের ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন। বিজিবি ইতিমধ্যে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে এবং স্থানীয়দের নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।

এ ঘটনায় বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানিয়েছেন, সীমান্তের এই অংশে মাঝে মাঝে চোরাচালানের ঘটনা ঘটে। তবে গোপালের মৃত্যু এর সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা তা তদন্তের পর জানা যাবে।

পরিবারের সদস্যরা গোপালের অকাল মৃত্যুতে শোকাহত এবং দ্রুত তদন্ত শেষ করে প্রকৃত কারণ উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন।

তারিখ: ২৩.১২.২০২৪

বাংলাদেশি জঙ্গি মডিউল ধরা পড়ল, লক্ষ্য ছিল হিন্দু ও RSS নেতা।

অসম ও পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন আনসার-উল-বাংলার আট সদস্য ধরা পড়েছে। তাদের লক্ষ্য ছিল ভারতে জঙ্গি স্লিপার সেল তৈরি করা ও হিন্দু-আরএসএস নেতাদের টার্গেট করা। নথি ও আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ হয়েছে।
বাংলাদেশি জঙ্গি মডিউল ধরা পড়ল, লক্ষ্য ছিল হিন্দু ও RSS নেতা।

অসম পুলিশের অভিযানে আট বাংলাদেশি জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে, যারা আনসার-উল-বাংলা টিমের সদস্য। ধৃতরা পশ্চিমবঙ্গ ও কেরলে স্লিপার সেল গড়ে তোলার কাজ করছিল। লক্ষ্য ছিল হিন্দু ও আরএসএস নেতাদের টার্গেট করা। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও ধর্মীয় উগ্রবাদী নথি উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, বাংলাদেশ থেকে সরাসরি পাঠানো হয়েছিল তাদের। মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত দুইজনের মধ্যে একজন পাম্প মেকানিক। ধৃতরা পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সন্ত্রাসী নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত।

মুর্শিদাবাদ, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ থেকে আসা জঙ্গি সংগঠন আনসার-উল-বাংলা টিম (ATB)-এর আট সদস্যকে আটক করেছে অসম পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে দুইজন পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে ঘাঁটি গেড়েছিল। কেরল থেকেও এই সংগঠনের বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি বলছে, এই জঙ্গি গোষ্ঠী ভারতে স্লিপার সেল তৈরি করছিল, এবং তাদের মূল লক্ষ্য ছিল হিন্দু ও RSS নেতাদের হত্যা করা।

অসম পুলিশের স্পেশাল ডিজিপি হরমীত সিং জানান, আটক হওয়া ব্যক্তিরা সরাসরি বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর পরিকল্পনা করছিল। ধৃত শাদ রদি বাংলাদেশি নাগরিক এবং গত নভেম্বরে তাকে ভারতে পাঠানো হয়েছিল। মুর্শিদাবাদ থেকে আটক হওয়া অন্য দুইজন, মিনারুল ও আব্বাস, দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে ছিল। ৪৮ বছর বয়সী মিনারুল পেশায় একজন পাম্প মেকানিক ছিলেন।

তদন্তে উঠে এসেছে, ধৃতরা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শীর্ষ জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। গোপন এবং সন্দেহজনক অ্যাপের মাধ্যমে তাদের মধ্যে বার্তা বিনিময় হতো। পুলিশের হাতে বেশ কিছু বিকৃত ধর্মীয় বই, বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথি এসে পৌঁছেছে। এগুলি থেকে স্পষ্ট যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতবর্ষে স্লিপার সেল তৈরি করার পরিকল্পনা করছিল।

অসম পুলিশের তৎপরতায় তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, এই স্লিপার সেলগুলি যুব সমাজকে ব্রেনওয়াশ করে তাদের জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত করার চেষ্টা করছিল। বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র সংগ্রহ এবং হামলার পরিকল্পনাও ছিল। তবে অসম পুলিশের অভিযানে এই চক্রান্ত বানচাল হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ধৃতদের কাছ থেকে যে সমস্ত তথ্য উদ্ধার হয়েছে, তার ভিত্তিতে আরও তদন্ত চলছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে যে, ফারাহ ইশাক নামের একজন বাংলাদেশ থেকে সরাসরি অপারেশনটি পরিচালনা করছিল। তার সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনের প্রধানের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।

এই ঘটনার পর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সীমান্ত এলাকায় সতর্কতা জারি করেছে এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের চলাফেরার উপর কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমে পুলিশ প্রশাসন সীমান্তবর্তী গ্রামে বাড়তি নজরদারি চালাচ্ছে। মুর্শিদাবাদসহ একাধিক জেলায় অভিযান চালানো হচ্ছে।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ধৃতরা বিভিন্ন জায়গায় যুবকদের ধর্মীয় উগ্রবাদে উসকানি দিত এবং তাদের মগজ ধোলাই করে জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত করত। মূলত হিন্দু ও RSS নেতারা তাদের টার্গেট ছিল। ভারতীয় গোয়েন্দারা মনে করছেন, এটি বৃহত্তর জঙ্গি চক্রের অংশ এবং ভবিষ্যতে এমন আরও ঘটনা ঘটতে পারে। ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযানের সময় যে নথি উদ্ধার হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং দুই দেশের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদানও চলছে।

এই ঘটনায় দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি আরও বেশি সতর্ক হয়ে কাজ করছে। সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং জনসাধারণকেও সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে প্রশাসনকে অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তারিখ: ২২.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য ভারতের আসলে কতদূর কী করার আছে?

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন বন্ধে ভারত বারবার কূটনৈতিকভাবে চাপ দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ শীর্ষ পর্যায় থেকে সরাসরি বার্তা পৌঁছানো হচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দল বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য ভারতের আসলে কতদূর কী করার আছে?

গত চার মাসে বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের নির্যাতন বন্ধে ভারত জোরালোভাবে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র পর্যন্ত একাধিকবার এই ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের সাথে যোগাযোগ করেছেন। ভারতীয় সংসদে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। ভারতের বিভিন্ন সংগঠন সীমান্তে বিক্ষোভ দেখিয়েছে এবং বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ডাউনগ্রেডের পরামর্শ দিচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সমস্যার সমাধান কেবলমাত্র কূটনৈতিক পথেই সম্ভব। (সূত্রঃ বিবিসি)

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪: গত সাড়ে চার মাসে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধে ভারত একাধিকবার কূটনৈতিকভাবে উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকায় শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ভারতের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের নতুন সরকারের সাথে এই বিষয়টি তুলেছেন। নরেন্দ্র মোদী একাধিকবার সরাসরি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে টেলিফোনে ও সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগ করেছেন। এছাড়া ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র সচিবরা নিউ ইয়র্ক ও ঢাকায় বৈঠকে এই প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। এমনকি ভারতীয় সংসদেও বাংলাদেশে হিন্দুদের দুর্দশা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের বিষয়টি ভারতের সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং সংবাদপত্র এই বিষয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। তবে বাংলাদেশ সরকার এ ধরনের অভিযোগকে অতিরঞ্জিত বা ভুয়া বলে নাকচ করেছে। যদিও ভারতের অভ্যন্তরে এই সংবাদ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ছাড়াও গুজরাট, রাজস্থান এবং তামিলনাড়ুর মতো দূরবর্তী রাজ্যগুলোতেও বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে।

ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দল বিজেপি এবং বিরোধী দল কংগ্রেস, উভয়েই এই ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে সমানভাবে সরব হয়েছে। সম্প্রতি পার্লামেন্টে বিরলভাবে এই দুই দল একসাথে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কণ্ঠ তুলেছে। সেপ্টেম্বরের শেষে যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ভারত সফরে আসে, তখন বিভিন্ন সংগঠন দাবি জানায় যে, হিন্দু নির্যাতন চলতে থাকলে ভারতের উচিত বাংলাদেশ দলের সাথে সিরিজ বয়কট করা। এমন পদক্ষেপ আগে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে দেখা গেলেও, বাংলাদেশ নিয়ে এই ধরনের হুঁশিয়ারি ছিল প্রথম।

বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা হিন্দুদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়ার দাবি উঠেছে ভারতের বিভিন্ন সংগঠন থেকে। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও এই দাবির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং সীমান্ত অবরোধের কর্মসূচি পালন করেছেন। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, নেপালের সংবিধান ইস্যুতে ভারতের অর্থনৈতিক অবরোধের মতো বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। তবে অন্যরা মনে করেন, বাংলাদেশ নেপালের মতো স্থলবেষ্টিত নয়, তারা সমুদ্রপথে সরবরাহ চালিয়ে যেতে পারবে।

ভারতের সাবেক কূটনীতিবিদ রীভা গাঙ্গুলি দাশ মনে করেন, এই সংকটের সমাধান কেবল কূটনৈতিক পথেই সম্ভব। তিনি বলেন, ২০০১ সালে শেখ হাসিনা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, যা বর্তমান পরিস্থিতির চেয়ে অনেক বেশি গুরুতর ছিল। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রজেশ মিশ্রকে ঢাকায় পাঠান এবং বাংলাদেশের সরকারকে কড়া বার্তা দেন। এর ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। তিনি বলেন, আজকের পরিস্থিতিতে ভারতের পক্ষে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী লক্ষ লক্ষ হিন্দুকে গ্রহণ করা সম্ভব নয়। তাই বাংলাদেশের মাটিতেই তাদের সুরক্ষিত রাখতে হবে।

রাজনীতিবিদ তথাগত রায়ের মতে, ভারতের কাছে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন উপায় খোলা আছে। তিনি কূটনৈতিক সম্পর্ক ডাউনগ্রেড, বিমান চলাচল সীমিত করা, বাংলাদেশি গার্মেন্ট খাতের কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধ এবং নদীর পানি আটকে দেওয়ার মতো পদক্ষেপের পরামর্শ দেন। তবে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া বিবেচনায় রাখতে হবে।

অধ্যাপক বলদাস ঘোষাল মনে করেন, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা এবং এর সমাধান দ্রুত সম্ভব নয়। ভারত যদি সরাসরি কঠোর পদক্ষেপ নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। তাই আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। ভারতের উচিত পশ্চিমা বিশ্ব এবং জাপানের মতো দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।

সবশেষে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারতকে ধৈর্য ধরে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা ভারতের নিজস্ব স্বার্থের বিষয় এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই।

তারিখ: ২২.১২.২০২৪

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী তরুণ নিহত

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে অন্তর সরকার নামে এক তরুণ নিহত হন। গাড়ির চাপায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করেছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী তরুণ নিহত

আজ সকালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার চুনতি এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় অন্তর সরকার (২৬) নামে এক তরুণ নিহত হন। তিনি ঢাকা জেলার বাসিন্দা। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গেলে পেছন থেকে আসা দুটি গাড়ি তাঁকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। চুনতি অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন এবং দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশের এসআই ওমর ফারুক জানান, লাশ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী অন্তর সরকার (২৬) নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকাল আটটার দিকে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় চুনতি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত অন্তর সরকার ঢাকার বাসিন্দা ছিলেন এবং কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন।

চুনতি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন জানান, দুই তরুণ একটি মোটরসাইকেলে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। পথে, পেছনে বসে থাকা তরুণ চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। পেছন থেকে দুটি গাড়ি তাঁকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুক বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছি এবং থানায় নিয়ে এসেছি। দুর্ঘটনার বিস্তারিত তথ্য এখনো জানা যায়নি। তবে পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।”

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহাসড়কটি ব্যস্ত থাকায় প্রায়ই এমন দুর্ঘটনা ঘটে। দ্রুতগতিতে চলমান যানবাহনের কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয় না। চুনতি এলাকার এই অংশে মহাসড়কের আশপাশে বন্যপ্রাণীর চলাচল এবং পথচারীদের উপস্থিতি দেখা যায়, যা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

মহাসড়কটি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের অন্যতম প্রধান সংযোগ পথ হওয়ায় এটি সবসময় যানবাহনের চাপ থাকে। বিশেষত ছুটির দিনে পর্যটকদের ভিড় বেড়ে যায়। এই কারণে মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুতগতিতে চলা যানবাহনের ওপর নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মহাসড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।

নিহত অন্তর সরকারের পরিবার তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, অন্তর সরকারের বয়স ২৬ বছর ছিল এবং তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।

এ দুর্ঘটনার পর মহাসড়কের ওই এলাকায় যান চলাচল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে পুলিশের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

তারিখ: ২২.১২.২০২৪

বাংলাদেশে ৪৮ ঘণ্টায় তিনটি মন্দিরে ভাঙচুর, এক গ্রেপ্তার

বাংলাদেশে গত ৪৮ ঘণ্টায় তিনটি মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে। ময়মনসিংহ ও দিনাজপুরে ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় হিন্দুদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ময়মনসিংহে আলাউদ্দিন নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভারত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
বাংলাদেশে ৪৮ ঘণ্টায় তিনটি মন্দিরে ভাঙচুর, এক গ্রেপ্তার

বাংলাদেশের ময়মনসিংহ ও দিনাজপুর জেলায় তিনটি মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দুটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে মূর্তি ভেঙেছে দুষ্কৃতীরা। দিনাজপুরে কালী মন্দিরে পাঁচটি মূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারীরা ইসকন বিরোধী স্লোগান দেয়। পুলিশ ময়মনসিংহের ঘটনায় আলাউদ্দিন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভারত সরকার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠোর বার্তা পাঠিয়েছে এবং ভারত বিরোধী উসকানিমূলক মন্তব্য বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সাম্প্রতিক আক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় বাংলাদেশের ময়মনসিংহ ও দিনাজপুর জেলায় তিনটি মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার, ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার শাকুয়াই এলাকার বন্দেরপাড়া মন্দির এবং বিলডোরা এলাকার পলাশকান্দা কালী মন্দিরে হামলা হয়। ভাঙচুর করা হয় দুটি মন্দিরের মূর্তি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্দেরপাড়া মন্দিরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মন্দিরের প্রধান সুভাষচন্দ্র সরকার। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করে এবং আলাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।

দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়বাড়ি শ্মশান কালী মন্দিরেও হামলা হয়। সেখানে পাঁচটি মূর্তি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মন্দির কমিটির সভাপতি জনার্দন রায় জানিয়েছেন, মন্দিরে এমন হামলা এর আগে কখনও হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারীরা ইসকন বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিল। এই ঘটনার ফলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নভেম্বর মাস থেকে সংখ্যালঘুদের বাড়ি-দোকানেও হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ইসকনের মন্দিরেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠোর বার্তা দিয়েছে।

ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং সংসদে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর ২২০০টি আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। ২০২২ সালে বাংলাদেশে ৪৭টি হামলার ঘটনা ঘটলেও ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে ৩০২-এ পৌঁছেছে। ২০২৪ সালে তা আরও বৃদ্ধি পেয়ে অক্টোবর পর্যন্ত ২২০০-এ পৌঁছেছে।

এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি। তবে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বন্ধে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের ঘনিষ্ঠ মাহফুজ আলম সম্প্রতি ফেসবুকে ‘অখণ্ড বাংলাদেশ’ গড়ার ডাক দেন এবং ভারতের বিভিন্ন রাজ্যকে বাংলাদেশের অধীনে আনার উসকানিমূলক পোস্ট করেন। ভারত সরকার এই ধরনের মন্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছে এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে এই ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে বলেছে।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘এই ধরনের মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং তা ভারত সহ্য করবে না।’ তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারত সবসময় এগিয়ে এসেছে, কিন্তু এই ধরনের মন্তব্য দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সাম্প্রতিক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার তদন্ত শুরু করেছে এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ৪ আগস্ট থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনায় ৯৭টি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং ৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তারিখ: ২২.১২.২০২৪

বাংলাদেশে মন্দিরে হামলা ও হত্যার নিন্দা জানাল ঐক্য পরিষদ

বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্দিরে হামলা, বিগ্রহ ভাঙচুর ও তরুণ চন্দ্র দাস হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
বাংলাদেশে মন্দিরে হামলা ও হত্যার নিন্দা জানাল ঐক্য পরিষদ

নাটোর, ময়মনসিংহ ও দিনাজপুরের বিভিন্ন মন্দিরে হামলা, বিগ্রহ ভাঙচুর এবং তরুণ চন্দ্র দাস হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শনিবার রাতে পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা জানানো হয়। পরিষদ দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেছে, এসব ঘটনা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। তারা সরকারের বিশেষ নজরদারির আহ্বান জানিয়েছে।

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের নাটোর, ময়মনসিংহ ও দিনাজপুরে সম্প্রতি মন্দিরে হামলা, বিগ্রহ ভাঙচুর এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন কর্মী হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। নাটোরের বড় হরিশপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহাশ্মশান মন্দিরের দেখভালকারী তরুণ চন্দ্র দাসকে হত্যা এবং মন্দিরে ডাকাতি ও লুটপাটের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

একই সঙ্গে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের বন্দেরপাড়ার সাকুয়া ইউনিয়নের রাধাগোবিন্দ মন্দির এবং বিলাসপুর পলাশ কান্দা কালী মন্দিরে হামলা চালিয়ে বিগ্রহ ভাঙচুরের ঘটনা এবং দিনাজপুরের একটি মন্দিরে হামলার ঘটনা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই নিন্দা জানানো হয়। ঐক্য পরিষদ বলেছে, এসব ঘটনার জন্য দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা জরুরি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এই ধরনের সহিংস ঘটনা শুধুমাত্র দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় অধিকার ক্ষুণ্ন করছে না, বরং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট করছে। এটি রোধে সরকারকে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।”

প্রসঙ্গত, নাটোরের কাশিমপুর মহাশ্মশান মন্দিরে পাহারাদার হিসেবে নিয়োজিত তরুণ চন্দ্র দাস দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য তিনি রাতে সেখানে থাকতেন। সম্প্রতি মন্দিরে ডাকাতির সময় দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ধরনের ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে এবং প্রশাসনের তৎপরতা প্রয়োজন। ঐক্য পরিষদ বলেছে, “যারা এই ধরনের নৃশংস কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় এই ঘটনা অব্যাহত থাকবে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।”

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের সাকুয়া ইউনিয়নের রাধাগোবিন্দ মন্দিরে হামলা চালিয়ে বিগ্রহ ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় ভীত হয়ে পড়েছে। একইভাবে বিলাসপুর পলাশ কান্দা কালী মন্দিরেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

দিনাজপুরের ঘটনায় স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে, দুর্বৃত্তরা মন্দিরে প্রবেশ করে বিগ্রহ ভাঙচুর করে এবং কিছু মূল্যবান সামগ্রী লুট করে। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত শুরু করলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “সরকারের উচিত এসব ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”

এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করছে এবং অপরাধীদের শনাক্তের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা খুব শিগগিরই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারব এবং আইনের আওতায় আনব।”

অন্যদিকে, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, “এ ধরনের ঘটনা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।”

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা আশা করি সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেবে এবং এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করবে।”

এই ঘটনার পর থেকে স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা মনে করেন, প্রশাসনের আরও কঠোর ভূমিকা প্রয়োজন।

বিজ্ঞপ্তিতে ঐক্য পরিষদ বলেছে, “আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করি এবং চাই দেশের সব ধর্মের মানুষ নিরাপদে বসবাস করুক। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা যদি চলতে থাকে, তবে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হবে।”

বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এই ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

তারিখ: ২২.১২.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের হামলার সংখ্যা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ মতবিরোধ

ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দাবি করেছেন, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ২২০০টি সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, এই সংখ্যা মাত্র ১৩৮। এই পরিসংখ্যান বিভ্রান্তিকর ও অতিরঞ্জিত বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের হামলার সংখ্যা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ মতবিরোধ

ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লোকসভায় জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ২২০০টি সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মতে, এই সংখ্যা ১৩৮। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং দাবি করেছে, ভারতের পরিসংখ্যান অতিরঞ্জিত ও বিভ্রান্তিকর। তারা জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে ৩৬৮টি ঘরবাড়িতে হামলা এবং ৮২ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ৯৭টি মামলা হয়েছে এবং ৭৫ জন গ্রেফতার হয়েছে। বেশিরভাগ হামলা রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে।

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পরিসংখ্যানগত মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ লোকসভায় দাবি করেছেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের উপর ২২০০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এই পরিসংখ্যানকে অতিরঞ্জিত ও বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার সংখ্যা ১৩৮টি।

প্রেস উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে ৩৬৮টি ঘরবাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং ৮২ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় ৯৭টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেশিরভাগ হামলার ঘটনা ৫ আগস্ট থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে ঘটেছে, যখন দেশে কোনো সরকার কার্যকর ছিল না। এই সময়ে রাজনৈতিক কারণে সহিংসতা বেড়ে যায় বলে দাবি করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।

অন্যদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লোকসভায় উপস্থাপন করা পরিসংখ্যানে উল্লেখ করেছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর ৪৭টি হামলার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৩০২-এ পৌঁছায়। তবে ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সংখ্যা ২২০০-তে দাঁড়িয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান ছাড়া ভারতের অন্য কোনো প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাদেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করছে এবং অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, তবে বেশিরভাগ ঘটনাই স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধের ফলাফল।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা ভারতের পরিসংখ্যানকে বিভ্রান্তিকর বলে মনে করি। প্রকৃত ঘটনা অনুসারে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতার ঘটনা তুলনামূলকভাবে কম। সরকার প্রতিটি ঘটনা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।”

ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ লোকসভায় বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতার ঘটনা আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়। ভারত এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।”

এদিকে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা প্রতিবেশী দেশের উদ্বেগকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করি। তবে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরার দায়িত্ব আমাদের। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বদা সচেষ্ট।”

এই বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বাড়ার বিষয়টি ভারতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে এবং ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

তারিখ: ২২.১২.২০২৪

নাটোর মহাশ্মশানে চুরি, প্রহরীর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার

নাটোরের কাশিমপুর মহাশ্মশানের পাহারাদার তরুণ কুমার দাসের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, চুরির সময় বাধা দেওয়ায় দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
নাটোর মহাশ্মশানে চুরি, প্রহরীর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার

নাটোরের কাশিমপুর মহাশ্মশানের পাহারাদার তরুণ কুমার দাসের হাত-পা বাঁধা লাশ আজ শনিবার উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, দুর্বৃত্তরা চুরির সময় বাধা দেওয়ায় তাকে হত্যা করেছে। নিহত তরুণ ২৫ বছর ধরে মহাশ্মশানের পাহারার দায়িত্বে ছিলেন। মহাশ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক জানান, মন্দিরের দানবাক্স ও ভান্ডারঘরের তালা ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। নিহতের পরিবার এবং স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।

নাটোর, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪: নাটোরের কাশিমপুর মহাশ্মশানের দীর্ঘদিনের পাহারাদার তরুণ কুমার দাসের (৬০) হাত-পা বাঁধা লাশ আজ শনিবার উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতের কোনো একসময় দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজ সকালে মহাশ্মশানের অন্যান্য কর্মচারীরা তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন।

তরুণ কুমার দাস নাটোর পৌর এলাকার আলাইপুর মহল্লার বাসিন্দা এবং মৃত কালিপদ দাসের ছেলে। ২৫ বছর ধরে তিনি মহাশ্মশানের পাহারাদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রতিদিনের মতো গতকালও তিনি রাতে শ্মশান পাহারা দেওয়ার জন্য ছিলেন। তবে আজ সকালে তার লাশ শ্মশানের ভোগঘরের বারান্দায় হাত ও পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়।

মহাশ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সত্যনারায়ণ রায় জানান, সকালে মহাশ্মশানের অন্যান্য কর্মচারীরা তরুণ কুমারের লাশ দেখতে পান এবং দ্রুত তাকে খবর দেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি দেখেন, শ্মশান মন্দিরের দানবাক্স এবং ভান্ডারঘরের তালা ভাঙা ও গ্রিল কাটা। এটি দেখে ধারণা করা হচ্ছে, মন্দিরের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে এবং পাহারাদার তরুণ কুমার দাস তাদের দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়।

তরুণ কুমারের ছোট ভাই প্রদীপ কুমার দাস জানান, তার ভাই দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে মহাশ্মশান পাহারা দিচ্ছেন। তিনি রাতে শ্মশানেই থাকতেন এবং সেখানেই খাওয়াদাওয়া করতেন। তার ভাইয়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন বলে জানান প্রদীপ।

তরুণ কুমারের ছেলে তপু দাস বলেন, তার বাবা একজন নিরীহ মানুষ ছিলেন। কোনো শত্রুতা ছিল না। এমন একটি ঘটনা তার পরিবারের জন্য দুঃসহ। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা কারো কোনো ক্ষতি করেননি। যারা তাকে হত্যা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্মশানের ভান্ডারঘরের কিছু মালামাল লুটের আলামত পেয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, চুরির ঘটনা ঘটানোর সময় তরুণ কুমার দাস বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে। পুলিশের পক্ষ থেকে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি মাহবুবুর রহমান আরও জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত নৃশংস এবং দোষীদের খুঁজে বের করতে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এলাকাবাসীর নিরাপত্তার বিষয়টিও আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’

এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, তরুণ কুমার দাস দীর্ঘদিন ধরে সততার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করেছেন এবং কারও সঙ্গে কোনো বিরোধ ছিল না। এলাকাবাসী পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, দ্রুত তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

এই হত্যাকাণ্ড নাটোরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। তরুণ কুমার দাসের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার আত্মীয়স্বজন এবং এলাকাবাসী সবাই একত্রে দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শেষে দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত আলামত বিশ্লেষণ করে এবং নিহতের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্যের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নাটোরের কাশিমপুর মহাশ্মশান এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসনও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তরুণ কুমার দাসের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই এলাকায় পুলিশি নজরদারি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ওসি মাহবুবুর রহমান।

তারিখ: ২২.১২.২০২৪

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে ভারত

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার ঘটনায় ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রাজ্যসভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং জানান, ভারত সংখ্যালঘু পরিস্থিতির ওপর গভীর নজর রাখছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ৮৮টি মামলা এবং ৭০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে ভারত

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। রাজ্যসভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং জানান, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতির ওপর ভারত গভীর নজর রাখছে। এ পর্যন্ত ৮৮টি মামলা করা হয়েছে এবং ৭০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে। পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ঢাকায় সফরে গিয়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ভারতের হাইকমিশন সংখ্যালঘুদের কল্যাণে নিয়মিত বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

নয়াদিল্লি, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। সম্প্রতি রাজ্যসভায় ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং জানান, বাংলাদেশে হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার ঘটনায় ভারত গভীরভাবে নজর রাখছে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বলে তিনি মন্তব্য করেন।

গত ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ঢাকায় সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। ওই বৈঠকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও সহিংসতার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মিশ্রি। তিনি বাংলাদেশের নেতাদের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আহ্বান জানান।

রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, ভারত সরকার নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে ৮৮টি মামলা দায়ের করেছে এবং সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, ভারতের সরকার সংখ্যালঘুদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। তিনি আরও জানান, বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের এই উদ্বেগের পেছনে সাম্প্রতিক সহিংসতা ও হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও সম্পত্তি লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু মানুষ, ধ্বংস করা হয়েছে ঘরবাড়ি ও মন্দির।

বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও ভারত মনে করছে, পরিস্থিতি আরও নিবিড় নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে।

কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, ভারতের নীতিগত অবস্থান হলো, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সকল সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তিনি জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যেকোনো ধরনের সহিংসতা বা নির্যাতন ভারত সহ্য করবে না এবং বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।

এর আগে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা নিয়ে একাধিকবার ভারতের বিভিন্ন মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বাংলাদেশের সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সংখ্যালঘুদের জীবনযাত্রা, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের পরিকল্পনা চলছে। সংখ্যালঘুদের জন্য নির্ধারিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ভারত সরকার সহায়তা করতে আগ্রহী বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং ধর্মীয় সহাবস্থানের সংস্কৃতি বজায় রাখতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ইস্যুতে ভারত সরকারের এই কঠোর অবস্থান দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামীতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের জন্য ভারত এবং বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং।

তারিখ: ২২.১২.২০২৪

বাংলাদেশি আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের সাহসিকতার প্রশংসা বিজেপি নেতার

বাংলাদেশি সংখ্যালঘু হিন্দুদের অধিকারের পক্ষে লড়াই চালানো আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। রবীন্দ্র ঘোষের সাহসিকতার প্রশংসা করেন তিনি। প্রাণনাশের হুমকি উপেক্ষা করে রবীন্দ্র ঘোষের লড়াই মানবতার চেতনা তুলে ধরছে।
বাংলাদেশি আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের সাহসিকতার প্রশংসা বিজেপি নেতার

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের অধিকারের পক্ষে লড়াই করা আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরে সাক্ষাৎ করেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে দাঁড়ানোয় রবীন্দ্র ঘোষকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হলেও তিনি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিজেপি নেতা তাঁর সাহসিকতা ও মানবতার প্রতি অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন। উপস্থিত ছিলেন হিন্দু ধর্মীয় নেতা কার্তিক মহারাজ, যিনি রবীন্দ্র ঘোষের কাজকে মানবতার চেতনার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন। রবীন্দ্র ঘোষ নিজেও অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।

কলকাতা, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের অধিকারের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাওয়া বিশিষ্ট আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার ব্যারাকপুরে সাক্ষাৎ করেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। মঙ্গলবার হওয়া এই সাক্ষাতে অর্জুন সিং রবীন্দ্র ঘোষের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। রবীন্দ্র ঘোষ বর্তমানে চিকিৎসার জন্য পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছেন। তিনি বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ নামের একটি সংগঠনের সভাপতি এবং দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার আদায়ের জন্য সোচ্চার।

সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস নামে বাংলাদেশের একজন ধর্মীয় নেতার পক্ষে দাঁড়ানোয় রবীন্দ্র ঘোষকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর পক্ষে আদালতে জামিন আবেদন দাখিল করতে চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন রবীন্দ্র ঘোষ। তবে, আইনি প্রক্রিয়ার বিভিন্ন জটিলতার কারণে তিনি ওকালতনামা দাখিল করতে পারেননি।

এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা অর্জুন সিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা যেন ন্যায়বিচার পান, সে জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন রবীন্দ্র ঘোষ। তাঁর এই সাহসিকতা ও নিরলস প্রচেষ্টা আমাদের অনুপ্রাণিত করছে। প্রাণনাশের হুমকি সত্ত্বেও তিনি যেভাবে মানবতার চেতনা তুলে ধরছেন, তা প্রশংসনীয়।’’

সাক্ষাতের সময় হিন্দু ধর্মীয় নেতা কার্তিক মহারাজও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘ন্যায়বিচারের প্রতি রবীন্দ্র ঘোষের অঙ্গীকার মানবতার প্রকৃত চেতনাকে তুলে ধরেছে। এ কারণে তাঁকে সমর্থন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’’ রবীন্দ্র ঘোষ নিজেও জানান, যেকোনো অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য তাঁর সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

রবীন্দ্র ঘোষের এই প্রচেষ্টাকে নিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের অধিকার রক্ষায় তাঁর ভূমিকা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোচিত হয়েছে। তাঁর সংগঠন বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ দীর্ঘদিন ধরে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে সক্রিয়। সংগঠনটি দেশে-বিদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরে আন্তর্জাতিক মহলে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক পরিবেশও সরগরম। বিজেপি এবং অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বাংলাদেশ ইস্যুতে সোচ্চার। বিশেষত, এই ইস্যুটিকে কেন্দ্র করে বাংলায় রাজনৈতিক শক্তি মজবুত করার চেষ্টাও চলছে। অর্জুন সিং-এর মতো নেতারা এই ইস্যুতে বারবার সরব হচ্ছেন এবং হিন্দুদের অধিকার রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।

রবীন্দ্র ঘোষের মতো ব্যক্তিত্বরা তাঁদের কাজের মাধ্যমে মানবতার প্রতি যে অঙ্গীকার দেখিয়েছেন, তা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যেই নয়, বরং বৃহত্তর সমাজেও একটি বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। তিনি জানান, ‘‘সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় আমার সংগ্রাম কোনো হুমকিতে থামবে না। ন্যায়বিচারের জন্য আমি আমার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’’

এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, মানবতার জন্য লড়াই কোনো নির্দিষ্ট দেশের সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ নয়। রবীন্দ্র ঘোষের প্রচেষ্টা এবং বিজেপি নেতাদের সমর্থন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। তাঁরা যেন এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে নিজেদের অধিকার রক্ষা করতে সাহসী পদক্ষেপ নিতে পারেন, সে জন্যই এই ধরনের সমর্থন ও উদ্যোগ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

তারিখ: ১৮.১২.২০২৪

‘পলায়ন’ নয় ‘পরাক্রম’, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উদ্দেশে নয়া স্লোগান সংঘের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ইস্যুতে আরএসএস এবং বিজেপি প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছে। আরএসএস নেতাদের মতে, হিন্দুদের উচিত বাংলাদেশে থেকে লড়াই চালানো। বিজেপি বাংলায় হিন্দুত্বের সুর তুলে বাংলাদেশ ইস্যুকে প্রচার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
‘পলায়ন’ নয় ‘পরাক্রম’, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উদ্দেশে নয়া স্লোগান সংঘের

বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় আরএসএস এবং বিজেপি তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। আরএসএসের কার্যকর্তা ড. জিষ্ণু বসু এবং মুখপাত্র বিপ্লব রায় বলেছেন, বাংলাদেশি হিন্দুদের উচিত নিজ দেশে থেকে প্রতিরোধ চালানো। বিজেপি বাংলায় রাজনৈতিক জমি মজবুত করতে বাংলাদেশ ইস্যুকে হিন্দুত্ব প্রচারের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতারা ধর্মতলার প্রতিবাদ সভায় সরব হয়েছেন। আরএসএসের মতে, হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ প্রয়োজন।

ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন এবং তাদের নিজভূমি ছেড়ে ভারতে আসার প্রবণতা নিয়ে আরএসএস এবং বিজেপি উভয়েই তাঁদের বক্তব্য রেখেছে। আরএসএসের কার্যকর্তা ড. জিষ্ণু বসু বলেছেন, ‘‘১৯৭১ সালের মতো এবারও হিন্দুদের বাংলাদেশ ছেড়ে আসা উচিত নয়। বরং সেখানে থেকে প্রতিরোধের দাপট, তেজ এবং বীরত্ব দেখাতে হবে।’’ তাঁর মতে, দুই বাংলার হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া অত্যন্ত জরুরি।

আরএসএসের মুখপাত্র বিপ্লব রায়ের কথায়, ‘‘বাংলাদেশের হিন্দুদের তাঁদের নিজ দেশে থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত। পলায়ন কোনো সমাধান নয়। বাংলাদেশের মাটিতে হিন্দুদের পূর্ণ অধিকার আছে, এবং সেটি প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য হওয়া উচিত।’’ আরএসএসের এই আহ্বান রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

বাংলায় বিজেপি নেতারাও এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন। তাঁদের মতে, বাংলাদেশ ইস্যুটি হিন্দুত্ব প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। শুভেন্দু অধিকারী, বিরোধী দলনেতা, ধর্মতলার রানি রাসমণি রোডে এক প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রেখেছেন। এই সভার মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হওয়া নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। বাঙালি হিন্দু সুরক্ষা সমিতির ডাকে এই মিছিল ও সভা হয়।

বাংলাদেশ ইস্যুতে আরএসএসের এই অবস্থান সম্পর্কে বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি শুধু একটি সামাজিক বা ধর্মীয় উদ্যোগ নয়, বরং এটি একটি কৌশলগত প্রচারণা। আরএসএস চায়, বাংলাদেশে হিন্দুরা প্রতিরোধ গড়ে তুলুক এবং নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুক। তাঁদের বক্তব্যে স্পষ্ট, ‘‘যেখানে যে আছি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানেই লড়াই করব।’’

ধর্মতলায় হওয়া সভার মঞ্চ থেকে বারবার বলা হয়েছে, দুই বাংলার হিন্দুদের অস্তিত্বের সংকট চলছে। তথাকথিত উচ্চ-নিচ, ঘটি-বাঙাল, ধনী-দরিদ্র ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাঙালি হিন্দুদের এই লড়াই একতাবদ্ধ অবস্থান থেকেই সম্ভব বলে মনে করেন আরএসএস এবং বিজেপির নেতারা।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং সেখানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতনের খবর পশ্চিমবঙ্গে যথেষ্ট উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আরএসএস এবং বিজেপির এই আহ্বান কীভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং এর রাজনৈতিক প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। তবে আরএসএসের মতে, বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য এই লড়াই এখন সময়ের দাবি।

তারিখ: ১৮.১২.২০২৪

ওপারে খোঁজ নেই দুই ভাইয়ের, চিন্তায় কেঁদেই চলেছেন এপারের হিন্দু প্রৌঢ়

বাংলাদেশের বগুড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলায় স্বপন ও তরুণ চক্রবর্তীর বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রায়গঞ্জের সঞ্জিত চক্রবর্তী দুই দাদার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। পরিবার উদ্বেগে আছে। রায়গঞ্জ প্রশাসন সাহায্যের পরামর্শ দিয়েছে।
ওপারে খোঁজ নেই দুই ভাইয়ের, চিন্তায় কেঁদেই চলেছেন এপারের হিন্দু প্রৌঢ়

বাংলাদেশের বগুড়ায় দত্তপাড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলায় দাদাদের বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেওয়ায় উদ্বিগ্ন রায়গঞ্জের সঞ্জিত চক্রবর্তী। তাঁর দুই ভাই স্বপন চক্রবর্তী এবং তরুণ চক্রবর্তী বাংলাদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত হলেও এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সঞ্জিতবাবু তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর এসেছে, দাদাদের বাড়িঘর এবং দোকান ভেঙে ও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। রায়গঞ্জের প্রশাসন জানিয়েছে, সমস্যা হলে বাংলাদেশের হাই কমিশনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

রায়গঞ্জ, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের বগুড়ায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত দুই হিন্দু পরিবারের কথা জানালেন রায়গঞ্জের দেবীনগরের বাসিন্দা সঞ্জিত চক্রবর্তী। তাঁর দুই দাদা, স্বপন চক্রবর্তী এবং তরুণ চক্রবর্তী, যাঁরা বাংলাদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত ছিলেন, তাঁদের বাড়ি এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সাম্প্রদায়িক হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে।

সঞ্জিতবাবু কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, তাঁর দাদা স্বপন চক্রবর্তী ছিলেন বাংলাদেশের পীরগঞ্জ থানার পুলিশ অফিসার। অপর দাদা তরুণ চক্রবর্তী বগুড়ার দত্তপাড়ায় আওয়ামী লীগের পুর কাউন্সিলর ছিলেন। দত্তপাড়ায় তাঁদের নিজস্ব বাড়ি ও ব্যবসা ছিল। সাম্প্রদায়িক হামলাকারীরা দাদাদের বাড়ি ভেঙে ফেলে এবং তাঁদের সাতমাথা মোড়ে থাকা কাপড় ও মুদির দোকানগুলো লুট করে পুড়িয়ে দেয়।

সঞ্জিতবাবু জানান, গতকাল রাত থেকে দাদাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের অবস্থার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। শেষ খবর এসেছে একজন স্থানীয় বাসিন্দার মাধ্যমে। জানা গেছে, হামলার পর দাদারা প্রাণ বাঁচানোর জন্য কোথাও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোনো খবর নেই।

এই ঘটনায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চলা অত্যাচারের বিষয়টি আরও একবার সামনে এসেছে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কারণে হিন্দু সম্প্রদায় প্রতিনিয়ত তাদের বাসস্থান ও সম্পদ হারাচ্ছে। সঞ্জিতবাবু বলেন, “দাদাদের কাছে আমরা কত সাহায্য পেয়েছি। কিন্তু এখন তাঁরাই বিপদে আছেন। তাঁদের জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কোথায় আছেন, কী অবস্থায় আছেন, কিছুই জানতে পারছি না।”

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রায়গঞ্জের বাসিন্দারা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। সঞ্জিতবাবু জানান, তিনি এবং তাঁর স্ত্রী তৃপ্তি চক্রবর্তী প্রতিবেশীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন, কিন্তু কোনো ফল পাননি। রায়গঞ্জের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অরূপ ঘোষের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু তথ্য জানা গেছে। তিনি জানিয়েছেন, দাদাদের বাড়ি ভেঙে এবং জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রায়গঞ্জ মহকুমাশাসক কিংশুক মাইতি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগে সমস্যা হলে, স্থানীয় প্রশাসন ও বাংলাদেশের হাই কমিশনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনায় আনা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা আরও জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বিশেষত সংখ্যালঘুদের ওপর এই ধরনের হামলা বাংলাদেশে দীর্ঘদিনের সমস্যা। সঞ্জিতবাবু বলেন, “গত দুদিন ধরে দত্তপাড়া অগ্নিগর্ভ। দাদাদের পরিবারের কোনো খবর নেই। তাঁরা আদৌ বেঁচে আছেন কি না, তা আমরা জানি না। খুব অসহায় লাগছে।”

এই ঘটনার খবর স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত পৌঁছানো হয়েছে। তবে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রায়গঞ্জে এপারের স্বজনরা অত্যন্ত উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের একমাত্র চাওয়া, দাদারা নিরাপদে ফিরে আসুন।

এই ঘটনা শুধু দুই পরিবারের নয়, বরং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি বড় সংকটকে তুলে ধরে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য বাংলাদেশের সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের আরও কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। এপারের বাসিন্দারা আশা করছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

তারিখ: ১৮.১২.২০২৪

সিলেটে কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগ, তরুণ গ্রেপ্তার

সিলেট সদরে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে আরিফ উদ্দিন নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিশোরীকে সুনামগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে কিশোরী বাবার জিম্মায় রয়েছে। মামলার পরদিনই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সিলেটে কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগ, তরুণ গ্রেপ্তার

সিলেট সদরের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত ১১ ডিসেম্বর কোচিংয়ে যাওয়ার পথে আরিফ উদ্দিনসহ কয়েকজন কিশোরীকে অপহরণ করে সুনামগঞ্জে নিয়ে যায়। সেখানে ধর্ষণ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কাগজে স্বাক্ষর নেয় অভিযুক্ত। কিশোরীর বড় বোনের করা মামলার পরদিনই পুলিশ অভিযুক্ত আরিফকে গ্রেপ্তার করে। কিশোরীকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে এবং তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসা নেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, মামলার পরদিন অভিযুক্তকে আদালতে পাঠানো হয় এবং বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

সিলেট, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪: সিলেট সদরে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এক কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগে পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত রোববার মহানগরের শাহপরান থানায় একটি মামলা হওয়ার পরদিনই পুলিশ অভিযুক্ত তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে ভুক্তভোগী কিশোরীকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১১ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে কোচিংয়ে যাচ্ছিল ওই কিশোরী। পথে আরিফ উদ্দিন (২১) অজ্ঞাতনামা দু-তিনজনের সহযোগিতায় ওই কিশোরীকে অপহরণ করে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে নিয়ে যান। সেখানে আরিফ ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পাশাপাশি ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর নেন।

কিশোরীর সন্ধান না পেয়ে ওই দিনই শাহপরান থানায় তার বড় বোন একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে কিশোরীর মুঠোফোন থেকে বাড়িতে কল আসে এবং তাকে সুনামগঞ্জ থেকে উদ্ধার করার আকুতি জানায়। পরে পরিবারের সদস্যরা সুনামগঞ্জ থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে সিলেট সদরের খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পরামর্শে বাড়িতে নিয়ে যান। এর মধ্যে কিশোরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে শনিবার সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আত্মীয়স্বজনদের পরামর্শে অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় কিশোরীর বড় বোন রোববার শাহপরান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী সুব্রত দাশ প্রথম আলোকে জানান, ১১ ডিসেম্বর অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আজ বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের আমলি ৩ নম্বর আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ভুক্তভোগী কিশোরীকে তার বাবার জিম্মায় তুলে দেন।

শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মামলার পরদিনই পুলিশ অভিযুক্ত আরিফকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে। আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

তারিখ: ১৮.১২.২০২৪

ভোলায় সংখ্যালঘু হিন্দু ব্যবসায়ী প্রাণকৃষ্ণ দাসের উপর হামলা

বাংলাদেশের ভোলা জেলায় সংখ্যালঘু হিন্দু ব্যবসায়ী প্রাণকৃষ্ণ দাসের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ইসলামি মৌলবাদী মহম্মদ রিয়াজের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং সরকারের উদাসীনতায় বারবার সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিচ্ছে।
ভোলায় সংখ্যালঘু হিন্দু ব্যবসায়ী প্রাণকৃষ্ণ দাসের উপর হামলা

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা আরও একটি মর্মান্তিক চিত্র সামনে এলো। ভোলা জেলায় হিন্দু ব্যবসায়ী প্রাণকৃষ্ণ দাসের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ইসলামি মৌলবাদী মহম্মদ রিয়াজের বিরুদ্ধে। ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জীবনের নিরাপত্তা ক্রমশ সংকটাপন্ন হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং সরকারের উদাসীনতায় এই ঘটনা থামছে না। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এখনও কারাগারে আছেন এবং তাঁর হয়ে সওয়াল করতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ছাড়া পরিস্থিতি পরিবর্তনের সম্ভাবনা ক্ষীণ।

ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় আরও একটি ঘটনা ঘটেছে। ভোলা জেলায় হিন্দু ব্যবসায়ী প্রাণকৃষ্ণ দাসের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর ইসলামি মৌলবাদী মহম্মদ রিয়াজের দিকে। এই ঘটনার পর সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন উঠেছে। কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “আমরা প্রতিদিন এই ধরনের খবর পাচ্ছি। একজন নিরীহ ব্যবসায়ীর ওপর এই আক্রমণ খুবই নিন্দনীয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের জীবন ক্রমশই বিপন্ন হয়ে উঠছে।”

তিনি আরও বলেন, “পুলিশ এবং প্রশাসনের উচিত ছিল এই ধরনের হামলা প্রতিহত করা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সরকারের তরফেও উদ্যোগের অভাব স্পষ্ট। বিচারবিভাগের নিষ্ক্রিয়তা আরও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারাগারে আটক হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন হচ্ছে না, এমনকি তাঁর পক্ষে সওয়াল করতেও আইনজীবীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে।”

সংখ্যালঘুদের ওপর এই ধারাবাহিক আক্রমণে আন্তর্জাতিক মহলও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অনেকের মতে, বাংলাদেশ সরকারের মনোভাব পরিবর্তনে আন্তর্জাতিক চাপ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। ভারতসহ অন্যান্য দেশগুলির থেকে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “১০০ দিন ধরে আমরা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখে যাচ্ছি। এটা শুধু দুঃখজনক নয়, ভয়াবহও। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হওয়াটা যেন পাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতি বদলাতে হলে সরকারের সচেতনতা এবং কার্যকর পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।”

এদিকে, হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারি এবং বিচারপ্রক্রিয়ার স্থবিরতা আরও একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তাঁর পক্ষে সওয়াল করতে আদালতে পৌঁছানো আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষও বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। এসব ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ছাড়া এ পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তারা এ বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।

ইতিমধ্যে, কলকাতা ইসকনের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় কঠোর প্রতিক্রিয়ার কথা জানানো হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর ধারাবাহিক হামলার প্রতিবাদে তাঁরা একটি বিবৃতিতে বলেছেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, এটি একটি মানবিক কর্তব্য। এ ধরনের আক্রমণ বন্ধ করতে হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক।”

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মহল পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। তবে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং সরকারের উদাসীনতার কারণে সংখ্যালঘুদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

হিন্দু ব্যবসায়ী প্রাণকৃষ্ণ দাসের ওপর হামলার ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতনের ধারাবাহিক উদাহরণ। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সরকারের তৎপরতা এবং আন্তর্জাতিক মহলের চাপের সমন্বয় প্রয়োজন। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এখনই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

তারিখ: ১৮.১২.২০২৪

কাটা হয়েছে মায়ের আঙুল, বোনের গলায় কোপ, আতঙ্কে কাঁপছেন হিন্দু আওয়ামি লিগ নেত্রী

বাংলাদেশে আওয়ামি লিগ সমর্থক হিন্দু নেতা মণি কর্মকারের পরিবার ভয়াবহ হামলার শিকার। নিজের পরিচয়কে ‘অপরাধ’ বলছেন তিনি। শেখ হাসিনার প্রস্থান পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার মধ্যে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় হামলা উদ্বেগজনক।
কাটা হয়েছে মায়ের আঙুল, বোনের গলায় কোপ, আতঙ্কে কাঁপছেন হিন্দু আওয়ামি লিগ নেত্রী

বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কারণে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে। আওয়ামি লিগ সমর্থক হিন্দু নেতা মণি কর্মকারের পরিবার ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়াই যেন তাঁর অপরাধ। হামলাকারীরা তাঁর সন্তান, মা এবং বোনের ওপরও নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছে। এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কুশলবরণ চক্রবর্তীকেও কট্টরপন্থীদের হামলার শিকার হতে হয়েছে। শেখ হাসিনার বিদায়ের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলি আরও বেড়ে চলেছে। এ ধরনের হামলার নেপথ্যে মানবাধিকার ও আইনের শাসন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠছে।

ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার মধ্যে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে আওয়ামি লিগ সমর্থক এক হিন্দু নেতার পরিবারের ওপর নৃশংস হামলায়। মণি কর্মকার, যিনি নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং আওয়ামি লিগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত করেন, এক সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিওতে নিজের ওপর হওয়া এই আক্রমণের কথা বর্ণনা করেছেন। তাঁর অভিযোগ, একজন হিন্দু এবং আওয়ামি লিগের সঙ্গে জড়িত থাকাই যেন তাঁর অপরাধ।

ভিডিওটি প্রথম পোস্ট করেছে @ATeam_1971 নামে একটি গ্রুপ, যারা এই আক্রমণকে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়েছে। মণি কর্মকার জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের সদস্যদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমার সন্তানরা স্কুলে পড়ে। তাদের কী অপরাধ? আমার মায়ের আঙুল কেটে ফেলা হয়েছে। আমার বোনের গলা কেটে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। আমি এর সুবিচার চাই।”

শেখ হাসিনার বিদায়ের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনার দায়িত্বভার নিয়েছেন মহম্মদ ইউনূস। তাঁর শাসনামলে সংখ্যালঘু বিশেষত হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের একের পর এক ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। বুধবার আওয়ামি লিগের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, শুধু দেওয়ালে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখার কারণে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলায় আওয়ামি ছাত্র লীগের দুই সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কুশলবরণ চক্রবর্তীর ওপরও হামলা চালানো হয়। তিনি সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, মন্দির এবং সম্পত্তির ওপর ধারাবাহিক হামলার ঘটনা ঘটছে। এসব হামলার নেপথ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মহলেও এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। মণি কর্মকারের ঘটনার মতো ঘটনাগুলি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর আঘাত বলেই মনে করা হচ্ছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, ইউনূস আমলে এ ধরনের হিংসা আদৌ থামবে কি না।

মণি কর্মকার সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি প্রশ্ন করেন, “হিন্দু এবং আওয়ামি লিগের সদস্য হওয়াই যদি অপরাধ হয়, তাহলে আমিই অপরাধী। কিন্তু আমার সন্তান, মা, এবং বোনের কী অপরাধ? তাদের ওপর এভাবে আক্রমণ চালানো হলো কেন?”

মানবাধিকার কর্মীরা এ ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলার জন্য গভীর সংকট তৈরি করছে। একইসঙ্গে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য তারা সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ক্রমবর্ধমান হিংসার ঘটনাগুলি উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। শেখ হাসিনার বিদায়ের পর থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কিছুটা হলেও নিরাপদ ছিল, কিন্তু বর্তমানে তারা চরম সঙ্কটের মুখোমুখি।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এসব হামলার পেছনে রাজনৈতিক মেরুকরণ এবং চরমপন্থী শক্তির উত্থান কাজ করছে। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বন্ধ করতে হলে সরকারের সক্রিয় পদক্ষেপ প্রয়োজন। মণি কর্মকার এবং তাঁর পরিবারের ওপর হওয়া হামলা এই পরিস্থিতির এক করুণ উদাহরণ হয়ে রইল।

এ পরিস্থিতিতে প্রয়োজন মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের প্রতি সম্মান জানিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত এবং কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

তারিখ: ১৮.১২.২০২৪

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর টোটব্যাগের রাজনীতিতে মিশলো বাংলাদেশের হিন্দু ইস্যু

ভারতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর টোটব্যাগে ফিলিস্তিন সমর্থন ও বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ইস্যুতে প্রবল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। কংগ্রেস এমপিদের বিক্ষোভ ও বিজেপির অভিযোগে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। পার্লামেন্ট অধিবেশনে এই ইস্যুতে দুই দলের তর্ক চলছে।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর টোটব্যাগের রাজনীতিতে মিশলো বাংলাদেশের হিন্দু ইস্যু

ফিলিস্তিন লেখা টোটব্যাগ নিয়ে পার্লামেন্টে প্রবেশের পর কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী প্রবল বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে টোটব্যাগে প্রতীকী সমর্থন দেখান তিনি। বিজেপি এই পদক্ষেপকে মুসলিম তোষণের রাজনীতি বলে কটাক্ষ করেছে। মঙ্গলবার কংগ্রেস এমপিরা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সুরক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সরকারের কাছে বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রিস্টানদের সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এটিকে কংগ্রেসের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, যা ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতির বার্তা দেয়। (সূত্রঃ বিবিসি)

নয়াদিল্লি, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভারতে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর একটি টোটব্যাগ নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। পার্লামেন্টে ফিলিস্তিন লেখা টোটব্যাগ বহন করে প্রবেশ করার পর থেকেই বিষয়টি তীব্র রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। টোটব্যাগটিতে একটি তরমুজের ছবি ছিল, যা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনের একটি আন্তর্জাতিক প্রতীক।

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী কিছুদিন আগেই কেরালার ওয়েনাড আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রবেশ করেছেন। এর আগে ফিলিস্তিনি শার্জ-দ্য-অ্যাফেয়ার্স আবেদ এলরাজেগ আবু জাজের তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং টোটব্যাগটি তাকে উপহার দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

প্রিয়াঙ্কার এই পদক্ষেপ নিয়ে বিজেপি কঠোর সমালোচনা করেছে। বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি অভিযোগ করেন, এটি মুসলিম তোষণের রাজনীতির আরেকটি উদাহরণ। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এস পি সিং বাগেল দাবি করেন, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত পদক্ষেপ, যা ভারতের বিশেষ একটি ভোটব্যাংককে টার্গেট করে করা হয়েছে।

এই বিতর্কের মধ্যেই কংগ্রেস পাল্টা আক্রমণ করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার ইস্যু সামনে আনে। মঙ্গলবার সকালে কংগ্রেস এমপিরা নতুন একটি টোটব্যাগ নিয়ে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন, যেখানে লেখা ছিল “স্ট্যান্ড উইথ মাইনরিটিস অব বাংলাদেশ”। কংগ্রেস এমপিরা দাবি তোলেন, ভারত সরকারকে বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়ে সরাসরি পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী পার্লামেন্ট অধিবেশনের জিরো আওয়ারে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার ইস্যু উত্থাপন করেন। তার মতে, সরকারের উচিত অপ্রয়োজনীয় বিতর্কে সময় নষ্ট না করে বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রিস্টানদের সুরক্ষার বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর টোটব্যাগকে বিজেপি “ভোটব্যাগ” বলে বিদ্রূপ করেছে। বিজেপি নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন তিনি বাংলাদেশের নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের আগে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। তবে প্রিয়াঙ্কা এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমি কী পরব বা আমার হাতে কী থাকবে, সেটা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। অন্য কেউ আমার পোশাক ঠিক করে দিতে পারে না। এটি একটি পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার পরিচয়।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কংগ্রেস এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দেখাতে চেয়েছে যে তারা শুধুমাত্র ফিলিস্তিনের মুসলিমদেরই নয়, বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদেরও পাশে আছে। নতুন পার্লামেন্ট ভবনের সামনে কংগ্রেসের এই বিক্ষোভ অনেকটা কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারত দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিন ইস্যুতে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে কথা বলে আসছে। এই নীতির অধীনে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পাশাপাশি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ভারসাম্য বজায় রেখেছে ভারত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর সম্প্রতি পার্লামেন্টে উল্লেখ করেছেন যে, ভারত জাতিসংঘে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা সুপরিচিত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার ইস্যুতে দিল্লি এবং ঢাকার মধ্যে কূটনৈতিক অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দাবিতে সরব হয়েছে। তবে বিজেপি এই পদক্ষেপকে একটি রাজনৈতিক কৌশল বলে উল্লেখ করেছে। উভয় পক্ষের এই বিতর্কে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

তারিখ: ১৮.১২.২০২৪

বাংলাদেশে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের’ নিন্দা ভারতে নিযুক্ত ইসরায়েলি কূটনীতিকের

মুম্বাইয়ের ওয়্যার্ল্ড হিন্দু ইকোনমিক ফোরামের সেশনে বক্তব্যে ইসরায়েল কনসাল জেনারেল কোব্বি শোশানি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন নিন্দা করেছেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ওপর গুরুত্ব দেন।
বাংলাদেশে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের’ নিন্দা ভারতে নিযুক্ত ইসরায়েলি কূটনীতিকের

মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত ওয়্যার্ল্ড হিন্দু ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউএইচইএফ) প্লেনারি সেশনে ইসরায়েলের কনসাল জেনারেল কোব্বি শোশানি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “সেখানে যা ঘটছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।” শোশানি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ইসরায়েল ও বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রতি সমর্থন জানানোয় তিনি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। তিনি বাংলাদেশের হিন্দুদের যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, সেগুলো মোকাবিলায় গুরুত্ব আরোপ করেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার প্রতি জোর দেন।

মুম্বাই, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভারতের মুম্বাইয়ে গত শুক্র থেকে রোববার পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ওয়াল্ড হিন্দু ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউএইচইএফ) প্লেনারি সেশনে অংশগ্রহণ করেন ইসরায়েলের কনসাল জেনারেল কোব্বি শোশানি। এই সম্মেলনে ইসরায়েলের কনসাল জেনারেল বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন এবং তাদের প্রতি চলমান বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “সেখানে যা ঘটছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।” শোশানি এই ধরনের ঘটনাকে নিন্দনীয় হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রয়োজন, সেগুলোকে সামনে এনে তা সমাধানের জন্য আহ্বান জানান।

ইসরায়েলি কনসাল জেনারেল কোব্বি শোশানি তার বক্তব্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ইসরায়েল এবং বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দুদের প্রতি সহানুভূতির যে সমর্থন প্রদর্শিত হচ্ছে, সেটি বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। শোশানি আরও বলেন, ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের মানবাধিকার রক্ষার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হয়েছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় সংখ্যালঘু হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে আসছে। বিশেষত, সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে হিন্দুদের ওপর চলমান আক্রমণ ও নির্যাতন বিশ্বব্যাপী আলোচনা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের ধর্মীয় স্থাপনাগুলি হামলার শিকার হয়েছে এবং কিছু জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে।

কনসাল জেনারেল শোশানি এই বিষয়ে বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিটি জনগণের অধিকার রয়েছে তাদের নিজস্ব ধর্ম পালনের এবং শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার। কোনো ধরনের ধর্মীয় বৈষম্য কিংবা নির্যাতন একদমই গ্রহণযোগ্য নয়।” তিনি বাংলাদেশের সরকারের কাছে দাবি করেন যে, তারা যেন সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

এছাড়া, তিনি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে দৃঢ় থাকতে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সমর্থন গ্রহণ করতে উৎসাহিত করেন। শোশানি এই বিষয়ে আরও বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি চলমান বৈষম্য এবং অত্যাচার শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমাবদ্ধ নয়, এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ইসরায়েল সরকার এই ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে আনতে সহায়তা করবে।”

শোশানি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও বৈষম্যের এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর তৎপরতা এবং সহানুভূতির প্রতি আরও গুরুত্বারোপ করেন। তার মতে, আন্তর্জাতিকভাবে একত্রিত হয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে। তিনি ভারতসহ অন্যান্য দেশগুলোর নেতৃবৃন্দকে এই বিষয়ে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।

এই ঘটনাটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরও জটিলতা সৃষ্টি করেছে, বিশেষত যখন আন্তর্জাতিক মহল থেকে এই ধরনের নিন্দা ও সমর্থন প্রদর্শিত হচ্ছে। ভারতীয় মিডিয়ায় এ ধরনের প্রতিবেদন এবং আন্তর্জাতিক সহানুভূতির বিষয়টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন এক বিতর্ক উত্থাপন করেছে, যেখানে বাংলাদেশের সরকারের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে।

বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের সংকটে রয়েছে, তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের উপর শারীরিক নির্যাতন, ধর্মীয় স্থান ও উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এর প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সেমিনার, সেশন এবং কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে।

এরই মধ্যে ইসরায়েলি কনসাল জেনারেল কোব্বি শোশানি তার বক্তব্যে এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এবং বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন নিশ্চিত করতে আগ্রহী হয়েছেন। তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন, যা ইসরায়েলের এবং ভারতের সম্পর্কের দৃষ্টিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

এই ধরনের আন্তর্জাতিক সমর্থন ও প্রতিবাদ বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, কারণ তা আন্তর্জাতিক মহলে একটি দৃশ্যমান চাপ সৃষ্টি করবে। তবে, বাংলাদেশের সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই জানা যাবে।

তারিখ: ১৭.১২.২০২৪

সীমান্তের ওপারে হিন্দু নির্যাতন অব্যাহত, ফের প্রতিবাদ মিছিলে মুখরিত কলকাতা

কলকাতায় হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে শিয়ালদহ থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিলে অংশগ্রহণ করেন সাধু-সন্তরা এবং স্লোগান ওঠে “জয় শ্রীরাম” ও “ইউনুসের গালে গালে”। একই সময়ে বিএনপির “কলকাতা দখলে” হুমকির কটাক্ষও করা হয়। যানজটের সৃষ্টি হয় কলকাতায়।
সীমান্তের ওপারে হিন্দু নির্যাতন অব্যাহত, ফের প্রতিবাদ মিছিলে মুখরিত কলকাতা

কলকাতায় হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিয়ালদহ থেকে মিছিল শুরু হয়। আম নাগরিকদের পাশাপাশি মিছিলে অংশ নেন সাধু-সন্তরাও। তারা হাতে গেরুয়া ধ্বজা এবং মুখে “জয় শ্রীরাম” স্লোগান উচ্চারণ করেন। মিছিল হাওড়া ব্রিজে পৌঁছানোর পর “জুতো মারো তালে তালে, ইউনুসের গালে গালে” স্লোগান ওঠে। বিএনপির কলকাতা দখলের হুমকির প্রতিবাদ জানিয়ে এক আন্দোলনকারী বলেন, “চারদিনের মধ্যে কলকাতা দখল করবে বলেছিল, কোথায় গেল? ভয়ে পেয়ে গেছে নাকি?” এ মিছিলে কলকাতায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়, ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায়।

কলকাতা, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪: আজ দুপুরে কলকাতার শিয়ালদহ থেকে শুরু হয় এক বিশাল প্রতিবাদ মিছিল। এই মিছিলে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন, যেখানে সাধু-সন্তরাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের হাতে গেরুয়া ধ্বজা ছিল এবং তারা স্লোগান তুলছিলেন, “জয় শ্রীরাম”। মিছিলটি শিয়ালদহ থেকে শুরু হয়ে হাওড়া ব্রিজ পর্যন্ত পৌঁছায়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা নানা ধরনের স্লোগান দেয়, যা তাদের উদ্দেশ্য এবং প্রতিবাদের বিষয়কে তুলে ধরেছিল।

মিছিলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্লোগানগুলির মধ্যে ছিল “জুতো মারো তালে তালে, ইউনুসের গালে গালে”, যা বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর চলমান নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতে দেওয়া হয়। এই স্লোগানটি বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ইউনুসের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ হিসেবে দেখা গেছে। এর মাধ্যমে আন্দোলনকারীরা চরম ক্ষোভ এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর যে নির্যাতন চলছে, তার প্রতিবাদ জানান।

এছাড়া, মিছিলে বিএনপির “কলকাতা দখলে” হুমকিরও কটাক্ষ করা হয়। এক আন্দোলনকারী বলেন, “চারদিনের মধ্যে কলকাতা দখল করবে বলেছিল, কোথায় গেল? ভয়ে পেয়ে গেছে নাকি? সীমান্তও পার করতে পারবে না, কলকাতা তো দূরে থাক।” এর মাধ্যমে আন্দোলনকারীরা বিএনপির ক্ষমতা দখলের হুমকির বিরুদ্ধে একধরণের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার গদিচ্যুত হওয়ার পর থেকেই সেদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এই অস্থিরতা এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত সহিংসতা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ব্যাপক নির্যাতন এবং আক্রমণকে বাড়িয়ে তুলেছে। এমনকি আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিবাদের পরেও, বাংলাদেশে ইসকনের সাধু চিন্ময় কৃষ্ণকে আটক করা হয়, যা আরও একবার বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের সঞ্চার করেছে।

কলকাতায় হওয়া এই প্রতিবাদ মিছিলও তারই অংশ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, যেখানে সাধারণ মানুষ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকেরা একত্রিত হয়েছেন। তাদের দাবী, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যে অত্যাচার চলছে, তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিবাদ জানানো এবং বাংলাদেশের সরকারকে সেই নির্যাতন বন্ধ করতে চাপ সৃষ্টি করা।

এই মিছিলের ফলে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়, যা সাধারণ মানুষের জন্য অনেকটা অসুবিধাজনক হয়ে দাঁড়ায়। ভোগান্তির শিকার হয় অগণিত সাধারণ মানুষ, যারা সময়মতো তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন। মিছিলের কারণে কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত সড়কগুলোতে দীর্ঘক্ষণ যানজট দেখা যায়, যা শহরের যান চলাচলে এক বড় ধরনের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।

এই মিছিলের আয়োজকরা মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে হলে এমন বৃহৎ প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করা প্রয়োজন। তারা এও দাবি করেন, যদি কেউ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করতে থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত, তাদের সহিংসতা বন্ধ করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

কলকাতার এই প্রতিবাদী মিছিলের পর, বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রতিবাদীরা মনে করছেন, এমন পরিস্থিতিতে তাদের কণ্ঠস্বর আরো উচ্চকিত করতে হবে এবং প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হবে, যাতে সরকারের কাছে ওই অত্যাচারের বিরুদ্ধে একটা শক্তিশালী বার্তা পৌঁছানো যায়।

এই মিছিলের মাধ্যমে প্রতিবাদকারীরা যে বার্তা দিতে চেয়েছেন তা পরিষ্কার — তারা কোনো ধরনের হিংসা বা সহিংসতা সমর্থন করেন না, তবে যা কিছু অবিচার এবং নির্যাতন তা শেষ হতে হবে। কলকাতায় প্রতিবাদের এ ধরনের উদ্যোগ আরও বিভিন্ন আন্দোলনকারীদের উদ্বুদ্ধ করেছে। এই মিছিলের সাফল্য দেখিয়ে তারা আশা করছেন, ভবিষ্যতে আরো বড় আকারে এই প্রতিবাদ আন্দোলন চলবে।

তারিখ: ১৭.১২.২০২৪

বাংলাদেশি শিল্পীদের বয়কটের ডাক কলকাতায়

বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বাংলাদেশি মুসলিম শিল্পীদের বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করলে পশ্চিমবঙ্গে তাদের কাজ করা উচিত নয়। কলকাতার টালিপাড়া এবং বাংলাদেশের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়েও মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশি শিল্পীদের বয়কটের ডাক কলকাতায়

বিজেপি নেতা ও রাজ্যসভার সংসদ সদস্য শমীক ভট্টাচার্য সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশি মুসলিম শিল্পীদের পশ্চিমবঙ্গে কাজ বয়কটের ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করলে তাদের এখানে সিনেমা করা উচিত নয়। জয়া আহসান ও চঞ্চল চৌধুরীসহ ওপার বাংলার শিল্পীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করা আবশ্যক। টালিপাড়ার প্রভাবশালী নেতা অরূপ বিশ্বাসকেও তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার অনুরোধ করেছেন। শমীক বলেন, ধর্মের মোড়কে কোনো শিল্পীকে বিচ্ছিন্ন করতে চান না, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিবাদই সঠিক সিদ্ধান্ত।

কলকাতা, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা ও রাজ্যসভার সংসদ সদস্য শমীক ভট্টাচার্য সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশি মুসলিম শিল্পীদের বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব না হলে এসব শিল্পীর পশ্চিমবঙ্গে কাজ করা উচিত নয়। শমীক ভট্টাচার্য মন্তব্য করেন, “কোনো শিল্পীসত্তা বা প্রতিভাকে আমরা ধর্ম বা উপাসনার মোড়কে সীমাবদ্ধ করতে চাই না। তবে বর্তমানে ওপার বাংলার মুসলিম শিল্পীদের উচিত হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করা। তার আগে তাদের কাজের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।”

জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরীসহ বাংলাদেশের প্রখ্যাত অভিনেতাদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “জয়া আহসান কেন কলকাতায় থাকবেন না? অবশ্যই তিনি এখানে কাজ করতে পারেন। কিন্তু তিনি যদি ওপার বাংলার হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোনো কথা না বলেন, তবে তা গ্রহণযোগ্য নয়। তার ওপার বাংলাতেও হিন্দু দর্শক রয়েছে। তাই তাকে এই বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে।”

শমীক ভট্টাচার্য আরও বলেন, “চঞ্চল চৌধুরী আজ গৃহবন্দি। তার মতো প্রতিভাবান শিল্পীরা ওপার বাংলায় নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু এপারে এসে যদি তারা মুখ বন্ধ রাখেন, তবে সেটা ঠিক নয়। বাংলাদেশের অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বিষয়েও একই নীতি প্রযোজ্য।”

কলকাতার টালিপাড়ার প্রসঙ্গেও শমীক সরব হন। তিনি বলেন, “টালিপাড়ার দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের উচিত বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা। অরূপ বিশ্বাস তো ওপার বাংলার মানুষ, টালিউডের অনেক কিছু তার নিয়ন্ত্রণে। শুধু খেলাধুলার বিষয় নয়, টালিউডের শিল্পী ও চলচ্চিত্রের ওপরও তার দায়িত্ব থাকা উচিত। যাঁরা ওপারে অত্যাচার করেন, তাঁরা এপারে এসে সিনেমা করবেন এবং প্রতিবাদ করবেন না, এটা হতে পারে না। প্রসেনজিতের মতো প্রখ্যাত অভিনেতা বা গৌতম ঘোষের মতো পরিচালককে এমন পরিস্থিতিতে সোচ্চার হতে হবে।”

তিনি উল্লেখ করেন যে, “এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র একটি বার্তা দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর চলমান অত্যাচার অমানবিক এবং নিন্দনীয়। ওপার বাংলার শিল্পীরা যদি এই ইস্যুতে নীরব থাকেন, তবে তাদের কাজ বর্জন করা উচিত।”

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ধর্মের ভিত্তিতে আমরা কখনোই শিল্পীদের বিচার করি না। কিন্তু বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে এখন সবাইকে সরব হতে হবে। এটি মানবাধিকারের প্রশ্ন এবং এটি উপেক্ষা করা যায় না।”

শমীক ভট্টাচার্য তার বক্তব্যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতার ঘটনাগুলোরও বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ধর্মীয় নির্যাতন ও অত্যাচারের ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। এমন অবস্থায় ওপার বাংলার শিল্পীদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। তাদের উচিত হবে নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখা এবং সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানো।”

বাংলাদেশি শিল্পীদের পশ্চিমবঙ্গে কাজ করা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। তবে শমীক ভট্টাচার্যের এই মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। তার মতে, ওপার বাংলার শিল্পীরা পশ্চিমবঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে চাইলে তাদের ওপারের ধর্মীয় সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিতে হবে। তার বক্তব্যে রাজনৈতিক এবং সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

এই বিতর্কে টালিউডের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কী অবস্থান নেন এবং ওপার বাংলার শিল্পীরা কী প্রতিক্রিয়া জানান, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য যে ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে প্রভাবিত করতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

তারিখ: ১৭.১২.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, ভারত সরকারের দৃঢ় অবস্থানের দাবি তৃণমূলের

তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের নিন্দা করে সংসদে বিবৃতি দাবি করেছেন। বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রের সফরে হওয়া আলোচনা স্বচ্ছ করার আহ্বান জানান। ভারত সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার ওপর জোর দিয়েছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, ভারত সরকারের দৃঢ় অবস্থানের দাবি তৃণমূলের

তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা করেছেন এবং ভারতের সংসদে একটি বিবৃতি প্রদানের দাবি করেছেন। সম্প্রতি বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রের ঢাকা সফরের আলোচনার স্বচ্ছতার দাবি তুলে তিনি বলেন, ভারত সরকারের উচিত দৃঢ়ভাবে এই হামলার নিন্দা করা। মিশ্র বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গঠনের ওপর জোর দেন। ইসকন পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার প্রসঙ্গেও ভারত গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর ধারাবাহিক আক্রমণ এবং মন্দির ভাঙচুর নিয়ে আলোচনা হয়।

নয়াদিল্লি, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪: তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর চলমান অত্যাচারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রের সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের আলোচনার বিষয়ে স্বচ্ছতা থাকা উচিত এবং সংসদে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রদান করা আবশ্যক। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর ক্রমবর্ধমান হামলা, লুটপাট এবং ধর্মীয় স্থান ভাঙচুরের প্রেক্ষিতে ভারত সরকারের উচিত বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা।

বিক্রম মিশ্রের ৯ ডিসেম্বরের ঢাকা সফর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের প্রথম যোগাযোগ। এটি কার্যত বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই সরকার, শেখ হাসিনাকে অপসারণের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়। সফরকালে মিশ্র বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং সম্প্রদায়িক শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন। বিশেষত, তিনি ইসকনের গুরুত্বপূর্ণ পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বলেন, সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেন, ভারত সরকারকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে এবং বাংলাদেশের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে যাতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা বন্ধ হয়। তিনি দাবি করেন, বিদেশ সচিবের আলোচনা এবং সফর সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য সংসদে উন্মুক্ত করতে হবে।

এই সফরে মিশ্র বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নত রাখার জন্য দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অপরিহার্য। তবে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রেক্ষিতে ভারতের উদ্বেগ গভীর। বিশেষত, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং ধর্মীয় স্থান ভাঙচুরের ঘটনাগুলি দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং অত্যাচারের ঘটনা উদ্বেগজনক। অভিযোগ উঠেছে যে সংখ্যালঘুদের ওপর ধারাবাহিক হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কট্টরপন্থীদের হাতে মন্দির এবং অন্যান্য ধর্মীয় স্থানগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এমনকি, লুটপাট এবং শারীরিক আক্রমণের ঘটনাও নিয়মিত ঘটছে।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অধিকার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসকন পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের ঘটনায় ভারত সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই ঘটনা বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশ্ন তুলছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ এই পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রভাবিত হবে, তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে ভারতকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং প্রতিবেশী দেশের সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে বাধ্য করতে হবে।

সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত হামলা এবং ধর্মীয় স্থানের অবমাননা বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকারের কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন বাংলাদেশের দিকে। ভারতের তরফে কূটনৈতিক চাপে কীভাবে এই সমস্যার সমাধান হয়, সেটাই দেখার বিষয়।

তারিখ: ১৭.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন চলছেই, এপার বাংলায় প্রতিবাদ মিছিল

বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন, মন্দির ভাঙচুর, সনাতনী নেতাদের উপর হামলা অব্যাহত। ভয়েস অফ বাংলাদেশি হিন্দুজের রিপোর্টে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে হামলার অভিযোগ। এদিকে এপার বাংলায় প্রতিবাদে মিছিল, বিধায়কদের অংশগ্রহণ। সংখ্যালঘু হিন্দুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন চলছেই, এপার বাংলায় প্রতিবাদ মিছিল

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতন ক্রমশ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। মন্দিরে ভাঙচুর, বাড়িঘরে আগুন, এবং সনাতনী নেতাদের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলার খবর উঠে এসেছে। ভয়েস অফ বাংলাদেশি হিন্দুজের দাবি, কক্সবাজারের জয়দেব নন্দীর উপর কট্টরপন্থীরা হামলা চালিয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামে এক বেকারির মালিকের বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে। ওপার বাংলার হিন্দু নারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং জীবনযাপন নিয়েও গুরুতর সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এদিকে, এপার বাংলার বনগাঁ ও নীলগঞ্জে প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। বিধায়ক স্বপন মজুমদার ও অসীম সরকার মিছিলে উপস্থিত ছিলেন। এই নির্যাতনের শেষ কোথায় তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।(সূত্রঃ এবিপি লাইভ)

কলকাতা, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষত, ইউনুস সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়েছে। মন্দির ভাঙচুর, হিন্দুদের বাড়ি-দোকান জ্বালিয়ে দেওয়া এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর আঘাত করার ঘটনা একের পর এক উঠে আসছে। ওপার বাংলার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এখন ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

মছলন্দপুরের সাধনা দে ও রিনা দাস, যাঁরা ব্যবসার কাজে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা ছিল ভয়ঙ্কর। রিনাদেবী জানিয়েছেন, কীভাবে হিন্দু নারীদের উপর চাপ সৃষ্টি করে তাদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা চলছে। তিনি অভিযোগ করেন, হিন্দু নারীদের সিঁদুর পরার স্বাধীনতা পর্যন্ত নেই। অনেক ক্ষেত্রে ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে হেনস্থা ও নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে।

মাদারিপুরের বাসিন্দা লিপিকা বিশ্বাস আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানান, ধর্মীয় প্রতীক কণ্ঠি ধারণ করায় তাঁর কণ্ঠি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এমনকি, সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস বিনা বিচারে দিনের পর দিন জেলে আটকে রয়েছেন। তাঁর আইনজীবীরাও হামলার শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশে কট্টরপন্থীদের অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না সাংবাদিক, অধ্যাপক বা সাধারণ ইসকন ভক্তরাও।

ভয়েস অফ বাংলাদেশি হিন্দুজের তরফে কক্সবাজারে সনাতনী জাগরণ জোটের সদস্য জয়দেব নন্দীর উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। তাঁদের দাবি, কট্টরপন্থী মৌলবাদীরা নৃশংসভাবে জয়দেব নন্দীর উপর হামলা চালিয়েছে। চট্টগ্রামে এক বেকারির মালিকের বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনাও আলোচিত হয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ছবিগুলো এই ঘটনাগুলোর ভয়াবহতা তুলে ধরে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের এই করুণ অবস্থায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে এপার বাংলায়। রবিবার বনগাঁর নহাটায় সনাতনী সম্প্রদায় মিছিল করেছে। মিছিলে অংশ নেন বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদার ও হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। মতুয়া সম্প্রদায়ও নীলগঞ্জে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়। তাঁদের দাবি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর এই লাগাতার নির্যাতনের শেষ কোথায়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ওপার বাংলার অনেক হিন্দু ভারতের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তাঁদের আশা, ভারত সরকার এই বিষয়ে আরও জোরালো ভূমিকা নেবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকারের তরফে এই নির্যাতন রোধে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ উঠেছে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারত যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল, তা আজও স্মরণীয়। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই সম্পর্ক কতটা অটুট থাকবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

তারিখ: ১৭.১২.২০২৪

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর লোকসভায় বাংলাদেশ ইস্যুতে বক্তব্য, দাবি পদক্ষেপের

লোকসভায় বিজয় দিবস স্মরণে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়ন বন্ধে ভারতের হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছেন। তিনি ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ১৯৭১-এর ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বর্তমান প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় সমালোচনা করেন।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর লোকসভায় বাংলাদেশ ইস্যুতে বক্তব্য, দাবি পদক্ষেপের

বিজয় দিবস স্মরণে লোকসভায় দাঁড়িয়ে সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ঐতিহাসিক ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতীয় সেনা ও সাধারণ মানুষের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। প্রিয়াঙ্কা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন। তিনি ভারত সরকারকে বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে আহ্বান জানান। বাংলাদেশে কট্টরপন্থীদের হিংসা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিজয় দিবস ভাষণে বিষয়টি উল্লেখ না করায় প্রশ্নও তোলেন প্রিয়াঙ্কা।

নয়াদিল্লি, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪: লোকসভায় বিজয় দিবস উপলক্ষে দাঁড়িয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্মরণ করেন। তিনি জানান, সেই ঐতিহাসিক বিজয় সম্ভব হয়েছিল ভারতীয় সেনাদের অসীম সাহসিকতা ও দেশের মানুষের অঙ্গীকারের জন্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাহসী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন তিনি। তাঁর মতে, যখন বিশ্ব নীরব ছিল, তখন ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত বাংলাদেশকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, আজকের বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বেড়েই চলেছে। হিন্দু, খ্রিস্টান, ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা কট্টরপন্থীদের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। এই অবস্থায় ভারত সরকারকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার এবং বাংলাদেশের প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সংখ্যালঘু নিপীড়ন বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

প্রিয়াঙ্কা আরও বলেন, ১৯৭১ সালে ভারতীয় সেনার কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের সেই ঐতিহাসিক ছবিটি আজকের বাংলাদেশে অবহেলিত। তিনি বলেন, এই ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসন বিজয় দিবসে ভারতের অবদানের উল্লেখ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিজয় দিবস উপলক্ষে ভাষণ দেন। তবে তাঁর ভাষণে বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তেমন কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মোদী শুধু বিজয় দিবসকে ভারতের জয় হিসেবে উল্লেখ করেন। এই বিষয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী প্রশ্ন তোলেন, কেন ভারত সরকার বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষায় আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনের তদারকি প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ ইউনুস বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তবে সেখানে ভারতের অবদানের বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করেননি। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই বিষয়েরও সমালোচনা করেন এবং মনে করিয়ে দেন, ভারতের জনগণ ও সেনাবাহিনীর অবদান ছাড়া ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব হতো না।

বাংলাদেশ ইস্যুতে প্রিয়াঙ্কা দুটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তোলেন। প্রথমত, ভারত সরকারকে অবিলম্বে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ভারতের উচিত বাংলাদেশের প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করে সংখ্যালঘু নিপীড়ন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। তিনি মনে করেন, এটি শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রক্ষার জন্যও প্রয়োজন।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের বিদেশ সচিব ইতোমধ্যেই সফর করেছেন এবং সংখ্যালঘু নিপীড়নের সমালোচনা করেছেন। তবে প্রিয়াঙ্কার মতে, এতেও পরিস্থিতির বিশেষ কোনো পরিবর্তন আসেনি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভারত সরকার দ্রুত এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।

লোকসভায় দাঁড়িয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেন, বিজয় দিবস শুধুমাত্র বাংলাদেশের নয়, এটি ভারত এবং বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করায়, দুই দেশের জনগণের মধ্যকার গভীর সম্পর্ক এবং ঐক্যের কথা। তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতে ভারত এবং বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করে এই সম্পর্ক আরও মজবুত করবে।

তারিখ: ১৭.১২.২০২৪

বিজয় দিবসে বাংলাদেশ-ভারত সেনাবাহিনীর সৌজন্য সাক্ষাৎ আখাউড়ায় অনুষ্ঠিত

মহান বিজয় দিবসে আখাউড়া-আগরতলা চেকপোস্টে বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের অফিসারদের মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উভয় দেশের প্রতিনিধিগণ শুভেচ্ছা উপহার বিনিময় করেন। ১৮ মিনিটের এই সাক্ষাৎ দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করেছে।
বিজয় দিবসে বাংলাদেশ-ভারত সেনাবাহিনীর সৌজন্য সাক্ষাৎ আখাউড়ায় অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আখাউড়া-আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের অফিসারদের মধ্যে একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১১:৩০ থেকে ১১:৪৮ পর্যন্ত চলা এই সাক্ষাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ তারিক এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষে মেজর জেনারেল সুমিত রানা উপস্থিত ছিলেন। উভয় দেশের প্রতিনিধিগণ সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং শুভেচ্ছা উপহার বিনিময় করেন। ১৬ ডিসেম্বর এবং পহেলা বৈশাখের মতো জাতীয় দিবসগুলোতে এ ধরনের সাক্ষাতের প্রচলন উভয় দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান।

আখাউড়া, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) আখাউড়া-আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের অফিসারদের মধ্যে একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১:৩০ মিনিটে শুরু হওয়া এই সাক্ষাৎ ১৮ মিনিট স্থায়ী হয় এবং ১১:৪৮ মিনিটে শেষ হয়। বিজয় দিবসের মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সৌজন্য সাক্ষাতের ধারাবাহিকতায় এই আয়োজন সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জিওসি ৩৩ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, কুমিল্লা এরিয়ার মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ তারিক, এনডিইউ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন চীফ অব স্টাফ, ১০১ এরিয়ার মেজর জেনারেল সুমিত রানা। দুই দেশের সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের এই সাক্ষাতে উভয় পক্ষই আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করেন।

এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পক্ষের প্রতিনিধি দলে ছিলেন তিনজন স্টাফ অফিসার এবং একজন অধিনায়ক পর্যায়ের বিজিবি অফিসার। অন্যদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দলে ছিলেন তিনজন অফিসার এবং অধিনায়ক পর্যায়ের বিএসএফ অফিসার। দুই দেশের প্রতিনিধিগণ নিজেদের মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং শুভেচ্ছা উপহার বিনিময় করেন।

উল্লেখযোগ্য যে, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং পহেলা বৈশাখের মতো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবসগুলোতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এ ধরনের সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানের প্রচলন দীর্ঘদিন ধরে চালু রয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

তারিখ: ১৭.১২.২০২৪

চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র, বললেন জীবনের ঝুঁকি নিয়েও আইনি সাহায্য দেবেন!

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির জন্য চট্টগ্রাম আদালতে লড়বেন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী রবীন্দ্র ঘোষ। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার চিন্ময়কৃষ্ণ জামিন পাননি। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিক্ষোভ ও নিরাপত্তার সংকট আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র, বললেন জীবনের ঝুঁকি নিয়েও আইনি সাহায্য দেবেন!

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির জন্য চট্টগ্রাম আদালতে আইনি লড়াই চালাবেন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। নিজের জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তিনি আদালতে সওয়াল করবেন বলে জানিয়েছেন। ২ জানুয়ারি আদালতে তাঁর জামিনের শুনানি রয়েছে। চিন্ময়ের বিরুদ্ধে ওঠা মামলাগুলোতে তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবী সওয়াল করতে চাননি, যা আদালতে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। রবীন্দ্র ঘোষ এ ঘটনায় আইনজীবীদের হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিক্ষোভ দেখা দেয়। ভারতের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

ব্যারাকপুর, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪: জীবনের ঝুঁকি নিয়েও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের পক্ষে চট্টগ্রাম আদালতে সওয়াল করবেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। সোমবার ব্যারাকপুরে চিকিৎসার জন্য ছেলের কাছে অবস্থানরত রবীন্দ্র ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে জানান, তিনি ভয় পান না এবং মানবাধিকারের স্বার্থে সবসময় এগিয়ে আসেন। তিনি বলেন, “আমি পালানোর জন্য ভারতে আসিনি। আগামী ২ জানুয়ারি আদালতে চিন্ময়কৃষ্ণের পক্ষে সওয়াল করতে আমি আবার বাংলাদেশে যাব।”

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের শুনানি রয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণ দাস, যিনি বাংলাদেশের ইসকনের প্রাক্তন সদস্য ও সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র, তাকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। ডিসেম্বর মাসে মামলাটি আদালতে উঠলেও তিনি কোনো আইনজীবীর সহায়তা পাননি, যার ফলে মামলাটি এক মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়।

রবীন্দ্র ঘোষ, যিনি বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের চেয়ারম্যান, আদালতে চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের জন্য এবং মামলার শুনানি এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালতে উপস্থিত শতাধিক আইনজীবীর চিৎকার ও বিরোধিতার কারণে শুনানি স্থগিত হয়ে যায়। রবীন্দ্র ঘোষ অভিযোগ করেন যে, আদালত কক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে হেনস্থার পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয় এবং বিচারক তাঁর আবেদন মঞ্জুর করতে চাইলেও বিরোধিতার মুখে তা স্থগিত থাকে।

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর চট্টগ্রাম এবং রংপুরসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। বিক্ষোভকারীরা চিন্ময়ের মুক্তির দাবি জানিয়ে রাস্তায় নামে। এই অস্থির পরিস্থিতি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কেও প্রভাব ফেলেছে। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

রবীন্দ্র ঘোষের ছেলে রাহুল ঘোষ জানিয়েছেন, রবীন্দ্র ঘোষ সম্প্রতি একটি দুর্ঘটনায় চোট পান এবং অস্ত্রোপচারের পরে চিকিৎসার প্রয়োজনে ভারতে আসেন। তবে তিনি তাঁর বাবার বাংলাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ভারতে আসতে রবীন্দ্র ঘোষকে তাঁর পরিচিতজনরা সহায়তা করেছেন।

রবীন্দ্র ঘোষের এই সাহসিকতা এবং চিন্ময়কৃষ্ণের পক্ষে তাঁর আইনি লড়াই বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর আন্তর্জাতিক নজর আকর্ষণ করেছে। চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তি এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

তারিখ: ১৭.১২.২০২৪

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর সহিংসতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন পরিস্থিতি মনিটর করছেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চাপ দিচ্ছেন। ভারতীয়-আমেরিকানরা প্রতিবাদ করছে, বাইডেন ও ট্রাম্প প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর সহিংসতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন পরিস্থিতি মনিটর করছেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চাপ দিচ্ছেন। ভারতীয়-আমেরিকানরা প্রতিবাদ করছে, বাইডেন ও ট্রাম্প প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ।

ওয়াশিংটন, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা যোগাযোগ উপদেষ্টা জন কার্বি জানান, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তী শাসক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি যাতে তাদের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করা যায় এবং তারা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়।” বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্যাপারে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।

এ সময়, কার্বি আরও জানান, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। আগস্ট মাসে ব্যাপক বিরোধী আন্দোলনের মুখে হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এর পর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়সহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতার ঘটনা বেড়ে যায় এবং মন্দিরগুলিতে আক্রমণ চালানো হয়।

তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের সমস্ত নেতা ও সরকারের কাছে স্পষ্টভাবে বলেছি যে, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্তর্বর্তী সরকারের নেতারা বারবার ঘোষণা করেছেন যে, তারা সমস্ত বাংলাদেশির সুরক্ষা নিশ্চিত করবেন, যেকোনো ধর্ম বা জাতির হোক না কেন।” এর পরেই তিনি যোগ করেন, “আমরা তাদের এই প্রতিশ্রুতির প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে চাই।”

এই ঘোষণার কিছু সময় পর, ভারতীয়-আমেরিকানদের বিভিন্ন শহরে, যেমন হোয়াইট হাউসের সামনে, শিকাগো, নিউইয়র্ক, স্যান ফ্রান্সিসকো, ডেট্রয়েট, হিউস্টন এবং আটলান্টায় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। তারা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর চলমান সহিংসতা বন্ধ করতে সাহায্য করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

এছাড়া, ভারতীয়-আমেরিকান কংগ্রেসম্যান রাজা কৃষ্ণমূর্তিরও একটি বিশেষ আবেদন ছিল। তিনি সেনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির সদস্যদের কাছে আবেদন করেন যে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর চলমান সহিংসতা, বিশেষ করে হিন্দুদের বিরুদ্ধে হামলা, বিষয়টি সরাসরি আলোচনার জন্য আগামী সেনেট কনফার্মেশন শুনানির সময় তুলে ধরুন। এ সময়, তিনি বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে লক্ষ্যভিত্তিক সহিংসতা অব্যাহত থাকায় আমি সেনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির সদস্যদের আহ্বান জানাচ্ছি যাতে তারা নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে মার্কো রুবিওর অনুমোদন শুনানির সময় এই সংকটের বিষয়ে সরাসরি আলোচনা করেন।”

মার্কো রুবিওকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তবে তার শুনানির তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি।

সম্প্রতি, ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায়ের সদস্যরা হোয়াইট হাউস থেকে মার্কিন কংগ্রেস পর্যন্ত এক বড় মিছিল বের করেন, যেখানে তারা “আমরা ন্যায় চাই” এবং “হিন্দুদের রক্ষা করুন” স্লোগান দেন। এই মিছিলের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর চলমান আক্রমণের বিরুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন এবং আগামী ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে পদক্ষেপ নেওয়া।

উত্তস অভি চক্রবর্তী বলেন, “বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় এবং বৃহত্তর ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বাংলাদেশে চলমান সহিংসতা, বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও রাঙ্গপুর অঞ্চলে, এবং দেশের অন্যান্য অংশে চলমান আক্রমণের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছে।”

উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাঙ্গপুর সহ কয়েকটি অঞ্চলে মন্দিরে আক্রমণ, বাড়ি ভাঙচুর এবং দোকানপাটে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় বাংলাদেশের বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন ও ধর্মীয় নেতারা নিন্দা জানিয়েছেন এবং সরকারের প্রতি সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এবং স্থানীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহিংসতা বন্ধ করার জন্য প্রয়াস চালাচ্ছে, তবে সহিংসতার বিস্তার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

এই মুহূর্তে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন বাংলাদেশের সরকারকে সেইসব গোষ্ঠী ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও উৎসাহিত করছে যারা সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে এবং সহিংসতার জন্য দায়ী।

বাইডেন প্রশাসন এবং ট্রাম্প প্রশাসন উভয়ই আশা করছে যে, বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক চাপের মুখে আসন্ন সময়ে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং এমন সহিংসতার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

সুনামগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ধর্ম অবমাননার ঘটনায় হিন্দুদের বাড়ি, দোকান ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর আকাশ দাসের বিতর্কিত পোস্টের কারণে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ ১২ জনের নামসহ ১৫০-১৭০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
সুনামগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ধর্ম অবমাননার ঘটনায় হিন্দুদের বাড়ি, দোকান ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর আকাশ দাসের বিতর্কিত পোস্টের কারণে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ ১২ জনের নামসহ ১৫০-১৭০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪: চলতি মাসের শুরুর দিকে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার এলাকার মংলারগাঁও গ্রামে ধর্ম অবমাননার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি, দোকানপাট ও লোকনাথ মন্দিরে ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধনের ঘটনা ঘটে। ৩ ডিসেম্বর আকাশ দাস নামের এক যুবক তার ফেসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্মকে কটাক্ষ করে একটি অবমাননাকর পোস্ট দেয়, যা দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পোস্টটি ডিলিট করা হয়, তবে এর স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ঘটনার পর দোয়ারাবাজার থানার পুলিশ আকাশ দাসকে আটক করে, তবে স্থানীয়রা পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আকাশ দাসকে দোয়ারাবাজার থানায় না নিয়ে সদর থানায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশ ঘটনাটি জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং পুলিশের উপস্থিতি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

এ ঘটনার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করার জন্য কাজ শুরু করে। ১৪ ডিসেম্বর পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় মোট ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫০-১৭০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে—তারা হলেন আলীম হোসেন (১৯), সুলতান আহমেদ রাজু (২০), ইমরান হোসেন (৩১) এবং শাজাহান হোসেন (২০)। পুলিশের দাবি, এ ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত রয়েছে এবং তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনা সম্পর্কে পুরোপুরি তদন্ত শেষ হওয়ার আগে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে। সুনামগঞ্জ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে এবং এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ তার কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

এদিকে, স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং এ ধরনের সহিংস ঘটনার বিরুদ্ধে আরও শক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। বিশেষ করে মন্দির ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, এমন ঘটনা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না এবং এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।

এ ঘটনায় সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেন। পুলিশ জানায়, তারা এই ঘটনার পেছনে থাকা মূল অপরাধীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে এবং সুনামগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকার জনগণের মধ্যে ক্ষোভ এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও, পুলিশ প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে যে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এখনও পর্যন্ত এ ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার হলেও, পুলিশের তদন্ত চলছে এবং আরও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া, কর্তৃপক্ষ এই ধরনের ধর্মীয় উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে জানানো হয়েছে।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

সংখ্যালঘু পীড়ন চিন্তার, ইউনূসকে বার্তা আমেরিকার

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বাড়তে থাকা ঘটনায় আমেরিকা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাইডেন প্রশাসন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করার পরামর্শ দিচ্ছে। ট্রাম্পের মন্তব্যও পরিস্থিতিকে আরো জটিল করেছে।
সংখ্যালঘু পীড়ন চিন্তার, ইউনূসকে বার্তা আমেরিকার

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বাড়তে থাকা ঘটনায় আমেরিকা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাইডেন প্রশাসন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করার পরামর্শ দিচ্ছে। ট্রাম্পের মন্তব্যও পরিস্থিতিকে আরো জটিল করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। এর আগে, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দীপাবলির শুভেচ্ছাবার্তায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইউনূস সরকারের আমলে সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টানদের ওপর নির্যাতন নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, ইউনূস সরকারের অধীনে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারের ঘটনা বাড়ছে এবং এটি বাইডেন সরকারের ব্যর্থতার একটি দৃষ্টান্ত। তবে, ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে, কূটনীতিকদের ধারণা, তিনি ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের প্রতি আমেরিকার নীতি পরিবর্তন হতে পারে। এর আগেই শুক্রবার, আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন কোঅর্ডিনেটর জন কার্বি জানিয়েছেন, “আমরা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি খুব, খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। প্রেসিডেন্ট বাইডেনও এই বিষয়ে গভীরভাবে নজর দিচ্ছেন।”

কার্বি আরও জানান, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে এবং এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আমেরিকা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি যে, বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতারা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের মুখপাত্রেরা তাদের আমলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার কথা অস্বীকার করে দাবি করেন যে, “এগুলো ভারতের অপপ্রচার।” তাদের যুক্তি ছিল, “ধর্মীয় কারণে নয়, রাজনৈতিক কারণে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। তারা আওয়ামী লীগের সমর্থক হওয়ায় আক্রমণের শিকার হচ্ছে।” তবে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের পাল্টা প্রশ্ন ছিল, “যদি ধর্মীয় কারণে হামলা না হয়, তবে ইউনূস কি হামলাকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন না?”

বাংলাদেশের শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে এক বিতর্কও তৈরি হয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হবে। ওই দিন পাকিস্তানি সেনারা ঢাকায় স্বাধীনতাপন্থী শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদদের হত্যা করেছিল। তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল বাঙালিদের মেধাশূন্য করা। বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামের নেতা শফিকুর রহমান এ বার জামায়াত কর্মীদের যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ এবং ‘বিজয় দিবস’ পালনের পরামর্শ দিয়েছেন।

এ বছর বিজয় দিবসের উদযাপন নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ইউনূস সরকার এই বছর সেনাদের কুচকাওয়াজ এবং শোভাযাত্রা বাদ দিয়েছে, তবে সব স্কুল-কলেজে দিবসটি পালনের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু, বিজয় দিবসের সরকারি পোস্টার এবং ফেস্টুনে মুক্তিযুদ্ধের বদলে হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনের ছবি দেখা যাচ্ছে। একটি ফেস্টুনে ‘বিজয় দিবস’ লেখার নীচে দু’হাত ছড়ানো আবু সাইদের ছবি রয়েছে, যাকে পুলিশ গুলিতে হত্যা করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। তবে, ময়না তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আবু সাইদ গুলিতে নয়, মাথায় রহস্যজনক আঘাতের কারণে মারা গেছেন।

এছাড়া, ইউনূস সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি ভারতের অপপ্রচার বলে দাবী করা হলেও, পররাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্যে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি আমেরিকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছে এবং তাদের লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।

এদিকে, ট্রাম্পের আমেরিকার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনার মধ্যে, কূটনীতিকদের ধারণা, বাংলাদেশ-আমেরিকা সম্পর্কের নীতি পরিবর্তন হতে পারে। আমেরিকার তৎকালীন প্রশাসন আরও বেশি নজর দিতে পারে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাগুলির প্রতি এবং এই সম্পর্ক আরও কঠোর হতে পারে।

এছাড়া, ট্রাম্পের মন্তব্যের পর, বাইডেন প্রশাসনও তাদের উদ্বেগ স্পষ্ট করেছে এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতির প্রতি তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাদের মতে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এমন যে, সেখানকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশ

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সংসদে বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়। ভারত আশা করে, বাংলাদেশ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশ

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সংসদে বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়। ভারত আশা করে, বাংলাদেশ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর গত শুক্রবার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর হামলার বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর মতে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ গত কিছু সময়ে ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি সংসদে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান পরিষ্কার করেন।

লোকসভার সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসির প্রশ্নের জবাবে, জয়শঙ্কর বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ একাধিকবার ঘটেছে, যা আমাদের উদ্বেগের কারণ। আমরা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সম্প্রতি আমাদের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকা সফর করেছেন, সেখানেও এই বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ভারত আশা করে, বাংলাদেশ নিজস্ব স্বার্থে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেবে।

ওয়াইসি সংসদে প্রশ্ন করেন, “আমরা বাংলাদেশে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভারত সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে যাতে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের এবং মন্দিরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়?” এই প্রশ্নের জবাবে, জয়শঙ্কর বলেন, “ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি দীর্ঘস্থায়ী, পারস্পরিক উপকারী সম্পর্ক হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আমরা আশা করি। বর্তমান বাংলাদেশ সরকারও এ বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে এবং তারা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বস্ত করেছে।”

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি ঢাকা সফরকালে, তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতি ভারতের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন। মিশ্রি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় সম্পত্তির ওপর হামলার ঘটনাগুলো নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছি। ভারত বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করতে আগ্রহী।” তিনি আরও বলেন, “ভারত এই আশাবাদ ব্যক্ত করছে যে বাংলাদেশ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রতি একটি ইতিবাচক, নির্মাণমূলক এবং পারস্পরিক সুবিধাজনক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবে।”

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব তার সফরের সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের অবস্থান জানাতে চেয়েছিলেন। তিনি মন্ত্রীপরিষদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানান, বাংলাদেশ সরকার হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। “এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আমরা আশা করি যে, বাংলাদেশের নতুন প্রশাসন দেশের জনগণের স্বার্থে সহিংসতা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে,” বলেন মিশ্রি।

এছাড়া, মিশ্রি জানিয়েছেন যে বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ এবং সংযোগ প্রকল্পগুলোর মধ্যে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দুই দেশের মধ্যে রেলপথ, বাস সার্ভিস এবং অভ্যন্তরীণ জলপথের সংযোগের উন্নতি হয়েছে বলে জানান। তবে, বাংলাদেশ-ভারত মধ্যে যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা এখনো বন্ধ রয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এও জানান, “বাংলাদেশের সহিংসতার বিষয়টি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের ঘটনাগুলি বেশ কিছুবার ঘটেছে, এবং আমাদের আশা যে বাংলাদেশ সরকার এই সহিংসতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।” তিনি আরও যোগ করেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যত সম্পর্কে উভয় পক্ষের উদ্বেগের বিষয়গুলো মিটমাট হয়েছে এবং সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে।

এদিকে, মিশ্রি জানান, “বাংলাদেশের একাধিক সন্ত্রাসী যাদের বিরুদ্ধে ভারত বিরোধী বক্তব্য রয়েছে, তারা জামিনে মুক্তি পেয়েছে, এটি ভারতের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।” তিনি জানান, ভারত বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে কথা বলেছে এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত ‘ভুল তথ্য’ এবং ঘটনার ‘অতিরঞ্জন’ বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। তবে, মিশ্রি জানিয়েছেন, “আমরা নিশ্চিত যে, বাংলাদেশে যে কিছু ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই ঘটনাগুলির প্রতিকার প্রয়োজন।”

এছাড়া, মিশ্রি বলেন, ঢাকা সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের বিদেশনীতি উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জশিম উদ্দিন এবং প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।

জয়শঙ্কর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে আশাবাদী। তিনি সংসদে বলেন, “আমরা আশা করি, বাংলাদেশে নতুন প্রশাসন তার জনগণের স্বার্থে একটি স্থিতিশীল, উপকারী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালে ভারত বাংলাদেশে ১৬ লাখ ভিসা প্রদান করেছে, যা কোনো একক দেশ থেকে ভারত প্রদত্ত সর্বোচ্চ ভিসা সংখ্যা।

এছাড়া, মিশ্রি জানান, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নত করার জন্য ভারতীয় সরকার বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ নিয়েছে এবং এই সম্পর্কের ভিত্তি একেবারে পারস্পরিক সম্পর্কের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওপর শেখ হাসিনার সমালোচনার প্রভাব নিয়ে মন্তব্য

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সমালোচনার জন্য ভারত সরকার দায়ী নয়। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একমাত্র রাজনৈতিক দল বা সরকারের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাংলাদেশ জনগণের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় ভারত, জানায় মিশ্রি।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওপর শেখ হাসিনার সমালোচনার প্রভাব নিয়ে মন্তব্য

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সমালোচনার জন্য ভারত সরকার দায়ী নয়। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একমাত্র রাজনৈতিক দল বা সরকারের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাংলাদেশ জনগণের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় ভারত, জানায় মিশ্রি।

ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নতি এবং বিরোধ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সম্প্রতি ভারতের সংসদের স্থায়ী কমিটির কাছে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বাংলাদেশে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে তার সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

মিশ্রি জানিয়েছেন যে, ভারতের সরকার শেখ হাসিনার সমালোচনা বা বক্তব্যের প্রতি কোনো সমর্থন দেয় না। তিনি বলেন, “ভারত বাংলাদেশে কোনো একক রাজনৈতিক দলের বা সরকারের পক্ষে দাঁড়াবে না, বরং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক জনগণের স্বার্থে বজায় থাকবে।” মিশ্রি আরো বলেন, শেখ হাসিনা “ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যম” ব্যবহার করে এসব মন্তব্য করছেন এবং ভারত সরকার তাকে কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুযোগ দেয়নি।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ভারতের অবস্থানও তিনি পরিষ্কার করেন। গত সোমবার ঢাকা সফরকালে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ভারতের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ভারতের সম্পর্ক শুধুমাত্র কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা সরকারের সঙ্গে নয়, বরং এটি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক।” তিনি এও বলেন যে, ভারত ভবিষ্যতে বাংলাদেশের যে কোনো সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।

মিশ্রি আরও জানিয়েছেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্যে মানবাধিকার এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তিনি জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের ঘটনা ভারতের জন্য দুঃখজনক এবং এটি সম্পর্কের একটি উদ্বেগজনক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, মিশ্রি বলেন, ভারত আশা করে যে, বাংলাদেশ তার দেশের স্বার্থেই এসব আক্রমণ বন্ধ করবে এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব তার বক্তব্যে আরো বলেছেন যে, বাংলাদেশে ভারতীয় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ভালো ফল দিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তান ও চীন ছাড়া ভারত প্রায় সব প্রতিবেশী দেশেই গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যার মধ্যে বাংলাদেশও অন্যতম। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ভারতের জন্য বৃহত্তম বাণিজ্যিক ও সংযোগ সহযোগী, এবং দুই দেশের মধ্যে রেলপথ, বাস পরিষেবা, এবং অভ্যন্তরীণ জলপথের সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে, বর্তমানে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।”

মিশ্রি ভারতের পক্ষ থেকে জানায়, ভারত বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনাগুলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে, তিনি বলেন, বাংলাদেশের সরকার সম্প্রতি ৮৮ জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে, যারা সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং কিছু অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।

মিশ্রি তার বক্তব্যে জানায়, ভারত সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বাংলাদেশে বন্দী থাকা কিছু “সন্ত্রাসী” ব্যক্তিদের মুক্তি। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ভারত বিরোধী বক্তব্য দেয় এমন কিছু সন্ত্রাসীকে মুক্তি দিয়েছে, যা ভারতীয় পক্ষের জন্য একটি গভীর উদ্বেগের বিষয়।”

এছাড়া, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশে ঘটমান পরিস্থিতি নিয়ে “ভুল তথ্য প্রচারের” অভিযোগ তোলা হয়েছে, যার ব্যাপারে মিশ্রি জানান যে, দুই দেশই তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

মিশ্রি আরও জানায়, তার ঢাকা সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের বিদেশনীতি উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জশিম উদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তিনি এ সময় বলেন, “বাংলাদেশের জন্য আমাদের একটাই আশা, এটি একটি গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক দেশ হয়ে উঠুক।”

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরো উল্লেখ করেন, গত বছরে ভারত ১৬ লাখ ভিসা জারি করেছে, যা বাংলাদেশ থেকে আসা সবচেয়ে বড় সংখ্যক ভিসা। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশকে “যতটা সম্ভব ভালো প্রতিবেশী” হিসেবে দেখছে এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রেও উভয় দেশের মধ্যে কিছু দিক থেকে পারস্পরিক লাভজনক অবস্থান তৈরি হয়েছে।

মিশ্রি বলেন, তার ঢাকা সফর থেকে যে ফল পাওয়া গেছে, তাতে উভয় পক্ষই তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। তবে তিনি জানান, তিনি প্রফেসর ইউনুসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পর্যালোচনার বিষয়ে কোনো আলোচনা করেননি।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, একদিকে যেমন সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি করছে, অন্যদিকে তা দেশের অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ভারত এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকেই সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

বাংলাদেশ নিজ স্বার্থে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেবে : লোকসভায় জয়শঙ্কর

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ ভারতীয় উদ্বেগের বিষয়। তবে তিনি আশা করেন যে বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এছাড়া, তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে গণ্য করে।
বাংলাদেশ নিজ স্বার্থে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেবে : লোকসভায় জয়শঙ্কর

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ ভারতীয় উদ্বেগের বিষয়। তবে তিনি আশা করেন যে বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এছাড়া, তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে গণ্য করে।

নয়াদিল্লি, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ভারতীয় পার্লামেন্টের লোকসভায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ ভারত সরকারের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের নতুন সরকার নিজেদের স্বার্থে এবং দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।

এস জয়শঙ্কর তার বক্তৃতায় বলেন, “ভারত আশা করে, বাংলাদেশের নতুন সরকার ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষায় দিল্লির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী হবে।” তিনি জানান, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, বিশেষত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা, ভারতীয় সরকারকে গভীরভাবে চিন্তিত করে তুলেছে।

এছাড়া, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আরও বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর এমন আক্রমণ ভারতের জন্য উদ্বেগের।” এই মন্তব্যের পর, তিনি যুক্ত করেন, “আমরা আমাদের উদ্বেগের বিষয়ে তাদের (বাংলাদেশ) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকা সফর করেন, এবং তার বৈঠকে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।”

এ বিষয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এরই মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফরেও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এস জয়শঙ্কর বলেন, “এটি আমাদের প্রত্যাশা যে, বাংলাদেশ তার নিজস্ব স্বার্থে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য পদক্ষেপ নেবে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের উন্নতির জন্য এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।”

তবে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এও বলেন যে, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে, যা উভয় দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ভারতের উন্নয়ন প্রকল্পের একটি ভালো ইতিহাস রয়েছে। পাকিস্তান ও চীন বাদে প্রায় প্রতিটি প্রতিবেশী দেশে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ইতিহাসও দীর্ঘ।”

এই বিবৃতির মাধ্যমে এস জয়শঙ্কর আরো বলেন, “বাংলাদেশ ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, এবং আমরা আশা করি যে, উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।”

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য বাংলাদেশের সরকারের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভারতের পক্ষ থেকে এই উদ্বেগের বিষয়টি বারবার তুলে ধরা হলেও, বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে এখনো তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, মন্দির ভাঙচুরের মতো ঘটনাগুলো বর্তমানে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার নজরে রয়েছে।

এস জয়শঙ্করের মন্তব্যে ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। যদিও বাংলাদেশের সরকার তার পক্ষ থেকে বারবার বলেছে যে, তারা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে বাস্তবে এই প্রতিশ্রুতি কতটুকু পূর্ণ হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এমন পরিস্থিতিতে, ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আরও নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। এসব হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো কঠিন হয়ে উঠেছে, এবং সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

এস জয়শঙ্কর যে ভাষায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তা তার দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি এবং আগামীদিনের সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে একটি স্পষ্ট বার্তা। তবে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপের অভাব থাকলে, ভারতের উদ্বেগ আরও বাড়বে, যা উভয় দেশের সম্পর্কের উপর এক দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

অপহরণের হুমকি বাংলাদেশে, হিন্দু নাবালিকা পালিয়ে ভারতে

বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আসা ১৭ বছর বয়সি নাবালিকা বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন। তিনি দাবি করেছেন, মৌলবাদীরা তাকে এবং তার পরিবারকে অপহরণের হুমকি দিচ্ছিল। আইনি পথে ভারতে আসতে সময় অনিশ্চিত ছিল, তাই পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার করেন তিনি।
অপহরণের হুমকি বাংলাদেশে, হিন্দু নাবালিকা পালিয়ে ভারতে

বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আসা ১৭ বছর বয়সি নাবালিকা বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন। তিনি দাবি করেছেন, মৌলবাদীরা তাকে এবং তার পরিবারকে অপহরণের হুমকি দিচ্ছিল। আইনি পথে ভারতে আসতে সময় অনিশ্চিত ছিল, তাই পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার করেন তিনি।

ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের ১৭ বছর বয়সি এক নাবালিকা, যিনি ইসকন ধর্মাবলম্বী, সম্প্রতি ভারতে পালিয়ে এসেছেন। উত্তর দিনাজপুরে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ার পর, তার দাবি অনুযায়ী, মৌলবাদী গোষ্ঠী তাকে এবং তার পরিবারকে একাধিকবার হুমকি দিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে ওঠে যে, তাকে অপহরণের হুমকিও দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে, তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তবে ভারতীয় ভিসার জন্য আইনি প্রক্রিয়া যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ হওয়ায়, নাবালিকা সীমান্ত পাড়ি দিতে পায়ে হেঁটেই ভারতের দিকে রওনা হন।

বিএসএফের কাছে ধরা পড়ার পর, তরুণী জানিয়ে দেন যে তার ভারতে আত্মীয়রা আছেন এবং তাদের কাছে যেতে চেয়েছিলেন। পরে তাকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। ভারতীয় পুলিশ তার বক্তব্য যাচাই করার চেষ্টা করছে। তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, তারা মেয়েটির দাবি অনুসারে তার আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন, বিশেষ করে জলপাইগুড়ি জেলায় যাদের বাস রয়েছে। এছাড়া, ওই তরুণী সীমান্ত পার করতে কোনো দালালের সাহায্য নিয়েছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত চলছে।

এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত নাবালিকা বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাসিন্দা। তিনি পায়ে হেঁটেই সীমান্ত পার করে ভারতে প্রবেশ করেন। বিএসএফ তার গতিবিধি লক্ষ্য করে তাকে আটক করে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআইয়ের কাছে, তরুণীর ভারতীয় এক আত্মীয় জানিয়েছেন যে, তার পরিবার ইসকন ধর্মাবলম্বী। তারা জানান, মৌলবাদীরা তাদের পরিবারকে অত্যন্ত রূঢ়ভাবে হুমকি দিচ্ছিল এবং সম্প্রতি তরুণীকে অপহরণের হুমকি দেওয়া হয়। এই কারণে, তার পরিবার তাকে ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তার পাঠানো সময় নির্দিষ্ট ছিল না, সেক্ষেত্রে পায়ে হেঁটেই তিনি সীমান্ত পার করেন।

তরুণী জানান, তার পরিবার কিছুদিন ধরেই মৌলবাদীদের হুমকির মুখে ছিল। একদিকে তার বাবা, যিনি বাংলাদেশে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের কাজ করতেন, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন, অন্যদিকে তার পরিবার মৌলবাদী হুমকির শিকার হয়ে একেবারে আতঙ্কে ছিল। তার দাবি, মৌলবাদী গোষ্ঠী তাকে এবং তার পরিবারকে খুনের হুমকি দেয়। এই পরিস্থিতির মধ্যে, তার পরিবার তার নিরাপত্তার জন্য ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে, পুলিশ ও বিএসএফ এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে। তারা মীমাংসা করতে চাইছে যে, ওই তরুণীকে সীমান্ত পার করতে কোনো দালাল সাহায্য করেছে কি না, এবং তার দাবি সত্যি কি না। পুলিশ তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করার চেষ্টা করছে এবং বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। বিএসএফ জানায়, ওই তরুণীকে সীমান্ত পার করতে দেখা যাওয়ার পর তারা তাকে আটক করে এবং তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ভারতে আসার পর তরুণীর আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। এই ঘটনায় পুলিশ আরও জানায়, তারা ওই তরুণীকে আটক করার পরে তার সত্যতা যাচাই করতে চাইছে, যাতে সীমান্ত পার করার সময় যদি কোনো দালালের সাহায্য নেয়া হয়ে থাকে, তা নিশ্চিত করা যায়।

অন্যদিকে, ওই তরুণী যে আত্মীয়দের কাছে যেতে চেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে যারা জলপাইগুড়ি এলাকায় থাকেন, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। ভারতে অবস্থিত তার আত্মীয়রা জানিয়েছেন, তরুণী এবং তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে মৌলবাদী হুমকির শিকার হচ্ছিলেন এবং তার পরিবার ইসকনের অনুসারী হওয়ায় বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছিল। তারা জানান, বাংলাদেশে তার বাবা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন, এবং পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে পরিবারের সদস্যরা তাকে ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

এই ঘটনাটি বাংলাদেশ এবং ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে। একদিকে, নাবালিকা ও তার পরিবারকে মৌলবাদীদের হুমকির কারণে বিপদে পড়তে হয়েছে, অন্যদিকে তারা নিরাপত্তা পেতে ভারতে আসার চেষ্টা করেন। তবে এই সীমান্ত পার হওয়ার ক্ষেত্রে আইনি পথে অনিশ্চয়তার কারণে তরুণীকে পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার হতে হয়েছে, যার ফলে বিএসএফ তাকে আটক করেছে।

এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী একযোগে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। তাদের কাছে এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ওই তরুণীকে সীমান্ত পার করতে সাহায্যকারী দালালরা কে বা কারা এবং তাদের কোন ভূমিকা ছিল।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

ভারতের সীমান্তে ৪ বাংলাদেশি হিন্দুকে গ্রেফতার, নাবালিকা উদ্ধার

তেঁতুলিয়া সীমান্তে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় ৪ বাংলাদেশি হিন্দুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ জন এক পরিবারের সদস্য। এক নাবালিকা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আসেন, তাকে বিএসএফ গ্রেফতার করে। তদন্ত চলছে, দালালদের সম্পর্কেও অনুসন্ধান।
ভারতের সীমান্তে ৪ বাংলাদেশি হিন্দুকে গ্রেফতার, নাবালিকা উদ্ধার

তেঁতুলিয়া সীমান্তে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় ৪ বাংলাদেশি হিন্দুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ জন এক পরিবারের সদস্য। এক নাবালিকা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আসেন, তাকে বিএসএফ গ্রেফতার করে। তদন্ত চলছে, দালালদের সম্পর্কেও অনুসন্ধান।

তেঁতুলিয়া, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া সীমান্তে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় চার বাংলাদেশি হিন্দুকে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। রিপোর্ট অনুযায়ী, দেবনগড় ইউনিয়নের সুকানী সীমান্তের ৭৪০ নম্বর মেইন পিলারের ৩ নম্বর সাব–পিলার এলাকা থেকে একই পরিবারের তিন সদস্যসহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে মণিরাম বর্মণ (৫২), তার স্ত্রী হীরা রানি বর্মণ (৩৫), মণিরামের প্রথম স্ত্রীর ছেলে রিপন বর্মণ (২১) এবং প্রতিবেশী নিমাই চন্দ্র বর্মণ রয়েছেন। এরা সবাই বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ধোন্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা।

বিএসএফের নজরে আসার পর বিজিবিকে (বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী) অবহিত করা হয়, পরে বিজিবি তাদের গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে ১৪ হাজার ৭০০ বাংলাদেশি টাকা, ৪০৫ ভারতীয় রুপি, এক ভরি সোনার গয়না এবং ৭ ভরি রুপোর গয়না উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া, ধৃতদের কাছ থেকে আরও একটি তথ্য পাওয়া যায় যে, তারা সীমান্ত পার হওয়ার জন্য স্থানীয় একটি দালালচক্রের সাহায্য নিয়েছিলেন এবং দালালকে এক লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন।

ধৃতদের জেরা করে আরও জানা যায়, তারা ভারতে আসতে চাইছিলেন। একই সময়, এক নাবালিকা, যিনি বাংলাদেশে মৌলবাদী হুমকির মুখে ছিলেন, সীমান্ত পার করে ভারতে চলে আসেন। ১৭ বছর বয়সি ওই নাবালিকা পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার করেছিলেন এবং ভারতীয় বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন। পরবর্তীতে তাকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই তরুণী দাবি করেছেন যে, বাংলাদেশে তার পরিবারকে মৌলবাদীরা হুমকি দিচ্ছিল। বিশেষ করে, তাকে অপহরণ করার জন্যও হুমকি দেওয়া হয়। তার পরিবারও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল, তাই সে ভারতে আসার পরিকল্পনা করে। তার অভিযোগ, বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে মৌলবাদীরা তার পরিবারকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়েছিল এবং কিছুদিন আগে তাকে অপহরণেরও হুমকি দেওয়া হয়। এর পরই সে ভারত আসার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সীমান্ত পার করে।

পুলিশ জানায়, ওই তরুণী জানান যে, তার ভারতে আত্মীয়রা আছেন এবং তিনি তাদের কাছে যেতে চেয়েছিলেন। তবে পুলিশ এখনও তার দাবি যাচাই করছে এবং এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ আরও খতিয়ে দেখছে, সীমান্ত পার করতে ওই তরুণীকে কেউ সাহায্য করেছে কি না। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এই ঘটনার পর পুলিশকে অবহিত করেছে এবং তারা ওই তরুণীকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে।

এদিকে, ওই নাবালিকার আত্মীয়রা দাবি করেছেন যে, তারা বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাসিন্দা। নাবালিকার বাবা একজন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ ছিলেন এবং তার মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তারা জানান, নাবালিকার পরিবার ইসকনের ভক্ত এবং তাদের মৌলবাদীরা বহুদিন ধরেই হুমকি দিয়ে আসছিল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই তরুণী জানিয়েছে, তার পরিবারকে বাংলাদেশের মৌলবাদীরা খুন করার হুমকি দিয়েছিল। তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন, তাই পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, কখন তাকে পাঠানো হবে তা ঠিক করা হয়নি এবং অবশেষে তাকে পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার করতে হয়।

এই ঘটনার পর পুলিশ জানিয়েছে, তারা নাবালিকার পরিবার ও আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। পাশাপাশি, নাবালিকাকে সীমান্ত পার করতে সাহায্যকারী দালালদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন এবং দ্রুত তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

এদিকে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আরও জানানো হয়েছে যে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা ওই তরুণীকে বিএসএফ গ্রেফতার করার পর, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ তাকে গ্রহণ করেছে। তারা এই বিষয়টি তদন্ত করে নিশ্চিত করবে যে, নাবালিকা সীমান্ত পার করতে সাহায্যকারী দালালরা কোথায় এবং কীভাবে কাজ করছেন।

অপরদিকে, বাংলাদেশি ৪ জনের গ্রেফতারের বিষয়েও তদন্ত চলছে। তাদের আটক করার পর, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত। বিএসএফের হাতে ধরা পড়া এই ঘটনাটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

হিন্দু ‘দ্বেষে’ জ্বলছে বাংলাদেশ, হতাশ নৈহাটির ‘বড়মা’র ভক্তরা

বড় কালীপুজো সমিতি চালু করেছে ‘জয় বড় মা’ অ্যাপ, যার মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে বসবাসকারী ভক্তরা পুজো দিতে পারছেন। বাংলাদেশ থেকে পুজো দেওয়া ভক্তরা বড়মার কাছে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রার্থনা জানাচ্ছেন। সম্প্রতি, বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন পুজো সমিতি।
হিন্দু ‘দ্বেষে’ জ্বলছে বাংলাদেশ, হতাশ নৈহাটির ‘বড়মা’র ভক্তরা

বড় কালীপুজো সমিতি চালু করেছে ‘জয় বড় মা’ অ্যাপ, যার মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে বসবাসকারী ভক্তরা পুজো দিতে পারছেন। বাংলাদেশ থেকে পুজো দেওয়া ভক্তরা বড়মার কাছে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রার্থনা জানাচ্ছেন। সম্প্রতি, বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন পুজো সমিতি।

নৈহাটি, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বড় কালীপুজো সমিতি গত ১০১ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে এবং সেই উপলক্ষে একটি অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা ‘জয় বড় মা’ নামের একটি অ্যাপ চালু করেছে, যার মাধ্যমে দেশ-বিদেশের ভক্তরা বাড়িতে বসেই বড়মার পুজো দিতে পারছেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে ভক্তরা তাদের নাম, গোত্র, ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং মনস্কামনা পূরণ করে পুজো দিতে পারবেন। অ্যাপটি চালু হওয়ার পর থেকেই ভক্তদের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে এবং এটি চলতি বছরে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

যেহেতু এই অ্যাপের মাধ্যমে পুজো দেওয়ার সুযোগ সহজতর হয়েছে, তাই ভক্তরা শুধু রাজ্য নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তসহ বিদেশ থেকেও পুজো দিচ্ছেন। বিশেষ করে, বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালি এবং অন্যান্য দেশের ভক্তরা এই অ্যাপের মাধ্যমে বড়মার কাছে তাদের প্রার্থনা পৌঁছে দিচ্ছেন। গত অমাবস্যা থেকেই সমিতি এই অনলাইন পুজো দেবার মাধ্যমে প্রসাদ পাঠানো শুরু করেছে। তবে, প্রসাদ পাঠানোর জন্য সমিতি খুবই কম খরচে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ‘ড্রাই ফ্রুট’ প্রসাদ পাঠাচ্ছে এবং সমিতি নিজেই এই খরচ বহন করছে।

এছাড়াও, সমিতির এই পুজো দেয়ার উদ্যোগে বাংলাদেশ থেকেও ভক্তরা বড়মার কাছে পুজো দিচ্ছেন। যদিও, গত কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর মৌলবাদীদের হামলা এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে, এর ফলে ওপার বাংলার হিন্দুরা বিশেষভাবে চিন্তিত। এই পরিস্থিতির মধ্যে বড়মার কাছে পুজো দিয়ে তারা দেশের শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রার্থনা জানাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার বড়মার মন্দিরে দান বস্ত্র বিতরণের পুজো সমিতির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “প্রতিদিনই বাংলাদেশ থেকে ভক্তরা অ্যাপে পুজো দিয়ে লিখছেন, ‘আমরা ভালো নেই। বড়মা, দেশে শান্তি ফেরান।’ এখনও পর্যন্ত প্রায় শতাধিক পুজো এসেছে।” তিনি আরো জানিয়েছেন যে, দেশে এবং বিদেশে যারা পুজো দিচ্ছেন তাদের প্রতি সমিতির পক্ষ থেকে প্রসাদ পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে আসা পুজোদের প্রসাদ পাঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশে প্রসাদ পৌঁছানোর ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে, তবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি।

এই পরিস্থিতির মধ্যে, বড়মা মন্দিরে বৃহস্পতিবার এক বিশেষ বস্ত্রদান অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়। এখানে প্রায় আট হাজার শাড়ি বিতরণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, দুর্গাপূজা ও অন্যান্য সামাজিক প্রকল্পগুলির মাধ্যমে সারা বছর প্রায় ৩৫ হাজার শাড়ি এবং প্রায় এক হাজার বেনারসি দুস্থ মেয়েদের জন্য বিতরণ করা হয়েছে। এসব কাজ চললেও, সমিতির সদস্যরা এখনো বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা বারবার শান্তি কামনায় প্রার্থনা করছেন।

তাদের মনে রয়েছে একটি আশা, ওপার বাংলার ভক্তদের প্রার্থনা একদিন সফল হবে এবং সেখানে শান্তি ফিরে আসবে। সমিতির সদস্যরা আশা করছেন, এই ধরণের প্রচেষ্টা আরও সবার মধ্যে একতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এক নতুন দিশা দেখাবে।

অ্যাকটির মাধ্যমে শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠানেরই উন্নতি ঘটেনি, এটি সামাজিক কাজেও সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। এর মাধ্যমে একটি বৃহৎ পরিসরে নানা সামাজিক প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে এবং এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।

এভাবে, ‘জয় বড় মা’ অ্যাপটি শুধু ধর্মীয় উদ্দেশ্যে নয়, সামাজিক এবং মানবিক উদ্দেশ্যেও কার্যকরী হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এর মাধ্যমে আরো বৃহত্তর পরিসরে সাহায্যের হাত বাড়ানো হবে বলে আশাবাদী সমিতির সদস্যরা।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সংখ্যালঘুরা

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশী সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে অস্বীকার করা এবং ন্যায়বিচার না দেওয়ার। টিআইবি রিপোর্টে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে ৯ জন নিহত এবং অন্যান্য নির্যাতন রয়েছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সংখ্যালঘুরা

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশী সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে অস্বীকার করা এবং ন্যায়বিচার না দেওয়ার। টিআইবি রিপোর্টে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে ৯ জন নিহত এবং অন্যান্য নির্যাতন রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪: যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশী সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা দাবি করেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখাচ্ছে এবং এতে সরকারের যথাযথ উদ্যোগের অভাব রয়েছে। ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে, যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের সংগঠন নীলাচলের নেতা প্রাণেশ হালদার বলেন, “এই সহিংসতার মূল চরমপন্থী ইসলামী গোষ্ঠীগুলো, যারা সরকারকে সমর্থন করেছে, তারা এসব ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করছে। একটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই অপরাধগুলোর প্রকাশ এবং চরমপন্থীদের চেহারা উন্মোচন হওয়া উচিত।”

প্রাণেশ হালদার আরও জানান, “বাংলাদেশে সকল সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়, ভীতির মধ্যে জীবনযাপন করছে।” তিনি বলেন, “ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত পরিসংখ্যানের তুলনায় বাস্তব পরিস্থিতি আরও গম্ভীর এবং গুরুতর। বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের হিন্দু জনসংখ্যা ২০% থেকে ৮%-এ নেমে এসেছে।”

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) রিপোর্টে জানানো হয়, ৫ থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে ২১০০টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৯ জন সংখ্যালঘু নিহত হয়েছেন। এছাড়া, দুর্গাপূজা চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি হয়। এক্ষেত্রে, গ্রেটার ওয়াশিংটন হিন্দু সোসাইটির নেত্রী মৌসুমী মিত্র চৌধুরী বলেন, “৫ আগস্টের পর থেকে আমাদের আত্মীয়রা বিভীষিকায় দিন কাটাচ্ছে। প্রতিদিন তারা ভয়ে আতঙ্কে থাকে এবং কেউ কিছু বলতে গেলেই তাদের এবং তাদের পরিবারের ওপর অমানবিক আচরণ করা হয়।”

মৌসুমী মিত্র চৌধুরী আরও জানান, “এখনকার মতো ভীতিকর পরিবেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আগে কখনও জীবনযাপন করেনি।” তার মতে, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংখ্যালঘুদের রক্ষায় চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে, সরকার হত্যা, রাহাজানি, ঘরবাড়ি ও মন্দির পোড়ানো, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, চাকরি হারানো সবকিছুই একেবারে অবজ্ঞা করছে।”

বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগস্টের ৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে ২১০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব সহিংসতার মধ্যে ৯ জন নিহত, ৪ জন ধর্ষিত, ৬৯টি উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং ৯১৫টি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা রয়েছে। আরও উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩৮টি শারীরিক নির্যাতন এবং ২১টি জমি/ব্যবসা দখলের ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ৫ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের খবর প্রচারিত হচ্ছে, তবে এ বিষয়ে বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোর মধ্যে তথ্যের ফারাক রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “যে কোনও সহিংসতা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করে দোষীদের বিচার করা হবে এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এছাড়া, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ২২ অক্টোবরের পরের ঘটনাগুলোর আপডেট দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং ৮৮টি মামলা করা হয়েছে বলে জানান, যাতে ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা যে যথেষ্ট নয়, এমন মন্তব্য এসেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকেও। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র জানান, “আমরা বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের অব্যাহত পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।” তবে, তিনি সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা এবং অসহিষ্ণুতার ঘটনার নিন্দা করেন।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ২৬ সেপ্টেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করেন, যেখানে তারা মানবাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সকল নাগরিকের নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করেন।

এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও বলেছেন, “সংখ্যালঘুদের মন্দির ও ধর্মীয় স্থানগুলোতে হামলার খবর পাওয়া গেছে।” তিনি বলেন, “এ ধরনের সহিংসতার পরিণতি সার্বিক নিরাপত্তার অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ব্যাপারে ভারতের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হয়েছে। কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করা হয়েছে এবং ত্রিপুরাতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

এখন, এই সব ঘটনায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সরকারের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ, ১০ এপ্রিল শুরু

বাংলাদেশের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ২০২৫ সালের রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোরসহ অন্যান্য বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা শুরু হবে ১০ এপ্রিল, ২০২৫ থেকে। উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয়ের পরীক্ষা তফসিলসহ বিস্তারিত রুটিন প্রকাশিত হয়েছে।
২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ, ১০ এপ্রিল শুরু

বাংলাদেশের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ২০২৫ সালের রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোরসহ অন্যান্য বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা শুরু হবে ১০ এপ্রিল, ২০২৫ থেকে। উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয়ের পরীক্ষা তফসিলসহ বিস্তারিত রুটিন প্রকাশিত হয়েছে।

ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করেছে। এই রুটিনের মাধ্যমে দেশের সব বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষার তারিখ এবং বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষার সময়সূচি জানা গেছে। ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, বরিশাল, সিলেট, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর এবং ময়মনসিংহ বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষা ২০২৫ সালের ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হবে।

বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, প্রথম দিনেই বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র এবং সহজ বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ১৩ এপ্রিল দ্বিতীয় দিনে বাংলা (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্র এবং বাংলা সহজ দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ইংরেজি (আবশ্যিক) প্রথম পত্রের পরীক্ষা ১৫ এপ্রিল, এবং ইংরেজি (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা ১৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। ২০ এপ্রিল গণিত (আবশ্যিক) পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হবে।

পরবর্তী পরীক্ষাগুলির মধ্যে ২২ এপ্রিল ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, বৌদ্ধ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, খ্রীষ্ট ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা হবে। ২৩ এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২৪ এপ্রিল গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা (তত্ত্ব), সঙ্গীত (তত্ত্ব), আরবি, সংস্কৃত, পালি, শারীরিক শিক্ষা, ক্রীড়া (তত্ত্ব), চারু, কারুকলা (তত্ত্ব) বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

২৭ এপ্রিল পদার্থ বিজ্ঞান (তত্ত্ব), বাংলাদেশের ইতিহাস-বিশ্বসভ্যতা এবং ফিনান্স-ব্যাংকিং বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে, ২৯ এপ্রিল রসায়ন, পৌরনীতি, নাগরিকতা ও ব্যবসার উদ্যোগ বিষয়ের পরীক্ষা হবে। ৩০ এপ্রিল ভূগোল ও পরিবেশের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

২০২৫ সালের ৪ মে উচ্চতর গণিত ও বিজ্ঞান পরীক্ষা হবে। ৬ মে জীববিজ্ঞান ও অর্থনীতি, ৭ মে হিসাব বিজ্ঞান এবং ৮ মে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

রুটিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো পরীক্ষার তারিখে কোনো পরিবর্তন হতে পারে, এবং বিশেষ প্রয়োজনে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ এই সময়সূচি পরিবর্তন করার অধিকার রাখে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, পরীক্ষার রুটিনকে নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে মিলিয়ে দেখে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, বাংলাদেশের বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে যার মধ্যে সাধারণ বিষয়ে পরীক্ষা ছাড়াও বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, অর্থনীতি, হিসাব বিজ্ঞান এবং অন্যান্য নানা বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দেশের শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করবে এবং উচ্চ শিক্ষার দিকে পা বাড়াবে।

এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচি প্রকাশিত হওয়ার পর, দেশজুড়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে এবং তারা এখন রুটিন অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পারবে।

এছাড়া, পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশের পাশাপাশি দেশের শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাদের পরীক্ষা পরিচালনার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়েছে এবং পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে তারা কড়া নজরদারি চালাবে।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

ভারতের মিডিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, মঞ্জুর বক্তব্যে নতুন অভিযোগ

আমার বাংলাদেশ পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু ভারত সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, তারা বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা বা জনগণের সম্মান রক্ষা নিয়ে কখনো মনোযোগী হয়নি। তিনি দাবি করেন, ভারত আসলে আওয়ামী লীগের প্রতি মনোযোগী এবং তাদের হিন্দু প্রেম শুধুমাত্র আওয়ামী প্রেম।
ভারতের মিডিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, মঞ্জুর বক্তব্যে নতুন অভিযোগ

আমার বাংলাদেশ পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু ভারত সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, তারা বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা বা জনগণের সম্মান রক্ষা নিয়ে কখনো মনোযোগী হয়নি। তিনি দাবি করেন, ভারত আসলে আওয়ামী লীগের প্রতি মনোযোগী এবং তাদের হিন্দু প্রেম শুধুমাত্র আওয়ামী প্রেম।

ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪: আমার বাংলাদেশ পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু ১২ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার ভারতের মিডিয়ায় ধারাবাহিক মিথ্যাচারের প্রতিবাদে আয়োজিত একটি বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ভারত কখনো বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা কিংবা জনগণের সম্মান রক্ষায় মনোযোগী হয়নি। বরং তারা আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের ওপর একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছে। মঞ্জু বলেন, “ভারত হিন্দু প্রেমের কথা বলে কিন্তু আসলে তাদের আসল প্রেম হলো আওয়ামী লীগ।”

মঞ্জু তার বক্তব্যে আরও বলেন, ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিশ্বজিতকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়, আর বাংলাদেশের একমাত্র হিন্দু বিচারক সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়। তবে, মঞ্জুর দাবি, এই ঘটনায় ভারত সরকার কোনো প্রতিবাদ করেনি। তার মতে, ভারত সরকারের মুখে হিন্দু প্রেমের কথা থাকলেও, তাদের অন্তরালে আসল উদ্দেশ্য হলো আওয়ামী লীগ প্রেম।

বিক্ষোভ মিছিলে যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুলের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মঞ্জু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

বিক্ষোভে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়, তবে কারোর ইশারায় আমাদের শান্তি নষ্টের পায়তারা করা যাবে না।” তিনি আরও বলেন, “ভারত সরকার যদি মিডিয়ার নৈরাজ্যের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়, তাহলে এটি হবে ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।” আলমের মন্তব্যে স্পষ্ট যে, তারা ভারতীয় মিডিয়ার নৈরাজ্য এবং উস্কানির বিরুদ্ধে সোচ্চার।

এছাড়া, আলতাফ হোসাইনও ভারত সরকারের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার পতনের পর ভারত যেভাবে শেখ হাসিনার পক্ষ নিয়েছে, সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক।” তার মতে, ভারত সরকারকে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা উচিত, কোনো দলের বা ব্যক্তির সঙ্গে নয়। হোসাইন আরো বলেন, “ভারতের উচিত ছিল বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক করা, আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার সঙ্গে নয়।”

এছাড়া, মজিবুর রহমান মঞ্জু আরও একধাপ এগিয়ে বলেন, “ভারতীয় মিডিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ভারতীয় মিডিয়ার অপ্রচার ভারতকে সারা বিশ্ব থেকে আলাদা করে ফেলবে।” তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের অটুট হিন্দু মুসলিম ঐক্যকে তুলে ধরে বলেন, “হিন্দু মুসলিম ঐক্য বাংলাদেশের মানুষের চির ঐতিহ্য। আমরা একসঙ্গে চরছি যুগের পর যুগ। ঠুনকো অজুহাতে আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরানো যাবে না। তারা যতবেশি অপ্রচার চালাবে, ততবেশি আমরা ঐক্যবদ্ধ হবো।”

এ সময় বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রব জামিল, কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব আব্দুর রহমান, সফিউল বাসার, এবি যুবপার্টির দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার রাসেল, যুগ্ম সদস্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন রমিজ, যুবপার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মাহমুদ আযাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর সদস্য সচিব শাহিনুর আক্তার শীলা, যুগ্ম সদস্য রাসেদুল ইসলাম এবং পল্টন থানা আহ্বায়ক ইমরান হোসেন শিবলু প্রমুখ।

এই বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় মিডিয়ার দ্বারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ছড়ানো মিথ্যাচার এবং অপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো। এবি পার্টি এবং যুবপার্টির নেতারা বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় মিডিয়ার উদ্দেশ্যপূর্ণ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তাদের মতে, ভারতের মিডিয়া বাংলাদেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করছে এবং দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে।

এদিনের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নেতারা একমত হয়ে বলেন, ভারতীয় মিডিয়ার এই আগ্রাসনকে মোকাবেলা করার জন্য বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তারা বলেন, “আমরা একসঙ্গে দাঁড়ালে ভারতীয় মিডিয়া তাদের উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারবে না।” তারা আরও বলেন, “ভারত যতো বেশি মিথ্যাচার করবে, ততো বেশি আমরা একসঙ্গে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।”

এই বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে “আমার বাংলাদেশ পার্টি” এবং যুবপার্টি তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশে ভারতীয় আগ্রাসন এবং রাজনৈতিক প্রভাবকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করছে। এদের দাবি, ভারত যেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে এবং দুই দেশের সম্পর্ক শুধুমাত্র জনগণের জন্য ভালো হয়।

এ সময় মঞ্জু বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে, বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্ক গণতান্ত্রিক, সম্মানজনক এবং সমানাধিকারের ভিত্তিতে গড়ে উঠবে, তবে কোনো একটি দলের বা সরকারের সুবিধা বা প্রভাব বিস্তারের জন্য নয়।”

বিক্ষোভ শেষে মঞ্জু এবং অন্যান্য নেতারা তাদের বক্তব্যে ভারতের মিডিয়ার বিরুদ্ধে সকল কার্যকলাপ বন্ধ করার আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই লড়াইয়ে অংশ নিতে উৎসাহিত করেন।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

সংখ্যালঘু-নির্যাতন রুখতে ব্যবস্থার আশ্বাস ঢাকার

ঢাকা আশ্বাস দিয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ৬২টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং ৭০ জন গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে কোনোরূপ হেরফের না করতে ভারতের মনোযোগ নিশ্চিত করেছেন।
সংখ্যালঘু-নির্যাতন রুখতে ব্যবস্থার আশ্বাস ঢাকার

ঢাকা আশ্বাস দিয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ৬২টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং ৭০ জন গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে কোনোরূপ হেরফের না করতে ভারতের মনোযোগ নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় ঢাকার পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, এমনটি জানালেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী। আজ নয়াদিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই কথা বলেন মিস্রী। বৈঠকে মিস্রী জানান, বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান পরিষদের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ৬২টি মামলা দায়ের করেছে এবং ৭০ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর আগে, ৪ থেকে ২০ অগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হিংসার ঘটনার পর এই পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছে।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, মিস্রী বৈঠকে বলেছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তবে এসবের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে জামিনে মুক্তি পাওয়া কিছু শাস্তিপ্রাপ্ত জঙ্গি, যারা বাংলাদেশে ভারত-বিরোধী প্রচার চালাচ্ছে, তা ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়। এসব জঙ্গি কর্মকাণ্ডের জন্য ভারতের পক্ষ থেকে ঢাকা সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা এই ধরনের কার্যকলাপ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।

মিস্রী আরও জানিয়েছেন, তার ঢাকা সফরের পর সম্পর্কের মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ভারত-বিরোধী চিত্রটি বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে, এবং ভারত-বিরোধিতার বিষয়টিও অনেকাংশে অতিরঞ্জিত হচ্ছে। তবে, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বিষয়টি যে মনগড়া নয়, তা ভারতীয় কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে দাবি করেছেন।” তিনি এই বিষয়ের প্রতিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ভারতীয় পক্ষের দাবি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বা সহিংসতার ঘটনা অনুপ্রবেশী বা মনগড়া নয়। এ ধরনের সহিংসতার ফলস্বরূপ, ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। মিস্রী বলেছেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষা করা দরকার, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও অখণ্ডতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।”

বৈঠকের সময়, মিস্রী সাংসদদের জানিয়ে দেন যে, ভারত বাংলাদেশে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের মধ্যে কোনো হেরফের ঘটবে না এবং খাদ্যপণ্যসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্য ভারত থেকে বাংলাদেশে রফতানি অব্যাহত থাকবে। তবে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় ভিসা ব্যবস্থাকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে বলা হয়েছে। মিস্রী এই বিষয়ে পরিষ্কারভাবে জানান, ভারত সরকারের পক্ষে খাদ্যপণ্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের রফতানি নিয়ে কোনো পরিবর্তন আসবে না, কিন্তু বাংলাদেশের দাবি অনুযায়ী ভারতীয় ভিসা ব্যবস্থা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে ভারত সরকার পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিবে।

এদিকে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা প্রায়ই আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। বিশেষত, ৪ থেকে ২০ অগস্ট পর্যন্ত ঘটিত সহিংসতার পর থেকে ভারতীয় সরকার বারবার এই বিষয়টি উত্থাপন করেছে। এসব ঘটনার মধ্যে মন্দিরে আক্রমণ, ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান পরিষদও এই বিষয়গুলো সামনে এনেছে এবং বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।

এছাড়া, মিস্রী বৈঠকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্কের মূল স্তম্ভ হচ্ছে পারস্পরিক বাণিজ্য এবং সম্পর্কের উন্নতি, বিশেষ করে খাদ্যপণ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের রফতানি। এই সম্পর্কের উন্নতির জন্য মিস্রী বিশেষভাবে বলেছেন, “এটি নিশ্চিত করতে হবে যে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।”

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিস্রীকে জানানো হয়েছে যে, তারা কোনো ধরনের ভারত-বিরোধী প্রচারণা বাড়ানোর চেষ্টা করছে না, তবে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সহিংসতা এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন বিষয়টি ব্যাপকভাবে অতিরঞ্জিত হচ্ছে। এই বিষয়ে ভারতীয় কর্তাদের পক্ষ থেকে অত্যন্ত সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে, যাতে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও, বৈঠক শেষে মিস্রী যে “নজরে পড়ার মতো” উন্নতির কথা বলেছেন, তা রাজনৈতিক পর্যায়ে বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে মিস্রী কিছু আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, তবে তিনি এই বিষয়টির গুরুত্বও তুলে ধরেছেন যে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।

এছাড়া, ভারতীয় সংসদীয় কমিটি এই বিষয়ে আলোচনা করে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিষয়ে ভারতের অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানিয়ে, বাংলাদেশ সরকারের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা মেনে চলার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।

তারিখ: ১৪.১২.২০২৪

শুনানি এগোনো গেল না, দ্বিতীয় দিনের চেষ্টাতেও ব্যর্থ ঢাকার আইনজীবী

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি ২ জানুয়ারিতেই হবে, জানিয়েছে চট্টগ্রাম আদালত। জামিন শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার চেষ্টা করলেও, আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ তার আবেদন সফল করতে পারেননি। তিনি বলেছেন, উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন যদি প্রয়োজন হয়।
শুনানি এগোনো গেল না, দ্বিতীয় দিনের চেষ্টাতেও ব্যর্থ ঢাকার আইনজীবী

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি ২ জানুয়ারিতেই হবে, জানিয়েছে চট্টগ্রাম আদালত। জামিন শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার চেষ্টা করলেও, আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ তার আবেদন সফল করতে পারেননি। তিনি বলেছেন, উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন যদি প্রয়োজন হয়।

চট্টগ্রাম, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি ২ জানুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে। তার জামিনের শুনানি এগিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। তিনি ঢাকার আইনজীবী এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে মামলা লড়ছেন। চট্টগ্রামের আদালতে যাওয়ার পর তিনি আবেদন করেছিলেন, যাতে জামিন শুনানির তারিখ আরও এগিয়ে আনা যায়। তবে, প্রথম দিনের মতো তাঁর দ্বিতীয় দিনের আবেদনও ব্যর্থ হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে এই আবেদনটি জমা পড়েছিল। যদিও আবেদনটি নথিভুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু আদালত শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার অনুমতি দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, দেশের যে কোনো আইনজীবী চট্টগ্রামের আদালতে মামলায় অংশ নিতে চাইলে তাদের অবশ্যই এখানকার আইনজীবীর উপস্থিতি ও ওকালতনামা প্রয়োজন। এর পরেই আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে, তিনি এখানে চট্টগ্রামের কোন আইনজীবীর সাহায্য পাননি এবং সেই কারণে আবেদনটি শুধুমাত্র নথিভুক্ত করা হয়, তবে তারিখ বদলানো সম্ভব হয়নি।

এছাড়া, আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ জানান, “আমি চেষ্টা করেছি, কিন্তু এখানকার আইনজীবীদের সাহায্য ছাড়া বিষয়টি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। যদি এখানকার সমাধান না পাওয়া যায়, তবে আমরা উচ্চ আদালতের সাহায্য নেব।” বৃহস্পতিবারও তিনি একই আবেদনে চট্টগ্রাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন, তবে সেইদিনেও নতুন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। ওকালতনামা জমা না থাকায় তার আবেদনটি কেবল নথিভুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু শুনানির তারিখ বদলানো যায়নি।

অন্যদিকে, গত বুধবারও তিনি জামিন শুনানি এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করেছিলেন, তবে সে দিন তিনি আদালতে বিরোধিতার সম্মুখীন হন। বিচারক আবেদনটি বিবেচনা করতে প্রস্তুত ছিলেন, তবে আদালতে উপস্থিত অন্যান্য আইনজীবীরা তার বিরুদ্ধে চিৎকার শুরু করেন, যার ফলে আবেদনটি গ্রাহ্য হয়নি। একাধিক আইনজীবী ওই আবেদনটি বাতিল করার পক্ষে ছিলেন এবং তারা কোর্টের পরিবেশ উত্তপ্ত করে তোলেন। তবে, বৃহস্পতিবার আদালতকে কিছুটা শান্তিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ, যা বিচারকদের একপেশে মনোভাবের চেয়ে ভালো ছিল।

এ ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, “যতটুকু পারা গেছে, সবার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। এখানকার আইনজীবীরা আমাদের সহযোগিতা না করায় কার্যক্রম আটকে গেছে। তবে, উচ্চ আদালতে পৌঁছানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে, আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।”

এখনকার পরিস্থিতি অনুযায়ী, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি ২ জানুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে। আদালত তারিখ বদলের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার সংশোধনী পদক্ষেপ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের দাবী, এই মামলায় আরও সময় দেওয়া গেলে তার পক্ষে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হতে পারে, যা তার মক্কেলের পক্ষেই সহায়ক হবে।

এমনকি আইনজীবী ঘোষের পক্ষে অভিযোগ রয়েছে যে, অন্যান্য আইনজীবীরা তার আবেদনটির বিরোধিতা করার উদ্দেশ্যে আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন, ফলে মামলার শুনানি বিলম্বিত হয়েছে। যদিও তিনি আদালতকেও একটি অবসর মুহূর্তে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বিচার করতে অনুরোধ করেছেন, যার ফলে বিচারকরা তার আবেদনটি আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা ভাবছিলেন, তবে আইনজীবীদের চিৎকারের ফলে এটি সঠিকভাবে দেখা সম্ভব হয়নি।

এছাড়া, চট্টগ্রামের আদালতও একাধিক বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছে, যেমন আইনজীবী ঘোষের ওকালতনামা নিয়ে জটিলতা এবং স্থানীয় আইনজীবীদের সহায়তা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা। আদালত জানিয়েছে, কোনো বিদেশী বা ঢাকার আইনজীবী যদি এখানে মামলা করতে চান, তাদের স্থানীয় আইনজীবীর উপস্থিতি এবং সহযোগিতা নেওয়া বাধ্যতামূলক।

এ পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি ঘিরে আইনি লড়াইয়ে নতুন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, যা আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইনজীবী ঘোষ ইতিমধ্যে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা চিন্তা করছেন এবং সেখানে মামলার বিচারকাজ শুরুর জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।

এখন এই মামলার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা সময়ের মধ্যে স্পষ্ট হবে। তবে আপাতত ২ জানুয়ারি জামিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে, এবং সেখানেই পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তারিখ: ১৫.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন, নোবেল শান্তিজয়ী ইউনূসকে 'সতর্ক' করলেন নোবেলজয়ী কৈলাসও

নোবেলজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই ধরনের আক্রমণ সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকারকে অবরুদ্ধ করছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে। তিনি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন, নোবেল শান্তিজয়ী ইউনূসকে 'সতর্ক' করলেন নোবেলজয়ী কৈলাসও

নোবেলজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই ধরনের আক্রমণ সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকারকে অবরুদ্ধ করছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে। তিনি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪: নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কৈলাশ সত্যাত্রী, যিনি গত চার দশক ধরে বাংলাদেশে শিশু অধিকার এবং শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন, বলেছেন, তিনি সবসময় মানুষের মধ্যে আস্থা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ এবং ধর্মীয় স্থানগুলির ওপর হামলা, বিশেষত মন্দির ভাঙচুরের ঘটনাগুলো তাকে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে।

তিনি বলেন, “মানুষের মৌলিক অধিকার অবরুদ্ধ হচ্ছে, এবং তারা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।” তার মতে, এই ধরনের ঘটনা শুধুমাত্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই নয়, বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। তিনি সতর্ক করে দেন যে, যদি এই সমস্যার সমাধান না করা হয়, তবে এর প্রভাব বাংলাদেশ ছাড়িয়ে পুরো অঞ্চলে পড়বে।

বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের ঘর-বাড়ি এবং মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করার পর সেখানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। ২৬ নভেম্বর ভারতের পক্ষ থেকেও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন অস্বীকারের ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়, যিনি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র ছিলেন।

এরপর ৬ ডিসেম্বর ঢাকার উপকণ্ঠে মহাভাগ্য লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দিরে হামলা করা হয়। মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক বাবুল ঘোষ জানান, দুর্বৃত্তরা পেট্রোল ঢেলে মন্দিরের প্রতিমা পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য অঞ্চলেও সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে হিন্দু মন্দিরে আগুন দেওয়া এবং সংখ্যালঘুদের ঘর-বাড়িতে হামলা, লুটপাট, ভাঙচুরের ঘটনা অন্যতম।

বিগত মাসগুলিতে এসব ঘটনার পর, ভারত ও বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে। ভারত সরকার সংখ্যালঘুদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

এই ঘটনায়, নোবেলজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী ভারতের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য মহম্মদ ইউনূসকে বার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এই ধরনের হামলা সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করছে, এবং এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “যে কোনও জায়গায় মানবাধিকার লঙ্ঘন মানুষের বিবেকের উপর আক্রমণ, এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি আক্রমণের ঘটনাগুলি নতুন নয়, তবে সাম্প্রতিক সময়ে এসব হামলার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা ও মন্দিরে আক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনও তৎপর হয়েছে, তবে অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আশা করা হচ্ছে যে, তারা দ্রুত এসব ঘটনার বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। বিশেষত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয় এবং অনিরাপত্তা কাটানোর জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

কৈলাশ সত্যার্থী বলেন, “এই ধরনের আক্রমণ, বিশেষ করে ধর্মীয় স্থানগুলোতে হামলা, মানুষের আস্থা এবং সামাজিক সম্পর্কের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এটি শুধু বাংলাদেশে নয়, বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও সমঝোতার জন্য হুমকির কারণ হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিশেষত সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, সব ধরনের সহিংসতা এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদ আমাদের সমাজের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।” তাঁর মতে, এ ধরনের ঘটনা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারাও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং সরকারের প্রতি তাদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনা হলে দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদরা এবং সমাজকর্মীরা বলেছেন, “এ ধরনের ঘটনায় দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর বড় ধরনের আঘাত পড়ছে। এর ফলে সংখ্যালঘুদের মধ্যে এক ধরনের অবিশ্বাস ও অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে, যা দেশের উন্নয়ন ও সামাজিক শান্তির পক্ষে ভালো কিছু নয়।”

এছাড়া, মানবাধিকার সংগঠনগুলি এই ধরনের সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, “যতদিন না সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এই ধরনের সহিংসতা থামানো সম্ভব নয়।”

তবে, বাংলাদেশের সরকার এবং প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে যে, তারা দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তারা দাবি করেছে, সরকারের প্রচেষ্টায় শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

তারিখ: ১০.১২.২০২৪

চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা: চন্দন দাসের জবানবন্দি

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় আসামি চন্দন দাস স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তিনি জানান, রিপন দাস, ওম দাস, রনবসহ কয়েকজন মিলে সাইফুলকে খুন করেন। হত্যার ভিডিওতে আসামিরা চেনা যাচ্ছে। ঘটনার পেছনে হত্যার কারণ এখনও পরিষ্কার নয়, তবে তদন্ত চলছে।
চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা: চন্দন দাসের জবানবন্দি

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় আসামি চন্দন দাস স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তিনি জানান, রিপন দাস, ওম দাস, রনবসহ কয়েকজন মিলে সাইফুলকে খুন করেন। হত্যার ভিডিওতে আসামিরা চেনা যাচ্ছে। ঘটনার পেছনে হত্যার কারণ এখনও পরিষ্কার নয়, তবে তদন্ত চলছে।

চট্টগ্রাম, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। হত্যার অন্যতম প্রধান আসামি চন্দন দাস আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে এই জবানবন্দি দেন চন্দন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান জানান, গত শুক্রবার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হলে চন্দন দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর আদালতে উপস্থিত হলে তিনি হত্যার পুরো ঘটনা বর্ণনা করেন। তিনি জানান, আইনজীবী সাইফুল ইসলামের ওপর হামলা চালানোর সময় রিপন দাস এবং ওম দাসসহ অন্যরা তাকে কোপায়।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চন্দন দাসের জবানবন্দি অনুসারে, হত্যাকাণ্ডের সময় সাইফুল ইসলামকে বঁটি, কিরিচ, লাঠি, বাটাম দিয়ে পেটানো হয়। রিপন দাসের হাতে ছিল বঁটি, আর চন্দন দাসের হাতে ছিল কিরিচ। ঘটনার সময় চন্দন হেলমেট পরে ছিলেন, তার পরনে ছিল কমলা রঙের গেঞ্জি এবং কালো প্যান্ট। রিপন দাসও একটি হেলমেট পরেছিলেন, তার গায়ে নীল রঙের গেঞ্জি ও জিনস প্যান্ট ছিল। ভিডিও ফুটেজে এই দুই আসামির পরিচয় স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে।

গত বুধবার, কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে চন্দন দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। চন্দন দাস একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, এবং তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এক নম্বর আসামি। তার স্বীকারোক্তির পর, পুলিশ তদন্তের গতি ত্বরান্বিত করেছে। যদিও চন্দন দাস জানিয়েছেন, তিনি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া ১০-১২ জনের মধ্যে কিছু পরিচিত, কিছু অজানা ব্যক্তিকে চেনেন, তবে তিনি হত্যার কারণ বা কার নির্দেশে এই ঘটনা ঘটেছে, তা জানাতে পারেননি।

এদিকে, সাইফুল ইসলামের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন, যেখানে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের পর, আরও পাঁচটি মামলা দায়ের হয়েছে, যেগুলোর মধ্যে পুলিশের ওপর হামলা, কাজকর্মে বাধা দেওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছেন, মোট ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১০ জন হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

হত্যাকাণ্ডের পরে, হত্যার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়, যেখানে সাইফুল ইসলামকে মারধর করতে দেখা যায়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চন্দন দাস, রিপন দাস, ওম দাস এবং অন্যান্য আসামিরা মিলে এই নৃশংসতা ঘটিয়েছে। পুলিশ এখনও তদন্তে রয়েছে এবং হত্যার পেছনে লুকানো কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

এছাড়া, ২ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় দুই আসামির জন্য ওকালতনামা দেওয়ার পর আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি নেজাম উদ্দিন পদত্যাগ করেন। এই পদত্যাগের ঘটনায় আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং তারা আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।

চন্দন দাসের জবানবন্দি ও হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এখন চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। আইনজীবীদের ওপর হামলা, বিচারকর্মী ও পুলিশের প্রতি সহিংসতা আইনগত এবং সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, এবং এটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারিখ: ১০.১২.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনে পুলিশের ওপর হামলায় ৮ আসামি রিমান্ডে

চট্টগ্রামে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ৮ জনকে পাঁচ দিন রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। গত ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা হন। এই ঘটনায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ ছয়টি মামলা দায়ের হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনে পুলিশের ওপর হামলায় ৮ আসামি রিমান্ডে

চট্টগ্রামে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ৮ জনকে পাঁচ দিন রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। গত ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা হন। এই ঘটনায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ ছয়টি মামলা দায়ের হয়েছে।

চট্টগ্রাম, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার তদন্তে পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আদালত তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর হোসেন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এই আদেশ দেন। এই আট আসামি হলেন ইমন চক্রবর্তী, সুজন চন্দ্র দাস, সৌরভ দাস, মোহাম্মদ রফিক, সুমন দাস, রুপন দাস, আহমেদ হোসেন, এবং সাকিবুল আলম।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, পুলিশ এই আট আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছিল। তবে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয় এবং পরে তাদের ফের কারাগারে পাঠানো হয়।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, যিনি সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হন। তার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সহিংস ঘটনা ঘটে। ওই দিন আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়, এবং সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়।

ঘটনার পর সাইফুল ইসলাম হত্যার বিষয়ে তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার পাশাপাশি আরও পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়, যার মধ্যে পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা দেওয়া, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ রয়েছে। ছয়টি মামলায় মোট ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এছাড়াও, গতকাল সোমবার পুলিশি হামলা ও কাজে বাধাদানের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামির ওকালতনামা দিলে চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি নেজাম উদ্দিন বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন।

চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যার ঘটনা নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, যেখানে দেখা যায়, ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাইফুল ইসলামকে কোপাচ্ছে ওম দাশ, চন্দন এবং রনব। অন্যরা তাকে পেটাচ্ছে, আর সেখানে আরও ২৫-৩০ জন উপস্থিত ছিলেন। অধিকাংশ উপস্থিতি ছিলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী।

এদিকে, গ্রেপ্তার হওয়া আসামি চন্দন দাস আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, যেখানে তিনি আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার ঘটনা বর্ণনা করেন।

এই সহিংস ঘটনাটি চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনায় সরকারের প্রতি ক্ষোভ ও প্রতিবাদ প্রকাশ করা হয়েছে, পাশাপাশি ঘটনার তীব্র নিন্দাও জানানো হয়েছে।

তারিখ: ১০.১২.২০২৪

ইস্কন কলকাতা: বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের পদক্ষেপ দাবি

ইস্কন কলকাতা মঙ্গলবার জাতিসংঘকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ব্যাপারে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ইস্কন মুখপাত্র রাধারমন দাস মানবাধিকার দিবসে জাতিসংঘের নীরবতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি দাবি করেন, দেশে ধর্মীয় নিপীড়ন ও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বেড়েছে।
ইস্কন কলকাতা: বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের পদক্ষেপ দাবি

ইস্কন কলকাতা মঙ্গলবার জাতিসংঘকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ব্যাপারে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ইস্কন মুখপাত্র রাধারমন দাস মানবাধিকার দিবসে জাতিসংঘের নীরবতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি দাবি করেন, দেশে ধর্মীয় নিপীড়ন ও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বেড়েছে।

কলকাতা, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪: কলকাতার ইস্কন কেন্দ্র মঙ্গলবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (UNHCR)কে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের বিষয়টি নজরে আনার জন্য আহ্বান জানায় এবং এই মানবাধিকার লঙ্ঘনকে গভীরভাবে বেদনাদায়ক হিসেবে বর্ণনা করেছে। ইস্কন কলকাতার মুখপাত্র রাধারমন দাস বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে, যাতে সেখানে সংখ্যালঘুদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা যায়।’’ তার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি জাতিসংঘকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, ‘‘ওই ভিডিওটি দেখুন, যেখানে মৌলবাদীরা বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের এবং ইস্কনকে খুনের হুমকি দিচ্ছে। শুধু শুনুন, এটি খোলামেলা গণহত্যার ডাক।’’

রাধারমন দাস এক্স (আগে টুইটার) প্ল্যাটফর্মে বলেন, ‘‘হুঁশিয়ার হোন, @UNHumanRights! আজ #HumanRightsDay-এ অন্তত সাড়া দিন। বাংলাদেশে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতি আপনার নীরবতা এবং চোখ বন্ধ করা গভীরভাবে বেদনাদায়ক এবং হৃদয়বিদারক।’’ তিনি আরও দাবি করেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলির সংসদ সদস্যরা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, তবে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ (UNHCR) এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।

ইস্কন কলকাতার মুখপাত্র আরও বলেন, ‘‘বাংলাদেশে আমরা সব মানুষকে, তাদের ধর্ম নির্বিশেষে সেবা প্রদান করি, যেমন আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে করি। আমরা শুধু চাই, সেখানে সংখ্যালঘুদের এবং ইস্কনকে নিরাপত্তা দেওয়া হোক।’’ তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা যদি এখনো তাদের চোখ না খুলে, তবে তা বিশ্বমানবতার জন্য এক দুঃখজনক পরিণতি হবে।

রাধারমন দাস এক পোস্টে আরও বলেন, ‘‘হ্যাপি #HumanRightsDay! আমি আশা করছিলাম যে @UNHumanRights তাদের অলসতা থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশে হিন্দুদের দুর্দশা নিয়ে সাড়া দেবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তাদের নাক ডাকার শব্দ এখনও আরো জোরালো।’’ তিনি #SaveBangladeshiHindus হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে আরো বলেন, ‘‘পাওয়ার এবং অগ্রাধিকার ভিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে মানবাধিকার দিবসে এই বিষয়টির দিকে কোনো মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না।’’

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের পরিস্থিতি বেশ করুণ হয়ে উঠেছে। দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৭০ মিলিয়ন, যার মধ্যে হিন্দুরা প্রায় ৮ শতাংশ। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশটির ৫০টির বেশি জেলায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা জানাচ্ছেন, তাদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হচ্ছে, তাদের জমি-পত্তনি দখল করা হচ্ছে, এমনকি তাদের প্রতি হুমকি-ধামকিও দেওয়া হচ্ছে।

ইস্কন কলকাতা জানিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশে তাদের মিশন চালিয়ে যাচ্ছে এবং সব মানুষকে খাওয়ানো এবং সেবা প্রদান করছে, তবে তারা শুধুমাত্র সংখ্যালঘুদের এবং নিজেদের মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে। রাধারমন দাস বলেন, ‘‘আমরা সবসময়ই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই, বিশেষত তাদের জন্য যারা বাংলাদেশে নির্যাতিত হচ্ছেন।’’

এমন পরিস্থিতির মধ্যে, অনেক বাংলাদেশি হিন্দু পরিবার সীমান্তে আসার জন্য ভারতে ঢুকছে, কারণ তারা তাদের জীবনের নিরাপত্তা এবং পরিবারকে রক্ষা করতে চাইছে। তবে তাদের মতে, জাতিসংঘ যদি এই ব্যাপারে দ্রুত কিছু না করে, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।

এই সমস্ত অবস্থা নিয়ে ইস্কন কলকাতা আশা করছে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘ শীঘ্রই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেবে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

তারিখ: ১০.১২.২০২৪

সম্পত্তি বিক্রি করতে গেলে বাধা আসছে, জানাচ্ছেন বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের কারণে উদ্বেগ বাড়ছে। পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা সংখ্যালঘুরা জানাচ্ছেন, পরিচিতদেরও দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, জমি-বাড়ি বিক্রি করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিশেষত, দুষ্কৃতীরা হামলা ও নির্যাতন চালাচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ বৈঠক থেকে স্থায়ী সমাধান চাচ্ছেন তারা। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)
সম্পত্তি বিক্রি করতে গেলে বাধা আসছে, জানাচ্ছেন বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের কারণে উদ্বেগ বাড়ছে। পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা সংখ্যালঘুরা জানাচ্ছেন, পরিচিতদেরও দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, জমি-বাড়ি বিক্রি করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিশেষত, দুষ্কৃতীরা হামলা ও নির্যাতন চালাচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ বৈঠক থেকে স্থায়ী সমাধান চাচ্ছেন তারা। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

পেট্রাপোল, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে আশঙ্কা ও আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। এক প্রবীণ সংখ্যালঘু ব্যক্তি আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘পথেঘাটে দেখা হলে ইদানীং ওঁরা কেমন যেন এড়িয়ে চলছেন।’’ তিনি জানান, অনেক বছর ধরে পরিচিতরা, যারা কখনো বিপদে-আপদে পাশে ছিলেন, এখন দূরত্ব তৈরি করতে চাইছেন। ‘‘খুবই কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা,’’ বলছিলেন তিনি, তার কথায় স্পষ্ট ছিল যে, পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে, পুরনো সম্পর্কের ভিত্তিতে বিশ্বাসের জায়গা কমে যাচ্ছে।

এমন একটি সময়েই, সোমবার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তিনি। একই দিন, নড়াইল থেকে আসা এক বৃদ্ধ দম্পতি ছিলেন পেট্রাপোলে। তাদের কথায় আরও একটি হৃদয়বিদারক চিত্র ফুটে ওঠে। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এমন হয়েছে, আমরা অনেক সংখ্যাগুরুর কাছে যা টাকা-পয়সা পেতাম, তা ফেরত চাইতে সাহসই পাচ্ছি না।’’ তিনি জানালেন, তাঁদের জমির গাছগাছালি কেটে বিক্রি করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং সেখানে ভয় দেখানো হচ্ছে। বৃদ্ধের স্বামী জানালেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের জমি-বাড়ি বিক্রি করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের আশঙ্কা, অন্যত্র চলে গেলে সব দখল হয়ে যেতে পারে।’’ এই ধরনের দুঃখজনক পরিস্থিতি নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

নড়াইলের আরও এক মহিলা জানালেন, ‘‘রাত নামলেই আতঙ্ক গ্রাস করছে। গরু-ছাগল লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। পথেঘাটে টাকা-পয়সা নিয়ে নির্ভয়ে বের হওয়া যাচ্ছে না। ছিনতাই হয়ে যাচ্ছে।’’ এমন কঠিন অবস্থায়, বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার পরিবর্তে ভারতে পেট্রাপোল সীমান্তে আশ্রয় খুঁজছেন এই মানুষগুলি।

এক আরেকটি ঘটনা তুলে ধরেন, বাংলাদেশ থেকে এসেছেন সন্তোষ বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি। তিনি জানান, ‘‘দেশের পরিস্থিতি ভাল নয়। গ্রামে গ্রামে বনভোজন, জলসা করবে বলে জোর করে টাকা চাইছে কেউ কেউ। না দিলে নানা ভাবে নির্যাতন চলছে, হুমকি দিচ্ছে।’’ এ ধরনের হুমকি এবং ভয়াবহ পরিস্থিতি সংখ্যালঘুদের জীবনে আরও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

বাংলাদেশের কেশবপুরের বাসিন্দা, প্রাক্তন আওয়ামী লিগের জনপ্রতিনিধি জানান, ৬ অগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার বাড়িতে হামলা হয়েছিল। ‘‘ভাঙচুর, লুঠপাট চালানো হয়। বাড়ির মহিলারা এখনও রাস্তায় বেরোতে পারছেন না,’’ তিনি বলেন। একটি আরেকটি ঘটনার কথা শোনান এক বাংলাদেশি মহিলা, যার বাড়িতে দুষ্কৃতীরা লুটপাট করতে এসেছিল, কিন্তু স্থানীয় সংখ্যাগুরুর সাহায্যে তাদের প্রতিহত করা হয়েছিল।

এছাড়া, পেট্রাপোল সীমান্তে উপস্থিত বাংলাদেশি নাগরিকরা দৃষ্টি রেখেছিলেন ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠকের দিকে। ‘‘আমরা সবাই চাইছিলাম, বৈঠক থেকে স্থায়ী সমাধান সূত্র বের হোক। যাতে আমরা আমাদের দেশে শান্তিতে বসবাস করতে পারি।’’ তারা তাদের দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, ‘‘আমরা চাই আমাদের দেশে শান্তিপূর্ণভাবে, মাথা উঁচু করে বাঁচতে।’’

এদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে, তাদের দেশে দমন-পীড়ন ও অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে পারে, যদি দ্রুত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া না হয়। তাদের প্রত্যাশা, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মাধ্যমে তারা যেন নিরাপদ জীবনযাপন করতে পারেন, সেই আশাতেই তারা অপেক্ষা করছেন।

পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশের এই উদ্বাস্তুদের মধ্যে এক ধরনের নিঃশব্দ সংগ্রাম চলছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইতিমধ্যেই নিজেদের সম্পত্তি ও বাড়ি-বাড়ির কষ্টার্জিত বস্তু হারিয়েছেন, আবার কেউ কেউ এমন এক পরিস্থিতিতে আছেন যেখানে তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত নয়। অনেকেই জানাচ্ছেন, ‘‘বাড়ি ফিরলে আবার হামলা হতে পারে।’’

তারিখ: ১০.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়ন বন্ধ হোক, এবার গর্জে উঠল মহামেডান স্পোর্টিং

সোমবার, শতাব্দী প্রাচীন মহামেডান ক্লাবের সভাপতি বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন, “এই অত্যাচার বন্ধ হওয়া উচিত।” ক্লাবের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল কলকাতার ডেপুটি হাইকমিশনে ডেপুটেশন জমা দিতে যাবে। ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডান ক্লাবও এ নিয়ে সোচ্চার হয়েছে।
বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়ন বন্ধ হোক, এবার গর্জে উঠল মহামেডান স্পোর্টিং

সোমবার, শতাব্দী প্রাচীন মহামেডান ক্লাবের সভাপতি বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন, “এই অত্যাচার বন্ধ হওয়া উচিত।” ক্লাবের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল কলকাতার ডেপুটি হাইকমিশনে ডেপুটেশন জমা দিতে যাবে। ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডান ক্লাবও এ নিয়ে সোচ্চার হয়েছে।

কলকাতা, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪: সোমবার, কলকাতার এক শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের সভাপতি বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমরা এই ঘটনার নিন্দা করছি। যত দ্রুত সম্ভব এই অত্যাচার বন্ধ হওয়া উচিত।” তার এই বক্তব্যের পর, ক্লাবের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কলকাতার ডেপুটি হাইকমিশনে যাবে এবং সেখানে একটি ডেপুটেশন জমা দেওয়া হবে।

এটি এমন একটি সময়ের মধ্যে এসেছে যখন ওপার বাংলায় সংখ্যালঘুদের উপর ‘পরিকল্পিত’ নির্যাতন বিষয়ে তীব্র বিরোধিতা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবও বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানায়, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে, এবং এই ক্লাবের অধিকাংশ সমর্থকের পূর্বপুরুষেরা পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশের অধিবাসী ছিলেন। তারা এই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও দিয়েছে।

এবার, মহামেডান ক্লাবও এই ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছে। তাদের বক্তব্য, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে এপার বাংলার মানুষের মনও কাঁদছে। মহামেডান ক্লাবের পক্ষ থেকে এই সমালোচনাটি আরও একবার স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে যে, সীমান্তের ওপারে সংখ্যালঘুদের ওপর যে অত্যাচার চলছে, তা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এদিকে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন আরও তীব্র হতে থাকে, বিশেষ করে ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেপ্তারের পর থেকে। এই ঘটনার পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ভয়াবহ আকারে শুরু হয়, এবং এ পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এমন সময়ে, ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি বাংলাদেশে পৌঁছান। তিনি সোমবার সীমান্তের ওপারে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, উপাসনাস্থলে হামলা, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের বিদেশ সচিবদের সাথে বৈঠক করেন।

এই বৈঠকে ভারতীয় বিদেশ সচিব বাংলাদেশ সরকারের কাছে জানতে চান, তাদের ভূমিকাটি কী হবে, বিশেষ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। ভারত সরকার এরই মধ্যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, এবং এসব বিষয়ে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া, সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনায় যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তাতে ভারতের পক্ষ থেকে আরও তৎপরতা দেখানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। সীমান্তের ওপারে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের সম্পত্তি এবং উপাসনাস্থলে হামলা বন্ধ করা, এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশের সরকারকে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভারত অনুরোধ জানায়।

এদিকে, কলকাতার ক্লাবগুলি, বিশেষ করে ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান, বারবার সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে, এবং তাদের অবস্থান স্পষ্ট করছে। এসব ক্লাবের সমর্থকরা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ, এবং এর মোকাবিলায় ভারতকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

এছাড়া, লাল-হলুদ শিবিরের পক্ষ থেকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাদের দাবি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে ভারত সরকারকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। ভারতীয় ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, তারা কোনওভাবেই সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার মেনে নেবে না এবং তারা চাইছেন, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

এই পরিস্থিতিতে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পর, দুই দেশের বিদেশ সচিবদের মধ্যে বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই বৈঠকের মাধ্যমে ভারত এবং বাংলাদেশ নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারবে এবং তারা কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করতে পারে, সেটি নির্ধারণ করা হবে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা এবং তাদের নিরাপত্তা নিয়ে দুই দেশকে আলোচনা করতে দেখা গেছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি এবং বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে, এবং এই বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে, কলকাতার ক্লাবগুলো, যাদের সমর্থকদের অধিকাংশই পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, তারা এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের বক্তব্য, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে, এবং এ বিষয়ে ভারত সরকারের সক্রিয় পদক্ষেপ জরুরি।

এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়, কারণ এই ঘটনায় শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দুই দেশের মধ্যে শান্তি ও সহযোগিতার পরিবেশ বজায় রাখতে, এই সংকট দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন।

তারিখ: ১০.১২.২০২৪

উদ্বাস্তু হওয়ার আতঙ্কও ভর করছে ওঁদের উপরে

পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা আতঙ্কের মধ্যে যাতায়াত করছেন। বৃদ্ধ আনন্দ বালা ও অন্যরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বাড়ছে। তারা উদ্বাস্তু হওয়ার আশঙ্কায় ভারতে আশ্রয়ের দাবি করেছেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীরা। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)
উদ্বাস্তু হওয়ার আতঙ্কও ভর করছে ওঁদের উপরে

পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা আতঙ্কের মধ্যে যাতায়াত করছেন। বৃদ্ধ আনন্দ বালা ও অন্যরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বাড়ছে। তারা উদ্বাস্তু হওয়ার আশঙ্কায় ভারতে আশ্রয়ের দাবি করেছেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীরা। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

পেট্রাপোল, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪: পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে যাতায়াত করা সংখ্যালঘুদের সংখ্যা কমলেও তাদের উদ্বেগ থামেনি। বিশেষ করে, বৃদ্ধ আনন্দ বালার মতো অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে সীমান্ত পার করছেন। আনন্দ বালা, যিনি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখেছিলেন, জানালেন যে, দেশের পরিস্থিতি এতটা খারাপ হবে, তা ভাবতেই পারছেন না। তিনি বললেন, “চোখের সামনে যে দেশটা স্বাধীন হতে দেখলাম, সেই দেশের এমন ভয়াবহ পরিণতি হবে, ভাবতেই পারছি না।” বয়সের কারণে এখন কোনো কাজ করতে পারছেন না তিনি, কিন্তু তার উদ্বেগ এবং চিন্তা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত গভীর।

আনন্দ বালার মতে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি আচমকা খারাপ হয়নি। এটি দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে ঘটছে। তিনি জানান, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার এখন অনেক বেড়েছে এবং তাদের মনোবল ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বসবাসের পরিস্থিতি নেই। জন্মভিটে ছেড়ে জমি-বাড়ি বিক্রি করে এ দেশে চলে আসা ছাড়া কোনো উপায় নেই। পুলিশ প্রশাসন কিছুই করছে না।”

একইভাবে, গোপালগঞ্জের এক বৃদ্ধ জানান, বয়সের কারণে জন্মভিটে ছেড়ে আসা তাদের কাছে অত্যন্ত কষ্টকর। তবে, তিনি জানান, দেশে তাদের অস্তিত্ব সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছে, আর এই কারণে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তার মতে, “নিরুপায় হয়ে আসতে হচ্ছে, আর বাংলাদেশে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচনের পর আমাদের উপর অত্যাচার আরও বাড়বে। আমরা চাই, ভারত আমাদের শরণার্থীর মর্যাদা দিয়ে আশ্রয় দিক।”

মণিরামপুরের আরেক বৃদ্ধের মতে, “সামনে বাংলাদেশে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচন হয়ে গেলে আমাদের উপর অত্যাচার আরও বাড়বে। আমরা চাই, ভারত আমাদের শরণার্থীর মর্যাদা দিয়ে আশ্রয় দিক।” এটি খুবই দুঃখজনক যে, দেশে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখানে বহু মানুষ তাদের বসবাসের জায়গা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।

এদিকে, যশোর থেকে আসা সরোজকুমার ঘোষ জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমে যেটুকু দেখানো হচ্ছে, তা বাস্তবে তার চেয়েও অনেক বেশি। তিনি জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মধ্যে এতটাই আতঙ্ক যে, পেট্রাপোল সীমান্তে দাঁড়িয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে কথা বলতেও তারা ভয় পাচ্ছেন। এই আতঙ্কের কারণ হলো, যদি তারা দেশে ফিরেন, তাহলে অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হবে। তাদের ভাষ্য, “আমরা জানি না আর কখনও এ দেশে আসতে পারব কি না! তবে, ভারত সরকারের কাছে আমাদের আর্জি, আমাদের বাঁচাতে পদক্ষেপ করুন।”

এছাড়া, সলমান হোসেন নামে এক ব্যক্তি যারা এই দেশে চিকিৎসা শেষে ফিরছিলেন, তিনি আরও একটি সমস্যা তুলে ধরেন। তিনি জানান, “আনাজ-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম গরিব মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। সরকারি মদতে ভারত সম্পর্কে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা চাই দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকুক।” সলমানের মতে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশে সুসম্পর্ক থাকা প্রয়োজন, কারণ তা দুই দেশের জনগণের জন্যই উপকারী হবে।

যদিও বাংলাদেশে আসা বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের বেশিরভাগেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং তাদের অনেকেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন, তবুও তাদের মধ্যে উদ্বেগের শেষ নেই। এক যুবক জানালেন, “জানি না আর কখনও এ দেশে আসতে পারব কি না!” তার মুখে হতাশা স্পষ্ট ছিল, এবং তিনি ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে বললেন, “আমাদের বাঁচানোর জন্য পদক্ষেপ করুন।”

এই পরিস্থিতিতে, পেট্রাপোল সীমান্তে আসা বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা একটি সাধারণ জীবনযাপনের জন্য উদ্বেগে আছেন। তারা জানেন না ভবিষ্যতে কী অপেক্ষা করছে এবং তারা আশা করছেন, ভারত সরকার তাদের পরিস্থিতি বুঝে কোনও পদক্ষেপ নেবে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, তাদের অস্তিত্ব সঙ্কট, এবং সেই কারণে ভারতে আসা সংখ্যালঘুদের আত্মবিশ্বাসের অভাব এসময় দেশটির রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিস্থিতির সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। দেশে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, আর এর ফলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারে, এই আশঙ্কা করছেন তারা। তারা জানেন, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিষয়টি এখন আর গোপন নয়, এবং এটি সামাজিক স্তরে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়া, ভারতের সাথে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে, কিছু ব্যক্তির মত, ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখলে, দুই দেশের নাগরিকরা আরও নিরাপদ এবং শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারবে। এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের জন্য ভারতের সাহায্য এবং আশ্রয়ের গুরুত্ব আরও বেড়ে যাচ্ছে।

পেট্রাপোল সীমান্তের সংখ্যালঘু বাংলাদেশিদের অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত কঠিন। তারা কোনও নির্দিষ্ট আশ্রয় বা নিরাপত্তা খুঁজে পাচ্ছেন না, এবং আশঙ্কা করছেন যে, তারা হয়তো আর কখনও এই দেশে ফিরে আসতে পারবেন না।

তারিখ: ১০.১২.২০২৪

ঢাকায় দাঁড়িয়ে দিল্লির বার্তায় সংখ্যালঘু-সুরক্ষাও

ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী ঢাকায় বৈঠক শেষে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আগের মতোই সুসম্পর্ক চায় ভারত। তিনি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ের আলোচনা হয়েছে, যেমন বিদ্যুৎ, শক্তি, বাণিজ্য ও ধর্মীয় সম্পত্তির নিরাপত্তা।
ঢাকায় দাঁড়িয়ে দিল্লির বার্তায় সংখ্যালঘু-সুরক্ষাও

ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী ঢাকায় বৈঠক শেষে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আগের মতোই সুসম্পর্ক চায় ভারত। তিনি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ের আলোচনা হয়েছে, যেমন বিদ্যুৎ, শক্তি, বাণিজ্য ও ধর্মীয় সম্পত্তির নিরাপত্তা।

ঢাকা, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং দু’দেশের সম্পর্কের অস্থিরতার মধ্যেও ভারত তার প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী। এই অবস্থানটি স্পষ্ট করেছেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। সোমবার সকালে ঢাকায় পৌঁছানোর পর, তিনি বাংলাদেশের বিদেশসচিব মহম্মদ জসীম উদ্দিনের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। বৈঠকটি প্রায় ঘণ্টাদুয়েক ধরে চলে। যদিও বৈঠক শেষে তৎক্ষণাৎ কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়নি, তবে মিস্রী সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে বৈঠকের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

মিস্রী জানান, “আমাদের মধ্যে অত্যন্ত খোলামেলা, গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং উভয়ের পক্ষে লাভজনক সম্পর্ক চায় ভারত।” তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ও অব্যাহত রাখার জন্য সুস্পষ্ট ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। ভারতের বিদেশসচিব আরও বলেন, “অতীতের মতোই বর্তমানেও নয়াদিল্লি ঢাকার সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়।” এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, ভারত কোনো ধরনের সম্পর্কের টানাপড়েনের পরেও তার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুষ্ঠু এবং স্থিতিশীল সম্পর্ক রাখতে চাইছে।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের আলোচনায় মিস্রী আরও উল্লেখ করেন যে, তাদের বৈঠকে বিদ্যুৎ, শক্তি, যোগাযোগ, বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিরা আলোচনা করেছেন, যার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে ভারত।

তবে, মিস্রী উল্লেখ করেন যে, তিনি বৈঠকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সম্পত্তির ওপর হামলার ঘটনার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। গত কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঘটনা সামনে এসেছে, এবং ভারত এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মিস্রী বলেছেন, “আমরা সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও আলোচনা করেছি এবং আমি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং উন্নয়ন নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি।” ভারতের বিদেশসচিব আরও বলেন, “আলোচনায় এসেছিল সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সম্পত্তির উপরে হামলার ঘটনাও।”

এদিকে, মিস্রী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও কিছু মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশে যে একাধিক পরিবর্তন ঘটেছে, তা তিনি উপলব্ধি করেছেন। তবে, তার মন্তব্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ভারতের মনোভাব। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০১৪ সালে মুহাম্মদ ইউনূস শপথ নেওয়ার পর, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথম রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে ছিলেন যিনি ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। এটি ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনকে স্বীকার করার এক ধরনের ইঙ্গিত।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যত সম্পর্কের দিকনির্দেশনা সম্পর্কে মিস্রী আরও বলেন, “ভারত এবং বাংলাদেশ দুটি প্রতিবেশী দেশ, যারা একে অপরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবসময়ই বিশ্বাস করি যে, আমাদের সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং দু’দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি আরও দৃঢ় হবে।”

এদিকে, মিস্রী ঢাকায় অবস্থানকালে বাংলাদেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন, যার মধ্যে ছিল চট্টগ্রামের সিটি মেয়র, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এবং রাজনৈতিক নেতারা। এই বৈঠকগুলোতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়, যার মধ্যে ছিল নিরাপত্তা, অর্থনীতি, এবং ধর্মীয় সম্পত্তি নিরাপত্তার বিষয়।

মিস্রী নিজে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভবিষ্যত সম্পর্কের ওপর তিনি অত্যন্ত আশাবাদী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্থিতিশীল এবং শক্তিশালী হতে চলেছে, এবং আমি আশা করি আগামী দিনে এর আরও উন্নতি হবে।”

এছাড়া, মিস্রী বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা সমাধান চাই, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় রয়েছে যা আমরা একযোগে সমাধান করতে পারব। আমরা আশা করি যে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই পরস্পরকে সহযোগিতা করবে এবং সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”

বাংলাদেশে ভারতীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের প্রসঙ্গেও মিস্রী বলেছেন, “ভারতীয় সরকার সবসময় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং মৌলিক অধিকার সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। আমাদের বিশ্বাস, বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”

দু’দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ এবং শক্তি বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে ভারত বিভিন্ন সময়ে সহায়তার কথা জানিয়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষ্যে আলোচনা চলছে। মিস্রী জানিয়েছেন, ভারত সবসময়ই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করবে।

এছাড়া, মিস্রী সাংস্কৃতিক বোঝাপড়ারও গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পেলে দু’দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান, পর্যটন এবং শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতি ভারত অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে।”

বৈঠকের শেষে, মিস্রী ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নতি ও উভয়ের পক্ষের লাভজনক সহযোগিতার প্রতি ভারতের অটুট মনোভাব পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, “বাংলাদেশ ও ভারত দুটো প্রতিবেশী দেশ, এবং আমাদের মধ্যে সম্পর্কের ভবিষ্যত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তারিখ: ১৫.১২.২০২৪

সুনামগঞ্জে কিশোরকে গ্রেপ্তার, ফেসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগ, বাড়িতে হামলা

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ফেসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিশোরটির পোস্টের মন্তব্যের কারণে উত্তেজিত জনতা মিছিল করে, এবং ২০-২৫টি সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়িতে হামলা চালায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সুনামগঞ্জে কিশোরকে গ্রেপ্তার, ফেসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগ, বাড়িতে হামলা

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ফেসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিশোরটির পোস্টের মন্তব্যের কারণে উত্তেজিত জনতা মিছিল করে, এবং ২০-২৫টি সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়িতে হামলা চালায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

সুনামগঞ্জ, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ফেসবুকে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ এ ঘটনায় কিশোরটিকে আটক করে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। আজ বুধবার, দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাইবার নিরাপত্তা আইনে উপপরিদর্শক (এসআই) আরাফাত ইবনে সফিউল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ওই কিশোর ফেসবুকে এক ব্যক্তির পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পবিত্র কোরআনের অবমাননা করে এমন একটি পোস্ট করে। স্থানীয় উত্তেজিত জনতা খবর পেয়ে ওই কিশোরের বিরুদ্ধে মিছিল করতে থাকে এবং ঘটনাটি দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। জনতার মিছিলের ফলে গ্রামের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে, এবং রাতের মধ্যে উত্তেজিত জনতা ওই কিশোরের বাড়িসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২০-২৫টি বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা চালায়। পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে থাকলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই কিশোরের বাবা দীর্ঘদিন ধরে ওমানপ্রবাসী। তার পরিবারে মা এবং বড় ভাই ছাড়া আর কেউ থাকে না। কিশোরটির বড় ভাই স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন, আর কিশোরটি দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। তাদের গ্রামে মোট ৮০-৯০টি পরিবার বাস করে, যার মধ্যে দুটি পরিবার ছাড়া সবাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। এক গ্রামবাসী বলেন, “একজনের কারণে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ, আমাদের সবটা ভেঙে গেল কেন?”

এদিকে, গ্রামে বেশ কিছু বাড়িতে তালা ঝুলছে এবং প্রায় সব বাড়ির অবস্থাও সংকটজনক ছিল। নৈনগাঁও মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আবদুর করিম হোসাইন বলেন, তারা গ্রামবাসীকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়। তিনি জানান, এই ঘটনার পর আর কোনো উত্তেজনা না ছড়িয়ে পড়ার জন্য তারা সচেষ্ট আছেন।

ঘটনার পর সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস মিয়া ও পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা আশ্বস্ত করেছেন যে, পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত করা হবে এবং গ্রামে এখন আর কোনো সমস্যা হবে না। তারা স্থানীয় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। দোয়ারাবাজার থানার ওসি মো. জাহিদুল হক জানান, বর্তমানে গ্রামে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন।

এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, কিশোরটির বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করার পর তাকে আটক করা হয় এবং বর্তমানে সে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এই মামলাটি তদারকি করছে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা ইউনিট।

স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে এবং তারা পরবর্তী সময়ে এমন কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য সতর্ক থাকবে। সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ এবং সেনাবাহিনী গ্রামে শান্তি বজায় রাখতে সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এছাড়া, গ্রামবাসীর মধ্যে উত্কণ্ঠা এবং আতঙ্কের মধ্যেও তারা শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা করছে। এক গ্রামবাসী বলেন, “আমরা চাই বিচার হোক, কিন্তু আমাদের শান্তি ও নিরাপত্তা যেন বজায় থাকে।”

এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কোন নিহত বা আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি, তবে হামলার কারণে কিছু বাড়ি ও দোকানপাটের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পুলিশ জানায়, তারা সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়ার জন্য কাজ করছে।

তারিখ: ১৫.১২.২০২৪

বেনাপোল বন্দরে যাত্রী গমনাগমন কমেছে, ভিসা নিয়ে শঙ্কা

আজ বেনাপোল ইমিগ্রেশন ও আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল প্রায় ফাঁকা। গতকাল পেট্রাপোল সীমান্তে ভারতীয় জনতা পার্টির বিক্ষোভের প্রভাব পড়েছে যাত্রী এবং পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে। ভারত সরকারের ভিসা নিষেধাজ্ঞার পর থেকে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে, যা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও কমতে পারে।
বেনাপোল বন্দরে যাত্রী গমনাগমন কমেছে, ভিসা নিয়ে শঙ্কা

আজ বেনাপোল ইমিগ্রেশন ও আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল প্রায় ফাঁকা। গতকাল পেট্রাপোল সীমান্তে ভারতীয় জনতা পার্টির বিক্ষোভের প্রভাব পড়েছে যাত্রী এবং পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে। ভারত সরকারের ভিসা নিষেধাজ্ঞার পর থেকে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে, যা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও কমতে পারে।

বেনাপোল, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে একটা, যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশন ও আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল প্রায় ফাঁকা ছিল। যেখানে সাধারণত যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়, সেখানে আজ তেমন কোনো ভিড় ছিল না। অধিকাংশ কাউন্টারেও কর্মকর্তা হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন। শ্রমিকদেরও তেমন কোনো ব্যস্ততা ছিল না। ভারত থেকে যাত্রীরা কিছুটা শঙ্কা ও সংশয়ের মধ্যে বেনাপোল সীমান্ত পার হচ্ছিলেন।

হীরালাল দাস, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বাসিন্দা, ১০ দিন আগে কলকাতার বারাসাতে আত্মীয়বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তিনি জানান, ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে গতকাল ব্যাপক আন্দোলন হওয়ার পর তিনি কোনো কিছু কিনে না ফিরে, শুধু পরনের পোশাক নিয়েই বেনাপোলে ফিরেছেন। তিনি আরও বলেন, “বিগত দিনগুলোতে বেনাপোল বন্দরে ভিড় ছিল, কিন্তু আজ মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে ইমিগ্রেশন শেষ হয়ে গেছে।”

অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ ঢাকাপাড়ার বাসিন্দা বুদ্ধদেব বাগচি, যিনি বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছিলেন, আজ ভারতে ফিরে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, “কয়েক দিন আগে বাংলাদেশে এসে বন্দরে খুব ভিড় ছিল, কিন্তু আজ বন্দরে কিছুই নেই, বুঝতে পারছি না কেন এত ফাঁকা।”

বেনাপোল বন্দরের পরিস্থিতি সম্পর্কে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) একটি অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এই বিক্ষোভের ফলে পেট্রাপোল সীমান্তে দেশ দুটি মধ্যে আমদানি-রপ্তানি ও যাত্রী যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা পর বিক্ষোভ শেষ হলে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী এবং পণ্য চলাচল শুরু হয়, তবে এর প্রভাব আজও দেখা যাচ্ছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা একটা পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার মানুষ যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছেন ৭৭৫ জন এবং ভারতে থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন ৭৬৯ জন। এই সংখ্যা গতকাল চার হাজার ছিল, কিন্তু জুলাই মাস থেকে ভারত সরকারের ভিসা নিষেধাজ্ঞার কারণে যাত্রী সংখ্যা কমে গেছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ জানায়, ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অধিকাংশ ভারতীয় ভিসার মেয়াদ রয়েছে এবং এরপর যাত্রী সংখ্যা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূঞা বলেন, “দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে যাত্রী কমতে পারে। ভারতীয় ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।”

পণ্য আমদানি-রপ্তানি ক্ষেত্রেও কিছুটা প্রভাব পড়েছে। বেলা দুইটা পর্যন্ত পেট্রাপোলের ওপারে ভারতের পণ্য বোঝাই ৬০০টি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ছিল। বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, “৫ আগস্টের পর থেকে আমদানি-রপ্তানি কমে গেছে, তবে পেট্রাপোলে আন্দোলনের তেমন প্রভাব পড়েনি।”

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজীব নাজির জানান, “দুপুরের পর থেকে ট্রাকের সংখ্যা বাড়ে, তাই তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।” তিনি আরও জানান, গতকাল ২৪৩টি ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে এবং ২০১টি ট্রাক রপ্তানি হয়েছে। আজ বেলা দুইটা পর্যন্ত ১০৫ ট্রাক পণ্য আমদানি এবং ১০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে।

বন্দর সূত্রে আরও জানা যায়, আজ বেলা দুইটার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ যাত্রী যাতায়াত করতে পারেন, তবে গতকাল যাত্রী সংখ্যা প্রায় সাত থেকে আট হাজার ছিল। ১৫ ডিসেম্বরের পর, ভারতীয় ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যাত্রী যাতায়াত আরও কমে যাবে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

আগরতলায় বাংলাদেশের কনস্যুলার সেবা বন্ধ

আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার পর কনস্যুলার সেবা বন্ধ। নিরাপত্তার কারণে ভিসা প্রদানও স্থগিত। হামলায় জাতীয় পতাকা পোড়ানোর নিন্দা জানিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব। ঘটনায় সাতজন গ্রেপ্তার ও পুলিশের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আগরতলায় বাংলাদেশের কনস্যুলার সেবা বন্ধ

আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার পর কনস্যুলার সেবা বন্ধ। নিরাপত্তার কারণে ভিসা প্রদানও স্থগিত। হামলায় জাতীয় পতাকা পোড়ানোর নিন্দা জানিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব। ঘটনায় সাতজন গ্রেপ্তার ও পুলিশের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার পর সেখানে কনস্যুলার সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন নিশ্চিত করেছেন যে নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সহকারী হাইকমিশন থেকে ভিসা সেবা আপাতত বন্ধ থাকবে।

গতকাল সোমবার দুপুরে আগরতলার সহকারী হাইকমিশনে একদল উগ্রপন্থী হামলা চালায়। হামলাকারীরা ভবনের ভাঙচুর, ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড ভেঙে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা খুলে নিয়ে পোড়ানোর মতো নিন্দনীয় কাজ করেছে। এ ঘটনার পর ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মাকে জরুরি ভিত্তিতে তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ সরকার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের কাছে কঠোর প্রতিবাদ পাঠিয়েছে।

আগরতলায় হামলার ঘটনায় ভারত তাৎক্ষণিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঘটনায় জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। এর পাশাপাশি, পুলিশের নির্লিপ্ততার কারণে চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই চার কর্মকর্তার মধ্যে তিনজন উপপরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত এবং এক ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্টকে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হয়েছে।

হামলার পেছনে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি গ্রেপ্তারকাণ্ডের জের ধরে ক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করার ঘটনায় উগ্রপন্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই গ্রেপ্তারকে সংখ্যালঘু নির্যাতন হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবাদ শুরু হয়। এমনকি, সুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টাও চালানো হয়।

আগরতলার সহকারী হাইকমিশনে হামলার পর ভারতের বিভিন্ন স্থানে থাকা বাংলাদেশের মিশনগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, আগরতলাসহ ভারতে বাংলাদেশের সব মিশনের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই একটি আনুষ্ঠানিক নোট পাঠানো হয়েছে।

ঘটনাটি নিয়ে ত্রিপুরার রাজ্য প্রশাসনও সক্রিয় হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু এ ধরনের নিন্দনীয় আচরণ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।” মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে এমন আক্রমণ প্রতিহত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, হামলার পর বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের কনস্যুলার সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অনেকেই এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান কামনা করেছেন। ঢাকার সঙ্গে আগরতলার ভৌগোলিক নৈকট্যের কারণে অনেক বাংলাদেশি এখান থেকে ভিসা সেবা নিয়ে থাকেন। তাই সেবার সাময়িক স্থগিতাদেশ দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

তালিবানি গনতন্ত্র: আইনজীবী পিটাও, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত

বাংলাদেশে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন মঙ্গলবারও স্থগিত থাকে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাঁকে আরও এক মাস জেলবন্দি থাকতে হবে। তার আইনজীবীর ওপর হামলা হওয়ায, তাঁর পক্ষে কেউ আদালতে দাঁড়াননি। তার জামিন আবেদন মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে স্থগিত রাখা হয় এবং তাঁকে আরও এক মাস কারাবাসে থাকতে হবে।
তালিবানি গনতন্ত্র: আইনজীবী পিটাও, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত

বাংলাদেশে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন মঙ্গলবারও স্থগিত থাকে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাঁকে আরও এক মাস জেলবন্দি থাকতে হবে। তার আইনজীবীর ওপর হামলা হওয়ায, তাঁর পক্ষে কেউ আদালতে দাঁড়াননি। তার জামিন আবেদন মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে স্থগিত রাখা হয় এবং তাঁকে আরও এক মাস কারাবাসে থাকতে হবে।

চট্টগ্রাম, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে স্থগিত রাখা হয় এবং তাঁকে আরও এক মাস কারাবাসে থাকতে হবে। ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাঁকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে চট্টগ্রাম আদালতে পেশ করা হলেও তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়নি। মঙ্গলবার জামিন শুনানির কথা থাকলেও তা ২ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদালতে তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।

বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের প্রধান আইনজীবী রমেন রায়ের বাড়িতে সোমবার রাতে হামলার অভিযোগ ওঠে। হামলার পর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইসকন কলকাতা শাখার মুখপাত্র রাধারমণ দাস এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবীদের ওপর হামলা করা হয়েছে এবং এতে আতঙ্কিত হয়ে কেউ তাঁর পক্ষে সওয়াল করতে চান না।’’

চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে এদিন সকাল থেকে নিরাপত্তা কড়াকড়ি করা হয়েছিল। প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়, তবে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালত চত্বরে চট্টগ্রামের আইনজীবীদের একাংশ মিছিল করেন। আদালতে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিমউদ্দিন চৌধুরী জানান, ‘‘কোনো আইনজীবী চিন্ময়কৃষ্ণের পক্ষে না দাঁড়ানোর বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের কাছে তথ্য নেই।’’

চিন্ময়কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ছিলেন এবং বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ আয়োজন করেছেন। তিনি ‘সনাতনী জাগরণ মঞ্চ’-এর অন্যতম মুখপাত্র। চট্টগ্রামে তাঁর ডাকে আয়োজিত সমাবেশে বিপুল সংখ্যক সংখ্যালঘু মানুষ অংশ নেন। এর আগেও তাঁকে সমর্থন জানিয়ে ৫৩ জন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলাসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপর ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। এই ঘটনার পর তাঁর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় মামলা রুজু করা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদিঘির মাঠে এক সমাবেশে এই কাজের পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে আদালতে এখনও বিস্তারিত বিচার হয়নি।

চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশে বিতর্ক তীব্র হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ বাড়ছে। এই আবহে ইসকনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন চিন্ময়কৃষ্ণের পাশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, ভারতও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক থেকে বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা সে দেশের সরকারের দায়িত্ব।’’ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘‘আমরা আশা করি চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচার হবে এবং তাঁর আইনি অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকবে।’’

এই ঘটনাগুলি শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের সংখ্যালঘু অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের আইনজীবীদের ওপর হামলা, মামলার পিছিয়ে যাওয়া, এবং বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সংখ্যালঘুদের জন্য ন্যায়বিচার পাওয়া কঠিন করে তুলেছে। সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের ন্যায্য অধিকার সুরক্ষিত করা আজ সময়ের দাবি।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলা ও সহিংসতার সতর্কবার্তা যুক্তরাজ্যের

বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলা ও সহিংসতার ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্য। জনাকীর্ণ স্থান, ধর্মীয় স্থাপনা ও রাজনৈতিক সমাবেশে হামলার আশঙ্কা জানানো হয়েছে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং অপরাধের তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন।
বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলা ও সহিংসতার সতর্কবার্তা যুক্তরাজ্যের

বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলা ও সহিংসতার ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্য। জনাকীর্ণ স্থান, ধর্মীয় স্থাপনা ও রাজনৈতিক সমাবেশে হামলার আশঙ্কা জানানো হয়েছে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং অপরাধের তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন।

ঢাকা, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি নিয়ে যুক্তরাজ্যের ঢাকাস্থ হাইকমিশন সতর্কবার্তা জারি করেছে। হাইকমিশনের হালনাগাদ ভ্রমণবিষয়ক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নির্বিচার সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা রয়েছে, যা জনাকীর্ণ স্থান, ধর্মীয় স্থাপনা এবং রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের মতো জায়গাগুলিতে হতে পারে। এসব স্থানে ভ্রমণ বা অবস্থানের সময় নাগরিকদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

হাইকমিশন আরও জানিয়েছে, কিছু গোষ্ঠী এমন ব্যক্তিদের টার্গেট করছে, যাঁরা তাদের দৃষ্টিতে ইসলাম পরিপন্থী জীবনযাপন করেন বা মত প্রকাশ করেন। এ ধরনের ঝুঁকির বিষয়টি উল্লেখ করে হাইকমিশন পূর্বেও সতর্ক করেছে।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে হাইকমিশন জানায়, ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে বাংলাদেশজুড়ে সহিংসতার ঘটনা ঘটে, যেখানে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। সেই সময় থেকে পরিস্থিতি অস্থির রয়েছে। রাজনৈতিক মিছিল, সভা-সমাবেশের মধ্যে সহিংসতার আশঙ্কা এখনো অব্যাহত। এগুলো অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।

বিক্ষোভ, ধর্মঘট এবং রাজনৈতিক আন্দোলনের কারণে দেশজুড়ে সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটার ঝুঁকি রয়েছে। এসব ঘটনায় প্রাণহানির আশঙ্কাও করা হচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পুলিশের কর্মকাণ্ডের ওপরও পড়েছে। যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনের মতে, কিছু থানায় উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ থানা পুনরায় সচল হলেও কিছু পুলিশ সদস্য এখনো কাজে ফেরেননি।

এছাড়াও, ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে অপরাধী চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ডাকাতি, সহিংস অপরাধ এবং ধর্ষণের ঝুঁকি নিয়েও সতর্ক করেছে ব্রিটিশ হাইকমিশন। বাংলাদেশে ভ্রমণরত নাগরিকদের অপরিচিত ব্যক্তিদের সাথে অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অস্থির পরিস্থিতি বিবেচনায় হাইকমিশন নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণের সময় স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করতে এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছে।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

ইউনূসের পরিকল্পনাতেই গণহত্যা: আমেরিকার সভায় ভার্চুয়াল বক্তৃতায় হাসিনা

ভারতের মাটি থেকে ভার্চুয়াল বক্তৃতায় শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের জন্য মুহাম্মদ ইউনূসকে দুষেছেন। তিনি ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে গণহত্যার পরিকল্পনার জন্য দায়ী করেন। হাসিনা নিজের ইস্তফার কারণ হিসেবে গণহত্যা এড়ানোর ইচ্ছার কথা উল্লেখ করেন।
ইউনূসের পরিকল্পনাতেই গণহত্যা: আমেরিকার সভায় ভার্চুয়াল বক্তৃতায় হাসিনা

ভারতের মাটি থেকে ভার্চুয়াল বক্তৃতায় শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের জন্য মুহাম্মদ ইউনূসকে দুষেছেন। তিনি ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে গণহত্যার পরিকল্পনার জন্য দায়ী করেন। হাসিনা নিজের ইস্তফার কারণ হিসেবে গণহত্যা এড়ানোর ইচ্ছার কথা উল্লেখ করেন।

নিউ ইয়র্ক, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভারতের মাটি থেকে আমেরিকায় আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত এই সভায় হাসিনা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সংখ্যালঘু নিপীড়ন এবং ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের উপর হওয়া হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি দাবি করেন, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুনিপুণ পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশে গণহত্যা চালাচ্ছে। তারেক রহমান, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র ও বিএনপি নেতা, লন্ডন থেকে এই ষড়যন্ত্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন হাসিনা।

হাসিনা বলেন, ‘‘আজ আমার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে মুহাম্মদ ইউনূস ছাত্র সমন্বয়কদের নিয়ে একটি পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশে গণহত্যায় লিপ্ত। তারেক রহমান বলেছেন, যদি মৃত্যু চলতেই থাকে, তাহলে সরকার টিকে থাকবে না।’’ তিনি দাবি করেন, এই পরিকল্পনার মূলে থাকা ব্যক্তিরাই দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন এবং সংখ্যালঘুদের উপর হওয়া হামলার পিছনেও তাদের হাত রয়েছে।

গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন শেখ হাসিনা। তিনি জানান, গণহত্যা এড়ানোর জন্য এবং নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি পদত্যাগ করেন। ইস্তফার পরে তিনি ভারত চলে আসেন। দিল্লিতে অবস্থানকালীন হাসিনা নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘আমি গণহত্যা চাইনি। ক্ষমতায় থাকতে চাইলে গণহত্যা হত। আমার নিরাপত্তারক্ষীরা যদি গণভবনে গুলি চালাতেন, তবে বহু মানুষ মারা যেত। আমি সেই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্যই সরে দাঁড়িয়েছি।’’

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার বক্তব্যে উঠে এসেছে তার ইস্তফার পেছনের কারণ। তিনি দাবি করেন, তার জীবন নিয়েও ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্কতায় তিনি জীবনের ঝুঁকি এড়াতে সক্ষম হন। তবে, দেশের জনগণের শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্যই তিনি পদত্যাগ করেন।

নিউ ইয়র্কের সভায় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী, মন্দির, গির্জা এবং ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের উপর হওয়া হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘‘কেন সংখ্যালঘুদের উপর এমন হামলা হচ্ছে? কেন আক্রান্ত হচ্ছে ধর্মীয় স্থানগুলি?’’ তিনি সংখ্যালঘুদের প্রতি চালানো অত্যাচার বন্ধের আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে এই বিষয়ে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়, তিনি সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর তাকে অভিনন্দন জানান। মঙ্গলবারের বক্তব্যে ট্রাম্পের সুরেই তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি চলছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’’

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নিপীড়ন এবং ধর্মীয় স্থানের উপর হামলার প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনার বক্তব্য আন্তর্জাতিক স্তরে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তিনি একদিকে নিজের ইস্তফার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন, অন্যদিকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য মুহাম্মদ ইউনূস এবং তারেক রহমানকে দায়ী করেছেন।

এই পরিস্থিতিতে দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার মতে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং দেশের বর্তমান অস্থিরতার মূলে থাকা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার ঘটনায় তিন পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭

ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলায় সাতজন গ্রেপ্তার। চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তিনজন সাময়িক বরখাস্ত। ঘটনার পর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাটি নিন্দা করেছেন এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়েছেন।
আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার ঘটনায় তিন পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭

ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলায় সাতজন গ্রেপ্তার। চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তিনজন সাময়িক বরখাস্ত। ঘটনার পর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাটি নিন্দা করেছেন এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়েছেন।

আগরতলা, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশপ্রধান কে কিরণ কুমার এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় নিউ ক্যাপিটাল কমপ্লেক্স থানায় একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামক স্থানীয় একটি সংগঠনের সদস্যরা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা করেন এবং ভাঙচুর চালান। তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাও পুড়িয়ে দেন। ঘটনার পরই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনসহ অন্যান্য উপ-হাইকমিশন ও সহকারী হাইকমিশনগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হবে।

এই ঘটনার জেরে চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনজন উপপরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া, ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে কাজ থেকে বিরত রেখে সদর দপ্তরে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।

অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের ভবনে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) এবং রাজ্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আগেও সেখানে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা ছিল, তবে তা আরও জোরদার করা হয়েছে।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা ঘটনাটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “বিক্ষোভের সময় একদল যুবক বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা করে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করে। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার সকলের রয়েছে, তবে এই ধরনের আক্রমণ মেনে নেওয়া যায় না।”

ঘটনার সূত্রপাত কয়েক দিন আগেই হয়েছিল। কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের কাছাকাছি এলাকায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ করে। এই সংগঠনগুলোর মধ্যে হিন্দুত্ববাদী এবং অন্যান্য সংগঠনও ছিল।

এদিকে, হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি আজ মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ চলো’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি। পুলিশপ্রধান কিরণ কুমার জানান, কর্মসূচি রোধ করতে আখাউড়া অঞ্চলে পুলিশের ব্যারিকেড স্থাপন করা হয়েছে।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে ভারতের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই ধরনের হামলা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকারক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনাটি যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে।

এই ঘটনার মাধ্যমে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কূটনৈতিক ভবনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা আবারও সামনে এসেছে। দু’দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে এবং উত্তেজনা এড়াতে উভয়পক্ষকেই কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

'প্রাণ হাতে নিয়ে আছি, ভয় হয় এই বুঝি মারা যাই'

বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, অনেকে আতঙ্কে ভারতেও এসেছেন। চুরি, ডাকাতি, মূর্তি ভাঙচুরসহ নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করা হলেও নাগরিকদের আতঙ্ক বহাল। শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রার্থনা করছে সবাই।
'প্রাণ হাতে নিয়ে আছি, ভয় হয় এই বুঝি মারা যাই'

বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, অনেকে আতঙ্কে ভারতেও এসেছেন। চুরি, ডাকাতি, মূর্তি ভাঙচুরসহ নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করা হলেও নাগরিকদের আতঙ্ক বহাল। শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রার্থনা করছে সবাই।

ঢাকা, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দেশে বসবাসরত সংখ্যালঘুদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। অনেকে চিকিৎসার প্রয়োজনে ভারতে এসে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

গোপালগঞ্জের বাসিন্দা কাকুতি বৈরাগী চিকিৎসা করাতে ভারতে এসে জানান, নিজ দেশে আর নিরাপদ মনে হচ্ছে না। তিনি বলেন, “চুরি-ডাকাতি বেড়ে গেছে। রাতে ঘুমানো যায় না। পাহারা দিয়ে থাকতে হয়। সবসময় মনে হয়, এই বুঝি আমাদের ওপর আক্রমণ হবে। বাড়িতে আগুন দিয়ে দেবে।”

তিনি আরও বলেন, “মূর্তি ভাঙচুর হচ্ছে। রাস্তায় বেরোতে ভয় লাগে। বিশেষ করে মহিলারা বড় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। কখন কী ঘটে যায়, এই ভাবনাতেই দিন কাটছে।”

এ ধরনের পরিস্থিতি অনেকেই শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তাদের মতে, বাংলাদেশ এখন হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য একটি “হামলাদেশ”-এ পরিণত হয়েছে। শান্তির নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে থাকা অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ বলে মনে করছেন অনেকে।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন দাবি করেছেন, “বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে দেখানোর চেষ্টা চলছে। গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের দ্রুত দায়িত্ব নিতে হয়েছিল। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।”

কিন্তু বাস্তবে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। তারা বলছেন, নৈরাজ্য ও নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেছে। সামাজিক অস্থিরতা এবং ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক আচরণের কারণে তাদের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

অনেকেই শান্তির জন্য প্রার্থনা করছেন। তাদের আশা, বাংলাদেশ আবার সোনার বাংলায় পরিণত হবে। বর্তমান অশান্তির ঝড় থেমে গিয়ে একটি নিরাপদ পরিবেশে ফিরে আসবে দেশটি।

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় সরকারের কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। তবে পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। যারা ভুক্তভোগী, তাদের বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য সরকারকে সংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জনের পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

এই পরিস্থিতিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক এবং সরকার তাদের জীবনের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ গ্রহণ করুক।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি নিয়ে সোমবার বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিং

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে সোমবার ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। সরকারের পক্ষ থেকে দালিলিক প্রমাণ উপস্থাপন করে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ব্যাখ্যা করা হবে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে আলোচিত এবং বিতর্কিত হয়েছে।
অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি নিয়ে সোমবার বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিং

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে সোমবার ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। সরকারের পক্ষ থেকে দালিলিক প্রমাণ উপস্থাপন করে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ব্যাখ্যা করা হবে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে আলোচিত এবং বিতর্কিত হয়েছে।

ঢাকা, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি নিয়ে সরকার সোমবার ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের সামনে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবে। এই বিষয়ে একটি ব্রিফিং আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন দালিলিক প্রমাণ সহ সরকারের বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।

রোববার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে যে ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তার জেরে তৈরি হওয়া অস্থিরতার পটভূমি তুলে ধরা হবে। এ প্রসঙ্গে পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার, ইসকন ইস্যু এবং সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি চট্টগ্রামে আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময় অনুসারীদের হামলা এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার ঘটনাগুলো আলোচিত হবে।

ব্রিফিংটি অনুষ্ঠিত হবে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায়। এতে ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলোর প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হবে যে, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে যে আলোচনা চলছে, তা প্রকৃতপক্ষে একপাক্ষিক এবং অসত্য। জেনেভার জাতিসংঘ সংখ্যালঘুবিষয়ক ফোরামে এ বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে একটি প্রতিবেদনে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।

সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এ ধরনের ঘটনা কাকতালীয় এবং এর বেশিরভাগই ব্যক্তি স্বার্থ, পুরোনো দ্বন্দ্ব বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল। এগুলোর সঙ্গে ধর্মীয় বিষয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি মূলত পতিত সরকারের প্রতি সহানুভূতির অংশ এবং বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মহলে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তার বক্তব্যে তুলে ধরবেন যে, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ নতুনভাবে নিজের অবস্থান নির্ধারণ করছে। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বার্থ ও মর্যাদা রক্ষা করেই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার মতো ঘটনাগুলো সম্পর্কে সরকারের ব্যাখ্যা কূটনীতিকদের সামনে তুলে ধরা হবে। এছাড়াও জানানো হবে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের ধর্মচর্চার অধিকার রক্ষায় সরকার বদ্ধপরিকর।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এটি মূলত সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে। তবে এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রমাণসহ সরকারের অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরার প্রক্রিয়া চলছে।

এই ব্রিফিংয়ে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এবং আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কিত ইস্যুগুলো নিয়ে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা দেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে দৃঢ়ভাবে জানানো হবে যে, বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক, ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে, সমান অধিকার ভোগ করেন।

এদিকে, ৫ আগস্টের পর থেকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের জেরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে। তবে সরকার দাবি করেছে যে, এসব অভিযোগ পরিকল্পিতভাবে রং লাগিয়ে পরিবেশিত হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকার এই ধরনের প্রচারণা বন্ধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়েছে। ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার করতে এবং বিভ্রান্তি দূর করতে সরকারের উদ্যোগ চলমান রয়েছে।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

হিন্দু আইনজীবী-সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা! উদ্বেগ প্রকাশ সংখ্যালঘু অধিকার কাউন্সিলের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু আইনজীবী, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা এবং ইসকন ভক্তদের ভারতে প্রবেশে বাধার অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও আটকে দেওয়ার অভিযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল।
হিন্দু আইনজীবী-সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা! উদ্বেগ প্রকাশ সংখ্যালঘু অধিকার কাউন্সিলের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু আইনজীবী, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা এবং ইসকন ভক্তদের ভারতে প্রবেশে বাধার অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও আটকে দেওয়ার অভিযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল।

ঢাকা, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আইনজীবী ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা এবং ইসকন ভক্তদের ভারত যাত্রায় বাধা দেওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

চট্টগ্রামে ৭০ জন সংখ্যালঘু আইনজীবী ও ২ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ। স্থানীয় কোতয়ালি থানায় গত ৩০ নভেম্বর দায়ের হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা দেশি বোমা বিস্ফোরণ এবং গাড়ি ভাঙচুরের মতো ঘটনায় জড়িত। তবে ঐক্য পরিষদ দাবি করেছে, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাদের মতে, এই মামলা সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের একটি মামলায় আইনি সাহায্য এবং সংবাদ সম্প্রচারে বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ধরনের ঘটনা মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের বিরোধী। পরিষদ সরকারের প্রতি এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র ডেলি স্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই মামলা সমাজে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার হরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে, ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় সাংবাদিক মুন্নি সাহাকে হেনস্থার ঘটনা আরও বেশি সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। “এক টাকার খবর” পোর্টালের সম্পাদক মুন্নি সাহাকে রবিবার রাতে অফিস থেকে বের হওয়ার পর একদল ব্যক্তি ঘিরে ধরে হেনস্থা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায়। পরে তাকে মিন্টো রোডে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দপ্তরে নেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে এবং তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ভারতের বেনাপোল সীমান্তে ৮৩ জন ইসকন ভক্তকে ভারতে প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনায় নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা থাকা সত্ত্বেও ইসকন ভক্তদের সীমান্তে আটকে দেওয়া হয়। বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহসানুল কাদের ভুঁইয়া জানিয়েছেন, তাদের ভারত-ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় সরকারি অনুমতি ছিল না। তবে ভক্তরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর বাড়তে থাকা চাপের একটি নতুন দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার লঙ্ঘন, হয়রানি এবং বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও ভ্রমণে বাধা দেওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ঘটনাগুলোকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং সীমান্তে উদ্ভূত সমস্যাগুলোর সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি উঠেছে।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তি সেনা পাঠানো হোক, চান মমতা

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতিসংঘে শান্তি সেনা পাঠানোর প্রস্তাব করেছেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের এখতিয়ারে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দাবি করেছেন। সীমান্ত ইস্যুতেও তাঁর মন্তব্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তি সেনা পাঠানো হোক, চান মমতা

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতিসংঘে শান্তি সেনা পাঠানোর প্রস্তাব করেছেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের এখতিয়ারে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দাবি করেছেন। সীমান্ত ইস্যুতেও তাঁর মন্তব্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

কলকাতা, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের প্রসঙ্গে আজ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমাদের প্রস্তাব, কেন্দ্র রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে বাংলাদেশে শান্তি সেনা পাঠানোর আরজি জানাক।” এই বিষয়ে একটি লিখিত প্রস্তাবও তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আন্দোলন শুরু করেছে। উত্তর-পূর্ব ভারত এবং পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা জানান, রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েই মুখ্যমন্ত্রী এই মন্তব্য করেছেন। বিরোধীরা বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ইস্যু হিসেবে তুলতে শুরু করেছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বলেন, “এই বিষয়টি রাজ্য সরকারের এখতিয়ারে পড়ে না। এটি একান্তভাবে কেন্দ্র সরকারের বিষয়। তবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। প্রধানমন্ত্রীর উচিত সংসদে এ বিষয়ে বিবৃতি দেওয়া।” তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার চুপ করে বসে রয়েছে। বিজেপি রোজ মিছিল করছে। সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। খাবার না দেওয়ার হুমকিও এসেছে। তবে আমরা চাই, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হোক। যেকোনো পরিস্থিতিতে মানুষের শান্তি নিশ্চিত করা জরুরি।”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “আমাদের বহু বন্ধু এবং আত্মীয় বাংলাদেশে রয়েছেন। যেকোনো ধর্ম, বর্ণ বা জাতির মানুষ আক্রান্ত হলে তা নিন্দনীয়। আমরা চাই, এ ধরনের ঘটনা বন্ধ হোক।”

তৃণমূল কংগ্রেসের একজন শীর্ষ নেতা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, তা একটি বড় পদক্ষেপ। এর আগে কোনো মুখ্যমন্ত্রী এ ধরনের মন্তব্য করেননি। তবে এটি রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার একটি কৌশল বলেই মনে হচ্ছে।”

বাংলাদেশে ভারতীয় পতাকার অসম্মান নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “জাতীয় পতাকার প্রতি অসম্মান কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ বিষয়ে আমরা ইসকনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।” এছাড়াও তিনি বলেন, “বাংলাদেশে পশ্চিমবঙ্গের ৭৯ জন মৎস্যজীবী বন্দী রয়েছেন। তাঁদের আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে।”

বাংলাদেশ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যে রাজনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছেন, তা পরিষ্কার। তৃণমূল কংগ্রেসের একজন নেতা বলেন, “বিরোধীরা বিষয়টিকে কাজে লাগাচ্ছে। এটি একটি বড় রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তবে তিনি যা বলেছেন, তা সঠিক।”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরেও আলোচনা চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শান্তি সেনা পাঠানোর প্রস্তাব এ বিষয়ে আরও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত করতে দুই দেশের সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করছেন অনেকে।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

বাংলাদেশ সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুম্বাইতে ভিএইচপি-র প্রতিবাদ

মুম্বাইতে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে ভিএইচপি সদস্যরা বিক্ষোভ দেখান। প্রায় ৩০০ বিক্ষোভকারী আজাদ ময়দানে সমবেত হয়ে হাইকমিশনের দিকে যান। শিল্পপতি ও প্রাক্তন মন্ত্রী মঙ্গল প্রভাত লোধাও বিক্ষোভে যোগ দেন। পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
বাংলাদেশ সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুম্বাইতে ভিএইচপি-র প্রতিবাদ

মুম্বাইতে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে ভিএইচপি সদস্যরা বিক্ষোভ দেখান। প্রায় ৩০০ বিক্ষোভকারী আজাদ ময়দানে সমবেত হয়ে হাইকমিশনের দিকে যান। শিল্পপতি ও প্রাক্তন মন্ত্রী মঙ্গল প্রভাত লোধাও বিক্ষোভে যোগ দেন। পুলিশ তাদের আটকে দেয়।

মুম্বাই, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: সোমবার মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান বিশাল হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-র কয়েকশ সদস্য। বিক্ষোভকারীরা ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে প্রায় ১০০-১৫০ গজ দূরে অবস্থান নেন। তারা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন এবং ইসকন সদস্যদের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপের প্রতিবাদে স্লোগান দেন।

বাংলাদেশ মিশনের প্রধান মাহমুদুল হাসান এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এছাড়াও ঢাকার এক কূটনৈতিক সূত্র জানায়, প্রায় ৩০০ জন বিক্ষোভকারী প্রথমে মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে সমবেত হয়। সেখান থেকে তারা বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের দিকে যান এবং সেখানে স্লোগান ও সমাবেশ করেন।

বিক্ষোভে যোগ দেন মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বিশিষ্ট শিল্পপতি মঙ্গল প্রভাত লোধা। তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করেন।

সাধারণত, কোন বিদেশি মিশনের কাছে কোনও প্রতিবাদ বা সমাবেশ হলে সেই তথ্য হোস্ট দেশ থেকে সংশ্লিষ্ট মিশনকে জানানো হয়। তবে, বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন প্রথম এই বিক্ষোভের খবর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পারে। মিশনটি পরে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

স্থানীয় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয় এবং জানায়, তারা মূলত গণমাধ্যমের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মিশনের কাছাকাছি যেতে দেয়নি।

বিক্ষোভের ঘটনাটি বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বিদ্যমান কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের অভিযোগ এবং ইসকন সদস্যদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচনা চলছে।

এই ধরনের বিক্ষোভ সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষার প্রশ্নে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে কূটনৈতিক স্তরে এমন পরিস্থিতি আরও সমাধানমূলক আলোচনার দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন, ডাক্তারি পড়া ছাড়ার সিদ্ধান্তে যুবতী

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ক্রমশ বাড়ছে। উদয়কুমার ঘোষ জানালেন তাঁর ভাইয়ের মেয়ে ডাক্তারি পড়া ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। বাড়ি ফেরার পরও নিরাপত্তাহীনতা, হোস্টেলে থাকা অসম্ভব। প্রধান লক্ষ্য মেয়েরা এবং সম্পত্তি। পরিবারের লড়াইয়ের পরিকল্পনার কথা জানালেন তিনি। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)
বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন, ডাক্তারি পড়া ছাড়ার সিদ্ধান্তে যুবতী

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ক্রমশ বাড়ছে। উদয়কুমার ঘোষ জানালেন তাঁর ভাইয়ের মেয়ে ডাক্তারি পড়া ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। বাড়ি ফেরার পরও নিরাপত্তাহীনতা, হোস্টেলে থাকা অসম্ভব। প্রধান লক্ষ্য মেয়েরা এবং সম্পত্তি। পরিবারের লড়াইয়ের পরিকল্পনার কথা জানালেন তিনি। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)

কলকাতা, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। ওপার বাংলায় হিন্দু পরিবারের চরম বিপন্ন পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন উদয়কুমার ঘোষ। বাংলাদেশের পরিস্থিতির গভীর সংকটের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়েরা এবং তাঁদের সম্পত্তি এখন মূল টার্গেট।

উদয়কুমার ঘোষের পরিবার মূলত ওপার বাংলায় বাস করে। তাঁর ভাইয়ের মেয়ে ডাক্তারি পড়ছিল। কিন্তু সম্প্রতি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, তাঁর ডাক্তারি পড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। এবিপি আনন্দের এক সাংবাদিকের সঙ্গে কথোপকথনে তিনি বলেন, “আমার ভাই আমাকে ফোন করে জানায়, তাঁর মেয়ে আর ডাক্তারি পড়তে চাইছে না। হোস্টেলে থাকা এখন অসম্ভব। বাড়ি ফিরে আসার পরও ওরা নিরাপদ বোধ করছে না।”

তিনি আরও বলেন, “আমার ভাই বলেছে, মেয়েটা এখন বিয়ে করতে চায়। ও আর বাংলাদেশে থাকতে চায় না। হোস্টেলগুলিতে থাকা যায় না। সবাই বাড়ি চলে এসেছে। বাড়িতে থেকেও শান্তি নেই। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, মেয়েদের সুরক্ষার জন্য তাঁদের বিয়ে দিয়ে দেওয়ার কথাও ভাবতে হচ্ছে।”

সাংবাদিকের প্রশ্নে উদয়কুমার জানান, “আমার ভাইয়ের পরিবার বলেছে, ছেলেরা কোনওভাবে লড়াই করে টিকে থাকতে পারবে। কিন্তু মেয়েরা মূল টার্গেট। পাশাপাশি, তাঁদের সম্পত্তি লুটপাটের চেষ্টা চলছে। আমাদের কাছে আর কোনও উপায় নেই। মা ও মেয়েদের সুরক্ষার জন্য অন্যত্র পাঠানোর পরিকল্পনা চলছে।”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের কারণে শিক্ষাক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। উদয়কুমার বলেন, “যে মেয়ে স্কুল-কলেজ পেরিয়ে ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন দেখছিল, সে আজ পড়াশোনা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে।”

উদয়কুমার ঘোষের কথায় উঠে এসেছে ওপার বাংলার হিন্দুদের ভয়াবহ দুর্দশার চিত্র। তিনি বলেন, “সেখানে হিন্দু মানেই অত্যাচারের শিকার। তাঁরা আর টিকতে পারছেন না। আমাদের পরিবার কোথাও পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু যাওয়ার জায়গাও নেই।”

এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। উদয়কুমার বলেন, “আমরা চাই আমাদের মেয়েদের সুরক্ষিত রাখা হোক। এটি এখন আমাদের প্রধান লড়াই।” তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরার জন্য সংবাদমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ঘটনা ওপার বাংলার হিন্দুদের জীবনে যে চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে, তারই উদাহরণ হল উদয়কুমারের ভাইয়ের পরিবারের পরিস্থিতি। হিন্দু পরিবারের মেয়েদের ওপর নির্যাতন এবং সম্পত্তি দখলের প্রচেষ্টা এখন ওপার বাংলার হিন্দুদের অন্যতম বড় সংকট।

এই পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক এবং সামাজিক মহলে আলোচনা চলছে। অনেকেই এই নির্যাতন বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক স্তরে হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছেন। তবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের এই দুর্দশা কত দ্রুত সমাধান হবে, তা এখনও অজানা।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, সীমান্তে বিক্ষোভে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে পেট্রাপোল সীমান্তে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়। জাতীয় পতাকা হাতে পদযাত্রা, জয় শ্রীরাম ধ্বনি ও কালো বেলুন উড়িয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। রাজ্যের বিরোধী নেতা সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধের দাবি তুলেছেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, সীমান্তে বিক্ষোভে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে পেট্রাপোল সীমান্তে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়। জাতীয় পতাকা হাতে পদযাত্রা, জয় শ্রীরাম ধ্বনি ও কালো বেলুন উড়িয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। রাজ্যের বিরোধী নেতা সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধের দাবি তুলেছেন।

পেট্রাপোল, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল সীমান্তে সনাতনী হিন্দু সংগঠনের ডাকে একটি বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কর্মসূচি শুরু হয় দুপুরে সীমান্তের মঞ্চ থেকে শুভেন্দুর বক্তব্যের মাধ্যমে। জাতীয় পতাকা হাতে তিনি প্রতিবাদের ডাক দেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐক্যের ওপর জোর দেন।

শুভেন্দু অধিকারীর আহ্বানে বিক্ষোভকারীরা “জয় শ্রীরাম” ধ্বনি দিয়ে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত পদযাত্রা করেন। সেখানে কালো বেলুন উড়িয়ে প্রতিবাদ জানান তারা। পদযাত্রা প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল হয়ে অভিবাসন কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছায়। সকাল থেকেই সীমান্ত এলাকায় প্রচুর মানুষ জমায়েত করেন। শুভেন্দু বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং একাত্মতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “হাজার হাজার মানুষ এই প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেছে। এটি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়কে টার্গেট করা হচ্ছে। এই নির্যাতন সহ্য করা হবে না। নতুন রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করাবে ভারত। যদি প্রয়োজন হয়, পাকিস্তানের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।”

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ এবং শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব দেন। তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারী সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ করার দাবি তোলেন। তিনি বলেন, “সকাল ৬টা থেকে সীমান্তে বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। এতে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। ভারতকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”

কিন্তু এই ঘটনায় কেন্দ্রের নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও কেন্দ্রে হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদী সরকার রয়েছে, তবুও বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কূটনৈতিক মহলের মতে, ভারত চাইলে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিতে পারত। দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের তলব করে কঠোর বার্তা দেওয়া যেত। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

এছাড়াও, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী বা বিদেশমন্ত্রী বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কোনো বিবৃতি দেননি। এই নীরবতা কেন্দ্র সরকারের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে।

বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালো বেলুন উড়িয়ে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি, সীমান্ত এলাকার স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নির্যাতন চলছে, তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

এই কর্মসূচির মাধ্যমে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো বৃহত্তর আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে ভারত কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।”

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন, আগরতলায় সহকারী হাই কমিশনে বিক্ষোভ

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন অফিসে বিক্ষোভ করে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি। জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। বিশাল পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন, আগরতলায় সহকারী হাই কমিশনে বিক্ষোভ

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন অফিসে বিক্ষোভ করে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি। জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। বিশাল পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

আগরতলা, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন এবং সনাতনী ধর্মগুরু চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন অফিসে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি বিক্ষোভ চালিয়েছে। এদিন বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আগুনে পুড়িয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এই ঘটনায় পুরো এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ত্রিপুরা পুলিশের বিশাল বাহিনী ও টিএসআর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সমিতির এক মহিলা বিক্ষোভকারী জানান, বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত হিন্দু সম্প্রদায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া বিনা কারণে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এই অন্যায় কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।”

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার হিন্দুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। হিন্দুদের ঘরবাড়ি, মন্দির, ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগানো এবং লুটপাটের ঘটনা বারবার ঘটছে। চিন্ময় প্রভুর মুক্তি দাবি করে সমিতি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি তাদের দাবি পূরণ না হয় তবে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।

এদিকে, ধর্মনগর দিঘীর পাড়ে নেতাজি মূর্তির পাদদেশে চিন্ময় প্রভুর মুক্তি এবং বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এই সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা দাবি জানান, বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

উদয়পুর মহাকুমার ব্রহ্মাবাড়িতে অনুষ্ঠিত হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির আরেকটি বিক্ষোভ সমাবেশে কয়েকশ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তিন ঘণ্টাব্যাপী এই সমাবেশে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং চিন্ময় প্রভুর অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন। পরে ব্রহ্মাবাড়ি থেকে গোমতী জেলার জেলাশাসক কার্যালয় পর্যন্ত এক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

এদিকে, আগরতলার ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জাসওয়াল গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনের ওপর আক্রমণ অত্যন্ত দুঃখজনক। কূটনৈতিক ও কনসুলার সম্পত্তিকে কোনো অবস্থাতেই লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।” পাশাপাশি, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং ভারতের অন্যান্য স্থানে অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়গুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এই পরিস্থিতিতে, সমিতির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, চিন্ময় প্রভুকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। অন্যথায়, তারা আরো বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদ জারি রাখবেন বলে জানিয়েছেন।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে ইস্টবেঙ্গল, ‘শিকড়’ মনে করিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ

ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। ক্লাবের সমর্থকদের পূর্বপুরুষের শিকড় বাংলাদেশে থাকায় তারা উদ্বিগ্ন। লাল-হলুদ ক্লাব কর্তৃপক্ষ সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে ইস্টবেঙ্গল, ‘শিকড়’ মনে করিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ

ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। ক্লাবের সমর্থকদের পূর্বপুরুষের শিকড় বাংলাদেশে থাকায় তারা উদ্বিগ্ন। লাল-হলুদ ক্লাব কর্তৃপক্ষ সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছে।

কলকাতা, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর পরিকল্পিত আক্রমণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে ক্লাব জানিয়েছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের ঘটনা তাদের সমর্থকদের মানসিকভাবে প্রভাবিত করেছে। বিশেষ করে ক্লাবের অধিকাংশ সমর্থকের পূর্বপুরুষ পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত। দেশভাগের আগে এবং পরবর্তী সময়ে, বিশেষ করে ষাটের দশকের শেষ এবং সত্তরের দশকের শুরুতে বহু সমর্থকের পরিবার এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ক্লাব কর্তৃপক্ষের মতে, বর্তমানে তারা প্রচুর ফোন ও ই-মেইল পাচ্ছেন, যেখানে সমর্থকরা এই ইস্যুতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

লাল-হলুদ ক্লাবের সচিব রূপক সাহার জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব সব সময় জাতি এবং ধর্মের নামে হিংসা এবং অত্যাচারের প্রতিবাদে সোচ্চার থেকেছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তারা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন এবং মনে করছে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর যে ব্যাপক নিপীড়ন চালানো হচ্ছে, তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “আমরা সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাই যে তারা যেন এই সমস্যাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সমাধান করেন এবং সীমান্তের ওপারে আমাদের মা, বোন ও ভাইদের বাঁচাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।”

উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই সেখানে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, রাষ্ট্রীয় মদতে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে হিন্দু ঐক্যজোটের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর গ্রেপ্তারির পর বাংলাদেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। চিন্ময় কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়েছে এবং সনাতনী সম্প্রদায়ের মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের বিবৃতিতে এই ঘটনার প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ক্লাবের সহস্রাধিক সমর্থকের শিকড় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত। এমনকি বর্তমানে বহু সমর্থকের আত্মীয়স্বজন ওপার বাংলায় বসবাস করছেন। ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই নির্যাতনের ঘটনা মেনে নিতে পারছে না এবং তাদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা অত্যন্ত জরুরি।

এই শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাব বরাবরই সামাজিক এবং মানবিক ইস্যুতে তাদের অবস্থান প্রকাশ করেছে। এবারও তারা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দাবি জানিয়েছে। ক্লাবের বিবৃতি তাদের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। লাল-হলুদ সমর্থকরা আশা করছেন, তাদের ক্লাবের এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত ঘটাবে।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মন্ত্রকের তরফে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই বিষয়ে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সিদ্ধান্তেই আমরা সমর্থন জানাব।’’

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এই বিবৃতি শুধু তাদের সমর্থকদেরই নয়, বরং আন্তর্জাতিক মহলেও বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর এই নির্যাতন নিয়ে ক্লাবের সোচ্চার অবস্থান মানবতার প্রতি তাদের দায়বদ্ধতারই পরিচায়ক।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের আইনজীবীর উপর হামলা, জানালেন ইসকনের মুখপাত্র

বাংলাদেশে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আগে তাঁর আইনজীবী রমেন রায়ের উপর কট্টরপন্থীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। ইসকনের মুখপাত্রের দাবি, রমেন গুরুতর আহত হয়ে আইসিইউতে। এই হামলার পেছনে ইসলামপন্থীদের জড়িত থাকার অভিযোগ। আদালতে জামিনের শুনানি মঙ্গলবার।
চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের আইনজীবীর উপর হামলা, জানালেন ইসকনের মুখপাত্র

বাংলাদেশে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আগে তাঁর আইনজীবী রমেন রায়ের উপর কট্টরপন্থীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। ইসকনের মুখপাত্রের দাবি, রমেন গুরুতর আহত হয়ে আইসিইউতে। এই হামলার পেছনে ইসলামপন্থীদের জড়িত থাকার অভিযোগ। আদালতে জামিনের শুনানি মঙ্গলবার।

ঢাকা, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি মঙ্গলবার আদালতে হওয়ার কথা। কিন্তু এর আগে তাঁর আইনজীবী রমেন রায়ের উপর ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইসকন কলকাতার মুখপাত্র রাধারমন দাস জানিয়েছেন, রমেন রায় বর্তমানে আইসিইউতে ভর্তি এবং তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। এক্স হ্যান্ডেলে একটি ছবি পোস্ট করে রাধারমন দাস গোটা বিষয়টি তুলে ধরেন।

তিনি লিখেছেন, ‘‘আইনজীবী রমেন রায়ের জন্য প্রার্থনা করুন। তাঁর একমাত্র ‘ভুল’ হল তিনি চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের হয়ে আদালতে সওয়াল করেছিলেন। ইসলামপন্থীরা তাঁর বাড়িতে লুঠপাট চালিয়ে তাঁকে নির্মমভাবে আঘাত করেছে।’’ তিনি আরও জানান, যারা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের পক্ষে সহায়তা করছেন, তাঁদের অনেকেরই ওপর হামলা হচ্ছে। বিশেষ করে যারা আদালতে সওয়াল করছেন, তাঁদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।

রাধারমন দাস বলেন, ‘‘আমি শুনেছি যে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের হয়ে সওয়াল করা সমস্ত আইনজীবীর উপর প্রায় হামলা হয়েছে। রমেন রায়ের ওপর এই হামলা মানা যায় না। তিনি একজন সিনিয়র সিটিজেন। বর্তমানে তিনি খুব সিরিয়াস অবস্থায় রয়েছেন। আমি আরও শুনেছি, পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলাও করছে।’’

প্রসঙ্গত, হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁর মুক্তির দাবিতে সম্প্রতি বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। ইসকনও এই বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তবে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি হওয়ার আগেই এই হামলার ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

ইসকনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেন এই সহিংসতার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হয়।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর বারবার এই ধরনের আক্রমণ এবং প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য আরও বিক্ষোভ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের ঘটনা শুধুমাত্র স্থানীয় নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এই ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর উদাহরণ হয়ে উঠেছে এবং এর সমাধানের জন্য একটি সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন বিরোধী মিছিলে একজোট বিজেপি-তৃণমূল

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে চন্দ্রকোনা রোডে আয়োজিত মিছিলে বিজেপি ও তৃণমূল নেতারা একসঙ্গে অংশ নেন। হিন্দু সেবা সমিতির ডাকা এই মিছিল অরাজনৈতিক দাবি করলেও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। সনাতনী ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন দুই দলের নেতারা।
বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন বিরোধী মিছিলে একজোট বিজেপি-তৃণমূল

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে চন্দ্রকোনা রোডে আয়োজিত মিছিলে বিজেপি ও তৃণমূল নেতারা একসঙ্গে অংশ নেন। হিন্দু সেবা সমিতির ডাকা এই মিছিল অরাজনৈতিক দাবি করলেও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। সনাতনী ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন দুই দলের নেতারা।

মেদিনীপুর, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতন এবং সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোডে এক মিছিল আয়োজিত হয়। রবিবার বিকেলে হিন্দু সেবা সমিতির ডাকা এই মিছিলে প্রথমবারের মতো বিজেপি ও তৃণমূল নেতাদের একসঙ্গে হাঁটতে দেখা যায়। আয়োজকরা দাবি করেছেন, এটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক কর্মসূচি, যার লক্ষ্য প্রতিবেশী দেশে হিন্দুদের উপর চলা অত্যাচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা।

মিছিল শুরু হয় বজরংবলী মন্দিরের সামনে থেকে এবং চন্দ্রকোনা রোডের বাসস্ট্যান্ড, চৌরাস্তা মোড়, পঞ্চায়েত অফিস হয়ে বিদ্যাসাগর মঞ্চের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে আরএসএসের ঘনিষ্ঠ হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতা পারিজাত চক্রবর্তী, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিশ্র, বিজেপির এসসি মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মদন রুইদাস এবং তৃণমূলের জেলা সম্পাদক রাজীব ঘোষ, ব্লক নেতা জ্ঞানাঞ্জন মণ্ডলসহ উভয় দলের একাধিক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিত ছিলেন এলাকার সনাতনী হিন্দুরা, যারা দলমত নির্বিশেষে স্লোগানে কণ্ঠ মেলান।

হিন্দু সেবা সমিতির চন্দ্রকোনা রোড শাখার সভাপতি মিথিলেশ মিশ্র বলেন, “বাংলাদেশের সনাতনী হিন্দুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আমরা এই মিছিলের আয়োজন করেছি। আমরা স্থানীয় সনাতনী হিন্দুদের ফোনে ও সামাজিক মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, এবং তাদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি।”

মিছিলের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে ছিল বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ করা এবং চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি নিশ্চিত করা। এছাড়াও, বাংলাদেশের ঘটনায় ভারত সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়। মিছিলের সময়ে স্লোগানে প্রতিবেশী দেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়।

তৃণমূলের জেলা সম্পাদক রাজীব ঘোষ বলেন, “এটি একটি অরাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল। প্রতিবেশী দেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে আমরা মিছিলে অংশ নিয়েছি। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।” একই দাবি করেন তৃণমূলের ব্লক নেতা জ্ঞানাঞ্জন মণ্ডল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, “এই কর্মসূচিতে ধর্মীয় রাজনীতি ঢোকানোর কোনও প্রয়োজন নেই।”

বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিশ্র বলেন, “হিন্দু সেবা সমিতি সকলকে ডেকেছিল, তাই আমরা অংশ নিয়েছি। এতে কোনও রাজনৈতিক বিষয় নেই। বরং, এটি হিন্দু ঐক্যের প্রতীক।”

হিন্দু সেবা সমিতি ওই অঞ্চলের একটি পুরনো এবং প্রভাবশালী সংগঠন। তবে তাদের কর্মসূচিতে তৃণমূল নেতাদের যোগদান রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথমবারের মতো এই সংগঠনের কোনও কর্মসূচিতে বিজেপি ছাড়া অন্য কোনও দলের প্রতিনিধিত্ব দেখা গিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি সংগঠনের ভবিষ্যৎ কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত হতে পারে।

মিছিল শেষে আয়োজকরা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল হিন্দু ঐক্যের বার্তা দেওয়া এবং প্রতিবেশী দেশে সনাতনী হিন্দুদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা। আমরা তা করতে পেরেছি।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হিন্দু সেবা সমিতির এই কর্মসূচি এবং তাতে দুই বিপরীতমুখী দলের নেতাদের একত্রিত হওয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তবে মিছিলে অংশগ্রহণকারী নেতারা একে অরাজনৈতিক বলে দাবি করলেও, রাজনৈতিক মহলে আলোচনা থেমে নেই। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এটি কি শুধুই অরাজনৈতিক কর্মসূচি, নাকি এর পেছনে রয়েছে বৃহত্তর রাজনৈতিক সমীকরণ?

এতসব বিতর্কের মাঝেও মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের লক্ষ্য সম্পর্কে একমত হয়েছেন। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি সমর্থন এবং তাদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার প্রয়াসে এই মিছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ মিশনের কাছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিক্ষোভ

মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের কাছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শতাধিক সদস্য বিক্ষোভ করেন। তাঁরা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ইসকন সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিবাদে স্লোগান দেন। পুলিশ মিশনের কাছে তাঁদের পৌঁছাতে বাধা দেয়। বিক্ষোভে বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও অংশ নেন।
মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ মিশনের কাছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিক্ষোভ

মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের কাছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শতাধিক সদস্য বিক্ষোভ করেন। তাঁরা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ইসকন সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিবাদে স্লোগান দেন। পুলিশ মিশনের কাছে তাঁদের পৌঁছাতে বাধা দেয়। বিক্ষোভে বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও অংশ নেন।

মুম্বাই, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪: ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের রাজধানী মুম্বাইয়ে আজ সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের কাছে বিক্ষোভ করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং ইসকন সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিবাদে নানা স্লোগান দেন। বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের দূতালয় প্রধান মাহমুদুল হাসান জানান, বিক্ষোভকারীরা মিশনের এক থেকে দেড় শ গজের মধ্যে এসে অবস্থান নেন।

ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এদিন প্রায় তিন শ বিক্ষোভকারী মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে সমবেত হন। পরে তাঁরা সেখান থেকে সরে গিয়ে বাংলাদেশ মিশনের কাছে পৌঁছে স্লোগান দেন এবং পথসভা করেন। এই বিক্ষোভের আয়োজন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। মহারাষ্ট্র রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিশিষ্ট শিল্পপতি লোধা মঙ্গল প্রভাত বিক্ষোভে অংশ নেন।

বিক্ষোভের বিষয়ে উপহাইকমিশন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে প্রথম তথ্য পায়। সাধারণত বিদেশি কোনো মিশনের কাছে সমাবেশ হলে সেই মিশনকে আগাম জানানো হয়। কিন্তু এই ঘটনায় বাংলাদেশ মিশন আগে কোনো বার্তা পায়নি। স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে মিশনকে জানানো হয় যে বিক্ষোভকারীদের মূল লক্ষ্য ছিল গণমাধ্যমের নজর কাড়া।

স্থানীয় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মিশনের কাছে পৌঁছাতে বাধা দেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে বিক্ষোভকারীরা তাঁদের দাবি জানাতে স্লোগান ও পথসভা চালিয়ে যান।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই বিক্ষোভ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে পরিচালিত একটি সংগঠিত প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরব থেকেছে। এ ঘটনার পর মুম্বাই পুলিশ এবং বাংলাদেশ মিশনের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

তারিখ: ০৩.১২.২০২৪

‘ঘেরাওয়ের’ মুখে সাংবাদিক মুন্নী সাহা, পরে ছাড়া পেলেন

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় গতকাল শনিবার রাতে। কিছু লোক তাঁকে ঘেরাও করলে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায়। পরে নিরাপত্তার জন্য তাঁকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি মামলা থাকায় জামিনের শর্তে তাঁকে পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
‘ঘেরাওয়ের’ মুখে সাংবাদিক মুন্নী সাহা, পরে ছাড়া পেলেন

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় গতকাল শনিবার রাতে। কিছু লোক তাঁকে ঘেরাও করলে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায়। পরে নিরাপত্তার জন্য তাঁকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি মামলা থাকায় জামিনের শর্তে তাঁকে পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: তেজগাঁও থানার ওসি মো. মোবারক হোসেন জানান, রাত ১০টার দিকে কারওয়ানবাজারের জনতা টাওয়ারের অফিস থেকে বের হওয়ার সময় মুন্নী সাহাকে কিছু ব্যক্তি ঘিরে ধরে। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুন্নী সাহাকে নিয়ে যাওয়ার পর শতাধিক ব্যক্তি তাঁর ‘বিচারের’ দাবিতে স্লোগান দেন।

মুন্নী সাহা ‘এক টাকার খবর’ নামের একটি অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে তেজগাঁও থানার মাধ্যমে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, মুন্নী সাহাকে আটক করা হয়নি। কারওয়ানবাজারে লোকজন তাঁকে ঘিরে ধরে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। তখন পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় এবং পরে নিরাপত্তার জন্য ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, মুন্নী সাহার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। রাত দেড়টার দিকে মামলাগুলোর বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাঁকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়।

এই ঘটনা কারওয়ানবাজার এলাকায় বেশ উত্তেজনার সৃষ্টি করে এবং বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়।

তারিখ: ০১.১২.২০২৪

জোরালো হচ্ছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবি, শান্তিপ্রার্থনায় ইসকন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসকনের ১৫০টি দেশের মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা। বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিলেও আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনা চলছে।
জোরালো হচ্ছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবি, শান্তিপ্রার্থনায় ইসকন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসকনের ১৫০টি দেশের মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা। বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিলেও আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনা চলছে।

কলকাতা, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য রবিবার ইসকনের মন্দিরগুলোতে বিশ্বব্যাপী প্রার্থনা ও কীর্তনের আয়োজন করা হয়। কলকাতা, শিলিগুড়ি, জয়পুর, গুয়াহাটি, ভুবনেশ্বর, বেঙ্গালুরুসহ বিভিন্ন স্থানে ইসকনের ভক্তরা শান্তির জন্য প্রার্থনায় অংশ নেন। ইসকনের মুখপাত্র রাধারমণ দাস পিটিআইকে জানান, ১৫০টি দেশের প্রায় ৮৫০টি মন্দির এবং হাজারো কেন্দ্র থেকে ভক্তরা এই প্রার্থনায় যোগ দিয়েছেন। তাঁর বিশ্বাস, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।

ইসকনের বেঙ্গালুরু শাখার সভাপতি মধুপণ্ডিত দাস বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তিনি ভারত সরকারের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আলোচনা করেছেন। একইভাবে, অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাসও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানান।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। চট্টগ্রামে একটি মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা, শিবচরে ইসকনের একটি কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগসহ বিভিন্ন সহিংসতায় সংখ্যালঘুরা আতঙ্কিত। ‘প্রথম আলো’ এবং ‘ইন্ডিয়া টুডে’সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস নামক সন্ন্যাসীর গ্রেফতারের পর আরও দুই সন্ন্যাসীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর একের পর এক হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। পিটিআই-এর প্রতিবেদন অনুসারে, গত তিন মাসে বাংলাদেশের ৫০টি জেলায় ২০০টিরও বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে।

বেনাপোল সীমান্তে গত দুই দিনে ৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশের অভিবাসন পুলিশের দাবি, এই ব্যক্তিরা সন্দেহজনক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে সীমান্ত পার হতে চেয়েছিলেন। তবে, সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এরা ইসকনের ভক্ত ছিলেন।

দিল্লি থেকে একাধিকবার বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগের সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ বিচার হওয়া উচিত।

এদিকে, বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার জানিয়েছে, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম রাষ্ট্রপুঞ্জকে জানান, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চা করতে পারে এবং সংখ্যালঘুসহ সবাই নিরাপদ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বক্তব্য সত্ত্বেও, আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।

তারিখ: ০২.১২.২০২৪

বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ, ত্রিপুরা-কলকাতার দুই হাসপাতালের সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলা এবং ভারতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে ত্রিপুরার আইএলএস ও কলকাতার জেএন রে হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করেছে। সিদ্ধান্তের পেছনে হাসপাতালের কর্মকর্তারা জাতীয় স্বার্থ এবং নিরাপত্তার কারণ উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ, ত্রিপুরা-কলকাতার দুই হাসপাতালের সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলা এবং ভারতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে ত্রিপুরার আইএলএস ও কলকাতার জেএন রে হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করেছে। সিদ্ধান্তের পেছনে হাসপাতালের কর্মকর্তারা জাতীয় স্বার্থ এবং নিরাপত্তার কারণ উল্লেখ করেছেন।

আগরতলা, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার এবং ভারতীয় জাতীয় পতাকার অবমাননা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই ত্রিপুরার আগরতলা ও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার দুটি নামকরা হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার আগরতলার আইএলএস হাসপাতাল এই ঘোষণা দেয়। এর আগে শুক্রবার একই সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতার জেএন রে হাসপাতাল।

ত্রিপুরার আইএলএস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার গৌতম হাজারিকা জানান, “বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা স্থগিত রাখার দাবি পূর্ণ সমর্থন করি। আমাদের হাসপাতালের সহায়তা কেন্দ্রগুলি আজ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” হাসপাতালটি এতদিন বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিল। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনা এবং ভারতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অন্যদিকে, কলকাতার জেএন রে হাসপাতালের কর্মকর্তা শুভ্রাংশু ভক্ত বলেন, “বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য সহজ ছিল না। তবে, বাংলাদেশের কিছু ঘটনাবলি আমাদের এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। বাংলাদেশে ভারত-বিরোধী কার্যকলাপ মেনে নেওয়া যায় না, বিশেষ করে যখন ভারত দেশটির স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।”

আগরতলার হাসপাতালের বাইরে স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, বাংলাদেশি নাগরিকরা যাতে এই হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা না পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। এক বিক্ষোভকারী বলেন, “বাংলাদেশে মৌলবাদীরা শুধু সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালিয়েই থেমে থাকেনি, আমাদের জাতীয় পতাকাকে অপমান করেছে। এটি কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে। তাঁর গ্রেফতারির পর আরও দুই সন্ন্যাসী, রুদ্রপ্রতি কেশব দাস এবং রঙ্গনাথ শ্যামসুন্দর দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গেছে, তাঁরা জেলবন্দি চিন্ময়কৃষ্ণের জন্য খাবার, ওষুধ এবং টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দুই সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

এ ধরনের পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা রোগীদের উপর এর প্রভাব পড়েছে। হাসপাতালগুলির সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এদিকে, বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচনা চলছে।

ভারতীয় হাসপাতালগুলোর এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ এটিকে একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে সমর্থন করছেন, আবার কেউ মানবতার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি তুলছেন।

বাংলাদেশের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতি ও ভারতের কড়া পদক্ষেপের মধ্যে কীভাবে দুই দেশের সম্পর্ক এগোবে, তা নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে। তবে মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধের এই সিদ্ধান্ত হয়তো আরো পর্যালোচনা করা উচিত।

তারিখ: ০২.১২.২০২৪

ঢাকায় বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আক্রান্ত কলকাতার যুবক

উত্তপ্ত বাংলাদেশের ঢাকায় আক্রান্ত হলেন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা সায়ন ঘোষ। বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হামলায় রক্তাক্ত অবস্থায় ভারতে ফিরেছেন তিনি। সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। সায়নের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ঢাকায় বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আক্রান্ত কলকাতার যুবক

উত্তপ্ত বাংলাদেশের ঢাকায় আক্রান্ত হলেন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা সায়ন ঘোষ। বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হামলায় রক্তাক্ত অবস্থায় ভারতে ফিরেছেন তিনি। সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। সায়নের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

কলকাতা, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়ার দেশপ্রিয় নগরের বাসিন্দা সায়ন ঘোষ দিন দশেক আগে ঢাকায় বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ২৩ নভেম্বর ঢাকায় পৌঁছান তিনি এবং ২৬ নভেম্বর দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ফেরার আগের দিন ঢাকার বাজারে বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের দ্বারা আক্রান্ত হন। সায়নের অভিযোগ, রাস্তায় হঠাৎ করে এক দল লোক এসে তাঁদের ঘিরে ধরে জেরা করতে শুরু করে। জানতে পারে তিনি ভারত থেকে এসেছেন, তারপরেই তাঁরা চড়াও হয়ে প্রকাশ্য রাস্তায় মারধর শুরু করে। আশপাশের কেউ এগিয়ে এসে সাহায্য করেননি। বন্ধুর তৎপরতায় দুষ্কৃতীরা সরে গেলেও ততক্ষণে সায়ন রক্তাক্ত হয়ে পড়েছিলেন।

এই ঘটনার পর সায়ন স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানাতে যান। কিন্তু সেখানেও তেমন কোনও সাহায্য পাননি। পুলিশ প্রথমেই তাঁকে চিকিৎসা করিয়ে আসতে বলে। আহত অবস্থায় এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে ঘুরতে থাকেন সায়ন ও তাঁর বন্ধু। কেউ চিকিৎসা করতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা হয়। সায়নের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা তাঁর মোবাইল ফোন ও টাকাপয়সা কেড়ে নেয়। চিকিৎসা শেষে ভয়ে গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফেরেন।

দেশে ফিরেই সায়ন বেলঘরিয়া থানায় এবং গেদে সীমান্তের শুল্ক অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সোমবার তিনি কলকাতার বাংলাদেশের উপদূতাবাসে গিয়ে পুরো বিষয়টি জানাবেন বলে জানান। বাড়ি ফিরে এখনও আতঙ্কে আছেন সায়ন। তিনি জানান, বাংলাদেশে থাকা তাঁর বন্ধুর নিরাপত্তা নিয়েও তিনি চিন্তিত।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। একের পর এক সংখ্যালঘু নেতা এবং সন্ন্যাসীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাঁদের মুক্তির দাবিতে পথে নেমে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। সায়নের এই অভিজ্ঞতা পরিস্থিতির জটিলতাকে আরও প্রকট করে তুলেছে।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে দিল্লি উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সংখ্যালঘু-সহ প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বারবার অনুরোধ করা হয়েছে। সায়নের ঘটনায় ভারতীয় প্রশাসন বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিষয়টি তদন্ত করার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতার কারণে ভারতীয় পর্যটকদের জন্য সতর্কতার বার্তা দেওয়া হতে পারে। সায়নের মতো পরিস্থিতি যাতে আর কারও সঙ্গে না ঘটে, তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সংখ্যালঘু নিরাপত্তার প্রশ্নে বাংলাদেশের প্রশাসনের দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারিখ: ০২.১২.২০২৪

বন্দি চিন্ময়কৃষ্ণকে খাবার দিতে গিয়ে আরও দুই সন্ন্যাসী গ্রেফতার

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর বাংলাদেশে উত্তেজনা বাড়ছে। আরও দুই সন্ন্যাসী রুদ্রপ্রতি কেশব দাস ও রঙ্গনাথ শ্যামসুন্দর দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইসকন নিষিদ্ধের আবেদন আদালত খারিজ করেছে। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন জারি। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
বন্দি চিন্ময়কৃষ্ণকে খাবার দিতে গিয়ে আরও দুই সন্ন্যাসী গ্রেফতার

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর বাংলাদেশে উত্তেজনা বাড়ছে। আরও দুই সন্ন্যাসী রুদ্রপ্রতি কেশব দাস ও রঙ্গনাথ শ্যামসুন্দর দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইসকন নিষিদ্ধের আবেদন আদালত খারিজ করেছে। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন জারি। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

চট্টগ্রাম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নেতা তথা সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে আরও দুই সন্ন্যাসী রুদ্রপ্রতি কেশব দাস এবং রঙ্গনাথ শ্যামসুন্দর দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, চিন্ময়কৃষ্ণের মামলার তদন্তে তাঁদের সন্দেহভাজন হিসাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, রুদ্রপ্রতি এবং রঙ্গনাথ প্রবর্তক সঙ্ঘের সদস্য। তাঁরা চট্টগ্রামের জেলে বন্দি চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাঁকে খাবার, ওষুধ এবং কিছু টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাতে ফেরার পথে তাঁদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। তাঁদের কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে জেলে পাঠানো হয়। প্রবর্তক সঙ্ঘের প্রিন্সিপাল স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস তাঁদের ভয়েস মেসেজ থেকে এই তথ্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

ইসকন কলকাতার মুখপাত্র রাধারমণ দাস সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন যে, চট্টগ্রাম পুলিশ আরও এক সন্ন্যাসী শ্যাম দাসকে গ্রেফতার করেছে। তিনি এই গ্রেফতারির নিন্দা করে বলেন, ‘‘ইসকন গভীরভাবে মর্মাহত। নির্দোষ মানুষদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’’ পরবর্তীতে বাংলাদেশ পুলিশ জানায়, এক জন নয়, দু’জন সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কী অভিযোগ রয়েছে, তা পরিষ্কার করা হয়নি।

গত ৫ অগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দাবিতে সরব চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গত সোমবার গ্রেফতার করা হয়। তাঁর জামিন আবেদন খারিজ করে তাঁকে জেলে পাঠানো হয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম এবং রংপুরে সংখ্যালঘুরা বিক্ষোভে নামেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মঙ্গলবার এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়।

এই পরিস্থিতির মধ্যেই বাংলাদেশ হাই কোর্টে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আবেদন করা হয়। আদালতে বাংলাদেশ সরকার ইসকনকে একটি ‘‘ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন’’ বলে উল্লেখ করে। তবে আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। কলকাতায় গত কয়েকদিন ধরে ইসকনের সমর্থনে বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদ চলছে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক এবং সামাজিক মহলে আলোচনা চলছে। চিন্ময়কৃষ্ণ দাস এবং আরও দুই সন্ন্যাসীর গ্রেফতারির ঘটনা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং অধিকার রক্ষার প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এসেছে। পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক মহল।

তারিখ: ০২.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে জনমত গড়তে চায় সঙ্ঘ

বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নিপীড়ন রুখতে আরএসএস ভারত সরকারের তৎপরতা দাবি করেছে। ধৃত সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক জনমত তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ধরনের অমানবিক আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের সরকারের কাছে আরজি জানানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন আরএসএসের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসবলে।
বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে জনমত গড়তে চায় সঙ্ঘ

বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নিপীড়ন রুখতে আরএসএস ভারত সরকারের তৎপরতা দাবি করেছে। ধৃত সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক জনমত তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ধরনের অমানবিক আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের সরকারের কাছে আরজি জানানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন আরএসএসের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসবলে।

নয়াদিল্লি, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর চলমান নিপীড়ন এবং সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে আরএসএস ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের মতে, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, বাড়িঘর লুট, এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ ধরনের অমানবিক আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের সরকারের কাছে আরজি জানানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন আরএসএসের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসবলে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনাগুলি নতুন করে ভারতের রাজনীতিতে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। বিজেপি নেতৃত্ব বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে এই ইস্যুটিকে কাজে লাগিয়ে হিন্দু ভোটারদের একত্রিত করার কৌশল নিচ্ছে। বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি তাদের ন্যায্য এবং মানবিক। দলের রাজ্যসভা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ধর্মীয় কারণে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানানো যদি হিন্দুত্ব হয়, তবে বিজেপি সেই হিন্দুত্বের পক্ষে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা ভারতের জন্য সম্ভব নয়। তবে আরএসএস যে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের পরামর্শ দিয়েছে, সেটি কার্যকর হলে বাংলাদেশের সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় বাধ্য হতে পারে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আরএসএসের বিবৃতিটি বিজেপির কৌশলগত অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দত্তাত্রেয় হোসবলে তাঁর বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর ধারাবাহিক হামলা উদ্বেগের বিষয় এবং এ বিষয়ে ভারতের কূটনৈতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।

ধৃত চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি নিয়ে আরএসএস সরব হলেও বাংলাদেশ সরকার এই গ্রেফতারিকে সঠিক ও আইনানুগ বলেছে। সন্ন্যাসী এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলেও বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এই ঘটনাবলির মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার প্রশ্ন এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি একসূত্রে গাঁথা হয়ে পড়েছে। সামনের দিনগুলিতে এই ইস্যুটি দুই দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

তারিখ: ০২.১২.২০২৪

জেলমুক্তি হবে চিন্ময়কৃষ্ণের? মঙ্গলে শুনানি, তাকিয়ে রয়েছেন গোটা বিশ্বের সনাতনীরা

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে উত্তাল বাংলাদেশ। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার সুনিশ্চিত করার দাবি উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলে। ইসকনের পাশে দাঁড়িয়েছে গোটা বিশ্ব। আগামী মঙ্গলবার জামিন শুনানিতে নজর বিশ্বজুড়ে।
জেলমুক্তি হবে চিন্ময়কৃষ্ণের? মঙ্গলে শুনানি, তাকিয়ে রয়েছেন গোটা বিশ্বের সনাতনীরা

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে উত্তাল বাংলাদেশ। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার সুনিশ্চিত করার দাবি উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলে। ইসকনের পাশে দাঁড়িয়েছে গোটা বিশ্ব। আগামী মঙ্গলবার জামিন শুনানিতে নজর বিশ্বজুড়ে।

ঢাকা, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের অভিযোগের মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। গত সোমবার তাঁকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আটক করে চট্টগ্রাম পুলিশ। পরদিন আদালতে হাজির করা হলে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়। বিচারক তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ইসকন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে শান্তিপ্রার্থনার ডাক দিয়েছে।

চিন্ময়কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশের সনাতনী জাগরণ মঞ্চের অন্যতম মুখপাত্র। তিনি চট্টগ্রামের লালদিঘির মাঠে একটি সমাবেশ আয়োজন করেন, যেখানে সংখ্যালঘুদের বড় অংশ অংশগ্রহণ করেন। অভিযোগ উঠেছে, ওই সমাবেশের দিন চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট চত্বরে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে ধর্মীয় সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এই ঘটনার পর ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের হয় এবং চিন্ময়কৃষ্ণকে অভিযুক্ত করা হয়।

চিন্ময়ের গ্রেফতারের পাশাপাশি চট্টগ্রামে একটি মন্দিরে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আশপাশের বাড়ি ও দোকানেও হামলা চালানো হয়েছে। একই সঙ্গে, বেনাপোল সীমান্তে ৫৪ জন বাংলাদেশি সংখ্যালঘুকে ভারতে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ভ্রমণ সন্দেহজনক বলে উল্লেখ করেছে অভিবাসন পুলিশ।

ইসকন জানিয়েছে, চিন্ময়কৃষ্ণ বর্তমানে সংগঠনের সদস্য নন। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে তাঁর গ্রেফতারি ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় ইসকন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে। দিল্লি থেকেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য বারবার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, চিন্ময়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের স্বচ্ছ তদন্ত এবং তাঁর নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলে আশা করেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ব্রিটেনের সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্রিটেনের কনজ়ারভেটিভ দলের সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যান বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি, দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপদ এবং তাঁদের নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত। রাষ্ট্রপুঞ্জে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের স্বাধীন ভাবে ধর্মচর্চার অধিকার রয়েছে এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা সরকারের লক্ষ্য।

আগামী মঙ্গলবার চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন মামলার শুনানি হবে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা এই মামলার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কতটা কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তীব্র আলোচনা।

তারিখ: ০২.১২.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে গুয়াহাটিতে ইসকনের শান্তিপূর্ণ সংকীর্তন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে গুয়াহাটির ইসকন মন্দিরে শান্তিপূর্ণ সংকীর্তনের আয়োজন করা হয়। ইসকনের প্রতিনিধি ও ভক্তরা প্রার্থনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষার দাবি জানান এবং মানবিক মূল্যবোধ রক্ষায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান করেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে গুয়াহাটিতে ইসকনের শান্তিপূর্ণ সংকীর্তন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে গুয়াহাটির ইসকন মন্দিরে শান্তিপূর্ণ সংকীর্তনের আয়োজন করা হয়। ইসকনের প্রতিনিধি ও ভক্তরা প্রার্থনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষার দাবি জানান এবং মানবিক মূল্যবোধ রক্ষায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান করেন।

গুয়াহাটি, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: গুয়াহাটির উত্তরাংশে অবস্থিত ইসকন মন্দিরে রবিবার এক শান্তিপূর্ণ সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের সনাতনী সম্প্রদায়ের উপর চলমান নির্যাতন ও হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ইসকন মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে যে হামলা হয়েছে, তা শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা মানবতার বিবেককে নাড়া দিয়েছে।

বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র এবং ইসকনের বিশিষ্ট ভক্ত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী সম্প্রতি ঢাকার পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হন। এই গ্রেফতারি এবং সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে ইসকন বিশ্বব্যাপী সংকীর্তন আয়োজন করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছে।

উত্তর গুয়াহাটির ইসকন মন্দিরে আয়োজিত এই সংকীর্তনে বহু ভক্ত এবং শুভানুধ্যায়ী অংশ নেন। তাঁরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করেন এবং বাংলাদেশের অত্যাচারিত সংখ্যালঘুদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। ইসকনের গুয়াহাটির মন্দির সভাপতি শ্রীজনার্ধন দাস বলেন, “আমরা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান সহিংসতা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, যাতে তারা চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভু, ইসকনের ভক্তগণ এবং অন্যান্য নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ভারতের সরকারকেও অনুরোধ জানাই, যাতে তারা প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে কাজ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা নিশ্চিত করে। আজকের সংকীর্তনের মাধ্যমে আমরা ভুক্তভোগীদের প্রতি সমর্থন ও সহমর্মিতা জানিয়েছি এবং বাংলাদেশের শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করেছি। এই প্রার্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া সবার প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”

স্থানীয় সংকীর্তন আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে মন্দির ও সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ওপর আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মন্দিরগুলি ধ্বংস করা হচ্ছে এবং অনুসারীরা গুরুতর হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উগ্রবাদী দলগুলি এই হামলাগুলি চালিয়ে অনেক নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর এই নির্যাতন চলতে দেওয়া যায় না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “বিশ্বব্যাপী সংকীর্তন কর্মসূচি মূলত একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, যা গোটা হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যথা ও শোকের প্রতীক। আমরা বাংলাদেশের বা কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নই। আমরা শুধু চাই, বাংলাদেশের সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত হোক।”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর এই ধরনের আক্রমণের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে ইসকনের ভক্ত এবং শুভানুধ্যায়ীরা একত্রিত হয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেন, সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে এই সহিংসতা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও এগিয়ে আসতে হবে। গুয়াহাটির এই সংকীর্তন কর্মসূচি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করে।

তারিখ: ০২.১২.২০২৪

‘বাংলা‌দেশ চ‌লো’ অভিযানে উত্তাল শ্রীভূমির স্থলবন্দর সুতারকান্দি সীমান্ত

বাংলাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার ও ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেফতারের প্রতিবাদে শ্রীভূমির সুতারকান্দি সীমান্তে হাজারো মানুষের মিছিল উত্তাল হয়েছে। পুলিশ, সিআরপিএফ, ও বিএসএফ মোতায়েন করে সীমান্তে প্রবেশের চেষ্টা রোধ করা হয়।
‘বাংলা‌দেশ চ‌লো’ অভিযানে উত্তাল শ্রীভূমির স্থলবন্দর সুতারকান্দি সীমান্ত

বাংলাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার ও ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেফতারের প্রতিবাদে শ্রীভূমির সুতারকান্দি সীমান্তে হাজারো মানুষের মিছিল উত্তাল হয়েছে। পুলিশ, সিআরপিএফ, ও বিএসএফ মোতায়েন করে সীমান্তে প্রবেশের চেষ্টা রোধ করা হয়।

সুতারকান্দি, ত্রিপুরা, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের উপর লাগাতার অত্যাচার এবং ইসকন-এর সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজ রবিবার শ্রীভূমি জেলা সদরের অদূরে সুতারকান্দি সীমান্তে এক বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ডাকে সাড়া দিয়ে সকাল থেকেই উলুকান্দি এলাকায় হাজারো মানুষ জড়ো হন। সনাতনী ঐক্যমঞ্চ-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে উপস্থিত জনতা ‘জয় শ্রীরাম’, ‘ইউনূস সরকার হায় হায়’, ‘নিঃশর্তে চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর মুক্তি চাই’, এবং ‘হিন্দু সনাতনীদের ওপর হামলা বন্ধ করো’ স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে তোলে।

সেখান থেকে শুরু হওয়া মিছিল সুতারকান্দি সীমান্তের দিকে এগোতে থাকে। মিছিলটি এত বড় আকার ধারণ করে যে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগেই সীমান্ত এলাকায় তিন শতাধিক পুলিশ, সিআরপিএফ, এবং বিএসএফ মোতায়েন করা হয়েছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন শ্রীভূমির পুলিশ সুপার পার্থপ্রতিম দাস।

মিছিলটি সীমান্তে পৌঁছানোর আগে পুলিশ প্রশাসন ব্যারিকেড বসিয়ে মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু উত্তেজিত জনতা ব্যারিকেড ভেঙে সীমান্তের দিকে এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে মিছিলের একটি অংশ সীমান্তের কাঁটাতারের কাছে পৌঁছে যায়। খাল ও নালা পার হয়ে তারা সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করলেও আধাসামরিক বাহিনী তাদের থামিয়ে দেয়।

সনাতনী ঐক্যমঞ্চ-এর নেতারা বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে অত্যাচার চলছে, তা আর সহ্য করা সম্ভব নয়। ইসকনের সন্ন্যাসীদের গ্রেফতার কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই মিছিলের উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক মহলের নজর কাড়া, যাতে বাংলাদেশ সরকার সনাতনী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাধ্য হয়।”

মিছিলকারীরা জানান, বাংলাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্য এবং সন্ন্যাসীদের গ্রেফতারের মতো ঘটনা প্রতিবেশী দেশ ভারতের সনাতনী সম্প্রদায়ের মনে গভীর ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। তারা বলেন, “হিন্দুদের ওপর এই অত্যাচার বন্ধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে আরও বড় আন্দোলনের মুখে পড়তে হবে।”

অন্যদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার পার্থপ্রতিম দাস বলেন, “আমাদের দায়িত্ব হল শান্তি বজায় রাখা। আমরা যেকোনো ধরনের উত্তেজনা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।”

সুতারকান্দি সীমান্তের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ছিল দৃঢ়। তবে আন্দোলনকারীদের মতে, সীমান্তে এই প্রতিবাদ মূলত একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ছিল। কিন্তু তাদের দাবি, প্রশাসন অযথা কড়াকড়ি আরোপ করে তাদের কথা আন্তর্জাতিক মহলে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে।

বাংলাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের উপর চলমান নির্যাতনের ঘটনা ভারতেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। প্রতিবেশী দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই পরিস্থিতি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এই আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যকার পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা সময়ই বলে দেবে।

তারিখ: ০২.১২.২০২৪

মগের মুল্লুক: সাইফুল হত্যা মামলা: চিন্ময় দাসকে আসামি দাবি

মগের মুল্লুক: চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডে আইনজীবী সমিতি সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আসামি করার দাবি জানিয়েছে। প্রিজন ভ্যানে বাধা, সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনায় পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হয়।
মগের মুল্লুক: সাইফুল হত্যা মামলা: চিন্ময় দাসকে আসামি দাবি

মগের মুল্লুক: চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডে আইনজীবী সমিতি সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আসামি করার দাবি জানিয়েছে। প্রিজন ভ্যানে বাধা, সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনায় পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হয়।

চট্টগ্রাম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতি সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মামলার আসামি করার দাবি জানিয়েছে। রবিবার চট্টগ্রাম আদালত চত্বর থেকে শুরু হওয়া শোক মিছিল শেষে সমাবেশে আইনজীবীরা এই দাবি জানান। মিছিলটি নগরের লালদীঘি মোড়, কোতোয়ালি থানা মোড়, নিউমার্কেট মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে আদালত প্রাঙ্গণে শেষ হয়।

গত মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর হলে তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় তাঁর সমর্থকরা গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ এবং বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে। এই সময় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে এবং আইনজীবীদের গাড়ি ভাঙচুরসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটে।

এই সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম প্রাণ হারান। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সংঘর্ষের সময় হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার পর সাইফুলকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে, যা তদন্তের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সাইফুল হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পাশাপাশি পুলিশের ওপর হামলা এবং আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনায় আরও চারটি মামলা হয়। এই মামলাগুলোর মধ্যে তিনটি পুলিশের এবং একটি নিহতের ভাই জানে আলমের দায়ের করা। পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ৯ জন হত্যাকাণ্ডে জড়িত।

শোক মিছিল শেষে সমাবেশে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “আইনজীবী সাইফুল হত্যাকাণ্ডসহ আদালত প্রাঙ্গণে ঘটে যাওয়া প্রতিটি সহিংস ঘটনার মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আসামি করতে হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, “পুলিশের অবহেলার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। চিন্ময় দাস প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় তাঁর সমর্থকদের বাধা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি পুলিশের মাইক ব্যবহার করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, যা পরবর্তীতে ভাঙচুর এবং সন্ত্রাসের কারণ হয়েছে।”

আইনজীবীরা হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার এবং গ্রেপ্তার না হওয়া আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে, যেমন ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য।

সাইফুল হত্যাকাণ্ডের পর গত বুধ ও বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ৭৪টি আদালতের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। রবিবার আদালতের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হলে বিচারপ্রার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ফটিকছড়ি থেকে আসা এক বিচারপ্রার্থী জানান, বন্ধ থাকার কারণে তাঁর মামলার শুনানি স্থগিত হয়েছিল। রবিবার আদালতের বারান্দা ও এজলাস ছিল বিচারপ্রার্থীদের ভিড়ে পরিপূর্ণ।

চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, “টানা দুই দিনের সঙ্গে সাপ্তাহিক বন্ধ যোগ হওয়ায় আজ আদালতে চাপ কিছুটা বেশি। তবে সোমবার থেকে অবকাশকালীন ছুটিতে আদালত বন্ধ থাকবে।”

তারিখ: ০২.১২.২০২৪

দুই দিনে বেনাপোল দিয়ে ‘সন্দেহজনক’ ৬৩ ইসকন ভক্তকে ভারতে প্রবেশে বাধা

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনে গত দুই দিনে ৬৩ জন বাংলাদেশি ইসকন ভক্তকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, তাঁরা সন্দেহজনক যাত্রী। যাত্রীরা জানান, পূজা-অর্চনার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন। ইমিগ্রেশন পুলিশ নিশ্চিত করেছে, তাঁদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।
দুই দিনে বেনাপোল দিয়ে ‘সন্দেহজনক’ ৬৩ ইসকন ভক্তকে ভারতে প্রবেশে বাধা

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনে গত দুই দিনে ৬৩ জন বাংলাদেশি ইসকন ভক্তকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, তাঁরা সন্দেহজনক যাত্রী। যাত্রীরা জানান, পূজা-অর্চনার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন। ইমিগ্রেশন পুলিশ নিশ্চিত করেছে, তাঁদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।

বেনাপোল, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ গত দুই দিনে ৬৩ জন বাংলাদেশি যাত্রীকে ফেরত পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহজনক যাত্রী হিসেবে তাঁদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়নি এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

রবিবার সকালে ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইমিগ্রেশনে যান ৯ জন বাংলাদেশি। কিন্তু তাঁদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পুলিশ তাঁদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয় এবং ফেরত পাঠায়। এর আগে, শনিবার আরও ৫৪ জন যাত্রীকে একই কারণে ফেরত পাঠানো হয়।

ফেরত আসা যাত্রীরা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) অনুসারী এবং পূজা-অর্চনার উদ্দেশ্যে ভারতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, কোনো কারণ না জানিয়েই ইমিগ্রেশন থেকে তাঁদের ফিরে আসতে বাধ্য করা হয়েছে। তবে তাঁদের এই দাবির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

যশোরের চাঁচড়া ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ দেবগৌর দাস ব্রহ্মচারীর সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূঞা জানিয়েছেন, সন্দেহজনক যাত্রী হিসেবে গত দুই দিনে ৬৩ জন যাত্রীকে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, “আমরা যাত্রীদের গতিবিধি এবং কাগজপত্রের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাঁদের ভারতীয় সীমান্তে প্রবেশে অনুমতি দেওয়া যায়নি।”

উল্লেখ্য, বেনাপোল স্থলবন্দর বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট। প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী এ চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত যাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। ইমিগ্রেশন পুলিশ এ বিষয়ে সতর্ক থেকে সন্দেহজনক যাত্রীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে।

এ ঘটনার পর থেকে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এমন বাধা দেওয়া তাঁদের জন্য অযৌক্তিক এবং অসম্মানজনক। তবে পুলিশ বলছে, জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই তাঁরা এ ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

সন্দেহজনক যাত্রীদের বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। একাংশ এটিকে যথাযথ নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে, অন্যদিকে কেউ কেউ একে সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বলে মনে করছেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম এবং সন্দেহজনক যাত্রীদের বিষয়ে পুলিশের পদক্ষেপ সম্পর্কে আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আগামী দিনগুলোতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তা নিয়ে এখন সকলের নজর।

তারিখ: ০২.১২.২০২৪

চিন্ময়ের পর বাংলাদেশে গ্রেফতার আরও এক সন্ন্যাসী

চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আটক হন ইসকনের সন্ন্যাসী শ্যাম দাস। জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ চলছে। ঘটনায় ভারতের প্রতিক্রিয়া ও বাংলাদেশের পাল্টা দাবি উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
চিন্ময়ের পর বাংলাদেশে গ্রেফতার আরও এক সন্ন্যাসী

চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আটক হন ইসকনের সন্ন্যাসী শ্যাম দাস। জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ চলছে। ঘটনায় ভারতের প্রতিক্রিয়া ও বাংলাদেশের পাল্টা দাবি উত্তেজনা বাড়িয়েছে।

চট্টগ্রাম, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের পর এবার আরেক সন্ন্যাসী শ্যাম দাসকে আটক করেছে পুলিশ। ইসকনের কলকাতা মুখপাত্র রাধারমণ দাস এই দাবি করেছেন। তিনি জানান, চিন্ময়কৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে চট্টগ্রাম কারাগারে শ্যাম দাসকে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেয়। ইসকন এই ঘটনায় মর্মাহত হয়ে নির্দোষদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত অক্টোবরে চট্টগ্রামে একটি সমাবেশে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এটি জাতীয় পতাকার অবমাননা। এই অভিযোগটি করেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মহম্মদ ফিরোজ খান। অভিযোগে আরও বলা হয়, চিন্ময়কৃষ্ণ দেশে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং অশান্তি উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

পুলিশ ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিমানবন্দর থেকে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় জামিনের আবেদন বাংলাদেশ হাই কোর্টে খারিজ হয়ে গেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম এবং রংপুরে এই দাবিতে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়। এসব বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক আইনজীবীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

ঘটনাটি শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতার এবং পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সঠিক এবং নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়ার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের বিবৃতিতে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়।

তবে, বাংলাদেশ এই বিবৃতিকে দ্বিচারিতা হিসেবে অভিহিত করেছে। বাংলাদেশ সরকারের দাবি, ভারতে সংখ্যালঘুরাও নির্যাতনের শিকার হয়। ভারত এবং বাংলাদেশের এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।

এদিকে, শ্যাম দাসের আটকের ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বাংলাদেশ সরকার এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বেড়েছে। বিক্ষোভকারীরা চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তি দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনাস্থলগুলোতে পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

আসিফ নজরুল: বাংলাদেশে ভারতীয় স্ক্রিপ্ট বাস্তবায়নে কিছু মানুষের তৎপরতা

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, কিছু মানুষ বাংলাদেশে ভারতীয় স্ক্রিপ্ট বাস্তবায়নে চেষ্টা করছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, সরকার ও আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে, যা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা। তিনি গঠনমূলক পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আসিফ নজরুল: বাংলাদেশে ভারতীয় স্ক্রিপ্ট বাস্তবায়নে কিছু মানুষের তৎপরতা

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, কিছু মানুষ বাংলাদেশে ভারতীয় স্ক্রিপ্ট বাস্তবায়নে চেষ্টা করছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, সরকার ও আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে, যা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা। তিনি গঠনমূলক পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, কিছু ব্যক্তি দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং তারা ভারতীয় স্ক্রিপ্ট অনুসরণ করছে। তাঁর মতে, সমালোচনা যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না হয়ে ন্যায্য হয়, তা হলে তা গ্রহণযোগ্য, তবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকার এবং আন্দোলনকারীদের চরিত্র হনন করা হচ্ছে, যা অশুভ উদ্দেশ্যপূণরূপে দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রয়াস।

জাতীয় প্রেসক্লাবে শনিবার সন্ধ্যায় ‘স্মৃতির মিনার: গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। আসিফ নজরুল বলেন, ‘সমালোচনা করার অধিকার সবার আছে, তবে যখন মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষের চরিত্র হনন করা হয়, তখন তা অসৎ উদ্দেশ্য বলে মনে হয়।’ তিনি আরও বলেন, “এভাবে সরকারকে দুর্বল করা, আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা এবং দেশকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে।”

তিনি অভিযোগ করেছেন, কিছু ব্যক্তি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছেন। “আমাদের প্রতিবেশী দেশের একটি স্ক্রিপ্ট এখানে রূপায়িত করার চেষ্টা চলছে, যাতে শেখ হাসিনা চলে গেলে বাংলাদেশে কোনো সরকার থাকতে না পারে অথবা দেশ উগ্রবাদীদের হাতে চলে যায়,” যোগ করেছেন তিনি। আসিফ নজরুল আরও বলেন, “কিছু মানুষ ভারতীয় স্ক্রিপ্ট বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে এবং এসব নিয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।”

আইন উপদেষ্টা গঠনমূলক সমালোচনার পক্ষেই বক্তব্য রেখেছেন, তবে মিথ্যা তথ্যের প্রচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, “যদি নিজেদের মধ্যেই ঝগড়া-ঝাটি করি, নিজেদের চরিত্র হনন করি এবং মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দিই, তাহলে আমরা ছাত্র-জনতার আত্মবলিদানের প্রতি অসম্মান দেখাচ্ছি।”

এছাড়া, তিনি তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর প্রসঙ্গও তুলে ধরেছেন। “কোনও ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই, তবে সবার প্রতি অনুরোধ, সত্য জানার চেষ্টা করুন। মিথ্যা, অত্যাচার, নিপীড়ন, দোষারোপ—এগুলো পরাজিত শক্তির অস্ত্র,” মন্তব্য করেছেন তিনি।

আন্দোলনকারীদের ভূমিকা এবং তাদের অবদান তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, “আজকের আন্দোলনের জন্য তাঁরা আমাদের ভয়াবহ ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। আজ যদি আমরা ব্যর্থ হই, তাহলে আমাদের অবস্থান আরও খারাপ হবে। বাংলাদেশ কাশ্মীরের মতো পরিণতি বরণ করতে পারে।”

আসিফ নজরুল গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “৫ আগস্টের আগে, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ তাদের ফেসবুকে কোন পত্রিকার রিপোর্ট সবচেয়ে বেশি উদ্ধৃত করতেন? খুলে দেখেন, কোন পত্রিকা।” তিনি আরও যোগ করেন, “এখন যদি আমরা একটি পত্রিকার বিরুদ্ধে ওঠে পড়ি, তখন কি সেই পত্রিকার ভূমিকা উড়িয়ে দেব?”

তিনি জানালেন, “আমার প্রতিবাদ থাকবে, আমি অবশ্যই প্রতিবাদ করব, কিন্তু কোনও পত্রিকাকে আমি শত্রু বানাতে পারি না। তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে, জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে শফিকুল আলমের বক্তব্যও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির ঢাকা ব্যুরো প্রধান হিসেবে ইনটারনেট বন্ধ থাকা অবস্থায় গণমাধ্যমকে সহায়তা করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ এবং সঞ্চালনা করেন বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি দিদারুল আলম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক রাখাল রাহা, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, কবি ফেরদৌস আরা রুমী প্রমুখ।

এ আলোচনার মাধ্যমে আসিফ নজরুল সরকার এবং আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার ও ভারতীয় রাজনৈতিক অবস্থানের অশুভ প্রয়াস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করেছেন, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্বেগ

ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে ভারত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হামলাগুলো বাড়ি, ব্যবসা এবং মন্দিরে হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের সরকারের কাছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্বেগ

ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে ভারত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হামলাগুলো বাড়ি, ব্যবসা এবং মন্দিরে হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের সরকারের কাছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

নয়াদিল্লি, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে ভারত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এ বিষয়ে ভারতীয় সরকার বারবার বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার উদ্বেগ জানিয়েছে। তিনি গতকাল এক লিখিত উত্তরে জানান, বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কয়েকটি সহিংস হামলা হয়েছে। এসব হামলায় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় স্থানগুলো লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।

এস জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা শুনেছি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনাগুলি কিছু সময় ধরে ঘটছে, যার মধ্যে আগস্টের ঘটনায়ও হামলার খবর রয়েছে।” তিনি জানান, ভারত সরকার এই হামলাগুলোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের সরকারের সাথে উদ্বেগ শেয়ার করেছে।

এই হামলাগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল সম্প্রতি দুর্গাপূজা উপলক্ষে হামলা। তিনি বলেন, “দুর্গাপূজার সময় বাংলাদেশে মন্দির এবং পূজামন্ডপের ওপর হামলার খবর এসেছে, এবং ভারত সরকার এই হামলাগুলি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।”

এস জয়শঙ্কর আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার এসব হামলার পর বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে দুর্গাপূজার শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন সম্ভব হয়।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের হাই কমিশন ঢাকায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি জানান, “বাংলাদেশে সকল নাগরিক, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের জীবন এবং স্বাধীনতার সুরক্ষা প্রদানের মূল দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের।”

এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র রন্ধির জয়সওয়াল গতকাল সাংবাদিকদের সাথে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ভারত বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা এবং উগ্রপন্থী প্রচারণার বিস্তার নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “এটি শুধু মিডিয়ার অতিরঞ্জন নয়, বরং একটি বাস্তব উদ্বেগের বিষয়।”

রন্ধির জয়সওয়াল আরও বলেন, ভারত সরকার চট্টগ্রামে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ইসকন সদস্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রাহ্মচারীকে সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার অধিকারী হতে চাইছে। তিনি বলেন, “আমরা আশা করি, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে একটি সুষ্ঠু বিচার হবে এবং তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অন্যায় বিচার হবে না।”

ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মুখপাত্রের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, ভারত বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিষয়টির যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় সরকার আরও সতর্ক এবং দেশের সরকারী কর্তৃপক্ষের প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ভারতের ফ্যাসিবাদী শক্তি বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে।
ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ভারতের ফ্যাসিবাদী শক্তি বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে।

ঢাকা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (কেআইবি)-তে আয়োজিত ‘ছাত্র সম্মেলন ২০২৪’ এ এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে একটি ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, “আমার একমাত্র অনুরোধ হল, আমরা যা অর্জন করেছি তা যেন ব্যর্থ না হয়, কারণ সীমান্তের ওপারে ফ্যাসিবাদী শক্তি বসে আছে।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন থাকারগাঁও ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সদস্যরা। ফখরুল দাবি করেন, ভারতের ভিতরে বসে থাকা ফ্যাসিবাদী শক্তি বাংলাদেশে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে এবং অস্থিরতার ঘটনা ঘটিয়ে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে একটি মৌলবাদী দেশ হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে।

তিনি বলেন, “এই ঘটনা ঘটানোর পর তারা সারা বিশ্বে তা প্রচার করছে যাতে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের মতো একটি ইমেজ তৈরি করতে পারে।” ফখরুল আরও অভিযোগ করেন যে, ভারতীয় সংবাদপত্র এবং সামাজিক মিডিয়া এসব ঘটনার প্রমাণ হিসেবে তা প্রচার করছে। তিনি বলেন, “আসল ঘটনা কি? এগুলো কে করছে? কেন করছে? আমরা কোনোভাবেই খুশি হতে পারি না, আমাদের অর্জন যেন বিফলে না যায়…”

ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে এখনো গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তির ওপর একটি খাঁটি কুৎসা ঝুলে আছে এবং তারা “ফ্যাসিবাদী শক্তির” হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে আরও সজাগ থাকতে হবে। “এখনো আমাদের মাথার উপরে একটি তলোয়ার ঝুলছে। তাদের (ফ্যাসিবাদী শক্তি) চেষ্টা চলছে আমাদের আবার অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়ার, তাই আমরা সজাগ থাকব।” তিনি আরও বলেন, কোনো অতি দ্রুত পদক্ষেপ বা বিশৃঙ্খলা ঘটানো উচিত নয় যাতে কাউকে উস্কানি দেওয়া না যায়।

এছাড়া ফখরুল আওয়ামী লীগকে ব্যাপক দুর্নীতির জন্য দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ দেশের সম্পদ নষ্ট করেছে, ব্যাংক লুট করা হয়েছে, দুর্নীতি, ঘুষ এবং চুরি rampant হয়ে গেছে। এসব বন্ধ করতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে।”

তিনি ছাত্রদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিভিন্ন কলেজের ছাত্ররা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছে, যদিও এক সময় তারা একত্র হয়ে একটি দমনমূলক শাসনব্যবস্থা উৎখাত করেছিল। “এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়,” তিনি বলেন, “আমরা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। ছাত্রদের দায়িত্ব হলো মানুষকে বুঝাতে যে, এটাই সঠিক পথ নয়।”

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, যখন তিনি দেখেন যে আইনজীবীদের, ধর্মীয় কারণে হত্যা করা হচ্ছে। “আমি খুবই উদ্বিগ্ন, যখন দেখি আইনজীবীদের হত্যা করা হচ্ছে, আইএসকন বা ধর্মীয় কারণে।”

ফখরুল ছাত্রদের ধন্যবাদ জানান, যারা গণতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা, সম্পদের অভাব থাকা সত্ত্বেও, সম্ভব হয়নি, তবে আপনার সাহসের কারণে সেটা সম্ভব হয়েছিল।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে যখন জনগণ এবং ছাত্ররা এক হয়ে প্রতিরোধ গড়েছে, তখন বিজয় এসেছে। তিনি বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক শিক্ষা, যে কোনো সংগ্রামে জনগণের সাহস এবং ঐক্যই জয় এনে দেয়।”

এদিকে, মির্জা ফখরুল আজ লন্ডন যাচ্ছেন, সেখানে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে রাজনৈতিক ও দলের বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, ফখরুলের সফরের পর, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডন সফর করতে পারেন।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

আইনজীবী হত্যায় ধৃত ৯! ৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অধিকাংশই সংখ্যালঘু

চট্টগ্রামে আদালতসংলগ্ন সংঘর্ষে এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে দেশি-বিদেশি উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে, এবং ভারত সরকারও বাংলাদেশকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেছে।
আইনজীবী হত্যায় ধৃত ৯! ৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অধিকাংশই সংখ্যালঘু

চট্টগ্রামে আদালতসংলগ্ন সংঘর্ষে এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে দেশি-বিদেশি উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে, এবং ভারত সরকারও বাংলাদেশকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেছে।

চট্টগ্রাম, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে আদালতের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে এবং এই ঘটনার পর বাংলাদেশের পুলিশ ইতিমধ্যে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, ওই আইনজীবীর বাবা শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া আরও ১০-১৫ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তারা বর্তমানে আটক আছেন।

এরপর, পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া অধিকাংশ অভিযুক্তই চট্টগ্রামের সেবক কলোনির বাসিন্দা এবং তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কিছু নাম প্রকাশিত হয়েছে, যারা সম্ভবত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। পুলিশ জানিয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজও চলছে।

এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে যখন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, যিনি বাংলাদেশে প্রাক্তন ইসকন সদস্য ছিলেন এবং বর্তমানে সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র, চট্টগ্রামে এক ধর্মীয় সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। ওই সমাবেশে হাজার হাজার সংখ্যালঘু মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। সমাবেশের পরেই রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তী সময়ে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয় এবং জামিন আবেদন খারিজ হয়ে যায়।

চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর, তার অনুগামীরা আদালতের বাইরে ব্যাপক ভিড় জমায় এবং এ সময় পুলিশি প্রিজ়ন ভ্যানে চিন্ময়কে তোলার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। অভিযোগ, এই সংঘর্ষে আইনজীবীটি নিহত হন। পুলিশ জানিয়েছে, তার মৃত্যু সংঘর্ষের মধ্যেই ঘটে।

এদিকে, ঘটনার পর তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় ৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন আইনজীবী হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন।

পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ইসকন থেকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত হলেও, তার গ্রেফতার হওয়ার পর ইসকন বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা বাংলাদেশের সরকারকে সতর্ক করে জানিয়েছে, চিন্ময়ের নাগরিক অধিকার যেন খর্ব না হয় এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

এদিকে, ইসকনের পক্ষ থেকে বিশ্বজুড়ে শান্তিপ্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে যাতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)ও বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও বাংলাদেশ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ করা হয়েছে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। ব্রিটেনের সংসদেও এই পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কনজারভেটিভ দলের সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যান বাংলাদেশের সরকারের অবস্থান নিন্দা করেছেন এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে হস্তক্ষেপের জন্য ব্রিটেন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, দেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদেই রয়েছেন এবং এই বিষয়ে অন্য দেশগুলোর হস্তক্ষেপ তারা পছন্দ করে না। প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম এক সাক্ষাৎকারে জানান, বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা রয়েছে এবং সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর

চট্টগ্রামের পাথরঘাটা ও পটিয়া উপজেলায়, এবং কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। শান্তন্বেশ্বরী মাতৃমন্দিরসহ ইসকন পরিচালিত মন্দিরগুলোতে ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর

চট্টগ্রামের পাথরঘাটা ও পটিয়া উপজেলায়, এবং কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। শান্তন্বেশ্বরী মাতৃমন্দিরসহ ইসকন পরিচালিত মন্দিরগুলোতে ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামের পাথরঘাটা ও পটিয়া উপজেলায় এবং কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

চট্টগ্রামের পাথরঘাটার শান্তন্বেশ্বরী মাতৃমন্দিরে শুক্রবার দুপুরে একটি মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়। মিছিলটি কোতোয়ালি মোড় হয়ে পাথরঘাটার দিকে যাওয়ার সময় কিছু ব্যক্তি মন্দিরের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। নিচতলার শনি মন্দিরের কাচ ভাঙচুর করা হয় এবং মন্দির লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়।

মন্দির পরিচালনা কমিটির স্থায়ী সদস্য তপন দাস জানিয়েছেন, হামলার সময় মন্দিরের আশপাশের দোকান ও বাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের সরিয়ে দেয়।

কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান জানান, হামলার সময় পুলিশের সদস্য সংখ্যা কম থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে তাদের কষ্ট হয়। পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এদিকে, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে বাসুদেব দত্ত মুকুন্দ দত্ত ধাম ইসকন মন্দিরে ভাঙচুর চালানো হয়। পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুন নূর জানিয়েছেন, দুর্বৃত্তরা মন্দিরের ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং সিসি ক্যামেরার লাইন কেটে দেয়।

অন্যদিকে, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইসকন পরিচালিত শ্রীশ্রী হরেকৃষ্ণ নামহট্ট সংঘে শুক্রবার বিকেলে হামলার ঘটনা ঘটে। পৌর শহরের রানীরবাজার এলাকায় সংঘের কার্যালয়ে কিছু ব্যক্তি লাঠি হাতে এসে ভাঙচুর চালায়। সংঘের সদস্য চন্দন পাল জানিয়েছেন, হামলার সময় কার্যালয়ে কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলাকারীরা স্লোগান দিতে দিতে দ্রুত চলে যায়। এ সময় সংঘের আসবাবপত্র ও ছবির ফ্রেম ভাঙচুর করা হয়।

ঘটনার পরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শবনম শারমিন, পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহিন, সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ইউএনও শবনম শারমিন জানিয়েছেন, ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

এই ঘটনায় স্থানীয় সনাতনী সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সক্রিয় রয়েছে।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

ভৈরবে ইসকন মন্দিরে হামলা, ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি

ভৈরবে ইসকন পরিচালিত মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে তিনজন ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
ভৈরবে ইসকন মন্দিরে হামলা, ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি

ভৈরবে ইসকন পরিচালিত মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে তিনজন ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

কিশোরগঞ্জ, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের রাণীবাজার হলুদপট্টি এলাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) পরিচালিত মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। প্রণয় কর্মকার নামে এক ব্যক্তি শুক্রবার রাতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। তিনি সংঘের সদস্য এবং মন্দির পরিচালনার কাজে যুক্ত।

গত শুক্রবার বিকেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। মন্দিরের দরজা ও তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে হামলাকারীরা ভগবানের ছয়টি ছবি, শঙ্খ, আচমনপাত্র, মৃদঙ্গ, সোফা, চেয়ার, টেবিল, ঘড়ি এবং ঠাকুরের সিংহাসনসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এ ছাড়া মন্দিরের বাক্স থেকে ঘণ্টা, কাঁসি, করতাল ও ঝম্প চুরি করা হয়। মামলার এজাহারে এই হামলায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, হামলার সময় প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন যুবক লাঠি হাতে এসে ‘ভৈরবে ইসকনের ঠাঁই নাই’ স্লোগান দেন। হামলার পর তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। মন্দিরটি সাধারণত সপ্তাহে একদিন, রবিবার প্রার্থনার জন্য খোলা থাকে। অন্যান্য দিন এটি বন্ধ থাকে। ঘটনার সময় মন্দিরটি বন্ধ ছিল।

ঘটনার পর কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী এবং জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাৎক্ষণিকভাবে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহিন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শবনম শারমিন ঘটনাস্থলে যান। সেনাবাহিনী এবং র‍্যাবের সদস্যরাও তদন্তের জন্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ইউএনও শবনম শারমিন বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনায় শনিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন হাসিবুল হাসান, মো. প্রান্ত এবং মো. সানজিব। হাসিবুল পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সানজিব পাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক এবং প্রান্ত উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

তবে গ্রেপ্তারকৃত তিনজন দাবি করেছেন, তারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত নন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভিডিও ফুটেজ এবং অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ইসকনের প্রণয় কর্মকার জানান, সংঘটি ২০০৯ সালে ভৈরবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি ইসকনের একটি প্রচার শাখা। নরসিংদী শাখা থেকে এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রার্থনা ও কীর্তন আয়োজন ছাড়াও এটি ধর্মীয় শিক্ষা এবং সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

মন্দিরের ওপর এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় মানুষ এবং ইসকন সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও এই ঘটনা ধর্মীয় সম্প্রতির জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছেন অনেকে।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

জাতিসংঘে বাংলাদেশ: আগস্ট ৫ পরবর্তী সহিংসতা রাজনৈতিক কারণে হয়েছে

জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রতিনিধির বক্তব্য, আগস্ট ৫ পরবর্তী সহিংসতা রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কারণে ঘটেছে, ধর্মীয় নয়। তিনি জানান, বাংলাদেশের সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সাম্প্রতিক সহিংসতার অভিযোগগুলির বেশিরভাগই ভিত্তিহীন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ: আগস্ট ৫ পরবর্তী সহিংসতা রাজনৈতিক কারণে হয়েছে

জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রতিনিধির বক্তব্য, আগস্ট ৫ পরবর্তী সহিংসতা রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কারণে ঘটেছে, ধর্মীয় নয়। তিনি জানান, বাংলাদেশের সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সাম্প্রতিক সহিংসতার অভিযোগগুলির বেশিরভাগই ভিত্তিহীন।

ঢাকা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের জাতিসংঘে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি তরিক মিঃ আরিফুল ইসলাম ১৭তম জাতিসংঘ সংখ্যালঘু বিষয়ক ফোরামে ২৮ নভেম্বর জানিয়েছেন যে, ৫ আগস্ট পরবর্তী সহিংসতার মূল কারণ রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত ছিল, ধর্মীয় সম্প্রীতির কারণে নয়। তিনি জানান, ওই সহিংসতার শিকার বেশিরভাগ মানুষ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সমর্থক ছিলেন এবং এই সহিংসতায় প্রায় সবাই মুসলিম ছিল, মাত্র কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য আক্রান্ত হয়েছিলেন।

আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো সিস্টেমিক আক্রমণ হয়নি। বরং, জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের পর, বাংলাদেশের জনগণ তাদের ঐতিহ্য অনুযায়ী সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে সামনে এসেছে এবং এই উদাহরণটি সারা বিশ্বের সামনে এসেছে। তিনি জানান, বাংলাদেশ নিশ্চিত করে যে, দেশের সব নাগরিক, তাদের ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে, নিজ ধর্ম পালনের বা মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, জনগণের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে কাজ করছে এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তাদের সরকারের মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দুইজন উপদেষ্টাকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আরিফুল ইসলাম মন্তব্য করেন, যখন বাংলাদেশের জনগণ ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণ স্থাপন করছিল, তখন কিছু পক্ষ দ্বারা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন খবর ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, অনেক মিথ্যা তথ্য আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ভুল প্রমাণিত হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকার বিদেশী সাংবাদিকদের দেশ ভ্রমণ করতে স্বাগত জানাবে যাতে তারা দেশের বাস্তব পরিস্থিতি দেখতে পারেন।

তিনি এও জানান, চিন্ময় দাসের গ্রেফতার নিয়ে কিছু বক্তব্য বিভ্রান্তিকর হয়েছে এবং তিনি একাধিক নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার হন। তিনি বলেন, এই বিষয়টি আইন অনুযায়ী আদালত দ্বারা নিষ্পত্তি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মুসলিম আইনজীবী হত্যার পর, সরকার দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এবং বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা ও সম্প্রদায়ের নেতারা একযোগে পরিস্থিতি শান্ত করতে সহায়তা করেছেন। আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকার সংকল্পবদ্ধ রয়েছে যে, যে কোনো মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত রাখতে কোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে দেওয়া হবে না।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

আর কত সইতে হবে নির্যাতন

বাংলাদেশে সম্প্রতি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ বেড়েছে, হিন্দু ও বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং পুজো মণ্ডপে হামলার খবর এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অত্যাচারের মতোই, বর্তমান পরিস্থিতিতে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় চিহ্নিতকরণ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
আর কত সইতে হবে নির্যাতন

বাংলাদেশে সম্প্রতি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ বেড়েছে, হিন্দু ও বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং পুজো মণ্ডপে হামলার খবর এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অত্যাচারের মতোই, বর্তমান পরিস্থিতিতে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় চিহ্নিতকরণ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

ঢাকা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘আজব ছেলে’ গল্পের একটি দৃশ্যের মধ্যে, এক ব্যক্তি এক যুবককে ভুল করে তার গাড়িতে তুলে নেন এবং প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করতে থাকেন, কারণ ওই যুবক খালি পায়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এবং ‘ইন্ডিয়া’র উদ্দেশ্যে পালিয়ে যাচ্ছে এমন সন্দেহ জেগেছিল। কিন্তু যুবকটি জানান, তার মা তাকে গর্ভে ধারণ করে এই পথটুকু খালি পায়ে হেঁটে নিয়ে গিয়েছিলেন, এবং সে তার মায়ের কষ্ট বুঝে একইভাবে সেই পথটি হাঁটতে চায়। গল্পটি বাস্তবের সাথে জড়িয়ে গিয়েছে, যেখানে বর্তমান পরিস্থিতি এবং অতীতের ক্ষতগুলো একইভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের মাত্রা ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষত, হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন এবং তাদের দোকান লুট করার ঘটনা বেশ নিয়মিত হয়ে উঠেছে। গত কয়েক মাসে এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, চাকরি থেকে অব্যাহতি, এবং সামাজিকভাবে নিঃশেষ করার চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। তাদের ওপর বিশেষত ‘ভারতে পাঠানোর’ স্লোগান শোনা যাচ্ছে এবং মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে ভারতীয় নাগরিকদের সাথে যোগাযোগ করার অভিযোগ উঠছে।

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম এবং অন্যান্য জায়গায় বসবাসরত তাদের আত্মীয়দের সম্পর্ক ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি একটি নতুন সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত তৈরি করেছে, যেখানে বহু বাংলাদেশি পরিবার এবং ভারতীয় পরিবার একে অপরের আত্মীয়। তবে এই সম্পর্কের কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের মাত্রা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। অনেক ক্ষেত্রে, এসব আক্রমণকে রাজনৈতিক অবস্থান নির্ধারণে আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশে এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যেখানে, যারা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেন, তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময়, পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টানদের ওপর যে অত্যাচার হয়েছিল, তা একটি ইতিহাসের অংশ। তবে সেই সময়ের পর, বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির পেছনে দাঁড়িয়ে যে নতুন দেশটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানে ধর্মনির্বিশেষে সকলের সমান অধিকার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এখন সেই আশা অনেকটাই ক্ষয়িষ্ণু হয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের পর, সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে—এই ধারণা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়নি।

দুই বছর আগের কুমিল্লার ঘটনায় যখন দুর্গাপূজার প্রতিমা ধ্বংস হয়েছিল এবং অনেক মন্দিরে হামলা হয়েছিল, তখনও প্রতিরোধের আলো দেখা গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। এবার এই আক্রমণের উদ্দেশ্য আরও সুপরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। আক্রমণের অজুহাত হিসেবে রাজনৈতিক অবস্থানকে সামনে আনা হচ্ছে এবং ইসকনসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির ওপর আক্রমণ বেড়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তা অনেকটা মায়ানমার বা হরিয়ানার মতো ঘটনার মতো। সেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে এবং তাদের জীবনকে বিপন্ন করা হচ্ছে। এসব ঘটনা মূলত একটি সংকেত দেয়, যা গভীরভাবে শঙ্কা সৃষ্টি করে। বিশেষ করে, বাংলাদেশে বহু বছরের পুরনো সুফি মাজার, সাংস্কৃতিক চিহ্ন এবং ধর্মীয় স্থাপনার ওপর আক্রমণ চলছে, যা বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য এক অশনি সংকেত।

রাজনৈতিক পালাবদলের পর, প্রথম দু’সপ্তাহের মধ্যে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ শুরু হয়েছিল এবং এখন সেই আক্রমণ আরও বেড়েছে। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পাশাপাশি, অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, এক নতুন রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সংকটের মুখে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে রয়েছে।

বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ এবং বিজয়, অনেককে একজোট হওয়ার সুযোগ দিয়েছে, কিন্তু এখন সেই ঐক্য এবং সমানাধিকার সংকটে পড়েছে। বিশেষত, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি এবং তার সাথে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন, প্রথাগত চিহ্ন ধ্বংস, এবং সাম্প্রতিক সময়ের ধর্মীয় আক্রমণ এ সবই দেশের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এই সময়ের পরিস্থিতি বেদনাদায়ক। কেবলমাত্র রাজনৈতিক পালাবদলের সময় নয়, এক বিপদজনক মুহূর্তে, বাংলাদেশ একটি সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সংকটের মধ্যে পড়ে গেছে।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

ইসকনের ব্যানারে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা আইনজীবীকে হত্যা করেছে: জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী দুর্বৃত্তদের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ইসকনের ব্যানারে সংঘটিত হামলার মাধ্যমে মুসলমানদের উসকানি দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ চালানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।
ইসকনের ব্যানারে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা আইনজীবীকে হত্যা করেছে: জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী দুর্বৃত্তদের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ইসকনের ব্যানারে সংঘটিত হামলার মাধ্যমে মুসলমানদের উসকানি দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ চালানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।

ঢাকা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী দুর্বৃত্তদের সংশ্লিষ্টতা দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ইসকনের ব্যানারে এই হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার মুসলমানদের উসকানি দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। এই ঘটনার লক্ষ্য ছিল পশ্চিম বিশ্বে অশান্তির ছবি এবং ভিডিও তুলে ধরা, যাতে করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে ওঠে। সাকি বলেন, ‘এটি তাদের ষড়যন্ত্রের অংশ, যাতে করে তারা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়।’

তিনি আরো বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছে। সাকি অভিযোগ করেন যে, এই সময়ের মধ্যে সরকার হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার, গুম এবং খুনের মাধ্যমে জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে। তার মতে, দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রয়োজন এবং এর জন্য বিপ্লবের প্রয়োজন রয়েছে।

গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে অনুষ্ঠিত এক গণসংলাপে এসব মন্তব্য করেন। ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে’ শীর্ষক এই গণসংলাপের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার নেতা-কর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্টদের সংবিধান, শাসনব্যবস্থা এবং আইনকানুন বহাল রেখে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করা সম্ভব নয়।’ সাকি আরও যোগ করেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করি, কিন্তু দেশের জনগণ আজও কষ্টে রয়েছে। দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, কৃষকদের সারের দাম বৃদ্ধি, হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচার না হওয়া এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি না হওয়ার কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বেড়ে চলেছে।’

সাকি আরো বলেন, ‘গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লিতে হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি, ফুলবাড়ীতে হত্যা করা হয়েছিল, কিন্তু তারও বিচার হয়নি।’ তিনি উল্লেখ করেন যে, ফ্যাসিস্টরা সাধারণ জনগণের প্রতি অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে, অথচ তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি আর চলতে দেওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘দেশে ফ্যাসিস্টদের রাজনৈতিক অধিকার থাকতে পারে না, তারা যদি আমাদের খুন করে আবার বিনা বিচারে লুটে খায়, তাদের তা মেনে নেওয়া হবে না। আমাদের দেশে সব ফ্যাসিস্টদের বিচার হবে।’

জোনায়েদ সাকি এ সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তোলেন যে, তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় দেশি-বিদেশি শক্তির সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সাকি বললেন, ‘অভ্যুত্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করতে আওয়ামী লীগ নানা ষড়যন্ত্র করছে, তারা নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে যে কোনো পন্থা অবলম্বন করছে।’ তিনি দাবি করেন, সরকার দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ‘অস্থিতিশীল পরিবেশ’ তৈরি করছে এবং জনগণের ক্ষোভের দিকে মনোযোগ না দিয়ে তারা একের পর এক অপকর্ম করে চলেছে।

গণসংলাপে উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা এই পরিস্থিতির সমালোচনা করেন। গণসংহতি আন্দোলন রংপুর জেলার আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, দীপক রায়, কৃষক-মজুর সংহতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান শোষণ ও দমনমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বর্তমান সরকারের অগণতান্ত্রিক শাসনের মাধ্যমে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি দাবি করেন যে, বর্তমানে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য জনগণের একতাবদ্ধ আন্দোলন প্রয়োজন, যা আগের মতোই গণতান্ত্রিক কাঠামো প্রতিষ্ঠিত করবে।

তিনি বলেন, ‘তিন দশক আগে স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের একত্রিত হওয়ার যে প্রেরণা ছিল, আজ সেই চেতনা আমাদের প্রয়োজন। জনগণকে একত্রিত করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনঃস্থাপন করতে হবে।’ গণসংহতির এই নেতা আরও বলেন, বর্তমান সরকারের শাসনব্যবস্থা, রাজনৈতিক পরিবেশ এবং জনগণের প্রতি দমন-পীড়ন পরিস্থিতি একটি খারাপ উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা জাতির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।

সাকি আশা প্রকাশ করেন যে, এই ধরনের গণসংলাপের মাধ্যমে জনগণ সচেতন হবে এবং তারা নিজেদের অধিকার রক্ষায় সংগঠিত হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষকে যদি সাহসীভাবে তাদের অধিকার আদায়ের পথে পরিচালিত করা যায়, তবে তবেই রাজনৈতিক পরিবর্তন সম্ভব।

এই গণসংলাপ শেষে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা দেশব্যাপী রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন এবং দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে একত্রিত হওয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেন।

তারিখ: ০১.১২.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ইসকনের বিশ্বজুড়ে কীর্তন আয়োজন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ ও চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে উত্তেজনা চলছে। ইসকন বিশ্বজুড়ে প্রার্থনা ও কীর্তনের আয়োজন করেছে। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ ও ব্রিটেনের সংসদে আলোচনার পাশাপাশি ইসকনের তিন দফা দাবি তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ইসকনের বিশ্বজুড়ে কীর্তন আয়োজন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ ও চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে উত্তেজনা চলছে। ইসকন বিশ্বজুড়ে প্রার্থনা ও কীর্তনের আয়োজন করেছে। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ ও ব্রিটেনের সংসদে আলোচনার পাশাপাশি ইসকনের তিন দফা দাবি তোলা হয়েছে।

কলকাতা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সম্প্রতি সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ এবং ইসকনের প্রাক্তন সদস্য চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির ঘটনায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে চিন্ময় বর্তমানে জেলবন্দি রয়েছেন। তাঁর জামিন আবেদন খারিজ হয়েছে এবং আগামী বুধবার তাঁকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং পরবর্তী ঘটনায় ইসকন বিশ্বজুড়ে প্রার্থনা এবং কীর্তনের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশসহ ভারত, ইউরোপ, আমেরিকা এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ইসকনের মন্দির রয়েছে। ইসকন ভক্তদের নিকটবর্তী মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ইসকনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং চিন্ময়ের মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা হবে।

এদিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে আক্রমণের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার চট্টগ্রামের পাথরঘাটা অঞ্চলে একটি মন্দিরে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মন্দিরের আশপাশের দোকান ও বাড়িঘরেও হামলা চালানো হয়েছে।

চিন্ময়ের গ্রেফতারির পর চট্টগ্রামে একটি সমাবেশে তাঁর অনুগামীরা বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় এক আইনজীবীর মৃত্যু ঘটে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনায় দিল্লি উদ্বিগ্ন এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সে দেশের সরকারের।

ব্রিটেনের সংসদেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কনজারভেটিভ দলের সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যান বলেন, ‘‘আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় হিন্দু মন্দির পরিচালনা করে ইসকন। তাদের ধর্মীয় নেতা (প্রাক্তন) বাংলাদেশে গ্রেফতার হয়েছেন।’’ তিনি ব্রিটেন সরকারকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের তদারকি সরকার তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে জানিয়েছে যে দেশে প্রত্যেক নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষিত হচ্ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জেও বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে যে সংখ্যালঘু-সহ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা তাদের লক্ষ্য।

তবে ইসকনের পক্ষ থেকে তিনটি প্রধান দাবি জানানো হয়েছে। প্রথমত, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে শাস্তি দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, চিন্ময়কৃষ্ণ দাস এবং অন্যান্য সনাতনীদের নাগরিক অধিকার রক্ষা করতে হবে। তৃতীয়ত, বাংলাদেশে সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

ইসকনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য চিন্ময়ের প্রচেষ্টা এবং অধিকারকে তারা সমর্থন করে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সংখ্যালঘুদের রক্ষায় আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

এই পরিস্থিতিতে ইসকনের বিশ্বজুড়ে আয়োজিত প্রার্থনা এবং কীর্তন কর্মসূচি ধর্মীয় সংহতি এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি কীভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে।

তারিখ: ০১.১২.২০২৪

নির্যাতনের শিকার হিন্দুরা! বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের ইঙ্গিত ত্রিপুরার

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা জানান, রাজ্য সরকার বাণিজ্য বন্ধ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেও বিষয়টি ভাবনাচিন্তার পর্যায়ে রয়েছে। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার কথা জানান।
নির্যাতনের শিকার হিন্দুরা! বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের ইঙ্গিত ত্রিপুরার

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা জানান, রাজ্য সরকার বাণিজ্য বন্ধ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেও বিষয়টি ভাবনাচিন্তার পর্যায়ে রয়েছে। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার কথা জানান।

আগরতলা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: শনিবার আগরতলা প্রেস ক্লাবে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এক সংবাদ সম্মেলনে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, রাজ্য সরকার বাণিজ্য বন্ধের ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি, তবে এটি ভাবনাচিন্তার পর্যায়ে রয়েছে এবং শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তিনি জানান, রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে যোগাযোগ বজায় রেখেছে এবং পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে দ্রুত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরা সরকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যা চলছে তা অমানবিক। বর্তমান সরকারকে এটি খেয়াল রাখতে হবে যেন সংখ্যালঘুদের স্বাধীনতা খর্ব না হয়।” তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার চলছেই, এবং এটি বর্তমান সরকারের নজরদারির মধ্যে থাকা উচিত।”

এছাড়া তিনি আরও উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ত্রিপুরায় অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধের জন্য বিএসএফ ও পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর, অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। পরিস্থিতি শোধরাতে বাংলাদেশে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি এবং সম্প্রতি নয়া আইন আনার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু মুখ, সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন ও নির্যাতন বাড়তে থাকায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শুক্রবার নয়াদিল্লি থেকে একটি বিবৃতি জারি করে ভারতের সরকার বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দাবি জানিয়েছে এবং চিন্ময় প্রভুর সুবিচার দাবি করেছে। তবে, ত্রিপুরা সরকার এখনও কেন্দ্রীয় স্তরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি এবং অপেক্ষা করছে কেন্দ্র কী সিদ্ধান্ত নেয়।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে বলেছেন, এ বিষয়ে কেন্দ্র যা সিদ্ধান্ত নেবে, রাজ্য সরকার সেটাকেই সমর্থন করবে। তবে, বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা সরকারের মধ্যে পড়শি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের দিকে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

এদিকে, ত্রিপুরা সরকার ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে এবং দ্রুতই একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা জানান, রাজ্য সরকার অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধের জন্য বিএসএফ এবং পুলিশকে আরও বেশি সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে ভবিষ্যতে ভারতের এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থান আরও আলোচনার মধ্যে আসতে পারে।

এদিকে, ত্রিপুরার স্থানীয় রাজনীতিকরা বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করছেন। কিছু রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন যে, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন, তবে অন্যরা মনে করছেন যে, এটি একটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয় এবং সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ সমাধানই সঠিক উপায়। ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারের এই সংকল্প পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ও ব্যবসায়িক বিষয়গুলিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

তারিখ: ০১.১২.২০২৪

চিন্ময় দাসের গ্রেফতারি: ভুয়ো পোস্টের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে

বাংলাদেশে সন্ন্যাসী চিন্ময় দাসের গ্রেফতারির ঘটনায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ভাইরাল একটি পোস্টে দাবি করা হচ্ছে যে তাঁকে শিশু ধর্ষণ ও উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে, কিন্তু ফ্যাক্ট চেক অনুসারে, এটি ভুয়ো। বাস্তবে তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
চিন্ময় দাসের গ্রেফতারি: ভুয়ো পোস্টের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে

বাংলাদেশে সন্ন্যাসী চিন্ময় দাসের গ্রেফতারির ঘটনায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ভাইরাল একটি পোস্টে দাবি করা হচ্ছে যে তাঁকে শিশু ধর্ষণ ও উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে, কিন্তু ফ্যাক্ট চেক অনুসারে, এটি ভুয়ো। বাস্তবে তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।

ঢাকা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের সনাতন জাগরণ মঞ্চের প্রধান মুখ সন্ন্যাসী চিন্ময় দাসের গ্রেফতারি নিয়ে সম্প্রতি নানা অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো শুরু হয়। বিশেষ করে, একটি পোস্টে দাবি করা হয় যে চিন্ময় দাসকে শিশু ধর্ষণ ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই পোস্টে চ্যানেল ২৪ নামের বাংলাদেশী সংবাদ মাধ্যমের লোগো সহ একটি ফটোকার্ড শেয়ার করা হয়, যেখানে এই দাবি করা হয়।

তবে, ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, চ্যানেল ২৪ এমন কোনো পোস্ট প্রকাশ করেনি এবং এই ধরনের কোনো তথ্যও তাদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে আপলোড হয়নি। “আজতক” ফ্যাক্ট চেক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভাইরাল পোস্টটি সম্পূর্ণ ভুয়ো এবং বাস্তবতার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। চিন্ময় দাসের গ্রেফতারি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এমন ভুয়ো পোস্টটি প্রচার করা হয়েছে।

চিন্ময় দাসের গ্রেফতারির প্রকৃত কারণ জানতে কিছু অনুসন্ধানী রিপোর্ট পাওয়া গেছে। পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ প্রতিদিনে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে জানা যায়, চিন্ময় দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনা ঘটেছিল ২৫ অক্টোবর, যখন বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বী সংগঠন ‘বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ’ একটি সমাবেশ আয়োজন করে। চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সমাবেশে যোগদান করেছিলেন এবং সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা স্থাপন করা হয়। এই ঘটনায় চিন্ময় দাসের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল।

ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেন। এই মামলা দায়েরের পরেই ২৫ অক্টোবর ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় দাসকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশী গণমাধ্যমগুলোতে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, যেখানে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা ও পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা লাগানোর অভিযোগ উঠে আসে।

এছাড়া, ভাইরাল পোস্টে যে ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে, সেখানে একটি গেরুয়া বসনধারী ব্যক্তির ছবি রয়েছে, যাকে চিন্ময় দাস হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। তবে, ফ্যাক্ট চেক অনুসারে ওই ব্যক্তি চিন্ময় দাস নয়, বরং রাজস্থানের কেশত্রপাল মন্দিরের পুরোহিত বাবা বালকনাথ। এটি আরও একটি ভুয়ো তথ্য, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হয়েছে।

চিন্ময় দাসের গ্রেফতারির পর নানা ধরনের বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, যা তার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। তবে, ফ্যাক্ট চেক রিপোর্টে স্পষ্ট হয়েছে যে, চিন্ময় দাসকে শিশু ধর্ষণ কিংবা উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার কারণে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রকৃত ঘটনা হল, তাকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে, যা সরাসরি জাতীয় পতাকা নিয়ে ঘটিত এক বিতর্কিত ঘটনার সাথে সম্পর্কিত।

এই ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকার ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সূচনা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পক্ষপাতিত্ব না করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন বিভ্রান্তিকর পোস্টগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিরও দাবি উঠেছে, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের গুজব ছড়ানো রোধ করা যায়।

এছাড়া, চিন্ময় দাসের গ্রেফতারি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও বক্তব্য আসছে। অনেকেই এই গ্রেফতারিকে সরকারের বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার অন্যরা এটিকে আইন অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করছেন। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর মাধ্যমে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে।

সব মিলিয়ে, চিন্ময় দাসের গ্রেফতারির পর সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়েছে। ফ্যাক্ট চেক রিপোর্টের মাধ্যমে সঠিক তথ্য সামনে আসায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ছড়ানোর বিষয়ে আরও সচেতনতা তৈরির প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।

তারিখ: ০১.১২.২০২৪

নবীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ, গ্রেফতার হিন্দু নাবালক

রাজশাহির বাগমারায় নবম শ্রেণির এক হিন্দু কিশোরকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে। ১৫ বছর বয়সি ওই কিশোরের বিরুদ্ধে হজরত মুহাম্মদকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। গ্রেফতারের পর মৌলবাদীরা তার ফাঁসির দাবিতে রাজশাহিতে মিছিল করেছে।
নবীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ, গ্রেফতার হিন্দু নাবালক

রাজশাহির বাগমারায় নবম শ্রেণির এক হিন্দু কিশোরকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে। ১৫ বছর বয়সি ওই কিশোরের বিরুদ্ধে হজরত মুহাম্মদকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। গ্রেফতারের পর মৌলবাদীরা তার ফাঁসির দাবিতে রাজশাহিতে মিছিল করেছে।

রাজশাহি, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: রাজশাহির বাগমারায় নবম শ্রেণির এক হিন্দু কিশোরকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে। ১৫ বছর বয়সি ওই কিশোরের বিরুদ্ধে হজরত মুহাম্মদকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। গ্রেফতারের পর মৌলবাদীরা তার ফাঁসির দাবিতে রাজশাহিতে মিছিল করেছে।

বর্তমানে ওই কিশোর রাজশাহি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছে, তবে তার বিষয়ে কোনো আদালত নির্দেশ এখনো দেওয়া হয়নি। এই ঘটনার পর তার পরিবার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। জানা গেছে, কিশোরের বাবা স্থানীয় আওয়ামি লীগের নেতা এবং একজন ব্যবসায়ী।

তারিখ: ০১.১২.২০২৪

চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ; ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন একাধিক বাংলাদেশি

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ক্রমাগত আক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে ইস্কন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর। মৌলবাদী গোষ্ঠী ইস্কনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছে। প্রাণ বাঁচাতে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি হিন্দু ভারতে পালিয়ে এসেছেন, তাদের অভিজ্ঞতা শোনালেন তারা। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)
চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ; ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন একাধিক বাংলাদেশি

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ক্রমাগত আক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে ইস্কন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর। মৌলবাদী গোষ্ঠী ইস্কনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছে। প্রাণ বাঁচাতে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি হিন্দু ভারতে পালিয়ে এসেছেন, তাদের অভিজ্ঞতা শোনালেন তারা। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)

কলকাতা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের পরিস্থিতি বর্তমানে অত্যন্ত সঙ্কটজনক হয়ে উঠেছে। হিন্দুদের ওপর মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলির আক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে ইস্কন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণচৈতন্য আন্দোলন) এর সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর থেকে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জায়গায় হিন্দুদের ধর্মীয় স্থান ও বাড়িঘর আক্রান্ত হচ্ছে, এবং তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যেও মৌলবাদীদের হুমকি বাড়ছে। এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে অনেকেই বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে এসেছেন, তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি সাংবাদিকদের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।

ঢাকার সাভার থেকে আসা মঞ্জু মণ্ডল, যিনি ইস্কন-এর ভক্ত, জানালেন যে তিনি এখনো ভয়ঙ্কর স্মৃতির মধ্যে আছেন। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এবং এর পর থেকেই বাংলাদেশে মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলির আক্রমণ আরো বেড়ে গেছে। মঞ্জু বলেন, “ওঁকে (চিন্ময়কৃষ্ণ দাস) কেন সনাতন ধর্ম নিয়ে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছিল না? তিন মাস ধরে তাঁরা সনাতন ধর্মের স্বীকৃতি চাইছিলেন। কিন্তু উনি সঠিক কাজ করছিলেন। আমাদের প্রভু কষ্ট পাচ্ছেন, আমরা তার কষ্ট অনুভব করছি।”

এদিকে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর বাংলাদেশে অস্থিরতা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে, বিভূতিভূষণ মণ্ডল, একজন অবসরপ্রাপ্ত কলেজ কর্মী, ভারতে পালিয়ে আসেন। তিনি জানান, “আমরা সংখ্যালঘু, আমাদের নিরাপত্তা নেই। ৫ আগস্ট আমার বাড়ি পোড়ানো হয়েছে। হিন্দুদের জন্য এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।”

ফরিদপুরের ব্যবসায়ী তুষার দত্ত, যিনি এখন কলকাতায় বসবাস করছেন, তার পরিবার এখনও বাংলাদেশে রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, “আমার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়রা এখন ব্যবসা করতে পারছেন না, বাড়িঘর ভাঙচুর হচ্ছে, এবং তারা এখন কোনোভাবেই ভারতে আসার সাহস পাচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় মৌলবাদীরা ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা দাবি করছে, না হলে তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।”

বাংলাদেশে হিন্দুদের পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। একদিকে মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলির সহিংস আক্রমণ, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অক্ষমতা, এসব কারণে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন। এর ফলে অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছেন। তাদের কথায়, “আমরা এখন আর বাংলাদেশে নিরাপদ বোধ করি না। আমাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে ভয় ও আতঙ্ক আমাদের কাছে একটা দৈনন্দিন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

এই পরিস্থিতি শুধু বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য নয়, বরং পুরো দেশের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেখানে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক উত্তেজনার মধ্যে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মৌলবাদী গোষ্ঠী বিভিন্নভাবে তাদের দাবিগুলো আদায় করার চেষ্টা করছে, এবং তাদের জন্য বাংলাদেশে হিন্দুদের জীবন এক প্রকার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এদিকে, বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ বাড়ছে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং মৌলিক অধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারকে বাধ্য করা হচ্ছে। বাংলাদেশে মৌলবাদী হামলাগুলির প্রেক্ষিতে, ভারত সরকারেরও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যাতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা হিন্দুদের জন্য আশ্রয় এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।

বাংলাদেশে হিন্দুদের এই দুঃসময়ে সমগ্র বিশ্ব দেখছে, এবং এই সংকটের একটি সুষ্ঠু সমাধান খুঁজে পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এক হয়ে কাজ করতে পারে এমন আশার সঞ্চার হচ্ছে। তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, কবে সেখানকার হিন্দুরা তাদের বাঁচার অধিকার ফিরে পাবে এবং কবে তাদের বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

তারিখ: ০১.১২.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়নে প্রতিবাদ এপারে, কাঁটাতারে রক্তক্ষরণ সীমান্তবাসীর!

হেমতাবাদের মাকরহাট সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের এক নতুন বাস্তবতা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় হাজার হাজার মানুষ ভীত হয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। বিএসএফ-এর সতর্কতায় এসব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও সীমান্তের ওপারে বাড়ছে আতঙ্ক এবং নিরাপত্তাহীনতা।
বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়নে প্রতিবাদ এপারে, কাঁটাতারে রক্তক্ষরণ সীমান্তবাসীর!

হেমতাবাদের মাকরহাট সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের এক নতুন বাস্তবতা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় হাজার হাজার মানুষ ভীত হয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। বিএসএফ-এর সতর্কতায় এসব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও সীমান্তের ওপারে বাড়ছে আতঙ্ক এবং নিরাপত্তাহীনতা।

হেমতাবাদ, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: হেমতাবাদের মাকরহাট সীমান্তের বিক্ষিপ্ত দৃশ্য, যেখানে কাঁটাতারের ওপারে যতদূর দৃষ্টি যায়, সেখানে ভারতের জমির আবাদী ক্ষেতের সারি। এই মুহূর্তে, ভারতের কৃষকদের আমন ধান কাটা শেষ হলেও, ভুট্টা ও সরিষার চাষের ব্যস্ততা জারি রয়েছে। তবে, সীমান্তে কৃষিকাজের পাশাপাশি আরো এক উদ্বেগজনক বাস্তবতা ঘিরে রয়েছে।

অতীতের স্মৃতির কথা মনে করে, স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল রহিম বলেন, “প্রত্যেক বছর কার্তিক পুজো পরেই এখানে সীমান্ত মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হতো, দুই দেশের মানুষ একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় করতেন, খাবার আদান-প্রদান হতো। কিন্তু এখন বাংলাদেশের গোলমালের কারণে পুলিশ ঘোষণা করেছে, এবার এই মিলন মেলা হবে না।”
এমনটাই ঘটছে হেমতাবাদের মহিষাগাঁও সীমান্তের ৬৩ নম্বর ব্যাটেলিয়ন এলাকার আশেপাশে, যেখানে বাংলাদেশের ভুট্টাচাষি ও ধানচাষিরা আতঙ্কিত হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসার জন্য রাতের অন্ধকারে পালানোর চেষ্টা করছে।

প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে, দেশের ভিতরে ভাঙচুর, মারামারি, ও ঘরবাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশি হিন্দুরা যখন প্রাণ বাঁচাতে এপারে আসছেন, তখন কিছু জায়গায় বিএসএফের হাতে ধরা পড়ছেন তারা।

একদিকে যেমন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) তাদের সীমান্ত সুরক্ষায় সতর্ক রয়েছে, অন্যদিকে ওপারের বাংলাদেশী পরিবারগুলো নিজেদের জন্মভিটে ছেড়ে পালানোর জন্য ক্ষণিকের তৎপরতায় সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসতে চাইছে।

এমনই এক ঘটনা ঘটে মালোন সীমান্তের কাছে, যেখানে ওপারের কামাটুলি গ্রামে বসবাসকারী কিছু পরিবার গত কয়েক দিন ধরে ভারতে প্রবেশের জন্য পরিকল্পনা করছিল। তাদের আশঙ্কা ছিল, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে।

বিএসএফ-এর এক কর্মকর্তা জানান, “এই ঘটনায় সীমান্তের ওপার থেকে কিছু লোক রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করছিল, তবে তাদের উপস্থিতি নজরে আসার পর তাদের ফিরিয়ে দিতে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছিল।”
এপারে কৃষক মহম্মদ হারুণ ও রূপনারায়ণ বর্মন বলেন, “বাংলাদেশে আর শাসন নেই, প্রতিদিন হামলা, ঘরবাড়িতে আগুন লাগানো হচ্ছে। বহু পরিবার রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসছে, কিন্তু বিএসএফ তাদের থামিয়ে দিয়েছে। আমাদের এখানে শান্তি আছে, কিন্তু ওপারে দুঃশাসন চলছে।”

বাংলাদেশের রাজনীতির অস্থিরতায় ওপারের মানুষের জীবন বর্তমানে অনিশ্চিত। সীমান্ত এলাকাগুলোতে হাজার হাজার পরিবারে আতঙ্ক বিরাজ করছে, কারণ প্রতিদিন নতুন নতুন হামলা ও সংঘর্ষের খবর আসছে। সেই সাথে, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে আসার জন্য এক ধরনের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, যা রীতিমতো উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠছে।

বিষ্ণুপুর সীমান্তের পার্শ্ববর্তী গ্রামে নতুন ধান ঝাড়ার মাঝে এক দম্পতির কথায়, “কাঁটাতারের ওপার থেকে লোকজন আসছে বলে শোনা যাচ্ছে। আমাদের মাঝেই অনেকেই জানাচ্ছে যে ওপারে আর নিরাপত্তা নেই, তাই ভয়বিহীনভাবে এখানকার জীবন চালানো যাচ্ছে না। তবে বিএসএফ আমাদের জানাচ্ছে যে তারা কোনভাবেই সীমান্ত পেরোতে দেবে না।”
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা যে এক ধরনের চরম পরিণতির দিকে এগোচ্ছে, তা স্পষ্ট। অনেক মানুষ এখন ভারতে আশ্রয় নিতে চাচ্ছেন, কারণ তাদের কাছে কোনো নিরাপত্তা নেই। সেই সাথে, সীমান্তে বিএসএফ-এর নজরদারি আরো কঠোর হয়েছে, এবং এর ফলে অনেকেই ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়ছেন।

এই সীমান্ত এলাকায় এক ধরনের নতুন অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। সীমান্তের ওপারের মানুষের উদ্বেগের জায়গা হয়ে উঠেছে ভারতীয় ভূখণ্ড। এখানে তাদের ভবিষ্যত ও নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা স্পষ্ট।

তবে, সীমান্তের এপার ও ওপারের মানুষ একে অপরের সহায়তা করতে চেয়েছেন, কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন তাদের একে অপরের দিকে হাত বাড়ানোতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারিখ: ০১.১২.২০২৪

সংখ্যালঘু ইস্যু সরকার কতটা সামাল দিতে পারছে

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। উভয় দেশে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি, বিক্ষোভ এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা দেখা গেছে। পরিস্থিতি শীর্ষে পৌঁছেছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে। (সূত্রঃ বিবিসি)
সংখ্যালঘু ইস্যু সরকার কতটা সামাল দিতে পারছে

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। উভয় দেশে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি, বিক্ষোভ এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা দেখা গেছে। পরিস্থিতি শীর্ষে পৌঁছেছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে। (সূত্রঃ বিবিসি)

ঢাকা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এবং সনাতন জাগরণের মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। উভয় দেশেই পাল্টাপাল্টি বিবৃতি, বিক্ষোভ এবং সামাজিক মাধ্যমে পতাকা অবমাননা, ধর্মীয় স্থানে হামলা এবং নানা ধরনের প্রচারণা চলছে। এর ফলস্বরূপ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিস্থিতি সংকটময় হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা এবং তাদের উপাসনালয় ভাংচুরের অভিযোগ তোলা হয়েছে। বিশেষত দুর্গাপূজার সময় কিছু ঘটনায় উদ্বেগ সৃষ্টি হলেও সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে, তবে অনেকের মতে সরকারের ভূমিকা পর্যাপ্ত ছিল না। বিশেষ করে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে বৈষম্যের শঙ্কা এবং কিছু ঘটনার ক্ষেত্রে সরকারের দিক থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অভাব প্রতীয়মান হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি ভারতীয় পার্লামেন্টে বলেছেন যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মন্দির এবং ধর্মীয় স্থানগুলোর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং ভারত এই ঘটনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং জাতিসংঘের সংখ্যালঘু বিষয়ক ফোরামে জানিয়েছে যে, মিথ্যা তথ্য প্রচার হচ্ছে এবং দেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত হামলা হয়নি। তবে ভারতের উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সামাজিক মাধ্যমে ভারতের দ্বিচারিতার সমালোচনা করেছেন।

তবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের ব্যাপারে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে, সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি। বিশেষ করে বেশ কিছু ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী দাবি করেছেন যে, সরকারের দায়িত্বহীনতা এবং সিদ্ধান্তহীনতার কারণে বর্তমানে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

অন্যদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে সনাতন জাগরণ মঞ্চ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশের আয়োজন করে। তার বক্তব্যে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং তাদের অধিকার নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই সমাবেশ থেকে আটটি দাবি উত্থাপন করা হয়, যার মধ্যে সংখ্যালঘুদের জন্য একটি বিশেষ নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবি ছিল। তবে এই সমাবেশের পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয় এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয় এবং তার সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। চট্টগ্রাম ও রংপুরে তার সমাবেশের ছবি এবং বক্তব্য প্রচারিত হওয়ায়, সেখানকার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে, চট্টগ্রাম শহরে এক আইনজীবী নিহত হন, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও সংকটপূর্ণ হয়ে ওঠে।

ভারতের তরফ থেকেও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকলেও, একজন ধর্মীয় নেতা এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে যখন কথা বলেছেন, তখন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” এর প্রতিক্রিয়ায়, বাংলাদেশ সরকার একটি বিবৃতিতে দাবি করেছে যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর কিছু মহল বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে খারাপ করতে পারে।

এরপর, কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে বাংলাদেশি পতাকা ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। বাংলাদেশ সরকার এর তীব্র নিন্দা জানায়। তবে ভারতীয় মন্ত্রী রণধীর জয়সওয়াল এক সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই সব সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে।”

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর প্রভাব পড়েছে। উভয় দেশের সরকারই একে অপরকে অভিযুক্ত করছে এবং সামাজিক মাধ্যমে উস্কানির ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে, ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত হামলার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিম সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে সমালোচনা করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতির মাঝে বাংলাদেশের সরকারের পদক্ষেপ এবং ভবিষ্যতে গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার যদি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এসব ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান করতে না পারে, তবে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে। তারা সরকারের স্বচ্ছতা এবং দায়িত্বশীলতার প্রতি আস্থা রাখতে ইচ্ছুক।

এই সংকটময় মুহূর্তে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্কের ভবিষ্যত নির্ভর করছে উভয় পক্ষের কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং সংযমের উপর। তবে, এটি স্পষ্ট যে, সরকারকে আরও সতর্ক ও দায়িত্বশীল হতে হবে, যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা যায় এবং দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকে।

তারিখ: ০১.১২.২০২৪

হিন্দু নির্যাতন নিয়ে মিথ্যা বলা হচ্ছে, বিশ্ব মঞ্চে মুখ বাঁচাতে দাবি বাংলাদেশের

অগস্ট থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বেড়েছে, সম্প্রতি কয়েকটি মন্দিরে হামলা হয়েছে। সরকার এই অভিযোগকে ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিলেও, আন্তর্জাতিক মঞ্চে এনজিও এবং ব্রিটিশ সাংসদরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কলকাতায়ও বিক্ষোভ হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। (সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস)
হিন্দু নির্যাতন নিয়ে মিথ্যা বলা হচ্ছে, বিশ্ব মঞ্চে মুখ বাঁচাতে দাবি বাংলাদেশের

অগস্ট থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বেড়েছে, সম্প্রতি কয়েকটি মন্দিরে হামলা হয়েছে। সরকার এই অভিযোগকে ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিলেও, আন্তর্জাতিক মঞ্চে এনজিও এবং ব্রিটিশ সাংসদরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কলকাতায়ও বিক্ষোভ হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। (সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস)

ঢাকা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪: অগস্টের পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এই সংক্রান্ত নানান রিপোর্ট সামনে এসেছে, তবে গত কয়েকদিনে আরও বেশি করে সংখ্যালঘু অত্যাচারের অভিযোগ উঠে এসেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে। সরকারের পক্ষ থেকে এই অভিযোগগুলি খারিজ করা হলেও, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিশেষভাবে রাষ্ট্রসংঘের সংখ্যালঘু বিষয়ক ফোরামে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ফোরামের ১৭তম অধিবেশনে বাংলাদেশের সরকার দাবি করেছে, তাদের দেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির একটি গৌরবজনক উদাহরণ তৈরি করেছে এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যে রিপোর্টগুলো প্রকাশিত হচ্ছে, সেগুলো মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত। বাংলাদেশের প্রতিনিধি আরও বলেন, বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফরে স্বাগত জানাতে সরকার প্রস্তুত। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের বিষয়টিও সেখানে আলোচনা হয়েছে, যেখানে সরকার দাবি করেছে যে, তাকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তবে বাস্তবে পরিস্থিতি আলাদা। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। কয়েকটি মন্দিরে হামলা হয়েছে, যেখানে অভিযোগ উঠেছে সেনার ভূমিকা নিয়ে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম, বরিশাল, ময়মনসিংহের কয়েকটি মন্দিরে হামলা হয়েছে, এবং এর প্রতিবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো সোচ্চার হয়েছে। এই হামলাগুলির প্রেক্ষাপটে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না, বরং অভিযোগ করা হচ্ছে, প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিবাদ বাড়ছে। ব্রিটিশ সংসদেও বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। কনভারভেটিভ পার্টির সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যান হাউজ অফ কমনসে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। তাদের মন্দির পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এবং তাদের হত্যাও করা হচ্ছে।” ব্ল্যাকম্যান আরও বলেন, “এটা এখন ভারতের জন্যে একটা হুমকি, কারণ ভারতই বাংলাদেশকে স্বাধীন হতে দিয়েছিল।”

এছাড়া, ডোনাল্ড ট্রাম্পও বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা নিয়ে মন্তব্য করেছেন এবং তিনি দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের মতে, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর এই ধরনের হামলা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।

এদিকে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি কলকাতার মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। কলকাতায় বাংলাদেশি ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিছুদিন ধরে এখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পোড়ানো এবং মহম্মদ ইউনুসের কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এর পরেই বাংলাদেশের সরকার এক বিবৃতি প্রকাশ করে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়। ঢাকার পক্ষ থেকে বলা হয়, “এ ধরনের ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে আমাদের কূটনৈতিক প্রতিনিধির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।”

বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সদস্যদের নিরাপত্তা বিষয়ে ভারত সরকারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশের সরকার ভারত থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, “আমরা আশা করছি ভারত সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।”

এদিকে, বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, এই সমস্ত প্রতিবেদনগুলি মিথ্যা এবং বিদেশি শক্তিগুলির ষড়যন্ত্রের অংশ। তবে বাস্তব পরিস্থিতি যে ভিন্ন, তা দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও স্পষ্ট। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলি এবং এনজিওরাও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি আরও বেশি করে তুলে ধরছে।

এছাড়া, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। তাকে গ্রেফতার করার ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহল থেকে চাপ তৈরি হয়েছে, যদিও বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে যে, তিনি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয়েছেন। এই ধরনের আইনি ব্যবস্থা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অনেকাংশেই বাড়তি আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

এখন দেখার বিষয় হবে, এই চাপের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার কিভাবে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক মহলে তাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে।

তারিখ: ০১.১২.২০২৪

মন্দিরে 'হামলা', এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন হিন্দুরা, নীরব দর্শক প্রশাসন

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ঘিরে উত্তেজনা। চট্টগ্রামে দুটি মন্দিরে হামলার অভিযোগ উঠেছে, সঙ্গে হামলা চালানো হয়েছে দোকানেও। বাংলাদেশ পুলিশ ও সেনা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, এবং ভারত সরকারের সংখ্যালঘু সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ। (সূত্রঃ আজতক)
মন্দিরে 'হামলা', এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন হিন্দুরা, নীরব দর্শক প্রশাসন

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ঘিরে উত্তেজনা। চট্টগ্রামে দুটি মন্দিরে হামলার অভিযোগ উঠেছে, সঙ্গে হামলা চালানো হয়েছে দোকানেও। বাংলাদেশ পুলিশ ও সেনা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, এবং ভারত সরকারের সংখ্যালঘু সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ। (সূত্রঃ আজতক)

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গত সোমবার ঢাকা বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে। তার গ্রেফতারির প্রতিবাদে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে, যখন জানা গেছে, চট্টগ্রামে দুটি মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি দোকানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার শিকার মন্দির দুটি হল রাধা গোবিন্দ মন্দির এবং সনাতনেশ্বরী মাতৃ মন্দির। হামলার অভিযোগ বিএনপি দলের সদস্যদের এবং একটি স্থানীয় সংগঠনের বিরুদ্ধে। হামলার সময় পুলিশ ও সেনার ভূমিকা ছিল নীরব দর্শকের মতো, এমন অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামলার পর এলাকায় ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে এবং অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। স্থানীয় দোকানগুলিতে হামলা চালানো হয় এবং ক্ষতি করা হয়, কিন্তু পুলিশ বা সেনা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এই ঘটনা আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, কারণ এটি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, বরং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সহিংসতার চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই উত্তেজনার মূল কারণ, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি, যাকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর, তার সমর্থকরা তাকে মুক্তির জন্য এবং তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রতিবাদে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন। তার গ্রেফতারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষও সরব হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বাংলাদেশের প্রশাসনের কাছে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার দাবি জানায়। তাদের মতে, হিন্দুদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সুরক্ষা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে, ইসকন (আন্তর্জাতিক সৎসঙ্গ-কৃষ্ণ-কেন্দ্র) ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানায় এবং এর সঙ্গে ধর্মীয় সুরক্ষার কথা উল্লেখ করে। ইসকন কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার পর সরকারের উচিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গেছে যে, তার জামিনের আবেদন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে খারিজ করা হয়েছে এবং পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদনও করা হয়নি। আদালত তাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। এই আইনি পদক্ষেপে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, কারণ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ঘিরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যা বাংলাদেশে হিন্দুদের প্রতি সহিংসতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে।

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা কোনো নতুন বিষয় নয়, তবে গত কয়েক বছরে এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে এবং এর পেছনে রাজনৈতিক ও সামাজিক দ্বন্দ্বের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে হাসিনা সরকারের শাসনকালে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি উঠছে। সরকার এই অভিযোগগুলি নাকচ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে, তবে আন্তর্জাতিক মহলে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে।

প্রতিবেশী দেশ ভারতও এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে সুনিশ্চিত সংখ্যালঘু সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানায়। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, তাদের দেশ এই ঘটনার সঠিক তদন্ত চায় এবং হিন্দুদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং তাদের ধর্মীয় অধিকার সুরক্ষিত থাকতে হবে।

এদিকে, বাংলাদেশে এসব ঘটনার পর কলকাতাতেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যেখানে চট্টগ্রামে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এসব প্রতিবাদ শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয়, বরং ওপার বাংলাতেও সশক্ত হয়ে উঠছে। বিশেষত, বাংলাদেশ সরকার যখন তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ব্যর্থ হচ্ছে, তখন বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে উঠছে।

হামলার অভিযোগে পুলিশ এবং সেনার নীরব ভূমিকা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। এর মধ্যে বিশেষ করে মন্দির ও দোকানগুলির ওপর হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার কিছু পদক্ষেপ নেবে, এমন আশা পাওয়া যাচ্ছে। যদিও ইসকন কর্তৃপক্ষ এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ সরকারকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে সরকারের তৎপরতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের সহিংসতা যদি অব্যাহত থাকে, তা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

বাংলাদেশ নিয়েও আরজি করের মতো পথে নামছেন মোনালিসা

হাওড়ার মোনালিসা মাইতি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে পথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি রবীন্দ্রসদনে জমায়েতের জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেন এবং বলেন, “বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা সমর্থনযোগ্য নয়”। তিনি বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ নিয়েও আরজি  করের মতো পথে নামছেন মোনালিসা

হাওড়ার মোনালিসা মাইতি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে পথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি রবীন্দ্রসদনে জমায়েতের জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেন এবং বলেন, “বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা সমর্থনযোগ্য নয়”। তিনি বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

হাওড়া, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: হাওড়ার কদমতলার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবনের প্রধানশিক্ষিকা মোনালিসা মাইতি সম্প্রতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি আগামী রবিবার কলকাতার রবীন্দ্রসদনে এক জমায়েতের আয়োজনের ডাক দিয়েছেন, যেখানে সাধারণ মানুষকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। মোনালিসার মতে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি যা ঘটছে তা সমর্থনযোগ্য নয় এবং এটি একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন।

মোনালিসা মাইতি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি সরকারের আচরণ এবং তাদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, একটি স্বাধীন দেশের শাসকদের দায়িত্ব নাগরিকদের সমানভাবে সেবা প্রদান করা, এবং বাংলাদেশে সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের যে সমস্ত বুভুক্ষু মানুষ তাদের জন্মভূমিতে থেকে যাচ্ছেন, তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।’’ মোনালিসার বক্তব্য, ‘‘সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগুরুর তকমাগুলি মুছে ফেলার সময় এসেছে।’’ তিনি জানান, ‘‘প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব অন্য নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকার সুরক্ষিত করা।’’ এই বার্তা তিনি কলকাতার রাজপথ থেকে দিতে চান, যাতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের অবস্থা সম্পর্কে সারা বিশ্বে সচেতনতা তৈরি হয়।

মোনালিসা মাইতি, যিনি পূর্বে কলকাতায় বিভিন্ন প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তার এই নতুন উদ্যোগটি অনেকের কাছে গুরুত্বপূর্ন। আগে তিনি মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন, সেই সময়েও স্কুলের ছাত্রীদের নিয়ে তিনি মিছিল করেন। তখন তার বিরুদ্ধে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, যাতে স্কুলগুলিতে এই ধরনের মিছিল না করা হয়। দুর্গাপুজোর সময়ও তিনি আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে উৎসব বয়কট করেছিলেন। মোনালিসার এই প্রতিবাদী মনোভাব সমাজে তাকে এক সাহসী ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের ঘটনা সম্পর্কে মোনালিসা মাইতির উদ্বেগ সঙ্গত। গত সোমবার, বাংলাদেশের পুলিশ রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে। তার গ্রেফতারির পর বাংলাদেশে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারী সংখ্যালঘুদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটে, যেখানে মঙ্গলবার এক আইনজীবী নিহত হন। চিন্ময়ের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায় এবং তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এদিকে, বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার জন্য মামলা করা হয়েছিল, তবে তা খারিজ করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর চলমান অত্যাচার এবং রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে ভারত সরকারের উদ্বেগ বেড়েছে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করছে এবং সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

এছাড়া, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ভারতের অবস্থান সমর্থন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিদেশি বিষয়ে ভারত সরকারের অবস্থান তিনি সমর্থন করবেন। এর পাশাপাশি, তিনি জনগণকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

মোনালিসা মাইতির আহ্বান, ‘‘বাংলাদেশে যেভাবে সংখ্যালঘুদের নিধন শুরু হয়েছে, তা আমরা ভালো চোখে দেখছি না।’’ এই কথাটি তিনি কলকাতার রাজপথ থেকে সারা বিশ্বকে জানাতে চান। তিনি আগামী রবিবার রবীন্দ্রসদনে এক জমায়েতের আয়োজন করেছেন এবং সেখানে উপস্থিত হওয়ার জন্য সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এই সহিংসতা এবং অত্যাচার শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং সারা বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। সংখ্যালঘুদের জন্য ন্যায্য অধিকার এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। মোনালিসা মাইতির এই উদ্যোগ তার প্রতিবাদী অবস্থানকে আরও দৃঢ় করে তুলছে এবং কলকাতার রাজপথে এক নতুন আন্দোলনের সূচনা হতে পারে।

তারিখ: ৩০.১১.২০২৪

বাংলাদেশে ‘উগ্র বক্তব্যের ঢেউ’ ও সহিংসতা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত

ভারত বাংলাদেশে ‘উগ্র বক্তব্যের ঢেউ’ এবং ‘সহিংসতা ও উসকানির ঘটনা বৃদ্ধির’ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, এই ঘটনাগুলোকে শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমের অতিরঞ্জন হিসেবে খারিজ করা যায় না। ভারত আরও জানিয়েছে, সাবেক ইসকন সদস্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাঁর সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার প্রত্যাশা করছে তারা।
বাংলাদেশে ‘উগ্র বক্তব্যের ঢেউ’ ও সহিংসতা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত

ভারত বাংলাদেশে ‘উগ্র বক্তব্যের ঢেউ’ এবং ‘সহিংসতা ও উসকানির ঘটনা বৃদ্ধির’ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, এই ঘটনাগুলোকে শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমের অতিরঞ্জন হিসেবে খারিজ করা যায় না। ভারত আরও জানিয়েছে, সাবেক ইসকন সদস্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাঁর সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার প্রত্যাশা করছে তারা।

নয়াদিল্লি, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: শুক্রবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এসব মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে উগ্র বক্তব্যের ঢেউ, সহিংসতা ও উসকানির ঘটনা ক্রমবর্ধমানভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এসব বিষয়কে শুধু মিডিয়ার অতিরঞ্জন হিসেবে খারিজ করা যায় না।’’

ভারত তার অবস্থান স্পষ্ট করে জানায় যে, বাংলাদেশ সরকারকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জয়সোয়াল বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যে হামলা ও হুমকি সৃষ্টি হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে ভারত বাংলাদেশ সরকারের কাছে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এটি একটি উদ্বেগজনক বিষয় এবং আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট—বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই সকল সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’’

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে সম্প্রতি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়, এবং তার আইনি অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছে ভারত। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে, জয়সোয়াল বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, আইনগত প্রক্রিয়া সুষ্ঠু, ন্যায়সঙ্গত এবং স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে হবে, যাতে সংশ্লিষ্ট সকলের আইনি অধিকার সুরক্ষিত থাকে।’’

এছাড়া, বাংলাদেশে ইসকন সংগঠন নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘ইসকন একটি স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক সংগঠন, যাদের সামাজিক কর্মকাণ্ডের খ্যাতি বিশ্বব্যাপী রয়েছে।’’

ভারত বাংলাদেশ সরকারকে পুনরায় আহ্বান জানিয়েছে, তাদের দেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও স্বার্থ নিশ্চিত করতে। বাংলাদেশের সরকারের প্রতি এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট এবং শক্তিশালী বলে জানায় ভারত।

এদিকে, ভারত-বাংলাদেশ পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে, জয়সোয়াল বলেন, ‘‘যখন এই বৈঠক হবে, তখন আপনাদের জানানো হবে।’’

এই বিবৃতির মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে আরো মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

ইসকন নিষিদ্ধ করে আ.লীগ ও ভারতকে বার্তা দিতে হবে

বাংলাদেশে ভবিষ্যতে ভারতের ‘সেবাদাস’ কাউকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটি ভারতের অনুকম্পায় ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা চালানোর অভিযোগ এনে দাবি করেছে, ইসকন (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস) কে নিষিদ্ধ করতে হবে, এবং আওয়ামী লীগ ও ভারতকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে। হেফাজতে ইসলামের নেতারা অভিযোগ করেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল ভারতের সহায়তায় বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে, যা দেশের জনগণের আস্থা এবং স্বার্থের পরিপন্থী।
ইসকন নিষিদ্ধ করে আ.লীগ ও ভারতকে বার্তা দিতে হবে

বাংলাদেশে ভবিষ্যতে ভারতের ‘সেবাদাস’ কাউকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটি ভারতের অনুকম্পায় ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা চালানোর অভিযোগ এনে দাবি করেছে, ইসকন (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস) কে নিষিদ্ধ করতে হবে, এবং আওয়ামী লীগ ও ভারতকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে। হেফাজতে ইসলামের নেতারা অভিযোগ করেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল ভারতের সহায়তায় বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে, যা দেশের জনগণের আস্থা এবং স্বার্থের পরিপন্থী।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: আজ শুক্রবার বাদ জুমা ঢাকার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের সামনে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর শাখা আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব বক্তব্য প্রদান করা হয়। সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে সুপরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা চলছে। বিশেষ করে আইনজীবী শহীদ সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে, মামুনুল হক বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা রয়েছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করা উচিত। তিনি দাবি করেন, সাইফুল হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি তদন্ত করা উচিত।

সমাবেশে মাওলানা মামুনুল হক আরো বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের চেষ্টা করতে গিয়ে বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’’ তিনি ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘‘যদি ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে থাকে, তবে এক সময় জনগণ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভারত যদি এখনো বাংলাদেশের মানুষের অনুভূতি বুঝতে ব্যর্থ হয়, তবে জনগণ তাদের বিরুদ্ধে রাজপথে নামবে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হবে।’’

হেফাজতে ইসলামের নেতারা এই সমাবেশে ইসকনকে ‘উগ্রবাদী’, ‘সন্ত্রাসী’ ও ‘জঙ্গি সংগঠন’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাদের দাবি, ভারতের নির্দেশনায় বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। তারা সরকারকে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। একই সঙ্গে, মামুনুল হক বলেন, ‘‘যদি সরকার কিংবা বিচার বিভাগ এই বিষয়ে গড়িমসি করে, তবে হেফাজতে ইসলাম বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।’’

এছাড়া, হেফাজতের এই নেতা ভারতের সম্পর্কিত বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘‘ভারত কখনোই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে সক্ষম হয়নি। তারা সার্ক থেকে একঘরে হয়ে গেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভারত যদি বাংলাদেশের জনগণের বিপ্লবকে অবজ্ঞা করতে থাকে, তাহলে একসময় ভারতের জন্য পরিস্থিতি খারাপ হবে।’’

তিন ঘণ্টাব্যাপী এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন হেফাজতের অন্যান্য নেতারা, যারা বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আরও কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানান।

হেফাজতে ইসলামের নেতারা তাদের বক্তব্যে এই ঘটনাকে এক সামগ্রিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

সমাবেশের শেষে হেফাজতে ইসলাম সতর্ক করে দেয় যে, ভারতীয় মদদপুষ্ট রাজনীতির কোনো উপাদান বা রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করলে তা দেশে বড় ধরনের অস্থিরতার সৃষ্টি করবে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে ভারত: জয়শঙ্কর

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শুক্রবার লোকসভায় পাঁচটি লিখিত প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে চলমান সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং সহিংসতার ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশের সরকারের প্রধান দায়িত্ব।’’
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে ভারত: জয়শঙ্কর

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শুক্রবার লোকসভায় পাঁচটি লিখিত প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে চলমান সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং সহিংসতার ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশের সরকারের প্রধান দায়িত্ব।’’

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শুক্রবার লোকসভায় পাঁচটি লিখিত প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে চলমান সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং সহিংসতার ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশের সরকারের প্রধান দায়িত্ব।’’

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা উল্লেখ করে জয়শঙ্কর জানান, চলতি বছরের আগস্ট মাসে ও অন্যান্য সময়ে বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। তাদের বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে এবং মন্দির ও ধর্মীয় স্থানগুলোতেও সহিংসতা ঘটে। এসব ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে ভারত সরকার মনে করছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।’’

শারদীয় দুর্গোৎসবের সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলার খবরও পাওয়া গেছে। জয়শঙ্কর জানান, ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে হামলা এবং সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে চুরির ঘটনা সম্পর্কে ভারত সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এসব হামলার পর বাংলাদেশ সরকার বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং দুর্গোৎসবের শান্তিপূর্ণ উদ্‌যাপন নিশ্চিত করার জন্য সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

এছাড়া, জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশন মনিটর করছে।’’ তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ সরকারই প্রথমত সংখ্যালঘুদের জীবন এবং স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে, তবে ভারত সরকারের তরফ থেকে এ ধরনের পরিস্থিতি সম্পর্কে নজর রাখা হবে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি জয়শঙ্কর আরও বলেন, ‘‘প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সরকারকে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে।’’

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিস্থিতি ভারতে গভীর মনোযোগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার খবরের পর। এসব ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, কারণ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

চিন্ময়কৃষ্ণের আইনি অধিকার যেন অক্ষুণ্ণ থাকে, সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে ঢাকাকে বার্তা দিল্লির

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা উদ্বেগজনক। আশা করি, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।’’ সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের পর বাংলাদেশে উত্তেজনা নতুনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মুসলিম কট্টরপন্থীদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ অন্যান্য ধর্মের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এই পরিস্থিতির মধ্যে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বাংলাদেশ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
চিন্ময়কৃষ্ণের আইনি অধিকার যেন অক্ষুণ্ণ থাকে, সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে ঢাকাকে বার্তা দিল্লির

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা উদ্বেগজনক। আশা করি, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।’’ সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের পর বাংলাদেশে উত্তেজনা নতুনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মুসলিম কট্টরপন্থীদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ অন্যান্য ধর্মের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এই পরিস্থিতির মধ্যে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বাংলাদেশ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: গত ৫ আগস্ট, বাংলাদেশে জনবিক্ষোভের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এরপর থেকেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ অস্থির হয়ে ওঠে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে জানায়, ‘‘আমরা আশা করি চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিচার স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ হবে। তাঁর আইনি অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকবে।’’

বর্তমানে বাংলাদেশে বিশেষত সংখ্যালঘুদের উপর ধারাবাহিক হামলার ঘটনা ঘটছে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা আশা করি, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং তাদের ধর্মীয় স্থানগুলোকে রক্ষা করবে।’’ ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ সংসদে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘‘গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে বিভিন্ন হিন্দু মন্দির এবং বিগ্রহের উপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। দুর্গাপুজো চলাকালীন ঢাকার তাঁতিবাজারের মণ্ডপে আক্রমণ এবং সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে ডাকাতির মতো ঘটনা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি শত্রুতা ও বৈষম্য প্রদর্শন করছে।’’

বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা সাম্প্রতিককালে বেড়ে গেছে এবং ভারত সরকার এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারকে জানায়, ‘‘অথনৈতিক এবং ধর্মীয় ভেদাভেদ এবং সহিংসতার পরিস্থিতি থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে নিরাপদ রাখতে সরকারকে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাদের ধর্মীয় স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’’

এদিকে, ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘‘ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্ক এই পরিস্থিতির মধ্যেও অব্যাহত থাকবে।’’ তবে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, সহিংসতার ঘটনা এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারত সরকার সবসময় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে এবং সঠিক সময়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে তৈরি হওয়া উত্তেজনা এবং এর প্রভাব নিয়ে ভারত সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করলেও, তারা জানায় যে তাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষত বাণিজ্যিক যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে। ভারতীয় সরকার বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি আশা ব্যক্ত করেছে যে, তারা ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং অধিকার রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এছাড়া, ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বানে ভারত সরকার ঢাকা সরকারের কাছে প্রস্তাব রেখেছে। এর পাশাপাশি ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারের প্রতি একান্তভাবে আহ্বান জানিয়েছে, যাতে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

কলকাতায় উপহাইকমিশনের সামনে বাংলাদেশের পতাকা অবমাননার প্রতিবাদ ঢাকার

ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনে গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সহিংস বিক্ষোভের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বিশেষভাবে উদ্বেগের বিষয় ছিল, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বাংলাদেশের পতাকা পোড়ানোর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের প্রতিকৃতিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতির মাধ্যমে ভারতের কাছে ব্যবস্থা নেবার আহ্বান জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নয়াদিল্লির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।
কলকাতায় উপহাইকমিশনের সামনে বাংলাদেশের পতাকা অবমাননার প্রতিবাদ ঢাকার

ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনে গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সহিংস বিক্ষোভের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বিশেষভাবে উদ্বেগের বিষয় ছিল, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বাংলাদেশের পতাকা পোড়ানোর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের প্রতিকৃতিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতির মাধ্যমে ভারতের কাছে ব্যবস্থা নেবার আহ্বান জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নয়াদিল্লির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গের বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ নামের একটি সংগঠন এই বিক্ষোভটি আয়োজন করেছিল। বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পোড়ানোর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার ছবিতে আগুন ধরিয়ে দেয়, যা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তীব্রভাবে নিন্দা করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশ সরকারের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক এবং এটি দেশের মর্যাদার প্রতি আঘাত। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বাংলাদেশের উপহাইকমিশনের সীমানায় প্রবেশ করে এবং সেখানে সহিংস কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। যদিও পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে যে, এই ধরনের ঘটনার কারণে উপহাইকমিশনের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে আরও বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটানোর জন্য ভারতের প্রতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের সরকার সহিংস কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে, কলকাতার উপহাইকমিশনসহ ভারতে অবস্থিত অন্যান্য কূটনৈতিক মিশন এবং কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং প্রধান উপদেষ্টার ছবির প্রতি এমন আক্রমণ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে তারা বাংলাদেশ সরকারের মর্যাদা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে, এবং ভারতীয় মাটিতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক কর্মকর্তা ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

এছাড়াও, বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের সরকার কখনোই সহিংস কর্মকাণ্ডের পক্ষ নিতে পারে না এবং এ ধরনের ঘটনার কড়া নিন্দা জানিয়েছে। আগামী দিনে এরকম সহিংস ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভারত সরকারের প্রতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

বাংলাদেশের ঘটনায় ভারতে ‘হিন্দুত্ববাদীদের বর্বর প্রচার’, CPIM-র কথায় চটল নেটপাড়া

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতার ও জামিন খারিজের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিপিআইএম। বামপন্থী দলটি দাবি করেছে যে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাকে সংকটে ফেলছে। তারা তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারকে মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে এবং সাম্প্রদায়িক হামলা রোধ করতে আহ্বান জানিয়েছে
বাংলাদেশের ঘটনায় ভারতে ‘হিন্দুত্ববাদীদের বর্বর প্রচার’, CPIM-র কথায় চটল নেটপাড়া

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতার ও জামিন খারিজের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিপিআইএম। বামপন্থী দলটি দাবি করেছে যে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাকে সংকটে ফেলছে। তারা তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারকে মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে এবং সাম্প্রদায়িক হামলা রোধ করতে আহ্বান জানিয়েছে

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সম্প্রতি সংঘটিত একাধিক ঘটনার মধ্যে চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতারি একটি বিশাল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তিনি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে, বিশেষ করে ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে আয়োজিত এক সমাবেশে জাতীয় পতাকার অবমাননা করার অভিযোগে। বিএনপি নেতা ফিরোজ খান এর পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করেন। ৩১ অক্টোবর এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চিন্ময় দাস ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় এবং তাকে ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এই গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা জানায় এবং তার মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায় কয়েক হাজার হিন্দু। বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে, যার ফলে এক আইনজীবী নিহত হন। এ ঘটনায় ৮ জন হিন্দুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিপিআইএম এই ঘটনার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, মৌলবাদী শক্তি বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে, এবং এসব হামলা প্রতিরোধে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে। তারা বলেছে, “বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের যে অবস্থা, তা উদ্বেগজনক।” সিপিআইএম আরও দাবি করেছে যে, বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখতে হবে।

সিপিআইএম তার বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলেছে, ভারতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি বাংলাদেশে ঘটে চলা পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে উস্কানিমূলক প্রচার চালাচ্ছে। সিপিআইএমের দাবি, এই ধরনের বিভেদমূলক রাজনীতি বাংলাদেশ এবং ভারত উভয় দেশেই বিপজ্জনক। তারা জানায়, “ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদ সৃষ্টি করা, এই ধরনের রাজনীতি বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য ক্ষতিকর।”

ভারতে সিপিআইএমের এই মন্তব্যের পর, বিজেপির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। বঙ্গ বিজেপির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি তরুণজ্যোতি তিওয়ারি সিপিআইএমের বক্তব্যে দ্বিচারিতা উল্লেখ করে বলেন, “বাংলাদেশে মৌলবাদী সংগঠন এবং ভারতে হিন্দুত্ববাদী শক্তি, তাদেরকে একসাথে তোলা এক ধরনের রাজনৈতিক ছলনা।” তিনি সিপিআইএমের বিরুদ্ধে এও অভিযোগ করেন যে, তারা বাংলাদেশে মৌলবাদীদের নাম নিতে সাহস পাচ্ছে না।

এদিকে, সিপিআইএমের বিবৃতি সামনে আসার পর নেটপাড়ায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। বিজেপি, সিপিআইএমের বক্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাদের মতে, সিপিআইএমের এই ধরনের দ্বিচারিতার প্রমাণ তাদের আসল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পরিষ্কার করে দেয়।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সিপিআইএম সরকারের প্রতি কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে, তবে এই ঘটনার মাধ্যমে দুটি দেশের মধ্যে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

জেলে ভরেই খান্ত হল না বাংলাদেশ, চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপের ঘোষণা

বাংলাদেশ হাইকোর্টে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবিতে করা রিট পিটিশন খারিজ হওয়ার পরও, ইসকনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, যিনি সম্প্রতি বাংলাদেশে গ্রেফতার হয়েছেন। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ১৭ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আগামী ৩০ দিনের জন্য ফ্রিজ করার ঘোষণা দিয়েছে। এই ঘটনাটি বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে, এবং প্রতিবাদও শুরু হয়েছে। (সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস)
জেলে ভরেই খান্ত হল না বাংলাদেশ, চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপের ঘোষণা

বাংলাদেশ হাইকোর্টে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবিতে করা রিট পিটিশন খারিজ হওয়ার পরও, ইসকনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, যিনি সম্প্রতি বাংলাদেশে গ্রেফতার হয়েছেন। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ১৭ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আগামী ৩০ দিনের জন্য ফ্রিজ করার ঘোষণা দিয়েছে। এই ঘটনাটি বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে, এবং প্রতিবাদও শুরু হয়েছে। (সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস)

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবিতে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন খারিজ হয়েছে, তবে এর পরেও এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ১৭ জন ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ৩০ দিনের জন্য ফ্রিজ করার ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে আছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, যিনি সম্প্রতি বাংলাদেশের পুলিশ দ্বারা গ্রেফতার হন। এছাড়া, আরও ১৬ জনের নামও এই তালিকায় রয়েছে, যাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন আগামী এক মাসের জন্য বন্ধ থাকবে।

বিএফআইইউ-এর তথ্য অনুযায়ী, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন - কার্ত্তিক চন্দ্র দে, অনিক পাল, সরোজ রায়, সুশান্ত দাস, বিশ্ব কুমার সিংহ, চণ্ডীদাস বালা, জয়দেব কর্মকার, লিপি রানী কর্মকার, সুধামা গৌর দাস, লক্ষণ কান্তি দাশ, প্রিয়তোষ দাশ, রূপন দাস, রূপন কুমার ধর, আশীষ পুরোহিত, জগদীশ চন্দ্র অধিকারী এবং সজল দাস। এদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির থেকে চাওয়া হয়েছে।

এদিকে, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ আয়োজিত এক সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, যে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন। এই অভিযোগে বিএনপি নেতা ফিরোজ খান একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে চিন্ময় দাস এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। এরপর ২৫ নভেম্বর, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি অভিযোগ ওঠে, এর মধ্যে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ তার গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করেছে এবং তার মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে কয়েক হাজার হিন্দু রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

২৬ নভেম্বর, চট্টগ্রামের আদালতের বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক বিশাল জমায়েত ঘটেছিল, যেখানে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদ করা হচ্ছিল। এই প্রতিবাদে পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে, এবং এক আইনজীবী নিহত হন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৬ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ জন হিন্দু গ্রেফতার হয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজিত করেছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অঙ্গনে এই ঘটনার প্রভাব সুস্পষ্টভাবে পড়ছে। ইসকনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর, দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে শোরগোল শুরু হয়েছে। এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক স্তরে অনেক কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে, এবং তার সঙ্গে সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডের দিকে গভীর মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

এদিকে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের ঘটনায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে। বিএফআইইউ-এর পদক্ষেপটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে, তবে এর ফলে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হতে পারে।

বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবিতে করা রিট পিটিশন খারিজ হওয়ার পর, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৭ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এ ঘটনাটি বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, এবং প্রতিবাদে নামা হাজারো হিন্দুর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামে পুলিশের লাঠিচার্জে এক আইনজীবী নিহত হন, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

বাংলাদেশ নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনতে নোটিশ সৌগত রায়ের, 'অসন্তুষ্ট' মমতা- রিপোর্ট

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রভাব এখন ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে। কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিলের পাশাপাশি, দমদমের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে আলোচনা চেয়ে মুলতুবি প্রস্তাবের নোটিশ দিয়েছেন। তবে, এই ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগতভাবে সৌগত রায়ের অবস্থানের বিরুদ্ধে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনতে নোটিশ সৌগত রায়ের, 'অসন্তুষ্ট' মমতা- রিপোর্ট

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রভাব এখন ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে। কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিলের পাশাপাশি, দমদমের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে আলোচনা চেয়ে মুলতুবি প্রস্তাবের নোটিশ দিয়েছেন। তবে, এই ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগতভাবে সৌগত রায়ের অবস্থানের বিরুদ্ধে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

কলকাতা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর ভারতেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিরা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে, দমদমের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায় বাংলাদেশ ইস্যুতে সংসদে আলোচনা চেয়ে মুলতুবি প্রস্তাবের নোটিশ দিয়েছেন। তিনি ভারতের সরকারকে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিতে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছেন।

তবে, এই উদ্যোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী, সৌগত রায়ের বিরুদ্ধে কিছুটা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “সংসদে এই বিষয়ে দলের অবস্থান নেওয়া হবে, ব্যক্তিগতভাবে কারও অবস্থানে কিছু যায় আসে না।” মমতা আরও জানান, দলের পক্ষে সংসদে সিদ্ধান্ত নেবেন দলের শীর্ষ নেতারা, যেমন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন। সৌগত রায় বাংলাদেশের সংবেদনশীল ইস্যু নিয়ে এককভাবে সংসদে মুলতুবি প্রস্তাব আনায় দল ক্ষুব্ধ হয়েছে এবং তাঁকে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট, এই দুটি সংগঠন বর্তমানে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ নামে আন্দোলন করছে। চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে এই জোটের মুখপাত্র হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে এক সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগে বিএনপি নেতা ফিরোজ খান ৩১ অক্টোবর একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেন। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এদিকে, গ্রেফতারির পর থেকে একাধিক অভিযোগ উঠেছে যে, চিন্ময় প্রভুকে কারাগারে শারীরিক এবং মানসিকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। আরও বলা হচ্ছে, তাকে কারাগারে ওষুধ দেওয়া হয়নি। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ এই গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করেছে এবং মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদী হিন্দুরা রাস্তায় নেমে আসেন।

২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির প্রতিবাদে হিন্দু সম্প্রদায়ের বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। সেই সময়ে পুলিশ তাদের উপর লাঠিচার্জ করে, এবং এক আইনজীবী নিহত হন। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তারা অত্যাধিক সহিংসতা প্রদর্শন করেছে। ওই সময় সংঘর্ষের মধ্যে ৮ জন হিন্দু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে এই ইস্যু নিয়ে মতবিরোধ প্রকাশ পেয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের দলের অবস্থান নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, যেখানে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগের থেকে দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তবে, সৌগত রায়ের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনা এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, এবং উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, যার প্রভাব ভারতেও স্পষ্টভাবে পড়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায় সংসদে বাংলাদেশ ইস্যুতে আলোচনা চেয়ে মুলতুবি প্রস্তাব দিয়েছেন, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগত উদ্যোগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এই ঘটনাটি উভয় দেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে প্রতিবাদ ও শোরগোল অব্যাহত রয়েছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

ইসকনের সাথে যুক্ত থাকায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাসপেন্ড পড়ুয়া!

বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ইসকনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সময় চট্টগ্রাম আদালতের সামনে ছিলেন। এরই মধ্যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর থেকে বাংলাদেশে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, যার মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগও উঠছে।
ইসকনের সাথে যুক্ত থাকায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাসপেন্ড পড়ুয়া!

বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ইসকনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সময় চট্টগ্রাম আদালতের সামনে ছিলেন। এরই মধ্যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর থেকে বাংলাদেশে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, যার মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগও উঠছে।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামের বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে ইসকনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে। প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, সাসপেন্ড হওয়া শিক্ষার্থী আইন বিভাগের ছাত্র এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি চট্টগ্রামের আদালতের সামনে ছিলেন যখন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম খুন হন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন যে, ওই শিক্ষার্থী ইসকনের সঙ্গে সম্পর্কিত, এবং তাঁর বিরুদ্ধে সাসপেন্ড করার দাবি তুলেছিলেন তারা। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার সালাউদ্দিন শাহরিয়ার জানান, শিক্ষার্থীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নিয়ম অনুযায়ী।

এদিকে, চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম উত্তাল হয়ে ওঠে। এ সময় বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে কট্টরপন্থী সংগঠনগুলো আন্দোলনে নামে। জুলাই মাসে বিল্পবের ছাত্র নেতারা ইসকনের বিরুদ্ধে সরব হন এবং সারজিস আলম নামে এক ব্যক্তিও ইসকন এবং হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছেন। এসব পরিস্থিতির মধ্যে, ওই শিক্ষার্থীকে সাসপেন্ড করার দাবি উঠেছিল।

এর আগে, বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। তাঁর গ্রেফতারির পর, পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট একত্রে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ গঠন করে আন্দোলন করছে। এই আন্দোলনের মুখপাত্র করা হয়েছে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে, যিনি গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে একটি সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন। ওই সমাবেশে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই অভিযোগে বিএনপি নেতা ফিরোজ খান গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেন। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ নভেম্বর ঢাকা পুলিশ গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে এবং তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যায়।

চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেফতারির পর, তাঁর জন্য সহানুভূতি এবং প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তবে, অভিযোগ উঠেছে যে, এই আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারী পক্ষ থেকে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। অভিযোগ, গ্রেফতারির পর চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে কারাগারে ওষুধ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি, এবং তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে।

এদিকে, ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির প্রতিবাদে হিন্দু সম্প্রদায়ের বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। ওই সময় পুলিশ তাদের উপর লাঠিচার্জ করে, যার ফলে এক আইনজীবী নিহত হন। এই ঘটনায় পুলিশ ৮ জন হিন্দু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।

এদিকে, আন্দোলনকারীরা দাবি করছে যে, পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে অত্যাচার চালিয়েছে এবং সরকার সমর্থিত গোষ্ঠীগুলি সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। তবে, পুলিশ পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, লাঠিচার্জ একান্তই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ছিল এবং এর সাথে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বৈরী মনোভাবের কোনও সম্পর্ক নেই।

বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। একদিকে যেমন আন্দোলনকারীরা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, অন্যদিকে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর সহিংসতা চালানোর অভিযোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছে না।

চট্টগ্রামে ইসকনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, যা চট্টগ্রামে চলমান উত্তেজনা এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রেক্ষাপটে ঘটেছে। এই ঘটনায় বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় উত্তেজিত এবং বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে, এবং পরিস্থিতি আরও অস্থির হয়ে উঠছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

দূরত্ব নয়, নয়া বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণের আন্দোলনকে সমর্থনের বার্তা বাংলাদেশ ইসকনের

বাংলাদেশের ইসকন কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে যে, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস, সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস এবং চট্টগ্রাম পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ইসকন স্পষ্ট জানায় যে, চিন্ময় কৃষ্ণ এখন আর ইসকনের সঙ্গে যুক্ত নন, এবং তাঁর বক্তব্য পুরোপুরি ব্যক্তিগত। এর পরই শুরু হয় বিতর্ক, তবে ইসকন তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণের আন্দোলন এবং তার প্রচেষ্টাকে তারা সমর্থন করে, কিন্তু তিনি আর তাদের সদস্য নন।
দূরত্ব নয়, নয়া বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণের আন্দোলনকে সমর্থনের বার্তা বাংলাদেশ ইসকনের

বাংলাদেশের ইসকন কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে যে, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস, সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস এবং চট্টগ্রাম পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ইসকন স্পষ্ট জানায় যে, চিন্ময় কৃষ্ণ এখন আর ইসকনের সঙ্গে যুক্ত নন, এবং তাঁর বক্তব্য পুরোপুরি ব্যক্তিগত। এর পরই শুরু হয় বিতর্ক, তবে ইসকন তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণের আন্দোলন এবং তার প্রচেষ্টাকে তারা সমর্থন করে, কিন্তু তিনি আর তাদের সদস্য নন।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইসকন জানায়, কয়েক মাস আগে তাদের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য ইসকনের পক্ষ থেকে প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস, সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস এবং চট্টগ্রাম পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে তাদের সাংগঠনিক পদ-পদবীসহ যাবতীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

ইসকন আরও জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ ইসকনের মুখপাত্র নয় এবং তাঁর বক্তব্য একান্তই ব্যক্তিগত। ইসকন পরিষ্কারভাবে জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ এখন আর তাদের সাথে যুক্ত নন এবং বাংলাদেশের হিন্দুদের আন্দোলনের সঙ্গে ইসকন কোনভাবে সম্পর্কিত নয়। ইসকনের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আলোচনা শুরু হয় যে, ইসকন চিন্ময় কৃষ্ণের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে এবং নিষিদ্ধ হওয়ার ভয়ে হিন্দুদের আন্দোলন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে চাচ্ছে।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবারের ঘোষণার পর, বাংলাদেশের হিন্দু সংগঠনগুলো এবং চিন্ময় কৃষ্ণের অনুগামীদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। শুক্রবার সকালে, ইসকন নতুন একটি বিবৃতি দেয় যাতে তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে। ইসকনের পক্ষ থেকে বলা হয়, “চিন্ময় কৃষ্ণের আন্দোলন এবং বাংলাদেশে হিন্দুদের ধর্মীয় স্থানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁর প্রচেষ্টাকে আমরা সমর্থন করি। তবে, আমরা শুধু স্পষ্ট করেছি যে, চিন্ময় কৃষ্ণ এখন ইসকনের সদস্য নন এবং তিনি আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেন না।”

বাংলাদেশে চলতি সপ্তাহে চিন্ময় কৃষ্ণের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে সনাতনীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। জানা গেছে, গত পাঁচ দিন ধরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তার করে রেখেছে, এবং তার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা চলছে। একদিকে যেমন, চিন্ময় কৃষ্ণের অনুগামীরা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে, অন্যদিকে সরকার পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠছে যে, কিছু সরকারি শক্তির মদতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে ইসকন আবারও তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানায় যে, চিন্ময় কৃষ্ণের আন্দোলন বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মীয় স্থানগুলো এবং হিন্দুদের নিরাপত্তার জন্য অব্যাহত রয়েছে, এবং ইসকন এই আন্দোলনকে সমর্থন করে। কিন্তু ইসকন জানিয়ে দিয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ এখন তাদের সদস্য নন, এবং তিনি বাংলাদেশে ইসকনের প্রতিনিধিত্ব করছেন না।

ইসকন বাংলাদেশের তরফ থেকে বলা হয়, এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পরই তাদের অবস্থান পরিষ্কার করা হয়েছিল এবং তা শুধু সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য। তবে, ইসকন দাবি করেছে যে, তাদের সিদ্ধান্তের পরও চিন্ময় কৃষ্ণের আন্দোলন এবং তার প্রচেষ্টাকে তারা সমর্থন করছে, এবং এটা কোনওভাবেই ইসকনের বিরুদ্ধে না।

অন্যদিকে, সরকারী পক্ষের তরফ থেকে চিন্ময় কৃষ্ণের আন্দোলন এবং তাঁর গ্রেপ্তারির পর হিন্দুদের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাওয়ার অভিযোগ উঠছে। এমনকি, একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, হিন্দুদের উপর যে নিপীড়ন চলছে তা সরকারের কাজের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই এবং এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

ইসকনের এই সিদ্ধান্ত এবং পরবর্তী প্রতিক্রিয়া নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা চলছে, এবং বিভিন্ন সংগঠন এবং জনগণের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ছে। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ার মধ্যে এই অবস্থা আরও সংকটপূর্ণ হয়ে উঠছে, এবং আগামী দিনে কীভাবে পরিস্থিতি উন্নতি হবে তা নিয়ে অস্থিরতা চলছে।

বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ইসকনের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে। এর পরবর্তী সময়ে, চিন্ময় কৃষ্ণের আন্দোলন ও তার গ্রেপ্তার নিয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, এবং ইসকন তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। তবে, আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি কীভাবে এগিয়ে যাবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েই গেছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

ভিওএ এর ভুয়া জরিপঃ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় 'আগের তুলনায় বেশি নিরাপত্তা (?) পাচ্ছে'

ভিওএ এর ভুয়া জরিপ। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকার এক জরিপে দেখা গেছে যে, অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনায় সংখ্যালঘুদের জন্য বেশি নিরাপত্তা প্রদান করছে। তবে, মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে কিছু পার্থক্য রয়েছে। বিশেষ করে, হিন্দু সম্প্রদায় এখনও নিরাপত্তার অভাব অনুভব করছে, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনও লক্ষণীয়।
ভিওএ এর ভুয়া জরিপঃ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় 'আগের তুলনায় বেশি নিরাপত্তা (?) পাচ্ছে'

ভিওএ এর ভুয়া জরিপ। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকার এক জরিপে দেখা গেছে যে, অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনায় সংখ্যালঘুদের জন্য বেশি নিরাপত্তা প্রদান করছে। তবে, মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে কিছু পার্থক্য রয়েছে। বিশেষ করে, হিন্দু সম্প্রদায় এখনও নিরাপত্তার অভাব অনুভব করছে, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনও লক্ষণীয়।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: অক্টোবর মাসের শেষের দিকে ভয়েস অফ আমেরিকার পরিচালিত এক জরিপে ৬৪.১ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে ধর্মীয় এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা আগের তুলনায় বেশি দিচ্ছে। ১৫.৩ শতাংশ মনে করেন, বর্তমান সরকারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, এবং ১৭.৯ শতাংশের মতে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি আগের মতোই রয়েছে। জরিপে ১,০০০ জনের মতামত নেওয়া হয়, যার মধ্যে ৯২.৭ শতাংশ মুসলিম ছিলেন।

বিশেষত, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের সংখ্যালঘু জনগণের ওপর সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যায়। বিভিন্ন এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা এবং ধর্মীয় স্থানগুলোতে হামলা হয়। মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ শুধু রাজনৈতিক কারণে নয়, বরং তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের জন্যও হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় কোনো সরকারই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। তবে, পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি পেয়েছে যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষ সংখ্যালঘুদের উপাসনাস্থল রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এসেছে।

বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধারণা
তবে, জরিপে মুসলিম এবং অমুসলিমদের মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ে কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। মুসলিমদের মধ্যে ১৩.৯ শতাংশ মনে করেন পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে, কিন্তু সংখ্যালঘুদের মধ্যে ৩৩.৯ শতাংশ মনে করেন তাদের নিরাপত্তা আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে।

ঢাকার বাসিন্দা জয়তী সরকার বলেন, তিনি এখন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “আগের সরকারের সময় আমি রাতে নিরাপদে চলাফেরা করতাম, কিন্তু এখন রাতে বাড়ি ফেরার সময় ভয় পাই।” একইভাবে, বেসরকারি সংস্থার কর্মী হীরেন পণ্ডিতও মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হলেও, এখনও অনেক ভয় রয়েছে।

অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক উদ্বেগ
বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং লুটপাটের নিন্দা করেছেন। তবে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব হামলাকে “বিচ্ছিন্ন ঘটনা” হিসেবে আখ্যায়িত করে জানিয়েছে যে, সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা অত্যন্ত অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

সংখ্যালঘুদের জন্য আশার আলোকবর্তিকা
অবশ্য, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মধ্যে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। জয়তী সরকার, যিনি আতঙ্কিত হলেও এক ধরনের স্বস্তি অনুভব করছেন, বলেছেন যে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হিন্দুদের জমি বিক্রি করার চাপ ছিল, কিন্তু এখন সে চিত্র পরিবর্তিত হয়েছে।

এছাড়া, গ্রামের এলাকায় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা কিছুটা উন্নতি করেছে বলে হীরেন পণ্ডিত মনে করেন। তবে, তিনি নিজেও সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত হতে পারেননি।

সামগ্রিক চিত্র
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ এখনও বিরাজমান। যদিও পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে এগিয়েছে, তবুও বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ অব্যাহত রয়েছে। মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগামী ছয় থেকে নয় মাসে সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, তা গুরুত্বপূর্ণ হবে। সরকারের নীতিমালা ও কার্যক্রম সংখ্যালঘুদের প্রতি তাদের আস্থা ফেরাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

বাংলাদেশ ইস্যুতে বাইডেন-ট্রাম্পকে ভারতীয় আমেরিকান সংস্থার চিঠি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর একাধিক হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়েছে ভারতীয়-আমেরিকান সংগঠন ‘ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়ান ডায়াসপোরা স্টাডিজ’ (এফআইআইডিএস)। সংগঠনের সভাপতি খান্দেরাও কান্দ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুই নেতাকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ইস্যুতে বাইডেন-ট্রাম্পকে ভারতীয় আমেরিকান সংস্থার চিঠি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর একাধিক হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়েছে ভারতীয়-আমেরিকান সংগঠন ‘ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়ান ডায়াসপোরা স্টাডিজ’ (এফআইআইডিএস)। সংগঠনের সভাপতি খান্দেরাও কান্দ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুই নেতাকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান হামলা এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে ভারতের আমেরিকান সংগঠন ‘ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়ান ডায়াসপোরা স্টাডিজ’ (এফআইআইডিএস) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পৃথক চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধে দ্রুত হস্তক্ষেপ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

এফআইআইডিএসের সভাপতি খান্দেরাও কান্দ তাদের চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অন্তত ২০০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলা গুলো ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে শুরু হয় এবং এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। কান্দ আরও বলেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবস্থা পুনরুদ্ধার এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং জাতিসংঘের জরুরি পদক্ষেপ নেয়া উচিত।”

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লেখা চিঠিতে খান্দেরাও কান্দ উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষা একটি আন্তর্জাতিক জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।” তিনি বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

অন্যদিকে, জো বাইডেনকে পাঠানো চিঠিতে কান্দ উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশের অগ্রগতি তার সব নাগরিকের অধিকার রক্ষার ওপর নির্ভর করে। তিনি বাইডেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বিশ্বাস করেন যে, বাইডেনের নেতৃত্বে এই মূল্যবোধগুলো প্রতিষ্ঠিত হবে এবং যারা নিপীড়ন ও বাস্তুচ্যুতি মুখোমুখি হচ্ছেন তাদের জন্য পুনরুদ্ধারের আশা তৈরি হবে।

এফআইআইডিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা সম্প্রতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, ওই সময় থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে। হামলার ঘটনাগুলির মধ্যে মন্দির ভাঙচুর, সংখ্যালঘুদের ব্যবসা ও বাড়িঘরে হামলা এবং তাদের উপর শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

খান্দেরাও কান্দ আরও বলেছেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনরুদ্ধার এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্রুত পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

সংখ্যালঘু ‘ভোট ব্যাংক’ রাজনীতির সমাধান কোন পথে

ভারত ও বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কের ইতিহাস দীর্ঘ এবং জটিল। ব্রিটিশ উপনিবেশকালে শুরু হওয়া ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতি একদিকে যেমন জাতিগত বিভাজন সৃষ্টি করেছিল, অন্যদিকে একে অপরকে অপবিত্র মনে করার মনোভাবও ছড়িয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরিস্থিতি এখনও পরিবর্তন হয়নি, বরং রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মীয় ভোট ব্যাংক ব্যবহারের ঘটনা চলছেই। এই সংঘর্ষের পেছনে একাধিক রাজনৈতিক ইস্যু ও জনমত বিভাজনের দোষ রয়েছে, যা সমাজের মধ্যে বিরোধিতার সৃষ্টি করে।
সংখ্যালঘু ‘ভোট ব্যাংক’ রাজনীতির সমাধান কোন পথে

ভারত ও বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কের ইতিহাস দীর্ঘ এবং জটিল। ব্রিটিশ উপনিবেশকালে শুরু হওয়া ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতি একদিকে যেমন জাতিগত বিভাজন সৃষ্টি করেছিল, অন্যদিকে একে অপরকে অপবিত্র মনে করার মনোভাবও ছড়িয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরিস্থিতি এখনও পরিবর্তন হয়নি, বরং রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মীয় ভোট ব্যাংক ব্যবহারের ঘটনা চলছেই। এই সংঘর্ষের পেছনে একাধিক রাজনৈতিক ইস্যু ও জনমত বিভাজনের দোষ রয়েছে, যা সমাজের মধ্যে বিরোধিতার সৃষ্টি করে।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: এ অঞ্চলের ইতিহাসে হিন্দু-মুসলমানের ঝগড়া এবং সংঘর্ষের পটভূমি অনেক পুরনো। অনেকেই মনে করেন ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীরা ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতি প্রয়োগ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষতি করেছে। তবে কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, ব্রিটিশরা ভারতকে একত্রিত করে, কিন্তু যাওয়ার সময় তারা দেশটি ভাগ করে দেয়। বাংলায় হিন্দু-মুসলমানের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পেছনে দেশের এই বিভাজন ছিল প্রধান কারণ।

এটিকে আরো ভালোভাবে বুঝতে চাইলে, আমাদের অতীতে ফিরে তাকাতে হয়। এগারো শতকে, ভারততত্ত্ববিদ আল বিরুনির চোখে, মুসলমানরা হিন্দুদের সম্পর্কে কিছুটা বৈরী মনোভাব পোষণ করত। তিনি বলেন, মুসলমানরা হিন্দুদের পোশাক, জীবনযাত্রা এবং নিয়মকানুন সম্পর্কে তাদের সন্তানদের বাজে ধারণা দিত এবং তাদের ধর্মীয় এবং সামাজিক অভ্যাসকে অপবিত্র মনে করত। এতে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগের সুযোগ সংকীর্ণ হয়ে পড়েছিল, যা পরবর্তীতে বিশাল পার্থক্য তৈরি করেছিল।

ভারত ভাগ হওয়ার পর পাকিস্তান মুসলমানদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ভারত হিন্দুদের রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হয়। যদিও ভারতকে সেক্যুলার রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করা হয়েছিল, বাস্তবে তা হয়নি। দেশভাগের পর, ভারত বা পাকিস্তানে কোথাও না কোথাও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটেছিল, যা কখনও থামেনি।

১৯৫৪ সালে পাকিস্তানে ধর্মীয় এবং জাতিগত বিভাজন ছিল। মুসলমানরা মুসলমানদের ভোট দিয়েছিল এবং হিন্দুরা হিন্দুদের ভোট দিয়েছিল। কিন্তু, ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয় এবং অমুসলিমদের জন্য দলের দরজা খোলা হয়। এই সময়েই যুক্ত নির্বাচনব্যবস্থা চালু করা হয়, যা ভারতে মুসলমান ও হিন্দুদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের পরিবর্তন এনে দেয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, ১৯৭১ সালে মুসলমানদের রাষ্ট্র পাকিস্তান ভেঙে সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার সংযোজন ছিল, কিন্তু তা কখনই বাস্তবে পরিণত হয়নি। আওয়ামী লীগ, যদিও সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা রেখেছে, কিন্তু তাদের কার্যক্রম কখনও একেবারে নিরপেক্ষ ছিল না। হিন্দুদেরকে ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা চলে।

এরপর ১৯৯৬ সালে বিএনপি রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে গিয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে গ্রহণ করে এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতা আরও বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশে একাধিক ঘটনায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উসকানি দেওয়ার ঘটনা ঘটে, যেখানে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা হিন্দুদের ওপর আক্রমণ চালায়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর, দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বাড়ে। রামু, নাসিরনগর, সুনামগঞ্জ, গোবিন্দগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী এবং অন্যান্য জায়গায় মন্দিরে হামলা এবং প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকেরা জড়িত ছিল এবং তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বার্তা দিতে চায় যে দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদের কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশের রাজনীতির প্রধান দুটি দল, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি, নিজেদের ভোট ব্যাংক কায়েম রাখতে ধর্মীয় অনুভূতিতে সুড়সুড়ি দিয়ে ভোট আদায় করেছে। আওয়ামী লীগ হিন্দুদের প্রতি এক ধরণের নির্ভরশীলতা খুঁজে পেয়েছে, আর বিএনপি মুসলমান ভোটের দিকে নজর দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে, একে অপরকে অপব্যবহার করা হয় এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ভোট ব্যাংক ইস্যু নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সামাজিক অবস্থা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতায় আসা-যাওয়ার মধ্যে, মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা চলছে। এভাবে, দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং জনগণের মধ্যে অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।

তবে, ইতিহাসের এই নৃশংসতা এবং বর্তমানের এই সংঘর্ষের মধ্যে, কবি কাজী নজরুল ইসলামের কথাগুলি স্মরণীয় হয়ে থাকে, যেখানে তিনি লিখেছিলেন: “হিন্দু না ওরা মুসলিম?"—এটি প্রশ্ন করে যে, মানুষ আসলে জাতি-ধর্মের বাইরেও একই মানবিক মূল্য নিয়ে এখানে বসবাস করে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

চিন্ময়কৃষ্ণের সঙ্গে দূরত্ব নয়, তাঁকে সমর্থন করে ইসকন, নতুন বার্তা ইসকনের

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে নিয়ে ইসকনের অবস্থান এক দিনের ব্যবধানে বদলেছে। বৃহস্পতিবার ইসকন বাংলাদেশ জানায়, চিন্ময়কৃষ্ণ তাদের প্রতিনিধি নন। তবে শুক্রবার তারা তাঁর প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানিয়ে নতুন বিবৃতি দেয়। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতার ঘিরে দেশে উত্তেজনা চলছে। চট্টগ্রাম ও রংপুরে বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চাওয়া মামলাও হাই কোর্টে খারিজ হয়েছে।
চিন্ময়কৃষ্ণের সঙ্গে দূরত্ব নয়, তাঁকে সমর্থন করে ইসকন, নতুন বার্তা ইসকনের

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে নিয়ে ইসকনের অবস্থান এক দিনের ব্যবধানে বদলেছে। বৃহস্পতিবার ইসকন বাংলাদেশ জানায়, চিন্ময়কৃষ্ণ তাদের প্রতিনিধি নন। তবে শুক্রবার তারা তাঁর প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানিয়ে নতুন বিবৃতি দেয়। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতার ঘিরে দেশে উত্তেজনা চলছে। চট্টগ্রাম ও রংপুরে বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চাওয়া মামলাও হাই কোর্টে খারিজ হয়েছে।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে নিয়ে এক দিনের ব্যবধানে অবস্থান বদল করেছে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)। বৃহস্পতিবার ইসকন বাংলাদেশ জানিয়েছিল, চিন্ময়কৃষ্ণ তাদের সদস্য বা প্রতিনিধি নন, এবং তাঁর কোনো কাজের দায়ভার ইসকন নেবে না। তবে শুক্রবার সকালে নতুন এক বিবৃতিতে ইসকন জানায়, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের প্রচেষ্টা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে তাদের সমর্থন রয়েছে।

ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘সংগঠনের শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে মাস কয়েক আগে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসসহ কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাই তাঁর কোনো কর্মকাণ্ডের দায় ইসকনের নয়।’’ তবে শুক্রবারের বিবৃতিতে জানানো হয়, চিন্ময়কৃষ্ণের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে ইসকন, যদিও তিনি সংগঠনের প্রতিনিধি নন।

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গত সোমবার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। চট্টগ্রামের এক বিএনপি নেতা তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, চিন্ময়কৃষ্ণ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের সমাবেশে নেতৃত্ব দিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ করেছেন। আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।

চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারের পর থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। চট্টগ্রাম ও রংপুরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। চট্টগ্রামে সংঘর্ষে এক আইনজীবী নিহত হন। এর মধ্যেই ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে হাই কোর্টে একটি মামলা হয়। আদালতে বাংলাদেশ সরকার ইসকনকে ‘ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন’ বলে উল্লেখ করে। তবে হাই কোর্টে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।

চিন্ময়কৃষ্ণ দাস সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় তাঁর নেতৃত্বে আন্দোলন চলছিল। চট্টগ্রামের সমাবেশে তাঁর ডাকে হাজার হাজার সংখ্যালঘু অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নয়াদিল্লি ইতিমধ্যেই চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার এবং সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ব্রিটেনের সংসদেও এ প্রসঙ্গ উঠেছে।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর একাধিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর এবং লুটপাটের মতো ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। ইউনূস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরিস্থিতি এখনো জটিল রয়ে গেছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

চিন্ময়কৃষ্ণের প্রসঙ্গ ব্রিটেনের সংসদেও, বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের নিন্দা, উদ্বেগপ্রকাশ

বাংলাদেশে ইসকনের সঙ্গে যুক্ত চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে ব্রিটেনের সংসদে আলোচনা হয়েছে। বিরোধী সাংসদরা সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করেন এবং ব্রিটিশ সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। ইসকনের পক্ষে সুনির্দিষ্ট অবস্থান জানিয়ে সন্ন্যাসীর মুক্তির দাবি করা হয়েছে।
চিন্ময়কৃষ্ণের প্রসঙ্গ ব্রিটেনের সংসদেও, বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের নিন্দা, উদ্বেগপ্রকাশ

বাংলাদেশে ইসকনের সঙ্গে যুক্ত চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে ব্রিটেনের সংসদে আলোচনা হয়েছে। বিরোধী সাংসদরা সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করেন এবং ব্রিটিশ সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। ইসকনের পক্ষে সুনির্দিষ্ট অবস্থান জানিয়ে সন্ন্যাসীর মুক্তির দাবি করা হয়েছে।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নেতা এবং আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সঙ্গে যুক্ত চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার প্রসঙ্গ ব্রিটেনের সংসদেও উঠে এসেছে। বিরোধী কনজ়ারভেটিভ দলের সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যান এই বিষয়টি সংসদে তুলে ধরে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারের অভিযোগের প্রতি ব্রিটিশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বব ব্ল্যাকম্যান বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর এই ধরনের অত্যাচার মেনে নেওয়া যায় না।’’ তিনি উল্লেখ করেন, ব্রিটেনে ইসকন পরিচালিত সবচেয়ে বড় হিন্দু মন্দির রয়েছে, এবং এর সঙ্গে যুক্ত এক ধর্মীয় নেতা বাংলাদেশে গ্রেফতার হয়েছেন। এ ঘটনাকে ঘিরে তিনি ব্রিটিশ সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

সংসদে আরও আলোচিত হয় যে, বাংলাদেশের হাই কোর্টে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার জন্য একটি মামলা হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশ সরকার ইসকনকে ‘ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন’ বলে উল্লেখ করেছে। তবে ওই মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর ইসকন জানায়, চিন্ময়কৃষ্ণ দাস তাদের প্রতিনিধি নন। কিন্তু পরে তারা তাঁর পাশে থাকার বার্তা দেয়।

ব্রিটিশ সংসদের আলোচনায় বিরোধী সাংসদরা ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। যদিও ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

বাংলাদেশে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গত সোমবার গ্রেফতার করা হয়। তাঁর জামিন আবেদন চট্টগ্রামের আদালত খারিজ করে দেয়। এরপর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। বিশেষত চট্টগ্রাম এবং রংপুর এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ইসকনের তরফে গত বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছিল, চিন্ময়কৃষ্ণ দাস তাদের প্রতিনিধি নন। তবে শুক্রবার তারা নতুন করে জানায়, তারা এই ধর্মীয় নেতার পাশে রয়েছে। এর মধ্যেই ভারতে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ক্রমশ চাপ বাড়ছে। ব্রিটিশ সংসদের এই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি আরও আলোচিত হতে শুরু করেছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণসহ ইসকনসংশ্লিষ্ট ১৭ জনের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ইসকনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৭ জনের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন ৩০ দিনের জন্য স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর আওতায় দেওয়া এই নির্দেশনায় তাঁদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক হিসাবের বিস্তারিত তথ্য আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণসহ ইসকনসংশ্লিষ্ট ১৭ জনের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ইসকনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৭ জনের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন ৩০ দিনের জন্য স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর আওতায় দেওয়া এই নির্দেশনায় তাঁদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক হিসাবের বিস্তারিত তথ্য আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১৭ জনের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করার নির্দেশনা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশনা দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো হয়।

বিএফআইইউ জানায়, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ২৩(১)(গ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাঁদের নামে লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ইসকনের মুখপাত্র চন্দন কুমার ধর ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এবং আরও ১৬ জন।

এই সিদ্ধান্তের ফলে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ও মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে কোনো লেনদেন করা যাবে না। তবে আমদানি ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের হিসাব এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।

বিএফআইইউ তাদের নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করেছে, স্থগিতকৃত ব্যাংক হিসাবগুলোর সাথে সম্পর্কিত সব ধরনের তথ্য, যেমন—হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ফরম, এবং শুরু থেকে হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে জমা দিতে হবে।

লেনদেন স্থগিত করা ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন:

  • চন্দন কুমার ধর ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস
  • কার্ত্তিক চন্দ্র দে
  • অনিক পাল
  • সরোজ রায়
  • সুশান্ত দাস
  • বিশ্ব কুমার সিংহ
  • চণ্ডীদাস বালা
  • জয়দেব কর্মকার
  • লিপি রানী কর্মকার
  • সুধামা গৌর দাস
  • লক্ষণ কান্তি দাশ
  • প্রিয়তোষ দাশ
  • রূপন দাস
  • রূপন কুমার ধর
  • আশীষ পুরোহিত
  • জগদীশ চন্দ্র অধিকারী
  • সজল দাস

এই পদক্ষেপের ফলে ইসকন সংশ্লিষ্ট এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের লেনদেন কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। বিএফআইইউর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া এবং তদন্তের স্বার্থে নেওয়া হয়েছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

‘হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে’ বাংলাদেশকে জোরালো বার্তা ভারতের,সংসদে মুখ খুলল মোদী সরকার

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশের সরকারকে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দু মন্দিরে হামলা, দেবদেবীর অপবিত্রতা, এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতীয় সরকার এই বিষয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারকে তাদের নাগরিকদের, বিশেষত সংখ্যালঘুদের, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছে।
‘হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে’ বাংলাদেশকে জোরালো বার্তা ভারতের,সংসদে মুখ খুলল মোদী সরকার

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশের সরকারকে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দু মন্দিরে হামলা, দেবদেবীর অপবিত্রতা, এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতীয় সরকার এই বিষয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারকে তাদের নাগরিকদের, বিশেষত সংখ্যালঘুদের, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছে।

নয়াদিল্লী, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশে হিন্দু মন্দিরে হামলা, দেবদেবীর অপবিত্রতা, এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা বেড়েছে, যা ভারতের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।

রাজ্যসভায় কীর্তিবর্ধন সিং বলেন, “গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে বিভিন্ন হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঢাকার তাঁতিবাজারে মণ্ডপে হামলা, এবং ২০২৪ সালের দুর্গাপুজোর সময় সাতখিরার যশরেশ্বরী কালী মন্দিরেও ঘটনা ঘটেছে।” তিনি বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশকে আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা তাদের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, বিশেষত হিন্দুদের এবং তাদের ধর্মীয় স্থানগুলোর সুরক্ষা প্রদান করে।

এদিকে, বাংলাদেশে বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার শাসন করছে, যার প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুস। ইউনুস সরকারের আমলে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর একাধিক হামলার ঘটনা ঘটে। একদিকে, ঢাকার তাঁতিবাজারে দুর্গাপুজোর মণ্ডপে বোমা হামলার চেষ্টা হয়, যদিও তাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, কিন্তু তা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য বড় ধরনের আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।

অপরদিকে, সদ্য বাংলাদেশে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়, যা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতারূপে পরিচিত, এবং তাঁর গ্রেফতারির প্রতিবাদে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় রাস্তায় নেমে মিছিল ও প্রতিবাদ শুরু করেছে।

এ ধরনের হামলা এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে ভারতীয় সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকারকে তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। কীর্তিবর্ধন সিং আরও বলেন, “বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে যে, তারা যেন হিন্দুদের এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, যাতে তাদের জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে আসে।”

বাংলাদেশে এই ধরনের হামলার ঘটনা নতুন নয়। কিছু দিন আগেই, বাংলাদেশের যশরেশ্বরী কালী মন্দিরের মুকুট চুরি হয়ে যায়। এই মন্দির উদ্বোধন করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২১ সালে, যা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিশেষ ঘটনা ছিল।

এছাড়া, চলতি বছরেও বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর সময় একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষত, ঢাকার তাঁতিবাজারে মণ্ডপে হামলা চালানো হয়, যা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই ঘটনার পর, বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে হামলা এবং তাদের ধর্মীয় স্থানগুলির প্রতি সহিংসতা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।

ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে যে, তারা যেন অবিলম্বে বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং তাদের বিরুদ্ধে হওয়া সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ করে দেয়। ভারতীয় সরকারের এই আহ্বান বাংলাদেশের সরকারের প্রতি একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে এসেছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় আরও বেশি ক্ষোভ এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নেমে মিছিল করে এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। এই ঘটনার পর, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক এবং অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে, এবং ভারতের পক্ষ থেকেও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। তবে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবে তা স্পষ্ট নয়, এবং ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

‘আতঙ্কবাদীরা বাংলাদেশ চালাচ্ছে’ হিন্দুদের উপর হামলা নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলীপের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন। ইসকনের প্রাক্তন সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবাদে উত্তাল বাংলাদেশ, যা নিয়ে এবার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। পূর্ব বর্ধমানে এক সভায় তিনি বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। (সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস)
‘আতঙ্কবাদীরা বাংলাদেশ চালাচ্ছে’ হিন্দুদের উপর হামলা নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলীপের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন। ইসকনের প্রাক্তন সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবাদে উত্তাল বাংলাদেশ, যা নিয়ে এবার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। পূর্ব বর্ধমানে এক সভায় তিনি বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। (সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস)

কলকাতা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: ইসকনের প্রাক্তন সন্ন্যাসী এবং চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। অভিযোগ উঠেছে, এই ঘটনার পর থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে বিজেপির একটি সদস্যপদ গ্রহণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সময় দিলীপ ঘোষ বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে, খুন করা হচ্ছে। সারা বিশ্ব এটি দেখছে। তবে আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকব না।”

দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, “বাংলাদেশে এখন কোনও সরকার নেই, সন্ত্রাসবাদীরা দেশ চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাংলাদেশের অবস্থাও আফগানিস্তানের মতো হয়ে যাবে।”

দিলীপের মতে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের পূর্বপুরুষের জমিতে বসবাস করছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেও তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। কিন্তু, মৌলবাদীরা সুযোগ পেলেই তাঁদের উপর নির্যাতন চালিয়ে জমি-জমা দখল করছে।

বক্তব্যে দিলীপ ঘোষ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার আমলে সংখ্যালঘুরা সুরক্ষা পেয়েছিল। কিন্তু তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।”

সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের পাশাপাশি বিজেপি নেতা অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও অত্যাচারের অভিযোগ তোলেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসের সমালোচনা করে দিলীপ বলেন, “উগ্রপন্থীরা প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি লুট করেছিল। এখন তারাই দেশ চালাচ্ছে। আর একজন আছেন ৮৪ বছরের বৃদ্ধ, যিনি কোনও কিছু দেখতেও পান না, বুঝতেও পারেন না। তিনি আসলে কাদের উপদেষ্টা, তা বোঝা মুশকিল।”

দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, “হিন্দুদের উপর অত্যাচার হবে আর আমরা চুপ করে বসে থাকব, তা কখনওই হবে না।” তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গেও মহিলাদের উপর হামলা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুপ থাকেন।”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বিষয়টি দুই বাংলার রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছে। ভারতের বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

ইউনুস সরকারকে হুঁশিয়ারি কলকাতার সনাতনীদের

কলকাতায় বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসী শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণদাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার শিয়ালদা স্টেশন থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি বাংলাদেশের ডেপুটি হাই-কমিশন পর্যন্ত পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বড় আন্দোলনের হুমকি দেয়। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতারির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যেখানে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ইউনুস সরকারকে হুঁশিয়ারি কলকাতার সনাতনীদের

কলকাতায় বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসী শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণদাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার শিয়ালদা স্টেশন থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি বাংলাদেশের ডেপুটি হাই-কমিশন পর্যন্ত পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বড় আন্দোলনের হুমকি দেয়। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতারির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যেখানে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

কলকাতা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: কলকাতার শিয়ালদা স্টেশন থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে শুরু হওয়া একটি বিক্ষোভ মিছিল তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। মিছিলটি বাংলাদেশের ডেপুটি হাই-কমিশন পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল, তবে বেকবাগানের কাছে পৌঁছানোর পর পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ‘পুলিশ দূর হটো’ এবং ‘হায়, হায়’ স্লোগান উঠতে থাকে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় এক পুলিশ কর্মকর্তার মাথা ফেটে যায়, যার ফলে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় পরে পাঁচজনকে বাংলাদেশের ডেপুটি হাই-কমিশনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। তারা চিন্ময় কৃষ্ণদাসের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। মিছিলে অংশ নেওয়া কয়েকজন ব্যক্তির বক্তব্য ছিল, “বাংলাদেশ যদি নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন না করে, তাহলে আরও বড় আন্দোলন হবে। আমরা রাস্তায় নামব।” আরেক ব্যক্তি বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর যে অত্যাচার হচ্ছে এবং চিন্ময় কৃষ্ণদাসকে যে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।”

এক আরেক প্রতিবাদী অভিযোগ করেন, “বাংলাদেশে বরাবরই হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হয়ে এসেছে, তবে মহম্মদ ইউনুসের সরকারের ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এমনকি ছোট শিশুদের সামনে তাদের মায়েদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। চিন্ময় কৃষ্ণদাসকে গ্রেফতার করে অত্যাচার চালানো হচ্ছে।”

শুধু কলকাতা নয়, এই আন্দোলন পুরুলিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে পুরুলিয়া রেল স্টেশন থেকে একটি মিছিল শুরু হয়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। ‘হিন্দু সচেতনতা মঞ্চ’-এর সদস্যরা দাবি করেন যে ভারত সরকারকে অবিলম্বে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। তারা চিন্ময় কৃষ্ণদাসের মুক্তির জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ইতিমধ্যেই চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতারি এবং জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মন্ত্রক জানায়, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। বাড়ি ও ব্যবসার জায়গায় হামলা হচ্ছে, মন্দিরে ভাঙচুর হচ্ছে এবং চুরি করা হচ্ছে।” তারা আরও বলেছে, “এই সমস্ত ঘটনায় ভারতের জনগণের মধ্যে গভীর অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারকে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।”

মিছিল থেকে সনাতনীরা জানিয়ে দেয়, “বাংলাদেশ যদি তাদের অবস্থান বদল না করে, তাহলে আরও বড় আন্দোলন হবে। চিন্ময় কৃষ্ণদাসের মুক্তির দাবি তোলা অব্যাহত থাকবে। যদি বাংলাদেশ সরকার হিন্দুদের বিরুদ্ধে চলমান নির্যাতন বন্ধ না করে, তাহলে ভারতেও প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ আরও তীব্র হবে।”

এই প্রতিবাদের মধ্যে ভারত সরকার বাংলাদেশকে তাদের আচরণ বদলানোর জন্য কঠোর বার্তা পাঠিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতারি এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর চলমান আক্রমণের ঘটনাগুলি উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশ সরকারকে তাদের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

এই ঘটনায় কলকাতা এবং পুরুলিয়া ছাড়াও বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। আন্দোলনকারী এবং ভারত সরকার উভয়ই বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন। এর মধ্যে, চিন্ময় কৃষ্ণদাসের মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ এবং আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে, যদি বাংলাদেশ সরকার তাদের পদক্ষেপ না পরিবর্তন করে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

চিন্ময় প্রভুর দায় ঝেড়ে ফেলা হয়নি, বিতর্ক হতেই সাফাই ইসকনের!

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর ইসকন সংগঠনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ইসকন বাংলাদেশ জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বর্তমানে তাদের প্রতিনিধি নন, তবে তার অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রয়েছে। ইসকনের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে এবং সংগঠনটি বাংলাদেশের হিন্দুদের সুরক্ষার দাবি জানিয়ে আসছে। ব্রিটিশ সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যানও বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
চিন্ময় প্রভুর দায় ঝেড়ে ফেলা হয়নি, বিতর্ক হতেই সাফাই ইসকনের!

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর ইসকন সংগঠনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ইসকন বাংলাদেশ জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বর্তমানে তাদের প্রতিনিধি নন, তবে তার অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রয়েছে। ইসকনের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে এবং সংগঠনটি বাংলাদেশের হিন্দুদের সুরক্ষার দাবি জানিয়ে আসছে। ব্রিটিশ সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যানও বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতারির পর, ইসকন সংগঠনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ের উপর একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস জানিয়েছেন যে, বর্তমানে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ইসকনের কোনো প্রতিনিধিত্ব করেন না। এই ঘোষণার পর, সংগঠনটি আরও স্পষ্টভাবে জানায় যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার জন্য সম্পূর্ণ দায়ভার ওই ব্যক্তির।

তবে, ইসকনের এই বক্তব্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অভিযোগ উঠেছে যে, ইসকন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি করার মাধ্যমে, বাংলাদেশে সংগঠনের নিষিদ্ধ করার দাবি উত্থাপিত হওয়ার পর তার দায়ভার এড়িয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কয়েক ঘণ্টা পরে ইসকন একটি সংশোধিত বিবৃতি দেয়, যেখানে তারা স্পষ্টভাবে জানায় যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের দায় ঝেড়ে ফেলা হয়নি। বরং, ইসকন শুধু জানিয়ে দিয়েছে যে, বর্তমানে তিনি ইসকনের প্রতিনিধি নন। গত কয়েক মাস ধরেই এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হয়েছিল।

ইসকনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হৃষিকেশ গৌরাঙ্গ দাস জানান, গত জুলাই মাসে তাকে ইসকন বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ইসকনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস শান্তিপূর্ণভাবে হিন্দুদের এবং তাদের ধর্মীয় স্থানগুলোকে রক্ষা করার জন্য যে ডাক দিয়েছিলেন, সেটি তার অধিকার এবং স্বাধীনতা। ইসকন এই অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন জানায় এবং এখনও তা অব্যাহত রেখেছে।

ইসকন আরও জানিয়েছে, সংগঠনটি বাংলাদেশের হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আসছে, ঠিক যেমন অন্যান্য সনাতনী সংগঠনগুলোও একই দাবি করেছে। সংখ্যালঘুদের অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার প্রশ্নে ইসকন কোনো দূরত্ব তৈরি করেনি এবং তাদের এই দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ইসকনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমরা বহুবার প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং সাক্ষাৎকারে এই বিষয়টি পরিষ্কার করেছি, এবং আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বর্তমানে সরকারিভাবে বাংলাদেশের ইসকনের প্রতিনিধিত্ব করছেন না।”

এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর চলমান হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক উদ্বেগও বাড়ছে। ব্রিটেনের কনভারভেটিভ পার্টির সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যান এই বিষয়টি নিয়ে তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার যে চেষ্টা করা হয়েছিল, তাতে আমি গভীর উদ্বিগ্ন। ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় রাখতে হবে, এবং তা বিশ্বের প্রতিটি দেশে রক্ষা করা উচিত।”

বাংলাদেশে চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে, বিভিন্ন সনাতনী সংগঠন ও হিন্দু নেতারা দাবি করেছেন যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জীবন রক্ষা করতে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি, ইসকনও দাবি করেছে যে, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে হিন্দুরা বসবাস করতে পারেন, সেই নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা ইসকনের তরফে তীব্রভাবে নিন্দিত হলেও, তারা নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে দিয়েছে। সংগঠনটি জানায়, তারা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও জানিয়ে যাবে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে সরব বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ

ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ঘিরে উত্তাল হয়েছে কলকাতা। সন্ন্যাসীর মুক্তির দাবিতে সরব বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ, কলকাতায় ব্যারিকেডের নীচে চাপা পড়ে আহত একাধিক। তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কলকাতায় সনাতনী সমাজের মিছিলেও উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কয়েকজন। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশেও প্রতিবাদ চলছে।
চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে সরব বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ

ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ঘিরে উত্তাল হয়েছে কলকাতা। সন্ন্যাসীর মুক্তির দাবিতে সরব বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ, কলকাতায় ব্যারিকেডের নীচে চাপা পড়ে আহত একাধিক। তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কলকাতায় সনাতনী সমাজের মিছিলেও উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কয়েকজন। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশেও প্রতিবাদ চলছে।

কলকাতা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ঘিরে কলকাতার সনাতনী সমাজ পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। বৃহস্পতিবার শিয়ালদা স্টেশন থেকে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই-কমিশনের দফতর পর্যন্ত এই মিছিল আয়োজিত হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা সন্ন্যাসীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সরব হন। তবে বেকবাগানের কাছে পৌঁছাতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান মিছিলকারীরা। সংঘর্ষে আহত হন দুই মিছিলকারী এবং এক পুলিশ কর্মকর্তা। বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। মিছিল থেকে বারবার ‘বিচার চাই’ স্লোগান শোনা যায়।

তিন মাস আগে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতি হলেও দেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগ অব্যাহত। এর মধ্যেই সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে। ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় গ্রেফতার করে।

এ ঘটনায় বাংলাদেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় সংখ্যালঘুরা মিছিল ও অবস্থান বিক্ষোভ করছে। অনেকে রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ইসকনও সরব হয়েছে। এক্স-হ্যান্ডেলে (পূর্ববর্তী টুইটার) ইসকন লিখেছে, “বিশ্বের যে কোনও জায়গায় সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ইসকনের কোনও সম্পর্ক নেই। এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ তীব্র নিন্দনীয়।”

ভারত সরকারকেও এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছে ইসকন। তারা চায়, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি নিশ্চিত করা হোক।

কলকাতার মিছিল ও সংঘর্ষের পর বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চ স্পষ্ট করেছে যে, এই আন্দোলন আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে। একইসঙ্গে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টিও সামনে এনেছে ভারত। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লির তরফ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

ইতিমধ্যেই কলকাতা ও বাংলাদেশে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে। প্রতিবাদকারীদের দাবি, “এই অন্যায় গ্রেফতারি মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ন্যায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।”

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

কলকাতার রাস্তায় হুঙ্কার সনাতনীদের, পুলিশের সঙ্গে ধুন্ধুমার

বাংলাদেশে ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার পর, সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইসকন কর্তৃপক্ষও প্রতিবাদে নেমেছে। কলকাতার ইসকন কেন্দ্র থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে কীর্তনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হবে। ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস বাংলাদেশে ভক্তদের ওপর সেনা-পুলিশের নির্যাতন ও আটকানোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
কলকাতার রাস্তায় হুঙ্কার সনাতনীদের, পুলিশের সঙ্গে ধুন্ধুমার

বাংলাদেশে ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার পর, সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইসকন কর্তৃপক্ষও প্রতিবাদে নেমেছে। কলকাতার ইসকন কেন্দ্র থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে কীর্তনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হবে। ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস বাংলাদেশে ভক্তদের ওপর সেনা-পুলিশের নির্যাতন ও আটকানোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

কলকাতা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারি ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার পর সেখানে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতার ইসকন কর্তৃপক্ষও সরব হয়েছে। কলকাতায় ইসকন কেন্দ্র থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে আলবার্ট রোডে এক বিশাল কীর্তন অনুষ্ঠিত হবে, যার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হবে।

ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস এদিন সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, “বাংলাদেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ইসকন ভক্তরা আতঙ্কিত। তাদের বেছে বেছে তুলে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনা এবং পুলিশ।” তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে সন্ন্যাসীদের গ্রেফতারি ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর চলা নির্যাতন পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত করেছে। চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির পর সেখানে আরও এক সন্ন্যাসী স্বরূপ দাশের গ্রেফতারি পরিস্থিতি আরও জটিল করে দিয়েছে, যা আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে।

এই পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ইসকন কর্তৃপক্ষ বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রাধারমন দাস জানান, “বাংলাদেশে ইসকন ভক্তরা খুব আতঙ্কিত। তাদের লক্ষ্য করে নির্যাতন চলছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ।”

এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশের সরকার ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আবেদন জানায়। তবে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ হাই কোর্টে এই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। আদালতের এই সিদ্ধান্তে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও, ইসকন ভক্তরা এখনও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। আদালত জানায়, ইসকনের কার্যকলাপে আপাতত হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই।

এছাড়া, বাংলাদেশে ইসকন ভক্তদের গ্রেফতারি এবং সেনা-পুলিশের নির্যাতন আরও বাড়তে থাকলে, ইসকন কর্তৃপক্ষ আরও পদক্ষেপ নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাধারমন দাসও এই প্রসঙ্গে বলেন, “এটা খুবই উদ্বেগের বিষয় যে, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর এমন অত্যাচার চলছে। এমন পরিস্থিতিতে ভক্তদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা খুবই জরুরি।”

এদিকে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে যে, তারা যেন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং নির্যাতন বন্ধ করে।

এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের জন্য চরম উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। তবে ইসকন কর্তৃপক্ষের প্রতিবাদ এবং ভারতের পক্ষ থেকে ওই বিষয়গুলো উত্থাপন করলে, কিছুটা হলেও এই ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচিত হচ্ছে এবং বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশ সরকার এই সংকট মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেয় এবং ইসকনের ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের ওপরের চাপ কতটা প্রভাবিত হয়।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের: ভারতের সংসদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

ভারত সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কৃতি বর্ধন সিং জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, মন্দির ভাঙচুর, এবং দেবতার অবমাননার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সংসদে তিনি উল্লেখ করেন, সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব। পাশাপাশি, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা এবং সম্প্রতি ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে ভারত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের: ভারতের সংসদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

ভারত সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কৃতি বর্ধন সিং জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, মন্দির ভাঙচুর, এবং দেবতার অবমাননার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সংসদে তিনি উল্লেখ করেন, সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব। পাশাপাশি, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা এবং সম্প্রতি ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে ভারত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

নয়াদিল্লী, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার একাধিক ঘটনা নিয়ে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কৃতি বর্ধন সিং বৃহস্পতিবার সংসদে জানান, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের মন্দির ও দেবতার অবমাননা, চুরি এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। দুর্গাপূজার সময় ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজা মণ্ডপে হামলা এবং যশোরের যশেশ্বরী কালীমন্দিরে চুরির ঘটনাগুলি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।

সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হওয়া এসব ঘটনার বিষয়ে ভারত সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। তিনি আরও বলেন, “সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সব নাগরিকের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষা করা বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব।”

সম্প্রতি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের ঘটনায়ও ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের এবং জামিন আবেদন নাকচ হওয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ভারত সরকারের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ, এবং মন্দির ভাঙচুরের একাধিক নথিভুক্ত ঘটনা রয়েছে। এ পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে বারবার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হওয়া আক্রমণ শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং দুই দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেফতারি নিয়ে ভারতের বার্তায় কী জানাল বাংলাদেশ?

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার এবং জামিন নাকচের ঘটনায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর একাধিক হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ইসকন ভারত সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ভারত এবং বাংলাদেশ উভয় পক্ষই কড়া বিবৃতি দিয়েছে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা এবং দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে।
হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেফতারি নিয়ে ভারতের বার্তায় কী জানাল বাংলাদেশ?

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার এবং জামিন নাকচের ঘটনায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর একাধিক হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ইসকন ভারত সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ভারত এবং বাংলাদেশ উভয় পক্ষই কড়া বিবৃতি দিয়েছে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা এবং দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও জামিন নাকচের পর পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। ইসকন সংগঠন ভারত সরকারের প্রতি পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

ভারতের বিদেশমন্ত্রক থেকে এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশে চরমপন্থী গোষ্ঠীর মাধ্যমে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর একাধিক হামলা ঘটেছে। লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, মন্দির ও দেবতা ভাঙচুরের মতো ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের।”

ভারতের এই বিবৃতির পর বাংলাদেশও পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, “চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে একটি নির্দিষ্ট অংশ তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের নিজস্ব ধর্মীয় অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার দায়বদ্ধ।”

বাংলাদেশ আরও জানায়, “এই ধরনের ভিত্তিহীন বিবৃতি কেবল তথ্যকে বিকৃত করছে না, বরং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের চেতনার পরিপন্থী।”

মঙ্গলবার, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হলে তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালত থেকে বেরনোর পর প্রিজন ভ্যান আটকে ভক্তরা বিক্ষোভ দেখান। প্রিজন ভ্যানের ভিতর থেকেই সন্ন্যাসী শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলা বন্ধে তৎপরতার অভাবের অভিযোগ উঠছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুসের সরকারের নীরবতা নিয়ে। তাঁদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

ভারতের তরফে এই পরিস্থিতি নিয়ে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনার কথাও উঠে আসছে। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নিয়ে উত্তেজনা অব্যাহত।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

রাত বাড়তে পরিস্থিতির অবনতি, প্রতিবাদী সংখ্যালঘু ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর 'হামলা' মৌলবাদীদের

ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও জামিন খারিজের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতিবাদ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, এবং রংপুরে দফায় দফায় বিক্ষোভ ও অবরোধ চলেছে। অভিযোগ উঠেছে, জামাত সমর্থকরা সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং মন্দিরে হামলা চালাচ্ছে। সংঘর্ষে চট্টগ্রামে একজন আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)
রাত বাড়তে পরিস্থিতির অবনতি, প্রতিবাদী সংখ্যালঘু ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর 'হামলা' মৌলবাদীদের

ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও জামিন খারিজের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতিবাদ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, এবং রংপুরে দফায় দফায় বিক্ষোভ ও অবরোধ চলেছে। অভিযোগ উঠেছে, জামাত সমর্থকরা সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং মন্দিরে হামলা চালাচ্ছে। সংঘর্ষে চট্টগ্রামে একজন আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে উত্তাল হয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। জানা গেছে, গত ৩১ অক্টোবর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেছিলেন, যদিও পরে ফিরোজ খানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন নাকচ হওয়ার পর আদালত চত্বরে তাঁর অনুগামীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সন্ন্যাসী নিজেই প্রিজন ভ্যান থেকে অনুগামীদের শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান। এরপর তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে নেওয়া হয়।

চট্টগ্রামে চলা বিক্ষোভের সময় আইনজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষ হলে একজন আইনজীবীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এরপরে রাতভর চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং মন্দিরে হামলার অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় সূত্র জানায়, মৌলবাদীরা মন্দির ভাঙচুর এবং সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে।

সংবাদপত্র প্রথম আলোর তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামের সরাইপাড়া এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের ছয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চট্টগ্রামের হাজারি গলিতে সংখ্যালঘুদের ওপর অতীতেও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। স্থানীয়রা জানিয়েছে, কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সেনার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নাগরিকদের গ্রেফতার করার অভিযোগ উঠেছিল।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ চলছে। সংখ্যালঘু সংগঠনগুলোও প্রতিবাদে সরব হয়েছে। তবে এই বিক্ষোভ দমনে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

'চিন্ময়কৃষ্ণ বা সনাতনী সম্প্রদায়ের সঙ্গে কোনও বৈষম্য বরদাস্ত করা হবে না', কড়া বিবৃতি ইসকনের

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে হিন্দু সম্প্রদায়, যারা চিন্ময় দাসের মুক্তি দাবি করছেন। ইসকন বাংলাদেশ তাদের গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
'চিন্ময়কৃষ্ণ বা সনাতনী সম্প্রদায়ের সঙ্গে কোনও বৈষম্য বরদাস্ত করা হবে না', কড়া বিবৃতি ইসকনের

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে হিন্দু সম্প্রদায়, যারা চিন্ময় দাসের মুক্তি দাবি করছেন। ইসকন বাংলাদেশ তাদের গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় এর প্রতিবাদে পথে নেমেছে, তবে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষও চলছে। এই প্রতিবাদী আন্দোলন এখন সারা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে জামাত সমর্থকরা এবং পুলিশও এতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেফতার হওয়ার পর বাংলাদেশের হিন্দু সমাজে ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ধর্মীয় অধিকার ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে নিয়মিত সোচ্চার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন। তিনি “বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট” এর মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে আসছিলেন এবং দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের অধিকার নিয়ে প্রতিবাদ ও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তার গ্রেফতারির পর থেকেই একে একে প্রতিবাদী বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়, যা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর্যায়ে চলে আসে।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে, এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দৃষ্টিপাত করা হয়েছে। ভারত সরকার এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং তা অবিলম্বে সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পাল্টা জবাব হিসেবে বাংলাদেশ সরকারও তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। তবে, ইসকন বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে আরও কঠোর বিবৃতি এসেছে।

ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসায়নেস (ইসকন)-এর বাংলাদেশ শাখা জানায়, তারা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে তাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তাদের মতে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ছিলেন একজন জনপ্রিয় ও নিষ্ঠাবান ধর্মীয় নেতা, যিনি সব সময় সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার পক্ষে কথা বলেছেন এবং কাজ করেছেন। ইসকন বাংলাদেশ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে সোচ্চার ছিলেন।”

ইসকন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, “চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এবং সনাতন সম্প্রদায় বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সমান অধিকার পেতে উত্সুক। তাদের সাথে কোনো ধরনের বৈষম্য বরদাস্ত করা হবে না এবং আমরা চাই বাংলাদেশের সরকার এই বিষয়টি নিশ্চিত করুক যে, সংখ্যালঘুদের অধিকার সমুন্নত থাকবে।”

এদিকে, এই গ্রেফতারির পর হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এক নতুন উদ্বেগের সঞ্চার হয়েছে। তারা দাবি করছে যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি শুধুমাত্র একটি ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলনের উপর আঘাত। তাদের ভাষায়, এটি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি অবিচারের একটি নিদর্শন।

বিভিন্ন জেলা ও শহরে চলছে বিক্ষোভ-অবরোধ। বিক্ষোভকারীরা সরকারের কাছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি দাবি করছে এবং ধর্মীয় অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ হতে চাইলেও পুলিশ এবং জামাত সমর্থকরা এতে হস্তক্ষেপ করছে, ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।

এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির ফলে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন, সরকারী বাহিনীর এই পদক্ষেপ থেকে এমন কিছু বার্তা আসছে, যা ধর্মীয় স্বাধীনতার সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপের ঘোষণা আসেনি, ফলে এই পরিস্থিতি কবে নাগাদ শেষ হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

সব মিলিয়ে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের আন্দোলন, এবং এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে বাংলাদেশে এক উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এখন এই পরিস্থিতির কী পরিণতি হয় এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, তা পর্যবেক্ষণ করার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

'চিকিৎসা নেওয়ার জন্য করাচি-লাহোরে যান', বাংলাদেশ ইস্যুতে কড়া বার্তা শুভেন্দুর

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণদাস প্রভুর গ্রেফতারের ঘটনায় উত্তাল হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়কেরা বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে যান এবং সন্ন্যাসীর মুক্তির দাবি জানান। ডেপুটি হাই কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পর বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশের প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)
'চিকিৎসা নেওয়ার জন্য করাচি-লাহোরে যান', বাংলাদেশ ইস্যুতে কড়া বার্তা শুভেন্দুর

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণদাস প্রভুর গ্রেফতারের ঘটনায় উত্তাল হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়কেরা বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে যান এবং সন্ন্যাসীর মুক্তির দাবি জানান। ডেপুটি হাই কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পর বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশের প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)

কলকাতা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণদাস প্রভুর গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে দুই বাংলার রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এর প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়কেরা বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে যান এবং সন্ন্যাসীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

ডেপুটি হাই কমিশনের অফিস থেকে বেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ভারত-বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। এই ধরনের ভারত-বিরোধী আচরণ ও হিন্দু নিধনের ঘটনাগুলি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে জানিয়েছি, এনাফ ইজ এনাফ।”

চিন্ময় কৃষ্ণদাস প্রভুকে গ্রেফতারের ঘটনাকে “মিথ্যা মামলা” বলে অভিহিত করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “চিন্ময় প্রভু একজন রাষ্ট্রবাদী বৈষ্ণব প্রচারক। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তাঁর ভূমিকা রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। এটা মৌলবাদী শক্তির ষড়যন্ত্র।”

বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক প্রশাসকের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে শুভেন্দু বলেন, “এই প্রশাসক ভারতকে আক্রমণ করেছেন। আমি স্পষ্ট বলছি, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার আগে ভেবে দেখা উচিত। ভিসা বন্ধ করা, আমদানি-রপ্তানি থামানো—এ সব পদক্ষেপ নিতে আমরা প্রস্তুত।”

শুভেন্দু আরও জানান, “হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ, মন্দির ধ্বংস, এবং সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায়, আমাদের প্রতিক্রিয়া আরও কঠোর হবে। বাংলাদেশের প্রশাসনকে আমাদের দাবিগুলি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। আমি এখান থেকে দাবি করছি, ভিসা একশো শতাংশ বন্ধ করুন। আমরা প্রয়োজন হলে একদিন অপেক্ষা করে ভিসা দফতরেও যাব। সম্পূর্ণভাবে ভিসা দেওয়া বন্ধ করুন। আমদানি-রফতানি পরামিট ইস্যু করা বন্ধ করুন। বাকিটা আমরা বর্ডারে করব সোমবার থেকে। বলে দিলাম। চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে নিঃশর্ত মুক্তি, হিন্দুদের ওপর আক্রমণ-মন্দির ভাঙা বন্ধ করুন। আর এই ধরনের নাবালকদের (মন্ত্রীর উল্লেখ করে) যাঁদের ওখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বসিয়েছেন, এই নাবালক যাঁরা মন্ত্রীর পদমর্যাদার তাঁদের এ ধরনের ভারত-বিরোধী কথা বলা বন্ধ করুন। আর চিকিৎসা নেওয়ার জন্য করাচি-লাহোরে যান। এখানে আসবেন না। পরিষ্কার বলে দিতে চাই আমরা।"

বিজেপি নেতার এই বক্তব্যের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি উঠেছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

'ভারত-বিরোধী কথা বলা বন্ধ করুন এই নাবালক মন্ত্রী', নিশানা শুভেন্দুর

বাংলাদেশে ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণদাস প্রভুর গ্রেফতার নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমালোচনা করেছেন। বিজেপি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে গিয়ে চিন্ময় প্রভুর মুক্তি দাবি জানিয়ে এসেছে। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)
'ভারত-বিরোধী কথা বলা বন্ধ করুন এই নাবালক মন্ত্রী', নিশানা শুভেন্দুর

বাংলাদেশে ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণদাস প্রভুর গ্রেফতার নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমালোচনা করেছেন। বিজেপি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে গিয়ে চিন্ময় প্রভুর মুক্তি দাবি জানিয়ে এসেছে। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)

কলকাতা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণদাস প্রভুর গ্রেফতারির ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সোমবার বিজেপি বিধায়কদের একটি প্রতিনিধিদল কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে গিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণদাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানায়।

প্রতিনিধিদলের সঙ্গে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “বাংলাদেশের এক প্রশাসক, যিনি মন্ত্রীর পদমর্যাদার সমান, সরাসরি ভারতকে আক্রমণ করছেন। আমরা দাবি করছি, ভারতের ভিসা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হোক এবং আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত রাখা হোক।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা এবং মন্দির ভাঙার ঘটনা বন্ধ করতে হবে। এই ধরনের ভারত-বিরোধী কথাবার্তা চলতে দেওয়া হবে না।”

চিন্ময় কৃষ্ণদাসের মুক্তি প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “চিন্ময় প্রভু একজন রাষ্ট্রপ্রেমিক বৈষ্ণব প্রচারক। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশের জাতীয়তাবাদী চেতনাকে সমর্থন করেছেন। অথচ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা মৌলবাদী শক্তির অগ্রযাত্রার ইঙ্গিত দেয়।”

বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতার নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনা করে শুভেন্দু বলেন, “এটি তালিবান এবং মৌলবাদী শক্তির পদধ্বনি। আমরা এ নিয়ে আর চুপ থাকতে পারি না।”

এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি রাজ্যজুড়ে আরও প্রতিবাদ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সরকারের এই আচরণ বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা হবে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলুক ভারত সরকার! হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেফতারির পর এবার কড়া বার্তা ইসকনের

বাংলাদেশে ইসকন বাংলাদেশ-এর অন্যতম মুখ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসকন। বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগের কারণে সন্ন্যাসীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ভারতের কাছে সাহায্য চেয়েছে তারা। গত সোমবার ঢাকায় গ্রেফতার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে চট্টগ্রামের আদালত। এর পরেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজের মধ্যে প্রতিবাদ শুরু হয়।
বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলুক ভারত সরকার! হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেফতারির পর এবার কড়া বার্তা ইসকনের

বাংলাদেশে ইসকন বাংলাদেশ-এর অন্যতম মুখ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসকন। বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগের কারণে সন্ন্যাসীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ভারতের কাছে সাহায্য চেয়েছে তারা। গত সোমবার ঢাকায় গ্রেফতার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে চট্টগ্রামের আদালত। এর পরেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজের মধ্যে প্রতিবাদ শুরু হয়।

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালো ইসকন। গত সোমবার ঢাকায় পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ইসকন-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে যে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে তা নিন্দনীয় এবং বাংলাদেশের সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। সংগঠনটি ভারত সরকারের প্রতি এক আবেদন জানিয়েছে, যাতে তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলে এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি দেয়।

ইসকন-এর তরফ থেকে এক টুইট বার্তায় বলা হয়েছে, “আমরা উদ্বিগ্ন খবর পাচ্ছি যে, ইসকন বাংলাদেশের অন্যতম মুখ শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ঢাকার পুলিশ আটক করেছে। বিশ্বের যেকোনো জায়গায় সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ইসকনের কোনও সম্পর্ক নেই, এই ভিত্তিহীন অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ইসকন ভারত সরকারকে অনুরোধ করছে, বাংলাদেশ সরকারকে বোঝানোর জন্য এবং অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। আমরা শান্তিপূর্ণ ভক্তি আন্দোলনকারী, এবং আমাদের অনুরোধ, বাংলাদেশ সরকার অবিলম্বে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি দিন।”

এই গ্রেফতারি নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আদালত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় এবং তাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম কাজী শরিফুল ইসলাম এই আদেশ দেন। এর পরেই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুগামীরা আদালত চত্বরে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

এই ঘটনায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজের মধ্যে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে এবং বাংলাদেশ সরকারকে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করে যাতে সন্ন্যাসীকে মুক্তি দেওয়া হয়। চট্টগ্রামের আদালত থেকে জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সমর্থকরা আন্দোলন শুরু করেন এবং দ্রুত তার মুক্তির দাবি জানান।

বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে দাঁড়ায়, যখন ইসকন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে নিজেদের কোনো সম্পর্ক না থাকার কথা স্পষ্ট করে জানায়। ইসকন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা কোনো ধরনের সহিংসতা বা সন্ত্রাসবাদে জড়িত নয় এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

এদিকে, বাংলাদেশে চলমান ধর্মীয় সহিংসতা এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহলও। ব্রিটেনের কনভারভেটিভ পার্টির সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যান এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার সুরক্ষার কথা বলেছেন। তিনি মন্তব্য করেছেন, “বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার যে চেষ্টা করা হয়েছিল, সেটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সবাইকে একজোট হতে হবে।”

এছাড়াও, ইসকন জানায় যে তারা তাদের সমস্ত প্রতিবেদন ও বার্তায় এই বিষয়টি স্পষ্ট করেছে যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বর্তমানে বাংলাদেশের ইসকনের কোনো প্রতিনিধি নন এবং গত কয়েক মাস ধরে এটি পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে, ইসকন সবসময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে এবং এখনও তা অব্যাহত রাখবে।

এক্ষেত্রে, ভারতের পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার বিষয়টি উত্থাপন করা হচ্ছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ইসকন এর সহিত সংহতি প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশ সরকারকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনাগুলির প্রতি ইসকন, ভারত সরকার, এবং আন্তর্জাতিক মহলের সকলেই নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে, এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সন্ন্যাসীর মুক্তি নিয়ে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

সন্ন্যাসী চিন্ময় দাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিধানসভায় মিছিল বিজেপি বিধায়কদের

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে বিমানবন্দর থেকে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের পর বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ঢাকার আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ভারত সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
সন্ন্যাসী চিন্ময় দাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিধানসভায় মিছিল বিজেপি বিধায়কদের

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে বিমানবন্দর থেকে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের পর বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ঢাকার আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ভারত সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

কলকাতা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারীকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করার পর বাংলাদেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করে মঙ্গলবার ঢাকার আদালতে হাজির করা হলে জামিনের আবেদন খারিজ করে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

এই গ্রেফতারির ঘটনায় বাংলাদেশে ইসকনের পাশাপাশি অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিক্ষোভ শুরু করেছে। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে। একইসঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও এ ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলনে নেমেছে।

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ইসকনের সন্ন্যাসীর মুক্তির জন্য ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তিনি সীমান্তে অবরোধের ডাক দেওয়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ ও মিছিল করেন এবং চিন্ময় দাসের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

ইসকনের আন্তর্জাতিক শাখাগুলোও এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইসকনের সদস্য ও উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তা তুলসী গার্বাডকের কাছে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার আবেদন জানানো হয়েছে। এছাড়াও, মার্কিন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ইসকন।

গ্রেফতারের পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। চিন্ময় দাসের মুক্তির দাবিতে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে মিছিল এবং সমাবেশ হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।

চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে দায়ের করা দেশদ্রোহিতার মামলাটি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিক্রিয়া আসছে। সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

চিন্ময় দাসকে গ্রেফতারের পর ইসকনের সোশ্যাল মিডিয়া পেজ-কে 'টার্গেট' সাইবার অপরাধীদের

ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারের পর বাংলাদেশে ইসকনের সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলো সাইবার হামলার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইসকন বাংলাদেশ। সাইবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং দ্রুত সুবিচারের আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি চিন্ময় দাসের গ্রেফতার নিয়েও তীব্র সমালোচনা চলছে।
চিন্ময় দাসকে গ্রেফতারের পর ইসকনের সোশ্যাল মিডিয়া পেজ-কে 'টার্গেট' সাইবার অপরাধীদের

ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারের পর বাংলাদেশে ইসকনের সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলো সাইবার হামলার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইসকন বাংলাদেশ। সাইবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং দ্রুত সুবিচারের আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি চিন্ময় দাসের গ্রেফতার নিয়েও তীব্র সমালোচনা চলছে।

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে ইসকন বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলোর ওপর সাইবার হামলার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ইসকন বাংলাদেশের সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস এ তথ্য জানান। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের সাইবার অপরাধীরা ইসকন টিভি ঢাকা-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পেজগুলো টার্গেট করছে।

চারু চন্দ্র দাস জানান, ইসকন টিভি ঢাকা ফেসবুক পেজ সনাতন ধর্ম প্রচার এবং হিন্দু আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে সাইবার অপরাধীরা এই পেজে বারবার হামলা চালাচ্ছে। এর পেছনে সাইবার ডিফেন্ডার বাংলাদেশ নামে একটি গ্রুপ জড়িত, যারা নিজেদের সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে দাবি করে। এই গ্রুপ ইতোমধ্যেই হামলার দায় স্বীকার করেছে, যা ফেসবুক পলিসির সম্পূর্ণ বিরোধী।

চারু চন্দ্র দাস আরও উল্লেখ করেন যে, ইসকন টিভি ঢাকা ছাড়াও মায়াপুর টিভি, জয়পতাকা স্বামী বাংলা এবং ইসকন ইয়ুথ ফোরাম সিলেটের পেজগুলোও একই ধরনের আক্রমণের শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি লক্ষ্য করার পরপরই আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি। ঢাকার সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্টের সহকারী কমিশনার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা দ্রুত সুবিচার পাওয়ার আশা করছি।”

একই সঙ্গে, ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতার নিয়েও সমালোচনা করেছেন চারু চন্দ্র দাস। প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারীকে আটক করে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের গোয়েন্দা শাখা।

মঙ্গলবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কড়া নিরাপত্তায় চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজি শরিফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁর জামিন আবেদন খারিজ করে তাঁকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা দাবি করছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বেড়েছে। সন্ন্যাসী চিন্ময় দাসের গ্রেফতার এবং ইসকনের সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলোর ওপর হামলার ঘটনায় দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

প্রশ্নের মুখে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা! ভারত সরকারকে পদক্ষেপের দাবি

বাংলাদেশে ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিভিন্ন জায়গা। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে সন্ন্যাসীকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বিজেপি দাবি করেছে, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুক এবং তাঁদের বিরুদ্ধে চলমান অত্যাচার বন্ধ করুক।
প্রশ্নের মুখে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা! ভারত সরকারকে পদক্ষেপের দাবি

বাংলাদেশে ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিভিন্ন জায়গা। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে সন্ন্যাসীকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বিজেপি দাবি করেছে, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুক এবং তাঁদের বিরুদ্ধে চলমান অত্যাচার বন্ধ করুক।

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গত সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে। বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁর গ্রেফতারির পর, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর চট্টগ্রাম, ঢাকা সহ বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নেমে মিছিল ও শোভাযাত্রা শুরু করেছেন। প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় শুয়ে, মিছিল করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সন্ন্যাসীর মুক্তির দাবিতে তারা একযোগভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

এদিকে, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এই ঘটনার প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দলের তরফ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বলা হয়, “আমরা প্রতিটি দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি এবং কোনও দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। তবে, এই ঘটনা অন্য সব আইনশৃঙ্খলা ঘটনার থেকে পৃথক। এটি একটি ভক্তি আন্দোলনকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার নির্মম প্রয়াস। ভারতীয় জনতা পার্টি বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছে, তারা যেন ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে অবিলম্বে মুক্তি দেয় এবং তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মিথ্যে মামলা প্রত্যাহার করে।”

বিজেপি আরও দাবি করে যে, বাংলাদেশ সরকার যেন নিশ্চিত করে যে, দেশের সমস্ত হিন্দু এবং হিন্দু মন্দির সুরক্ষিত থাকে এবং সংখ্যালঘুদের নির্ভয়ে জীবনযাপন করার অধিকার ফেরত দেওয়া হয়। তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে এই ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়েও বিজেপি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানায়, আগস্ট মাস থেকে বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার এবং তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, যা লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করেছে। বিজেপির দাবি, বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের জন্য একটি সম্মানজনক জীবনযাপনের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

এর আগে, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল শেখ হাসিনার সরকারের সময়কালেও। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর এই অভিযোগ আরও তীব্র হয়ে ওঠে, যা সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, ইসকন কর্তৃপক্ষও মুখ খুলেছে এবং এক্স হ্যান্ডেলে বলেছে, “বিশ্বের যে কোনও জায়গায় সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ইসকনের কোনও সম্পর্ক আছে, এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ করা নিন্দনীয়। আমরা ভারত সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে এবং বাংলাদেশ সরকারের সাথে কথা বলার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।”

এই ঘটনার পর, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ এবং আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা সময়ই বলবে, তবে বাংলাদেশের সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

শান্তিতে নোবেলজয়ীর সরকারের আমলেই অশান্তি! হিন্দু নেতার গ্রেফতারিতে চাপের মুখে ইউনূস সরকার

চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতার এবং তাঁর জামিন আবেদন খারিজের পর বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের উদ্বেগ পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। সরকার জানিয়েছে, তারা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)
শান্তিতে নোবেলজয়ীর সরকারের আমলেই অশান্তি! হিন্দু নেতার গ্রেফতারিতে চাপের মুখে ইউনূস সরকার

চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতার এবং তাঁর জামিন আবেদন খারিজের পর বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের উদ্বেগ পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। সরকার জানিয়েছে, তারা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। (সূত্রঃ এবিপি লাইভ)

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। তাঁকে চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজি শরিফুল ইসলামের আদালতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় হাজির করা হয়। জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

চিন্ময় ব্রহ্মচারীর গ্রেফতার নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে থাকা হিন্দু সম্প্রদায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর আক্রমণ বেড়েই চলেছে, যা রোধে সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ঘটনার নিন্দা করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তারা এই গ্রেফতার এবং জামিন আবেদন খারিজকে “গভীর উদ্বেগের বিষয়” বলে অভিহিত করেছে।

চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়ছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ প্রতিরোধে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। সরকারের এই প্রতিশ্রুতির মধ্যেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতার আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির উপর প্রভাব ফেলছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার এই সংকট মোকাবিলায় কী ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

'বাংলাদেশের ঘটনায় এক লাখ হিন্দুর জমায়েত, সীমান্ত সিলের' হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারির প্রতিবাদে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। বিজেপির পক্ষ থেকে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিদেশমন্ত্রক থেকে কড়া বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদে শহর জুড়ে বিক্ষোভ এবং মিছিলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্য নেতারা সরব হয়েছেন, এবং কলকাতায় এক লাখ মানুষের জমায়েতের আহ্বান জানিয়েছেন।
'বাংলাদেশের ঘটনায় এক লাখ হিন্দুর জমায়েত, সীমান্ত সিলের' হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারির প্রতিবাদে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। বিজেপির পক্ষ থেকে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিদেশমন্ত্রক থেকে কড়া বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদে শহর জুড়ে বিক্ষোভ এবং মিছিলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্য নেতারা সরব হয়েছেন, এবং কলকাতায় এক লাখ মানুষের জমায়েতের আহ্বান জানিয়েছেন।

কলকাতা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের চট্টগ্রামে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করার পর উত্তেজনা ছড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেফতারির ঘটনায় প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিজেপি। গতকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে বিজেপি, এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, তারা বিদেশমন্ত্রককে এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করেছেন। এছাড়া, বিধানসভায়ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে বিজেপি, এবং আগামী কয়েকদিনে আরও একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারী প্রথম থেকেই এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি এদিন নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল ‘এক্স’-এ লেখেন, “কয়েক ঘণ্টার নোটিসেই কলকাতার বুকে বহু সনাতনী জমায়েত করেছেন। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর মৌলবাদী অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সমন্বিত হামলা চলছে। আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” তিনি জানান, আগামীকাল বাংলাদেশ হাই কমিশনারের কাছে মিছিল করার পরিকল্পনা করেছেন।

বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সংবাদ সংস্থা ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “কলকাতার রাস্তায় হাজার হাজার হিন্দু জমায়েত করবেন। শিয়ালদা স্টেশন থেকে ডেপুটি হাই কমিশন পর্যন্ত মিছিল হবে, যেখানে এক লাখ হিন্দু যোগ দেবেন। এর পর, পেট্রাপোলের কাছে বাংলাদেশ সীমান্ত সিল করে দেওয়া হবে। আমদানি-রফতানি বন্ধ করার আহ্বান জানানো হবে।”

এই ঘটনার পর, ভারত সরকারের বিদেশমন্ত্রক থেকে একটি কড়া বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, “এটি দুর্ভাগ্যজনক যে, একদিকে যখন অভিযুক্তদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তখন অন্যদিকে একজন শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় গুরু, যিনি যুক্তিসঙ্গত দাবি তুলছেন, তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমরা শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছি।”

এই বিবৃতি তুলে ধরে বিদেশমন্ত্রক আরো জানিয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং তাদের ধর্মীয় অধিকার সুরক্ষিত রাখা সরকারের দায়িত্ব। এই ঘটনায় তাদের দৃষ্টি গভীরভাবে রয়েছে, এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন, এবং তাঁর গ্রেফতারির ঘটনা বহু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তার গ্রেফতারির প্রতিবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিবাদ-মিছিল এবং হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনায় একের পর এক সহিংসতার অভিযোগ উঠছে।

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নেতা-কর্মীরা আরও একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ বন্ধ করার জন্য তারা ভারতের সরকারকে চাপ দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিবাদ করার জন্য কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এই ঘটনায় বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টি এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা এবং উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা এখন দেখার বিষয়।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

ইসকনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, দেশজুড়ে সংখ্যালঘু বিক্ষোভ

বাংলাদেশে ইসকনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা হাই কোর্টে প্রত্যাহার করে নিয়েছে সরকার। সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর দেশজুড়ে বিক্ষোভের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইসকন নিষিদ্ধ করার আবেদন হাই কোর্ট খারিজ করেছে। ঘটনায় এক আইনজীবীর মৃত্যু ও ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
ইসকনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, দেশজুড়ে সংখ্যালঘু বিক্ষোভ

বাংলাদেশে ইসকনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা হাই কোর্টে প্রত্যাহার করে নিয়েছে সরকার। সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর দেশজুড়ে বিক্ষোভের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইসকন নিষিদ্ধ করার আবেদন হাই কোর্ট খারিজ করেছে। ঘটনায় এক আইনজীবীর মৃত্যু ও ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ সরকার ইসকনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করেছে। সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর থেকেই দেশজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন।

বুধবার দেশের হাই কোর্টে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আবেদন জানানো হয়েছিল। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশিস রায় চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে এ মামলার শুনানি হয়। আদালত জানায়, ইসকনের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তারা কোনো নির্দেশ দেবে না। পরে মামলাটি খারিজ হয়।

ইসকনের কলকাতা শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস এ সিদ্ধান্তকে “আনন্দের খবর” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, নিষিদ্ধের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

চট্টগ্রামে চিন্ময়কৃষ্ণের নেতৃত্বে সংখ্যালঘুদের সমাবেশের পর তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা হয়। বিএনপির এক স্থানীয় নেতা এই অভিযোগ আনেন। সোমবার তাকে গ্রেফতার করা হলে তার সমর্থকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় যখন চিন্ময়কৃষ্ণকে আদালতে হাজির করার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে তার সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন আইনজীবী নিহত হন।

চট্টগ্রাম ও রংপুরে জরুরি অবস্থা জারি করার আবেদনও জানানো হয়েছিল। তবে আদালত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

ইউনূস-পরিচালিত অন্তবর্তী সরকারের সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের একাধিক অভিযোগ উঠেছে। দেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। তবে সরকার বারবার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ইসকনের বিরুদ্ধে মামলার প্রত্যাহার এবং চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে প্রত্যাশা।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করার আহ্বান মাহাথিরের

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বাংলাদেশে রাজনৈতিক ঐক্য ও সমঝোতার মাধ্যমে দেশকে পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের জনগণ যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে, তবে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে। কুয়ালালামপুরে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার মতামত তুলে ধরেন এবং দেশের উন্নয়নের জন্য বিভক্তি এড়িয়ে একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করার আহ্বান মাহাথিরের

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বাংলাদেশে রাজনৈতিক ঐক্য ও সমঝোতার মাধ্যমে দেশকে পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের জনগণ যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে, তবে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে। কুয়ালালামপুরে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার মতামত তুলে ধরেন এবং দেশের উন্নয়নের জন্য বিভক্তি এড়িয়ে একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

কুয়ালালামপুর, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বিভক্তি এড়িয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন এবং পুনর্গঠন সম্ভব হলে যদি রাজনীতিবিদরা ব্যক্তিগত লাভের চিন্তা না করে বরং দেশের উন্নতির দিকে নজর দেন। মাহাথির মোহাম্মদ এসব মন্তব্য করেছেন কুয়ালালামপুরের রয়্যাল লেক ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে, যা মালয়েশিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাজনীতিবিদ তানশ্রী সৈয়দ হামিদ আলবারের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের প্রকাশনা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠান শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জনগণ সাহসিকতার সঙ্গে একজন অজনপ্রিয় শাসককে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। এখন তাদের সামনে এক বিরল সুযোগ এসেছে, বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তোলার।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন সময় এসেছে বিভক্তি এড়িয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার, দেশের স্বার্থে। যদি তা করা যায়, তবে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে।’’

তানশ্রী সৈয়দ হামিদ আলবার, যিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে আলোচনা করছিলেন, তিনি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তার মতে, বাংলাদেশের জনগণের পরিশ্রমী প্রচেষ্টা দেশটির উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অভ্যুত্থান দেশটির সামনে বিরল পুনর্গঠনের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।’’

এছাড়া, তানশ্রী হামিদ আলবার টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আয় ও সম্পদের বৈষম্য কমানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশকে টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বৈষম্য কমিয়ে আনার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এছাড়া, দেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে উন্নত করতে বাংলাদেশকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’’

এদিকে, মাহাথির মোহাম্মদ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক জোট আসিয়ানে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়ার বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের আঞ্চলিক সমন্বয়ের অংশ হতে হলে, দেশের উন্নয়ন এবং সামগ্রিক স্থিতিশীলতা প্রাধান্য পাবে।’’

মাহাথির মোহাম্মদ তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন এবং অভিজ্ঞতা দিয়ে বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানালেন, যা দেশটির সামগ্রিক উন্নতির জন্য অপরিহার্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

কর্তৃপক্ষের তৎপরতা যেন জারি থাকে: হাইকোর্ট

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন আইনজীবীর হত্যার পর তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ছয়জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সরকার এই বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেখছে বলে হাইকোর্টে জানিয়েছে।
কর্তৃপক্ষের তৎপরতা যেন জারি থাকে: হাইকোর্ট

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন আইনজীবীর হত্যার পর তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ছয়জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সরকার এই বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেখছে বলে হাইকোর্টে জানিয়েছে।

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই মামলায় মোট ৭৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ছয়জনকে শনাক্ত করা গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে এ তথ্য জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায়ের বেঞ্চে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন বলেন, সরকার এই বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেখছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তৎপর রয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, পুলিশ তিনটি মামলা দায়ের করেছে। একটি মামলায় ১৩ জন, আরেকটিতে ১৪ জন এবং তৃতীয় মামলায় ৪৯ জনের নাম রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আরও তথ্য উদ্ঘাটন করা হচ্ছে।

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিষয়ে হাইকোর্টে আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশের আবেদন জানান। একই সঙ্গে তিনি ইসকন নিষিদ্ধ করার এবং চট্টগ্রাম, দিনাজপুর ও রংপুরে আপাতত ১৪৪ ধারা জারি করার প্রস্তাব দেন।

হাইকোর্ট এই বিষয়ে রাষ্ট্রের গৃহীত পদক্ষেপ দেখে আশ্বস্ত হয়েছে। আদালত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা শুনে আশ্বস্ত হলাম যে, সরকার এই বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে তৎপর থাকতে হবে। এই দায়িত্ব সরকারের।”

এদিকে, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক জানান, সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে। তবে তিনি আদালতে বলেন, “যদি কোনো ঘাটতি পাওয়া যায়, তাহলে তা ভিন্ন বিষয় হবে।”

ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে আইনজীবী মনির উদ্দিন বলেন, “ইসকনের কার্যক্রম উচ্ছৃঙ্খল। এখনই যদি নিষিদ্ধ করা না হয়, ভবিষ্যতে তা আরও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের কারণ হতে পারে।”

আদালত এ প্রসঙ্গে বলেন, “দেশের মানুষ অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ। বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। এই সম্পর্ক ভেঙে যাবে না।”

রাষ্ট্রপক্ষ এবং আইনজীবীদের শুনানিতে আদালত আশ্বাস দেয় যে, সংবিধান রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে রাষ্ট্র যেহেতু এ বিষয়ে কাজ করছে, তাই এখন আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করা হয়।

চট্টগ্রামের ঘটনার পর পুরো বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তৎপর থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

চাই চিন্ময়ের নিঃশর্ত মুক্তি, বাংলাদেশে অশান্তির মাঝে বার্তা হাসিনার

চট্টগ্রাম আদালতের বাইরে সংঘর্ষে আইনজীবীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশজুড়ে উত্তেজনা। সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের অনুগামীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ওই আইনজীবী নিহত হন। এ ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। পাশাপাশি, চিন্ময়ের মুক্তির দাবি তুলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)
চাই চিন্ময়ের নিঃশর্ত মুক্তি, বাংলাদেশে  অশান্তির মাঝে বার্তা হাসিনার

চট্টগ্রাম আদালতের বাইরে সংঘর্ষে আইনজীবীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশজুড়ে উত্তেজনা। সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের অনুগামীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ওই আইনজীবী নিহত হন। এ ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। পাশাপাশি, চিন্ময়ের মুক্তির দাবি তুলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রাম আদালতের বাইরে সংঘর্ষে আইনজীবীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। গত মঙ্গলবার সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে আদালতে হাজির করার সময় তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩৭ জন আহত হন। সংঘর্ষের মধ্যেই নিহত হন একজন আইনজীবী।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “একজন আইনজীবী পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দোষীরা সন্ত্রাসী। তাদের শাস্তি পেতেই হবে।” হাসিনা আরও উল্লেখ করেন, যদি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার না হয়, তবে এর দায় অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর বর্তাবে।

চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনার পর তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। আদালতের বাইরে প্রিজ়ন ভ্যানে তোলার সময় চিন্ময়ের অনুগামীরা প্রতিবাদ করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

শেখ হাসিনা তাঁর বিবৃতিতে চিন্ময়ের মুক্তির দাবিও তুলেছেন। তিনি বলেন, “একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।” তাঁর এই বক্তব্য আওয়ামী লীগ সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার দাবি দীর্ঘদিনের। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন একত্রিত হয়ে ‘সনাতনী জাগরণ মঞ্চ’ গঠন করে। চিন্ময়কৃষ্ণ দাস এই মঞ্চের একজন মুখপাত্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

চিন্ময়ের আহ্বানে ঢাকার শহিদ মিনার চত্বর এবং চট্টগ্রামসহ একাধিক স্থানে হাজার হাজার সংখ্যালঘু মানুষ সমবেত হন। এ ধরনের আন্দোলনের কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত সরকারও। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন জানান, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকার বারবার অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি বলেন, “সংখ্যালঘু-সহ বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সে দেশের সরকারের দায়িত্ব।”

এই ঘটনাগুলি সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা ও পদক্ষেপের দাবি তুলেছে।

তারিখ: ২৯.১১.২০২৪

আইনজীবী হত্যার সঙ্গে সনাতনী কেউ জড়িত নয়, দোষ চাপানোর চেষ্টা চলছে

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সনাতনীদের জড়িত থাকার বিষয়টি নাকচ করেছে। তাদের দাবি, একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে সনাতনীদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় জোটটি প্রতিবাদ জানিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে।
আইনজীবী হত্যার সঙ্গে সনাতনী কেউ জড়িত নয়, দোষ চাপানোর চেষ্টা চলছে

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সনাতনীদের জড়িত থাকার বিষয়টি নাকচ করেছে। তাদের দাবি, একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে সনাতনীদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় জোটটি প্রতিবাদ জানিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছে, চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে সনাতনীদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা জানিয়েছে, একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে সনাতনীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার চেষ্টা করছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘‘চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আজ চট্টগ্রাম আদালতে আনা হয়, এবং সেখানে তাকে মিথ্যা ও কথিত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।’’ আদালতে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। এরপর চট্টগ্রামে সাধারণ সনাতনীরা তার মুক্তির দাবিতে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। হাজার হাজার সনাতনী আন্দোলনে অংশ নিয়ে প্রিজন ভ্যানের সামনে শুয়ে প্রতিবাদ জানায়। তবে, সেই প্রতিবাদ চলাকালে সনাতনীদের ওপর হামলা চালানো হয়। তাদের ছড়িয়ে পড়ার পর হামলার ঘটনা ঘটে।

জোটের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘‘সনাতনীরা সবসময় অন্য ধর্মের উপাসনালয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তারা কখনোই মসজিদে হামলা করেনি। মসজিদে হামলা হয়েছিল, তবে সেটা ছিল গুজব এবং অন্যদের জড়ো করার চেষ্টা।’’ সনাতনরা দাবি করেছে, হামলাকারীরা সাইফুল ইসলাম আলিফকে মারাত্মকভাবে জখম করেছে, এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত খবর যে ‘‘ইসকনের সদস্যরা তাকে জবাই করেছে’’—তা মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে নিরস্ত্র অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়, এবং তাঁর মুক্তির জন্য সনাতনীরা আদালত চত্বরে আন্দোলন চালায়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘‘চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি চেয়ে সাধারণ সনাতনীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন।’’ তাদের দাবি, ‘‘এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা সনাতন ধর্মের প্রতি সহিংসতার চিত্র তুলে ধরে।’’

এই ঘটনায় জোটটি আরও দাবি করেছে, ‘‘এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, এবং আমরা এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’’ তারা অভিযোগ করেছে যে, আদালত চত্বর থেকে বের হয়ে সাদাপোশাকধারীরা স্লোগান দিয়ে সেবক কলোনিতে আগুন দেয় এবং ফিরিঙ্গিবাজার রোডে লোকনাথ মন্দিরে হামলা চালায়।

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের পক্ষ থেকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। তাদের দাবি, ‘‘এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যেই গোষ্ঠী দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি প্রদান করা উচিত।’’

এছাড়া, জোটটি জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা আট দফা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। তাদের আন্দোলন মূলত সনাতন সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং অধিকার রক্ষার জন্য।

এই ঘটনা বাংলাদেশে ধর্মীয় সহিষ্ণুতার উপর একটি গুরুতর প্রশ্নবোধক চিত্র তৈরি করেছে। সনাতনদের দাবি, তারা সবসময় শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস, এবং তারা কখনোই অন্য ধর্মের স্থানে আক্রমণ করেনি। তাদের দাবি, গুজব ও অপপ্রচারের মাধ্যমে সনাতনদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

এপিপিজি এবং অন্যান্য সংগঠনের চোখে, এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা এবং ভ্রান্ত তথ্য ছড়ানোর প্রবণতার নতুন উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

আইনজীবী সাইফুলের জানাজায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের জানাজায় অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। আজ বুধবার চট্টগ্রামের জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমসহ স্থানীয় নেতারা। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আইনজীবী সাইফুলের জানাজায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের জানাজায় অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। আজ বুধবার চট্টগ্রামের জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমসহ স্থানীয় নেতারা। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে আজ বুধবার আইনজীবী সাইফুল ইসলামের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ১১টায় নগরের জামিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত জানাজায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

জানাজার আগে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সারজিস আলম সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং বিচারের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘‘আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা চুপ করে বসে থাকব না।’’ এছাড়াও, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

জানাজায় জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম নগরের আমীর শাহজাহান চৌধুরী নামাজ পরিচালনা করেন। তিনি নিহত আইনজীবী ও তাঁর পরিবারের জন্য দোয়া করেন এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন। শাহজাহান চৌধুরী ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিও জানান, যা জানাজার পর উপস্থিত জনতার মধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে।

এই জানাজার আগে চট্টগ্রাম আদালতে সাইফুল ইসলামের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও আইনজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন এবং হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে দ্রুত বিচার দাবি করেন।

চট্টগ্রামের টাইগার মোড়ে প্রতিবাদী ছাত্র-জনতার একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রায় চার শতাধিক ছাত্র ও জনতা অংশগ্রহণ করে এবং হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করে। সারজিস আলম সেখানে বক্তব্য দেন এবং হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।

চট্টগ্রামের এই ঘটনা বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছে ছাত্র-জনতা, যা সামগ্রিক পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত করে তোলে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

‘কট্টরপন্থীদের নিয়ন্ত্রণ করুক ইউনুস সরকার’, চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারিতে সরব রবি শংকর

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় প্রতিবাদকারী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং ভারত সরকারের প্রতিবাদ তীব্র হয়ে উঠেছে। গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে, যা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে আরও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ লাঠিচার্জ এবং গ্রেনেড ছোঁড়ার খবরও পাওয়া গেছে। রবি শংকর বলেন, ‘বাংলাদেশে যা ঘটছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং আমরা আশা করি যে, শান্তির নোবেল পাওয়া প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস এর থেকে কিছু ভালো কাজ করবেন।’
‘কট্টরপন্থীদের নিয়ন্ত্রণ করুক ইউনুস সরকার’, চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারিতে সরব রবি শংকর

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় প্রতিবাদকারী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং ভারত সরকারের প্রতিবাদ তীব্র হয়ে উঠেছে। গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে, যা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে আরও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ লাঠিচার্জ এবং গ্রেনেড ছোঁড়ার খবরও পাওয়া গেছে। রবি শংকর বলেন, ‘বাংলাদেশে যা ঘটছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং আমরা আশা করি যে, শান্তির নোবেল পাওয়া প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস এর থেকে কিছু ভালো কাজ করবেন।’

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মুখর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারির পর দেশজুড়ে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হলে তাঁর পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়, যা উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। সনাতনী ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে এটি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং বিক্ষোভকারীদের থামাতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে। বিক্ষোভের মাঝেই এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই ঘটনায় ভারত সরকার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে বলা হয়, ‘‘চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারি এবং জামিন না পাওয়ার ঘটনা আমরা যথেষ্ট উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি।’’ তারা দাবি করে, ‘‘বাংলাদেশ মৌলবাদীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে, যেখানে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর লাগাতার আক্রমণ চলছে।’’ ভারত সরকার বাংলাদেশ প্রশাসনকে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানায়।

তবে বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ খারিজ করা হয় এবং বলা হয়, ‘‘চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারি নিয়ে ভারতের যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তা ভিত্তিহীন এবং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপন্থী।’’

এদিকে, চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারির ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামের আদালত চত্বরে বিক্ষোভ এবং আইনজীবী হত্যার অভিযোগে ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের মধ্যে অধিকাংশই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য বলে জানা গেছে।

চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারের পর, ভারতের বিশিষ্ট হিন্দু সংগঠক রবি শংকর তার গ্রেপ্তারির তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘‘চিন্ময় দাস কোনো অস্ত্র হাতে তুলে সরকারের বিরুদ্ধে নামেননি। তিনি শুধু বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেছে।’’ তিনি বাংলাদেশের সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেন এবং কট্টরপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানান, যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চিত্র নষ্ট করছে।

রবি শংকর আরও বলেন, ‘‘বাংলাদেশে যা ঘটছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং আমরা আশা করি যে, শান্তির নোবেল পাওয়া প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস এর থেকে কিছু ভালো কাজ করবেন।’’ তিনি বাংলাদেশের সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আবেদন জানান এবং পরিস্থিতি শোধরানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন।

চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারী, যিনি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের প্রধান মুখ, বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে চলমান অত্যাচার, নির্যাতন ও খুনের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। তার গ্রেপ্তারের পর সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, যার ফলে দেশজুড়ে বিক্ষোভের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, ইন্টারন্যাশনাল কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) বাংলাদেশও তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। তারা জানায় যে, চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারির ঘটনায় তারা কোনো ধরনের সমন্বয় বা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেনি। তবে তারা সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।

এদিকে, বাংলাদেশ সরকারের জন্য এটি একটি কঠিন মুহূর্ত। সংখ্যালঘুদের অধিকার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে, যদি সরকার এই পরিস্থিতির দ্রুত এবং কার্যকরী সমাধান না খুঁজে পায়।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি গ্রুপের

যুক্তরাজ্যের সংসদীয় গ্রুপ অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ ফর দ্য কমনওয়েলথ (এপিপিজি) বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের একটি প্রতিবেদন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে পাঠানো হয়েছে, যেখানে আইনকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন, এবং আইনশৃঙ্খলার অবস্থার উপর প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি গ্রুপের

যুক্তরাজ্যের সংসদীয় গ্রুপ অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ ফর দ্য কমনওয়েলথ (এপিপিজি) বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের একটি প্রতিবেদন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে পাঠানো হয়েছে, যেখানে আইনকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন, এবং আইনশৃঙ্খলার অবস্থার উপর প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: যুক্তরাজ্যের সংসদীয় গ্রুপ অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ ফর দ্য কমনওয়েলথ (এপিপিজি) বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে দেশের আইনগত পরিস্থিতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে পাঠানো হয়েছে।

এপিপিজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থির এবং সহিংসতার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে ২ হাজারেরও বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সরকার (অন্তর্বর্তী সরকার) বিচারব্যবস্থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ব্যবহার করছে, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে।

এপিপিজি প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করেছে যে, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা তাদের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘আইনকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের সংস্কৃতি অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।’’ তারা আরও বলে যে, ‘‘মানবাধিকার এবং আইনের শাসন বজায় রাখতে হবে।’’ অন্যথায়, এটি বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর হবে।

এপিপিজির প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের আইনগত পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কিছু উদ্বেগের বিষয় তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘অথর্ব হত্যাকাণ্ডের মামলার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে’’ এবং ‘‘আইনের শাসনের অভাব’’ রয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক বিচারপতি, আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা, যা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

একটি সূত্রে বলা হয়, ‘‘আওয়ামী লীগে যুক্ত প্রায় ১ লাখ ৯৪ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে, এর মধ্যে ২৬ হাজার ২৬৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং বাকি প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার জনের নাম অজ্ঞাত রাখা হয়েছে।’’ এসব মামলার মধ্যে অনেকেই ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছেন, এবং তা গণমাধ্যমের বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করেছে।

এছাড়া, প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন এবং উগ্রবাদী ইসলামী গোষ্ঠীগুলোর উত্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এপিপিজি বলছে, ‘‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার এবং ইসলামী উগ্রবাদীদের উত্থান উদ্বেগের বিষয়, এবং আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ সরকারের জন্য একটি আন্তর্জাতিক বার্তা প্রেরণ করা হয়েছে। এপিপিজি জানায়, ‘‘বাংলাদেশ সরকার অবশ্যই মানবাধিকার, গণতন্ত্র, এবং আইনের শাসন বজায় রাখবে—এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে সকল নাগরিক তাদের অধিকার ভোগ করতে পারবে।’’

এপিপিজি প্রতিবেদনটি ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে পাঠানোর পর, এর গুরুত্ব আরও বাড়ছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এর পরিণতি কী হতে পারে তা দেখার অপেক্ষা রয়েছে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ব্রিটেনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমারের মন্ত্রিসভায় শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক ট্রেজারি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যা বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা যোগ করে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

হিন্দু সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, কী প্রতিক্রিয়া অভিষেকের?

চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তার ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে। শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি আন্তর্জাতিক হওয়ায় কেন্দ্র সরকার যে পদক্ষেপ নেবে, তারা দলগতভাবে তার সমর্থন জানাবে।
হিন্দু সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, কী প্রতিক্রিয়া অভিষেকের?

চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তার ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে। শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি আন্তর্জাতিক হওয়ায় কেন্দ্র সরকার যে পদক্ষেপ নেবে, তারা দলগতভাবে তার সমর্থন জানাবে।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তার এবং তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার জেরে গত দুই দিন ধরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। পরিস্থিতি ক্রমেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রামে সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামের মৃত্যু পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

এই ঘটনাগুলো নিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতেও আলোচনা শুরু হয়েছে। ইউনুস সরকারের সঙ্গে নয়াদিল্লির চিঠিপত্র চালাচালি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব বুধবার বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তার এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা নিয়ে তারা কেন্দ্র সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। বিজেপি দাবি করেছে, বাংলাদেশ বর্তমান সরকারের অধীনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা চরম বিপন্ন।

তৃণমূলের অবস্থান

বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস শুরু থেকেই সতর্ক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি আন্তর্জাতিক হওয়ায় কেন্দ্র সরকার যে পদক্ষেপ নেবে, তারা দলগতভাবে তার সমর্থন জানাবে।

বুধবার দিল্লিতে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা বারবারই এ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেছি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, দলগতভাবে আমরা তার পাশে থাকব। তবে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং দুর্ভাগ্যজনক।’’

প্রতিবাদে উত্তপ্ত বাংলাদেশ

চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারির পর তাঁর সমর্থনে পথে নামে সনাতনী সংগঠনগুলো। এর জেরে কয়েকটি জায়গায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রামে সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংগঠনগুলো এই ঘটনাগুলোকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে। তারা দাবি করছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি এই ধরনের আক্রমণ দেশের ভেতরে-ভেতরে বিদ্যমান অসহিষ্ণু পরিবেশেরই বহিঃপ্রকাশ।

প্রতিবেশী সম্পর্কের প্রভাব

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এরই মধ্যে নয়াদিল্লি ও ঢাকা একে অপরের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশের সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে, সেটি নিয়ে আলোচনা চলছে। এদিকে, ভারতের বিভিন্ন মহলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে ভারতে যে প্রতিক্রিয়া হচ্ছে

বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলা ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের কাছে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ করেছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি গুরুত্ব পেলেও পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমে সংযম দেখা গেছে। (সূত্রঃ বিবিসি)
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে ভারতে যে প্রতিক্রিয়া হচ্ছে

বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলা ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের কাছে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ করেছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি গুরুত্ব পেলেও পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমে সংযম দেখা গেছে। (সূত্রঃ বিবিসি)

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও সেদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলার ঘটনায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি ঘিরে ভারতের হিন্দুত্ববাদী দলগুলি কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তখনই তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর এর পাল্টা বিবৃতিতে জানিয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে কিছু মহল ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। এটি শুধু সত্যকে বিকৃতই করছে না, বরং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপন্থী।

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, “সারা বিশ্বের হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যদি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার বন্ধ না হয়, তাহলে আরও জোরালো আন্দোলন করা হবে।” মঙ্গলবার রাতে কলকাতার বেহালা অঞ্চলে কোনো দলীয় পতাকা ছাড়াই বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মশাল মিছিল করেছেন।

ভারতের গণমাধ্যমে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও বাংলাদেশের সহিংসতার খবর গুরুত্ব পেয়েছে। জাতীয় স্তরের ইংরেজি ও হিন্দি সংবাদপত্রে বিষয়টি প্রতিবাদী ভঙ্গিতে উপস্থাপিত হলেও পশ্চিমবঙ্গের বাংলা সংবাদমাধ্যমে কিছুটা সংযতভাবে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, “Monk arrest: India flags safety of Hindus, Dhaka says it is deeply hurt,” আর হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, “Protect all minorities, India tells Bangladesh after arrest of Hindu priest।”

পশ্চিমবঙ্গের বাংলা পত্রিকাগুলিও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে শিরোনাম করেছে। আনন্দবাজার পত্রিকা প্রথম পাতায় উল্লেখ করেছে, “চিন্ময়কৃষ্ণকে নিয়ে কড়া বিবৃতি দিল্লির, পাল্টা ঢাকারও।”

গণমাধ্যম বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের ঘটনাগুলি নিয়ে ভারতের জাতীয় স্তরের গণমাধ্যম তুলনামূলক আগ্রাসী কণ্ঠস্বর তুলেছে। বিশেষ করে টিভি চ্যানেলগুলির কভারেজে বিষয়টি প্রতিবাদী সুরে উপস্থাপিত হয়েছে।

বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক ও সামাজিক স্তরে উত্তেজনা চলছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এবং বোঝাপড়ার প্রভাব কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা সময়ই বলে দেবে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

চিন্ময় দাস গ্রেফতার: চট্টগ্রামে সংঘর্ষে উত্তাল পরিস্থিতি

চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তার সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পিপি সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন এবং অন্তত ১০ জন আহত হন। একাধিক বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং ব্যাপক গ্রেফতারের ফলে চট্টগ্রামের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে পড়েছে।
চিন্ময় দাস গ্রেফতার: চট্টগ্রামে সংঘর্ষে উত্তাল পরিস্থিতি

চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তার সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পিপি সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন এবং অন্তত ১০ জন আহত হন। একাধিক বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং ব্যাপক গ্রেফতারের ফলে চট্টগ্রামের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে পড়েছে।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে হিন্দু সন্ন্যাসী এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সোমবার চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় তার সমর্থকরা প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করেন এবং পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ চলাকালীন পিপি প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন এবং অন্তত ১০ জন আহত হন।

ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে জানা যায়, বিক্ষোভকারীরা পাথর নিক্ষেপ করায় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। ঘটনাস্থলে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে চিন্ময় দাসের ৩০ জন সমর্থককে আটক করে। তবে, আটককৃতদের পরিচয় এখনও যাচাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

উপস্থিত বিক্ষোভকারীদের একাংশ চট্টগ্রামের সেবাক কলোনিতে বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। নন্দন কানন ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ আলী জানান, বিক্ষোভকারীরা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের কাজে বাধা দেয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এ ঘটনার সূত্রপাত গত ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামের একটি ইসকন পুরোহিত সমাবেশে। সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে ফিরোজ খানের দায়ের করা মামলায় চিন্ময় দাসসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়।

ইসকন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিন্ময় দাসের গ্রেফতারের বিষয়ে পৃথক দুটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। বিবৃতিতে সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশ তাদের জন্মভূমি এবং তারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে। ইসকন বাংলাদেশের বক্তব্য অনুযায়ী, সকল ধর্মের প্রতি সহনশীলতা বজায় রাখা এবং উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন যৌথ বাহিনী মোতায়েন করেছে। সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

পুলিশের তিন মামলা, ফুটেজ দেখে হত্যায় জড়িত সাতজন শনাক্ত

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের পর পুলিশের ওপর হামলা ও এক আইনজীবীকে হত্যা করা হয়। ঘটনায় ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এর মধ্যে সাতজন আইনজীবী হত্যায় জড়িত। মামলায় মোট ১,৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশের তিন মামলা, ফুটেজ দেখে হত্যায় জড়িত সাতজন শনাক্ত

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের পর পুলিশের ওপর হামলা ও এক আইনজীবীকে হত্যা করা হয়। ঘটনায় ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এর মধ্যে সাতজন আইনজীবী হত্যায় জড়িত। মামলায় মোট ১,৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামের আদালত ভবনের কাছাকাছি আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ৭৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১,৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় বুধবার বিকেলে পুলিশ বাদী হয়ে এসব মামলা দায়ের করে এবং ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নগরের কোতোয়ালি এলাকার বান্ডিল সেবক কলোনির বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত করা হয়েছে সাতজনকে, যারা সাইফুল ইসলামের উপর হামলা চালিয়েছিল। তারা হলেন রুমিত দাশ, সুমিত দাশ, গগন দাশ, নয়ন দাশ, বিশাল দাশ, আমান দাশ, ও মনু মেথর। তাদের মধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, সাইফুলের হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে এবং নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে রাতে হত্যা মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালত ভবনের সামনে রঙ্গম সিনেমা হলের কাছে বান্ডিল রোডের সেবক কলোনি এলাকায় সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করছে। ভিডিওতে কয়েকজনের মাথায় হেলমেটও দেখা যায়। এই দৃশ্য দেখে মনে হয়, হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী কিছু ব্যক্তি সাইফুলের নিথর দেহের উপর বেধড়ক হামলা চালাচ্ছিল।

ঘটনার আগে সাইফুলসহ কিছু আইনজীবী প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে বান্ডিল রোডে যান। সেখানে সশস্ত্র লোকজন তাদের ধাওয়া করে, ফলে সাইফুল হোঁচট খেয়ে পড়ে যান এবং বাকিরা প্রাণে বেঁচে যান। একজন প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী মো. হাসান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার সঙ্গে সংযুক্ত এক আসামি, সুমিত দাশের মা মুক্তা দাশ প্রথম আলোকে জানান, তার ছেলে সিটি করপোরেশনে সেবক হিসেবে কাজ করেন এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন। তিনি দাবি করেন, সুমিতের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অসত্য। অপরদিকে, নগরের কোতোয়ালি থানার সামনে গ্রেপ্তারকৃতদের স্বজনদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।

এদিকে, গত মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন, যা পুলিশ এবং বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে রূপ নেয়। পুলিশ লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আড়াই ঘণ্টা পর, বেলা তিনটার দিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত এসব ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের শনাক্ত করতে কাজ করছে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

ইসকন নিষিদ্ধের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে একাধিক সমাবেশ করেছে। হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন ছয়জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ইসকন নিষিদ্ধের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে একাধিক সমাবেশ করেছে। হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন ছয়জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে জামিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় আইনজীবী সাইফুল ইসলামের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। জানাজা শেষে একটি বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সব ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে কেউ উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করলে তা সহ্য করা হবে না। ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে।’’ তিনি আরও দাবি করেন, ইসকন আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় ভারতের প্রেসক্রিপশন অনুসারে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে।

অপর বক্তা সারজিস আলম বলেন, ‘‘আমরা সব ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু কেউ যদি এই সহানুভূতিকে দুর্বলতা মনে করে, তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না। চট্টগ্রামে ইসকনের কোনো জায়গা হবে না।’’

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার প্রতিবাদে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আরও একটি সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেখানেও ইসকনকে ‘‘জঙ্গি’’ ও ‘‘সন্ত্রাসী’’ সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়ে বক্তব্য দেন সংগঠনের নেতারা।

মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা মোদিকে নিয়ে বাংলাদেশের মাটির দিকে হাত বাড়াচ্ছে। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের মানচিত্রে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করলে দেশের মানুষ সেই হাত গুঁড়িয়ে দিতে প্রস্তুত।’’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভায় ‘‘সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে দেখলেই গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার সিদ্ধান্ত’’ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় অন্তত ছয়জন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানানো হয়, ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এখনো তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এছাড়া ২৬ নভেম্বর আদালত চত্বরে সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আরও ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ দেশীয় ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভসহ (ককটেল) ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে, যারা আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্য বলে দাবি করা হয়েছে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

দুষ্কৃতকারীরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: সনাতন একতা মঞ্চ

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় আট দফা দাবি জানিয়েছে সনাতন একতা মঞ্চ। দুষ্কৃতকারীদের বিচারের পাশাপাশি সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার যে উদ্যোগ চলছে, তা গভীর উদ্বেগের বিষয় বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
দুষ্কৃতকারীরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: সনাতন একতা মঞ্চ

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় আট দফা দাবি জানিয়েছে সনাতন একতা মঞ্চ। দুষ্কৃতকারীদের বিচারের পাশাপাশি সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার যে উদ্যোগ চলছে, তা গভীর উদ্বেগের বিষয় বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সনাতন একতা মঞ্চ। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বুধবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের নেতারা এ দাবি জানান। সংগঠনটির মতে, হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা সমাজের শান্তি নষ্ট করতে চাওয়া দুষ্কৃতকারী।

মঞ্চের সভাপতি মিথুন ভট্টাচার্য বলেন, ‘আইনজীবী হত্যার দায় কোনোভাবেই সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর বর্তায় না। কিছু দুষ্কৃতকারী সনাতনীদের মধ্যে মিশে গিয়ে অরাজকতা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছে।’

সংবাদ সম্মেলনে সনাতন সম্প্রদায়ের আট দফা দাবি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এসব দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ না দেওয়া, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, এবং গ্রেপ্তারকৃত সনাতনী নেতাদের মুক্তি।

সংগঠনের প্রতিনিধি সুস্মিতা কর লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সম্প্রদায় কখনোই ধর্মনিরপেক্ষতার অবসান চায় না। ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদের শক্তি। সাম্প্রতিক সময়ে সনাতনী নেতাদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব মামলা দ্রুত প্রত্যাহার এবং আট দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’

মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি স্বামী মহেশ্বরানন্দ পুরী মহারাজ বলেন, ‘বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করার স্বপ্ন আমরা দেখি। কিন্তু সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার প্রচেষ্টা সংখ্যালঘুদের মধ্যে গভীর শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আইনজীবী হত্যাকাণ্ড এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হওয়া নানা নির্যাতনের ঘটনায় আমাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। আট দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে এ সংকট আরও গভীর হবে।’

মঞ্চের নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দাবিগুলো শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হোক। তারা আরও জানান, পূজার সময় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে কিছু আলোচনা হলেও, তাদের অন্য দাবিগুলো নিয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার বিচার ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সনাতন একতা মঞ্চ। তারা সতর্ক করেছে, দুষ্কৃতকারীরা যদি ধরা না পড়ে এবং আট দফা দাবি বাস্তবায়ন না হয়, তবে তা দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

ভৈরবে হিন্দু পরিবারের চার সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যু

কিশোরগঞ্জের ভৈরব শহরে এক মর্মান্তিক ঘটনায় একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, স্বামী জনি বিশ্বাস স্ত্রী, দুই সন্তান এবং নিজেকে হত্যার মাধ্যমে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ভৈরবে হিন্দু পরিবারের চার সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যু

কিশোরগঞ্জের ভৈরব শহরে এক মর্মান্তিক ঘটনায় একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, স্বামী জনি বিশ্বাস স্ত্রী, দুই সন্তান এবং নিজেকে হত্যার মাধ্যমে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

কিশোরগঞ্জ, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: কিশোরগঞ্জের ভৈরব শহরের রানীবাজার এলাকায় সাততলা ভবনের ছয়তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন জনি বিশ্বাস (৩২) ও তাঁর স্ত্রী নিপা রানী মল্লিক (২৬)। এই দম্পতি এবং তাঁদের দুই শিশু সন্তানের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে বুধবার স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রতিবেশীরা তাঁদেরকে শান্ত, ভদ্র ও সুখী পরিবার হিসেবে জানতেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে, ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে প্রতিবেশীরা একই কক্ষে পরিবারের চারজনের মৃতদেহ দেখতে পান। জনি বিশ্বাসের লাশ ঝুলছিল ফ্যানের সঙ্গে, স্ত্রী নিপার গলা কাটা অবস্থায় এবং দুই শিশু ধ্রুব (৭) ও কথা (৪)-এর লাশ খাটে পড়ে ছিল। নিপা রানী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

স্থানীয় পুলিশ জানায়, ঘটনাটি হত্যার পর আত্মহত্যার ঘটনা হতে পারে। জনির মা শিখা রানী বিশ্বাস অজ্ঞাতনামা আসামি করে ভৈরব থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ।

জনি-নিপার প্রতিবেশীরা জানান, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন থাকলেও তাঁরা কখনো কারও কাছে সাহায্য চাননি। জনির পেশা ছিল মোটর ওয়ার্কশপে হেডমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করা। স্ত্রী নিপা রানী ছিলেন গৃহিণী। তাঁদের বড় ছেলে ধ্রুব স্থানীয় একটি স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ত।

জনি-নিপার সঙ্গে সাবলেট থাকা কার্তিক ও সৃষ্টি দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সৃষ্টির বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁরা ঘটনার সময় ঘুমিয়ে ছিলেন এবং কিছুই টের পাননি।

পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহিন জানিয়েছেন, বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, জনি বিশ্বাস নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে ঘটনার সঙ্গে নেশার কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

জনির ছোট ভাই পলাশ বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।’ এ কারণে তাঁরা হত্যা মামলা করেছেন।

ভৈরবের এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকার বাসিন্দারা শোকাহত। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, দ্রুতই এই রহস্য উন্মোচিত হবে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে বাংলাদেশে মামলা, শুনানির সিদ্ধান্ত নিল ঢাকার হাই কোর্ট

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারি এবং সংশ্লিষ্ট সংঘর্ষে এক আইনজীবীর মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইসকন নিষিদ্ধ এবং চট্টগ্রাম ও রংপুরে জরুরি অবস্থা জারির আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)
ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে বাংলাদেশে মামলা, শুনানির সিদ্ধান্ত নিল ঢাকার হাই কোর্ট

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারি এবং সংশ্লিষ্ট সংঘর্ষে এক আইনজীবীর মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইসকন নিষিদ্ধ এবং চট্টগ্রাম ও রংপুরে জরুরি অবস্থা জারির আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকনের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। আপাতত তিনি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, বন্দি অবস্থায় তাঁর ধর্মীয় অধিকার সুরক্ষিত রাখতে হবে।

চিন্ময়ের গ্রেফতারির পর থেকে ইসকন সংগঠনের সমর্থকদের নেতৃত্বে সারা দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁর মুক্তির দাবিতে পথে নেমেছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম ও রংপুরে সংঘর্ষে এক আইনজীবী নিহত এবং পুলিশসহ ৩৭ জন আহত হয়েছেন।

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুগামীদের সংঘর্ষে একজন আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার চট্টগ্রাম আদালতে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে।

চিন্ময়ের গ্রেফতারির প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ইসকনকে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও রংপুরে জরুরি অবস্থা জারির আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ইসকনকে ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন বলে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং ধর্মীয় অধিকার সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

চিন্ময়কৃষ্ণের আহ্বানে সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের সমাবেশে যোগ দেওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। সোমবার এই মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই দেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের একাধিক অভিযোগ উঠেছে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, ধর্মীয় স্থাপনায় ভাঙচুরসহ বিভিন্ন ঘটনার শিকার হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।

চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি ও দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে হাইকোর্ট আগামী দিনের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে আদালতে প্রাসঙ্গিক তথ্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা বিপন্ন অবস্থায়, এটি বিশ্বকে দেখাতে চায় ভারত, অভিযোগ গণতন্ত্র মঞ্চের

গণতন্ত্র মঞ্চের দাবি, প্রতিবেশী ভারত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদী, অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং ভারতের প্রতিক্রিয়াগুলোকে তারা উসকানিমূলক ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ বলেছে। এক সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা বিপন্ন অবস্থায়, এটি বিশ্বকে দেখাতে চায় ভারত, অভিযোগ গণতন্ত্র মঞ্চের

গণতন্ত্র মঞ্চের দাবি, প্রতিবেশী ভারত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদী, অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং ভারতের প্রতিক্রিয়াগুলোকে তারা উসকানিমূলক ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ বলেছে। এক সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে জঙ্গিবাদী ও অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে তুলে ধরার জন্য প্রতিবেশী ভারত পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। আজ বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক এ কথা বলেন।

সাইফুল হক বলেন, ‘পঞ্চম আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরাজয়কে বিজেপি সরকার তাদের পরাজয় হিসেবে দেখছে। এ কারণে বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত সরকার এ বিষয়ে যে ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছে, তা একধরনের উসকানি।’

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাগুলোর বিষয়ে বলেন, ‘আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত আমাদের জন্য অশুভ ইঙ্গিত বহন করছে। সরকার যথাসময়ে ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।’

পত্রিকা অফিসের সামনে গরু জবাইয়ের ঘটনার বিষয়ে মান্না বলেন, ‘এটি একটি বীভৎস ঘটনা। মতভেদ থাকলে সেটা প্রকাশের পদ্ধতি থাকতে হবে। অস্ত্রের ভাষায় কথা বলার চেষ্টা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারকে এমন ঘটনার পূর্ব লক্ষণগুলো দেখে সতর্ক হতে হবে।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘হত্যার পদ্ধতি দেখে বোঝা যায়, এটি এমনভাবে ঘটানো হয়েছে যাতে মুসলমানরা হিন্দুদের ওপর হামলা করে। এই ধরনের ঘটনা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে কলঙ্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে।’

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘চট্টগ্রামের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপান্তর করার চেষ্টা সবাই মিলে প্রতিহত করা গেছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে উসকানি দেওয়া হচ্ছে, তা জনগণের সচেতনতা দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে প্রতিবেশী দেশের এমন প্রতিক্রিয়া নজিরবিহীন। কিছু ব্যক্তি মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে এবং গণমাধ্যমকে বিভিন্নভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টা চলছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরও বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তারা।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

বাংলাদেশ নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থানের পাশেই তৃণমূল: অভিষেক! উপদূতাবাসে স্মারকলিপি শুভেন্দুর

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ভারত সরকার যে অবস্থান নেবে, তৃণমূল সেটিকে সমর্থন করবে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছে। এদিকে, শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশ উপদূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতির দাবি জানিয়েছেন। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)
বাংলাদেশ নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থানের পাশেই তৃণমূল: অভিষেক! উপদূতাবাসে স্মারকলিপি শুভেন্দুর

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ভারত সরকার যে অবস্থান নেবে, তৃণমূল সেটিকে সমর্থন করবে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছে। এদিকে, শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশ উপদূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতির দাবি জানিয়েছেন। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

কলকাতা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয় পক্ষই অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বুধবার দিল্লিতে, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিতে এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা বিদেশের ব্যাপার, আমরা এর মধ্যে মন্তব্য করতে চাই না। তবে তৃণমূলের অবস্থান পরিষ্কার, ভারত সরকার যে পদক্ষেপ নেবে, তৃণমূল তাকে সমর্থন করবে।”

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, বাংলাদেশে যে ঘটনা ঘটেছে, তা “দুর্ভাগ্যজনক।” চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। গত মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের ছ’টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে তৃণমূলের জয় পাওয়ার পর, রাজ্য সরকারের শাসক দল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। যদিও এদিকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের শাসক দলের অবস্থান খুবই পরিষ্কার: তারা কেন্দ্রের সঙ্গে একমত।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য কেবল কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থানই নয়, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের অঙ্গীকারও স্পষ্ট করেছে। এর আগে, গত আগস্টে বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পরও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নেবে, রাজ্য সেই সিদ্ধান্ত মেনে চলবে। এবার তার ভাইপো, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে সেই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এই পরিস্থিতিতে আরও জোরালো বিরোধিতা করছে। বিজেপির রাজ্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বুধবার বাংলাদেশ উপদূতাবাসে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন, যাতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে। শুভেন্দু বলেন, “চিন্ময় কৃষ্ণকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে এবং দ্রুত আগের পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি, কিন্তু যদি ফল না হয়, আগামী দিনে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”

রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে, পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরায়ও বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে। তিনি সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছিলেন এবং সম্প্রতি বাংলাদেশের চট্টগ্রামে সংখ্যালঘুদের এক সমাবেশ আয়োজন করেছিলেন। তার পরেই তাকে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। গত সোমবার তার জামিনের আবেদন খারিজ করা হয় এবং বুধবার বাংলাদেশের হাই কোর্টে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে বাংলাদেশে চট্টগ্রাম, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবারের এক সংঘর্ষে একজন আইনজীবী নিহত হয়েছেন, যা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরা সীমান্তের কাছেও বাংলাদেশে পরিস্থিতি নিয়ে বিক্ষোভ দেখা গেছে, যা অঞ্চলটির রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রভাব ফেলছে।

এদিকে, বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনা ভারতীয় রাজনীতিতেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং তা তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে একটি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

আইনজীবী হত্যায় আটক ছয়জনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

চট্টগ্রামে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ, যাদের ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, পুলিশের ওপর হামলা এবং আইনজীবী হত্যার ঘটনায় ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল হত্যার নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করেছে।
আইনজীবী হত্যায় আটক ছয়জনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

চট্টগ্রামে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ, যাদের ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, পুলিশের ওপর হামলা এবং আইনজীবী হত্যার ঘটনায় ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল হত্যার নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করেছে।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনকে আটক করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত এই ছয়জনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আজ বুধবার এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয় যে, এই ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত মঙ্গলবার সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ছয় সদস্যও রয়েছেন, যাদের কাছ থেকে ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এই হত্যার ঘটনায় প্রথম আলোকে বলেন, বিক্ষোভকারীরা সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তিনি এ হত্যাকাণ্ডকে অত্যন্ত দুঃখজনক হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এর দ্রুত বিচার দাবি করেন।

এদিকে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন এবং এ বিষয়ে একটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনা উচিত।’’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) জানায়, সাইফুল ইসলাম হত্যার পর পুলিশ সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা ও আইনজীবী হত্যার ঘটনায় ৩০ জনকে আটক করেছে। গত রাতেই নগরের কোতোয়ালি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটককৃতদের গ্রেপ্তার করা হয়। আটকদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন দলের সদস্য, এবং পুলিশ এখন তাদের সংশ্লিষ্টতা যাচাই-বাছাই করছে।

সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেছেন, ‘‘এই ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। হত্যাকাণ্ড ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে।’’

সাম্প্রতিক সময়ে, সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলি বিচারের দাবি জানিয়েছে এবং সবার কাছে শান্তি ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এর মধ্যে, চট্টগ্রামের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভও অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এই ঘটনা একদিকে যেমন চট্টগ্রামের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করেছে, তেমনি দেশের অন্য অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে উদ্বেগও সৃষ্টি করেছে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

ইসকন ও চট্টগ্রামের ঘটনা হাইকোর্টে উপস্থাপন, কাল পদক্ষেপ জানাবে রাষ্ট্রপক্ষ

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সনাতনী সংগঠনগুলোর সংঘর্ষে আইনজীবী হত্যার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে হাইকোর্টে শুনানি হয়েছে। আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি সম্পর্কে অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দিয়েছে। ইসকন নিষিদ্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে আদালতে একটি আরজি উত্থাপন করা হয়েছে।
ইসকন ও চট্টগ্রামের ঘটনা হাইকোর্টে উপস্থাপন, কাল পদক্ষেপ জানাবে রাষ্ট্রপক্ষ

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সনাতনী সংগঠনগুলোর সংঘর্ষে আইনজীবী হত্যার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে হাইকোর্টে শুনানি হয়েছে। আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি সম্পর্কে অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দিয়েছে। ইসকন নিষিদ্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে আদালতে একটি আরজি উত্থাপন করা হয়েছে।

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে সংঘর্ষে আইনজীবী হত্যার ঘটনার পর হাইকোর্টে রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায়ের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ বুধবার সকালে আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন আরজি উত্থাপন করেন।

আইনজীবী মনির উদ্দিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের সামনে তুলে ধরে এ বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত রুল ইস্যুর প্রার্থনা করেন। তিনি ইসকন নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, দিনাজপুর এবং রংপুরে ১৪৪ ধারা জারি করার দাবি জানান।

রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের বক্তব্যও শোনেন এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে অগ্রগতি জানাতে বলেন।

ইসকন নিষিদ্ধের দাবি

আইনজীবী মনির উদ্দিন আদালতে ইসকন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এই ঘটনার তদন্ত করতে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে নির্দেশ দেওয়া উচিত। এছাড়া জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ বিষয়ে বলেন, ‘‘ইসকনের ইস্যুটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এটি ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।’’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘‘ইসকন নিষিদ্ধ করার বিষয়টি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। আদালত তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে না।’’

অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, ‘‘এ ঘটনাকে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সরকার বিস্তারিত পর্যালোচনা করবে। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনে আগামীকাল পরিস্থিতির অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন।’’

আইনজীবী মনির উদ্দিন বিকেলে জানান, ‘‘ইসকন নিষিদ্ধসহ চট্টগ্রামের সংঘর্ষের সার্বিক পরিস্থিতি রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্টে জানাতে বলা হয়েছে।’’

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে সনাতনী সংগঠনগুলো এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক চলছে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আগামীকাল রাষ্ট্রপক্ষ পরিস্থিতির অগ্রগতি আদালতকে জানাবে।

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারে উদ্বেগ প্রকাশ ভারতের

বাংলাদেশের সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার এবং তার জামিন আবেদন নামঞ্জুরের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারে উদ্বেগ প্রকাশ ভারতের

বাংলাদেশের সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার এবং তার জামিন আবেদন নামঞ্জুরের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার এবং তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার এবং জামিন আবেদন নাকচের ঘটনাটি এমন সময় ঘটেছে, যখন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর একাধিক আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের পাশাপাশি দেবতার অবমাননা এবং মন্দিরে চুরি-ভাঙচুরের একাধিক ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হওয়া একাধিক হামলার বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণে রেখেছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, “দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, এই হামলাগুলোর পেছনে যারা জড়িত, তাদের বড় অংশকেই ছাড় দেওয়া হয়েছে। অথচ ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশে অংশগ্রহণ করা একজন ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমাবেশ করার এবং মতপ্রকাশের অধিকার সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত। এ বিষয়ে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ভারত।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। আদালতে তাকে হাজির করা হলে ভক্তরা তার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন। এই ঘটনায় সনাতনী সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে।

ভারত এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের ধর্মীয় এবং সাংবিধানিক অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

আমাদের আন্দোলন অহিংস, ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে: সনাতনী জাগরণ জোট

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতারা আজ ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তাদের আন্দোলন কখনোই সহিংস ছিল না এবং কিছু দুর্বৃত্ত তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। তারা দাবি করেছেন, সম্প্রতি চট্টগ্রামে এক আইনজীবী হত্যাকাণ্ডের পেছনে ধর্মীয় উসকানির ইঙ্গিত রয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় তারা তীব্র প্রতিবাদ জানান।
আমাদের আন্দোলন অহিংস, ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে: সনাতনী জাগরণ জোট

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতারা আজ ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তাদের আন্দোলন কখনোই সহিংস ছিল না এবং কিছু দুর্বৃত্ত তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। তারা দাবি করেছেন, সম্প্রতি চট্টগ্রামে এক আইনজীবী হত্যাকাণ্ডের পেছনে ধর্মীয় উসকানির ইঙ্গিত রয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় তারা তীব্র প্রতিবাদ জানান।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতারা নিজেদের আন্দোলনকে অহিংস এবং শান্তিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন। তারা অভিযোগ করেছেন যে, কিছু দুর্বৃত্ত তাদের আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের প্রতিনিধি সুমন রায় এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমাদের আন্দোলন কখনো সহিংস ছিল না। গতকাল (সোমবার) রাতে শাহবাগে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যে কিছু দুর্বৃত্ত ঢুকে আমাদের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করেছে।” সুমন রায় আরও দাবি করেন, চট্টগ্রামে সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকাণ্ডের পেছনে ধর্মীয় বিদ্বেষ রয়েছে এবং বর্তমানে চট্টগ্রামে অন্য হিন্দু আইনজীবীরাও ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জামিন দেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়। যদি তার জামিন না দেওয়া হয়, তবে জোটের পক্ষ থেকে কারাগারের উদ্দেশে লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়। তারা দাবি করেছেন, ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ তার বিরুদ্ধে অযৌক্তিক পদক্ষেপ নিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করার পর, সনাতনী জাগরণ জোটের সমর্থকরা ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে গিয়ে তার অবস্থান সম্পর্কে তথ্য জানতে চান। তবে সেখানে তাদের কোনো সঠিক উত্তর দেয়া হয়নি। এর পরেই, জোটের সমর্থকরা শাহবাগ থানার অনুমতি নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। কিন্তু সেখানে কিছু উগ্রবাদী ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র ও রড নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে জোটের প্রায় ৩০ জন সমর্থক আহত হন, যার মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর এবং দুই নারী সমর্থক শারীরিকভাবে নিগ্রহের শিকার হন।

জোটের নেতারা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ হামলা প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা তাদের মধ্যে আরও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তারা হামলায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন প্রথমে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাকচ হয়ে যাওয়ার পর, মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করা হয়েছে। আগামীকাল এই আপিলের শুনানি হবে এবং জোটের নেতারা আশা করছেন যে, আদালত তার জামিন মঞ্জুর করবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জোটের অন্যান্য প্রতিনিধি অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী, পলাশ কান্তি দে, তন্ময় মৌলিক প্রমুখ। তারা সরকারের কাছে সনাতনী সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানান এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

সনাতনী জাগরণ জোটের কর্মসূচির সঙ্গে আমাদের সংশ্লিষ্টতা নেই: ইসকন বাংলাদেশ

ইসকন বাংলাদেশ জানিয়েছে যে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিবাদ কর্মসূচির সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সম্প্রতি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি ইসকন বাংলাদেশের উদ্যোগ হিসেবে প্রচার করা হচ্ছিল, যা এক বিবৃতিতে অসত্য হিসেবে উল্লেখ করেছে ইসকন। তারা বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং প্রশাসন ও সংবাদমাধ্যমকে যথাযথ তথ্য যাচাইয়ের অনুরোধ জানিয়েছে।
সনাতনী জাগরণ জোটের কর্মসূচির সঙ্গে আমাদের সংশ্লিষ্টতা নেই: ইসকন বাংলাদেশ

ইসকন বাংলাদেশ জানিয়েছে যে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিবাদ কর্মসূচির সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সম্প্রতি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি ইসকন বাংলাদেশের উদ্যোগ হিসেবে প্রচার করা হচ্ছিল, যা এক বিবৃতিতে অসত্য হিসেবে উল্লেখ করেছে ইসকন। তারা বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং প্রশাসন ও সংবাদমাধ্যমকে যথাযথ তথ্য যাচাইয়ের অনুরোধ জানিয়েছে।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: ইন্টারন্যাশনাল কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) বাংলাদেশ তাদের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট বিবৃতি দিয়েছে, যেখানে তারা জানিয়েছে যে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিবাদ কর্মসূচির সঙ্গে তাদের কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক নেই। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি চালানো হচ্ছিল, এবং এতে ইসকন বাংলাদেশকে তাদের কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করার জন্য বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হচ্ছিল। ইসকন বাংলাদেশ স্পষ্টভাবে জানায় যে, উক্ত প্রতিবাদ কর্মসূচির সঙ্গে তাদের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ইসকন একটি আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংগঠন, যা গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মীয় আদর্শ এবং সনাতনী মূল্যবোধ অনুসরণ করে। তারা শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় চর্চা এবং মানবকল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও তাদের আদর্শ অনুযায়ী শান্তি, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ইসকন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট একটি স্বতন্ত্র সংগঠন এবং তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত এবং উদ্যোগ। ইসকন বাংলাদেশের কোনো ধরনের সমন্বয় বা পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ করা হয়নি। তাদের মতে, সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় ইসকন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলেও, তারা সব সময় শান্তিপূর্ণ এবং আইনসম্মত উপায়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

ইসকন বাংলাদেশ আরও জানায়, বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার কোনো প্রচেষ্টা গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটি দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জনগণকে অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রশাসন এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ জানায়, যেন তারা সঠিক তথ্য যাচাই করে পদক্ষেপ নেয়।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাব

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দেশের সংবিধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। সংগঠনটি বিদ্যমান সংবিধানের প্রস্তাব বহাল রাখার পাশাপাশি, ‘রাষ্ট্রধর্ম’ সংবলিত অনুচ্ছেদ বাতিল, সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে কিছু সংশোধনী আনার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের এই প্রস্তাব সংবিধান সংস্কার কমিশনের অনলাইন পোর্টালে জমা দেওয়া হয় এবং আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা সরকারে জমা দেওয়া হবে।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাব

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দেশের সংবিধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। সংগঠনটি বিদ্যমান সংবিধানের প্রস্তাব বহাল রাখার পাশাপাশি, ‘রাষ্ট্রধর্ম’ সংবলিত অনুচ্ছেদ বাতিল, সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে কিছু সংশোধনী আনার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের এই প্রস্তাব সংবিধান সংস্কার কমিশনের অনলাইন পোর্টালে জমা দেওয়া হয় এবং আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা সরকারে জমা দেওয়া হবে।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দেশের সংবিধান সংস্কারের জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছে। সংগঠনটি বিদ্যমান সংবিধানের বেশ কিছু বিষয় অব্যাহত রাখার পক্ষে মত প্রকাশ করেছে, তবে ‘রাষ্ট্রধর্ম’ সংবলিত সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদ বাতিলের দাবি জানিয়েছে। তাদের মতে, এই অনুচ্ছেদ সংবিধানের মূল প্রস্তাবের বিরুদ্ধে, যা ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগণের বৈষম্য এবং তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে পরিণত হওয়ার সুযোগ তৈরি করে।

গতকাল সোমবার রাতে সংবিধান সংস্কার কমিশনের অনলাইন পোর্টালে এই প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর আজ একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা তাদের এই দাবির কথা জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সংবিধানে “ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা” শীর্ষক অনুচ্ছেদটি হুবহু বহাল রাখার পক্ষে রয়েছে, কারণ এটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের চরিত্র এবং বৈশিষ্ট্যকে দৃঢ়ভাবে প্রতিস্থাপন করে, যেখানে জাতি, ধর্ম বা বর্ণের বিভেদ ছাড়াই সব মানুষকে একত্রে গ্রহণ করা হয়।

এছাড়া, সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদও তাদের মতে অব্যাহত রাখা উচিত। তারা দাবি করেন, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন এবং সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এই পরিবর্তনগুলো অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করা সম্ভব হবে এবং আইনের দৃষ্টিতে সবাইকে সমান অধিকার প্রদান করা হবে।

এছাড়া, সংগঠনটি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছে। তারা জানায়, রাষ্ট্রের বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে, যেমন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ, জাতীয় নির্বাচন কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য সাংবিধানিক পরিবর্তন আনতে হবে।

এছাড়া, তারা প্রস্তাব করেছেন যে, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগণের জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা উচিত। এর ফলে সংখ্যালঘু জনগণের মতামত এবং চাহিদা দেশের শাসন ব্যবস্থায় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হবে।

সংবিধান সংস্কার কমিশন কর্তৃক গত ৪ নভেম্বর থেকে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করার পর, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছে এই প্রস্তাবগুলো জমা দেওয়া হবে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ছয়টি কমিশন তাদের প্রস্তাব জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কারণ বাংলাদেশে সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়া বিভিন্ন পক্ষের মতামত এবং অভ্যন্তরীণ সংশোধনী নিয়ে আলোচনা করছে। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এই প্রস্তাব দেশের সংবিধানের মানবাধিকার এবং সমাজের সাম্য প্রতিষ্ঠায় এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

এছাড়া, ১০টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে ৬টি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে এবং এদের মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি দেশের আইনি কাঠামোর মৌলিক পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ, আইনজীবী নিহত

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সংঘর্ষে এক সহকারী সরকারি কৌঁসুলি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। চিন্ময়ের গ্রেপ্তার ও জামিন নামঞ্জুর হওয়া কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ, আইনজীবী নিহত

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সংঘর্ষে এক সহকারী সরকারি কৌঁসুলি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। চিন্ময়ের গ্রেপ্তার ও জামিন নামঞ্জুর হওয়া কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আইনজীবী ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষের সময় সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ (৩৫) নামের এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। সাইফুল সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) ছিলেন এবং তিনি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষে আহত আরও আটজনকে একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে শ্রীবাস দাশ, শারকু দাশ, ছোটন, সুজিত ঘোষ, উৎপল ও এনামুল হকের নাম জানা গেছে। গুরুতর আহত আরও একজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। এছাড়া চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে, যখন রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন চট্টগ্রাম আদালতে নামঞ্জুর করা হয়। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে চিন্ময়ের অনুসারীরা ভ্যান আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন।

বেলা পৌনে তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ শুরু করে। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের এক পর্যায়ে চিন্ময়ের অনুসারীদের আক্রমণে আইনজীবী আলিফ গুরুতর আহত হন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ জানান, আহত অবস্থায় সাত থেকে আটজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এ ঘটনার পর চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি তীব্র প্রতিবাদ জানায়। আইনজীবীরা সন্ধ্যা পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ চালান। তাঁরা নিহত সাইফুল ইসলামের হত্যার প্রতিবাদে আগামীকাল বুধবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।

নগর পুলিশের উপকমিশনার লিয়াকত আলী সাংবাদিকদের বলেন, “একজন মারা গেছেন। তবে কীভাবে তিনি মারা গেছেন তা এখনো নিশ্চিত নয়।”

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গত সোমবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে গ্রেপ্তার হন। তাঁর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ফিরোজ খান রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেন।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র। তাঁর নেতৃত্বে নতুন এই জোট গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে। এই সমাবেশ থেকেই জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ওঠে, যা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার কারণ হয়।

ঘটনাটি চট্টগ্রামে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগে যায়।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের বিবৃতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার সম্পর্কিত তথ্য ভুল উপস্থাপন করা হয়েছে এবং এটি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বের বিরুদ্ধে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশের সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের বিবৃতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার সম্পর্কিত তথ্য ভুল উপস্থাপন করা হয়েছে এবং এটি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বের বিরুদ্ধে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশের সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (MOFA) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (MEA) বিবৃতির প্রতি গভীর উদ্বেগ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করা এবং তার জামিন আবেদন নাকচ হওয়ার ঘটনায় ভারতীয় বিবৃতি ভুল তথ্য দিয়ে রচিত এবং এটি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতি অবমাননা।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে ভারতীয় বিবৃতিতে যে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং ব্যথার বিষয়।” তারা আরও বলেছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবং তার বিরুদ্ধে মামলা সম্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

অপরদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং এই হামলার কারণে বাংলাদেশ সরকারের উচিত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। MEA চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের পর, সংখ্যালঘুদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে হামলার বিষয়টি উল্লেখ করে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনাগুলি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং উদ্বেগজনক।” তারা আরও বলেছে, “যারা এই হামলার সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে একজন ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিবৃতির প্রতি প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, “ভারতীয় বিবৃতিটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়কে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে।” তারা আরও যোগ করেছে যে, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দেশের প্রতিটি নাগরিক, তাদের ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে, তাদের নিজস্ব ধর্মীয় রীতি অনুসরণের অধিকার ভোগ করবে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, “দেশের সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, এবং গত মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপন তারই প্রমাণ।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বাংলাদেশের সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি তদন্ত করছে এবং দেশের বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন। বিচারাধীন বিষয়টি আদালতে বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে এবং সরকার পূর্ণ সম্মান প্রদর্শন করে আদালতের প্রতি সম্মান জানাচ্ছে।

এছাড়া, মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তারা চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং চট্টগ্রাম শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার কথা জানিয়েছে।

বাংলাদেশের সরকার সাফ জানিয়েছে, তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করবে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে উত্তাল ভক্তরা

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে পাঠানোর সময় চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে তাঁর ভক্তরা বিক্ষোভ করেন। ভক্তদের অবস্থানের কারণে প্রিজন ভ্যান প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে থাকে। পুলিশ ও বিজিবির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে উত্তাল ভক্তরা

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে পাঠানোর সময় চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে তাঁর ভক্তরা বিক্ষোভ করেন। ভক্তদের অবস্থানের কারণে প্রিজন ভ্যান প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে থাকে। পুলিশ ও বিজিবির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আজ চট্টগ্রাম কারাগারে নেওয়া হয়েছে। প্রিজন ভ্যান আটকে রেখে ভক্তরা তাঁর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করলে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়ায়।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত এবং তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে পুলিশের কড়া পাহারায় তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।

প্রিজন ভ্যানের সামনে অবস্থান নিয়ে ভক্তরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। কিছু ভক্ত মাটিতে শুয়ে পড়ে অবস্থান নেন। পুলিশ বারবার সরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তাঁরা তা উপেক্ষা করেন। এক পর্যায়ে বেলা ২টা ৫০ মিনিটে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা শুরু করে এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ভক্তদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

প্রিজন ভ্যানের চাকার হাওয়া ছেড়ে দেওয়া হলে পুলিশি গাড়িতে করে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান বলেন, “বারবার অনুরোধ করার পরও ভক্তরা সরে না যাওয়ায় তাঁদের সরাতে শক্তি প্রয়োগ করতে হয়।”

উল্লেখ্য, গত ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানায় বিএনপি নেতা ফিরোজ খান বাদী হয়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ে স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর থেকে তাঁর মুক্তির দাবিতে ভক্তদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাঁর আইনজীবী স্বরূপ কান্তি নাথ জানান, মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করে জামিনের আবেদন করা হয়েছে, যা আগামীকাল বুধবার শুনানির জন্য নির্ধারিত রয়েছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও জামিন নামঞ্জুরের ঘটনায় দেশজুড়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাঁর মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

সংবিধান সংস্কার কমিশনে ঐক্য পরিষদের প্রস্তাব জমা

বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় নতুন আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করতে একাধিক প্রস্তাব সংবিধান সংস্কার কমিশনের অনলাইন পোর্টালে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় প্রস্তাবগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে সংগঠনটি উল্লেখ করেছে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনে ঐক্য পরিষদের প্রস্তাব জমা

বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় নতুন আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করতে একাধিক প্রস্তাব সংবিধান সংস্কার কমিশনের অনলাইন পোর্টালে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় প্রস্তাবগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে সংগঠনটি উল্লেখ করেছে।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সংবিধান সংস্কার কমিশনের অনলাইন পোর্টালে একাধিক প্রস্তাব জমা দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ জমা দেওয়া প্রস্তাবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সংবিধানের প্রস্তাবনা অপরিবর্তিত রাখা এবং সংবিধান থেকে ২(ক) অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি।

ঐক্য পরিষদের মতে, সংবিধানের প্রস্তাবনা আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং ধর্ম, বর্ণ বা জাতিগত পরিচয়ের পার্থক্য ছাড়াই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সমতা, স্বাধীনতা, এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে। তারা দাবি করে, ২(ক) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা সংবিধানের মূল আদর্শের পরিপন্থী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের মর্যাদায় নামিয়ে আনে।

সংবিধানের “ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা” সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাবও করেছে পরিষদ। তাদের ভাষ্যমতে, এই অনুচ্ছেদ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রের মূল নীতিগুলো ধারণ করে এবং সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করে।

সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদ পুরোপুরি বজায় রাখার প্রস্তাব দিয়ে ঐক্য পরিষদ দাবি জানায় সংখ্যালঘু সুরক্ষার জন্য একটি আইন প্রণয়ন, একটি জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক একটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করার। তারা উল্লেখ করে, এই উদ্যোগগুলো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্যমান বৈষম্য দূর করতে এবং আইনের সমান সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয়।

ঐক্য পরিষদ ২৮ অনুচ্ছেদে আরও দুটি ধারা যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবিত ৫ নং ধারায় সংখ্যালঘুদের জাতীয় সংসদ, নির্বাচন কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং সরকারি কর্ম কমিশনের মতো সাংবিধানিক সংস্থাগুলোতে পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। ৬ নং ধারায় জনসংখ্যার আনুপাতিক ভিত্তিতে জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে, সংবিধান সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বিচারিক সংস্কার কমিশনের একটি বৈঠক গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিচারিক সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান এবং আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নঈম মমিনুর রহমান এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রিয়াজ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে দুই কমিশন একে অপরের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন এবং বিভিন্ন সাংবিধানিক বিষয়ে, বিশেষ করে বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে আলোচনা করেন। তারা তাদের সুপারিশগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

এই প্রস্তাবগুলো দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ঐক্য পরিষদ আশা প্রকাশ করেছে যে সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

বাংলাদেশে জাতিগত নিধন চলছে - ড. ইমরান এইচ সরকার

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতার ও জামিন নামঞ্জুরের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়। শাহবাগ আন্দোলনের নেতা ইমরান এইচ সরকার চিন্ময়ের মুক্তির দাবি জানিয়ে লেখেন, “অবিলম্বে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুকে মুক্তি দিন। বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের জাতিগত নিধন বন্ধ করুন।” চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে, পাশাপাশি তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। (সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস)
বাংলাদেশে জাতিগত নিধন চলছে - ড. ইমরান এইচ সরকার

বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতার ও জামিন নামঞ্জুরের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়। শাহবাগ আন্দোলনের নেতা ইমরান এইচ সরকার চিন্ময়ের মুক্তির দাবি জানিয়ে লেখেন, “অবিলম্বে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুকে মুক্তি দিন। বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের জাতিগত নিধন বন্ধ করুন।” চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে, পাশাপাশি তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। (সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস)

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতার ও জামিন নামঞ্জুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়। ড. ইমরান এইচ সরকারসহ দেশের বিভিন্ন মহল থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।

গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের একটি সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে বিএনপি নেতা ফিরোজ খান রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেন চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলেও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাটি বহাল থাকে। ৩১ অক্টোবর সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পেশ করা হয়। গতকাল তাঁর জামিন আবেদন খারিজ করে তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

চিন্ময়ের গ্রেফতারির প্রতিবাদে চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বহু মানুষ জড়ো হন। সেখানে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চিন্ময়ের পক্ষে সওয়াল করতে ৫১ জন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। তবে আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এই পরিস্থিতিতে গতকাল একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সমাজকর্মী ও শাহবাগ আন্দোলনের নেতা ড. ইমরান এইচ সরকার চিন্ময়ের মুক্তির দাবি জানিয়ে লেখেন, “অবিলম্বে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুকে মুক্তি দিন। বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের জাতিগত নিধন বন্ধ করুন।” চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর আজ আবার তিনি লেখেন, “এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। তিনি অপরাধী নন। সংখ্যালঘু নেতা হওয়া অপরাধ নয়।”

এদিকে, চিন্ময়ের সমর্থনে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চিন্ময়ের গ্রেফতার ও তাঁর জামিন নামঞ্জুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ তাঁকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেছে এবং জেল হেফাজতে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহে বাধা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাগুলো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

ইসকন বাংলাদেশ চিন্ময়কে বহিষ্কার করলেও তাঁর নেতৃত্বে নতুন করে গঠিত বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট বর্তমানে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় সক্রিয়। তবে তাঁর গ্রেফতার এবং জামিন খারিজের ঘটনায় দেশে সংখ্যালঘুদের মধ্যে শঙ্কা ও বিক্ষোভ চলছে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম আদালত। জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে দায়ের করা এই মামলায় তাঁর মুক্তির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন ভক্তরা। ইসকন বাংলাদেশও এই গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম আদালত। জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে দায়ের করা এই মামলায় তাঁর মুক্তির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন ভক্তরা। ইসকন বাংলাদেশও এই গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে শুনানি শেষে এ আদেশ দেওয়া হয় এবং তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে গত ৩১ অক্টোবর বিএনপির স্থানীয় নেতা ফিরোজ খান কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে মহাসমাবেশ শেষে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে নিউমার্কেট মোড়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় পতাকা স্থাপন করা হয়, যা সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করে।

মামলার শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ হওয়ায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে স্লোগান দেন ভক্তরা। এ সময় কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই তাঁকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত ডিভিশন সুবিধা, চিকিৎসা, এবং ধর্মীয় রীতিনীতি পালনের অনুমতি দিয়েছেন।

গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরে চট্টগ্রামে আনা হয় তাঁকে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, এই মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী এক বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “এই ঘটনা সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর বেড়ে চলা হামলার একটি উদাহরণ।” একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসকন বাংলাদেশ।

আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বরূপ কান্তি নাথ বলেছেন, “আমরা আদালতে জানিয়েছি যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস নির্দোষ। কয়েক দিনের মধ্যে আমরা আপিল করব।” আগামী দিনে এই মামলার শুনানির মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

মামলার অভিযোগে থাকা অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন অজয় দত্ত, লীলা রাজ দাস ব্রহ্মচারী, গোপাল দাস, প্রকৌশলী অমিত ধর, এবং আরও অনেকে। তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ও জামিন নামঞ্জুরের পরিপ্রেক্ষিতে সনাতনী সম্প্রদায়ের ভক্তরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

‘বাঙালি আপনাকে আর শ্রদ্ধা করে না’, বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়নে ইউনুসকে ‘খোলা চিঠি’ তসলিমার

ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেপ্তারির ঘটনায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সনাতনী সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ভারতের নয়াদিল্লি এই ইস্যুতে কড়া বার্তা দিয়ে বাংলাদেশের প্রশাসনকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। তসলিমা নাসরিন এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, “ইউনুস সরকার নিজের অবস্থান এবং নীতি নিয়ে দ্বন্দ্বে রয়েছেন। একদিকে তিনি হিন্দু নেতাদের গ্রেপ্তার করছেন, অন্যদিকে মৌলবাদীদের কর্মকাণ্ডে নীরব রয়েছেন।” বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিলের মাধ্যমে চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবি জানানো হচ্ছে।
‘বাঙালি আপনাকে আর শ্রদ্ধা করে না’, বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়নে ইউনুসকে ‘খোলা চিঠি’ তসলিমার

ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেপ্তারির ঘটনায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সনাতনী সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ভারতের নয়াদিল্লি এই ইস্যুতে কড়া বার্তা দিয়ে বাংলাদেশের প্রশাসনকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। তসলিমা নাসরিন এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, “ইউনুস সরকার নিজের অবস্থান এবং নীতি নিয়ে দ্বন্দ্বে রয়েছেন। একদিকে তিনি হিন্দু নেতাদের গ্রেপ্তার করছেন, অন্যদিকে মৌলবাদীদের কর্মকাণ্ডে নীরব রয়েছেন।” বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিলের মাধ্যমে চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবি জানানো হচ্ছে।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: ইসকনের সন্ন্যাসী ও সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ মঞ্চের প্রধান মুখ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেপ্তারির ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। সোমবার ঢাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করার পর তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করেছে ইউনুস সরকার। এ ঘটনার পর থেকেই সনাতনী সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং প্রতিবাদের স্রোত শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লি থেকে বাংলাদেশকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ও জামিন না পাওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক। এর আগেও বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন, খুন এবং ঘরবাড়ি লুঠের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের কার্যকলাপ বাংলাদেশের মৌলবাদী কার্যকলাপকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার সুনিশ্চিত করার আহ্বান জানাই।”

এই ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, “চিন্ময় প্রভু সনাতনী হিন্দু সমাজের একজন সম্মানীয় প্রতিনিধি। তাঁকে দ্রুত মুক্তি না দিলে বাংলাদেশে পণ্য সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে।” এছাড়াও, রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছেন।

চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারির পর ঢাকাসহ চট্টগ্রাম এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ বিক্ষোভ এবং মশাল মিছিলের মাধ্যমে সনাতনী সম্প্রদায় তাঁদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মিছিলকারীরা দাবি জানিয়েছেন, অবিলম্বে চিন্ময় প্রভুর মুক্তি দিতে হবে।

উল্লেখ্য, চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাটি দায়ের হয়েছে বাংলাদেশে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে। তবে, তসলিমা নাসরিন এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, “ইউনুস সরকার নিজের অবস্থান এবং নীতি নিয়ে দ্বন্দ্বে রয়েছেন। একদিকে তিনি হিন্দু নেতাদের গ্রেপ্তার করছেন, অন্যদিকে মৌলবাদীদের কর্মকাণ্ডে নীরব রয়েছেন।”

তসলিমার বক্তব্য ছাড়াও, গ্রেপ্তারির খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রতিবেশী দেশেও এই ইস্যুতে গভীর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। চিন্ময় প্রভুর মুক্তি দাবি করে ঢাকাসহ চট্টগ্রামের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ মশাল মিছিল এবং বিক্ষোভে অংশ নেন।

বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ভারতের বার্তা এবং প্রতিবেশী দেশের বিক্ষোভ পরিস্থিতি উভয়ই প্রমাণ করে যে, এই গ্রেপ্তারি দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে একটি স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং অধিকার সুরক্ষার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠেছে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণের গ্রেপ্তারের পর বিশৃঙ্খলার পেছনে ইন্ধন

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পেছনে দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে ইন্ধনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও আরও পদক্ষেপ নিতে হবে।
চিন্ময় কৃষ্ণের গ্রেপ্তারের পর বিশৃঙ্খলার পেছনে ইন্ধন

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পেছনে দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে ইন্ধনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও আরও পদক্ষেপ নিতে হবে।

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পেছনে ভেতর ও বাইরের গোষ্ঠীর ইন্ধন থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউসে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পেছনে দেশের বাইরের এবং দেশের ভেতরের কয়েকটি গোষ্ঠীর ভূমিকা থাকতে পারে। নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর মাধ্যমেও হয়তো এ ধরনের ইন্ধন আসছে।’’

সিলেটে আয়োজিত এই সভায় জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, মহানগর পুলিশ কমিশনার, জেলা পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নিয়ে কথা

ঢাকায় সাম্প্রতিক শিক্ষার্থী সংঘর্ষ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘সবকিছুর পেছনে ইন্ধন রয়েছে, এমনটা আমি বলছি না।’’ তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং ফলপ্রসূ সমাধান বের হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বোঝানোর মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্ররা আমাদের ভাই-বোন। তাদের প্রতি কঠোর হওয়া উচিত নয়। তারা বুদ্ধিমান। তারা বিষয়টি নিজেরাই বুঝে নিয়েছে।’’

ভুয়া মামলার বিষয়ে পদক্ষেপ

প্রতিহিংসামূলক মামলা নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা জানান, ‘‘এটা সত্যি যে অনেক ভুয়া মামলা হয়েছে। কিছু ব্যক্তি এই সুযোগ নিয়ে টাকাপয়সাও রোজগার করেছে।’’ তবে তিনি আশ্বস্ত করেন, ভুয়া মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানি এড়াতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।

তিনি আরও জানান, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার এবং লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি ভুয়া এবং সত্যিকারের মামলার পার্থক্য নির্ধারণে কাজ করবে। ভুয়া মামলা দায়েরকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘‘সব অস্ত্র এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাই অভিযান বন্ধ করা যায়নি। লুট হওয়া অস্ত্র বাইরে থাকা মানেই হুমকির সৃষ্টি হওয়া।’’

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি

৮ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে বলেও দাবি করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘৮ আগস্টের তুলনায় বর্তমানে পরিস্থিতি অনেক ভালো। তবে এখনও উন্নতির সুযোগ রয়েছে এবং তা সবার সহযোগিতার মাধ্যমে সম্ভব।’’

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।’’

তারিখ: ২৮.১১.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নিন্দা

বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট একটি বিবৃতি দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেছে। সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, হাজার হাজার কর্মীর কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের অযৌক্তিক।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নিন্দা

বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট একটি বিবৃতি দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেছে। সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, হাজার হাজার কর্মীর কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের অযৌক্তিক।

ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪: সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় নেতা এবং হিন্দু জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তাঁর গ্রেপ্তারের বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ডিবি কর্তৃক তাঁকে গ্রেপ্তারের ঘটনাটি অযৌক্তিক এবং এটি সনাতনী সম্প্রদায়ের আন্দোলনকে দমন করার একটি চেষ্টা।

বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, যুগ্ম মহাসচিব ডা. হেমন্ত দাস এবং হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সজিব কুন্ডু তপু বলেন, “হাজার হাজার কর্মী ও সমর্থকের মধ্যে কেউ যদি জাতীয় পতাকার অবমাননা করে, তার দায় কোনো নেতার হতে পারে না। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

সংগঠনটি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে। তাদের মতে, এই গ্রেপ্তার দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মত প্রকাশের অধিকার এবং মানবাধিকারের প্রতি হুমকি স্বরূপ।

জাতীয় হিন্দু মহাজোটের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, “সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর চলমান নির্যাতন এবং তাদের দমন করার প্রচেষ্টা সঠিক নয়। আমরা আশা করি, সরকার এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করবে।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত একটি সমাবেশে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে জাতীয় হিন্দু মহাজোট দাবি করেছে, এই মামলা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং এটি সনাতনী সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে বিপথগামী করার একটি অপচেষ্টা।

বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি সনাতনী সম্প্রদায়ের ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে জানায়, “আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ এবং আমরা বিশ্বাস করি, সত্য ও ন্যায়ের বিজয় হবে। কিন্তু নেতাকে গ্রেপ্তার করে আমাদের আন্দোলন থামানো যাবে না।”

এ গ্রেপ্তারের ঘটনায় সনাতনী সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়েছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সনাতনী সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশের পরিকল্পনা করছে।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারে ঐক্য পরিষদের ক্ষোভ

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারের ঘটনায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি এ ঘটনাকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁর অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় যুক্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে কেন্দ্র করে সনাতনী সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারে ঐক্য পরিষদের ক্ষোভ

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারের ঘটনায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি এ ঘটনাকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁর অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় যুক্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে কেন্দ্র করে সনাতনী সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কর্তৃক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর (৩৮) গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। সোমবার (২৫ নভেম্বর) সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

সংগঠনের তিন সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, প্রফেসর ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক এবং নির্মল রোজারিও এ গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত।” তারা আরও উল্লেখ করেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, “এ গ্রেপ্তার শুধু ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের নয়, এটি জাতীয় স্বার্থেরও ক্ষতি করছে।”

উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা দায়ের করেন মো. ফিরোজ খান। মামলার ভিত্তিতে দুজনকে আগে গ্রেপ্তার করা হয়, যারা হলেন রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস।

মামলার আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর (৩৮), চট্টগ্রাম হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত (৩৪), প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাশ (৪৮), গোপাল দাশ টিপু (৩৮), এবং প্রকৌশলী অমিত ধর (৩৮)।

এছাড়াও মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বেশিরভাগই বিভিন্ন সনাতনী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য।

বিবৃতিতে সংগঠনটি অভিযোগ করে যে, এ ধরনের মামলা এবং গ্রেপ্তার দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করছে। নেতারা বলেন, “আমাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

গ্রেপ্তারের পর থেকেই সনাতনী সম্প্রদায়ের সদস্যরা এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তাঁদের মতে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী একজন ধর্মীয় নেতা এবং তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

সংঘটনের নেতারা এ ঘটনায় রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং সনাতনী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চলমান হয়রানির অবসান চান।

তারিখ: ২৭.১১.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। মামলাটি চট্টগ্রামে ৩১ অক্টোবর দায়ের হয়, যেখানে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ তোলা হয়েছে। বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। মামলাটি চট্টগ্রামে ৩১ অক্টোবর দায়ের হয়, যেখানে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ তোলা হয়েছে। বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে।

ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে সোমবার বিকেলে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

রেজাউল করিম বলেন, “পুলিশের অনুরোধে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতে হাজির করার জন্য চট্টগ্রামে নেওয়া হয়েছে।” জানা যায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ডিবি তাঁকে বিমানে ওঠার আগেই আটক করে।

চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আদালতে হাজির করা হবে। মামলায় তাঁকেসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তাধীন মামলায় মোট ১৯ জন আসামির তালিকায় তাঁর নাম ছিল।

৩১ অক্টোবর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান, যিনি পরে দল থেকে বহিষ্কৃত হন, এই মামলাটি করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ৫ আগস্ট চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে একটি জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে সেটি স্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে একটি সমাবেশ আয়োজন করে। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজারো মানুষ সেখানে যোগ দেন। সমাবেশ শেষে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ওঠে, যা নিয়ে মামলাটি দায়ের হয়।

এ ঘটনার পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের একটি বিবৃতি ইসকন প্রবর্তক ধামের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি বলেন, “আমাদের আন্দোলন বর্তমান সরকার বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়। এটি সনাতন সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে সংগঠিত হয়েছে।”

এদিকে, বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে।

তারিখ: ২৫.১১.২০২৪

গণ-অভ্যুত্থানের তিন মাস পরেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই

রংপুরে আট দফা দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। সমাবেশে সনাতন সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন, মঠ-মন্দিরে হামলার বিচার, এবং সংবিধান সংস্কারে সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। উপস্থিত নেতারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঐক্যের ডাক দেন এবং আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
গণ-অভ্যুত্থানের তিন মাস পরেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই

রংপুরে আট দফা দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। সমাবেশে সনাতন সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন, মঠ-মন্দিরে হামলার বিচার, এবং সংবিধান সংস্কারে সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। উপস্থিত নেতারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঐক্যের ডাক দেন এবং আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

ঢাকা, ২২ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট শুক্রবার বিকেলে রংপুরের মাহীগঞ্জ কলেজ মাঠে বিভাগীয় সমাবেশ করেছে। সমাবেশে আট দফা দাবির পক্ষে জোরালো বক্তব্য দেওয়া হয় এবং দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তিনি অভিযোগ করেন, উগ্রবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারের একটি অংশ সংখ্যালঘু সনাতনী সম্প্রদায়কে দেশ থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টায় লিপ্ত। তিনি বলেন, “৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও হিন্দুদের বাড়িঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, এবং চাকরিচ্যুতির ঘটনা থামেনি।"

সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট একত্র হয়ে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ নামে নতুন সংগঠন গঠন করে। এই সংগঠনের ব্যানারেই রংপুরে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়।

সমাবেশের জন্য পূর্বনির্ধারিত রংপুর জিলা স্কুল মাঠে অনুমতি না পেয়ে মাহীগঞ্জ কলেজ মাঠে সমাবেশটি করা হয়। বিকেল তিনটায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, “৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে রংপুরে প্রথম শহীদ হয়েছিলেন আবু সাঈদ। তাঁর আত্মত্যাগ ছিল বাক্‌স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সহাবস্থানের জন্য। কিন্তু এখনো সেই আত্মত্যাগের কোনো সঠিক ফল দেখা যাচ্ছে না।"

তিনি আরও অভিযোগ করেন, সমাবেশে আসা শত শত বাসকে পথে আটকে রাখা হয় এবং কিছু স্থানে হামলা চালানো হয়। আহত কয়েকজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, “দেশের সনাতনী হিন্দুদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ট্যাগ দিয়ে বিভক্ত করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এই ঐক্যের বাতাসে আমরা বিভক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াব। বিভক্তকারী যে-ই হোক, তাকে আমরা ছুঁড়ে ফেলব।”

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সংবিধান সংস্কারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি করেন। তিনি বলেন, “আমাদের ছাড়া কোনো সংবিধান সংস্কার আমরা মেনে নেব না। আমাদের যুক্ত করুন, আমরা রাষ্ট্র বিনির্মাণে সহযোগী হতে চাই।”

সমাবেশে অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন শংকর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ তপনানন্দ গিরি মহারাজ, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত সচিদানন্দ পুরী মহারাজ, কৈবল্যধামের মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য, এবং স্বামী গোপীনাথ মহারাজ।

বক্তারা সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে সমাবেশে উপস্থিত সবাইকে ঐক্যের মাধ্যমে তাদের দাবি আদায়ের জন্য সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান।

তারিখ: ২৫.১১.২০২৪

রংপুর জিলা স্কুল মাঠে অনুমতি পায়নি সনাতনী জাগরণ জোট, সমাবেশ হবে মাহীগঞ্জ কলেজে

রংপুরে আট দফা দাবিতে সমাবেশ করার পরিকল্পনায় জিলা স্কুল মাঠে অনুমতি না পেয়ে শহরের বাইরে মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে সমাবেশ করছে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শহরের যানজট এড়াতে ভেন্যু পরিবর্তন করা হয়। আজ শুক্রবার দুপুরে এ সমাবেশ শুরু হবে।
রংপুর জিলা স্কুল মাঠে অনুমতি পায়নি সনাতনী জাগরণ জোট, সমাবেশ হবে মাহীগঞ্জ কলেজে

রংপুরে আট দফা দাবিতে সমাবেশ করার পরিকল্পনায় জিলা স্কুল মাঠে অনুমতি না পেয়ে শহরের বাইরে মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে সমাবেশ করছে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শহরের যানজট এড়াতে ভেন্যু পরিবর্তন করা হয়। আজ শুক্রবার দুপুরে এ সমাবেশ শুরু হবে।

রংপুর, ২২ নভেম্বর, ২০২৪: রংপুরের জিলা স্কুল মাঠে আট দফা দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েও তা না পাওয়ায় শহরের চার কিলোমিটার দূরে মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে সমাবেশ করতে হচ্ছে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’কে। আজ শুক্রবার দুপুরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অতিথিরা সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।

রংপুরের সমন্বয়ক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ করতে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। তাঁর অভিযোগ, প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে সমাবেশ সফল হতে দিচ্ছে না। তিনি জানান, জিলা স্কুল মাঠে কয়েক দিন আগে একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেও তাঁদের ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হয়নি।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শহরের কেন্দ্রস্থলে জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ হলে ব্যাপক যানজটের সম্ভাবনা থাকে। তাই মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে ভেন্যু পরিবর্তন করা হয়েছে। এ বিষয়ে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, “সার্বিক বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে শহর যানজটমুক্ত থাকে।”

অনুমতি সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, সমাবেশ দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যার মধ্যে শেষ করতে হবে এবং ১৫টি শর্ত মানতে হবে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, তাঁরা এসব শর্ত মেনেই সমাবেশ পরিচালনা করবেন।

আজ সকাল ১০টার দিকে মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সমাবেশ মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। শ খানেক সনাতন নারী-পুরুষ ইতোমধ্যেই উপস্থিত হয়েছেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে সাত থেকে আটজন পুলিশের একটি দল রয়েছে। আয়োজকদের প্রতিনিধি রবীন্দ্রনাথ সরকার জানান, সমাবেশ দুপুর ২টায় শুরু হবে।

রংপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, “সমাবেশের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”

উল্লেখ্য, সনাতন জাগরণ মঞ্চ দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন এবং মঠ-মন্দিরে হামলার বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। ১৭ নভেম্বর গঠিত সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট এই দাবিকে আরও সংঘবদ্ধ করে তুলেছে।

তারিখ: ২২.১১.২০২৪

তুরাগে দাহ্য পদার্থে হিন্দু মা-মেয়ের শরীর ঝলসে গেল, ছিনতাই

রাজধানীর তুরাগে এক দুর্বৃত্তের দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপে মা ও মেয়ের শরীর ঝলসে যাওয়ার হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। মায়ের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে হামলাকারী। ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ফুটেজে দুর্বৃত্তকে শনাক্ত করা গেলেও এখনো মামলা হয়নি।
তুরাগে দাহ্য পদার্থে হিন্দু মা-মেয়ের শরীর ঝলসে গেল, ছিনতাই

রাজধানীর তুরাগে এক দুর্বৃত্তের দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপে মা ও মেয়ের শরীর ঝলসে যাওয়ার হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। মায়ের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে হামলাকারী। ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ফুটেজে দুর্বৃত্তকে শনাক্ত করা গেলেও এখনো মামলা হয়নি।

ঢাকা, ২২ নভেম্বর, ২০২৪: রাজধানীর তুরাগ এলাকার কামারপাড়ায় বৃহস্পতিবার সকালে এক হৃদয়বিদারক ছিনতাই ও হামলার ঘটনা ঘটে। এক দুর্বৃত্তের নিক্ষিপ্ত দাহ্য পদার্থে ঝলসে গেছেন সাথী রানী হালদার (৩৬) এবং তাঁর দুই বছরের মেয়ে বিজয়িনী হালদার। বর্তমানে তাঁরা রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাথী রানীর শরীরের ১৩ শতাংশ এবং বিজয়িনীর শরীরের ১৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।

বিজয়িনী হালদারের চাচা অশ্বিনী হালদার জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাথী রানী মেয়েকে নিয়ে বাড়ির অদূরে একটি সেলুনে চুল কাটাতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে একজন যুবক তাঁদের অনুসরণ করতে থাকেন। বাড়ির গেটে পৌঁছানোর পর ওই যুবক তাঁদের কাছে জানতে চান, “এখানে রফিক নামের কেউ আছে কি?” হঠাৎই নিজের হাতে থাকা দাহ্য পদার্থ তাঁদের দিকে ছুড়ে মারেন এবং সাথীর গলায় থাকা আট আনা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান।

গুরুতর আহত মা ও মেয়েকে প্রথমে উত্তরা শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়।

ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ওই যুবক হামলার আগে থেকেই তাঁদের পেছনে পেছনে হাঁটছিলেন। সাথীর স্বামী জয় কুমার হালদার, যিনি একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন, বলেছেন যে তাঁদের পরিবার এ ঘটনায় ভীষণ শোকাহত। সাথী রানী একজন গৃহিণী এবং তিন কন্যার জননী।

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। আহতদের গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার বনাই নগর ফরিদপুর থানার ডেমড়া গ্রামে। বর্তমানে তাঁরা তুরাগ কামারপাড়া মার্কেট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকাবাসী সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

তারিখ: ২২.১১.২০২৪

বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থান

বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের আগের মতোই দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এ কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং সংখ্যালঘু অধিকারের বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থান

বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের আগের মতোই দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এ কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং সংখ্যালঘু অধিকারের বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

যুক্তরাষ্ট্র, ২২ নভেম্বর, ২০২৪: গতকাল বুধবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সময় মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার সমুন্নত থাকবে, সেটাই আমরা দেখতে চাই। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান আগেও যেমন ছিল, এখনো তেমনই রয়েছে।”

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু মিলার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার বিষয়ে কথা বলেন। এক সাংবাদিক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি সম্পর্কিত দাবি নিয়ে আপনার কোনো তথ্য বা মূল্যায়ন আছে কি?”

এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, “আমি এ ধরনের কোনো বক্তব্য দেখিনি এবং এ নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।”

আরেকটি প্রশ্নে সাংবাদিক বাংলাদেশের আদালত চত্বরে আইনজীবীদের ওপর হামলা এবং এর প্রভাব নিয়ে জানতে চান। বিশেষ করে জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমুর আইনজীবীর ওপর হামলাসহ বিভিন্ন ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি জানতে চান, এসব ঘটনা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন কী।

ম্যাথু মিলার এ প্রসঙ্গে বলেন, “বাংলাদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। আমরা বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে চাই।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, আইনের শাসন এবং আইনি সুরক্ষার বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বরাবরই একই।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে যে প্রতিবেদন এসেছে, তাতে দেশটির গণতান্ত্রিক কাঠামো এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য জানতে চাইলে ম্যাথু মিলার বলেন, “এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।”

ব্রিফিংয়ে উঠে আসা বিভিন্ন প্রশ্নে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, আইনের শাসন এবং সংখ্যালঘু অধিকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব পুনরায় নিশ্চিত করা হয়। তবে ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্নে মুখপাত্র নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগের বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।

তারিখ: ২২.১১.২০২৪

রংপুরে সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভাগীয় মহাসমাবেশ আজ

আজ শুক্রবার রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে আলোচনা এবং স্থানীয় সমস্যা সমাধানে গতকাল কেন্দ্রীয় নেতারা রংপুর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় সমাবেশস্থলের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে বৈঠক হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত নেতারা ধর্মীয় ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
রংপুরে সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভাগীয় মহাসমাবেশ আজ

আজ শুক্রবার রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে আলোচনা এবং স্থানীয় সমস্যা সমাধানে গতকাল কেন্দ্রীয় নেতারা রংপুর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় সমাবেশস্থলের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে বৈঠক হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত নেতারা ধর্মীয় ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।

রংপুর, ২২ নভেম্বর, ২০২৪: আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সনাতন জাগরণ মঞ্চের রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশ রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতি-বার দুপুরে সনাতন জাগরণ মঞ্চের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী এবং কেন্দ্রীয় নেতারা রংপুর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ভেন্যু নির্ধারণ নিয়ে আলোচনার জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যান।

জেলা প্রশাসক তাদের সাথে সাক্ষাৎ না করে সমন্বয়কদের সাথে আলোচনা করেন। এ সময় মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে স্থানীয় কিছু সমস্যা উল্লেখ করে নেতারা রংপুর জিলা স্কুল মাঠ ভেন্যু হিসেবে দাবি করেন। কিন্তু জেলা প্রশাসক মাহিগঞ্জ মাঠের সমস্যাগুলো সমাধানের আশ্বাস দেন এবং পূর্বনির্ধারিত ভেন্যুতেই সমাবেশ করার অনুমতি দেন।

পরে নেতারা মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠ পরিদর্শন করেন এবং সন্ধ্যায় তিলোত্তমা গেস্ট হাউসে গমন করেন। কেন্দ্রীয় মুখপাত্রসহ ৩৪ জন নেতাকর্মী সেখানে অবস্থান করেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী প্রভুপাদসহ নেতৃবৃন্দ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় মন্দির পরিদর্শন করেন। সেখানে একটি ধর্মীয় আলোচনা সভায় অংশ নেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বরণ কুশল চক্রবর্তী, গিরি আশ্রমের অধ্যক্ষ ওমেশানন্দ গিরি মহারাজ, এবং সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের স্বামী বিপ্রানন্দ জী। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস তার বক্তব্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অধিকারের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

মহাসমাবেশ উপলক্ষে মাহিগঞ্জ মাঠে ১২-১৩ হাজার মানুষের উপস্থিতির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে মাঠ সংলগ্ন একটি মসজিদ থাকায় স্থানীয় মুসল্লিদের মধ্যে কিছু উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর রয়েছে।

সমাবেশ সফল করতে কেন্দ্রীয় নেতারা সক্রিয় রয়েছেন এবং রংপুর বিভাগের আটটি জেলা থেকে ইসকন অনুসারীদের যোগদানের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন তাদের জন্য ১৫টি শর্ত নির্ধারণ করেছে, যার মধ্যে ধর্মীয় উস্কানি এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার অনুরোধ রয়েছে।

আজকের সমাবেশে নেতারা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐক্য এবং অধিকারের জন্য সংগ্রামের বার্তা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

তারিখ: ২২.১১.২০২৪

গাইবান্ধায় সাঁওতালদের সাত দফা দাবি ও বিক্ষোভ মিছিল

বাপ-দাদার জমি ফেরত, তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারসহ সাত দফা দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ করেছেন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে তাঁরা এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। ২০১৬ সালের সংঘর্ষে নিহত তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার আট বছরেও শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
গাইবান্ধায় সাঁওতালদের সাত দফা দাবি ও বিক্ষোভ মিছিল

বাপ-দাদার জমি ফেরত, তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারসহ সাত দফা দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ করেছেন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে তাঁরা এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। ২০১৬ সালের সংঘর্ষে নিহত তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার আট বছরেও শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারীরা।

গাইবান্ধা, ২১ নভেম্বর, ২০২৪: বাপ-দাদার জমি ফেরত এবং ২০১৬ সালে তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারসহ সাত দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার গাইবান্ধা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। এ সময় তাঁরা তির-ধনুক ও ফেস্টুন হাতে বিক্ষোভে অংশ নেন।

মিছিল শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশ হয়। সেখানে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এবং আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ যৌথভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাক্সে। বক্তব্য দেন আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, মানবাধিকারকর্মী গোলাম রব্বানী, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নেতা প্রিসিলা মুরমু, সাঁওতাল হত্যা মামলার বাদী থোমাস হেমব্রমসহ আরও অনেকে।

বক্তারা তাঁদের দাবির পক্ষে জোরালো বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের ভূমি উচ্ছেদ অভিযানে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে তিনজন সাঁওতাল নিহত ও ২০ জন আহত হন। আট বছর পেরিয়ে গেলেও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়নি।

তাঁদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. বাপ-দাদার জমি ফেরত দেওয়া।
২. তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচার।
৩. ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ ও ক্ষতিপূরণ।
৪. মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
৫. সাঁওতাল শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক স্কুল প্রতিষ্ঠা।
৬. ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভূমি কমিশন গঠন।
৭. বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ।

বক্তারা আরও বলেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও সাঁওতালরা ভূমিহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে তাঁদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। সংস্কৃতি ও ভাষার বিলুপ্তি ঘটছে। সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় তাঁদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন আজও চলমান।”

আন্দোলনকারীরা অবিলম্বে সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

তারিখ: ২২.১১.২০২৪

‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বাদ দেওয়ার বক্তব্যের প্রতিবাদ সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী সংশোধনের প্রস্তাবে অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা। সম্প্রতি হাইকোর্টে সংবিধানের অষ্টম অনুচ্ছেদ থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা মনে করেন, এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী এবং সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থার দিকে ধাবিত হতে পারে। ঐক্যমোর্চা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের এবং অসাম্প্রদায়িক সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে।
‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বাদ দেওয়ার বক্তব্যের প্রতিবাদ সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী সংশোধনের প্রস্তাবে অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা। সম্প্রতি হাইকোর্টে সংবিধানের অষ্টম অনুচ্ছেদ থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা মনে করেন, এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী এবং সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থার দিকে ধাবিত হতে পারে। ঐক্যমোর্চা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের এবং অসাম্প্রদায়িক সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে।

ঢাকা, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে ধর্মনিরপেক্ষতার জায়গায় ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ প্রতিস্থাপনের অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রস্তাবে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা। তাদের মতে, এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র, সংখ্যালঘুর অধিকার, এবং নাগরিক সমতার বিরুদ্ধে যায়।

গত সোমবার ঢাকায় এক সভায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠন এই বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরে। সভায় জানানো হয়, ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়া হলে সংখ্যালঘুরা আরও বৈষম্যের শিকার হবে এবং দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হবে। ঐক্যমোর্চা দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংবিধান পরিবর্তনের প্রস্তাব শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই অমান্য করবে না, বরং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।

সভায় বক্তারা বলেন, সংবিধানের মৌলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার চেষ্টা একটি আত্মঘাতী পদক্ষেপ। এটি গণতন্ত্র, আইনের শাসন, এবং ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহিতার পরিপন্থি। বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, “এমন পরিবর্তন মুক্তিযুদ্ধের মূল আদর্শের পরিপন্থি। সংখ্যালঘুরা এমন সিদ্ধান্তে নিজেদের নিরাপত্তাহীন বোধ করবে।”

সভায় উপস্থিত ছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের অধ্যাপক নিম চন্দ্র ভৌমিক, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, রিসার্চ অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্টের সভাপতি চন্দন সরকারসহ আরও অনেকে।

সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। তারা দাবি করেছে, সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়া হোক। তাদের মতে, সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিলে তা সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে নিয়ে যাবে।

সভায় সংখ্যালঘু সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করা সংবিধানের দায়িত্ব। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে প্রস্তাবিত পরিবর্তন বৈষম্য বাড়াবে। বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে এবং সংখ্যালঘুদের উদ্বেগ দূর করবে।

তারিখ: ২২.১১.২০২৪

সুনামগঞ্জে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কোচিং সেন্টারের হিন্দু শিক্ষক গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক আকাশ কুমার সিংহকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, একটি ব্যক্তিগত বিরোধকে কেন্দ্র করে আকাশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এই অভিযোগ আনা হতে পারে। তবে মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।
সুনামগঞ্জে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কোচিং সেন্টারের হিন্দু শিক্ষক গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক আকাশ কুমার সিংহকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, একটি ব্যক্তিগত বিরোধকে কেন্দ্র করে আকাশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এই অভিযোগ আনা হতে পারে। তবে মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।

সুনামগঞ্জ, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪: সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি, ইসলাম ধর্ম এবং নারীদের পর্দা নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগে আকাশ কুমার সিংহ (২৬) নামের এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একটি কোচিং সেন্টারের গণিত শিক্ষক। আজ মঙ্গলবার খায়েরদিরচর গ্রামের বাসিন্দা খায়রুল ইসলামের করা মামলার ভিত্তিতে আকাশকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় ৩০-৩৫ জন ব্যক্তি আকাশকে তাঁর নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে ধর্মপাশা থানার পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ওই রাতে খায়রুল ইসলাম বাদী হয়ে আকাশের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, আকাশকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ধর্মপাশা থানার উপপরিদর্শক হাফিজুল ইসলাম বলেন, “মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।”

আকাশ কুমার সিংহ থানায় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি কোনো কটূক্তি বা ধর্মীয় বিরূপ মন্তব্য করেননি। তিনি দাবি করেছেন, কোচিং সেন্টারে গণিত পড়ানো নিয়ে তাঁর ও খায়রুল ইসলামের মধ্যে পূর্বে থেকেই বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে বিপাকে ফেলার জন্য এই অভিযোগ আনা হয়েছে।

আকাশ বলেন, “ধর্ম নিয়ে কোনো কথা-কাটাকাটি হয়নি। এটি একটি ষড়যন্ত্র।” তবে খায়রুল ইসলাম বলেছেন, “২৮ অক্টোবর কোচিং সেন্টারে আকাশ মহানবী (সা.), ইসলাম ধর্ম ও পর্দা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। যদিও আমাদের কাছে এর ডকুমেন্টারি প্রমাণ নেই, তবে তিনি অনেকের সামনে এই কথা বলেছেন বলে স্বীকার করেছেন।”

মামলার বিষয়ে খায়রুল ইসলাম আরও জানান, “কোচিং সেন্টারে গণিত পড়ানো নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ ছিল না। এটি সম্পূর্ণ অন্য একটি ইস্যু।”

ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মামলা চলমান থাকায় সব দিক থেকেই বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

তারিখ: ২০.১১.২০২৪

টেকনাফের সাবেক ওসি রনজিত বড়ুয়ার সম্পদ জব্দের আদেশ

টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক অবৈধভাবে অর্জিত ৮৪ লাখ ৮ হাজার টাকার সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ। সম্পদের মধ্যে একটি দোতলা বাড়ি এবং একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে, এসব সম্পদ অবৈধ উৎস থেকে অর্জিত।
টেকনাফের সাবেক ওসি রনজিত বড়ুয়ার সম্পদ জব্দের আদেশ

টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক অবৈধভাবে অর্জিত ৮৪ লাখ ৮ হাজার টাকার সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ। সম্পদের মধ্যে একটি দোতলা বাড়ি এবং একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে, এসব সম্পদ অবৈধ উৎস থেকে অর্জিত।

কক্সবাজার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪: কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়ার ৮৪ লাখ ৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মুন্সি আবদুল আজিজ এ আদেশ দেন। রনজিত কুমার বর্তমানে চট্টগ্রামে শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপারের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ধোপছড়ি ইউনিয়নের শীলঘাটা গ্রামে।

দুদকের আইনজীবী সিরাজ উল্যাহ আদালতের আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধানে রনজিত কুমারের ৮৪ লাখ ৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। এসব সম্পদের মধ্যে রয়েছে সাতকানিয়ার শীলঘাটা গ্রামে ২৪.৫০ শতক জমিতে নির্মিত ৫২ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি দোতলা বাড়ি এবং চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার আলমশাহ কাঠঘর এলাকায় ১৪ তলা ভবনের ৮ তলায় ৩১ লাখ ৮৮ হাজার টাকায় কেনা একটি ১,৬৭৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট।

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এসব সম্পদ অবৈধ উৎস থেকে পাওয়া টাকায় কেনা হয়েছে। আদালত চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে রিসিভার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে এসব সম্পদ জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ জানান, রনজিত কুমার বড়ুয়া অবৈধভাবে অর্জিত এসব সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। এ কারণে আদালতে আবেদন করে এসব সম্পদ জব্দের আদেশ চাওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, “রনজিত বড়ুয়ার অন্য কোনো অবৈধ সম্পদ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

রনজিত বড়ুয়া কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানা, সদর মডেল থানা এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ওসির দায়িত্ব পালন করেছেন। টেকনাফ থানায় কর্মরত থাকাকালে তিনি জেলার শ্রেষ্ঠ ওসির পুরস্কার পান। তবে তাঁর এই পুরস্কার প্রাপ্তি এবং সম্পদের মধ্যে যে বৈপরীত্য রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল।

দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত চলমান রয়েছে এবং অবৈধ সম্পদের বিষয়ে আরও তথ্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে।

তারিখ: ২০.১১.২০২৪

নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’

সরকার পরিবর্তনের পর সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে একীভূত হলো ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’। আট দফা দাবির সঙ্গে পাঁচটি নতুন দাবি উত্থাপন করে এই সংগঠনটি তাদের ঐক্যের বার্তা দিয়েছে। চট্টগ্রামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা তাদের লক্ষ্য ও দাবি তুলে ধরেন।
নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’

সরকার পরিবর্তনের পর সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে একীভূত হলো ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’। আট দফা দাবির সঙ্গে পাঁচটি নতুন দাবি উত্থাপন করে এই সংগঠনটি তাদের ঐক্যের বার্তা দিয়েছে। চট্টগ্রামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা তাদের লক্ষ্য ও দাবি তুলে ধরেন।

ঢাকা, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪: আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, ভাঙচুর, নির্যাতন এবং অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। ‘সনাতন জাগরণ মঞ্চ’ এবং ‘সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট’ নামে দুটি প্ল্যাটফর্ম এতদিন আলাদাভাবে তাদের দাবি আদায়ের জন্য কাজ করছিল। এবার তারা একীভূত হয়ে নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করেছে। নতুন প্ল্যাটফর্মটির নাম ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’।

গতকাল রোববার চট্টগ্রাম নগরের প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সংগঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী বলেন, “সনাতনীদের নিয়ে যেন আর কোনো রাজনৈতিক দল খেলতে না পারে; তাই আমরা এই নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠন করেছি। বিভিন্ন মতাদর্শের সাধু-সন্তরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করব না। যারা আমাদের দাবি, প্রত্যাশা এবং সমঅধিকারের নীতিতে বিশ্বাসী, নাগরিক মর্যাদা দিয়ে আমাদের সঙ্গে চলবে, তাদের সঙ্গে আমরা থাকব। এই কারণেই সব সনাতনী জনগোষ্ঠী একীভূত হয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রমূলক রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রসঙ্গও তোলা হয়। মুখপাত্র জানান, “দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কারও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা যায় না। কিন্তু ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ ধরনের মামলা দায়ের করে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। এটি বিশেষ মহলের অসৎ উদ্দেশ্যকে নির্দেশ করে, যারা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়।”

সংবাদ সম্মেলনে আগের আট দফা দাবির সঙ্গে আরও পাঁচটি নতুন দাবি উত্থাপন করা হয়। সেগুলো হলো:
১. গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাজারী গলির ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন।
২. আটক ও নির্যাতনের শিকার সনাতনীদের মুক্তি এবং যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা।
৩. আটককৃতদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিভিন্ন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর প্রক্রিয়া বন্ধ।
৪. সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে সনাতনীদের নির্যাতনকারীদের বিচার।
৫. সাধু-সন্ত ও সংগঠকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহার।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখযোগ্য সনাতনী ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে শ্রীমৎ গোবিন্দ ব্রহ্মচারী, প্রেমময়ীনন্দ ব্রহ্মচারী, রননাথ ব্রহ্মচারী, স্বামী উমেশানন্দ ব্রহ্মচারী, পরিতোষানন্দ গিরি মহারাজ, লীলারাজ গৌরাঙ্গ, অজপানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ, সোমনাথ চৈতন্য রুদ্রাক্ষ, কুশল বরণ চক্রবর্তী, অক্ষরানন্দপুরী মহারাজ, অবিশ্বম গৌর দাশ ব্রহ্মচারী, এবং স্বামী ধীরেশ্বানন্দ গিরি মহারাজ প্রমুখ ছিলেন।

নতুন এই প্ল্যাটফর্মটি সনাতনী সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। সংগঠনটি রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রেখে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

তারিখ: ১৮.১১.২০২৪

যশোর বড় বাজারের শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী তিন প্রতিষ্ঠান

যশোরের বড় বাজারে শতবর্ষী তিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাদের ঐতিহ্য নিয়ে টিকে রয়েছে। ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো নিশিবাবুর দোকান, মনসা বস্ত্রালয় এবং এ রহিম ট্রেডার্সের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও আস্থার প্রতীক। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেনাকাটা করতে আসেন। এই ব্যবসাগুলো বংশপরম্পরায় পরিচালিত হচ্ছে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে।
যশোর বড় বাজারের শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী তিন প্রতিষ্ঠান

যশোরের বড় বাজারে শতবর্ষী তিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাদের ঐতিহ্য নিয়ে টিকে রয়েছে। ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো নিশিবাবুর দোকান, মনসা বস্ত্রালয় এবং এ রহিম ট্রেডার্সের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও আস্থার প্রতীক। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেনাকাটা করতে আসেন। এই ব্যবসাগুলো বংশপরম্পরায় পরিচালিত হচ্ছে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে।

যশোর, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪: প্রমত্ত ভৈরব নদের তীরে গড়ে ওঠা যশোর শহর আজ থেকে ২৫৫ বছর আগে যাত্রা শুরু করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরের চারপাশে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বড় বাজারে শতবর্ষী তিনটি প্রতিষ্ঠান এখনও ব্যবসা করে চলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো হলো নিশিবাবুর দোকান, মনসা বস্ত্রালয় এবং এ রহিম ট্রেডার্স। তিনটি প্রতিষ্ঠানই তাদের নিজ নিজ পণ্যের ক্ষেত্রে ঐতিহ্য ও আস্থার প্রতীক হয়ে রয়েছে।

নিশিবাবুর দোকান: পূজা সামগ্রী ও ঔষধি পণ্যের আস্থার নাম

১৯২০ সালে নিশি নাথ মুখার্জী ছোট্ট একটি ছাপরায় মুদি দোকান হিসেবে নিশিবাবুর দোকানের যাত্রা শুরু করেন। দোকানটি পূজা সামগ্রী ও ঔষধি গাছগাছড়ার জন্য এলাকাবাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বর্তমানে এটি পরিচালনা করছেন তৃতীয় প্রজন্মের যদুনাথ মুখার্জী ও সঞ্জয় মুখার্জী। সঞ্জয় মুখার্জী জানান, “মানুষ আমাদের আস্থা রেখেছেন, আমরা সেই আস্থার প্রতিদান দিতে পেরেছি। অশ্বগন্ধা, ত্রিফলা, শিলাজুতসহ পূজার সামগ্রী আমাদের প্রধান পণ্য।”

এ রহিম ট্রেডার্স: ১১৬ বছরের ঐতিহ্য

১৯০৮ সালে ভৈরব নদের তীরে প্রতিষ্ঠিত হয় এ রহিম ট্রেডার্স। এটি শুরু করেছিলেন শেখ সালামত হোসেন। পরবর্তী প্রজন্মে শেখ আবদুর রহিম ৭৩ বছর এই ব্যবসা পরিচালনা করেন। বর্তমানে রফিকুল ইসলাম এই ব্যবসার দায়িত্বে আছেন। তিনি জানান, “আমাদের ব্যবসা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। এখন পণ্য উৎপাদন ও প্যাকেজিংয়ের দিকে আমরা মনোযোগ দিচ্ছি।”

মনসা বস্ত্রালয়: ঐতিহ্যের ধুতি-শাড়ির দোকান

মনসা বস্ত্রালয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৯৪৭ সালের আগে, যখন গোপালগঞ্জের কৃষ্ণচন্দ্র সাহা যশোরে আসেন। দোকানটির ছাদ ও দেয়ালের নকশা এখনো প্রাচীনত্বের সাক্ষী। বর্তমান প্রজন্মের চিন্ময় সাহা জানান, “আমাদের দোকানটি ধুতি-শাড়ির জন্য এই অঞ্চলের মানুষের আস্থার প্রতীক।” ভবিষ্যতে ব্যবসার দায়িত্ব কে নেবেন, তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত হলেও ঐতিহ্য রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

যশোর বড় বাজার: বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র

যশোর বড় বাজার শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এখানে প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা এখান থেকে পণ্য সংগ্রহ করেন। বাজারটি ২৬টি পণ্যের সমিতি নিয়ে গঠিত এবং এখানে প্রায় ৫ হাজার দোকান রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই বাজারে আসেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

যশোরের এই শতবর্ষী প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু ব্যবসা নয়, বরং শহরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে টিকে রয়েছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তাদের ব্যবসার ধারা অব্যাহত রেখেছে এবং মানুষের আস্থা অর্জন করেছে।

তারিখ: ২০.১১.২০২৪

হিন্দু, হাসিনা, হতাশা: যে সব কারণে দিল্লি ও ঢাকার সম্পর্ক কিছুতেই সহজ হচ্ছে না

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবস্থা বর্তমানে এক অস্বস্তিকর শীতলতা অনুভব করছে। গত একশো দিনে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে সরাসরি আলোচনা কার্যত স্থগিত। সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ভারত একাধিকবার বাংলাদেশ সরকারের প্রতি নালিশ জানিয়েছে। অন্যদিকে, শেখ হাসিনার ভারত অবস্থান এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। (সূত্রঃ বিবিসি)
হিন্দু, হাসিনা, হতাশা: যে সব কারণে দিল্লি ও ঢাকার সম্পর্ক কিছুতেই সহজ হচ্ছে না

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবস্থা বর্তমানে এক অস্বস্তিকর শীতলতা অনুভব করছে। গত একশো দিনে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে সরাসরি আলোচনা কার্যত স্থগিত। সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ভারত একাধিকবার বাংলাদেশ সরকারের প্রতি নালিশ জানিয়েছে। অন্যদিকে, শেখ হাসিনার ভারত অবস্থান এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। (সূত্রঃ বিবিসি)

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪: মাত্র কয়েক মাস আগেও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ‘সোনালি অধ্যায়’ বলে যে সম্পর্ককে আখ্যা দেওয়া হচ্ছিল, বর্তমানে সেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চরম শীতলতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ে তেমন কোনও আলোচনার আয়োজন হয়নি।

নেতৃত্ব পর্যায়ে যোগাযোগের অভাব

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস গত ৮ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর একশো দিন পার হলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার কোনও সরাসরি বৈঠক হয়নি। সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে বৈঠকের অনুরোধ জানানো হলেও ভারত তা প্রত্যাখ্যান করে।

এই সময়ে দুই দেশের মধ্যে মাত্র একবার টেলিফোনে যোগাযোগ হয়েছে, যেখানে ভারত প্রধানত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে অভিযোগ তোলে।

দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ডে অচলাবস্থা

বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা কার্যক্রম কার্যত বন্ধ রয়েছে। জরুরি চিকিৎসা ভিসা ছাড়া সাধারণ বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেসসহ অন্য ট্রেন চলাচলও বন্ধ। ভারতীয় বিভিন্ন সংস্থার নির্মাণ প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ সরবরাহেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ

ভারত বারবার বাংলাদেশ সরকারকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি এই বিষয়ে সরাসরি বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

শেখ হাসিনার ভারত অবস্থান

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। ভারত বলছে, তিনি ‘সাময়িক আশ্রয়ে’ আছেন। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাকে ফিরিয়ে আনার কথা বললেও তাতে কোনও সাড়া মেলেনি।

বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ

ভারতের সাবেক কূটনীতিক হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, “এখনকার বাংলাদেশ সরকার একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন। তাদের ম্যান্ডেট সীমিত। ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্কও তাই সীমাবদ্ধ।”

অন্যদিকে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের কূটনৈতিক মহলে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শেখ হাসিনার উপস্থিতি এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যু দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে।

শেখ হাসিনার ভারত অবস্থান এবং সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতের স্পষ্ট অবস্থান ভবিষ্যতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নকে প্রভাবিত করতে পারে।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে শীতল সম্পর্কের অধ্যায় চলছে, তা দ্রুত মীমাংসার পথে না এগুলে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন এবং জনগণের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

তারিখ: ১৭.১১.২০২৪

তালিবান বাংলাদেশ: মুসলিম মেয়ের সঙ্গে প্রেমের অভিযোগে হিন্দু যুবককে পিটিয়ে হত্যা

তালিবান বাংলাদেশ: মুসলিম মেয়ের সঙ্গে প্রেমের অভিযোগে হিন্দু যুবককে হত্যা। কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে হৃদয় রবি দাস নামের এক তরুণের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রেমের সম্পর্কের জেরে আটক, জিজ্ঞাসাবাদ ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয়দের হাতে আটক হয়ে সেনাক্যাম্পে নেওয়া হয় হৃদয়কে। পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
তালিবান বাংলাদেশ: মুসলিম মেয়ের সঙ্গে প্রেমের অভিযোগে হিন্দু যুবককে পিটিয়ে হত্যা

তালিবান বাংলাদেশ: মুসলিম মেয়ের সঙ্গে প্রেমের অভিযোগে হিন্দু যুবককে পিটিয়ে হত্যা। কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে হৃদয় রবি দাস নামের এক তরুণের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রেমের সম্পর্কের জেরে আটক, জিজ্ঞাসাবাদ ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয়দের হাতে আটক হয়ে সেনাক্যাম্পে নেওয়া হয় হৃদয়কে। পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

কিশোরগঞ্জ, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪: কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে হৃদয় রবি দাস (২১) নামের এক তরুণের রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্য সামনে আসছে। শনিবার ভোরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৃদয় মারা যান। করিমগঞ্জের জয়কা বারুক বাজার এলাকার রিকশাচালক জুগেস রবি দাসের দ্বিতীয় ছেলে হৃদয় স্থানীয় এক সেলুনে কাজ করতেন।

পরিবারের দাবি, হৃদয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল একই এলাকার একজন এতিম মুসলিম কিশোরীর (১৬) সঙ্গে। এ সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে কিশোরীর স্বজনরা হৃদয়কে শুক্রবার সন্ধ্যায় নোয়াবাদ বাজার থেকে ধরে নিয়ে যায়।

হৃদয়ের খুড়তুতো ভাই শাকিল রবি দাস জানান, তাদের দুজনকে বাজারের একটি ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, বাজার কমিটির সভাপতি মঞ্জিল মিয়াসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তাদের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি মারধর করা হয়। এক ঘণ্টা পরে সেনাক্যাম্পে পাঠানোর সময়ও তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন শাকিল।

শাকিল বলেন, ‘‘সেনাক্যাম্পে আমাদের আলাদা কক্ষে রাখা হয়। আমি হৃদয়ের কক্ষে কী ঘটেছে জানি না। গভীর রাতে হৃদয়কে হাসপাতালে নেওয়ার সময় দেখি তার অবস্থা খুব খারাপ।’’

হৃদয়ের বাবা জুগেস রবি দাস বলেন, ‘‘সেনাক্যাম্পে হৃদয়কে দেখতে দেওয়া হয়নি। রাত তিনটার দিকে শুনি তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে সকালে জানতে পারি, সে মারা গেছে।’’

সেনাক্যাম্পের লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজুল করিম জানান, হৃদয়কে স্থানীয় লোকজন গণপিটুনি দিয়ে তাদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয়ের মুঠোফোন থেকে ধর্মান্তরিত ও পাচারের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। তবে জিজ্ঞাসাবাদের সময় হৃদয় অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং হাসপাতালে মারা যায়।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক কামরুল ইসলাম জানান, হৃদয়ের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

স্থানীয় চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল দাবি করেন, হৃদয়ের মুঠোফোন চেক করে সেনাক্যাম্পে পাঠানো হয়েছিল, তবে তাকে নির্যাতন করা হয়নি।

শনিবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে হৃদয়ের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতে স্থানীয় শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

তারিখ: ১৮.১১.২০২৪

সরকার সংখ্যালঘুর ওপর সহিংসতার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করছে : ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস জানান, তার সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট ছিলেন এবং যেকোনো সহিংসতার ঘটনার তদন্ত করেছেন। দুর্গাপূজার মতো উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপনের জন্য অতিরিক্ত ছুটি ও বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। যদিও অল্প কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তিনি সেগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন। তবে তার এই বক্তব্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে কতটা বিশ্বাসযোগ্য, সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সরকার সংখ্যালঘুর ওপর সহিংসতার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করছে : ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস জানান, তার সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট ছিলেন এবং যেকোনো সহিংসতার ঘটনার তদন্ত করেছেন। দুর্গাপূজার মতো উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপনের জন্য অতিরিক্ত ছুটি ও বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। যদিও অল্প কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তিনি সেগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন। তবে তার এই বক্তব্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে কতটা বিশ্বাসযোগ্য, সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তবে প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস। রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইউনূস জানান, তার সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় বাংলাদেশ ছিল একটি অরক্ষিত অবস্থায়। সে সময় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে এসব ঘটনা অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘‘অল্প কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, যার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। এসব ঘটনাকে ধর্মীয় রূপ দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সবার সহযোগিতায় আমরা দৃঢ়ভাবে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি।’’

দুর্গাপূজার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘‘দু’মাসের মাথায় দেশে প্রায় ৩২ হাজার পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়েছে। আমরা নির্বাহী আদেশে একদিন অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করি, যা উৎসবের আমেজকে বাড়িয়ে দেয়। পূজার সময় ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ফলে হিন্দু সম্প্রদায় নির্বিঘ্নে তাদের উৎসব পালন করতে পেরেছে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের সরকার সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, দেশের প্রতিটি মানুষ যেন সহিংসতার শিকার না হয়, সেই চেষ্টা আমরা সব সময় করেছি এবং করে যাব।’’

ড. ইউনূস বলেন, তার সরকারের সময়ে ঘটে যাওয়া অল্প কিছু সহিংসতার ঘটনার তদন্ত চলছে। এর পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার বিষয়ে জোর দিয়েছেন তিনি।

ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো নিয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।

তারিখ: ১৮.১১.২০২৪

হাজারী লেনের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষায় নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’। দুটি সংগঠন একত্রিত হয়ে আট দফা দাবির ভিত্তিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। চট্টগ্রামের হাজারী লেনের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত, নির্যাতিতদের মুক্তি, এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রোববার ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে সংবাদ সম্মেলন করে তারা।
হাজারী লেনের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষায় নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’। দুটি সংগঠন একত্রিত হয়ে আট দফা দাবির ভিত্তিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। চট্টগ্রামের হাজারী লেনের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত, নির্যাতিতদের মুক্তি, এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রোববার ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে সংবাদ সম্মেলন করে তারা।

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষায় দুটি সংগঠন একত্রিত হয়ে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ নামে নতুন একটি ঐক্যবদ্ধ মঞ্চ গঠন করেছে। এই নতুন জোট আট দফা দাবি সামনে রেখে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। রোববার ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এ সময় বিভিন্ন মঠ ও মন্দিরের সাধু-সন্তরাও উপস্থিত ছিলেন।

চিন্ময় কৃষ্ণ জানান, ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাজারী লেনের ঘটনায় নিরপরাধ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গ্রেপ্তার এবং নির্যাতনের বিষয়টি তদন্তের দাবি জানানো হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের মুক্তি ও যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। একই সঙ্গে ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলায় আটক দেখানোর প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনো অপরাধীর পক্ষে নই। যদি কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করে থাকে, তাহলে তার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত এবং প্রচলিত আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত।’’

চিন্ময় কৃষ্ণ আরও দাবি করেন, সম্প্রতি সনাতন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠকের বিরুদ্ধে মিথ্যা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পেছনে উদ্দেশ্য হিসেবে মুখপাত্র বলেন, ‘‘সনাতন সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট দীর্ঘদিন ধরে আলাদাভাবে কাজ করে আসছে। কিন্তু বর্তমানে যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ নামে একত্রিত হয়েছে।’’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর বাড়িঘর, উপাসনালয়, এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। এসব ঘটনায় এখনও দায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ‘‘সারা দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষকরা অযৌক্তিকভাবে ভীতি প্রদর্শন ও জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন। সংখ্যালঘুদের ওপর এই নির্যাতনের অবসান হওয়া দরকার।’’

চিন্ময় কৃষ্ণ জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আট দফা যৌক্তিক দাবি নিয়ে ধারাবাহিক সভা-সমাবেশ করা হচ্ছে। গত ২৫ অক্টোবর লালদীঘি ময়দানে একটি শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তবে সেখানে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়, যা প্রকৃতপক্ষে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা।

তিনি আরও বলেন, ‘‘সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের মাতৃভূমিকে মাতৃতুল্য মনে করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে সনাতনী সম্প্রদায়ের ত্যাগের ইতিহাস রয়েছে।’’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হাজারী লেনের ঘটনার পর ১৫ দিন কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছিল। তবে পূর্বঘোষিত বিভাগীয় সমাবেশগুলো পুনরায় আয়োজনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। রংপুরের সমাবেশ হবে ২২ নভেম্বর, বরিশালে ২০ ডিসেম্বর, এবং খুলনায় ১৩ ডিসেম্বর।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন লীলারাজ গৌরদাস ব্রহ্মচারী, অজপানন্দ ব্রহ্মচারী, অক্ষরানন্দ পুরি মহারাজ, বীরেশ্বরানন্দ পুরি মহারাজসহ আরও অনেকে।

তারিখ: ১৮.১১.২০২৪

সব রাজনৈতিক! পুজোয় বেশি ছুটি দিয়েছি, হিন্দুদের উপরে হামলা নিয়ে সাফাই ইউনুসের

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সহিংসতা ধর্মীয় নয় বরং রাজনৈতিক কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস। জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি দাবি করেন, সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছে। দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে উদযাপন হওয়ার কথাও তুলে ধরেন তিনি। তবে বিভিন্ন এলাকায় মূর্তি ভাঙচুর ও মণ্ডপে হামলার অভিযোগ ওঠে।
সব রাজনৈতিক! পুজোয় বেশি ছুটি দিয়েছি, হিন্দুদের উপরে হামলা নিয়ে সাফাই ইউনুসের

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সহিংসতা ধর্মীয় নয় বরং রাজনৈতিক কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস। জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি দাবি করেন, সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছে। দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে উদযাপন হওয়ার কথাও তুলে ধরেন তিনি। তবে বিভিন্ন এলাকায় মূর্তি ভাঙচুর ও মণ্ডপে হামলার অভিযোগ ওঠে।

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া হামলাগুলোকে ধর্মীয় কারণ নয়, বরং রাজনৈতিক কারণ বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস। রোববার জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন বাংলাদেশ ছিল সম্পূর্ণ অরক্ষিত। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কয়েকটি ক্ষেত্রে তারা হিংসার শিকার হয়েছে, তবে এর সংখ্যা এবং গুরুত্ব অতিরঞ্জিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করেছে, যা ধর্মীয় আবরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার ষড়যন্ত্র ছিল।’’

ইউনুস আরও দাবি করেন, তার সরকারের কার্যকালের প্রথম দুই মাসেই দেশে প্রায় ৩২,০০০ দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে একটি অতিরিক্ত ছুটির ঘোষণা দেওয়া হয় এবং সারা দেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’’

অপরদিকে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলার অভিযোগ ব্যাপকভাবে উঠে এসেছে। এমনকি, অনেকে ভারতে চলে যাওয়ার চেষ্টাও করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

দুর্গাপূজার সময়ে মূর্তি ভাঙচুর এবং পূজা মণ্ডপে হামলার অভিযোগও সামনে এসেছে। ঢাকার তাঁতিবাজার পূজা মণ্ডপে ককটেল হামলার ঘটনা এবং সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে মা কালীর মুকুট চুরির অভিযোগ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই মুকুটটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল।

সরকারের দাবি অনুযায়ী, এসব সহিংস ঘটনার তদন্ত চলছে এবং সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের ঘটনা এবং স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোগগুলো নতুন করে দেশব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

তারিখ: ১৮.১১.২০২৪

সংখ্যালঘু নির্যাতনের মূল কারণ ছিল রাজনৈতিক : ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সাম্প্রতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে বলেছেন, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা, বন্যা পুনর্বাসন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং জ্বালানি সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপূজায় নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক অনুদান সংগ্রহ, খাদ্যপণ্য আমদানিতে শুল্ক ছাড়, এবং টিসিবির মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপগুলো জনস্বার্থে গ্রহণ করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি রোধ ও কৃষিপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের মূল কারণ ছিল রাজনৈতিক : ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সাম্প্রতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে বলেছেন, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা, বন্যা পুনর্বাসন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং জ্বালানি সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপূজায় নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক অনুদান সংগ্রহ, খাদ্যপণ্য আমদানিতে শুল্ক ছাড়, এবং টিসিবির মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপগুলো জনস্বার্থে গ্রহণ করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি রোধ ও কৃষিপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪: দেশের সাম্প্রতিক সংকট ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি জানান, সংখ্যালঘু সুরক্ষা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, ‘‘আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশ ছিল অরক্ষিত। সংখ্যালঘুদের মধ্যে অহেতুক আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবে অল্প কিছু সহিংসতার ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়, যা ধর্মীয় আবরণে উপস্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি। প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চলছে।’’

তিনি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম দুই মাসেই দেশে প্রায় ৩২ হাজার পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপিত হয়। নির্বাহী আদেশে একদিন অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা ও কঠোর নিরাপত্তার ফলে হিন্দু সম্প্রদায় নির্বিঘ্নে উৎসব উদ্‌যাপন করতে পেরেছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘চলতি বছর দেশে ছয়টি বন্যা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ২৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদানসহ স্থানীয়ভাবে ১০০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে। বন্যায় ফসলহানি ও সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ায় নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছিল। তবে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ ও আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

তিনি আরও জানান, ‘‘বাজারে ডিম সরবরাহ বাড়াতে সাড়ে ৯ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে সরাসরি উৎপাদকদের বাজারে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’

মূল্যস্ফীতি রোধে সরকার উচ্চ সুদের হার নির্ধারণ, শস্য আমদানিতে সীমা অপসারণ এবং সরবরাহ চেইন সংক্ষিপ্ত করার মতো নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি। টিসিবির স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ৫৭ লাখ নিম্ন আয়ের পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

জ্বালানি খাতে অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘জ্বালানি তেলের মূল্য সামান্য কমানো হয়েছে। শিল্পকারখানায় গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম গণশুনানি ছাড়া না বাড়ানো এবং নেপাল থেকে পানিবিদ্যুৎ আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে বাজারে পণ্যমূল্য কমিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক চলছে।’’

সামগ্রিকভাবে দেশের সংকট মোকাবিলা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরাতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

তারিখ: ১৮.১১.২০২৪

বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে ট্রাম্প প্রশাসনকে আহ্বান জানাবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনরা

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ তুলে ভারতের বংশোদ্ভূত মার্কিনরা দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই পদক্ষেপ কার্যকর করার লক্ষ্যে তারা তৎপর। প্রভাবশালী মার্কিন নেতা ভরত বড়াই জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন ও কংগ্রেসের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বন্ধ করার বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে। একই সঙ্গে ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বড়াই বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের হয়রানি বন্ধ না হলে ভারতকেও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে ট্রাম্প প্রশাসনকে আহ্বান জানাবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনরা

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ তুলে ভারতের বংশোদ্ভূত মার্কিনরা দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই পদক্ষেপ কার্যকর করার লক্ষ্যে তারা তৎপর। প্রভাবশালী মার্কিন নেতা ভরত বড়াই জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন ও কংগ্রেসের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বন্ধ করার বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে। একই সঙ্গে ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বড়াই বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের হয়রানি বন্ধ না হলে ভারতকেও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের বংশোদ্ভূত মার্কিনরা। শনিবার এক সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে কথা বলেন প্রভাবশালী মার্কিন নেতা ও চিকিৎসক ভরত বড়াই।

ভরত বড়াই জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে সাহসী বক্তব্য দেন। ট্রাম্পের সেই অবস্থানকে আশ্বাস হিসেবে ধরে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনরা মনে করছেন, বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে তিনি উদ্যোগী হবেন।

পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভরত বড়াই বলেন, “বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর দমন-পীড়নের বিষয়ে ট্রাম্প সবসময় স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি সাহসী একজন নেতা। বাংলাদেশে পরিস্থিতি উন্নত না হলে তিনি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন।”

ভরত বড়াই আরও উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ও কংগ্রেসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনরা সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বাংলাদেশের ব্যবসার ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল। যদি এই রপ্তানি বন্ধ করা হয়, তাহলে তাদের মানুষ কী খাবে?”

সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভরত বড়াই বলেন, “বাংলাদেশ যদি হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের ওপর হয়রানি চালিয়ে যেতে থাকে, তাহলে ভারত সরকারের উচিত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।” তিনি মনে করেন, আন্তর্জাতিক চাপের মাধ্যমে বাংলাদেশের পরিস্থিতি উন্নত করা সম্ভব।

বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন গোষ্ঠী। তাদের দাবি, সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা এবং দমন-পীড়ন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় হতে হবে।

তারিখ: ১৭.১১.২০২৪

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর অত্যাচার অব্যাহতভাবে চলছে: সম্মিলিত সনাতন পরিষদ

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ তুলেছে। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সনাতন সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের প্রতিবাদ জানায়। একই সঙ্গে ইসকন সম্পর্কে অপপ্রচার এবং চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকার সমালোচনা করা হয়। পরিষদ আট দফা দাবি তুলে ধরে, যার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর অত্যাচার অব্যাহতভাবে চলছে: সম্মিলিত সনাতন পরিষদ

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ তুলেছে। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সনাতন সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের প্রতিবাদ জানায়। একই সঙ্গে ইসকন সম্পর্কে অপপ্রচার এবং চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকার সমালোচনা করা হয়। পরিষদ আট দফা দাবি তুলে ধরে, যার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।

ঢাকা, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪: দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনা অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ। শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে সনাতন সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার আচার্য। তিনি জানান, “ইতিহাসে বহুবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন হয়েছে, কিন্তু এর কোনো সুষ্ঠু প্রতিকার পাওয়া যায়নি। ফলে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নির্যাতিতরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন, যা সামাজিক সম্প্রীতিকে হুমকির মুখে ফেলছে।”

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, ইসকনকে সনাতন ধর্মাদর্শ থেকে আলাদা করার উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। পরিষদ বলেছে, “ইসকন সনাতন ধর্মের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার সনাতন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা।”

পরিষদের নেতারা সরকারকে ইসকনবিরোধী উসকানিমূলক প্রচারণার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, “সরকার যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে এর দায় সরকারের ওপরই বর্তাবে।”

চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে সাম্প্রতিক ঘটনার প্রসঙ্গে পরিষদ সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে উল্লেখ করে। তাদের মতে, এই ভূমিকা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা সঞ্চারে ব্যর্থ হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সভাপতি হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন সহসভাপতি অশোক তরু, প্রধান সমন্বয়ক শ্যামল রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়, মানিক চন্দ্র সরকার, এবং বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায়।

পরিষদ দাবি করে, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে নাগরিক জীবনে স্থায়ী ক্ষতির সৃষ্টি হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, যেন সব সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

তারিখ: ১৭.১১.২০২৪

চট্টগ্রামের হাজারী লেনে যা ঘটেছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধ

চট্টগ্রামের হাজারী লেনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানের সময় সিসি ক্যামেরা ধ্বংস, বাড়িঘরে তল্লাশি, এবং শতাধিক হিন্দুকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযানের পেছনে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর উসকানি এবং স্থানীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। একাধিক মানবাধিকার সংস্থা ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই ঘটনার যথাযথ বিচার না হলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।
চট্টগ্রামের হাজারী লেনে যা ঘটেছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধ

চট্টগ্রামের হাজারী লেনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানের সময় সিসি ক্যামেরা ধ্বংস, বাড়িঘরে তল্লাশি, এবং শতাধিক হিন্দুকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযানের পেছনে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর উসকানি এবং স্থানীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। একাধিক মানবাধিকার সংস্থা ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই ঘটনার যথাযথ বিচার না হলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।

চট্টগ্রাম, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪: চট্টগ্রামের হাজারী লেন এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর পরিচালিত এক অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকাণ্ড নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪, রাতের অন্ধকারে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে এলাকাটি ঘিরে ফেলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অভিযান শুরুর আগে সিসি ক্যামেরা নিষ্ক্রিয় করে বাড়িঘরে ঢুকে তল্লাশি চালানো হয় এবং বহু হিন্দু পরিবার আতঙ্কের মধ্যে পড়ে।

অভিযানের অভিযোগ

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ৫৭ জন হিন্দু আহত হয়েছেন এবং প্রায় ২০০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আটককৃতদের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে এবং আদালতে তাদের দাঁড়ানোর অবস্থাও ছিল না। পুলিশের দাবি, সেনাবাহিনীর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছিল, যদিও এ বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রমাণ মেলেনি।

স্থানীয় উসকানি ও লুটপাট

জানা গেছে, অভিযানের আগে ওসমান মোল্লা নামে এক ব্যক্তির সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য ছিল। স্থানীয় হিন্দু-মুসলিমরা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করলেও জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো তা মানতে নারাজ ছিল। ৫ নভেম্বর রাতে, ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলো পুলিশের সহযোগিতায় ১৫-২০টি সোনার দোকান লুট করে।

সেনাবাহিনী ও পুলিশের ভূমিকা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযানে দুটি দল সক্রিয় ছিল— একটি সম্পূর্ণ হিন্দু-বিরোধী এবং অন্যটি এ ধরনের কার্যক্রমের বিরোধী। অভিযোগ রয়েছে, মৌলবাদী ক্যাডাররা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মিলে লুটপাটে অংশ নেয়। নিরাপত্তা বাহিনী এখনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

মানবাধিকার সংস্থার পদক্ষেপ

দ্য হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজ (এইচআরসিবিএম)-এর একটি প্রতিনিধি দল স্থানীয় পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করলেও কোনো কার্যকর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এদিকে, গ্লোবাল বাংলাদেশি হিন্দু অ্যালায়েন্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৮০ জনেরও বেশি হিন্দুকে মধ্যরাতে আটক করা হয়েছে এবং তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।

হিন্দুদের অভিযোগ

একজন নারী আরাধ্যা সাহা অভিযোগ করেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী ও মৌলবাদী ক্যাডাররা সমর্থকরা তার বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বাড়িতে প্রবেশ, মূল্যবান সামগ্রী লুট এবং আটকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে আরএসএস-এর সঙ্গে তাদের যোগসূত্রের বিষয়ে জানতে চেয়েছে এবং হিন্দু ধর্মীয় স্লোগানকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই অভিযানকে ১৯৭১ সালের পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত আক্রমণের সঙ্গে তুলনা করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

এখন প্রশ্ন রয়ে গেছে, সংখ্যালঘু হিন্দুরা কি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সুরক্ষিত? বিচার এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে এই প্রশ্ন থেকেই যাবে।

তারিখ: ১৭.১১.২০২৪

ইস্কন সম্পর্কে অপপ্রচার চলছে: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা বেড়েছে বলে দাবি করেছে সম্মিলিত সনাতন পরিষদ। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি জানায়, আগস্টের পর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট, এবং ইসকন সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায় বলছে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হত্যাকাণ্ড এবং সম্পত্তি দখল চালানো হয়েছে, যা নাগরিক জীবনকে অশান্ত করছে। এ বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু বিচার হয়নি বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। সম্প্রতি চট্টগ্রামে হাজার হাজার হিন্দু তাদের অধিকারের দাবিতে সমাবেশও করেছে। (সূত্রঃ ভয়েস-অফ-আমেরিকা)
ইস্কন সম্পর্কে অপপ্রচার চলছে: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা বেড়েছে বলে দাবি করেছে সম্মিলিত সনাতন পরিষদ। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি জানায়, আগস্টের পর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট, এবং ইসকন সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায় বলছে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হত্যাকাণ্ড এবং সম্পত্তি দখল চালানো হয়েছে, যা নাগরিক জীবনকে অশান্ত করছে। এ বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু বিচার হয়নি বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। সম্প্রতি চট্টগ্রামে হাজার হাজার হিন্দু তাদের অধিকারের দাবিতে সমাবেশও করেছে। (সূত্রঃ ভয়েস-অফ-আমেরিকা)

ঢাকা, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ এ অভিযোগ তোলে।

সম্মিলিত সনাতন পরিষদের নেতারা বলেন, “১৯৪৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সনাতন সম্প্রদায়ের ওপর বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা, সম্পদ লুট, হত্যাকাণ্ড, ধর্মান্তর, ধর্ষণ এবং ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়েরের ইতিহাস রয়েছে। এসব ঘটনার একটিও সঠিক বিচারের আওতায় আসেনি।”

সংগঠনটি আরও জানায়, “এ ধরনের অপরাধের সঠিক বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নির্যাতিত ব্যক্তিরা ভীত ও হতাশ হয়ে পড়েছে, যা সমাজে বিভেদ তৈরি করছে এবং নাগরিক জীবনকে বিপর্যস্ত করছে।”

সম্মিলিত সনাতন পরিষদ ৪১টি সংখ্যালঘু সংগঠনের একটি প্ল্যাটফর্ম, যারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা ও ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করছে।

এর আগে, নভেম্বরের শুরুর দিকে, চট্টগ্রামের একটি সমাবেশে প্রায় ৩০,০০০ হিন্দু তাদের অধিকার রক্ষার দাবিতে প্রতিবাদে অংশ নেয়। তারা দাবি তোলে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা বেড়েছে।

হিন্দু গোষ্ঠীর অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হাজার হাজার হামলা হয়েছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার এই পরিসংখ্যানকে অতিরঞ্জিত বলে অভিহিত করেছে।

চট্টগ্রামের প্রধান মোড়ে আয়োজিত ওই সমাবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং হামলা ও হয়রানি থেকে সুরক্ষার আবেদন করেন। সমাবেশে উপস্থিত পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ছিল।

ইসকন সম্পর্কে অপপ্রচার এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি লুটের অভিযোগে সম্মিলিত সনাতন পরিষদ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের বক্তব্য, “দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখতে এসব নির্যাতনের সঠিক বিচার হওয়া প্রয়োজন।”

সংগঠনটি বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে, “ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে সনাতন সম্প্রদায় শান্তিতে বসবাস করতে পারে।”

সম্মিলিত সনাতন পরিষদের দাবি অনুযায়ী, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর এই সহিংসতার ফলে তাদের মধ্যে চরম ভীতি ও হতাশা দেখা দিয়েছে। এতে তারা ক্রমাগত সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এ ধরনের সহিংসতা ও বৈষম্যের অভিযোগ আন্তর্জাতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন এসব ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

তারিখ: ১৭.১১.২০২৪

বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ ট্রাম্প শিবিরের

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে সংখ্যালঘু নির্যাতন, চরমপন্থার উত্থান এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিবির। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ লিসা কার্টিস শেখ হাসিনার উৎখাতের পরবর্তী পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং জঙ্গি নেতাদের মুক্তির ঘটনায় দেশের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। নতুন সরকারকে কেন্দ্র করে দেশীয় রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অস্থিরতা বাড়ছে। ব্রাসেলসের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপও অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনের কার্যক্রম নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন কার্টিস। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)
বাংলাদেশ নিয়ে  উদ্বেগ প্রকাশ  ট্রাম্প শিবিরের

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে সংখ্যালঘু নির্যাতন, চরমপন্থার উত্থান এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিবির। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ লিসা কার্টিস শেখ হাসিনার উৎখাতের পরবর্তী পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং জঙ্গি নেতাদের মুক্তির ঘটনায় দেশের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। নতুন সরকারকে কেন্দ্র করে দেশীয় রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অস্থিরতা বাড়ছে। ব্রাসেলসের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপও অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনের কার্যক্রম নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন কার্টিস। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

যুক্তরাষ্ট্র, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে চরমপন্থার উত্থান, সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিবির উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য লিসা কার্টিস শনিবার পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ পরিস্থিতিকে “অত্যন্ত উদ্বেগজনক” বলে অভিহিত করেন।

কার্টিস জানান, শেখ হাসিনা সরকার উৎখাতের ফলে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা চরমপন্থা দমন এবং জঙ্গি কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। এখন পরিস্থিতি বিপরীতমুখী হয়ে উঠেছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজান হামলার মতো ঘটনা প্রমাণ করে যে বাংলাদেশে জঙ্গি প্রভাব বিদ্যমান। “এই প্রভাব এখন রাজনীতির মঞ্চে ফিরে এসেছে, যা কারও জন্যই ভালো নয়,” বলেন কার্টিস।

ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে বাংলাদেশের বিষয়ে অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ আশা করা হচ্ছে। কার্টিস জানান, “ভবিষ্যৎ ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা দল বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেবে।”

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনের কার্যক্রম নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার জনগণের উচ্চ প্রত্যাশার মুখে রয়েছে। তবে রাজনীতি, অর্থনীতি, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংস্কারের সুযোগ থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা কঠিন।

ইউনূস সরকারের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের বিষয়টি নতুন আলোচনার সৃষ্টি করেছে। শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মার্কিন কর্মকর্তা ডোনাল্ড লুর পরিকল্পনায় তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে।

একই দিনে ঢাকায় আমেরিকান রাষ্ট্রদূত মেগান বোল্ডিনের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির একটি দল। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের আস্থা অর্জনের প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে, ট্রাম্প শিবিরের পক্ষ থেকে দেওয়া সাম্প্রতিক বিবৃতি বাংলাদেশের রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সংখ্যালঘু নির্যাতন ও চরমপন্থা দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনা আরও তীব্র হচ্ছে।

তারিখ: ১৭.১১.২০২৪

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে বৈষ্ণব হিন্দু তুলসী গ্যাবার্ডের নতুন ভূমিকা

প্রাক্তন মার্কিন কংগ্রেসওমেন এবং বৈষ্ণব হিন্দু তুলসী গ্যাবার্ড ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক (DNI) হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। হিন্দু ধর্মে তার গভীর বিশ্বাস এবং ভক্তি যোগ, কর্ম যোগের মাধ্যমে আত্মত্যাগের আদর্শ তাকে মার্কিন রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সাহায্য করেছে। কংগ্রেস সদস্য থেকে শুরু করে বিদেশ নীতিতে সাহসী অবস্থান এবং এখন গোয়েন্দা বিভাগের নেতৃত্ব—গ্যাবার্ডের রাজনৈতিক যাত্রা এক উজ্জ্বল অধ্যায়। তার ধর্মবিশ্বাস এবং যোগাভ্যাসের মাধ্যমে মার্কিন রাজনীতিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বের একটি নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন। গীতার প্রতি তার গভীর আস্থা তাকে কঠিন পরিস্থিতিতেও মানসিক শান্তি দিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে বৈষ্ণব হিন্দু তুলসী গ্যাবার্ডের নতুন ভূমিকা

প্রাক্তন মার্কিন কংগ্রেসওমেন এবং বৈষ্ণব হিন্দু তুলসী গ্যাবার্ড ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক (DNI) হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। হিন্দু ধর্মে তার গভীর বিশ্বাস এবং ভক্তি যোগ, কর্ম যোগের মাধ্যমে আত্মত্যাগের আদর্শ তাকে মার্কিন রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সাহায্য করেছে। কংগ্রেস সদস্য থেকে শুরু করে বিদেশ নীতিতে সাহসী অবস্থান এবং এখন গোয়েন্দা বিভাগের নেতৃত্ব—গ্যাবার্ডের রাজনৈতিক যাত্রা এক উজ্জ্বল অধ্যায়। তার ধর্মবিশ্বাস এবং যোগাভ্যাসের মাধ্যমে মার্কিন রাজনীতিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বের একটি নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন। গীতার প্রতি তার গভীর আস্থা তাকে কঠিন পরিস্থিতিতেও মানসিক শান্তি দিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪: ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক (DNI) হিসেবে তুলসী গ্যাবার্ডের নিয়োগ মার্কিন রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বৈষ্ণব হিন্দু এবং ভক্তি যোগের অনুসারী গ্যাবার্ড তার আধ্যাত্মিক বিশ্বাস এবং রাজনৈতিক আদর্শের সংমিশ্রণে মার্কিন রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন।

২০১২ সালে হাওয়াই থেকে কংগ্রেস সদস্য নির্বাচিত হয়ে তুলসী গ্যাবার্ড মার্কিন রাজনীতিতে প্রথম হিন্দু সদস্য হিসেবে ইতিহাস তৈরি করেন। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি নিজের ব্যক্তিগত গীতার ওপর হাত রেখে শপথ নেন। তিনি বলেন, “গীতা আমার জীবনে অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং শক্তির প্রধান উৎস। যুদ্ধক্ষেত্রের চরম কঠিন পরিস্থিতিতেও এটি আমাকে মানসিক আশ্রয় দিয়েছে।” ২০১৭ সালেও তিনি একইভাবে গীতার ওপর শপথ নিয়ে তার আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

Photo1

গ্যাবার্ড ১৯৮১ সালে হাওয়াইতে এক বহুসাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ক্যারল হিন্দু ধর্ম দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তার সন্তানদের হিন্দু নাম দেন, যার মধ্যে “তুলসী” নামটি একটি পবিত্র উদ্ভিদের প্রতি ইঙ্গিত করে। ছোটবেলা থেকেই গ্যাবার্ড ভক্তি যোগ এবং কর্ম যোগের অনুশীলনে আত্মনিয়োগ করেন। ভক্তি যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, “এটি ঈশ্বরের সঙ্গে গভীর, ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করে।” কর্ম যোগের বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা করেন, “আমাদের জীবনের প্রতিটি কাজ অন্যের সেবায় উৎসর্গ করার শিক্ষা দেয়।”

Photo2

গ্যাবার্ড তার রাজনৈতিক জীবনে বরাবরই স্বাধীন মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে তার সাহসী অবস্থান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি সিরিয়া নিয়ে ওবামা প্রশাসনের অবস্থানের সমালোচনা করেছিলেন এবং ২০২০ সালে ইরানের জেনারেল কাসেম সোলাইমানির উপর ড্রোন হামলার বিরোধিতা করেছিলেন। ২০২২ সালে তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ত্যাগ করেন এবং এর কারণ হিসেবে “এলিটদের স্বার্থ” এবং “বিভেদমূলক মতাদর্শের” দিকে ইঙ্গিত করেন।

Photo3

গ্যাবার্ডের আধ্যাত্মিক বিশ্বাস তার রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি স্তরে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। তিনি নিয়মিতভাবে জনমাষ্টমী এবং দীপাবলির মতো উৎসবে বক্তব্য রাখেন এবং আত্মত্যাগ, আলো এবং আধ্যাত্মিক পুনর্জাগরণের মূল্যবোধ তুলে ধরেন। তিনি একবার বলেছিলেন, “প্রভু শ্রীকৃষ্ণ সমস্ত সুখের আধার। সত্যিকারের সুখ পেতে হলে আমাদের জীবন ঈশ্বর এবং অন্যদের সেবায় উৎসর্গ করতে হবে।”

Photo4

ইস্কনের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের সময়ও গ্যাবার্ড আধ্যাত্মিকতার গুরুত্ব সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন। তার মতে, আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ আধুনিক জীবনে শান্তি এবং সামঞ্জস্য বজায় রাখতে অপরিহার্য। তিনি ইস্কনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল প্রভুপাদ এবং বৈষ্ণব আচার্যদের অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তার মতে, বৈষ্ণব ধর্ম সার্বজনীন, যা সকল ধর্মীয় অনুভূতিকে মূল্য দেয়।

তিনি আরও বলেন, “ঈশ্বরের নাম গাওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা প্রেমকে পুনর্জাগ্রত করতে পারি। এই প্রেম এবং সহানুভূতির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা অন্যদের কল্যাণে কাজ করতে পারি।”

Photo5

ডোনাল্ড ট্রাম্প তুলসী গ্যাবার্ডকে DNI হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তার প্রশাসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অর্পণ করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “তুলসী তার কর্মজীবনের সাহসী আত্মা নিয়ে আমাদের গোয়েন্দা বিভাগকে নেতৃত্ব দেবেন।”

মাত্র ৪৩ বছর বয়সে তুলসী গ্যাবার্ড মার্কিন রাজনীতিতে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার আধ্যাত্মিকতা এবং সেবামূলক মানসিকতা তাকে একজন অনন্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

Photo6

তুলসী গ্যাবার্ড তার রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তার ধর্মীয় বিশ্বাস এবং আধ্যাত্মিক পথকে মার্কিন মুলুকে হিন্দু ধর্মের পরিচিতি এবং স্বীকৃতি বাড়ানোর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করেছেন। একজন বৈষ্ণব নেতা হিসেবে গ্যাবার্ড তার আধ্যাত্মিক মূল্যবোধকে রাজনীতির সঙ্গে মিলিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সুখ আসে তখন, যখন আমরা অন্যদের সেবায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করি।”

তারিখ: ১৭.১১.২০২৪

মণিপুরিদের মহারাস উৎসবে ভক্ত ও দর্শকের মিলনমেলা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরি সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব মহারাসলীলার আয়োজন করা হয় জোড়া মণ্ডপে। পূর্ণিমার রাতে শুরু হওয়া এ উৎসব ছোটদের গীতনৃত্য থেকে শুরু করে রাতভর শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার লীলার পরিবেশনার মাধ্যমে দর্শকদের বিমোহিত করে। এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন। মেলা, আলোচনাসভা ও নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থায় উৎসবটি সুষ্ঠুভাবে উদযাপিত হয়।
মণিপুরিদের মহারাস উৎসবে ভক্ত ও দর্শকের মিলনমেলা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরি সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব মহারাসলীলার আয়োজন করা হয় জোড়া মণ্ডপে। পূর্ণিমার রাতে শুরু হওয়া এ উৎসব ছোটদের গীতনৃত্য থেকে শুরু করে রাতভর শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার লীলার পরিবেশনার মাধ্যমে দর্শকদের বিমোহিত করে। এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন। মেলা, আলোচনাসভা ও নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থায় উৎসবটি সুষ্ঠুভাবে উদযাপিত হয়।

মৌলভীবাজার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী মহারাসলীলার মহোৎসবে শুক্রবার হাজারো ভক্ত ও দর্শকের ঢল নামে। মাধবপুর জোড়া মণ্ডপে ও আদমপুর গ্রামে আয়োজিত এ উৎসবে শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার লীলাকে গীতনৃত্যের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।

শুক্রবার সকালে মাধবপুর জোড়া মণ্ডপে গিয়ে দেখা যায়, মণিপুরি ছোটদের গীতনৃত্য ও আলপনায় সাজানো মণ্ডপ ভক্ত ও দর্শকদের প্রাণবন্ত করে তুলেছে। দিনের প্রথম পর্বে শ্রীকৃষ্ণর শিশুকাল ও বাল্যকালের ঘটনাগুলো তুলে ধরা হয়।

রাতভর মহারাসলীলা

সন্ধ্যার আলোচনাসভা শেষে রাতভর চলা মহারাসলীলার মূল পরিবেশনায় রাধা-কৃষ্ণের লীলাকে নৃত্য ও গানের মাধ্যমে তুলে ধরেন শিল্পীরা। পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার রূপায়ণ দর্শকদের বিমোহিত করে।

মাধবপুর মণিপুরি মহারাসলীলা সেবা সংঘের সহসভাপতি লক্ষ্মণ সিংহ জানান, প্রায় এক মাস ধরে এ উৎসবের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির বিশেষ তৎপরতা ছিল।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

মণিপুরি থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা শুভাশিস সিনহা মহারাস উৎসবের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, “১৭৭৯ সালে মণিপুরের মহারাজা ভাগ্যচন্দ্র শ্রীকৃষ্ণের স্বপ্নাদেশে কাঠের কৃষ্ণমূর্তি নির্মাণ করেন। এই মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই অগ্রহায়ণের শুক্লাপূর্ণিমায় মহারাসলীলা উৎসবের সূচনা হয়। সেই থেকে এ উৎসব পালিত হয়ে আসছে।”

গীত-নৃত্যের বৈচিত্র্য

উৎসবের গানে জয়দেব, বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস প্রমুখ বৈষ্ণব পদকর্তাদের রচিত বাংলা, ব্রজবুলি, মৈথিলী ও সংস্কৃত ভাষার পদাবলির সংমিশ্রণ দেখা যায়। সম্প্রতি মণিপুরি ভাষায়ও রচিত হচ্ছে মহারাসের গান। শুভাশিস সিনহা জানান, উৎসব আয়োজনে এখন আধুনিকায়ন ঘটেছে। বিদ্যুতের ঝলমলে আলোর ব্যবহার আগের হ্যাজাক বাতির জায়গা নিয়েছে।

বর্ণাঢ্য মেলা ও মিলনমেলা

উৎসব উপলক্ষে মাধবপুর ও আদমপুরে বসে বিশাল মেলা। দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সমবেত হন।

সংস্কৃতির সংযোগ ও ঐতিহ্যের রক্ষা

মণিপুরি সম্প্রদায়ের সদস্যরা বলেন, মহারাসলীলা তাদের জন্য শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীর প্রতিফলন। শিশু থেকে বয়স্ক—সবার জন্য এই উৎসব এক মিলনমঞ্চ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, “শত বছরের এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবে প্রায় তিন লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করেছে।”

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ঐতিহ্যের সংরক্ষণ

এই উৎসব কেবল অতীতের ঐতিহ্যের ধারকই নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মশাল পৌঁছে দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। দুই স্থানেই মহারাস উৎসবের আয়োজন কমিটিগুলো এ ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।

পূর্ণিমার চাঁদের আলোতে শুরু হয়ে ভোরের সূর্যের কিরণে শেষ হওয়া মহারাসলীলার এ উৎসব মানুষের মনে এক অনন্য অনুভূতি এনে দিয়েছে।

তারিখ: ১৬.১১.২০২৪

আদালত চত্বরে সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্রকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ

খুলনার ডুমুরিয়ায় এক নারীকে ধর্ষণ ও অপহরণের মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং অপর অভিযুক্ত এমরান গাজীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ভুক্তভোগী নারীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে সহযোগিতা করেছেন। আদালতে উপস্থিতির সময় ক্ষুব্ধ জনতা সাবেক মন্ত্রীর দিকে ডিম নিক্ষেপ করেন।
আদালত চত্বরে সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্রকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ

খুলনার ডুমুরিয়ায় এক নারীকে ধর্ষণ ও অপহরণের মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং অপর অভিযুক্ত এমরান গাজীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ভুক্তভোগী নারীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে সহযোগিতা করেছেন। আদালতে উপস্থিতির সময় ক্ষুব্ধ জনতা সাবেক মন্ত্রীর দিকে ডিম নিক্ষেপ করেন।

খুলনা, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪: খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার এক নারীকে ধর্ষণ ও অপহরণে সহযোগিতার অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং অপর অভিযুক্ত এমরান গাজীকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়। খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এর বিচারক রাকিবুল ইসলাম শুনানি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ এক নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন। ওই নারী চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি রাতে ধর্ষণের অভিযোগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, এ ঘটনায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ তার প্রভাব খাটিয়ে ভুক্তভোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিতে বাধ্য করেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্য দিতে চাপ দেন।

ভুক্তভোগী নারীর খালাতো ভাই পরিচয়দানকারী গোলাম রসুল বাদী হয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩–এর আদালতে ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন। পরে আদালত সোনাডাঙ্গা থানাকে মামলাটি রেকর্ড করার নির্দেশ দেয়। এ মামলায় গত ১৭ অক্টোবর সাবেক চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এ মামলার দুই নম্বর আসামি।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে মামলার দুই নম্বর আসামি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং আট নম্বর আসামি এমরান গাজীকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে উপস্থিতির সময় আদালত চত্বরে ক্ষুব্ধ জনতা সাবেক মন্ত্রীর দিকে ডিম নিক্ষেপ করেন। এতে তাঁর পোশাক নষ্ট হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, ভুক্তভোগী নারীকে অপহরণ করার পর বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। তাঁকে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। মামলার বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

তারিখ: ১৫.১১.২০২৪

বাংলাদেশের ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি

বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি ঘিরে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। চট্টগ্রামে একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া উত্তেজনা থেকে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। ইসকনের পূর্বাঞ্চলীয় মুখপাত্র রাধারমণ দাস বিষয়টি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মার্কিন রাজনীতিবিদ তুলসী গাবার্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
বাংলাদেশের ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি

বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি ঘিরে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। চট্টগ্রামে একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া উত্তেজনা থেকে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। ইসকনের পূর্বাঞ্চলীয় মুখপাত্র রাধারমণ দাস বিষয়টি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মার্কিন রাজনীতিবিদ তুলসী গাবার্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

চট্টগ্রাম, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবিতে মৌলবাদী সংগঠনগুলোর উত্তেজনাপূর্ণ কার্যকলাপ ক্রমেই বাড়ছে। চট্টগ্রামে একটি সামাজিক পোস্ট নিয়ে উত্তেজনার পর পরিস্থিতি আরো ঘনীভূত হয়। ইসকনের পূর্বাঞ্চলীয় মুখপাত্র রাধারমণ দাস সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেন এবং আন্তর্জাতিক নেতাদের বিষয়টি জানাতে ট্যাগ করেন।

বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি ঘিরে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। চট্টগ্রামে একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া উত্তেজনা থেকে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। ইসকনের পূর্বাঞ্চলীয় মুখপাত্র রাধারমণ দাস বিষয়টি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মার্কিন রাজনীতিবিদ তুলসী গাবার্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

ঢাকার এক উগ্রপন্থী নেতা সম্প্রতি ইসকন নিষিদ্ধ না হলে “হত্যাযজ্ঞ” চালানোর হুমকি দেন। ঢাকা উলেমা ঐক্য পরিষদের একটি মানববন্ধনে দেওয়া ভাষণে ওই নেতা বলেন, “ইসকন নিষিদ্ধ না হলে ইসকন ভক্তদের গণহত্যা শুরু করা হবে।” রাধারমণ দাস এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন এবং এর বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের স্থানীয় ব্যবসায়ী ওসমান আলির একটি ফেসবুক পোস্টে ইসকনকে “জঙ্গি সংগঠন” হিসেবে উল্লেখ করার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে চট্টগ্রামের হাজারি গলি এলাকায় তার দোকানে হামলা হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় প্রায় ১০০ সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়।

রাধারমণ দাস শেয়ার করা ভিডিও এবং বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবিতে মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলো একের পর এক উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে।

চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর কার্যকলাপ নিয়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে দেখা যায়, সেনা সদস্যরা খালি রাস্তায় তাণ্ডব চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। তবে, এই ফুটেজের সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়টিতে এখনো সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি। তবে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তৎপর রয়েছে। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা ইসকনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এই পরিস্থিতি নিয়ে ভারতসহ আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। রাধারমণ দাসের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।

বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবি ঘিরে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলেও গুরুত্ব পাচ্ছে, এবং শান্তি বজায় রাখতে সব পক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

তারিখ: ১৬.১১.২০২৪

ঘাগড়া স্কুলের ফুটবল সংগ্রাম ও পাহাড়ি মেয়েদের স্বপ্ন

রাঙামাটির ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়, যেখানে পাহাড়ি মেয়েরা ফুটবলের স্বপ্ন নিয়ে সংগ্রাম করছে। এখান থেকেই জাতীয় ফুটবল তারকা ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, ও রূপনা চাকমা উঠে এসেছেন। দারিদ্র্য আর অপুষ্টির সঙ্গে লড়াই করে ৩২ জন মেয়ে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। সীমিত সুযোগ-সুবিধা ও নিজস্ব উদ্যোগে চলছে তাদের প্রশিক্ষণ। তাঁদের লক্ষ্য, জাতীয় পর্যায়ে আরও তারকা তৈরি করা। তবে তাদের সামনে রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ।
ঘাগড়া স্কুলের ফুটবল সংগ্রাম ও পাহাড়ি মেয়েদের স্বপ্ন

রাঙামাটির ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়, যেখানে পাহাড়ি মেয়েরা ফুটবলের স্বপ্ন নিয়ে সংগ্রাম করছে। এখান থেকেই জাতীয় ফুটবল তারকা ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, ও রূপনা চাকমা উঠে এসেছেন। দারিদ্র্য আর অপুষ্টির সঙ্গে লড়াই করে ৩২ জন মেয়ে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। সীমিত সুযোগ-সুবিধা ও নিজস্ব উদ্যোগে চলছে তাদের প্রশিক্ষণ। তাঁদের লক্ষ্য, জাতীয় পর্যায়ে আরও তারকা তৈরি করা। তবে তাদের সামনে রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ।

রাঙামাটি, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪: রাঙামাটির ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয় শুধুমাত্র একটি স্কুল নয়, এটি পাহাড়ি মেয়েদের ফুটবল শেখার আঁতুড়ঘর। এখান থেকেই জাতীয় ফুটবল তারকা ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা এবং রূপনা চাকমা উঠে এসেছেন। সীমিত সুযোগ-সুবিধা আর দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে ৩২ জন মেয়ে এখন ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে কাজ করে যাচ্ছে।

ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে প্রতিদিন ভোরবেলায় কোচ শান্তিমণি চাকমার তত্ত্বাবধানে চলে মেয়েদের কঠোর প্রশিক্ষণ। যদিও মাঠ এবড়োখেবড়ো, তবে তাদের ক্লান্তি বলে কিছু নেই। এই দল থেকে জাতীয় তারকা তৈরি হওয়া যেন এক অনিবার্য প্রত্যাশা।

২০১১ সালে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবলে নজর কাড়ে স্থানীয় মগাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেয়েরা। তাদের সাফল্যের মূলে ছিলেন প্রধান শিক্ষক বীরসেন চাকমা। পরে ২০১৩ সালে ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়ে মেয়েদের ফুটবল দল গঠন করা হয়। এরপর থেকে এ বিদ্যালয় জাতীয় পর্যায়ে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছে।

তবে এই অর্জনের পেছনের গল্পটা মোটেও সহজ নয়। স্কুলের ৩২ জন মেয়ের জন্য রয়েছে মাত্র দুটি টিনের ছাউনি ঘর। সেই ঘরেই গাদাগাদি করে তাদের বাস। রান্নার জন্যও রয়েছে একটি ছোট ঘর। খাদ্য ও সরঞ্জামের বেশিরভাগ ব্যয় তাদের নিজস্ব টাকায় বহন করতে হয়। শুধু রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের দপ্তর থেকে দুই বেলার চালের ব্যবস্থা করা হয়।

সপ্তম শ্রেণির মিসতুই মারমা বলেন, “আমাদের বাড়ি থেকে রান্নার জন্য টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু সবসময় তা আসে না। তখন অনেক কষ্ট হয়।” তৃষা চাকমা, তাঁর দুই যমজ বোন আমিষা ও মনিষা জাতীয় পর্যায়ে খেলার স্বপ্ন নিয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। বান্দরবানের মাফুচিন মারমা ও খাগড়াছড়ির চিন্তাদেবী ত্রিপুরার মতো মেয়েরা দারিদ্র্যকে উপেক্ষা করে ফুটবল খেলার জন্য ঘাগড়া স্কুলে এসেছে।

কোচ শান্তিমণি চাকমা বলেন, “২০১৬ সাল থেকে জাতীয় পর্যায়ে ফুটবলার তৈরি হচ্ছে এখান থেকে। তবে মেয়েদের অপুষ্টি ও দারিদ্র্য আমাদের জন্য বড় বাধা। ফুটবলার তৈরি করতে হলে কাঠামোগত সুবিধা প্রয়োজন। স্কুলটির সরকারীকরণ হলে এ সমস্যা অনেকটাই সমাধান হতে পারে।”

স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শশীমণি চাকমা বলেন, “জাতীয় পর্যায়ের সাফল্যের পর মেয়েরা প্রশংসা পেলেও তাদের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা খুব কম আসে। নিয়মিত টুর্নামেন্ট বা সঠিক পুষ্টির ব্যবস্থা করতে পারলে আরও ফুটবল তারকা উঠে আসবে।”

আগামী সপ্তাহে সাফজয়ী তারকা ঋতুপর্ণা, মনিকা, রূপনা চাকমা ঘাগড়া স্কুলে এসে সংবর্ধনা দেবেন। তাঁদের সান্নিধ্যে অনুপ্রাণিত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে নতুন প্রজন্ম। তারা বিশ্বাস করে, এই তারকাদের মতো তারাও একদিন জাতীয় দলে খেলবে এবং দেশের গৌরব বাড়াবে।

তারিখ: ১৫.১১.২০২৪

কুয়াকাটায় রাস উৎসবে ভক্তদের ঢল

কুয়াকাটায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব পালনে ভক্তদের ঢল। পূর্ণিমা লগ্নে পাপ মোচন ও পুণ্যলাভের আশায় সাগরে পুণ্যস্নান করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। রাস পূজা উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কীর্তন, ভাগবৎ পাঠ ও আরতিতে মুখরিত কুয়াকাটা।
কুয়াকাটায় রাস উৎসবে ভক্তদের ঢল

কুয়াকাটায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব পালনে ভক্তদের ঢল। পূর্ণিমা লগ্নে পাপ মোচন ও পুণ্যলাভের আশায় সাগরে পুণ্যস্নান করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। রাস পূজা উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কীর্তন, ভাগবৎ পাঠ ও আরতিতে মুখরিত কুয়াকাটা।

পটুয়াখালী, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪: পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় শত বছরের পুরোনো রাস উৎসব উদ্‌যাপন উপলক্ষে ভক্ত ও তীর্থযাত্রীদের ঢল নেমেছে। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল থেকেই কুয়াকাটার শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির প্রাঙ্গণ এবং আশপাশ এলাকা টইটম্বুর হয়ে ওঠে। জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব দিকে ২ কিমি এবং পশ্চিম দিকে ১ কিমি এলাকাজুড়ে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

রাস পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কাজল বরণ দাস জানান, শুক্রবার ভোর ৫টা ৪৩ মিনিটে পূর্ণিমা শুরু হয়ে শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৩টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত চলবে। এ সময় ভক্তরা পাপ মোচন ও পুণ্যলাভের আশায় সমুদ্রস্নান করবেন।

উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পুরোহিত ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মন্ডল জানান, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রাতভর কীর্তন, ভাগবৎ পাঠ ও আরতি অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের শিল্পী কবিতা ঘোষ শ্রীকৃষ্ণের লীলাকীর্তনে অংশগ্রহণ করেন।

শনিবার ভোরে সূর্যোদয়ের আগে ভক্তদের বিশাল সমাবেশ দেখা যাবে। অনেকেই নিজেদের মানত পূরণে পূজায় অংশ নেবেন। রাস উৎসবে অংশ নিতে আসা ভক্ত সৌমির বলেন, “সারা বছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করি। গত পাঁচ বছর ধরে এখানে এসে সমুদ্রস্নান করছি এবং মানত পূরণ করছি।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, এবারের রাস উৎসবে প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা, উপজেলা এবং পৌর প্রশাসন মিলে নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। টুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং গ্রাম পুলিশের সমন্বয়ে পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবীবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার থেকেই পুরো কুয়াকাটা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দুষ্কৃতকারীদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে।

কুয়াকাটায় রাস উৎসব শুধু ধর্মীয় নয়, বরং এটি হাজারো ভক্ত ও দর্শনার্থীর জন্য একটি মিলনমেলার স্থান। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করছে স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকেরা।

তারিখ: ১৫.১১.২০২৪

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার নয়া অধিকর্তা তুলসী গ্যাবার্ড কে?

সাবেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান এবং মার্কিন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা তুলসী গ্যাবার্ডকে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) পরিচালক হিসাবে নিয়োগ করেছেন। এই ঘোষণা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক মহল ও গণমাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী তুলসী তার দীর্ঘ রাজনৈতিক ও সামরিক ক্যারিয়ার এবং বিভিন্ন বিতর্কিত অবস্থানের জন্য পরিচিত। (সূত্রঃ বিবিসি)
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার নয়া অধিকর্তা তুলসী গ্যাবার্ড কে?

সাবেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান এবং মার্কিন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা তুলসী গ্যাবার্ডকে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) পরিচালক হিসাবে নিয়োগ করেছেন। এই ঘোষণা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক মহল ও গণমাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী তুলসী তার দীর্ঘ রাজনৈতিক ও সামরিক ক্যারিয়ার এবং বিভিন্ন বিতর্কিত অবস্থানের জন্য পরিচিত। (সূত্রঃ বিবিসি)

যুক্তরাষ্ট্র, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪: সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তুলসী গ্যাবার্ডকে জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি বা এনএসএ) পরিচালক হিসাবে ঘোষণা করেছেন। তুলসী, যিনি একজন সাবেক ডেমোক্র্যাট এবং বর্তমানে রিপাবলিকান, এ নিয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিক সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছেন।

তুলসী গ্যাবার্ডের পরিচিতি
তুলসী গ্যাবার্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়ায় ১৯৮১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার ১৯৮৩ সালে হাওয়াইতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। তুলসীর মা ক্যারল হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হন এবং তার সন্তানদের হিন্দু সংস্কৃতিতে বড় করেন।

তুলসীর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় হাওয়াই থেকে, যেখানে তিনি ২০১৩ সালে প্রথমবার কংগ্রেসে নির্বাচিত হন। তিনি ২০২১ সাল পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন। পাশাপাশি তিনি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি ন্যাশনাল গার্ডে কাজ করেছেন এবং ইরাক ও কুয়েতের মতো দেশে মোতায়েন ছিলেন।

তুলসী গ্যাবার্ড মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম হিন্দু সদস্য। কংগ্রেসে তার শপথ ভগবত গীতা হাতে নিয়ে নেওয়ার ঘটনা আলোচিত হয়।

রাজনৈতিক অবস্থান
২০১৬ সালে বার্নি স্যান্ডার্সের প্রচারণা দলে যোগ দেওয়া থেকে শুরু করে ২০২০ সালে ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে লড়াই করা পর্যন্ত তুলসী তার নীতিগত অবস্থানের জন্য পরিচিত ছিলেন। তবে ২০২১ সালে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নীতি নিয়ে মতবিরোধের কারণে দলটি ত্যাগ করেন।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ত্যাগের পর তিনি রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেন। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং ট্রাম্পের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

ব্যক্তিগত জীবন ও ভারত সংযোগ
২০১৫ সালে হাওয়াইয়ে বৈদিক রীতি অনুসারে সিনেমাটোগ্রাফার আব্রাহাম উইলিয়ামসকে বিয়ে করেন তুলসী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৪ সালে ভারত সফরের সময় মোদী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মোদীর স্বচ্ছ ভারত অভিযান এবং যোগাসন প্রচারণাকে তিনি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছেন।

আন্তর্জাতিক ভূমিকায় আলোচিত অবস্থান
তুলসী গ্যাবার্ড সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং জিহাদি শক্তির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গ
২০২১ সালে বাংলাদেশে দুর্গাপূজার সময় ঘটে যাওয়া সহিংসতার সময় তিনি হিন্দুদের ওপর হওয়া আক্রমণের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

উপসংহার
তুলসী গ্যাবার্ডের জীবন ও কর্মজীবন তার রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় অবস্থানের কারণে সব সময় আলোচিত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে তার এই নিয়োগ তাকে আবারো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।

তারিখ: ১৭.১১.২০২৪

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী: ধর্ম ও রাষ্ট্র নিয়ে বিতর্ক

বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে উচ্চ আদালতে চলছে বিতর্ক। সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে এটিকে পুনরায় পর্যালোচনার দাবি উঠেছে। এতে সংবিধান থেকে ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ বাদ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে, যা দেশের ৯০ শতাংশ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর প্রেক্ষাপটে ‘আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপনের পক্ষপাত করছে। তবে এই প্রস্তাবকে নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। (সূত্রঃ ডয়চে ভেলে)
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী: ধর্ম ও রাষ্ট্র নিয়ে বিতর্ক

বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে উচ্চ আদালতে চলছে বিতর্ক। সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে এটিকে পুনরায় পর্যালোচনার দাবি উঠেছে। এতে সংবিধান থেকে ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ বাদ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে, যা দেশের ৯০ শতাংশ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর প্রেক্ষাপটে ‘আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপনের পক্ষপাত করছে। তবে এই প্রস্তাবকে নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। (সূত্রঃ ডয়চে ভেলে)

ঢাকা, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪: ২০১১ সালের ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী সংসদে পাস হয়। এতে ১৯৭২ সালের সংবিধানের বেশ কিছু বিষয় পুনঃস্থাপিত হলেও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং প্রস্তাবনায় বিসমিল্লাহির-রহমানির রহিম যুক্ত থাকে। তবে, সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের উল্লেখ বাদ দেওয়া হয়। বর্তমানে এটিকে পুনঃস্থাপনের প্রস্তাব উঠে আসায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চলছে।

এক শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, সংবিধান থেকে ‘সমাজতন্ত্র’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ দুটি বাদ দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, “দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। আমরা চাই, সংবিধানে আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস পুনরায় স্থাপন করা হোক।”

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। সংরক্ষিত মহিলা আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে ৫০ এ উন্নীত হয়। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ছিল ৭ অনুচ্ছেদের পর ৭(ক) এবং ৭(খ) অনুচ্ছেদ সংযোজন, যা সংবিধানবহির্ভূত পন্থায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল রোধে কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে যুক্ত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন মনে করেন, ‘‘রাষ্ট্রকে ধর্ম থেকে আলাদা রাখা উচিত। সংবিধানে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন নেই। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকায় ইতিমধ্যে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্যের জন্ম দিয়েছে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম নেই। নাগরিকরা নিজেদের ধর্ম পালন করবে। রাষ্ট্রের কাজ হলো সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।’’

বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘সংবিধানে একদিকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখা হয়েছে, অন্যদিকে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। এটি সোনার পাথরবাটির মতো।’’ তিনি মনে করেন, ‘‘যদি একটি ধর্মকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, তবে অন্য ধর্মের অনুসারীরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে পড়বেন।’’

সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক বলেন, ‘‘ধর্ম এবং সংবিধান দুইটি আলাদা বিষয়। সংবিধান দিয়ে কেউ ধর্মীয় পরিচয় নির্ধারণ করে না। এটি জনগণের উপর নির্ভরশীল যে তারা সংবিধানে কী চান।’’

ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘‘পঞ্চদশ সংশোধনী পুরোপুরি অবৈধ এবং এটিকে বাতিল করা উচিত। বাতিল হলে সংবিধানের পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে যাওয়া উচিত।’’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘‘আমরা এমন কোনো সংশোধনী চাই না, যা কোনো ধর্মের মানুষকে বৈষম্যের শিকার করে। বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মুসলমান হলেও অন্য ধর্মের মানুষও এই দেশের সমান নাগরিক।’’

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। এটি দেশের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সংবিধান থেকে সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দ বাদ দেওয়া এবং আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব যে ভবিষ্যতে দেশের সাংবিধানিক কাঠামোকে কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা সময়ই বলে দেবে।

তারিখ: ১৭.১১.২০২৪

মানবাধিকার নেতা মানস মিত্রের প্রয়াণে শোক

মাইনোরিটি রাইটস ফোরাম, বাংলাদেশের সভাপতি ও বিশিষ্ট মানবাধিকার নেতা ইঞ্জিনিয়ার মানস মিত্রের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে ৭৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। নেতারা শোকবার্তায় তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
মানবাধিকার নেতা মানস মিত্রের প্রয়াণে শোক

মাইনোরিটি রাইটস ফোরাম, বাংলাদেশের সভাপতি ও বিশিষ্ট মানবাধিকার নেতা ইঞ্জিনিয়ার মানস মিত্রের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে ৭৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। নেতারা শোকবার্তায় তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

ঢাকা, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪: মাইনোরিটি রাইটস ফোরাম, বাংলাদেশের সভাপতি এবং মানবাধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ইঞ্জিনিয়ার মানস মিত্র আর নেই। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

তার প্রয়াণে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরিষদের সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, নির্মল রোজারিও এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ এক শোকবার্তায় এই দুঃসংবাদে তাদের গভীর শোকাহত হওয়ার কথা জানান।

শুক্রবার রাতে প্রকাশিত শোকবার্তায় নেতারা বলেন, “ইঞ্জিনিয়ার মানস মিত্রের পরলোকগমনে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তার মানবাধিকার আন্দোলনের অবদান জাতি চিরকাল স্মরণ করবে। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”

মানস মিত্র ছিলেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র। তিনি সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার মাইনোরিটি রাইটস ফোরামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে বহু বছর ধরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় কাজ করেছেন। তার প্রয়াণে দেশের মানবাধিকার আন্দোলনে এক শূন্যতার সৃষ্টি হলো।

মানস মিত্রের পরিবার তার মৃত্যুর পর শোকবিহ্বল। তিনি তার দীর্ঘ জীবনে অসংখ্য মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন।

ইঞ্জিনিয়ার মানস মিত্রের মৃত্যুতে মানবাধিকারকর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শোক প্রকাশ করেছেন। তারা তার অবদানকে স্মরণ করে বলেন, “মানস মিত্র আমাদের শুধু একজন নেতা নন, তিনি ছিলেন আমাদের অনুপ্রেরণা। তার কর্ম আমাদের চলার পথ দেখাবে।”

তার প্রয়াণে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার কর্মী ও সংগঠন তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তার শেষকৃত্য রাজধানীতে সম্পন্ন হবে। তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত থাকবেন।

ইঞ্জিনিয়ার মানস মিত্রের মৃত্যুর মাধ্যমে বাংলাদেশ মানবাধিকার আন্দোলনের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। তবে তার কর্ম ও আদর্শ নতুন প্রজন্মের মাঝে বেঁচে থাকবে।

তারিখ: ১৬.১১.২০২৪

ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দের প্রয়োজন নেই: বাংলাদেশ সরকারের সওয়াল

বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি বাদ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, দেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা উচিত। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে তিনি মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন তুলেছেন। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)
ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দের প্রয়োজন নেই: বাংলাদেশ সরকারের সওয়াল

বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি বাদ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, দেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা উচিত। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে তিনি মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন তুলেছেন। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

ঢাকা, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের জন্য হাইকোর্টে সওয়াল করা হয়েছে। এ সংশোধনীতে ২০১১ সালে শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলোর মধ্যে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবারের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দের আর প্রয়োজন নেই।

ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশিস রায়চৌধুরীর বেঞ্চে শুনানি চলাকালে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘‘দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। সংবিধানের মূল আস্থা এবং বিশ্বাস আল্লাহর প্রতি স্থাপন করা উচিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোতে আঘাত করা হয়েছে।’’

২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে ধর্মনিরপেক্ষতাসহ ‘জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র এবং গণতন্ত্র’ পুনর্বহাল করা হয়েছিল। এটি বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালের সংবিধানের মূল নীতিগুলোর অংশ ছিল। তবে জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং জেনারেল হুসেন মুহম্মদ এরশাদের আমলে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয়, যা ধর্মনিরপেক্ষতার উপর প্রভাব ফেলে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘‘আমরা চাই সংবিধানে আল্লাহর প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। এটি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিশ্বাস ও মানসিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’’ তিনি আরও জানান, পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বাতিল করা হয়েছিল, যা তিনি মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেন।

ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে সমালোচনার মধ্যে, আদালত বিষয়টি নিয়ে শুনানি চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দেশের সংস্কৃতি, ধর্ম এবং সমাজের বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করাই সংবিধানের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

শুনানির রায় এবং সংবিধানের ভবিষ্যৎ পরিবর্তন দেশের রাজনীতি ও সমাজে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

তারিখ: ১৫.১১.২০২৪

কীর্তনখোলা নদীতে পাওয়া গেল হিন্দু পুলিশকর্মীর স্ত্রীর মরদেহ

বরিশাল থেকে ঢাকাগামী এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া আলো মজুমদার নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি পুলিশ পরিদর্শক অনুপ রায়ের স্ত্রী। গতকাল সোমবার রাতে লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার পর আজ মঙ্গলবার সকালে কীর্তনখোলা নদীর চরমোনাই ইউনিয়নের পশুরিকাঠি এলাকায় তাঁর লাশ পাওয়া যায়। পরিবারের দাবি, আলো মজুমদার মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। এ ঘটনায় ময়নাতদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কীর্তনখোলা নদীতে পাওয়া গেল হিন্দু পুলিশকর্মীর স্ত্রীর মরদেহ

বরিশাল থেকে ঢাকাগামী এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া আলো মজুমদার নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি পুলিশ পরিদর্শক অনুপ রায়ের স্ত্রী। গতকাল সোমবার রাতে লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার পর আজ মঙ্গলবার সকালে কীর্তনখোলা নদীর চরমোনাই ইউনিয়নের পশুরিকাঠি এলাকায় তাঁর লাশ পাওয়া যায়। পরিবারের দাবি, আলো মজুমদার মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। এ ঘটনায় ময়নাতদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বরিশাল, ১২ নভেম্বর, ২০২৪: বরিশাল থেকে ঢাকাগামী এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার পর আলো মজুমদার (৩৫) নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে কীর্তনখোলা নদীর চরমোনাই ইউনিয়নের পশুরিকাঠি এলাকায় ভাসমান অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়। নিহত আলো মজুমদার পুলিশের পরিদর্শক অনুপ রায়ের স্ত্রী।

বরিশাল সদর নৌ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুল আল গালিব জানান, মরদেহ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিবারের বরাত দিয়ে জানা যায়, আলো মজুমদার বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার নরেরকাঠি গ্রামের কৃষ্ণকান্ত মজুমদারের মেয়ে। ২০১৫ সালে তিনি পুলিশ পরিদর্শক অনুপ রায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে।

আলো মজুমদারের বোন মঞ্জু রানি মজুমদার জানান, তাঁর বোন মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন এবং চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। তিনি বলেন, “সোমবার সকালে আলো আমাকে ফোন করে মোবাইলে টাকা রিচার্জ করার কথা বলেন। এরপর থেকেই আমরা তাঁকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বিষয়টি জানিয়ে বরিশাল নগরের বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি।”

পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ থেকে এক নারী নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়। স্থানীয়রা মঙ্গলবার সকালে কীর্তনখোলা নদীতে এক নারীর মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে স্বজনরা লাশ শনাক্ত করেন।

বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির সিকদার জানান, মঞ্জু রানী মজুমদারের করা জিডির সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করা হয়। তিনি জিডিতে উল্লেখ করেন যে তাঁর বোন মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন এবং নিখোঁজ ছিলেন। মঙ্গলবার কীর্তনখোলা নদীতে লাশ পাওয়ার পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।

পুলিশ জানায়, আলো মজুমদারের মানসিক অসুস্থতার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত ও তদন্তের পর ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

তারিখ: ১৫.১১.২০২৪

সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ শম্ভু গ্রেপ্তার

বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল। আজ সোমবার রাতে গ্রেপ্তারকৃত শম্ভুকে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে দেশ ছাড়ার পর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা আত্মগোপন বা গ্রেপ্তারের শিকার হন।
সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ শম্ভু গ্রেপ্তার

বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল। আজ সোমবার রাতে গ্রেপ্তারকৃত শম্ভুকে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে দেশ ছাড়ার পর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা আত্মগোপন বা গ্রেপ্তারের শিকার হন।

ঢাকা, ১২ নভেম্বর, ২০২৪: বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শম্ভুর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং আগামীকাল মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হবে।

গত ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য এবং আওয়ামী লীগের অনেক নেতা আত্মগোপনে চলে যান। তাদের মধ্যে কেউ কেউ গ্রেপ্তার হন এবং অনেকের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।

ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের ঘটনাটি রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

এদিকে ধীরেন্দ্র শম্ভুর গ্রেপ্তারের খবরটি তাঁর নির্বাচনী এলাকা বরগুনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় বরগুনায়ও অস্থিরতা দেখা দেয়। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা-মামলার মুখে পড়েন।

অন্যদিকে ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তাঁর গ্রেপ্তারের ঘটনায় বরগুনার রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতার যে ধারা শুরু হয়েছে, তা এখনো বিদ্যমান। দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সামনের দিনগুলোতে এ ধরনের গ্রেপ্তারের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

তারিখ: ১৫.১১.২০২৪

কিশোরগঞ্জে হিন্দু বাড়িতে হামলায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জ সদরের ব্রাক্ষণকচুরী গ্রামে হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা, লুটপাট এবং হুমকির ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ইদ্রিস মিয়াকে (৪০) র‍্যাব গ্রেপ্তার করেছে। গত ৫ আগস্ট ইদ্রিস মিয়ার নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গীতা রানী বর্মণ, যার বাড়িতে এ হামলা ও লুটপাট হয়, সেই ঘটনায় মামলা করেন। এই ঘটনার জন্য ভুক্তভোগীরা বাড়িছাড়া হয়ে ছিলেন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। অবশেষে তিন মাস পর প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় পরিবার কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছে। তবে মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কিশোরগঞ্জে হিন্দু বাড়িতে হামলায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জ সদরের ব্রাক্ষণকচুরী গ্রামে হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা, লুটপাট এবং হুমকির ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ইদ্রিস মিয়াকে (৪০) র‍্যাব গ্রেপ্তার করেছে। গত ৫ আগস্ট ইদ্রিস মিয়ার নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গীতা রানী বর্মণ, যার বাড়িতে এ হামলা ও লুটপাট হয়, সেই ঘটনায় মামলা করেন। এই ঘটনার জন্য ভুক্তভোগীরা বাড়িছাড়া হয়ে ছিলেন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। অবশেষে তিন মাস পর প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় পরিবার কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছে। তবে মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

কিশোরগঞ্জ, ১২ নভেম্বর ২০২৪: কিশোরগঞ্জ সদরের ব্রাক্ষণকচুরী গ্রামে হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মূল আসামি বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ইদ্রিস মিয়াকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে কিশোরগঞ্জ র‍্যাব-১৪-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হাই চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। র‍্যাব-২ আগারগাঁওয়ের সহযোগিতায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে ইদ্রিস মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার এজাহার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বিকেলে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের ব্রাক্ষণকচুরী গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়ার নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রয়াত জয়কৃষ্ণ বর্মণের স্ত্রী গীতা রানী বর্মণের (৬৫) বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ঘরে ঢুকে আসবাবপত্র, টাকা-পয়সা এবং স্বর্ণালংকার লুট করে। এই আক্রমণের কারণে গীতা রানীর পরিবার বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। এরপর থেকেই পরিবারটি বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকির ভয়ে বাড়িছাড়া ছিল।

মামলার বাদী গীতা রানী বর্মণ ২৩ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় ইদ্রিস মিয়া ও আরও ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এই মামলার পরেও আসামিদের গ্রেপ্তার না হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী পরিবার বাড়িতে ফিরে যেতে পারেনি, এবং তারা বিভিন্ন সময় হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।

গীতা রানীর ভাই প্রদীপ বর্মণ বলেন, “প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও মামলার কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমরা হতাশ ছিলাম। আমাদের পরিবার বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধমকির শিকার হয়েছে, এমনকি আসামিরা মামলা তুলে নিতে ভয় দেখিয়েছে। এ কারণে আমরা আমাদের বাড়িতে ফিরে আসতে পারছিলাম না এবং দুর্গাপূজা ও কালীপূজার মতো ধর্মীয় উৎসবগুলোও উদযাপন করতে পারিনি।”

বিএনপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জানান, সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় ইদ্রিস মিয়ার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ র‍্যাব-১৪-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হাই চৌধুরী জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ইদ্রিস মিয়াকে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ভুক্তভোগী পরিবারটি তিন মাস ধরে ভয় ও হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছিল। তারা ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য নানা কর্মসূচি পালন করেছে, যার মধ্যে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলও অন্তর্ভুক্ত। গত বুধবারও তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

তারিখ: ১৩.১১.২০২৪

চট্টগ্রামে ইসকনবিরোধী পোস্টে সংঘর্ষের ঘটনায় হিন্দু যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে ইসকনবিরোধী পোস্ট শেয়ার করার পর যৌথ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাভ লেন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় এর আগে আরও ৫৪ জনকে আটক করা হয়েছিল। সংঘর্ষে যৌথ বাহিনীর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় সেনা ও পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ঘটনাটি চট্টগ্রাম জুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
চট্টগ্রামে ইসকনবিরোধী পোস্টে সংঘর্ষের ঘটনায় হিন্দু যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে ইসকনবিরোধী পোস্ট শেয়ার করার পর যৌথ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাভ লেন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় এর আগে আরও ৫৪ জনকে আটক করা হয়েছিল। সংঘর্ষে যৌথ বাহিনীর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় সেনা ও পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ঘটনাটি চট্টগ্রাম জুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

চট্টগ্রাম, ১২ নভেম্বর ২০২৪: চট্টগ্রামে ইসকনকে (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) নিয়ে দেওয়া একটি পোস্ট শেয়ার করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে নগরের লাভ লেন এলাকা থেকে যৌথ বাহিনী তাঁকে আটক করে। যৌথ বাহিনীর টাস্কফোর্স-৪–এর মেজর রিজুয়ানুর রহমান জানান, যৌথ বাহিনীর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাজারী লেনের এক ব্যবসায়ী ওসমান আলী তাঁর ফেসবুকে ইসকনবিরোধী পোস্ট শেয়ার করলে স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই পোস্ট ঘিরে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে এবং এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যৌথ বাহিনী সেখানে উপস্থিত হয়। সংঘর্ষের সময় জুয়েলারি কাজে ব্যবহৃত অ্যাসিড যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর নিক্ষেপ করা হলে সেনাবাহিনীর ৫ সদস্যসহ পুলিশের ১২ জন আহত হন। এ ঘটনায় যৌথ বাহিনী অভিযানে ৮২ জনকে আটক করে, এর মধ্যে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সর্বশেষ সুমন চৌধুরীসহ মোট গ্রেপ্তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫ জনে।

ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ওসমান আলীকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে চট্টগ্রাম জুড়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।

তারিখ: ১৩.১১.২০২৪

পাবনায় ফেসবুকে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে হিন্দু তরুণ গ্রেপ্তার

পাবনার চাটমোহরে ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে প্রশান্ত কুমার সাহা (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানার পর প্রতিবাদে মিছিল করে এবং বল্লভপুরের মহাদেব মন্দিরে হামলা চালায়। এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মন্দিরে হামলার ঘটনায় সেবায়েত বাসুদেব গোস্বামী অজ্ঞাতনামা ২০০–২৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত প্রশান্তকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
পাবনায় ফেসবুকে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে হিন্দু তরুণ গ্রেপ্তার

পাবনার চাটমোহরে ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে প্রশান্ত কুমার সাহা (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানার পর প্রতিবাদে মিছিল করে এবং বল্লভপুরের মহাদেব মন্দিরে হামলা চালায়। এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মন্দিরে হামলার ঘটনায় সেবায়েত বাসুদেব গোস্বামী অজ্ঞাতনামা ২০০–২৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত প্রশান্তকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

পাবনা, ১২ নভেম্বর ২০২৪: পাবনার চাটমোহরে ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে প্রশান্ত কুমার সাহা (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতের দিকে পাবনার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রশান্ত কুমার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন হোসেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মামলাটি করেন, যা দণ্ডবিধির ২৯৫, ২৯৫ (ক) ও ১৫৩ ধারায় দায়ের করা হয়।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম জানান, প্রশান্ত কুমারের ফেসবুক পোস্টের পর বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার এজাহার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতে প্রশান্ত কুমার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দেন, যা স্থানীয়দের মাঝে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে রোববার রাতে স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল বের করে এবং বল্লভপুরের সর্বজনীন মহাদেব মন্দিরে হামলা চালায়। এ সময় মন্দিরে কিছু প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে, যা সেখানকার পরিবেশে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হামলায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করে।

স্থানীয়দের উত্তেজনা প্রশমনে আটকদের পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা ফাঁড়ি ঘেরাও করে তাঁদের মুক্তির দাবি জানায়। একপর্যায়ে আটক ব্যক্তিদের ছেড়ে দিলে জনতা শান্ত হয় এবং চলে যায়। চাটমোহর উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার দত্ত জানান, একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে পুরো ঘটনার সূত্রপাত হয়। পোস্টটি করা প্রশান্ত ঢাকায় থাকেন, তবে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে প্রতিবাদ করেন এবং মন্দিরে হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।

এদিকে, মন্দিরে হামলার ঘটনায় চাটমোহর থানায় সেবায়েত বাসুদেব গোস্বামী অজ্ঞাতনামা ২০০–২৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন।

ওসি মনজুরুল আলম জানান, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তারিখ: ১৩.১১.২০২৪

নান্দাইলে চাঁদা দাবির চিঠিতে হিন্দু ব্যবসায়ীর প্রতি আবারও হুমকি

ময়মনসিংহের নান্দাইলে সুনীল চন্দ্র বর্মণ নামে এক ব্যবসায়ীকে চাঁদার দাবিতে তৃতীয়বারের মতো চিঠি দিয়ে হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তাদের দাবি, আগের চিঠির নির্দেশনা মেনে এক লাখ টাকা না দিলে খারাপ পরিণতি বরণ করতে হবে। এর আগে তাকে দুই দফায় চিঠি দিয়ে চাঁদা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনা জানার পর ব্যবসায়ী ও তার পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় ঘটনার তদন্ত চলছে এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ীর নিরাপত্তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
নান্দাইলে চাঁদা দাবির চিঠিতে হিন্দু ব্যবসায়ীর প্রতি আবারও হুমকি

ময়মনসিংহের নান্দাইলে সুনীল চন্দ্র বর্মণ নামে এক ব্যবসায়ীকে চাঁদার দাবিতে তৃতীয়বারের মতো চিঠি দিয়ে হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তাদের দাবি, আগের চিঠির নির্দেশনা মেনে এক লাখ টাকা না দিলে খারাপ পরিণতি বরণ করতে হবে। এর আগে তাকে দুই দফায় চিঠি দিয়ে চাঁদা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনা জানার পর ব্যবসায়ী ও তার পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় ঘটনার তদন্ত চলছে এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ীর নিরাপত্তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

ময়মনসিংহ, ০৪ অক্টোবর ২০২৪: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী সুনীল চন্দ্র বর্মণ (৬০) তৃতীয়বারের মতো অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি ও হুমকিসংবলিত চিঠি পেয়েছেন। তিনি জানান, শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে বাসার দরজা খুলতেই দরজায় ঝুলানো অবস্থায় একটি চিঠি দেখতে পান। চিঠিটি পড়ার পর ভয়ে তিনি কাঁপতে থাকেন এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। পরবর্তীতে তিনি স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করে ঘটনাটি জানিয়েছেন।

সুনীল চন্দ্র বর্মণ নান্দাইল পৌরবাজারে পেঁয়াজ-রসুনসহ নানা জাতের মসলা বিক্রির ব্যবসা করেন। সম্প্রতি তার কাছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা প্রথমবার চাঁদা দাবি করে একটি চিঠি পাঠায়। সেখানে ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় পরদিন বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় আরও একটি চিঠি পাঠানো হয়। এই চিঠিতে চাঁদার পরিমাণ দ্বিগুণ করে এক লাখ টাকা দাবি করা হয় এবং দ্রুত টাকা না দিলে ভয়ঙ্কর পরিণতির শিকার হওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় চিঠি পাওয়ার পর সুনীল চন্দ্র বর্মণ আরও বেশি ভীত হয়ে পড়েন এবং প্রশাসনের সহায়তা চাইতে বাধ্য হন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নান্দাইল মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের এই হুমকির পিছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া তদন্তে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহমেদ বলেন, “চাঁদাবাজির ঘটনা তদন্তের জন্য আমাদের একটি টিম কাজ করছে। অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা ওই ব্যবসায়ীকে তৃতীয়বারের মতো চিঠি দিয়েছে। এই ঘটনাটি দুঃখজনক এবং তদন্ত চলছে। আমরা ব্যবসায়ীকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করছি।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর সুনীল চন্দ্র বর্মণ ও তার পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুণ কৃষ্ণ পাল ও ওসি ফরিদ আহমেদ ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে যান এবং তার সাথে কথা বলেন। ইউএনও অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, “উপর্যুপরি তিনটি চিঠি পেয়ে সুনীল চন্দ্র বর্মণ ও তার পরিবার ভীত হয়ে পড়েছে। আমরা ঘটনাটি পর্যবেক্ষণে রেখেছি এবং দ্রুত এর সমাধান করতে কাজ করছি।”

চিঠিগুলোর মধ্যে দুর্বৃত্তরা সুনীল চন্দ্র বর্মণকে ‘সুনীলদা’ সম্বোধন করে লিখেছেন। দ্বিতীয় চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “প্রথমবার ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আপনি সেই টাকা না দিয়ে চিঠিটি বিভিন্ন জায়গায় দেখিয়েছেন। এর ফলে এবার দ্বিগুণ অর্থাৎ এক লাখ টাকা দিতে হবে।” লাল কাপড়ে টাকা মুড়িয়ে শ্মশানঘাটে রেখে আসার নির্দেশও চিঠিতে দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় চিঠিতে বলা হয়েছে, “টাকা দিলে আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে নিরাপদে রাখা হবে, অন্যথায় খারাপ পরিণতি হবে।”

এ ঘটনার পর ব্যবসায়ীর পরিবারও আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে এবং তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝেও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ এই ধরনের অপরাধমূলক কাজের সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি দাবি করেছেন।

তারিখ: ১০.১১.২০২৪

পটুয়াখালীতে ২১টি হিন্দু পরিবারের জমি দখলের চেষ্টা, থানায় অভিযোগ

পটুয়াখালী জেলার টাউন কালিকাপুর এলাকায় ২১টি হিন্দু পরিবারের নিজস্ব জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে একদল ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে। জমির মালিকরা জানিয়েছেন, তাদের ওপর ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে। জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে, সোমবার ভুক্তভোগী পরিবারগুলো থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। পরিবারগুলো বলছে, দখলকারীরা নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে জমিতে জোরপূর্বক অধিকার কায়েমের চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানার পক্ষ থেকে দুই পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জমির মালিকানা সংক্রান্ত এ বিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পটুয়াখালীতে ২১টি হিন্দু পরিবারের জমি দখলের চেষ্টা, থানায় অভিযোগ

পটুয়াখালী জেলার টাউন কালিকাপুর এলাকায় ২১টি হিন্দু পরিবারের নিজস্ব জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে একদল ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে। জমির মালিকরা জানিয়েছেন, তাদের ওপর ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে। জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে, সোমবার ভুক্তভোগী পরিবারগুলো থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। পরিবারগুলো বলছে, দখলকারীরা নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে জমিতে জোরপূর্বক অধিকার কায়েমের চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানার পক্ষ থেকে দুই পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জমির মালিকানা সংক্রান্ত এ বিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

পটুয়াখালী, ২১ অক্টোবর ২০২৪: পটুয়াখালী শহরের টাউন কালিকাপুর এলাকায় ২১টি হিন্দু পরিবারের ক্রয়কৃত জমি দখলের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ভূমিদস্যুরা তাদের জমি জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টায় লিপ্ত এবং বিভিন্ন হুমকির মাধ্যমে তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। সোমবার সকালে এই পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় পটুয়াখালী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী পরিবারের একজন সদস্য ও বিএডিসির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আরতি রানী জানান, ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে এই ২১টি পরিবার টাউন কালিকাপুরের এসএ ৯৩১ নম্বর খতিয়ানের ২৬৭০ দাগে ১ একর ২১ শতাংশ এবং ২৬৬৯ দাগে ২৯ শতাংশ জমি ক্রয় করে। জমি কিনে তারা বালু দিয়ে ভরাট করে বসবাসের উপযোগী করে। পরিবারগুলো দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের জমি হিসেবে এই জমি ভোগ করে আসছেন।

কিন্তু সম্প্রতি স্থানীয় বেল্লাল খান, মনিরুজ্জামান নাসির, এবং জামাল বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাদের জমি দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। সোমবার সকালে জমিতে গিয়ে কিছু পরিবারের সদস্যরা বসবাসের উপযোগী ঘর নির্মাণ করতে গেলে তারা বাধার সম্মুখীন হন। সন্ত্রাসীরা তাদের কাজে বাধা দেয় এবং এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

এক ভুক্তভোগী কলেজশিক্ষক স্বপন খাসকেল বলেন, “গত ৯ অক্টোবরও ভূমিদস্যুরা জমিতে আমাদের প্রবেশে বাধা দেয় এবং তখনও তারা আমাদের হুমকি দেয়। আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় এবং এমনকি দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ারও ভয় দেখানো হয়।”

এ অবস্থায় নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং জমি রক্ষা করতে সোমবার সকালে পটুয়াখালী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। এ ছাড়া, তারা রোববার দুপুরে পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের কাছেও লিখিতভাবে বিষয়টি জানান এবং তাদের জমি সুরক্ষার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।

অভিযোগের বিষয়ে ভূমি দখলকারীদের মধ্যে বেল্লাল খান নিজেকে বিএনপির কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন এবং তিনি দাবি করেন, তারাও ক্রয়ের মাধ্যমে এই জমির মালিক। মনিরুজ্জামান নাসিরও একই দাবি করেন এবং বলেন, “আমি বিএনপির লোক। আমরা বর্তমান সরকারের আমলে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছি।”

তবে বেল্লাল খান এবং মনিরুজ্জামান নাসির নিজেদের বিএনপির কর্মী বলে দাবি করলেও পটুয়াখালী পৌর বিএনপির সভাপতি মো. কামাল হোসেন জানান, এ দুজন বিএনপির কোনো পদ-পদবির অধিকারী নন এবং দলীয় পরিচয়ের আড়ালে নিজেদের কার্যক্রম চালানোর অভিযোগের ব্যাপারে তিনি দল থেকে কোনো সমর্থন দেননি।

পটুয়াখালী সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রতনুজ্জামান জানান, উভয় পক্ষকে থানায় আসতে বলা হয়েছে এবং উভয়কে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জমি সংক্রান্ত এই বিরোধ নিরসনে প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, হিন্দু পরিবারগুলোর সদস্যরা তাদের সম্পত্তির ওপর নিজেদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জমি সংক্রান্ত এই ঘটনা পরিবারগুলোর মধ্যে চরম উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে এবং তারা দ্রুত সমস্যাটির সমাধান চাচ্ছেন।

তারিখ: ১০.১১.২০২৪

সংখ্যালঘু ও পাহাড়িরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠী নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের নেতারা। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এক গণ-সমাবেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আট দফা দাবি জানানো হয়। বক্তারা দাবি করেন, বিভিন্ন সহিংসতা ও চাঁদাবাজির ঘটনাগুলোর যথাযথ বিচার না হওয়ায় সংখ্যালঘুরা বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। সমাবেশে ধর্মীয় নেতারা বলেন, সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
সংখ্যালঘু ও পাহাড়িরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠী নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের নেতারা। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এক গণ-সমাবেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আট দফা দাবি জানানো হয়। বক্তারা দাবি করেন, বিভিন্ন সহিংসতা ও চাঁদাবাজির ঘটনাগুলোর যথাযথ বিচার না হওয়ায় সংখ্যালঘুরা বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। সমাবেশে ধর্মীয় নেতারা বলেন, সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

ঢাকা, ০৪ অক্টোবর ২০২৪: রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক গণ-সমাবেশে বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের নেতারা দাবি করেছেন, দেশে সংখ্যালঘু ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠী নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে এবং প্রতিনিয়ত তারা বিভিন্ন হুমকি ও সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে এই সমাবেশে বক্তারা দেশের গণতন্ত্র ও সহাবস্থান প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দেন।

সমাবেশে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “দেশ স্বাধীন হওয়ার এত বছর পরও আমরা এখনও আদর্শিক ইতিহাস গড়তে পারিনি। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। বর্তমান পরিস্থিতির নিরসন হওয়া জরুরি।” তিনি উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা বেড়ে গেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস আরও বলেন, “দুর্গাপূজার সময় মাদ্রাসার ছাত্রদের দিয়ে নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করায় বোঝা যায়, এ দেশে সংখ্যালঘুরা কতটা অনিরাপদ।”

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকারের হিন্দু উপদেষ্টা মন্দির পরিদর্শন বা ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর মতো উদ্যোগ নেননি। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “আপনি শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন, তবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ না থাকলে সেই শান্তি বিপন্ন হবে।” তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সংখ্যালঘুদের জন্য দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

সংখ্যালঘু জোটের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের জন্য নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় স্থাপন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ, সংস্কৃতি ও পালি শিক্ষা বোর্ড গঠন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণা করা।

সমাবেশে আরেক ধর্মীয় নেতা রবিশ্বানন্দ পুরী মহারাজ বলেন, “আমাদের এমন এক পর্যায়ে এসে দাঁড়াতে হয়েছে যেখানে শহীদ হচ্ছি, প্রাণ যাচ্ছে। সনাতনী সমাজের সবাই আজ এই দাবির পক্ষে ঐক্যবদ্ধ।” তিনি বলেন, “আমাদের আট দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

আরেক ধর্মীয় নেতা গোপীনাথ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “১৯৭১ সালের পর থেকে যে সরকারই এসেছে, প্রত্যেকে সনাতনীদের ওপর নির্যাতন করেছে। কোনো সরকারের আমলেই এই অত্যাচারের বিচার করা হয়নি।” তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আট দফা দাবি পূরণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এই গণ-সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস এবং সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নির্মল বিশ্বাস। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের প্রতিনিধি প্রসেঞ্জিত কুমার হালদার, সনাতনী অধিকার আন্দোলনের প্রতিনিধি সাজেন কৃষ্ণ বল, এবং বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিকের সুশান্ত অধিকারী।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের সাধারণ সম্পাদক লীলারাজ ব্রহ্মচারী, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দিপঙ্কর সিকদার, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সভাপতি আশীষ চন্দ্র দাশ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, এবং বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের মহাসচিব শ্যামল কান্তি নাগসহ আরও অনেকে।

তারিখ: ১০.১১.২০২৪

নতুন বাংলাদেশের পূজায় সংখ্যালঘু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভেদাভেদ নয়: উপদেষ্টা

টাঙ্গাইলে পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, নতুন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে কোনো ভেদাভেদ থাকতে পারে না। এখানে হিন্দু-মুসলিম সবাই এক পরিবারের সদস্য। পূজায় আনন্দের পরিবেশ নিশ্চিত করতে পুলিশ বা আনসারের পাহারা নয়, বরং সামাজিকভাবে সবার মিলেমিশে উদ্‌যাপনের পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন।
নতুন বাংলাদেশের পূজায় সংখ্যালঘু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভেদাভেদ নয়: উপদেষ্টা

টাঙ্গাইলে পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, নতুন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে কোনো ভেদাভেদ থাকতে পারে না। এখানে হিন্দু-মুসলিম সবাই এক পরিবারের সদস্য। পূজায় আনন্দের পরিবেশ নিশ্চিত করতে পুলিশ বা আনসারের পাহারা নয়, বরং সামাজিকভাবে সবার মিলেমিশে উদ্‌যাপনের পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন।

টাঙ্গাইল, ০৭ অক্টোবর ২০২৪: টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় আজ সোমবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, নতুন বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে কোনো বৈষম্য থাকতে পারে না। এদেশের মানুষ সবাই এক পরিবারের সদস্য হিসেবে মিলেমিশে বাস করে এবং হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবাই মিলেই ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো উদ্‌যাপন করবে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা ঈদে আনন্দ করব আর পূজায় ভয়ে থাকব, এটা হতে পারে না। পূজায় কোনো ভয় নিয়ে উদ্‌যাপন করা উচিত নয়। পুলিশ বা আনসারের পাহারায় পূজাকে আনন্দময় করার চেয়ে, আমরা হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে সামাজিকভাবে এমন পরিবেশ তৈরি করতে পারি, যেখানে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে উদ্‌যাপন করতে পারে।” ফরিদা আখতার উল্লেখ করেন, এ ধরনের উদ্যোগে সবাই যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে অবদান রাখে, তবে পূজার সময় নিরাপত্তা বা ভয় নয়, বরং আনন্দই প্রাধান্য পাবে।

জেলা প্রশাসক শরীফা হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, র‍্যাব-১৪–এর স্কোয়াড কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল বাছেদ, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, জেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চিত্তরঞ্জন সরকার, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ গুণ, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি দিলীপ দাস, এবং ভূঞাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি স্মরণ দত্ত।

তারিখ: ১০.১১.২০২৪

সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘু ও নারীর প্রতিনিধিত্বের অভাব

সংবিধান, বিচার বিভাগসহ ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নারীর প্রতিনিধিত্বের অভাব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। মোট ৫০ সদস্যের মধ্যে প্রাক্তন আমলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রাধান্য রয়েছে; তবে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নেই এবং নারী সদস্যের সংখ্যা অত্যন্ত কম। অংশীজন ও নাগরিক সমাজ এই প্রতিনিধিত্বের অভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি পূরণে বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে। উপদেষ্টারা এ বিষয়ে জনমতের প্রতিফলন ঘটার আশ্বাস দিয়েছেন।
সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘু ও নারীর প্রতিনিধিত্বের অভাব

সংবিধান, বিচার বিভাগসহ ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নারীর প্রতিনিধিত্বের অভাব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। মোট ৫০ সদস্যের মধ্যে প্রাক্তন আমলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রাধান্য রয়েছে; তবে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নেই এবং নারী সদস্যের সংখ্যা অত্যন্ত কম। অংশীজন ও নাগরিক সমাজ এই প্রতিনিধিত্বের অভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি পূরণে বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে। উপদেষ্টারা এ বিষয়ে জনমতের প্রতিফলন ঘটার আশ্বাস দিয়েছেন।

ঢাকা, ২৪ অক্টোবর ২০২৪: সংবিধান, বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসনসহ ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠনে পর্যাপ্ত প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তির অভাব রয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন অংশীজন ও নাগরিক সমাজ। এসব কমিশনে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং নারীর প্রতিনিধিত্ব সীমিত, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সম্প্রতি পূর্ণাঙ্গভাবে ঘোষিত ছয়টি কমিশনে মোট ৫০ জন সদস্যের মধ্যে প্রাক্তন আমলা রয়েছেন ১৫ জন, প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা দুইজন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আটজন, বিচারপতি ও বিচারক পাঁচজন, আইনজীবী ছয়জন, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ছয়জন এবং অন্যান্য পেশাজীবী আটজন। তবে নারী সদস্য মাত্র পাঁচজন এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ছয়জনের মধ্যে একজনের নামই শুধু প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া, চারটি কমিশনে প্রধানদের নাম ঘোষিত হলেও, সেখানে একজন মাত্র নারী আছেন এবং তিনি শুধুমাত্র নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চাকমা সার্কেলের প্রধান রাজা দেবাশীষ রায়। ১৩ অক্টোবর তাঁর ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “সংস্কার কমিশনে আদিবাসী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, নারী এবং অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি অনুপস্থিত বা অপর্যাপ্ত। এতে নোবেলজয়ীর নেতৃত্বাধীন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।” প্রথম আলোকে তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে তাঁকে কমিশনে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা বাতিল করা হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ প্রদান করতে কমিশন গঠন করেছে। সেইসঙ্গে, গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, নারী এবং শ্রম বিষয়েও সংস্কারের সুপারিশের জন্য চারটি কমিশন গঠন করা হয় এবং প্রধানদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বাকি সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হবে।

নাগরিক সমাজ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, কমিশনগুলোতে ঢাকার শিক্ষকদের প্রাধান্য বেশি; বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের পাঁচজন শিক্ষক অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তবে গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তা কমিশনগুলোতে প্রতিফলিত হয়নি।

এ বিষয়ে প্রথম আলোকে অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টা বলেন, “কমিশনগুলোতে সবার মতামতের প্রতিফলন ঘটানো হবে। তাই তাদের সুপারিশ বা প্রস্তাবে বিভিন্ন পক্ষের মতামত অন্তর্ভুক্ত থাকবে।” জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠনেও সমালোচনা এসেছে, যেখানে সাত সদস্যের মধ্যে ছয়জনই প্রশাসন ক্যাডারের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা এবং অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের কেউই অন্তর্ভুক্ত নেই।

সংবিধান সংস্কার কমিশন, যা ছয়টি কমিশনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তাতে ধর্মীয় বা জাতিগত সংখ্যালঘুর কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এ বিষয়ে দেশের জনসংখ্যার বেশিরভাগ মুসলমান হলেও, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে।

সংস্কার কমিশনগুলোতে প্রতিনিধিত্ব নিয়ে সাবেক বিচারপতি এম এ মতিন মন্তব্য করেন যে, “কমিশনগুলোতে নারী ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি কম থাকলেও এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে সংস্কারের প্রস্তাব তৈরিতে সমাজের সকল পক্ষের স্বার্থ বিবেচনা করা হবে।”

অন্যদিকে, টাস্কফোর্সেও ধর্মীয় বা জাতিগত সংখ্যালঘুর প্রতিনিধি নেই, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের কথা বলা হচ্ছে; কমিশনগুলোতে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা হওয়া উচিত।”

তারিখ: ১০.১১.২০২৪

আমরা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু শব্দ শুনতে চাই না: জামায়াতের আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। বগুড়ার সুধী সমাবেশে তিনি বলেন, সকল ধর্মের মানুষ এখানে সহাবস্থানে বসবাস করবে এবং যার যার ধর্ম পালন করবে। তিনি সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জানান, জামায়াত এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে যেখানে সব ধর্ম ও জাতি নির্বিশেষে শান্তি ও সম্প্রীতির মধ্যে জীবনযাপন করবে। পাশাপাশি, তিনি বর্তমান সরকারের জুলুম-নির্যাতন নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
আমরা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু শব্দ শুনতে চাই না: জামায়াতের আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। বগুড়ার সুধী সমাবেশে তিনি বলেন, সকল ধর্মের মানুষ এখানে সহাবস্থানে বসবাস করবে এবং যার যার ধর্ম পালন করবে। তিনি সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জানান, জামায়াত এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে যেখানে সব ধর্ম ও জাতি নির্বিশেষে শান্তি ও সম্প্রীতির মধ্যে জীবনযাপন করবে। পাশাপাশি, তিনি বর্তমান সরকারের জুলুম-নির্যাতন নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

বগুড়া, ২৬ অক্টোবর ২০২৪: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান দেশের সকল নাগরিককে জাতি, ধর্ম, ও সংখ্যা বিবেচনা না করে একত্রিতভাবে বসবাসের আহ্বান জানিয়েছেন। আজ শনিবার বিকেলে বগুড়ার ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জামায়াতের বগুড়া জেলা ও শহর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “আমরা চাই না এই জাতিকে আর কেউ বিভক্ত করুক। আমরা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু শব্দ শুনতে চাই না। এখানে জন্ম নেওয়া প্রত্যেকেই গর্বিত নাগরিক। সকল ধর্মের মানুষ দলমত-নির্বিশেষে এখানে বসবাস করবে এবং যার যার ধর্ম পালন করবে।” তিনি আরও বলেন, “যদি মসজিদে নামাজ পড়ার সময় পাহারা দিতে না হয়, তাহলে মন্দিরে উপাসনার সময়ও যেন পাহারা দেওয়ার প্রশ্ন না ওঠে।”

শফিকুর রহমান জামায়াতের ভিশন হিসেবে জানান, দলটি এমন একটি বাংলাদেশ দেখতে চায়, যেখানে দুর্নীতিমুক্ত বিচারব্যবস্থা থাকবে এবং মানুষের আদালতে ঘুরতে হবে না। তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী কোরআনের আলোকে একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়।” তরুণদের প্রতি আস্থাশীল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জামায়াত তরুণদের এমন শিক্ষা দিতে চায়, যাতে তারা আল্লাহর ভয় করবে, মানুষকে ভালোবাসবে, এবং নিজের যোগ্যতায় চাকরি পাবে।”

তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “সাড়ে ১৫ বছর ধরে তারা জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। অসংখ্য পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, অনেককে খুন ও গুম করেছে।” তিনি উল্লেখ করেন যে জামায়াত প্রতিহিংসার রাজনীতি চায় না, কিন্তু এই সরকারের নির্যাতনের বিচার হওয়া উচিত।

সরকার পরিবর্তনের পর জামায়াত কোনো ধরনের দখল বা ভাঙচুরে জড়ায়নি বলে দাবি করে শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা ভুলের ঊর্ধ্বে নই। কেউ যদি বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ হাজির করতে পারে, তবে আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা চাইব।” এছাড়া, তিনি দাবি করেন যে বিগত সরকারের সময় জামায়াত সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

তিনি শেখ হাসিনার দেশত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “ভালো মানুষ কখনো পালায় না। তাদের দেশপ্রেম ও কান্না মেকি, তারাই দেশ থেকে পালিয়ে যান।” সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “তিনি শুধু বিচারক নন, একজন রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত হিসেবেও কাজ করেছেন। পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তার হত্যার মধ্য দিয়ে জুলুম শুরু হয়েছিল।”

জামায়াতের আমির আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে মন্তব্য করেন যে, যারা জনগণের ওপর অস্ত্র চালিয়েছে, তাদের আর ভোট চাওয়ার নৈতিক অধিকার নেই। তিনি বলেন, “তারা জনগণের সামনে চলাফেরা করতে পারবে না এবং তাদের বিচার হবে।”

জামায়াতের বগুড়া শহর শাখার আমির আবিদুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সুধী সমাবেশে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীন, এবং শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি গোলাম রব্বানীসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।

তারিখ: ১০.১১.২০২৪

সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রেক্ষাপট, কারণ ও ভবিষ্যতের পথযাত্রা

গত ৫ আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর একাধিক হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি ক্ষমতাচ্যুত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সদস্যদেরও আক্রমণের শিকার হতে হয়। এই সময় বিভিন্ন সংখ্যালঘু ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা অনেকের জীবনে অসহনীয় কষ্ট বয়ে এনেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধর্মীয় বা জাতিগত পরিচয়কে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া এই ধরনের সহিংসতা দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবকাঠামোকে আরো দুর্বল করছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের এসব ঘটনায় রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার প্রবণতা ও সহিংসতার মূল কারণগুলোর গভীরতর বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভূত হচ্ছে।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রেক্ষাপট, কারণ ও ভবিষ্যতের পথযাত্রা

গত ৫ আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর একাধিক হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি ক্ষমতাচ্যুত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সদস্যদেরও আক্রমণের শিকার হতে হয়। এই সময় বিভিন্ন সংখ্যালঘু ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা অনেকের জীবনে অসহনীয় কষ্ট বয়ে এনেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধর্মীয় বা জাতিগত পরিচয়কে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া এই ধরনের সহিংসতা দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবকাঠামোকে আরো দুর্বল করছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের এসব ঘটনায় রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার প্রবণতা ও সহিংসতার মূল কারণগুলোর গভীরতর বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভূত হচ্ছে।

ঢাকা, ০৬ নভেম্বর ২০২৪: গত ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে যে অস্থিরতা দেখা দেয়, তার মধ্যে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও নানা আক্রমণের শিকার হয়। এই হামলার ঘটনাগুলো বিস্তারিত পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, জনরোষ, এবং ব্যক্তিগত আক্রোশকে কেন্দ্র করে এসব ঘটনা ঘটে। দেশব্যাপী এই সহিংসতায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ এবং ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী।

প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ১,০৬৮টি ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আক্রমণ হয়। এই সহিংস ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায়। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২১ সালের দুর্গাপূজার সময়ও সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ হয়েছিল, যখন দেশের ২৭টি জেলায় মন্দির ও পূজামণ্ডপে ভাঙচুর, দোকান ও ঘরবাড়িতে আক্রমণের ঘটনা ঘটে। ওই সময় মৃতের সংখ্যা ছিল আরও বেশি।

এই সহিংসতার প্রকৃত কারণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক বা সামাজিক সুবিধা লাভের জন্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা প্রায়ই ঘটানো হয়। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের জনসমর্থন বৃদ্ধি করতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বা তাদের রক্ষাকারী হিসেবে অবস্থান নেয়। এর মধ্যে কিছু রাজনৈতিক দল ও প্রভাবশালী নেতা এই হামলাকে পুঁজি করে নিজেদের সুবিধা লাভে সক্রিয় হয়। অনেক সময় জমি বা সম্পত্তির দখল নিতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে, যা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষকে আরও উসকে দেয়।

ইন্টারন্যাশনাল গবেষণায় দেখা গেছে, ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং নাইজেরিয়ার মতো দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবশালী নেতারা তরুণদেরকে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বিভিন্নভাবে ফায়দা লোটার চেষ্টা করেন। যেমন, ভারতে হিন্দু-মুসলমান বিভেদের প্রবণতা নির্বাচনের আগে বাড়তে দেখা যায়। বাংলাদেশেও এই ধরনের হামলার মূল কারণগুলো একই ধরনের রাজনীতিক চালচিত্রে ঘেরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাড়ানোর জন্য সামাজিক ও সরকারি প্রকল্প গ্রহণ করা জরুরি। ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত আশুতোষ ভার্শ্নের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, নাগরিক সংগঠনগুলো ‘বিশ্বাস সংযোগ’ তৈরির মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে আস্থা বাড়াতে পারে, যা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার হার কমাতে সহায়ক হতে পারে।

এদিকে, গণ–অভ্যুত্থানের পর ভারতের বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সংখ্যালঘু নির্যাতনকে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করার অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন পুরোনো ভিডিও ও ছবি ব্যবহার করে হিন্দুদের ওপর হামলাকে আরো প্রকট করে তোলা হয়। এসব প্রচারণার ফলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে। গণ–অভ্যুত্থানের সময় অনেক সংখ্যালঘুও শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের আশায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। এই অস্থির সময়ে ৯ জন হিন্দুধর্মাবলম্বী গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ হন। তাঁদের আত্মত্যাগ সাম্প্রদায়িক বিভেদ ভুলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায়, যেখানে সব ধর্মের মানুষ সাম্য ও স্বাধীনতায় বসবাস করতে পারবে।

দেশে জাতিগত সহিংসতা ও ধর্মীয় বিভেদ কমানোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর স্বচ্ছ অবস্থান নেওয়া এবং সমাজে অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি তৈরি করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

সাইমুম পারভেজ : ডয়চে ভেলে একাডেমির রাজনৈতিক যোগাযোগবিষয়ক প্রভাষক

তারিখ: ১০.১১.২০২৪

একুশে আইন: ঢাকায় উসকানিমূলক পোস্টারসহ ১০ জন গ্রেপ্তার

ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে উসকানিমূলক পোস্টার, ছবিসহ প্ল্যাকার্ড এবং নগদ অর্থসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শনিবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ছবি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিমূলক সমাবেশের পরিকল্পনা করছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক বিনষ্টের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উসকানিদাতা ও অর্থ যোগানদাতাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
একুশে আইন: ঢাকায় উসকানিমূলক পোস্টারসহ ১০ জন গ্রেপ্তার

ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে উসকানিমূলক পোস্টার, ছবিসহ প্ল্যাকার্ড এবং নগদ অর্থসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শনিবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ছবি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিমূলক সমাবেশের পরিকল্পনা করছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক বিনষ্টের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উসকানিদাতা ও অর্থ যোগানদাতাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা, ০৯ নভেম্বর ২০২৪: ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে উসকানিমূলক পোস্টার, ছবি, প্ল্যাকার্ড এবং নগদ অর্থসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাতে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয়, তিনি দলের কর্মীদের একটি বিশেষ পরিকল্পনার নির্দেশ দিয়েছেন। ক্লিপে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ছবি এবং দেশটির পতাকা ব্যবহার করে মিছিল-সমাবেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সমাবেশে পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এগুলো ভাঙচুর এবং অবমাননার চিত্র সংগ্রহ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক নষ্ট করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের অপতৎপরতা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব উসকানিমূলক কাজের পেছনে থাকা অর্থদাতা এবং অন্য সহযোগীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডিএমপি জানায়, উসকানিদাতা ও এই ধরনের পরিকল্পনার মূলহোতা এবং তাদের অর্থ যোগানদাতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে গ্রেপ্তারকৃতদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। পুলিশ মনে করছে, এই ঘটনা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা এবং বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা।

ডিএমপির কর্মকর্তা আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানো এবং দেশের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে কিছু ব্যক্তি বারবার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের কার্যকলাপ সাম্প্রতিককালে বেড়ে যাওয়ার কারণে পুলিশ এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং তারা গ্রেপ্তারের পাশাপাশি এর পিছনে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।

ডিএমপির তরফ থেকে দেওয়া এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং যে কোনো উসকানিমূলক প্রচারণা রোধ করতে কাজ করে যাচ্ছে।

তারিখ: ১০.১১.২০২৪

বগুড়ার শ্মশানে লাশের মাথা চুরি: আতঙ্কে এলাকাবাসী

বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের উত্তর বাহিনীর মহাশ্মশানে এক মৃত নারীর লাশের মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁর ছেলে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। শ্মশানের তত্ত্বাবধায়ক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্বৃত্তরা সমাধিস্থল খুঁড়ে লাশের মাথা নিয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং নিজেদের স্বজনদের সমাধি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে শ্মশানে ভিড় করেছেন। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়েছে।
বগুড়ার শ্মশানে লাশের মাথা চুরি: আতঙ্কে এলাকাবাসী

বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের উত্তর বাহিনীর মহাশ্মশানে এক মৃত নারীর লাশের মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁর ছেলে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। শ্মশানের তত্ত্বাবধায়ক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্বৃত্তরা সমাধিস্থল খুঁড়ে লাশের মাথা নিয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং নিজেদের স্বজনদের সমাধি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে শ্মশানে ভিড় করেছেন। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়েছে।

বগুড়া, ০৯ নভেম্বর ২০২৪: বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের উত্তর বাহিনীর মহাশ্মশানে এক মৃত নারীর লাশের মাথা চুরি যাওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত। মৃত নারী গোলাপী সরকার (৫৩) ছিলেন শহরের উত্তরসাহা পাড়া মহল্লার বাসিন্দা। তাঁর ছেলে রঞ্জিত সরকার জানান, বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা শ্মশানের ভিতরে প্রবেশ করে তাঁর মায়ের সমাধিস্থল খুঁড়ে লাশের মাথা কেটে নিয়ে যায়।

শ্মশানের তত্ত্বাবধায়ক প্রমোদ সরকার জানান, বৃহস্পতিবার দিনের বেলায় শ্মশানের কোনো সমাধিতে মাটি খোঁড়ার কোনো চিহ্ন ছিল না। তবে রাতে দুর্বৃত্তরা শ্মশানের ভিতরে ঢুকে গোলাপী সরকারের সমাধিস্থল খুঁড়ে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটায়। শুক্রবার সকালে প্রমোদ সরকার ঘটনাটি জানতে পেরে মৃত নারীর পরিবারকে খবর দেন।

খবর পেয়ে গোলাপী সরকারের স্বামী সুরেশ সরকার এবং ছেলে রঞ্জিত সরকার সমাধিস্থলে যান এবং সেখানে সমাধির মাটি খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পান। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল সরকার জানান, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, সমাধিস্থলের মাটি সরানো হয়েছে এবং লাশের মাথা ধারালো কিছু দিয়ে কেটে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, সমাধিস্থলের আশপাশে একাধিক মানুষের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছেন।

এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ দূরবর্তী অঞ্চল থেকে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হন। তাঁরা নিজেদের স্বজনদের সমাধি পরীক্ষা করতে শ্মশানে ভিড় করেন এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের দাবি জানান। অনেকেই এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং জানান, শেরপুর উত্তর বাহিনী মহাশ্মশানটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন উপজেলার মৃতদের সৎকারে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এমন মর্মান্তিক ও ভীতিকর ঘটনার কথা এই শ্মশানের ইতিহাসে এই প্রথম ঘটল বলে জানান পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং শেরপুরের সাবেক কাউন্সিলর চন্দন কুমার দাস।

এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তদন্তের মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করা হবে। আমরা ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে আরও ঘটতে পারে, যদি না যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

তারিখ: ১০.১১.২০২৪

কাপ্তাই হ্রদের তলায় লুকিয়ে থাকা চাকমা রাজবাড়ির ইতিহাস

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির নিচে আজও লুকিয়ে আছে চাকমা রাজার প্রাচীন রাজপ্রাসাদ, যা একসময় চাকমা রাজাদের শাসনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। ১৯৬০ সালে কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ নির্মাণের ফলে রাজবাড়িটি ডুবে যায়, যা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য বেদনার প্রতীক হয়ে আছে। চাকমা রাজার নতুন রাজপ্রাসাদ তৈরি হলেও ডুবে থাকা ঐতিহাসিক প্রাসাদটি দেখতে বিভিন্ন সময়ে মানুষের ভিড় জমে কাপ্তাই হ্রদের তীরে। এই প্রাসাদ পাহাড়ি সংস্কৃতি ও ইতিহাসের একটি অনন্য স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রয়ে গেছে।
কাপ্তাই হ্রদের তলায় লুকিয়ে থাকা চাকমা রাজবাড়ির ইতিহাস

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির নিচে আজও লুকিয়ে আছে চাকমা রাজার প্রাচীন রাজপ্রাসাদ, যা একসময় চাকমা রাজাদের শাসনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। ১৯৬০ সালে কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ নির্মাণের ফলে রাজবাড়িটি ডুবে যায়, যা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য বেদনার প্রতীক হয়ে আছে। চাকমা রাজার নতুন রাজপ্রাসাদ তৈরি হলেও ডুবে থাকা ঐতিহাসিক প্রাসাদটি দেখতে বিভিন্ন সময়ে মানুষের ভিড় জমে কাপ্তাই হ্রদের তীরে। এই প্রাসাদ পাহাড়ি সংস্কৃতি ও ইতিহাসের একটি অনন্য স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রয়ে গেছে।

রাঙামাটি, ৮ নভেম্বর ২০২৪: রাঙামাটি শহরের জেলা প্রশাসকের বাসভবনের পাশেই কাপ্তাই হ্রদের তীরে এক বিশেষ স্থান আছে, যেখানে প্রায়শই মানুষের ভিড় দেখা যায়। কেউ কেউ নৌকা নিয়ে হ্রদের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় চলে যান এবং নিচের জলে চোখ রাখেন। তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিচের জলরাশির তলায় থাকা চাকমা রাজার প্রাচীন রাজপ্রাসাদ, যা কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের কারণে আজও জলের নিচে চাপা পড়ে আছে।

১৯৬০ সালে পাকিস্তান সরকার কর্ণফুলী নদীতে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ করলে হাজারো বাড়িঘরের সাথে চাকমা রাজবাড়িও পানির নিচে ডুবে যায়। এই হ্রদ সৃষ্টির সময় লাখো মানুষ স্থানচ্যুত হন, যাঁদের কাছে এই ডুবন্ত রাজবাড়ি যেন অতীতের হারানো ইতিহাসের এক দুঃখময় স্মৃতিচিহ্ন। এমনকি পানি যখন স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায়, তখন হ্রদের নিচে লুকিয়ে থাকা প্রাসাদের অবশিষ্টাংশ কিছুটা দৃশ্যমান হয়, যা দেখতে ভিড় করেন স্থানীয় ও আগ্রহী দর্শনার্থীরা।

চাকমা রাজাদের আদি রাজপ্রাসাদটি ছিল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়। রাঙ্গুনিয়া থেকে রাঙামাটিতে আসেন রাজা হরিশ্চন্দ্র রায়, এবং এখানেই প্রায় ৮৪ বছর ধরে তিনি রাজকার্য পরিচালনা করেন। ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে সেই প্রাসাদ ডুবে যায়। বর্তমানে রাঙামাটি শহরে নতুন চাকমা রাজবাড়ি নির্মাণ করা হলেও প্রাচীন প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ আজও জলের নিচে রয়ে গেছে, যা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে আছে।

চাকমা সার্কেল কার্যালয়ের কর্মকর্তা সুব্রত চাকমা জানান, কাপ্তাই বাঁধের ফলে রাজবাড়ির পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধবিহারও ডুবে গেছে। সেখানে থাকা বিশাল বুদ্ধমূর্তি আজও রয়ে গেলেও মন্দিরটি বিলীন হয়ে গেছে। পুরোনো রাজপ্রাসাদ থেকে একটি প্রাচীন কামান উদ্ধার করে তা বর্তমান চাকমা রাজার কার্যালয়ের পাশে রাখা হয়েছে।

অতীত স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকার কর্মী নিরূপা দেওয়ান বলেন, “আমি ছোটবেলায় রাজ পুণ্যাহ দেখতে সেখানে যেতাম। সে সময় অসাধারণ স্থাপত্যশৈলীর সেই রাজবাড়িটি দেখে অভিভূত হতাম। কখনো ভাবিনি সেই বাড়ি পানির নিচে চলে যাবে।”

১৯৮৬ ও ২০০৬ সালে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে গেলে রাজবাড়িটির কিছু অংশ ভেসে ওঠে। সেই সময় অনেকে রাজবাড়ির স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ইট তুলে নিয়ে আসেন। এ রাজপ্রাসাদ আজও চাকমা জনগোষ্ঠীর অতীত এবং তাদের বেদনার এক চিরস্মরণীয় প্রতীক হয়ে আছে, যা পাহাড়ি সংস্কৃতি ও ইতিহাসের ধারক হিসেবে রয়ে গেছে।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

পাঁচ শতাধিক বছরের ঐতিহ্য বহন করছে নাটোরের বুধপাড়া কালীপূজার মেলা

প্রতি বছর কার্তিক মাসে নাটোরের লালপুর উপজেলার বুধপাড়া গ্রামে কালীপূজাকে ঘিরে জমে ওঠে এক ঐতিহ্যবাহী মেলা, যা স্থানীয় হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। প্রাচীন এই মেলার সূচনা হয়েছিল ৫৩৫ বছর আগে, যা এখনও অঞ্চলটিতে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করে। মেলায় কাঁসার তৈজসপত্র, কাঠের আসবাব, মিষ্টির দোকানসহ নানা পণ্যের সমাহার ঘটে। কালীমন্দিরের পাশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই মেলা বসে, যা স্থানীয় ও বিদেশি দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। এবছর মেলা শুরু হয়েছে এবং চলবে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত।
পাঁচ শতাধিক বছরের ঐতিহ্য বহন করছে নাটোরের বুধপাড়া কালীপূজার মেলা

প্রতি বছর কার্তিক মাসে নাটোরের লালপুর উপজেলার বুধপাড়া গ্রামে কালীপূজাকে ঘিরে জমে ওঠে এক ঐতিহ্যবাহী মেলা, যা স্থানীয় হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। প্রাচীন এই মেলার সূচনা হয়েছিল ৫৩৫ বছর আগে, যা এখনও অঞ্চলটিতে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করে। মেলায় কাঁসার তৈজসপত্র, কাঠের আসবাব, মিষ্টির দোকানসহ নানা পণ্যের সমাহার ঘটে। কালীমন্দিরের পাশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই মেলা বসে, যা স্থানীয় ও বিদেশি দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। এবছর মেলা শুরু হয়েছে এবং চলবে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত।

নাটোর, ১ নভেম্বর ২০২৪: কার্তিক মাস এলেই নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার বুধপাড়া গ্রামে উৎসবের আমেজ শুরু হয়। বিশেষ করে মেয়ের বাড়ি জামাতা ও নাতি-নাতনিদের আগমনে বাড়ির পরিবেশ আনন্দমুখর হয়ে ওঠে। অতিথি আপ্যায়নের জন্য বাড়ির গৃহিণীরা নাড়ু-মুড়ি ও মিষ্টান্ন তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। প্রতি বছর এই উৎসবটি মূলত বুধপাড়ার কালীপূজা ও মেলাকে ঘিরেই অনুষ্ঠিত হয়।

বুধপাড়া গ্রামে শুরু হওয়া এই মেলা এখন কেবল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। বরং হিন্দু-মুসলিমসহ সকল ধর্মের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এবছর মেলা শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার থেকে এবং চলবে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলার ইতিহাস ৫৩৫ বছর পেছনে, ১৪৯০ খ্রিস্টাব্দে, যখন এখানকার কাঁসাশিল্পীরা এই মেলার সূচনা করেন। নবাবি আমলের বর্গি হাঙ্গামার সময় ভারতের মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের খাগড়া থেকে কাঁসাশিল্পীদের এক বড় দল এখানে বসতি গড়ে এবং মেলার গোড়াপত্তন করেন। পরবর্তীতে জমিদার পুণ্যচন্দ্র দাস প্রায় দেড় হাজার বিঘা জমি দান করে এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা করেন।

বুধপাড়ার কালীমন্দির চত্বরে মেলা বসে, এবং প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মেলার প্রসার ঘটে। মেলার প্রথম দিনে ক্রেতাদের মধ্যে শিশু-কিশোরদের ভিড় বেশি ছিল। তারা জিলাপি, সন্দেশসহ বিভিন্ন মিষ্টি কিনতে ব্যস্ত ছিল। এক মিষ্টির দোকানের নাম ‘নিত্যানন্দ মিষ্টান্ন ভান্ডার’। দোকানের মালিক জিতেন দাস বলেন, তাঁদের মিষ্টির ব্যবসা প্রায় শতবর্ষ ধরে চলছে। তার পূর্বপুরুষ ললিন দাস বেতের ঝুড়িতে করে হেঁটে সন্দেশ বিক্রি করতেন। এবছরের মেলায় জিতেন আশা করছেন সাত দিনে অন্তত ২০ মণ মিষ্টি বিক্রি করতে পারবেন। মেলার প্রায় ৮০ ভাগ ক্রেতাই মুসলিম সম্প্রদায়ের, তাই ব্যবসায় মন্দা হয় না বলে জানান তিনি।

মেলায় শুধু মিষ্টিই নয়, কাঠের আসবাব, চাদর, কম্বল, ও শিশুদের খেলনাসামগ্রীসহ নানা ধরনের পণ্য বিক্রি হয়। মেলার মূল আকর্ষণ ঐতিহ্যবাহী কাঁসার তৈজসপত্র, যা স্থানীয়রা পুরোনো স্মৃতিকে ধরে রাখতে কিনে থাকেন। কাঁসাশিল্পীদের হাতে গড়া এসব সামগ্রী কেনার জন্য মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন।

মেলার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ হল শিশুদের জন্য নানা ধরনের খেলার উপকরণ। নাগরদোলা ও বিভিন্ন খেলনার কারণে মেলায় শিশুদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এ ছাড়া মেলায় হিন্দুধর্মাবলম্বীদের জন্য বিশেষভাবে ভোগ ও বলির পাঁঠার মাংস বিতরণের ব্যবস্থা থাকে। প্রতি দিন ৫০-৬০টি পাঁঠা বলি দিয়ে তার মাংস বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়।

বুধপাড়া মেলার সঙ্গে সম্পর্কিত মন্দিরের পুরোহিত সুবোধ কুমার মজুমদার জানান, এখানে যে কালী প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে তা দৈর্ঘ্য ও উচ্চতায় দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রতিমা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এমনকি ভারত ও নেপাল থেকেও বহু দর্শনার্থী বুধপাড়ার এই মেলায় আসেন শুধু প্রতিমা দর্শনের উদ্দেশ্যে। বিশাল এই প্রতিমার সৌন্দর্য্য ও মহিমা বিদেশি দর্শনার্থীদেরও আকৃষ্ট করে।

বুধপাড়া গ্রামের একজন ষাটোর্ধ বাসিন্দা আজিজুর রহমান বিশ্বাস বলেন, মেলা উপলক্ষে তাঁর বাড়িসহ আশপাশের বাড়িতে অতিথিরা আগমন করেন। তাঁদের জন্য প্রস্তুত করা হয় বিশেষ খাবার, যেমন তিল-নারকেলের নাড়ু, তিলের খাজা ও বিভিন্ন মিষ্টান্ন। বুধপাড়ার বাসিন্দা বিচ্ছাদ আলীর বাড়িতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা অতিথিদের মেলা ঘুরতে দেখা যায়। মেলাকে কেন্দ্র করে এখানকার বিভিন্ন বাড়িতে আগতদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

বিকেল বেলার দিকে মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকে। মেলার রাস্তার ধারে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়েছে এবং নতুন দোকানগুলোও স্থাপিত হচ্ছে। এভাবে প্রায় পাঁচ শতাধিক বছরের ঐতিহ্য বহন করা বুধপাড়া কালীপূজার মেলা আজও এলাকাবাসীর জন্য অসাম্প্রদায়িক উৎসবের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে রয়ে গেছে।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

ইসলামী বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হতে হবে - জামায়াত

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার কুষ্টিয়ায় এক সম্মেলনে বলেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে আরেকটি বিপ্লব হবে, যা হবে ইসলামী বিপ্লব। তিনি দলের সদস্যদের এই বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। তিনি ফ্যাসিবাদী যুগের সমাপ্তি এবং এখনো চলমান অপরাধপ্রবণতা নিয়ে কথা বলেন। গোলাম পরওয়ার জানান, নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময়ে প্রস্তুত রয়েছে দলটি, এবং নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পরই নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করবে।
ইসলামী বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হতে হবে - জামায়াত

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার কুষ্টিয়ায় এক সম্মেলনে বলেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে আরেকটি বিপ্লব হবে, যা হবে ইসলামী বিপ্লব। তিনি দলের সদস্যদের এই বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। তিনি ফ্যাসিবাদী যুগের সমাপ্তি এবং এখনো চলমান অপরাধপ্রবণতা নিয়ে কথা বলেন। গোলাম পরওয়ার জানান, নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময়ে প্রস্তুত রয়েছে দলটি, এবং নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পরই নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করবে।

কুষ্টিয়া, ৮ নভেম্বর ২০২৪: জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে আরেকটি বিপ্লব ঘটবে, এবং সেই বিপ্লব হবে ইসলামী বিপ্লব। আজ শুক্রবার কুষ্টিয়ায় অনুষ্ঠিত জামায়াতের সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তিনি দলের সদস্যদের সেই ইসলামি বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেন।

কুষ্টিয়ার মোল্লাতেঘরিয়া এলাকায় অনুষ্ঠিত এই রুকন সম্মেলনে বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ গত ১৫ বছর ধরে যে ফ্যাসিবাদী শাসনের অধীনে ছিল, সেই সময়ে রাষ্ট্রের প্রায় সব প্রতিষ্ঠান অপরাধের দ্বারা কলুষিত হয়ে গিয়েছিল এবং শাসক শ্রেণির দুর্নীতি রাষ্ট্রের সব স্তরে ছড়িয়ে পড়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “মাত্র তিন মাস আগে এই ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটেছে, তবে এখনো রাষ্ট্র থেকে অপরাধ সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে মোকাবিলা করতে হবে।”

গোলাম পরওয়ার জানান, জামায়াত কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না, বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দলের অবস্থান সব সময় কঠোর থাকবে। তাঁর মতে, আল্লাহর বিধান ও নবীর আদর্শের ভিত্তিতে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই তাদের মূল লক্ষ্য, এবং সেই রাষ্ট্রে সকল ধর্ম, বর্ণ, ও জাতির কল্যাণ নিশ্চিত হবে।

আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত নির্বাচনের জন্য জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করা। তিনি যৌক্তিক সময়ের ব্যাখ্যায় জানান যে, এটি কোনো দ্রুত বা দেরিতে অনুষ্ঠিত হওয়া নয়, বরং এমন একটি সময়, যাতে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে। জামায়াত একটি নির্বাচনমুখী দল হিসেবে নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলেই দলটি তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করবে বলে জানান।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল হাশেম, জামায়াতের যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসাইন।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য সবাইকে একত্রে কাজ করার আহ্বান সেনাপ্রধানের

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সবাইকে একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে আয়োজিত পবিত্র কঠিন চীবর দান উৎসব ও জাতীয় বৌদ্ধধর্মীয় মহাসম্মেলনে তিনি বলেন, সব ধর্মের মানুষ মিলে দেশের উন্নয়নে কাজ করা প্রয়োজন। সেনাপ্রধান পার্বত্য জেলায় শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং সেখানকার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য যেকোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।
ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য সবাইকে একত্রে কাজ করার আহ্বান সেনাপ্রধানের

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সবাইকে একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে আয়োজিত পবিত্র কঠিন চীবর দান উৎসব ও জাতীয় বৌদ্ধধর্মীয় মহাসম্মেলনে তিনি বলেন, সব ধর্মের মানুষ মিলে দেশের উন্নয়নে কাজ করা প্রয়োজন। সেনাপ্রধান পার্বত্য জেলায় শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং সেখানকার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য যেকোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।

ঢাকা, ৮ নভেম্বর ২০২৪: বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ওপর গুরুত্বারোপ করে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ মিলে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। তিনি আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে অনুষ্ঠিত পবিত্র কঠিন চীবর দান উৎসব ও জাতীয় বৌদ্ধধর্মীয় মহাসম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সেনাপ্রধান বলেন, “বাংলাদেশে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসঙ্গে মিলে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। আমরা সবাই মিলে দেশ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করতে চাই।” অনুষ্ঠান চলাকালে আজানের সময় ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজান চলাকালীন এখানে সবাই কিছুক্ষণের জন্য থেমে যায়, এটি ধর্মীয় বোঝাপড়া ও সম্প্রীতির সুন্দর উদাহরণ।”

অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা অংশ নেন। সেনাপ্রধান এ উপলক্ষে জানান, “দুর্গাপূজায়ও আমরা নিরাপত্তা দিয়েছি এবং সুন্দরভাবে তা উদ্‌যাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও যেকোনো ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সহায়তা প্রদান করা হবে।”

পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি-সম্প্রীতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলে কিছুটা শান্তি ও সম্প্রীতির অভাব রয়েছে, যা আমরা পূরণ করতে চাই। পাহাড়ি ও বাঙালি উভয়ের মধ্যে সহাবস্থানের সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে চাই।” তিনি আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যকে সম্মান করে রক্ষা করা হবে। এটি দেশের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ এবং সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হবে।

সেনাপ্রধান পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা ও পর্যটনের সম্ভাবনাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে। পাশাপাশি এখানে স্কুল-কলেজ, মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর শিক্ষা ও উন্নয়নকে সহায়তা করা হবে, যাতে তাঁরা ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারেন।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিদেশি কূটনীতিকদের উদ্দেশে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, বাংলাদেশে শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য বিভিন্ন দেশের সহায়তা একটি উল্লেখযোগ্য অবদান। বিশেষ করে, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের বৌদ্ধমন্দির নির্মাণে আর্থিক সহায়তা করেছেন। এর ফলে দেশের বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা উপকৃত হচ্ছেন, যা একটি চমৎকার উদাহরণ হয়ে আছে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ন্যুয়েন মান কুঅং এবং অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন।

সেনাপ্রধানের বক্তব্যে ধর্মীয় সহাবস্থান ও শান্তি প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরে সব ধর্মের মানুষকে একসঙ্গে থাকার ও ভালোবাসার আহ্বান জানানো হয়।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা চায় যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সম্মান ও সুরক্ষা প্রদর্শন এবং যেকোনো হামলার ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট অবস্থান প্রকাশ করেছে। ওয়াশিংটনে গতকাল এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ বিষয়ে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা ও প্রত্যাশার কথা জানান।
বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা চায় যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সম্মান ও সুরক্ষা প্রদর্শন এবং যেকোনো হামলার ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট অবস্থান প্রকাশ করেছে। ওয়াশিংটনে গতকাল এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ বিষয়ে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা ও প্রত্যাশার কথা জানান।

যুক্তরাষ্ট্র, ৮ নভেম্বর ২০২৪: বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সম্মান এবং সুরক্ষা প্রদর্শনের প্রতি জোর দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া, যেকোনো ধরনের ধর্মীয় সহিংসতার ক্ষেত্রে দায়ীদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া দেখতে চায় দেশটি। ওয়াশিংটনে গতকাল বৃহস্পতিবার এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এসব কথা বলেন। এই বক্তব্য পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রশ্নোত্তর পর্বে ম্যাথিউ মিলার বলেন, “আগেও আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এবং বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেছি। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন দেখতে চাই। যেকোনো ধরনের হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী জবাবদিহির আওতায় আনা দেখতে চাই।” তার কথায় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় বিশেষ মনোযোগী এবং তারা আশা করছে বাংলাদেশের সরকার ধর্মীয় সহিংসতার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।

মুখপাত্র আরও বলেন, ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির অন্যতম অঙ্গ এবং এটি শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নয়, বরং বিশ্বের যেকোনো স্থানের ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

মানবাধিকার কমিশনের সকল সদস্যের পদত্যাগ

বাংলাদেশে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক সংকটের জেরে মানবাধিকার কমিশনের সকল সদস্য একযোগে পদত্যাগ করেছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির তথ্য জানানোয় কমিশনের সদস্যরা চাপে পড়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামালউদ্দিন আহমেদসহ সব সদস্য বৃহস্পতিবার একযোগে পদত্যাগ করেছেন। তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, তবে পদত্যাগের নির্দিষ্ট কারণ পরিষ্কার করেননি। কমিশনের মুখপাত্র ইউশা রহমান জানিয়েছেন, সকল সদস্য একসাথে পদত্যাগ করেছেন, তবে কী কারণে তাঁরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
মানবাধিকার কমিশনের সকল সদস্যের পদত্যাগ

বাংলাদেশে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক সংকটের জেরে মানবাধিকার কমিশনের সকল সদস্য একযোগে পদত্যাগ করেছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির তথ্য জানানোয় কমিশনের সদস্যরা চাপে পড়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামালউদ্দিন আহমেদসহ সব সদস্য বৃহস্পতিবার একযোগে পদত্যাগ করেছেন। তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, তবে পদত্যাগের নির্দিষ্ট কারণ পরিষ্কার করেননি। কমিশনের মুখপাত্র ইউশা রহমান জানিয়েছেন, সকল সদস্য একসাথে পদত্যাগ করেছেন, তবে কী কারণে তাঁরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।

ঢাকা, ৭ নভেম্বর ২০২৪: বাংলাদেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামালউদ্দিন আহমেদসহ সব সদস্য বৃহস্পতিবার একযোগে পদত্যাগ করেছেন। তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, তবে পদত্যাগের নির্দিষ্ট কারণ পরিষ্কার করেননি। কমিশনের মুখপাত্র ইউশা রহমান জানিয়েছেন, সকল সদস্য একসাথে পদত্যাগ করেছেন, তবে কী কারণে তাঁরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।

২০২২ সালে তত্কালীন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদ কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত এই সদস্যরা সম্প্রতি এক মাসিক রিপোর্টে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অপরাধ প্রবণতার বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন। রিপোর্টে গণপিটুনি, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজনৈতিক কারণে হেনস্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের ওপর আক্রমণের ঘটনা বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

বিশ্লেষকদের ধারণা, এই রিপোর্টের কারণে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা অন্তর্বর্তী সরকারের চাপের মুখে পড়েছেন। চলমান ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর মাধ্যমে বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যক্তিদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই আন্দোলনের কারণে কিছু নাট্য অনুষ্ঠান বন্ধ হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী দল জাতীয় পার্টির কার্যালয়েও আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

সংখ্যালঘুদের শঙ্কা দূরীকরণে অবিলম্বে পদক্ষেপের আহ্বান

বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয় ও শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ (বিডিএমডব্লিউ) এবং হিউম্যান রাইটস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ (এইচআরএবি)। দুই সংগঠনই সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানায়। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অবিলম্বে পরিস্থিতি শান্ত করতে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান।
সংখ্যালঘুদের শঙ্কা দূরীকরণে অবিলম্বে পদক্ষেপের আহ্বান

বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয় ও শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ (বিডিএমডব্লিউ) এবং হিউম্যান রাইটস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ (এইচআরএবি)। দুই সংগঠনই সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানায়। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অবিলম্বে পরিস্থিতি শান্ত করতে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান।

ঢাকা, ৭ নভেম্বর ২০২৪: সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার কারণে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ (বিডিএমডব্লিউ) এবং হিউম্যান রাইটস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ (এইচআরএবি)। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত “৩৬ জুলাই–২০২৪ বিপ্লবের সুফল সবার জন্য এবং সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার সুরক্ষায় দরকার রাজনৈতিক সমঝোতা” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন দুই সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি রবীন্দ্র ঘোষ বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর থেকে সহিংস ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সংখ্যালঘুদের মধ্যে শঙ্কা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমাবেশ এবং ফেসবুকে ইসকনবিরোধী পোস্টের পর চট্টগ্রামের হাজারী লেনে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ উদ্বেগ আরও বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতি অবিলম্বে নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

মাইনরিটি ওয়াচের মহাসচিব মানিক চন্দ্র সরকার বলেন, রাজনৈতিক কারণে যদি কোনো সংখ্যালঘু ব্যক্তি হামলার শিকার হন, তবে সেটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। অপরাধের বিচার হতে হবে আইনানুগ প্রক্রিয়ায়; সহিংসতা বা বাড়িঘর পোড়ানোর মতো ঘটনা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। সংখ্যালঘু নির্যাতনে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইটস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশের আহ্বায়ক মাহবুল হক বলেন, ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার বিষয়টি গভীর স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে। তিনি অভিযোগ করেন যে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের প্রতিশ্রুতি সবাই দিলেও বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তাই অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান মাহবুল হক।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান (ইরান), এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল ইসলাম। উপস্থিত নেতৃবৃন্দও সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য রাষ্ট্রের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

সভায় বক্তারা আরও বলেন, সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা ও তাদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, বরং এটি দেশের সব মানুষের নৈতিক দায়িত্ব।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মন্দিরে হামলায় চারজন আটক, মামলা হয়নি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার শিবতলায় দুর্গামাতা ঠাকুরাণি মন্দিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে সদর থানা–পুলিশ। শুক্রবার রাতে ইটপাটকেল নিক্ষেপে মন্দিরের তোরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা নিয়ে এলাকাবাসী চাঁপাইনবাবগঞ্জ–শিবগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায়। তবে আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং আজ দুপুর পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে মন্দিরে হামলায় চারজন আটক, মামলা হয়নি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার শিবতলায় দুর্গামাতা ঠাকুরাণি মন্দিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে সদর থানা–পুলিশ। শুক্রবার রাতে ইটপাটকেল নিক্ষেপে মন্দিরের তোরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা নিয়ে এলাকাবাসী চাঁপাইনবাবগঞ্জ–শিবগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায়। তবে আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং আজ দুপুর পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ৯ নভেম্বর ২০২৪: চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার শিবতলার চরজোতপ্রতাপ দুর্গামাতা ঠাকুরাণি মন্দিরে গতকাল শুক্রবার রাতে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে সদর থানা–পুলিশ। আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া জানান, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আজাইপুর ও পিটিআই বস্তি এলাকার মোজাহিদ, বাদল, রানা ও সালেককে আটক করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেনি।

মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অজিত দাস জানান, গত শুক্রবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দামোদরব্রতের অংশ হিসেবে মন্দিরে দীপদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে রাত ১০টার দিকে হঠাৎ মন্দিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়, যা মন্দিরের টাইলস বসানো তোরণে আঘাত হানে এবং ক্ষতিগ্রস্ত করে। মন্দিরে আক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়লে চরজোতপ্রতাপ, শিবতলা ও আশপাশের গ্রাম থেকে প্রায় দেড় হাজারের মতো নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ–শিবগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে।

সড়ক অবরোধ চলাকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এলাকাবাসীর দাবি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে হবে, না হলে কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। এই সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ডাবলু কুমার ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক ধনঞ্জয় চ্যাটার্জি, দুর্গামাতা ঠাকুরাণি মন্দির কমিটির সভাপতি বাসুদেব নন্দী, সাবেক সংসদ সদস্য ও জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান এবং সদর থানার ওসি এস এম জাকারিয়া।

স্থানীয় পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি ডাবলু কুমার ঘোষ জানান, এ ধরনের হামলা ধর্মীয় সম্প্রীতিকে ক্ষুণ্ন করে এবং এতে স্থানীয় সনাতন সম্প্রদায় আতঙ্কিত। প্রশাসনের আশ্বাসে তাঁরা আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন, তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ আশা করছেন।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

কিশোরগঞ্জে হিন্দু পরিবারে হামলা ও লুটপাটের আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জ জেলার ব্রাহ্মণকচুরী গ্রামে হিন্দু পরিবারে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ একটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনার পর মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা প্রশাসনের কাছে বিচার এবং নিজেদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন। তাঁরা জানান, গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
কিশোরগঞ্জে হিন্দু পরিবারে হামলা ও লুটপাটের আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জ জেলার ব্রাহ্মণকচুরী গ্রামে হিন্দু পরিবারে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ একটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনার পর মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা প্রশাসনের কাছে বিচার এবং নিজেদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন। তাঁরা জানান, গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

কিশোরগঞ্জ, ৬ নভেম্বর ২০২৪: কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার ব্রাহ্মণকচুরী গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে শহরের কালীবাড়ী মোড়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ এই মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভকারীরা একটি মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ব্রাহ্মণকচুরী গ্রামে গীতা রানী বর্মনের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। অভিযুক্তরা এই হামলায় বাড়ির দরজা, জানালা ভেঙে লুটপাট করে এবং বসতভিটা থেকে পরিবারটিকে বিতাড়িত করে। ভুক্তভোগী গীতা রানী বর্মনের পরিবার জানান, ঘটনার পর প্রাণভয়ে তাঁরা বাড়ি ছেড়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন এবং এখনও তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারেননি।

গীতা রানী বর্মন এ ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা ইদ্রিস মিয়াসহ মোট ১০ জনকে আসামি করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ জনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে। গীতা রানী বর্মন জানান, মামলা দায়েরের পরও আসামিদের গ্রেপ্তারে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের জন্য ফোনে হুমকি দিচ্ছে এবং ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতারাও তাঁদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, সংখ্যালঘু পরিবারের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইদ্রিস মিয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং দলীয়ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তবে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, আসামিরা পলাতক থাকায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আশ্বাস দেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুতই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হবে।

ভুক্তভোগী গীতা রানী বর্মনের অভিযোগ, মামলা দায়ের করার পর ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিরা তাদের বসতবাড়ির দরজা-জানালা পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে। এমনকি, তাঁরা ফোনে হুমকি দিচ্ছে এবং বিদেশে থাকা তাঁর ছেলেকে মামলার আসামি হিসেবে জড়ানোর চেষ্টা করছে। হিন্দু ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা ও কালীপূজায় তাঁরা নিরাপত্তার অভাবে নিজের বাড়িতে থাকতে পারেননি বলে কষ্টের কথা জানান গীতা রানী। তিনি সরকারের কাছে তাঁদের নিরাপত্তা এবং নিজ ভিটায় ফিরে যাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বক্তারা সারা দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সংঘটিত সব হামলার সুষ্ঠু বিচার এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা হুঁশিয়ারি দেন, প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে তাঁরা আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নির্যাতন ও নিপীড়ন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভুক্তভোগী পরিবারটির সদস্যরা জানান, তাঁরা নিজ ভিটায় শান্তিপূর্ণভাবে ফিরে গিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে চান।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

চট্টগ্রামের সহিংসতায় সংখ্যালঘু সুরক্ষা করতে বলল ভারত

চট্টগ্রামের হাজারি গলিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বলল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, হিংসা ছড়িয়ে সংখ্যালঘুদের ব্যবসা ও সম্পত্তির ক্ষতি করা হচ্ছে। পুলিশ ও সেনা অভিযানে প্রায় ৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা আদালতে হাজির হওয়ার সময় শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছে। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)
চট্টগ্রামের সহিংসতায় সংখ্যালঘু সুরক্ষা করতে বলল ভারত

চট্টগ্রামের হাজারি গলিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বলল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, হিংসা ছড়িয়ে সংখ্যালঘুদের ব্যবসা ও সম্পত্তির ক্ষতি করা হচ্ছে। পুলিশ ও সেনা অভিযানে প্রায় ৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা আদালতে হাজির হওয়ার সময় শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছে। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

চট্টগ্রাম, ৮ নভেম্বর ২০২৪: চট্টগ্রামের হাজারি গলিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা বন্ধে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, সম্প্রতি চট্টগ্রামের হাজারি গলিতে একটি সামাজিক মাধ্যম পোস্টকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের দোকানপাট লুটসহ বিভিন্ন হিংসাত্মক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মন্ত্রকের তরফ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।

মঙ্গলবার একটি ফেসবুক পোস্টে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)-এর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে স্থানীয় সংখ্যালঘুদের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ঘটনার সূত্রপাত ওসমান আলি নামে এক ব্যবসায়ীর ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে, যা সংখ্যালঘুদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিবাদ সৃষ্টি করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে জনতার সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ জানায়, সংঘর্ষের সময় কিছু উগ্র ব্যক্তি অলঙ্কারের কাজে ব্যবহৃত অ্যাসিড যৌথ বাহিনীর সদস্যদের দিকে নিক্ষেপ করে, যার ফলে কিছু পুলিশ ও সেনা সদস্য আহত হন।

সহিংসতার জবাবে যৌথ বাহিনী বড় আকারে অভিযান চালিয়ে ৮০ জনকে আটক করে, যাদের মধ্যে ৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয় এবং বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা ৫৩ জন যুবকের মধ্যে অনেকেই মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় আইনজীবীদের দাবি, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অনেক নাবালকও রয়েছে, যাদের বয়স বড় দেখিয়ে মামলা করা হয়েছে। আদালতে হাজির হওয়া ৫৩ জনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আইনজীবীরা আরও অভিযোগ করেন, আটককৃতদের চোখ-মুখ বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং এসময় তাদের সাম্প্রদায়িক গালাগালিও দেওয়া হয়েছে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যবসা ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র জয়সওয়াল বলেন, “আমরা আশা করি বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এবং চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

চট্টগ্রামের এই ঘটনা ছাড়াও ঢাকার আদালতে বৃহস্পতিবার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। প্রাক্তন মন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন আমুকে একটি খুনের মামলায় আদালতে তোলা হয়। আদালতে সরকারি কৌঁসুলি আমুর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাঠ করেন এবং ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানান। আমুর আইনজীবী স্বপন রায়চৌধুরী সওয়াল শুরু করলে আদালতে উপস্থিত বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। স্বপন রায়কে আদালত কক্ষের বাইরে টেনে নিয়ে মারধর করা হয়। বিচারক আমুকে নিজেই সওয়াল করতে বলেন। এ সময় আমু বলেন, “বাংলাদেশে এখন এমন এক ভীতিকর পরিস্থিতি চলছে যে কথা বলারও উপায় নেই।” এরপর বিচারক তাঁকে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান।

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতায় বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

সনাতন জাগরণ মঞ্চের ১৫ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষায় আন্দোলনরত সনাতন জাগরণ মঞ্চ তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি ১৫ দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে। সংগঠনটির মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ প্রভু জানান, সাম্প্রতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসনের কিছু ব্যক্তি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আন্দোলনকে বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপন করছে। সরকারের অনুরোধে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্বাসে সনাতন জাগরণ মঞ্চ সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত করেছে।
সনাতন জাগরণ মঞ্চের ১৫ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষায় আন্দোলনরত সনাতন জাগরণ মঞ্চ তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি ১৫ দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে। সংগঠনটির মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ প্রভু জানান, সাম্প্রতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসনের কিছু ব্যক্তি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আন্দোলনকে বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপন করছে। সরকারের অনুরোধে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্বাসে সনাতন জাগরণ মঞ্চ সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত করেছে।

চট্টগ্রাম, ৮ নভেম্বর ২০২৪: বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় সক্রিয় সনাতন জাগরণ মঞ্চ তাদের চলমান আন্দোলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি ১৫ দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে। বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ প্রভু এই স্থগিতের ঘোষণা দেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করে চিন্ময় প্রভু বলেন, সাম্প্রতিক সহিংসতামূলক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসনের কিছু সদস্য তাদের আন্দোলনকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।

চিন্ময় প্রভু অভিযোগ করেন, চট্টগ্রামের হাজারী লেনের সাম্প্রতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু প্রতিক্রিয়াশীল চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এ ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করে এবং দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য আপাতত আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। চিন্ময় প্রভু আরও বলেন, “সরকার আমাদের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছে। এ ছাড়া তারা আমাদের দাবিগুলো বিবেচনার বিষয়ে আন্তরিকতা দেখিয়েছে এবং কিছু সময় চেয়েছে। তাই আমরা এই বিষয়টি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছি।”

এছাড়া, চিন্ময় প্রভু দাবি করেন, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সনাতন জাগরণ মঞ্চের আট দফা দাবি এবং ১৯ জন সদস্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। এই সমর্থনকে বিবেচনায় নিয়ে এবং সরকারের অনুরোধকে সম্মান জানিয়ে সনাতন জাগরণ মঞ্চ সাময়িকভাবে তাদের আন্দোলন স্থগিত রেখেছে।

সনাতন জাগরণ মঞ্চের আত্মপ্রকাশ ঘটে গত ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর। এই মঞ্চটি হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন এবং মঠ-মন্দিরে হামলার বিচারসহ আট দফা দাবিতে আন্দোলন করছে। গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি মাঠে মঞ্চটি বড় সমাবেশের আয়োজন করে। তারা দেশের আটটি বিভাগেও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা করে, যেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা এবং অধিকার রক্ষার আহ্বান জানানো হয়।

সনাতন জাগরণ মঞ্চের দাবি ছিল, দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যেকোনো ধরনের নির্যাতন-নিপীড়নের বিচার এবং মঠ-মন্দিরে হামলার ঘটনায় অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। আট দফা দাবি মঞ্চের মধ্যে আরও রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, এবং তাদের সুরক্ষার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ।

মঞ্চের এই আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্তে অনেকেই আশাবাদী, কারণ সরকারের এই বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

ইসকনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে নেতৃবৃন্দের সংবাদ সম্মেলন

চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনায় ইসকন বাংলাদেশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছে সংগঠনটির নেতারা। শুক্রবার রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন আশ্রমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী এই তথ্য দেন। ইসকন নেতৃবৃন্দ জানান, তারা একটি অরাজনৈতিক, শান্তিপূর্ণ সংগঠন এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মানবকল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সহিংসতার ঘটনায় অন্য কারো সম্পৃক্ততা থাকতে পারে, তবে তা ইসকনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের অংশ নয়।
ইসকনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে নেতৃবৃন্দের সংবাদ সম্মেলন

চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনায় ইসকন বাংলাদেশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছে সংগঠনটির নেতারা। শুক্রবার রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন আশ্রমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী এই তথ্য দেন। ইসকন নেতৃবৃন্দ জানান, তারা একটি অরাজনৈতিক, শান্তিপূর্ণ সংগঠন এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মানবকল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সহিংসতার ঘটনায় অন্য কারো সম্পৃক্ততা থাকতে পারে, তবে তা ইসকনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের অংশ নয়।

ঢাকা, ৮ নভেম্বর ২০২৪: চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানাধীন হাজারী গলির সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় ইসকন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আজ রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন আশ্রমে এক সংবাদ সম্মেলন করেছে ইসকন বাংলাদেশ। ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী জানান, সহিংসতার এ ঘটনায় ইসকনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, এবং এ ধরনের অপপ্রচার ইসকনের ধর্মীয় ও সামাজিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে ইসকন নেতারা বলেন, “হাজারী গলির সহিংসতা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, যা সমাজের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। ইসকন একটি অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সংগঠন, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্মীয় সহনশীলতায় বিশ্বাসী।” চারু চন্দ্র দাস আরও বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এই ঘটনার সঙ্গে ইসকনের কোনো সম্পর্ক নেই। ইসকন বাংলাদেশকে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিরোধে জড়িয়ে একটি ভুল ধারণা তৈরি করার চেষ্টা চলছে, যা আমরা তীব্রভাবে নিন্দা জানাই।”

ইসকনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চট্টগ্রামের প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌরদাস, পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ও স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাসকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ইসকনের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ইসকনের নেতৃবৃন্দ স্পষ্টভাবে বলেন, “তাদের দ্বারা সংঘটিত কোনো কার্যক্রমই ইসকনের কার্যক্রম নয়।”

ইসকন বাংলাদেশের সভাপতি সত্য রঞ্জন বাড়ৈ বলেন, “ইসকন বাংলাদেশে সহনশীলতা, শান্তি এবং মানবকল্যাণে অবিচলভাবে কাজ করছে। সাম্প্রতিক ঘটনায় ইসকনকে রাজনৈতিক বা সামাজিক বিরোধের অংশ হিসেবে জড়িয়ে দেখানো অন্যায়।”

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার এক ব্যবসায়ী ওসমান আলী ইসকনবিরোধী একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করলে চট্টগ্রামের হাজারী গলি এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। কোতোয়ালি থানার এসআই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ এনে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ইসকনের নির্বাহী কমিটির সদস্য বিমলা প্রসাদ দাস ও দ্বিজমণি গৌরাঙ্গ দাসসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

তারিখ ০৯.১১.২০২৪

ভারত-বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের ভার্চুয়াল বৈঠক

বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকার পতনের তিন মাস পর, ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদি বুধবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়ালভাবে আলোচনা করেন। দুই সেনাপ্রধানের এই আলোচনার মূল বিষয় ছিল দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যু। এই বৈঠকটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে, কারণ বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং সংখ্যালঘুদের উপর হামলার রিপোর্টের প্রেক্ষাপটে এটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের ভার্চুয়াল বৈঠক

বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকার পতনের তিন মাস পর, ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদি বুধবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়ালভাবে আলোচনা করেন। দুই সেনাপ্রধানের এই আলোচনার মূল বিষয় ছিল দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যু। এই বৈঠকটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে, কারণ বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং সংখ্যালঘুদের উপর হামলার রিপোর্টের প্রেক্ষাপটে এটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঢাকা, ৬ নভেম্বর: ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদি বুধবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। তিন মাস আগে রাজনৈতিক অস্থিরতার পর শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর এই প্রথম দুই দেশের সেনাপ্রধানের মধ্যে এই ধরনের আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, “ভার্চুয়াল টেলি কলের মাধ্যমে জেনারেল দ্বিবেদি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে আলোচনা করেন। দুই সেনাপ্রধান দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় করেছেন।”

এই বৈঠকটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে, কারণ বাংলাদেশে বর্তমানে চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তন ও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে এবং তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, পাকিস্তান ও চীন তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করতে পারে বাংলাদেশে। এ পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশেই প্রতিরক্ষা সম্পর্ক মজবুত হয়েছে এবং ঐতিহাসিকভাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে, গত এক দশকে শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে উভয় দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে।

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ভারতের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন এবং দুদেশের মধ্যে নিয়মিত সফর, যৌথ প্রশিক্ষণ এবং বাংলাদেশকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে, যখন বাংলাদেশ রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং সেনাবাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, তখন দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সামরিক যোগাযোগ বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার রিপোর্ট সামনে এসেছে। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে আশ্বস্ত করেছে যে, তারা সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৪,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যা বিশেষভাবে ঔষধ, গবাদি পশু, অস্ত্র এবং অবৈধ অভিবাসনের জন্য প্রসিদ্ধ। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবস্থা বাড়ানোর কারণে ভারতের জন্য সীমান্তে এই ধরনের অপরাধের বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এই পরিস্থিতিতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

এছাড়া, ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে দ্বিবার্ষিক সভা, যা এই মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, তা এখন স্থগিত হয়ে গেছে। এই সভাগুলি দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক উদ্বেগ ও সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধের বিষয়গুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের সেনাবাহিনী নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার আশা প্রকাশ করেছেন।

তারিখ ০৭.১১.২০২৪

সংখ্যালঘু অধিকার: বিচারহীনতার শিকার, অবহেলিত প্রতিনিধি

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংখ্যালঘু অন্তর্ভুক্তি ও বৈষম্য নিয়ে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় সংখ্যালঘু নেতারা বৈষম্য ও বিচারহীনতার বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অভিযোগ করেন যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এখনও রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের শিকার, এবং বর্তমান সরকারও তাদের দাবির প্রতি যথাযথ মনোযোগ দিচ্ছে না। বক্তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারের বিষয়ে একটি শক্তিশালী অবস্থানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং বলেন, তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় সংসদে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন প্রয়োজন। সংখ্যালঘু নেতারা দেশের ছাত্র সমাজকে এই বৈষম্য দূরীকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
সংখ্যালঘু অধিকার: বিচারহীনতার শিকার, অবহেলিত প্রতিনিধি

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংখ্যালঘু অন্তর্ভুক্তি ও বৈষম্য নিয়ে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় সংখ্যালঘু নেতারা বৈষম্য ও বিচারহীনতার বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অভিযোগ করেন যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এখনও রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের শিকার, এবং বর্তমান সরকারও তাদের দাবির প্রতি যথাযথ মনোযোগ দিচ্ছে না। বক্তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারের বিষয়ে একটি শক্তিশালী অবস্থানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং বলেন, তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় সংসদে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন প্রয়োজন। সংখ্যালঘু নেতারা দেশের ছাত্র সমাজকে এই বৈষম্য দূরীকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

ঢাকা, ৫ নভেম্বর: গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বারবার বৈষম্য, অবহেলা এবং বিচারহীনতার শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিভিন্ন সংখ্যালঘু নেতারা। বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে “সংখ্যালঘু অন্তর্ভুক্তি প্রশ্ন: সংকট ও সমাধান” শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এ কথা বলেন। বক্তারা উল্লেখ করেন যে, সরকার বিভিন্ন কমিশন গঠন করলেও তাতে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বক্তাদের দাবি, এমন বৈষম্যমূলক ব্যবস্থায় সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত রাখা অসম্ভব। রাষ্ট্র যদি সাম্প্রদায়িক থাকে, তাহলে সংখ্যালঘুদের অধিকার কখনও পূর্ণ হতে পারে না। এজন্য সংবিধান থেকেই বৈষম্য দূর করতে হবে বলে তারা মত প্রকাশ করেন।

আলোচনায় অংশ নেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সভাপতি বিজন কান্তি সরকার, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক এবং আরও অনেকে। তারা দেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি ও সংখ্যালঘুদের অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আহ্বান জানান।

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, “রাষ্ট্রধর্ম ও ধর্মনিরপেক্ষতা একসাথে চলতে পারে না। বিগত তিনটি নির্বাচনে সরকার সংখ্যালঘুদের প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হয়নি। বর্তমান সরকারের প্রতারণামূলক আচরণের কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় প্রতিনিয়ত অবহেলিত হচ্ছে।”

বিজন কান্তি সরকার বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের পর আমাদের ছাত্র সমাজের ওপর বড় প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসে আমরা সংখ্যালঘুদের প্রতি তেমন কোনো সহযোগিতা দেখিনি। আমরা চাই, বর্তমান ছাত্র সমাজ সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে উদ্যোগী হবে।”

গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক সংখ্যালঘুদের জন্য সংসদে ধর্মভিত্তিক সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের দাবী জানান। তিনি বলেন, “সংখ্যালঘুদের অধিকার আদায়ে ধর্মভিত্তিক প্রতিনিধি থাকা প্রয়োজন। তাহলে সংখ্যালঘুদের প্রকৃত কণ্ঠস্বর সংসদে প্রতিফলিত হবে।”

ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “আওয়ামী লীগ বরাবরই সংখ্যালঘুদের নিয়ে রাজনৈতিক ব্যবসা করে আসছে। সরকার সংখ্যালঘুদের জন্য একটি বিশেষ কমিশন গঠনের দাবী জানিয়েছেন যাতে সংখ্যালঘুদের সমস্যাগুলি যথাযথভাবে সমাধান করা যায়।”

সুনন্দ প্রিয় ভিক্ষু বলেন, “দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অবস্থা দেখে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বোঝা যায়। সংখ্যালঘুরা যদি ভালো থাকে, তাহলে দেশের অবস্থাও ভালো হবে। কিন্তু বর্তমানে সংখ্যালঘুরা ভালো নেই। তাদের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার প্রয়োজন।”

মার্টিন অধিকারী বলেন, “দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আরও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত। তাদের জন্য পাঠ্যবইয়ে সংখ্যালঘুদের অধিকার অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সংখ্যালঘুদের গুরুত্ব বুঝতে পারে।”

এই আলোচনায় বক্তারা সমস্বরে বলেন যে, দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিচারহীনতার শিকার হচ্ছে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতার শিকার হচ্ছে।

তারিখ ০৫.১১.২০২৪

সংখ্যালঘুদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বাজেট বৈষম্যের অভিযোগ

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ। তাদের দাবি, জনসংখ্যার অনুপাত অনুযায়ী সংখ্যালঘুদের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই, যা তাদের প্রতি অবজ্ঞা ও অবহেলার বহিঃপ্রকাশ। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়। এছাড়াও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নয়নে পর্যাপ্ত বরাদ্দের মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সংখ্যালঘুদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বাজেট বৈষম্যের অভিযোগ

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ। তাদের দাবি, জনসংখ্যার অনুপাত অনুযায়ী সংখ্যালঘুদের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই, যা তাদের প্রতি অবজ্ঞা ও অবহেলার বহিঃপ্রকাশ। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়। এছাড়াও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নয়নে পর্যাপ্ত বরাদ্দের মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

ঢাকা, ৬ নভেম্বর: ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ। সংগঠনটি বলছে, মন্ত্রণালয়ের মোট বাজেটের ৯৭.৮৭ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ধর্মীয় সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের জন্য, যেখানে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য বরাদ্দ মাত্র ২.১৩ শতাংশ। এই বৈষম্যের কারণে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ রক্ষায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা প্রয়োজন বলে দাবি করেছেন তারা।

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত এ বিষয়ে বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ২৭৮.৬০ কোটি টাকার মোট পরিচালন ব্যয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬ কোটি ২ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের মাত্র ২.২৫ শতাংশ। এই বাজেট বরাদ্দে সংখ্যালঘুদের প্রতি সীমাহীন অবজ্ঞা ও বৈষম্যের ইঙ্গিত পাওয়া যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও উন্নয়নের জন্য ঐক্য পরিষদ একটি পৃথক সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে। তাদের মতে, একটি সমতা ভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যাতে প্রতিটি সম্প্রদায়ের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সরকার যদি সংখ্যালঘুদের জন্য প্রতিশ্রুত সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বৈষম্য বিলোপ আইন বাস্তবায়ন করে, তাহলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যের অবসান ঘটানো সম্ভব হবে। এ ছাড়া সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় সরকারি দল যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা বাস্তবায়নের দাবিও জানান রানা দাশগুপ্ত।

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সকল রাজনৈতিক দলেরই বাহাত্তরের সংবিধান মানতে হবে এবং ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তারিখ ০৭.১১.২০২৪

সীতাকুণ্ড শঙ্কর মঠে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান, সবাইকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড শঙ্কর মঠ ও মিশনে ব্রহ্মবিদ পরমহংস শ্রীশ্রীমৎ স্বামী স্বরূপানন্দ গিরি মহারাজের ১৫৩তম ও গীতাহিমাদ্রী পরমহংস শ্রীশ্রীমৎ স্বামী জ্যোতিশানন্দ গিরি মহারাজের ১১৬তম স্মরণে এবং শ্রীশ্রীবিশ্বনাথ মন্দিরের ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রুদ্রাভিষেক ও অখণ্ড গীতাপাঠের ৪৪তম আয়োজন শুরু হচ্ছে। ১৫ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলবে, যেখানে প্রতিদিন ধর্মীয় অনুষ্ঠান, প্রার্থনা, কীর্তন ও গীতাপাঠের আয়োজন থাকবে। পাশাপাশি আগামী ২৬ নভেম্বর পালিত হবে পরমহংস শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজের ৬৯তম আবির্ভাব দিবস। শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ উৎসব উপলক্ষে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
সীতাকুণ্ড শঙ্কর মঠে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান, সবাইকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড শঙ্কর মঠ ও মিশনে ব্রহ্মবিদ পরমহংস শ্রীশ্রীমৎ স্বামী স্বরূপানন্দ গিরি মহারাজের ১৫৩তম ও গীতাহিমাদ্রী পরমহংস শ্রীশ্রীমৎ স্বামী জ্যোতিশানন্দ গিরি মহারাজের ১১৬তম স্মরণে এবং শ্রীশ্রীবিশ্বনাথ মন্দিরের ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রুদ্রাভিষেক ও অখণ্ড গীতাপাঠের ৪৪তম আয়োজন শুরু হচ্ছে। ১৫ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলবে, যেখানে প্রতিদিন ধর্মীয় অনুষ্ঠান, প্রার্থনা, কীর্তন ও গীতাপাঠের আয়োজন থাকবে। পাশাপাশি আগামী ২৬ নভেম্বর পালিত হবে পরমহংস শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজের ৬৯তম আবির্ভাব দিবস। শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ উৎসব উপলক্ষে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম, ৬ নভেম্বর: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড শঙ্কর মঠ ও মিশনে ব্রহ্মবিদ পরমহংস শ্রীশ্রীমৎ স্বামী স্বরূপানন্দ গিরি মহারাজের ১৫৩তম এবং গীতাহিমাদ্রী পরমহংস শ্রীশ্রীমৎ স্বামী জ্যোতিশানন্দ গিরি মহারাজের ১১৬তম স্মরণে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে। শ্রীশ্রীবিশ্বনাথ মন্দিরের ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই রুদ্রাভিষেক ও অখণ্ড গীতাপাঠের ৪৪তম আসর আয়োজন করা হয়েছে, যা আগামী ১৫ নভেম্বর শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে।

অনুষ্ঠানে প্রতিদিন রয়েছে মঙ্গলারতি, গুরু বন্দনা, শ্রীশ্রী চন্ডীপাঠ, হরি ওঁ কীর্তন, শ্রীশ্রীবিশ্বশান্তি গীতাযজ্ঞ, অখণ্ড প্রদীপ প্রজ্বলন, গৈরিক ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং সনাতন ধর্ম মহাসম্মেলন। প্রতিদিন দুপুর ও রাতে প্রসাদ বিতরণ করা হবে এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন রয়েছে।

১৫ নভেম্বর বিকেল ৪টায় জাতীয় ও গৈরিক পতাকা উত্তোলন, বেলুন উড্ডয়ন এবং শান্তির প্রতীক কপোত অবমুক্তকরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করবেন মঠের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রীয় উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ। মঠ প্রাঙ্গণটি সাজানো হয়েছে ধর্মীয় আবহে, যেখানে সনাতন ধর্মের অনুসারীদের মিলনমেলায় পরিণত হবে।

এছাড়া আগামী ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার পালিত হবে পরমহংস শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজের ৬৯তম শুভ আবির্ভাব দিবস। এ উপলক্ষে আরও বিশেষ আয়োজন এবং ভক্ত-শিষ্যদের সমাগম প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় উৎসব উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল ভক্ত-অনুরাগীদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

তারিখ ০৭.১১.২০২৪

ভারতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির সহযোগিতা চাইল বিএসএফ

ভারতে অবৈধভাবে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ রোধে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সহযোগিতা চেয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এ ধরনের অনুরোধ আসার পর, দুই দেশের সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার ও সাম্প্রতিক উন্নয়নের আলোচনায় একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত বিশেষ কমিটি বাংলাদেশি হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে। গত কয়েক মাসে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বৈঠক ও সমন্বিত টহল কার্যক্রমও বাড়ানো হয়েছে।
ভারতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির সহযোগিতা চাইল বিএসএফ

ভারতে অবৈধভাবে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ রোধে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সহযোগিতা চেয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এ ধরনের অনুরোধ আসার পর, দুই দেশের সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার ও সাম্প্রতিক উন্নয়নের আলোচনায় একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত বিশেষ কমিটি বাংলাদেশি হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে। গত কয়েক মাসে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বৈঠক ও সমন্বিত টহল কার্যক্রমও বাড়ানো হয়েছে।

ঢাকা, ৬ নভেম্বর: ভারতের সীমান্তে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিকে বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এই অনুরোধটি শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, যখন বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলছে, এমন একটি সময়ে এসেছে।

ভারতের একাধিক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুক্রবার বিএসএফ জানিয়েছে যে তারা বাংলাদেশ-ভারত চার হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

বিএসএফ আরও জানিয়েছে যে আগস্ট মাস থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা দুই দেশের সীমান্তের বিভিন্ন স্পর্শকাতর পয়েন্টে ৭২২ দফায় বৈঠক করেছেন। এছাড়াও, এই সময়ে ১,৩৬৭টি সমন্বিত টহল পরিচালনা করা হয়েছে।

কলকাতায় অনুষ্ঠিত ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিযুক্ত একটি বিশেষ কমিটির বৈঠকের পর বিএসএফ জানিয়েছে যে এই টহলগুলো উভয় দেশের সীমান্ত অঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হয়েছে। বিএসএফ-এর বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “এসব সীমান্ত বৈঠকে বাংলাদেশি নাগরিকদের অবৈধভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি কর্মকর্তাদের বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।”

বিজিবি তাদের পক্ষ থেকে ভারতীয় নাগরিক এবং বাংলাদেশে বসবাসরত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে দুই বাহিনীর কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রাখছেন এবং বিভিন্ন অপারেশনাল তথ্য আদান-প্রদান করছেন।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছে, যা বাংলাদেশে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিক এবং হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে।

এই কমিটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় বিশেষ মনোযোগ দেবে এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

তারিখ ০৭.১১.২০২৪

ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেকেন্ড লেডি’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় উদযাপিত হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়িয়ে ভারতের একটি গ্রামে। কারণ, ট্রাম্পের সহ-প্রার্থী এবং হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের স্ত্রী উষা চিলুকুরি ভ্যান্সের পূর্বপুরুষের বাড়ি অন্ধ্র প্রদেশের ভাদলুরু গ্রামে। গ্রামের মানুষজন তাদের মন্দিরে প্রার্থনা করে উষার সফলতার জন্য শুভকামনা জানান। গ্রামের বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন যে উষা গ্রামের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন এবং তিনি তাদের গর্বের প্রতীক।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেকেন্ড লেডি’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় উদযাপিত হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়িয়ে ভারতের একটি গ্রামে। কারণ, ট্রাম্পের সহ-প্রার্থী এবং হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের স্ত্রী উষা চিলুকুরি ভ্যান্সের পূর্বপুরুষের বাড়ি অন্ধ্র প্রদেশের ভাদলুরু গ্রামে। গ্রামের মানুষজন তাদের মন্দিরে প্রার্থনা করে উষার সফলতার জন্য শুভকামনা জানান। গ্রামের বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন যে উষা গ্রামের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন এবং তিনি তাদের গর্বের প্রতীক।

যুক্তরাষ্ট্র, ৬ নভেম্বর: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় নিয়ে যখন দেশজুড়ে রিপাবলিকান শিবিরে চলছে উচ্ছ্বাস, তার প্রভাব পড়েছে ভারতের এক নিভৃত গ্রামেও। কারণ ট্রাম্পের সহ-প্রার্থী এবং আগামী ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের স্ত্রী উষা চিলুকুরি ভ্যান্সের শিকড় এই গ্রামে। যুক্তরাষ্ট্রের সানদিয়েগোতে জন্মগ্রহণ করলেও তার পূর্বপুরুষদের বাড়ি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের ভাদলুরু গ্রামে।

৩৮ বছর বয়সী উষা ভ্যান্সের বাবা-মা ভারত থেকে অভিবাসী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। গ্রামটি হোয়াইট হাউস থেকে প্রায় ১৩ হাজার ৪৫০ কিলোমিটার দূরে হলেও, ট্রাম্প ও উষার এই রাজনৈতিক সফলতা গ্রামের মানুষদের গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। ভাদলুরু গ্রামের মন্দিরে গণেশ দেবতার সামনে প্রদীপ প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করেছেন গ্রামের মানুষরা। মন্দিরের পুরোহিত আপাজি বলেন, “আমরা আশা করি উষা তার শিকড়ের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে গ্রামের মঙ্গলার্থে কিছু করবেন, আর তা হলে দারুণ হবে।”

গ্রামের বাসিন্দা ৫৩ বছর বয়সী শ্রীনিভাসা রাজু বলেন, “আমরা অত্যন্ত খুশি। আমরা ট্রাম্পের বিজয়ে আনন্দিত এবং তাকে সমর্থন করি।”

৭০ বছর বয়সী আরেক বাসিন্দা ভেনকাটা রামানায় বলেন, “উষার জন্য আমরা গর্বিত, কারণ সে ভারতীয় বংশোদ্ভূত। আমরা আশা করি উষা তার গ্রামের উন্নতির জন্য কাজ করবেন।” রামানায় আরও বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের শাসন দেখেছি। তখন ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় ছিল। আমরা বিশ্বাস করি এই সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।”

ভাদলুরু গ্রামের মানুষদের জন্য উষা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেকেন্ড লেডি’ হতে যাচ্ছেন না, তিনি তাদের সংস্কৃতি ও গর্বের এক প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছেন। উষা ভ্যান্সের এই সাফল্য এবং তার পরিবারের শিকড়ের প্রতি এই গ্রামের আবেগ মিশ্রিত ভালোবাসা, তার শিকড়ের প্রতি দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই তারা এই আনন্দ উদযাপন করছেন।

তারিখ ০৭.১১.২০২৪

ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের তথ্য ভুল: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়েছিল। ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে এবং ট্রাম্প বিষয়টি সরেজমিনে বুঝতে সক্ষম হবেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা সঠিক তথ্য প্রদান করবেন এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।
ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের তথ্য ভুল: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়েছিল। ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে এবং ট্রাম্প বিষয়টি সরেজমিনে বুঝতে সক্ষম হবেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা সঠিক তথ্য প্রদান করবেন এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।

ঢাকা, ৬ নভেম্বর: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত কিছু ভুল তথ্য পৌঁছানো হয়েছিল। ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য জানান।

শফিকুল আলম বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হয়তো বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল। এখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রকৃত চিত্র বুঝতে সক্ষম হবেন।”

সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে অনেক ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। শফিকুল আলম জানান, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস রয়েছে, যারা সরাসরি বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এতে স্পষ্ট হবে যে দেশে আদৌ সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে কি না।

হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কাউন্সিলের একটি রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে শফিকুল আলম জানান, সেখানে ধর্মীয় কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়জন ব্যক্তির মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। তবে নেট্রা নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব মৃত্যুর পেছনে ধর্মীয় কারণ নয়, বরং ব্যক্তিগত শত্রুতা বা রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা আশা করি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা এ বিষয়ে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করবেন এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।”

এ সময় প্রাক্তন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং তার স্বামীর পাসপোর্ট পুনরায় ইস্যু করার বিষয়ে সরকার তদন্ত করছে বলে জানান প্রেস সচিব।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

তারিখ ০৭.১১.২০২৪

ট্রাম্পের বিজয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নির্বাচনী বিজয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উচ্ছ্বাসের ঢেউ উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত তাঁদের উল্লাসে বোঝা যায়, তাঁরা ট্রাম্পের বিজয়কে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন। তাঁদের বিশ্বাস, এই বিজয়ে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে এবং তাঁদের সুরক্ষার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো সমর্থন জানাবে। তবে এই পরিস্থিতিতেও সংখ্যালঘুরা পুরোপুরি নিরাপদ বোধ করছেন না। তাঁরা আশাবাদী, ট্রাম্প তাঁদের পাশে দাঁড়াবেন।
ট্রাম্পের বিজয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নির্বাচনী বিজয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উচ্ছ্বাসের ঢেউ উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত তাঁদের উল্লাসে বোঝা যায়, তাঁরা ট্রাম্পের বিজয়কে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন। তাঁদের বিশ্বাস, এই বিজয়ে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে এবং তাঁদের সুরক্ষার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো সমর্থন জানাবে। তবে এই পরিস্থিতিতেও সংখ্যালঘুরা পুরোপুরি নিরাপদ বোধ করছেন না। তাঁরা আশাবাদী, ট্রাম্প তাঁদের পাশে দাঁড়াবেন।

ঢাকা, ৭ নভেম্বর: ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নির্বাচনী বিজয় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলেছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁদের আনন্দ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ট্রাম্পের বিজয়ে তাঁরা আশাবাদী হয়েছেন। অনেকেই বিশ্বাস করেন, ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতিশীল ভূমিকা পালন করতে পারে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাঁরা ট্রাম্পের বিজয়ে নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র একটি শক্তিশালী মিত্র হিসেবে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারে।

বিগত বছরগুলিতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা ও নির্যাতনের ঘটনাগুলি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে, তবুও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সম্পূর্ণ নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন অনেকে। এ পরিস্থিতির মধ্যেই হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁদের অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে সংখ্যালঘুদের বিষয়ে করা মন্তব্য তাঁদের মনে আশা জাগিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র তাঁদের নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে।

নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য সম্প্রদায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন এবং তিনি তাঁদের সুরক্ষার জন্য কাজ করতে চান। তাঁর এই মন্তব্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। ট্রাম্পের বিজয় তাঁদের কাছে একটি সম্ভাব্য পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখা দিচ্ছে, যেখানে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাঁদের অধিকার সুরক্ষায় শক্তিধর দেশগুলোর সমর্থন থাকতে পারে।

এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা গেছে, অনেকেই ট্রাম্পের বিজয় উদযাপন করছেন এবং তাঁর নেতৃত্বে তাঁদের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন। তাঁদের মতে, একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র যদি তাঁদের সমর্থন করে, তবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা আরও বেশি সুরক্ষিত থাকতে পারবেন।

এ বিজয়ে নতুন আশা জেগেছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে, যেখানে তাঁরা ট্রাম্পের অধীনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় সহায়তা আশা করছেন।

তারিখ ০৭.১১.২০২৪

ট্রাম্পের জয়ে বাংলাদেশ অস্বস্তিতে পড়তে পারে

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনরাবর্তন বাংলাদেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ ও আমেরিকার সম্পর্ক নিয়ে কূটনৈতিক মহলে চলছে ব্যাপক চর্চা। দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, যিনি ট্রাম্পের সঙ্গে মধুর সম্পর্কের অভাবে কিছুটা চাপে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ইউনূস ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানালেও, অতীতে ট্রাম্প তাঁকে নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেছিলেন। এদিকে, সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন মোড়ে নিয়ে যেতে পারে। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)
ট্রাম্পের জয়ে বাংলাদেশ অস্বস্তিতে পড়তে পারে

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনরাবর্তন বাংলাদেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ ও আমেরিকার সম্পর্ক নিয়ে কূটনৈতিক মহলে চলছে ব্যাপক চর্চা। দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, যিনি ট্রাম্পের সঙ্গে মধুর সম্পর্কের অভাবে কিছুটা চাপে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ইউনূস ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানালেও, অতীতে ট্রাম্প তাঁকে নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেছিলেন। এদিকে, সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন মোড়ে নিয়ে যেতে পারে। (সূত্রঃ আনন্দবাজার)

ঢাকা, ৭ নভেম্বর: ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর এর প্রভাব নিয়ে কূটনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে উঠেছে। বাংলাদেশের দীর্ঘতম সীমান্ত ভাগ করে নেওয়া প্রতিবেশী দেশ ভারতের কাছেও এ ঘটনাটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেমোক্র্যাট-ঘনিষ্ঠ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর ট্রাম্পের ফিরে আসায় নতুন চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক সবসময়েই কণ্টকাকীর্ণ ছিল। ২০১৬ সালে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর, তাঁর সম্পর্কে বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন ইউনূস। এমনকি, ট্রাম্পও তাঁকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন। সেই সময় ওয়াশিংটনে ইউনূসের দল থেকে একটি প্রতিনিধি গিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে গেলে ট্রাম্প জানতে চান, “ঢাকার সেই মাইক্রোফাইন্যান্সের ব্যক্তি কোথায়? শুনেছি, তিনি আমাকে হারাতে চাঁদা দিয়েছিলেন।” স্পষ্ট ছিল, ট্রাম্প মনে করেছিলেন ইউনূস ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থন করেছিলেন।

সম্প্রতি মার্কিন নির্বাচনের ঠিক আগে ট্রাম্প তাঁর সমাজমাধ্যমে একটি মন্তব্য করে বলেন, “বাংলাদেশে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এবং সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে, তাঁদের রক্ষা করার জন্য আমার নেতৃত্বের প্রয়োজন।” এই বক্তব্যের পর কূটনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, আমেরিকার সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সমর্থন অর্জনের জন্যই এমন মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তবে, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ভবিষ্যতের কূটনৈতিক সম্পর্কের দিক নির্দেশ করছে।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারের রদবদল হয়েছে, এবং এই আন্দোলন নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের সংযোগ সম্পর্কে কূটনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। এ বছরের সেপ্টেম্বরে ইউনূস আমেরিকা সফরে গিয়ে ডেমোক্র্যাটদের সাথে দেখা করলেও কোনও রিপাবলিকান নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। তাছাড়া, ২০১৬ সালে ট্রাম্পের জয়ের পর ইউনূস প্যারিসের একটি বক্তৃতায় বলেন, ‘এই জয় সূর্য গ্রহণের মতো। কালো দিন আসছে।’

এদিকে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ট্রাম্পের জয়ের প্রতি অভিনন্দন জানানো হয়েছে। এক বিবৃতিতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা স্মৃতিচারণ করেন যে, অতীতে তাঁর বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছিল ট্রাম্পের সঙ্গে। শেখ হাসিনা আশাবাদী যে, ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।

বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা, সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের রিপোর্ট এবং ভারতীয় সীমানায় বেআইনি কর্মকাণ্ডের কারণে দেশটির পরিস্থিতি বেশ স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে। ইউনূস ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন যে, “বাংলাদেশ ও আমেরিকার পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।” তবে, কূটনীতিকদের মতে, এই বিবৃতির মাধ্যমে ইউনূস আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করার চেষ্টা করছেন, তবে ট্রাম্পের সঙ্গে অতীতের সংঘাতময় সম্পর্ককে পুরোপুরি মেরামত করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই গেছে।

আগামী দিনে ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমেরিকা ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

তারিখ ০৭.১১.২০২৪

চট্টগ্রামে সনাতন ধর্মালম্বীদের হয়রানি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছেঃ ডয়চে ভেলে

চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে এক ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ওসমান আলী নামে একজন ব্যবসায়ীর ফেসবুক পোস্টে ইসকন নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে মিয়া শপিং সেন্টারে তার দোকান ঘেরাও করেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। এই ঘটনায় হাজারী গলির ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যৌথ বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের দোকান এবং সিসি ক্যামেরা ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, যৌথ বাহিনী সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলছে, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। উল্লেখ্য, ইসকন বিরোধী বক্তব্য সম্প্রতি বেশ কিছু জায়গায় আলোচিত হচ্ছে এবং এটি নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে।(সংবাদসূত্রঃ ডয়চে ভেলে)
চট্টগ্রামে সনাতন ধর্মালম্বীদের হয়রানি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছেঃ ডয়চে ভেলে

চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে এক ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ওসমান আলী নামে একজন ব্যবসায়ীর ফেসবুক পোস্টে ইসকন নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে মিয়া শপিং সেন্টারে তার দোকান ঘেরাও করেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। এই ঘটনায় হাজারী গলির ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যৌথ বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের দোকান এবং সিসি ক্যামেরা ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, যৌথ বাহিনী সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলছে, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। উল্লেখ্য, ইসকন বিরোধী বক্তব্য সম্প্রতি বেশ কিছু জায়গায় আলোচিত হচ্ছে এবং এটি নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে।(সংবাদসূত্রঃ ডয়চে ভেলে)

চট্টগ্রাম, ৬ নভেম্বর: চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে এক ফেসবুক পোস্ট নিয়ে শুরু হওয়া উত্তেজনা থেকে বিক্ষুব্ধ সনাতন ধর্মাবলম্বী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার টেরিবাজার এলাকার মিয়া শপিং সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় যখন ইসকন নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ওসমান আলীকে একদল বিক্ষুব্ধ ব্যক্তি তার দোকান অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত জনতার সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে।

এদিকে পুলিশ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে, যেখানে সরকারি কাজে বাধা প্রদান, পুলিশের ওপর হামলা এবং এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই ইসকন অনুসারী এবং তাদের বিরুদ্ধে সরকারী কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই ঘটনায় হাজারী গলির ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যৌথ বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের দোকান এবং সিসি ক্যামেরা ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, যৌথ বাহিনী সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলছে, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “ইসকন এই ঘটনার সাথে কোনোভাবেই জড়িত নয়। আমরা চাই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।”

উল্লেখ্য, ইসকন বিরোধী বক্তব্য সম্প্রতি বেশ কিছু জায়গায় আলোচিত হচ্ছে এবং এটি নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তারিখ ০৬.১১.২০২৪

ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত এবং বাংলাদেশের উপর প্রভাব

ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করে আবারও হোয়াইট হাউজে ফিরতে চলেছেন। ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ট্রাম্পের এই জয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি এবং বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক এবং ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এবং বৈশ্বিক রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। তাঁর পূর্ববর্তী প্রশাসনের মতো, তিনি “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতিতে জোর দিতে পারেন, যা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার হওয়ায়, ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি এবং সুরক্ষাবাদী অবস্থান নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত এবং বাংলাদেশের উপর প্রভাব

ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করে আবারও হোয়াইট হাউজে ফিরতে চলেছেন। ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ট্রাম্পের এই জয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি এবং বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক এবং ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এবং বৈশ্বিক রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। তাঁর পূর্ববর্তী প্রশাসনের মতো, তিনি “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতিতে জোর দিতে পারেন, যা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার হওয়ায়, ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি এবং সুরক্ষাবাদী অবস্থান নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। (সূত্রঃ ডেইলিস্টার)

যুক্তরাষ্ট্র, ৬ নভেম্বর, ২০২৪: ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ট্রাম্পের এই জয় তাঁর রাজনৈতিক জীবনের একটি অসাধারণ প্রত্যাবর্তন। নির্বাচনের আগে তিনি অপরাধমূলক অভিযোগ, হত্যা প্রচেষ্টা এবং স্বৈরতন্ত্রের অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। তবে এসব প্রতিকূলতা কাটিয়ে তিনি আবারও হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করতে চলেছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এবং বৈশ্বিক রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। তাঁর পূর্ববর্তী প্রশাসনের মতো, তিনি “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতিতে জোর দিতে পারেন, যা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার হওয়ায়, ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি এবং সুরক্ষাবাদী অবস্থান নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে।

ট্রাম্পের জলবায়ু নীতিও বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের বিষয়। তাঁর আগের প্রশাসনের সময় প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার এবং বৈশ্বিক জলবায়ু উদ্যোগে কম সক্রিয়তা বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের জন্য উদ্বেগ তৈরি করেছিল। একইসঙ্গে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের দূরত্বও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সহায়তা পেতে বাধা তৈরি করতে পারে।

নির্বাচনের আগে ট্রাম্প বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর “বর্বর সহিংসতার” অভিযোগ করেছেন, যা অনেকে “অযথা ও ভিত্তিহীন” বলে মনে করেন। এটি নিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস ইতোমধ্যে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।

বিশ্বজুড়ে ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদ কীভাবে গঠনমূলক বা চ্যালেঞ্জমূলক প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে বাংলাদেশের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ সুরক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদ, এবং তাঁর নীতির প্রতিফলন বিশ্ব রাজনীতি ও বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

তারিখ: ১৭.১১.২০২৪

চট্টগ্রামে ইসকন নিয়ে উত্তেজনার জেরে আটক ৮২ জন, সনাতন ধর্মালম্বীদের হয়রানি

চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে ইসকন নিয়ে বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের জেরে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে ৮২ জনকে আটক করেছে। ইসকন সংগঠন নিয়ে ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এলাকাটি হিন্দু-অধ্যুষিত হওয়ায় উত্তেজনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তা বাহিনী মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত হাজারী গলি ও তার আশপাশের এলাকায় অভিযান চালায় এবং সন্দেহভাজন হিসেবে মোট ৮২ জনকে আটক করা হয়। যাদের বেশীরভাগ সনাতন ধর্মালম্বী। প্রশাসনের দুমুখো নীতি, মুসলিমদের বিরুদ্ধে নরম, হিন্দুদের বিরুদ্ধে গরম। ইসকন এটিকে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হিসেবে উল্লেখ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষার দাবি জানিয়েছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতির কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। (সূত্রঃ বিবিসি)
চট্টগ্রামে ইসকন নিয়ে উত্তেজনার জেরে আটক ৮২ জন, সনাতন ধর্মালম্বীদের হয়রানি

চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে ইসকন নিয়ে বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের জেরে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে ৮২ জনকে আটক করেছে। ইসকন সংগঠন নিয়ে ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এলাকাটি হিন্দু-অধ্যুষিত হওয়ায় উত্তেজনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তা বাহিনী মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত হাজারী গলি ও তার আশপাশের এলাকায় অভিযান চালায় এবং সন্দেহভাজন হিসেবে মোট ৮২ জনকে আটক করা হয়। যাদের বেশীরভাগ সনাতন ধর্মালম্বী। প্রশাসনের দুমুখো নীতি, মুসলিমদের বিরুদ্ধে নরম, হিন্দুদের বিরুদ্ধে গরম। ইসকন এটিকে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হিসেবে উল্লেখ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষার দাবি জানিয়েছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতির কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। (সূত্রঃ বিবিসি)

চট্টগ্রাম, ৬ নভেম্বর: চট্টগ্রাম নগরীর টেরিবাজার এলাকার হাজারী গলিতে ইসকন নিয়ে একটি বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের জেরে মঙ্গলবার রাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঐ এলাকায় থাকা প্রায় দেড়শ হিন্দু সম্প্রদায়ের জুয়েলারি ব্যবসায়ী এই পোস্ট নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং স্থানীয় একজন মুসলিম ব্যবসায়ীর দোকান ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে যৌথবাহিনী অভিযানে যায় এবং ঘটনাস্থল থেকে ৮২ জনকে আটক করে।

সংবাদ সম্মেলনে যৌথবাহিনীর মুখপাত্র লে. কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ জানান, অভিযানের সময় যৌথবাহিনীর ওপর এসিড, ইটপাটকেল ও কাঁচের বোতল ছোঁড়া হয়। এতে পাঁচজন সেনা সদস্য ও সাতজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যৌথবাহিনীকে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

photo1

হাজারী গলির স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মতে, ফেসবুকে পোস্ট করা ওই ব্যক্তি ইসকনকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যা হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। বিক্ষুব্ধ জনগণ দোকানের সামনে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানায় এবং তাদের দাবি ছিল, ধর্মীয় সংগঠন নিয়ে এ ধরনের অপমানমূলক মন্তব্য অগ্রহণযোগ্য।

অপরদিকে, ইসকন বাংলাদেশ এই ঘটনাকে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হিসেবে অভিহিত করেছে। সম্প্রতি ইসকন সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ইসকনের সদস্যরা ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মাহমুদুর রহমান ইসকনকে সাম্প্রদায়িক ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করায় এই ক্ষোভের সূত্রপাত।

ইসকন এক বিবৃতিতে জানায়, তারা একটি আন্তর্জাতিক অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন, যার মূল উদ্দেশ্য শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা। সম্প্রতি চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় ইসকনের বিরুদ্ধে ওঠা এই ধরণের অপপ্রচার হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে দাবি করেছে ইসকন বাংলাদেশ।

photo2

এদিকে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র কাঞ্চন আচার্য বলেন, হাজারী গলিতে ইসকনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয় এবং এরপরই হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের উপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে। সনাতন জাগরণ মঞ্চ ঘটনাটিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আঘাত হিসেবে উল্লেখ করে প্রশাসনের কাছে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

photo3

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় ৮২ জনকে আটক করা হয়েছে এবং এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তারিখ ০৬.১১.২০২৪

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বৈশ্বিক সম্পর্কের পুনর্গঠন সম্ভাবনা, বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করার ইঙ্গিত

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। তাঁর নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতিতে নতুন করে আশার আলো দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ট্রাম্প তার টুইটে বলেছেন, সংখ্যালঘু হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর যে নৃশংস আক্রমণ ও লুট চলছে, তা তিনি নিন্দা করছেন। তিনি বলেছেন, তার নেতৃত্বে এ ধরনের হামলা ঘটতো না, এবং বাইডেন প্রশাসন বিশ্বজুড়ে হিন্দুদের অধিকার অবহেলিত রেখেছে। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার প্রতি তার অঙ্গীকারে, ট্রাম্প বলেছেন, তিনি হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করবেন এবং আমেরিকায় চরমপন্থী বামদের বিরোধিতামূলক আচরণের বিরুদ্ধে লড়বেন। ট্রাম্পের এই ঘোষণা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জন্য নতুন আশাবাদের জন্ম দিয়েছে।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বৈশ্বিক সম্পর্কের পুনর্গঠন সম্ভাবনা, বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করার ইঙ্গিত

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। তাঁর নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতিতে নতুন করে আশার আলো দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ট্রাম্প তার টুইটে বলেছেন, সংখ্যালঘু হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর যে নৃশংস আক্রমণ ও লুট চলছে, তা তিনি নিন্দা করছেন। তিনি বলেছেন, তার নেতৃত্বে এ ধরনের হামলা ঘটতো না, এবং বাইডেন প্রশাসন বিশ্বজুড়ে হিন্দুদের অধিকার অবহেলিত রেখেছে। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার প্রতি তার অঙ্গীকারে, ট্রাম্প বলেছেন, তিনি হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করবেন এবং আমেরিকায় চরমপন্থী বামদের বিরোধিতামূলক আচরণের বিরুদ্ধে লড়বেন। ট্রাম্পের এই ঘোষণা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জন্য নতুন আশাবাদের জন্ম দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ৬ নভেম্বর: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈশ্বিক পরিসরে নতুন কৌশলগত পরিবর্তন আনতে যাচ্ছেন। “আমেরিকা প্রথম” নীতি এবং স্থিতিশীলতা আনার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সংকটাপন্ন অঞ্চলে ভিন্নধর্মী প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি থেকে চীনের সাথে সম্পর্ক পুনঃনির্মাণ, মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় তার প্রতিশ্রুতি উঠে এসেছে।

ট্রাম্প তাঁর বার্তায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আমেরিকার হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও স্বাধীনতার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর হ্রাস, এবং আমেরিকার উৎপাদন খাতের সুরক্ষার জন্য তিনি আবারও কাজ করার প্রতিজ্ঞা করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই নতুন অধ্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের সকল দেশ শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার দিকে আরও এগিয়ে যাবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

রাশিয়া, ইউক্রেন ও ন্যাটো
নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ একদিনের মধ্যে বন্ধ করতে পারেন। তবে কীভাবে তা করবেন সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দেননি। তার প্রশাসনের দুই সাবেক নিরাপত্তা প্রধানের গবেষণা অনুসারে, ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা অব্যাহত রাখা হলেও কিয়েভকে শান্তি আলোচনায় বসার শর্ত দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে রাশিয়াকে প্রলুব্ধ করতে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হতে পারে। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ন্যাটোর প্রতি সন্দেহ পোষণ করেন এবং ইউরোপকে আমেরিকার প্রতিরক্ষা খরচে নির্ভরশীল হওয়ার জন্য সমালোচনা করেছেন।

মধ্যপ্রাচ্য
ইউক্রেনের মতোই মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প শান্তি আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় হামাস ইসরায়েলের ওপর আক্রমণ করতো না। তার প্রশাসনের সময় ইরানের ওপর কঠোর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। তিনি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দেন এবং সেখানে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর করেন। ট্রাম্প প্রশাসন আব্রাহাম চুক্তির মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ও বেশ কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে, তবে এটি ফিলিস্তিনিদের অধিকতর একঘরে অবস্থায় নিয়ে আসে।

চীন ও বাণিজ্য
চীনের সাথে ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি মার্কিনিদের কর্মসংস্থান রক্ষায় কেন্দ্রীভূত ছিল। প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি চীনকে “কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী” আখ্যা দিয়ে আমদানির উপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন। ট্রাম্প বলেন, তার পুনর্নির্বাচিত হলে তিনি তীব্র শুল্কের মাধ্যমে চীনের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেবেন, বিশেষ করে তাইওয়ানের উপর চীনা আক্রমণের সম্ভাবনা প্রতিরোধ করতে।

তারিখ ০৬.১১.২০২৪

হাজারী গলিতে ধর্মীয় পোস্ট শেয়ারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ

চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার হাজারী গলিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় সংগঠন নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার ঘটনায় এক দোকানদারের ওপর হামলা ও পরে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে সাত পুলিশ সদস্য আহত হন, যাঁদের মধ্যে একজন অ্যাসিডদগ্ধ হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আটক করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
হাজারী গলিতে ধর্মীয় পোস্ট শেয়ারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ

চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার হাজারী গলিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় সংগঠন নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার ঘটনায় এক দোকানদারের ওপর হামলা ও পরে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে সাত পুলিশ সদস্য আহত হন, যাঁদের মধ্যে একজন অ্যাসিডদগ্ধ হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আটক করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

চট্টগ্রাম, ৫ নভেম্বর: চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার হাজারী গলি এলাকায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় সংগঠন ইসকন নিয়ে পোস্ট শেয়ার করাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে সাতজন আহত হন। এর মধ্যে একজন সামান্য অ্যাসিডদগ্ধ হয়েছেন। সংঘর্ষটি শুরু হয় মো. ওসমান নামের এক দোকানদার ফেসবুকে ইসকনের নাম উল্লেখ করে একটি পোস্ট শেয়ার করার পর।

পুলিশ জানায়, কয়েক দিন আগে ওসমান ফেসবুকে ইসকন নিয়ে পোস্ট শেয়ার করেন, যা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তারা ওসমানের দোকানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশসহ যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওসমানকে উদ্ধার করতে যান। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা ওসমানকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায় এবং পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।

ওসমানকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার সময় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষুব্ধ জনতা যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে কোতোয়ালি অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমানসহ সাতজন পুলিশ সদস্য আহত হন। আহতদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যৌথ বাহিনী কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার কাজী তারেক আজিজ জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আটকে হাজারী গলি এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে।

তারিখ ০৫.১১.২০২৪

ইসকন নিষিদ্ধের জন্য ইসলামপন্থী সংগঠনগুলির চাপ

বাংলাদেশে ইসকনের কার্যক্রম নিয়ে ইসলামপন্থী সংগঠনগুলির চাপ ক্রমশ বাড়ছে। সম্প্রতি ঢাকায় ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ নামে একটি ইসলামপন্থী ছাত্র সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে এবং হুমকি দিয়েছে যদি সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তবে তারা ইসকনের ‘রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম’ বন্ধ করতে রাস্তায় নামবে। দেশের হিন্দু সম্প্রদায় ইসকনকে নিয়ে এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীর কাছে ইসকনের সুরক্ষায় হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেছেন।
ইসকন নিষিদ্ধের জন্য ইসলামপন্থী সংগঠনগুলির চাপ

বাংলাদেশে ইসকনের কার্যক্রম নিয়ে ইসলামপন্থী সংগঠনগুলির চাপ ক্রমশ বাড়ছে। সম্প্রতি ঢাকায় ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ নামে একটি ইসলামপন্থী ছাত্র সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে এবং হুমকি দিয়েছে যদি সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তবে তারা ইসকনের ‘রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম’ বন্ধ করতে রাস্তায় নামবে। দেশের হিন্দু সম্প্রদায় ইসকনকে নিয়ে এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীর কাছে ইসকনের সুরক্ষায় হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেছেন।

ঢাকা, ৫ নভেম্বর: সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ নামে একটি ইসলামপন্থী ছাত্র সংগঠন ইসকনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করে। এই সম্মেলনে সংগঠনের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি ইসকনকে ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের পৃষ্ঠপোষক’ আখ্যা দিয়ে দেশবাসীকে ইসকনের বিরুদ্ধে সচেতন হতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ইসকন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে চায় এবং এ দেশে শান্তি বিনষ্ট করতে সক্রিয়।’ তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তবে তারা ছাত্র ও যুবকদের নিয়ে ইসকনের সব কার্যক্রম বন্ধে পথে নামবেন।

ইনকিলাব মঞ্চের এই আহ্বানে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি ও হুমকির মাধ্যমে সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি সহিংসতা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছে অনেকে। ইসকনের সমাজসেবার প্রচেষ্টাকে ইসলামপন্থীরা ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করেছে এবং ইসকনের আয়ের উৎস প্রকাশ করার দাবিও জানিয়েছে।

বাংলাদেশে হিন্দুদের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারতের ইসকন সংগঠনও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে ইসকনের সন্ন্যাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লেখেন, ‘বাংলাদেশের কিছু ছাত্র সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছে এবং এই পরিস্থিতিতে হিন্দুদের সুরক্ষার জন্য ভারত সরকারকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।’

ইনকিলাব মঞ্চের এই কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের হুমকি ও আন্দোলন সংখ্যালঘুদের ওপর মানসিক চাপ বাড়িয়ে তুলছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে।

তারিখ ০৫.১১.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় কংগ্রেস সদস্য কৃষ্ণমূর্তি ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈঠক

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য রাজা কৃষ্ণমূর্তি ৪ নভেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষত হিন্দুদের সুরক্ষায় নেওয়া উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের শীর্ষ অগ্রাধিকারে রয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের বেসামরিক নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। কৃষ্ণমূর্তি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে তথ্য প্রকাশেরও আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় কংগ্রেস সদস্য কৃষ্ণমূর্তি ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈঠক

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য রাজা কৃষ্ণমূর্তি ৪ নভেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষত হিন্দুদের সুরক্ষায় নেওয়া উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের শীর্ষ অগ্রাধিকারে রয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের বেসামরিক নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। কৃষ্ণমূর্তি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে তথ্য প্রকাশেরও আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র, ৪ নভেম্বর: মার্কিন কংগ্রেস সদস্য রাজা কৃষ্ণমূর্তি ৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন, যার মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা। বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে রাজা কৃষ্ণমূর্তি জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে পররাষ্ট্র দপ্তর এবং এটি তাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার।

কৃষ্ণমূর্তি আরও বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে প্রতিটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টি উত্থাপন করছে। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের বেসামরিক নিরাপত্তা বাহিনীকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশে ধর্মীয় সহিংসতা রোধ এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য কমাতে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে জনসাধারণের জন্য আরও তথ্য প্রকাশ করতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কৃষ্ণমূর্তি। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা রোধে এই তথ্যের প্রকাশ এবং স্বচ্ছতা অত্যন্ত জরুরি।

বৈঠকের পর কৃষ্ণমূর্তি জানান, “আমি পররাষ্ট্র দপ্তরের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার প্রশংসা করি এবং আগামী কয়েক সপ্তাহে এই প্রচেষ্টার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করব।” মার্কিন কংগ্রেস সদস্য হিসেবে তিনি এই ইস্যুতে নিরলসভাবে কাজ করে যাবেন বলে আশ্বাস দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা এবং মানবাধিকার সুরক্ষায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনার আশা জাগাচ্ছে।

তারিখ ০৫.১১.২০২৪

বাংলাদেশি হিন্দুদের নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বেগ, নির্বাচনী প্রচারণায় দৃষ্টান্তমূলক বক্তব্য

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের প্রতি হওয়া সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হিন্দুদের বিশেষ ধর্মীয় উৎসব দীপাবলির দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এই বিবৃতিতে ট্রাম্প বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর চলমান সহিংসতাকে “বর্বরোচিত” বলে নিন্দা জানিয়েছেন। এছাড়াও, তিনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় অবহেলা করার অভিযোগ করেন এবং নির্বাচনে বিজয়ী হলে যুক্তরাষ্ট্রের হিন্দুদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্য নির্বাচনী প্রচারণার শেষ মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী হিন্দু অধিকার ও সংখ্যালঘু সুরক্ষার বিষয়ে তাঁর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশি হিন্দুদের নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বেগ, নির্বাচনী প্রচারণায় দৃষ্টান্তমূলক বক্তব্য

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের প্রতি হওয়া সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হিন্দুদের বিশেষ ধর্মীয় উৎসব দীপাবলির দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এই বিবৃতিতে ট্রাম্প বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর চলমান সহিংসতাকে “বর্বরোচিত” বলে নিন্দা জানিয়েছেন। এছাড়াও, তিনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় অবহেলা করার অভিযোগ করেন এবং নির্বাচনে বিজয়ী হলে যুক্তরাষ্ট্রের হিন্দুদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্য নির্বাচনী প্রচারণার শেষ মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী হিন্দু অধিকার ও সংখ্যালঘু সুরক্ষার বিষয়ে তাঁর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ৪ নভেম্বর: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালীন প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চলমান সহিংসতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। ৩ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বাংলাদেশের সংখ্যালঘু, বিশেষত হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতি সহিংসতাকে “বর্বরোচিত” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি কমলা হ্যারিস ও জো বাইডেনকে বিশ্বব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য দায়ী করেন।

ট্রাম্প এই বক্তব্যে বাংলাদেশে সহিংসতার নিন্দা করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার বিজয়ের পর, আমি হিন্দু আমেরিকানদের সুরক্ষা নিশ্চিত করব।” তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং তাঁকে তাঁর “ঘনিষ্ঠ বন্ধু” হিসেবে উল্লেখ করেন।

ট্রাম্পের এই মন্তব্য মার্কিন নির্বাচনী প্রচারণার সময় বাংলাদেশি হিন্দুদের অধিকারের বিষয়ে সচেতনতার নজির স্থাপন করেছে, যা অতীতে খুব কমই দেখা গেছে। এই বক্তব্যটির পেছনে নির্বাচনী স্বার্থও থাকতে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে ৫.২ মিলিয়ন ভারতীয়-আমেরিকানদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ হিন্দু, যারা মূলত ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থক। তবে সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, এই সম্প্রদায়ের মধ্যে রিপাবলিকান সমর্থনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইসলামিক দেশগুলোতে সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি যে সহিংসতা এবং বৈষম্য দেখা যায়, তা আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠিয়ে আনার প্রবণতা বাড়ছে। এর প্রেক্ষাপটে ডাচ রাজনীতিবিদ গির্ট উইল্ডারস এবং মার্কিন নেত্রী তুলসি গ্যাবার্ডের মতো ব্যক্তিত্বও হিন্দু অধিকারের পক্ষে আওয়াজ তুলেছেন।

ট্রাম্পের বক্তব্য কেবল একটি নির্বাচনী কৌশল হিসেবে নয় বরং হিন্দু অধিকার নিয়ে বৈশ্বিক স্তরে সচেতনতার সূচনা হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

তারিখ ০৫.১১.২০২৪

সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষায় ইইউর উদ্বেগ, মানবাধিকার সংশোধনের আহ্বান

ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশনের বৈঠকে সংখ্যালঘু, নারী ও শিশুসহ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনি কাঠামো দ্রুত সংশোধনের তাগিদ দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রয়োজন। বৈঠকে বৈধ পন্থায় দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির পথনকশা নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে সম্ভাব্য সুযোগসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষায় ইইউর উদ্বেগ, মানবাধিকার সংশোধনের আহ্বান

ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশনের বৈঠকে সংখ্যালঘু, নারী ও শিশুসহ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনি কাঠামো দ্রুত সংশোধনের তাগিদ দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রয়োজন। বৈঠকে বৈধ পন্থায় দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির পথনকশা নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে সম্ভাব্য সুযোগসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ঢাকা, ৫ নভেম্বর: রাজধানী ঢাকার এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশনের বৈঠকে সংখ্যালঘু, নারী ও শিশুসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মানবাধিকার, সুশাসন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগে সহযোগিতা প্রদানেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইইউ। বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) আইন কাঠামোর আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার তাগিদ জানানো হয়।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং ইইউর পক্ষে নেতৃত্ব দেন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা পাম্পালোনি। বৈঠকে বাংলাদেশে গুম হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে তদন্ত কার্যক্রমের বিষয়ে ইইউ জানায়, সরকারের গৃহীত উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সনদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো কিছু আইনের সংশোধন এবং বিরোধী মত দমনের অভিযোগের বিষয়ে ইইউ আশাবাদী।

বৈঠকে ইইউ জানায়, যেসব বাংলাদেশি বর্তমানে ইইউ দেশগুলোতে অবৈধ অবস্থায় আছেন, তাদের বৈধকরণের জন্য বাংলাদেশ পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। পাশাপাশি বৈধভাবে দক্ষ কর্মী পাঠাতে ইইউ একটি পথনকশা প্রস্তুত করছে, যাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কেয়ারগিভিং, নির্মাণ শিল্প, পর্যটন, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, জাহাজ নির্মাণসহ ১০টি খাতকে প্রাধান্য দিয়ে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ অতিরিক্ত তিন বছর পর্যন্ত বর্তমান শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বলে ইইউ জানায়। এরপর ১২-১৫ শতাংশ শুল্কারোপের আওতায় এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধার সুযোগ থাকবে। এ জন্য বাংলাদেশকে আর্থিক খাত সংস্কার, শ্রম অধিকার উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়। ইইউ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশনগুলো মেনে চলার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে।

উল্লেখ্য, ইইউর পক্ষ থেকে জানানো হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা জরুরি।

তারিখ ০৫.১১.২০২৪

নারায়ণগঞ্জে নিতাইগঞ্জ ডালপট্টি এলাকায় সংখ্যালঘুদের ভূমি দখলের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ ডালপট্টি এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য বিমল চন্দ্র দাস ও মানিক চন্দ্র সাহা ভূমি দখলের অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। তারা জানান, ২০১৭ সালে একটি ভূমি ক্রয়ের পর থেকে তাদের উপর নির্যাতন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। অভিযুক্তরা তাদেরকে মারধর করে এবং তাদের হাতের রগ কেটে দেয়। এরপর তারা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। প্রশাসনের তরফে অভিযোগের তদন্ত চলছে।
নারায়ণগঞ্জে নিতাইগঞ্জ ডালপট্টি এলাকায় সংখ্যালঘুদের ভূমি দখলের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ ডালপট্টি এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য বিমল চন্দ্র দাস ও মানিক চন্দ্র সাহা ভূমি দখলের অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। তারা জানান, ২০১৭ সালে একটি ভূমি ক্রয়ের পর থেকে তাদের উপর নির্যাতন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। অভিযুক্তরা তাদেরকে মারধর করে এবং তাদের হাতের রগ কেটে দেয়। এরপর তারা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। প্রশাসনের তরফে অভিযোগের তদন্ত চলছে।

নারায়ণগঞ্জ, ৩ নভেম্বর: নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ ডালপট্টি এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য বিমল চন্দ্র দাস ও মানিক চন্দ্র সাহা ৩ নভেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভূমি দখলের অভিযোগ করেন। তারা দাবি করেছেন, আওয়ামী সন্ত্রাসী ডিস বাবু, শাহরিয়ার রহমান ও মোখলেছুর রহমান ভুট্টো বাহিনী তাদেরকে হেনস্থা ও নির্যাতন করছে।

বিমল চন্দ্র দাস লিখিত বক্তব্যে বলেন, “হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় আমরা বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে নির্যাতিত হয়েছিলাম এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীণ সরকারের আমলেও আমরা নির্যাতিত হচ্ছি।” তিনি জানান, নিতাইগঞ্জ এলাকার উজির ভুইয়ার ছেলে শাহরিয়ার রহমানের নির্দেশে মোখলেছুর রহমান ভুট্টো ও ডিস বাবু বাহিনী তাদের রেজিস্ট্রি বায়নাকৃত ডালপট্টি এলাকার সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছে।

বিমল চন্দ্র দাস ও মানিক চন্দ্র সাহা ২০১৭ সালে মৃত হাফিজ উদ্দিন ভুইয়ার ছেলে আব্দুল কাইয়ুম ভুইয়ার কাছ থেকে জমি ক্রয়ের লক্ষ্যে রেজিস্ট্রি বায়না করেন। কিন্তু আব্দুল কাইয়ুম ভুইয়া মারা যাওয়ার পর শাহরিয়ার রহমানের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা তাদের জমিতে প্রবেশে বাধা দেয় এবং মারধর করে।

বিমল বলেন, “আমাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে টর্চার সেলে আটকে রেখে হাতের রগ কেটে ফেলা হয়। তারা আমাকে হত্যা করার হুমকি দেয়। আমার জীবনের নিরাপত্তা নেই।”

তিনি আরও জানান, ঘটনাটির পর তিনি জরুরি সহায়তা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দিলেও কোনো আইনগত সহায়তা পাননি। সদর থানার তৎকালীন ওসির কাছেও কোনো সহযোগিতা পাননি।

চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও, তারা ভয়ে ওই জমি বিক্রি করতে পারেননি। তারা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে প্রেসক্লাব সভাপতির কাছে সাহায্য চান।

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি আরিফ আলম দিপু সাহেব এবং সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন সাহেব তাদেরকে সাহায্য করার আশ্বাস দেন এবং পরে পাওয়ার অব অ্যাটর্নী দলিল করার ব্যবস্থা করেন। ২১ সেপ্টেম্বর জমির মাপ নির্ধারণ করে মালিকানার স্বপক্ষে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়, যা পরে দখলদাররা সরিয়ে ফেলে।

৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর ডিস বাবু ও মোখলেছুর রহমান ভুট্টো আত্মগোপনে চলে যায়। কিছুদিন পর মোখলেছুর রহমান ভুট্টো বাহিনী আবার প্রকাশ্যে এসে পুরনো সাইনবোর্ড সরিয়ে নতুন সাইনবোর্ড স্থাপন করে এবং নির্মাণ কাজ শুরু করে।

এ ঘটনায় প্রেসক্লাব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

২৮ অক্টোবর ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর, মোখলেছুর রহমান ভুট্টো বাহিনী সেখানে জড়ো হয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।

বিমল চন্দ্র দাস ও মানিক চন্দ্র সাহা জানান, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের পক্ষ নিয়ে লড়াই করতে গিয়ে বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন। তারা সন্ত্রাসী বাহিনীর অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন এবং ভুঁমিদস্যু চক্র তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।

বিমল দাবি করেন, তিনি আইনগত সহায়তা চেয়ে মোখলেছুর রহমান ভুট্টো ও ডিস বাবু বাহিনীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন এবং প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার চান।

তিনি বলেন, “এতোদিন আওয়ামী লীগের প্রভাবের কারণে সাহস পাইনি। প্রশাসন ও আদালতের কাছে আমি সঠিক বিচার চাই।”

উল্লেখ্য, জমিটির বৈধ মালিক হাফিজ উদ্দিন ভুইয়ার ছেলে কাইয়ুম ভুইয়া, যার মৃত্যুর পর জমিটি তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে নামজারি করা হয়েছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন আব্দুল কাইয়ুম ভুইয়ার ছেলে মোজাম্মেল হোসেন ভুইয়া, মোবাশের হোসেন ভুইয়া, মানিক সাহা প্রমুখ।

তারিখ ০৫.১১.২০২৪

বরগুনায় লুটপাটের শিকার ১০টি সংখ্যালঘু পরিবার এখনও নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারেননি

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় ৫ আগস্টের পর হামলা ও লুটপাটের শিকার ১০টি সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির, যদিও তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনার তদন্তে নেমেছে, তবে অনেক পরিবার এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বেড়ে গেছে।
বরগুনায় লুটপাটের শিকার ১০টি সংখ্যালঘু পরিবার এখনও নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারেননি

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় ৫ আগস্টের পর হামলা ও লুটপাটের শিকার ১০টি সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির, যদিও তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনার তদন্তে নেমেছে, তবে অনেক পরিবার এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বেড়ে গেছে।

বরগুনা, ৩১ অক্টোবর: বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় গত ৫ আগস্টের পরে হামলা ও লুটপাটের শিকার ১০টি সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা এখনও নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারেননি। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা বিএনপির নেতা হিসেবে পরিচিত এবং তাদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি করার কথা জানানো হয়েছে। তবে বিএনপির নেতারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, কাঁঠালতলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য অঞ্জন ভট্টাচার্য এবং একই ইউনিয়নের বাসিন্দা সুজন রায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি। তালুকের চরদুয়ানি গ্রামের অর্জুন হাওলাদার, শৈলেন হাওলাদার ও দেবাশীষ সেনগুপ্তের পরিবার এলাকাতেই থাকলেও তারা নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে রয়েছেন।

পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, “আমি শুনেছি, এমাদুল খান নামের এক ব্যক্তি সংখ্যালঘুদের কাছে টাকা চাচ্ছেন। কিন্তু তিনি বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। বিএনপি কখনোই সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করে না। যদি কেউ বিএনপিকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আল মামুন জানান, উপজেলায় বেশ কয়েকটি সংখ্যালঘু পরিবারে হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে। বরগুনার পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, “টাকা চাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন কমিটির বরগুনা জেলা শাখার সদস্যসচিব জয়দেব রায় বলেন, “৫ আগস্টের পর বরগুনায় ৩০টি ধর্মীয় সংখ্যালঘুর বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে পাথরঘাটায় ১০টি পরিবারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।”

অঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, তার বাড়িতে ৬ আগস্ট হামলা চালানো হয় এবং তিনি পরিবারসহ বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তিনি বলেন, “সরকার পতনের পর বিএনপির লোকজন হামলা চালিয়ে আমার দোকান ভাঙচুর করে। তারা আমার মোটরসাইকেলটি নিয়ে গেছে। তাদের ভয়ে আমি বাড়ি ছেড়ে চলে গেছি।”

একই ইউনিয়নের সুজন রায় জানান, “আমার বাড়িতে কিছুই নেই, সব নিয়ে গেছে। এখনও হুমকি দেয়, টাকা দাবি করে। আমি এখন হাঁটতে পারি না। আমার পায়ের গিঁটে আঘাত লেগেছে।”

অর্জুন হাওলাদারের স্ত্রী মনি রানী জানান, “সরকার পতনের দিন আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করে মালামাল লুটপাট করা হয়। সেই থেকে আমার স্বামী বাড়িছাড়া।” অর্জুন বলেন, “টাকা দাবি করেছেন বিএনপির নেতা এমাদুল খান।”

এমাদুল খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কোনো টাকা চাইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমি সেখানে পান খেতে গিয়েছিলাম।”

হাবিবুর রহমান, পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির সাবেক চেয়ারম্যান, বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমরা এ ঘটনাগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।”

জেলা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক হাসানুর রহমান বলেন, “একটি স্বাধীন দেশের নাগরিকদের ওপর এ ধরনের হামলার ঘটনা দুঃখজনক।” তিনি ২০০১ সালে পাথরঘাটায় একই ধরনের ঘটনার কথা উল্লেখ করেন।

এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বাড়ছে এবং দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠছে।

তারিখ ০৫.১১.২০২৪

চট্টগ্রামে সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমাবেশে বাধা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় মোড়ে সনাতন জাগরণ মঞ্চের প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিতে আসার পথে বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধার সম্মুখীন হন সমাবেশে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। আজ শুক্রবার বিকেলে জামালখান মোড়, আন্দরকিল্লা, এবং বৌদ্ধমন্দির মোড়সহ বেশ কিছু জায়গায় পুলিশ তাদের সমাবেশে যোগ দিতে বাধা দেয়। কিন্তু তবুও বাধা ঠেলে সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হন তারা। উল্লেখ্য, সনাতন জাগরণ মঞ্চ আট দফা দাবিতে দুই মাস ধরে আন্দোলন করছে। এ সমাবেশে আসার পথে লোকজনের বাধার প্রতিবাদে ৬৪ জেলায় বিক্ষোভের আহ্বান জানানো হয়।
চট্টগ্রামে সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমাবেশে বাধা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় মোড়ে সনাতন জাগরণ মঞ্চের প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিতে আসার পথে বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধার সম্মুখীন হন সমাবেশে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। আজ শুক্রবার বিকেলে জামালখান মোড়, আন্দরকিল্লা, এবং বৌদ্ধমন্দির মোড়সহ বেশ কিছু জায়গায় পুলিশ তাদের সমাবেশে যোগ দিতে বাধা দেয়। কিন্তু তবুও বাধা ঠেলে সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হন তারা। উল্লেখ্য, সনাতন জাগরণ মঞ্চ আট দফা দাবিতে দুই মাস ধরে আন্দোলন করছে। এ সমাবেশে আসার পথে লোকজনের বাধার প্রতিবাদে ৬৪ জেলায় বিক্ষোভের আহ্বান জানানো হয়।

চট্টগ্রাম, ০১ নভেম্বর ২০২৪: চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় মোড়ে সনাতন জাগরণ মঞ্চের ডাকা প্রতিবাদ সমাবেশে আসার পথে বিভিন্ন স্থানে বাধার সম্মুখীন হন সমাবেশে যোগদানকারী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। আজ শুক্রবার বিকেলে নগরের জামালখান মোড়, আন্দরকিল্লা এবং বৌদ্ধমন্দির মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে বাধা দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধা অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত তারা সমাবেশে অংশ নেন।

বেলা তিনটা নাগাদ সমাবেশের মূল স্থান চেরাগী পাহাড় মোড়েও বেশ কিছু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তবে সেখানে তাদের রাস্তার এক পাশে আটকে রাখা হয়। ধীরে ধীরে লোকসমাগম বাড়লে এবং চাপ বৃদ্ধি পেলে বাধা অতিক্রম করে লোকজন মোড়ে সমবেত হয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন এবং প্রতিবাদ সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে সনাতন জাগরণ মঞ্চের স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশে যোগ দিয়েছি। কিন্তু নগরের বিভিন্ন স্থানে লোকজনকে সমাবেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “যদি মিছিল করে লোকজনকে সমাবেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়, তবে আমরা আমাদের মিছিল নিয়ে গিয়ে আটকে দেওয়া লোকজনকে নিয়ে আসব।”

সমাবেশে উপস্থিতদের মধ্যে চট্টগ্রামের সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। বুধবার নগরের কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। গত দুই মাস ধরে এই সংগঠন আট দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে গত ২৫ অক্টোবর লালদীঘি মাঠে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশ থেকে ফেরার পথে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে নগরের মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ খান মামলা করেন। এই মামলার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার চেরাগী পাহাড় মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে সনাতন জাগরণ মঞ্চ।

আজকের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সনাতন জাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে ৬৪ জেলায় একযোগে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। তাদের আজকের কর্মসূচির অংশ হিসেবে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) লিয়াকত আলী খান বলেন, “প্রশাসনিক নির্দেশনা ছিল যে চেরাগীতে আজ কোনো সমাবেশ বা সভা করা হবে না। কিন্তু পরে বাধা অতিক্রম করে লোকজন সেখানে চলে আসে।”

সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতৃবৃন্দ এ ধরনের বাধাকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখছেন। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেহেতু এ প্রতিবাদ কর্মসূচি জাতীয় পর্যায়ের, তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন পদক্ষেপ গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার প্রতি অন্তরায় সৃষ্টি করেছে।

এ সমাবেশে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা ও ক্ষোভ দেখা যায়। তবে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সমাবেশস্থলে মোতায়েন ছিল।

তারিখ: ১৩.১১.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা এবং লুটপাটের ঘটনায় কড়া নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে জানান, তার শাসনকালে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বিশ্বজুড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি অবহেলা করেছেন। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দেন, ভবিষ্যতে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনরায় দায়িত্ব নিলে হিন্দু আমেরিকানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন এবং ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও মজবুত করবেন। এছাড়া ট্রাম্প হিন্দুদের দীপাবলির শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা এবং লুটপাটের ঘটনায় কড়া নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে জানান, তার শাসনকালে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বিশ্বজুড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি অবহেলা করেছেন। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দেন, ভবিষ্যতে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনরায় দায়িত্ব নিলে হিন্দু আমেরিকানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন এবং ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও মজবুত করবেন। এছাড়া ট্রাম্প হিন্দুদের দীপাবলির শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন।

ইউএসএ, ৩১ অক্টোবর: বাংলাদেশে সম্প্রতি সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উপর সংঘটিত সহিংসতা এবং লুটপাটের ঘটনার কড়া নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য রেখেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক্স (সাবেক টুইটার) মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যেভাবে হামলা ও লুটপাট চলছে, তা বর্বরোচিত। আমার শাসনকালে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারত না। কমলা এবং জো আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের উপেক্ষা করেছেন।”

এক্স (সাবেক টুইটার) মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প

ট্রাম্প তার বক্তব্যে বর্তমান মার্কিন প্রশাসনকে সমালোচনা করে বলেন, “ইসরায়েল থেকে শুরু করে ইউক্রেন এবং আমাদের নিজস্ব দক্ষিণ সীমান্ত পর্যন্ত তারা চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা আমেরিকাকে আবারও শক্তিশালী করব এবং শক্তি দিয়ে শান্তি ফিরিয়ে আনব। আমেরিকান হিন্দুদেরও আমরা চরমপন্থী বামপন্থীদের ধর্মবিরোধী এজেন্ডা থেকে রক্ষা করব।”

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক মহলকে আরও সজাগ হতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তার প্রশাসন পুনরায় ক্ষমতায় এলে হিন্দু আমেরিকানদের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা রক্ষা করার ব্যাপারে জোরালো ভূমিকা রাখবেন।

ট্রাম্প তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, “আমি আবার প্রেসিডেন্ট হলে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে আমাদের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে।”

বর্তমান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, “কমলা হ্যারিস অতিরিক্ত বিধি-নিষেধ আরোপ এবং কর বৃদ্ধির মাধ্যমে ছোট ব্যবসাগুলো ধ্বংস করবেন। অপরদিকে, আমি কর হ্রাস করেছি, বিধি-নিষেধ কমিয়েছি এবং আমেরিকার অর্থনীতি শক্তিশালী করেছি। আমরা আবারও সেটি করব—আগের থেকে আরও বড় এবং আরও ভালোভাবে।”

এছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ উৎসব দীপাবলির প্রাক্কালে ট্রাম্প তার পোস্টে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “সবার জন্য শুভ দীপাবলি। আলোর উৎসব সকল অশুভ শক্তির পরাজয় ঘটাক।”

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তার প্রতি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হচ্ছে।

তারিখ ০১.১১.২০২৪

ঋতুপর্ণা ও রুপনার সাফল্যে রাঙামাটিতে আনন্দের বন্যা

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতার পর থেকে রাঙামাটির ঋতুপর্ণা চাকমা ও রুপনা চাকমার গ্রামে বইছে আনন্দের বন্যা। মঘাছড়ি গ্রামের ঋতুপর্ণা ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে গোল করে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন এবং সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন। একইভাবে নানিয়ারচরের রুপনা চাকমা দেশের সেরা গোলরক্ষক হয়ে জনসাধারণের ভালোবাসায় সিক্ত হন। তাঁদের এই সাফল্যে পুরো রাঙামাটিতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে, পরিবারের সদস্যরা এই গৌরবগাঁথার জন্য সবার দোয়া ও শুভকামনা কামনা করছেন।
ঋতুপর্ণা ও রুপনার সাফল্যে রাঙামাটিতে আনন্দের বন্যা

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতার পর থেকে রাঙামাটির ঋতুপর্ণা চাকমা ও রুপনা চাকমার গ্রামে বইছে আনন্দের বন্যা। মঘাছড়ি গ্রামের ঋতুপর্ণা ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে গোল করে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন এবং সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন। একইভাবে নানিয়ারচরের রুপনা চাকমা দেশের সেরা গোলরক্ষক হয়ে জনসাধারণের ভালোবাসায় সিক্ত হন। তাঁদের এই সাফল্যে পুরো রাঙামাটিতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে, পরিবারের সদস্যরা এই গৌরবগাঁথার জন্য সবার দোয়া ও শুভকামনা কামনা করছেন।

রাঙামাটি, ৩১ অক্টোবর: নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতার পর থেকেই গতকাল বুধবার রাত থেকে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মঘাছড়ি গ্রামে বইছে খুশির জোয়ার। এই ঐতিহাসিক জয়ের নায়িকা মঘাছড়ির মেয়ে ঋতুপর্ণা চাকমা, যার অসাধারণ গোলেই বাংলাদেশ শিরোপা জয় করে।

ফাইনালের ৮১তম মিনিটে ডিফেন্ডার শামসুন্নাহার সিনিয়রের থ্রো-ইন থেকে বল পেয়ে বাঁ দিকের ডি-বক্সের বাইরে থেকে হাওয়ায় ভাসানো এক দুর্দান্ত শট নেন ঋতুপর্ণা। নেপালের গোলরক্ষক আনজিলা তুম্বাপো ঝাঁপিয়ে পড়ে বল আটকানোর চেষ্টা করলেও ক্রসবারে লেগে তা গোললাইন অতিক্রম করে। এই অসাধারণ গোলের জন্য ঋতুপর্ণা সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতে নেন, যা তার পরিবার ও গ্রামের জন্য গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মঘাছড়ির প্রতিটি মানুষ ঋতুপর্ণার এই কৃতিত্ব নিয়ে আলোচনা করছেন। চা-দোকানের আড্ডা, জুমখেতের শ্রমিকদের কথাবার্তা, বাড়ির আঙিনার গল্প—সবখানেই ঋতুপর্ণার নাম। তার মা বসুবতি চাকমা মেয়ের এই সাফল্যে অভিভূত, শুভেচ্ছা বার্তায় ভাসছেন তিনি। আজ সকাল থেকেই জনপ্রতিনিধি ও আশপাশের লোকজন এসে তাঁদের বাড়িতে ঋতুপর্ণাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। বসুবতি চাকমা জানান, সকাল ৯টার দিকে ঋতুপর্ণা তাদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “এই অর্জনে আমরা খুবই খুশি। ঋতু সবার কাছ থেকে দোয়া চেয়েছে এবং আমি প্রতি খেলার আগে তার জন্য প্রার্থনা করি।”

ঋতুপর্ণার পরিবারের আনন্দে অংশ নিতে কাউখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অর্জুন মনি চাকমা তাদের বাড়িতে যান এবং বলেন, “ঋতুপর্ণা সেরা খেলোয়াড় হওয়ায় আমরা গর্বিত। এই কৃতিত্বে আমরা সবাই খুশি।”

মঘাছড়ির পাশাপাশি নানিয়ারচরের ভুইয়ো আদাম গ্রামের মানুষও আনন্দে মেতেছে। কারণ সাফজয়ী দলের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা এই গ্রামের মেয়ে। জাতীয় দলের এই কৃতী গোলরক্ষক দেশের হয়ে বড় অবদান রেখে সাফের সেরা গোলরক্ষক হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। এর আগেও, ২০২২ সালের সাফে রুপনা সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার পেয়েছিলেন।

রুপনার মা কালাসোনা চাকমা জানান, লোকজনের মুখে শুনেছেন যে তাঁর মেয়ে এবারও সেরা গোলরক্ষক হয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার মেয়ে এবারও সেরা গোলরক্ষক হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। তবে খবরটা তার কাছ থেকে পাইনি; লোকজনই আমাকে জানিয়েছে। গতকাল থেকে বিভিন্ন মানুষ ফোন করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, খুব খুশি লাগছে। আমার মেয়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন।”

ঋতুপর্ণা ও রুপনার এই সাফল্য শুধু রাঙামাটির গর্বই নয়, পুরো দেশের জন্য গৌরবের।

তারিখ ৩১.১০.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার অভিযোগ তদন্ত করছে জাতিসংঘ

ঢাকায় দুদিনের সফরে এসে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক জানান, গত আগস্টের পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা নিয়ে জাতিসংঘ তদন্ত করছে। আগস্টের ৫ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগগুলো তদন্ত করতে জাতিসংঘের একটি তথ্য অনুসন্ধান মিশন কাজ করছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন টার্ক। এসময় তিনি দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার অভিযোগ তদন্ত করছে জাতিসংঘ

ঢাকায় দুদিনের সফরে এসে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক জানান, গত আগস্টের পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা নিয়ে জাতিসংঘ তদন্ত করছে। আগস্টের ৫ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগগুলো তদন্ত করতে জাতিসংঘের একটি তথ্য অনুসন্ধান মিশন কাজ করছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন টার্ক। এসময় তিনি দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

ঢাকা, ৩১ অক্টোবর: ঢাকা সফরে এসে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টার্ক বুধবার ঢাকায় জানান, গত আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর সংখ্যালঘুদের উপর হামলার অভিযোগ নিয়ে জাতিসংঘ তদন্ত করছে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই দুদিনের সফর শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমাদের তথ্য অনুসন্ধান মিশন আগস্ট মাসের ৫ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার অভিযোগগুলো তদন্ত করছে।”

টার্ক জানান, রাজনৈতিক পরিবর্তন সাধারণত অনেক ঝুঁকি সৃষ্টি করে এবং বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের জন্য পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, “এমন সংকটময় সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের রক্ষা করতে ছাত্ররা এবং অন্যরা যে ভূমিকা রেখেছে, তার জন্য তাদের প্রশংসা করি।”

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যান্য উপদেষ্টা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং ছাত্রদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগের তদন্তে দ্রুত এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানান তিনি। এছাড়াও তিনি অনলাইনে মিথ্যা প্রচারণা এবং ঘৃণা ছড়ানোর বিপরীতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বলেন, “আইনি বিচারের গুরুত্ব অপরিসীম, তবে অভিযোগ দায়ের করতে গিয়ে যাতে তাড়াহুড়ো না করা হয় এবং সঠিক বিচার প্রক্রিয়া মেনে চলা হয় তা নিশ্চিত করা জরুরি।” এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসহ সব বিচার প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

এদিকে, বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ইন্টারপোলসহ অন্যান্য সংস্থার সহায়তায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করার বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান টার্ক বলেন, “কেবল রাজনৈতিক সংযোগের ভিত্তিতে কারও বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা উচিত নয়। পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলাগুলো নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে, যা উপযুক্ত তদন্তের ভিত্তিতে দায়ের করা হয়নি।”

তারিখ ৩১.১০.২০২৪

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবার উদযাপিত হলো শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো উদযাপিত হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা। সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দিরে পূজার আয়োজন করা হয়, যা হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। বিকেলে মন্দিরে প্রতিমা স্থাপনের মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় এবং সন্ধ্যায় দীপাবলি উপলক্ষে প্রদীপ প্রজ্বালন করে আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করা হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই পূজা ও দীপাবলির আয়োজনকে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবার উদযাপিত হলো শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো উদযাপিত হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা। সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দিরে পূজার আয়োজন করা হয়, যা হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। বিকেলে মন্দিরে প্রতিমা স্থাপনের মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় এবং সন্ধ্যায় দীপাবলি উপলক্ষে প্রদীপ প্রজ্বালন করে আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করা হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই পূজা ও দীপাবলির আয়োজনকে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।

খুলনা, ৩১ অক্টোবর: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো উদযাপিত হচ্ছে শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা। সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়, যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দিরে প্রতিমা আনয়নের মাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সন্ধ্যায় দীপাবলি উপলক্ষে প্রদীপ প্রজ্বালন করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাঁদের প্রয়াত পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। রাত ৮টায় পূজার ঘটস্থাপন ও রাত ৯টায় পূজা শুরু হয়।

শ্যামা পূজা উপলক্ষে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এবারই প্রথম শ্যামা পূজা ও দীপাবলি উদযাপন হচ্ছে। এটি আমাদের দেশের সংস্কৃতি ও বাক স্বাধীনতার প্রতীক। এখানে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁদের ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘ্নে পালন করতে পারেন।” তিনি সকলকে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান এবং নিশ্চিত করেন যে কেউ যাতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না দেয়, সেই বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশিদ খান। অনুষ্ঠানটি মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. উত্তম কুমার মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. রামেশ্বর দেবনাথ এবং সাধারণ সম্পাদক দীপক চন্দ্র মন্ডলও বক্তব্য রাখেন। সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন শিক্ষার্থী পায়েল রায়, এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিক্ষার্থী গৌরব কুমার পাল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই পূজা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শ্যামা পূজার এই আয়োজনকে বিশ্ববিদ্যালয় কমিউনিটির মাঝে আন্তঃধর্মীয় সহমর্মিতার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় শ্যামা পূজা উপলক্ষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে আরও শিক্ষার্থীরা তাঁদের সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা উপস্থাপন করবেন।

তারিখ ৩১.১০.২০২৪

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী সমাবেশ

সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে দেশের ৬৪ জেলায় সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার নগরের কোতোয়ালি থানায় এই মামলার দায়ের হয়, যেখানে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে সনাতন জাগরণ মঞ্চ এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। বক্তারা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আগামী সোমবারের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী সমাবেশ

সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে দেশের ৬৪ জেলায় সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার নগরের কোতোয়ালি থানায় এই মামলার দায়ের হয়, যেখানে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে সনাতন জাগরণ মঞ্চ এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। বক্তারা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আগামী সোমবারের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম, ৩১ অক্টোবর: সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে দেশের ৬৪ জেলায় সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় মোড়ে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

গতকাল বুধবার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেন মোহরা এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ খান। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর লালদীঘি মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চ আয়োজিত সমাবেশ থেকে নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থিত স্বাধীনতাস্তম্ভে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়। সনাতন জাগরণ মঞ্চ বিগত দুই মাস ধরে আট দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে, যা নিয়ে অনেকেই মতামত প্রকাশ করেছেন।

এই মামলার প্রতিবাদে আজ বিকেলে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সহস্রাধিক মানুষ মিছিলসহকারে অংশগ্রহণ করেন এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বেলা তিনটা থেকে শুরু হওয়া এই সমাবেশটি চলে প্রায় দুই ঘণ্টা। সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার জন্য উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতারা মামলাটি মিথ্যা দাবি করে তীব্র প্রতিবাদ জানান।

সমাবেশে বক্তব্য দেন অজপানন্দ মহারাজ, স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস মহারাজ, দারু ব্রহ্মচারী, সুচারু ব্রহ্মচারী এবং জুয়েল আইচসহ আরও অনেকে। বক্তারা বলেন, “লালদীঘি মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমাবেশে জনতার ঢল দেখে আতঙ্কিত হয়ে তাদের দাবিকে দাবিয়ে রাখার জন্যই এই মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।” তাঁরা দাবি করেন, “এই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং সনাতন জাগরণ মঞ্চের চলমান আট দফা দাবির আন্দোলনে কোনো বাধা দেওয়া যাবে না।”

সমাবেশে স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস মহারাজ বলেন, “আমরা সোমবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিচ্ছি মামলা প্রত্যাহারের। আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে দেশের প্রতিটি জেলায় সমাবেশ করা হবে। এর পাশাপাশি রোববার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। যদি সোমবারের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”

বক্তারা আশা করছেন যে তাঁদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে, অন্যথায় তাঁরা আরও বড় আকারের আন্দোলন করতে প্রস্তুত রয়েছেন।

তারিখ ৩১.১০.২০২৪

একুশে আইন: চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা

চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়েছে। ২৫ অক্টোবর লালদীঘির মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মহাসমাবেশের দিন জাতীয় পতাকার ওপর ইসকনের গেরুয়া পতাকা স্থাপন করার অভিযোগে এ মামলা দায়ের করেন ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ ইতোমধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস নামে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী এ মামলাকে সনাতনীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেন। এই হলো গণতান্ত্রিক নতুন বাংলাদেশ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করলেও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা খেতে হয়, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং মামলা বাতিল করার দাবী জানাই।
একুশে আইন: চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা

চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়েছে। ২৫ অক্টোবর লালদীঘির মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মহাসমাবেশের দিন জাতীয় পতাকার ওপর ইসকনের গেরুয়া পতাকা স্থাপন করার অভিযোগে এ মামলা দায়ের করেন ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ ইতোমধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস নামে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী এ মামলাকে সনাতনীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেন। এই হলো গণতান্ত্রিক নতুন বাংলাদেশ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করলেও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা খেতে হয়, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং মামলা বাতিল করার দাবী জানাই।

চট্টগ্রাম, ৩১ অক্টোবর: চট্টগ্রাম শহরের নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থিত স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ (চন্দন কুমার ধর প্রকাশ) ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় ফিরোজ খান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি জাতীয় পতাকার উপর ইসকনের গেরুয়া পতাকা স্থাপন করে।

মামলার এজাহারে বিভিন্ন পর্যায়ের হিন্দু নেতৃবৃন্দের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে আছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, অজয় দত্ত, লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারী, গোপাল দাশ, কথক দাশ, প্রকৌশলী অমিত ধর, রনি দাশ, রাজীব দাশ, কৃষ্ণ কুমার দত্ত, জিকু চৌধুরী, নিউটন দে, তুষার চক্রবর্তী, মিথুন দে, রুপন ধর, রিমন দত্ত, সুকান্ত দাশ, বিশ্বজিৎ গুপ্ত, রাজেশ চৌধুরী এবং হৃদয় দাস। পুলিশ ইতোমধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রমাণ সংগ্রহ করে রাজেশ ও হৃদয়কে গ্রেপ্তার করেছে বলে কোতোয়ালি থানার ওসি ফজলুল কাদের চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন।

গত ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া বিভিন্ন হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে সনাতন জাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে ২৫ অক্টোবর লালদীঘির মাঠে মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখানে অংশ নিতে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার সনাতনী সমবেত হয়। মামলার অভিযোগ অনুসারে, চন্দন কুমার ধরসহ ৯ জন প্রধান আসামির ইন্ধনে আরও ১০ জন জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা স্থাপন করেন, যা স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের জন্ম দেয়।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর এক ভিডিও বার্তা প্রকাশিত হয়। এতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, “এই আন্দোলন সনাতনীদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে; এটা বর্তমান সরকার কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়।” তিনি এই মামলাকে সনাতনীদের আট দফা দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা বলে উল্লেখ করেন।

কোতোয়ালি থানার ওসি ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আরও আসামিদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

তারিখ ৩১.১০.২০২৪

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এড়াতে এবং ফেসবুক একাউন্টকে হ্যাকিং থেকে সুরক্ষিত রাখতে করণীয়

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যুবকদের সামাজিক মাধ্যম হ্যাকিং ও মিথ্যা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে প্রতারণার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা এইচআরসিবিএম (হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজ)। উগ্র গোষ্ঠীগুলি এবং বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ)-এর অপপ্রয়োগের ফলে নিরপরাধ সংখ্যালঘু যুবকদের জীবন ও স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ছে। অনলাইনে ধর্মীয় আলোচনা বা বিতর্কে অংশগ্রহণ করলে অনেক সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগের মুখোমুখি হতে হয়। ফেসবুকে ধর্মীয় বিতর্ক এড়িয়ে চলা এবং একাউন্টকে সুরক্ষিত রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিচে দেওয়া হলো।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এড়াতে এবং ফেসবুক একাউন্টকে হ্যাকিং থেকে সুরক্ষিত রাখতে করণীয়

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যুবকদের সামাজিক মাধ্যম হ্যাকিং ও মিথ্যা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে প্রতারণার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা এইচআরসিবিএম (হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজ)। উগ্র গোষ্ঠীগুলি এবং বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ)-এর অপপ্রয়োগের ফলে নিরপরাধ সংখ্যালঘু যুবকদের জীবন ও স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ছে। অনলাইনে ধর্মীয় আলোচনা বা বিতর্কে অংশগ্রহণ করলে অনেক সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগের মুখোমুখি হতে হয়। ফেসবুকে ধর্মীয় বিতর্ক এড়িয়ে চলা এবং একাউন্টকে সুরক্ষিত রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিচে দেওয়া হলো।

১. ধর্মীয় বিতর্কে না জড়ানো ও অভিযোগ এড়ানো

  • অপরিচিতদের সঙ্গে বিতর্ক এড়িয়ে চলুন: অপরিচিতদের সঙ্গে বা পাবলিক পোস্টে বিতর্ক এড়িয়ে চলুন।

  • নিরপেক্ষ থাকুন: ধর্মীয় বিষয় নিয়ে পোস্ট বা মন্তব্য এলে নিজের মতামত প্রকাশ না করে নিরপেক্ষ থাকুন। এর ফলে বিতর্ক এড়ানো সহজ হবে।

  • সব ধর্মকে সম্মান দেখান: কোনো ধর্মীয় ব্যক্তি, প্রতীক বা ধর্মীয় বিশ্বাসের ব্যাপারে নেতিবাচক মন্তব্য না করা উচিত। সম্মান দেখিয়ে কথা বললে বিতর্ক থেকে দূরে থাকা যায়।

  • সংবেদনশীল বিষয় এড়িয়ে চলুন: ধর্মীয় বিশ্বাস বা চর্চার বিতর্কে অংশ না নেয়া ভালো। এ ধরনের পোস্ট দেখলে মন্তব্য না করে এড়িয়ে চলুন।

  • রিপোর্ট করুন, মন্তব্য নয়: আপত্তিকর বা উত্তেজক কোনো পোস্ট দেখলে রিপোর্ট অপশনটি ব্যবহার করে ফেসবুককে জানান। নিজে মন্তব্য করার পরিবর্তে এ পদক্ষেপ নেওয়া নিরাপদ।

  • প্রাইভেসি সেটিংস নিয়ন্ত্রণে রাখুন: ফেসবুক প্রাইভেসি সেটিংস এমনভাবে ঠিক করুন যাতে শুধুমাত্র বন্ধুদের পোস্ট দেখতে বা মন্তব্য করতে দেওয়া যায়। এর ফলে আপনি অচেনা বা অবাঞ্ছিত মন্তব্য থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।

  • সতর্কতার সাথে শব্দ ব্যবহার করুন: ধর্মীয় বিষয়ে যদি কিছু শেয়ার করতেই হয় তবে শব্দচয়ন ও ভাষা ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। খারাপ শব্দ বা ব্যঙ্গাত্মক ভাষা এড়িয়ে চলুন।

২. ফেসবুক একাউন্টকে হ্যাক-প্রুফ করা

  • শক্ত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন: এমন পাসওয়ার্ড দিন যেটি জটিল এবং সহজে অনুমান করা যায় না। এছাড়াও অন্য একাউন্টের পাসওয়ার্ড পুনরায় ব্যবহার না করাই উত্তম।

  • টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন (2FA): এটি একটি নিরাপত্তা স্তর যোগ করে, যা লগইন করতে ফোন বা ইমেইলে প্রাপ্ত একটি কোড ব্যবহার করতে হয়।

  • লগইন সতর্কতা চালু করুন: যদি কোনো অপরিচিত ডিভাইস থেকে একাউন্টে প্রবেশ করা হয় তবে ফেসবুক থেকে নোটিফিকেশন পাওয়ার ব্যবস্থা চালু রাখুন।

  • যোগাযোগের তথ্য আপডেট রাখুন: আপনার ফোন নম্বর এবং ইমেইল ঠিকানা আপডেট রাখুন। এতে একাউন্টে প্রবেশ সমস্যা হলে পুনরুদ্ধার সহজ হবে।

  • ফিশিং প্রচেষ্টা থেকে সতর্ক থাকুন: সন্দেহজনক লিংক থেকে দূরে থাকুন, বিশেষ করে অপরিচিত উৎস থেকে। ফেসবুক কখনও পাসওয়ার্ড চেয়ে মেসেজ বা ইমেইল পাঠায় না।

  • সুরক্ষিত ডিভাইস ব্যবহার করুন: পাবলিক বা শেয়ারড কম্পিউটারে লগইন না করাই ভালো। করলেও সেশন শেষে লগআউট করে ব্রাউজিং হিস্টরি মুছে ফেলুন।

এই টিপসগুলো অনুসরণ করে আপনি ফেসবুক একাউন্টকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন এবং ধর্মীয় বিতর্ক এড়িয়ে চলতে পারেন, যা আপনার নিরাপত্তা ও মানসিক শান্তি রক্ষায় সহায়ক হবে।

তারিখ ২৯.১০.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু যুবকদের ব্লাসফেমি অভিযোগে হয়রানি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যুবকদের সামাজিক মাধ্যম হ্যাকিং ও মিথ্যা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে প্রতারণার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা এইচআরসিবিএম (হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজ)। উগ্র গোষ্ঠীগুলি এবং বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ)-এর অপপ্রয়োগের ফলে নিরপরাধ সংখ্যালঘু যুবকদের জীবন ও স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু যুবকদের ব্লাসফেমি অভিযোগে হয়রানি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যুবকদের সামাজিক মাধ্যম হ্যাকিং ও মিথ্যা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে প্রতারণার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা এইচআরসিবিএম (হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজ)। উগ্র গোষ্ঠীগুলি এবং বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ)-এর অপপ্রয়োগের ফলে নিরপরাধ সংখ্যালঘু যুবকদের জীবন ও স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ছে।

ঢাকা, ২৯ অক্টোবর: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিক অত্যাচারের এক ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজ (এইচআরসিবিএম)। সংস্থাটি জানিয়েছে, বিশেষ করে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের যুবকদের ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করে মিথ্যা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে তাঁদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এমনকি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই যুবকদের কোনো পূর্ব তদন্ত ছাড়াই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) আওতায় গ্রেফতার করা হচ্ছে।

একটি মারাত্মক ঘটনার শিকার হয়েছেন ১৭ বছর বয়সী উৎসব মণ্ডল। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী উপস্থিত থাকলেও তাঁকে মব লিঞ্চিং থেকে রক্ষা করা যায়নি। সরকার থেকে জানানো হয়েছে যে উৎসব বেঁচে আছেন, তবে তাঁর বর্তমান অবস্থান এবং তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট তথ্য নেই। এইচআরসিবিএম এখনো তাঁর অবস্থা জানার চেষ্টা করছে।

আরেকটি গুরুতর ঘটনার শিকার হৃদয় পাল। ফরিদপুরের এই যুবকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তাতে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট দেওয়া হয়। ফলস্বরূপ, তাঁকে সাতদিন আটক রাখা হয় এবং পরবর্তীতে সেনাবাহিনী আবার তাঁকে গ্রেপ্তার করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায় হৃদয়কে চোখ বেঁধে, হাত বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের পর একটি সামরিক গাড়িতে তোলা হয়। তাঁর বর্তমান অবস্থান ও ভবিষ্যৎও অজানা।

এইচআরসিবিএম-এর একজন মুখপাত্র জানান, “এই ঘটনাগুলি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু যুবকদের সুরক্ষা ব্যর্থতার চিত্র স্পষ্ট করে। যারা এই সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করছে ও বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ না করে, আইন প্রয়োগকারীরা ভিত্তিহীন অভিযোগে আক্রান্তদের গ্রেফতার করছে।”

এই ধরনের নির্যাতনের পাশাপাশি, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ছে যা ইতিমধ্যেই টানাপোড়েনের মুখে থাকা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জীবনকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার যখন সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগকে প্রাধান্য দেয়, তখনই উগ্র গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে এক ধরনের নিষ্ক্রিয়তা পরিলক্ষিত হয়।

এইচআরসিবিএম আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মানবাধিকার সংগঠন এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলিকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের এই নির্যাতন রোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি আশা প্রকাশ করেছে যে, বাংলাদেশের সরকার ডিজিটাল ফরেনসিক প্রোটোকল বাস্তবায়ন করবে, উগ্র গোষ্ঠীগুলিকে দায়ী করবে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

তারিখ ২৯.১০.২০২৪

বাংলাদেশি হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান

ভারতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলে বাংলাদেশি হিন্দুদের নিজ মাতৃভূমিতে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়েছেন। গত ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ৬৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। হোসাবলে বাংলাদেশি হিন্দুদের দেশ না ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এটি তাদের মাতৃভূমি এবং ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থা যেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, সেই দাবি জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশি হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান

ভারতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলে বাংলাদেশি হিন্দুদের নিজ মাতৃভূমিতে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়েছেন। গত ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ৬৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। হোসাবলে বাংলাদেশি হিন্দুদের দেশ না ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এটি তাদের মাতৃভূমি এবং ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থা যেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, সেই দাবি জানানো হয়েছে।

মথুরা, ২৬ অক্টোবর: ভারতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলে শনিবার বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “বাংলাদেশি হিন্দুদের সেখানেই থাকা উচিত, পালিয়ে যাওয়া উচিত নয়। এটি তাদের মাতৃভূমি।” মথুরায় আরএসএস-এর দুই দিনব্যাপী জাতীয় সভার সমাপ্তি দিনে হোসাবলে এ কথা বলেন।

হোসাবলে আরও বলেন, “ভারত সরকার বলেছে, তারা বাংলাদেশে সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের সুরক্ষা দেবে। আরএসএস-এর পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে যে, বাংলাদেশি হিন্দুদের সেখানেই থাকা উচিত, কারণ এটি তাদের জন্মভূমি।” তিনি আরও যোগ করেন, “ভারত ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল এবং বাংলাদেশের সেই ভূমির সঙ্গে ভারতের ইতিহাস জড়িত।”

গত ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ৬৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের এক ১০-পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জন এবং ৫ ও ৬ আগস্টের মধ্যে ২৫০ জন নিহত হয়েছেন, যা বাংলাদেশে নতুন একটি সহিংসতার সূচনা করে এবং এই সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারান।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশটির ৪৮টি জেলার ২৭৮টি স্থানে হিন্দু সম্প্রদায় হামলা ও হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। এই ঘটনাগুলিকে তারা “হিন্দু ধর্মের উপর আক্রমণ” বলে অভিহিত করেছে। দ্য ঢাকা ট্রিবিউন-এর একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক মো. মঈনুল ইসলামকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে যে, দুর্গাপূজার সময় ও পরে প্রায় ৩৫টি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং প্রায় ডজনখানেক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়, যারা দেশটির প্রায় ৮ শতাংশ জনসংখ্যা, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, সম্পত্তি এবং মন্দিরে হামলার শিকার হয়েছেন। সাম্প্রতিক ছাত্র-নেতৃত্বাধীন সহিংসতার সময় থেকে এই হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রীর পদচ্যুতির সাথে সংশ্লিষ্ট বলে জানানো হয়েছে।

হোসাবলে বলেন, “আমরা চাই, জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থা যেন এই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, যাতে তারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সম্মান নিয়ে বসবাস করতে পারে।”

তারিখ ২৬.১০.২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দুদের সুরক্ষা নিয়ে ব্রিফিং চাইলেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান রাজা কৃষ্ণমূর্তি

মার্কিন কংগ্রেসম্যান রাজা কৃষ্ণমূর্তি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বেড়ে চলা সহিংসতা এবং হয়রানির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এ বিষয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাছ থেকে একটি ব্রিফিং চেয়েছেন। গত আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা বেড়ে চলেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত হিন্দু, বৌদ্ধ, ও খ্রিস্টান ইউনিটি কাউন্সিলের তথ্যমতে প্রায় ২,০০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। কৃষ্ণমূর্তি ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এই বিষয়ে একটি ব্রিফিংয়ের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে হিন্দুদের সুরক্ষা নিয়ে ব্রিফিং চাইলেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান রাজা কৃষ্ণমূর্তি

মার্কিন কংগ্রেসম্যান রাজা কৃষ্ণমূর্তি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বেড়ে চলা সহিংসতা এবং হয়রানির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এ বিষয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাছ থেকে একটি ব্রিফিং চেয়েছেন। গত আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা বেড়ে চলেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত হিন্দু, বৌদ্ধ, ও খ্রিস্টান ইউনিটি কাউন্সিলের তথ্যমতে প্রায় ২,০০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। কৃষ্ণমূর্তি ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এই বিষয়ে একটি ব্রিফিংয়ের দাবি জানিয়েছেন।

ওয়াশিংটন, ১৮ অক্টোবর: মার্কিন কংগ্রেসম্যান রাজা কৃষ্ণমূর্তি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হয়রানির ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এ বিষয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাছে একটি ব্রিফিং চেয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে, যা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

কৃষ্ণমূর্তি মার্কিন স্টেট সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের উদ্দেশ্যে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় ঐতিহাসিকভাবে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি তাদের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক। ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ইউনিটি কাউন্সিল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২,০০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে নয়জন সংখ্যালঘু সদস্য নিহত হয়েছেন এবং ৬৯টি ধর্মীয় স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।”

কৃষ্ণমূর্তি তাঁর চিঠিতে বলেন, “ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধির এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমি ৩১ অক্টোবর, ২০২৪ এর মধ্যে একটি ব্রিফিংয়ের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিশেষ করে দুর্গাপূজা উৎসব চলাকালীন বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বাংলাদেশের সরকার এ ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে।”

উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসে স্টেট সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান মোহাম্মদ ইউনুসের বৈঠকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা প্রসঙ্গে গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল।

রাজা কৃষ্ণমূর্তি, মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের চারজন হিন্দু সদস্যের একজন, অন্যান্য হিন্দু সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন রো খান্না, প্রমীলা জয়াপাল, ও শ্রী থানেদার। এর আগেও তিনি বাংলাদেশের হিন্দুদের নিরাপত্তা ইস্যুতে বক্তব্য রেখেছেন।

আগস্টে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরপরই বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর সমন্বিত সহিংসতা বেড়ে চলায় তিনি স্টেট সেক্রেটারির কাছে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ইউনুসের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এই সহিংসতা বন্ধ এবং অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে তিনি আশাবাদী।

কৃষ্ণমূর্তি অতীতের ঘটনাগুলিও উল্লেখ করে বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এটি প্রথমবার নয় যে বাংলাদেশের সরকার বিরোধী আন্দোলনগুলি হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতায় রূপান্তরিত হয়েছে। ২০২১ সালের অক্টোবরের দাঙ্গায় ৯ জন নিহত হন এবং শতাধিক বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মন্দিরে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। ২০১৭ সালে প্রায় ১০৭ জন হিন্দু হত্যার শিকার হন এবং ৩৭ জন নিখোঁজ হন।” ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামী নেতা দেলওয়ার সাঈদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর যে সহিংসতা হয়েছিল, তা ছিল অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক।

এই পরিস্থিতিতে মার্কিন কংগ্রেসম্যান কৃষ্ণমূর্তি মার্কিন প্রশাসনের কাছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থা যেন সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তা নিশ্চিত করতে জোর দিয়েছেন।

তারিখ ২৬.১০.২০২৪

প্রশাসনের বোধোদয়: মাদারীপুরে ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি কালীপূজা মেলা দুই দিনের অনুমোদন

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় দীপাবলি ও কালীপূজাকে কেন্দ্র করে প্রায় আড়াই শ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলার আয়োজন নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কের পরে প্রশাসনের বোধোদয় হয়েছে এবং জেলা প্রশাসন দুই দিনের মেলার অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মেলার বিরোধীদের সঙ্গে সভা শেষে এই প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। এর আগে স্থানীয় আপত্তির মুখে মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
প্রশাসনের বোধোদয়: মাদারীপুরে ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি কালীপূজা মেলা দুই দিনের অনুমোদন

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় দীপাবলি ও কালীপূজাকে কেন্দ্র করে প্রায় আড়াই শ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলার আয়োজন নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কের পরে প্রশাসনের বোধোদয় হয়েছে এবং জেলা প্রশাসন দুই দিনের মেলার অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মেলার বিরোধীদের সঙ্গে সভা শেষে এই প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। এর আগে স্থানীয় আপত্তির মুখে মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

মাদারীপুর, ২৬ অক্টোবর: মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলায় দীপাবলি ও কালীপূজাকে কেন্দ্র করে আড়াই শ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলার অনুমতি নিয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত দুই দিনের জন্য মেলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মেলার বিরোধী পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাল হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা এবং মেলার পক্ষের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

কালকিনি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ প্রথম আলোকে জানান, জেলা প্রশাসকের মিটিংয়ে দুই দিনের মেলা চালানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তবে মেলার জন্য পূর্বে ইজারা দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতার চুক্তি বাতিল থাকবে এবং কালীপূজা উদ্‌যাপন কমিটিই মেলাটি পরিচালনা করবে।

উল্লেখ্য, ৩১ অক্টোবর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দীপাবলি ও কালীপূজা উদযাপন উপলক্ষে কালকিনি উপজেলার ভূরঘাটা এলাকায় এই ঐতিহ্যবাহী মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রায় ২৫০ বছর ধরে চলা এই মেলা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হলেও স্থানীয় ১২ জন ব্যক্তি ৯টি অভিযোগ তুলে মেলা বন্ধের দাবি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ও কালকিনি পৌরসভা মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।

জানা গেছে, চলতি বছরের ১ এপ্রিল ৮০ হাজার ৫০০ টাকা ইজারায় আকবর হোসেন সরদার নামে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে মেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে আওয়ামী লীগ নেতার ইজারা বাতিলের দাবি জানায় একটি মহল। এরপর তারা ৯টি কারণ দেখিয়ে মেলা বন্ধের আবেদন জানায়। এই সিদ্ধান্তে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রশাসক মোছা. ইয়াসমিন আক্তারের কাছে মেলার অনুমতির জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি আজিজুল হক মল্লিক জানান, কালীপূজা নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই; তবে মেলা নিয়ে স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীর আপত্তি থাকায় তারা অভিযোগ করেছেন। মেলার বিষয়ে জেলা প্রশাসক তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বিষয়টি লিখিত আকারে নোট করেন এবং সকল পক্ষের মতামত গ্রহণ করেন।

জামায়াতে ইসলামীর মাদারীপুর জেলা আমির আব্দুস সোবহান জানান, মেলার বিষয়টি নিয়ে বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারী মেলার বিরোধিতা করলেও, তারা মেলাটি সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হলে আপত্তি জানাননি। তিনি বলেন, “মেলার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা বিষয় জড়িত থাকায় অনেকেই মেলার জন্য অপেক্ষা করেন। সুন্দর পরিবেশে মেলাটি হলে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।”

কালীপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিমল কুন্ডু জানান, “কালীপূজা উপলক্ষে এই মেলায় দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে শুরু করে হাজারো দোকান বসে এবং লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। রাতের অন্ধকারে কিছু লোক ব্যানার টাঙিয়ে মেলা বন্ধের ঘোষণা দেওয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছিলাম। তবে প্রশাসনের সর্বশেষ মিটিংয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে মেলা চলবে এবং আমাদের লিখিত আবেদন করতে বলা হয়েছে।”

মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আজকের সভায় দুই দিনের জন্য মেলা চালানোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাল রোববার মেলার আয়োজকদের সঙ্গে সভা করে চূড়ান্ত অনুমতি দেওয়া হবে।

তারিখ ২৭.১০.২০২৪

মৌলবাদীদের কাছে আত্মসমর্পণ: মাদারীপুরে ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলা স্থগিত

মাদারীপুরের কালকিনিতে ২৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দীপাবলি ও কালীপূজা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এ মেলাটি বন্ধে স্থানীয় ১২ জন ব্যক্তি অভিযোগ তুলে ধরেন, যা বিবেচনা করে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা মেলা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিযোগে মেলায় অপ্রীতিকর ঘটনাসহ নানা সমস্যা উত্থাপিত হয়েছে। তবে আয়োজক ও ব্যবসায়ীরা এ সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং মেলা স্থগিত হলে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মৌলবাদীদের কাছে আত্মসমর্পণ: মাদারীপুরে ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলা স্থগিত

মাদারীপুরের কালকিনিতে ২৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দীপাবলি ও কালীপূজা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এ মেলাটি বন্ধে স্থানীয় ১২ জন ব্যক্তি অভিযোগ তুলে ধরেন, যা বিবেচনা করে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা মেলা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিযোগে মেলায় অপ্রীতিকর ঘটনাসহ নানা সমস্যা উত্থাপিত হয়েছে। তবে আয়োজক ও ব্যবসায়ীরা এ সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং মেলা স্থগিত হলে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

মাদারীপুর, ২৬ অক্টোবর: মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কুন্ডুবাড়ি মেলাটি দীপাবলি ও কালীপূজা উপলক্ষে প্রায় আড়াই’শ বছর ধরে হয়ে আসছে। প্রতি বছর হাজারো মানুষ এই ঐতিহ্যবাহী মেলাতে আসেন, যেখানে বিভিন্ন ধরনের দোকান বসে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য কেনা-বেচা হয়। কিন্তু এ বছর স্থানীয় ১২ জন ব্যক্তির আপত্তি ও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মেলাটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

মেলা আয়োজনের ইজারাদার আকবর হোসেন সরদার বলেন, “প্রতি বছর শান্তিপূর্ণভাবে মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এবার ইসলামী আন্দোলনের নেতা ও স্থানীয় আলেম সমাজের প্রতিনিধিরা অভিযোগ তুলে ধরেছেন। তারা আমাকে বলেছেন, হিন্দুদের মেলায় মুসলমানদের যেতে নিষেধ করা হয়েছে এবং এতে মুসলমানদের সঙ্গেও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।” আকবর হোসেন আরও বলেন, “আমি পৌরসভা থেকে ইজারা নিয়ে অনেক দোকানিকে জায়গা বরাদ্দ দিয়েছি। দোকানিরা ঋণ নিয়ে মালামাল প্রস্তুত করেছেন, কিন্তু মেলা বন্ধ হলে তাদের আর্থিক ক্ষতি হবে।”

আয়োজক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালকিনির ভূরঘাটা এলাকায় মেলাটি প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যের অংশ। প্রতি বছর দীপাবলি ও কালীপূজাকে ঘিরে এই মেলায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। এবারে মেলার আয়োজন বন্ধ রাখতে স্থানীয় ১২ জন ব্যক্তি নয়টি কারণ উল্লেখ করে মেলাটি বন্ধের দাবি জানায়। অভিযোগকারীদের মধ্যে ভূরঘাটা বাজার মসজিদের ইমাম ওমর ফারুক বলেন, “আমরা মূলত ইসলামী আন্দোলনের কর্মী এবং স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে মেলা বন্ধের দাবি জানিয়েছি।” তবে তাদের দাবি ছিল, মেলার কারণে নানারকম অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে এবং সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হয়।

তবে মেলা আয়োজন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিমল কুন্ডু জানান, “কালীপূজাকে ঘিরেই এই মেলায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি হয়। কিন্তু রাতের আঁধারে কিছু মানুষ মেলা বন্ধের ঘোষণা দিয়ে ব্যানার টাঙিয়েছে। কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন এবং মর্মাহত।”

পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে কালকিনি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ বলেন, “স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি মেলার বিভিন্ন সমস্যা উল্লেখ করে স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার জন্য লিখিত আবেদন করেছেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতে এবার মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।”

অভিযোগকারীদের উল্লেখিত নয়টি সমস্যার মধ্যে রয়েছে মেলায় মারামারি ও হত্যাকাণ্ড, জুয়া, মাদকসেবন, চাঁদাবাজি, সামাজিক অবক্ষয় এবং যানজট সৃষ্টি। কালকিনি কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও অভিযোগকারী গোলাম হোসেন বলেন, “আমরা স্থানীয়দের অভিযোগ তুলে ধরেছি, তবে কারও নাম উল্লেখ করিনি।”

মেলার ওপর স্থগিতাদেশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোছা. ইয়াসমিন আক্তার বলেন, “মেলা আমাদের সংস্কৃতির অংশ এবং কুন্ডুবাড়ির মেলাটি একটি ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। মেলা বন্ধের বিষয়টি নিয়ে যারা অভিযোগ তুলেছেন, তাদের সাথে আলোচনায় বসে সমাধান খোঁজা হবে। তবে জেলা প্রশাসন মেলা বন্ধের পক্ষপাতী নয়।”

এমনকি মেলায় বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রের দোকান বসানো এবং প্রথাগতভাবে দীপাবলি ও কালীপূজার সময়কালে মেলা আয়োজন করে আসায় হাজারো দোকানি ও ব্যবসায়ী মেলাটিকে ঘিরে আর্থিকভাবে নির্ভরশীল। মেলা স্থগিত করা হলে দোকানিরা ঋণের বোঝা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলেও উল্লেখ করেন আয়োজকরা।

এই ঐতিহ্যবাহী মেলা বন্ধ রাখার বিষয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ দেখা গেছে। যদিও স্থানীয় প্রশাসন সমস্যার সমাধানে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান খুঁজে বের করার কথা জানিয়েছে, তবু এ সিদ্ধান্তে স্থানীয় সনাতন সম্প্রদায়ের মাঝে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে।

তারিখ ২৬.১০.২০২৪

তিন দশকের শিক্ষকতা শেষে অশ্রুসিক্ত বিদায় গৌর চন্দ্র ঘোষের

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বেজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গৌর চন্দ্র ঘোষ তাঁর দীর্ঘ ৩০ বছরের শিক্ষকতা শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিদায় নিলেন। নিজ হাতে গড়ে তোলা বিদ্যালয়টি তাঁর অবিচল শিক্ষা ও সেবার প্রতীক হয়ে উঠেছে। এ বিদায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাই আবেগাপ্লুত হন। তাঁর শিক্ষার আলোতে গড়ে উঠেছেন অনেক বিচারক, কর্মকর্তা ও শিক্ষিত মানুষ। তাঁর সততা, অধ্যবসায় ও নিষ্ঠা স্মরণীয় হয়ে থাকবে সহকর্মীদের মাঝে।
তিন দশকের শিক্ষকতা শেষে অশ্রুসিক্ত বিদায় গৌর চন্দ্র ঘোষের

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বেজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গৌর চন্দ্র ঘোষ তাঁর দীর্ঘ ৩০ বছরের শিক্ষকতা শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিদায় নিলেন। নিজ হাতে গড়ে তোলা বিদ্যালয়টি তাঁর অবিচল শিক্ষা ও সেবার প্রতীক হয়ে উঠেছে। এ বিদায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাই আবেগাপ্লুত হন। তাঁর শিক্ষার আলোতে গড়ে উঠেছেন অনেক বিচারক, কর্মকর্তা ও শিক্ষিত মানুষ। তাঁর সততা, অধ্যবসায় ও নিষ্ঠা স্মরণীয় হয়ে থাকবে সহকর্মীদের মাঝে।

ঝিনাইদহ, ২৪ অক্টোবর: নিজ হাতে বিদ্যালয় গড়ে তোলা শিক্ষক গৌর চন্দ্র ঘোষ আজ বৃহস্পতিবার তাঁর দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনের সমাপ্তি টানলেন। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বেজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এই শিক্ষকের বিদায়ের সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ যেন এক আবেগময় দৃশ্য। জীবনের ৩০ বছর ৯ মাস ২২ দিন তিনি এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে কেটেছেন। অনেকেই গৌর চন্দ্র ঘোষকে তাঁদের শিক্ষাজীবনের অনুপ্রেরণা ও সাফল্যের প্রেরণা হিসেবে মনে করেন।

গৌর চন্দ্র ঘোষ প্রথমে নিজের জমি দান করে বেজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার কাজে অংশ নেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ১৯৯৩ সালের শেষ দিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে বাঁশ কেটে তৈরি করেন স্কুলঘর। ১৯৯৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাংলার শিক্ষক হিসেবে পাঠদান শুরু করেন তিনি। প্রথম সাত বছর বিনা পারিশ্রমিকে বিদ্যালয়ে কাজ করেন। পরে ২০০০ সালে প্রথমবারের মতো বেতন হিসেবে ২ হাজার ১০০ টাকা পান। সেই থেকে তার বেতন ধীরে ধীরে বাড়লেও তাঁর উৎসর্গ কখনো কমেনি।

গৌর চন্দ্র ঘোষের শিক্ষা ও সততার উদাহরণ অগণিত শিক্ষার্থীর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর বহু ছাত্র এখন বিচারক, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, এমনকি নৌবাহিনীর উচ্চপদে কর্মরত আছেন। তাঁর সহকর্মীরা বলেন, গৌর চন্দ্র ছিলেন একজন আদর্শবান ও সত্যানিষ্ঠ শিক্ষক। বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাবেও তাঁর সততা অনন্য। কখনো কোনো অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে উঠেনি।

বিদায়ী মুহূর্তে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ মাহমুদ বলেন, “একজন শিক্ষানুরাগী, নম্র ও ভদ্র সহকর্মীকে আজ আমরা বিদায় জানালাম। তাঁর সততা এবং নিরলস প্রচেষ্টা প্রতিষ্ঠানটিকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। এই দীর্ঘ পথচলায় তাঁকে পাশে পেয়ে আমরা ধন্য।” তিনি জানান, তাঁদের স্কুলের তিনটি ভবন, সাতটি শ্রেণিকক্ষ এবং দুটি অফিস ও কমন রুম তৈরিতে গৌর চন্দ্র ঘোষের অসামান্য ভূমিকা রয়েছে।

বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. রাশেদুজ্জামান ও অন্য শিক্ষক-কর্মচারীরা। বিদায়ী শিক্ষককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং সবাই তাঁকে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেন। এছাড়াও একসময়ের সহকর্মী জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. আক্তার জাহান এবং চাঁচড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু আলম এই বিদায়ের খবর শুনে ছুটে আসেন। আক্তার জাহান বলেন, “গৌর চন্দ্র খুবই সৎ ও মেধাবী শিক্ষক। তাঁর সততার কারণে বিদ্যালয়ের একটি টাকাও অপচয় হয়নি।”

গৌর চন্দ্র ঘোষের সততা ও নিষ্ঠা নিয়ে তার সহকর্মী এবং শিক্ষার্থীদের মতো এলাকাবাসীরও গর্ব। শিক্ষকতার জীবনের শেষ দিনে এই বিদায় অনুষ্ঠানে সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে তাঁর অবদানের কথা স্মরণ করেন। বিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তাঁকে একজন অনুপ্রেরণাদায়ী শিক্ষক হিসেবে মনে রাখবে সবাই।

এ বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও আগামী ১৪ নভেম্বর বেজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বড় করে এক বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তারিখ ২৬.১০.২০২৪

চট্টগ্রামে সনাতন জাগরণ মঞ্চের গণসমাবেশ: আট দফা দাবিতে লংমার্চের ঘোষণা

চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে সনাতন ধর্মাবলম্বী সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ আট দফা দাবিতে গণসমাবেশের আয়োজন করেছে। আজ শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ থেকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সমাবেশ শেষে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় ট্রাইব্যুনাল গঠন, সংখ্যালঘু কমিশন প্রতিষ্ঠা, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটিসহ আট দফা দাবি জানিয়েছেন। সমাবেশে হাজারো নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমবেত হন।
চট্টগ্রামে সনাতন জাগরণ মঞ্চের গণসমাবেশ: আট দফা দাবিতে লংমার্চের ঘোষণা

চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে সনাতন ধর্মাবলম্বী সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ আট দফা দাবিতে গণসমাবেশের আয়োজন করেছে। আজ শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ থেকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সমাবেশ শেষে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় ট্রাইব্যুনাল গঠন, সংখ্যালঘু কমিশন প্রতিষ্ঠা, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটিসহ আট দফা দাবি জানিয়েছেন। সমাবেশে হাজারো নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমবেত হন।

চট্টগ্রাম, ২৫ অক্টোবর: চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আজ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ আট দফা দাবিতে এক গণসমাবেশের আয়োজন করেছে। সমাবেশে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত হাজারো সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ বিভিন্ন স্লোগান ও ফেস্টুনসহ অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশে বক্তারা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশের প্রধান বক্তা, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “আমাদের উৎখাতের চেষ্টা হলে এর পরিণাম ভয়াবহ হবে।” তিনি আরও বলেন, “যত নিপীড়ন করা হবে, সনাতনী সম্প্রদায় ততই ঐক্যবদ্ধ হবে এবং দাবি আদায়ে আমাদের আন্দোলন চলবে।” চিন্ময় কৃষ্ণ দাস জানান, লালদীঘি মাঠে সমবেত সাধুরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার ও দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য ঢাকার দিকে লংমার্চ করবে।

সমাবেশে প্রধান আটটি দাবির মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার কার্যকর করতে ট্রাইব্যুনাল গঠন, সংখ্যালঘু কমিশন প্রতিষ্ঠা, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিনের ছুটি। “আমার মাটি আমার মা, এ দেশ ছেড়ে যাব না” স্লোগানে মুখরিত মাঠে উপস্থিত বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের পুরোহিত ও মহারাজরা একসঙ্গে অংশগ্রহণ করেন এবং সমাবেশে একাধিক দাবির পক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

বক্তৃতায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস আরও বলেন, “কেউ যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালায়, তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব।” তিনি জানান, বর্তমান সময়ে দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন বেড়ে চলেছে এবং প্রশাসনও এ ব্যাপারে অবহিত। তিনি জানান, শুধু সংখ্যালঘু পরিচয়ের কারণে অনেককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিন্দু ছাত্রদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।

এই গণসমাবেশে অন্যান্য বক্তারা তাদের বক্তব্যে জানান, দেশে বর্তমানে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষায় কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। পটিয়া পাঁচরিয়া তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ রবীশ্বরানন্দ পুরী মহারাজ বলেন, “এই দেশ আমাদের এবং আমরা এর অধিকার রক্ষা করব।” তিনি জানান, সংখ্যালঘু অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। কৈবল্যধাম আশ্রমের মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য বলেন, “সনাতনী সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ হওয়া এখন সময়ের দাবি।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন শংকর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ তপনানন্দ গিরি মহারাজ, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী এবং অন্যান্য মঠ-মন্দিরের পুরোহিত ও মহারাজরা।

তারিখ ২৫.১০.২০২৪

নড়াইলে হিন্দু স্কুলশিক্ষিকা শ্বাসরোধে খুন, স্বর্ণালংকার-ল্যাপটপ লুট

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চরদৌলতপুর গ্রামে গতকাল রোববার গভীর রাতে এক নারী প্রধান শিক্ষককে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। সবিতা রানী বালা (৫৭), যিনি চরদৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন, তাঁর মরদেহ বাড়ির ঘরে পাওয়া যায়। দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে তাঁকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার ও ল্যাপটপ নিয়ে গেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এটি লুটের উদ্দেশ্যে হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নড়াইলে হিন্দু স্কুলশিক্ষিকা শ্বাসরোধে খুন, স্বর্ণালংকার-ল্যাপটপ লুট

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চরদৌলতপুর গ্রামে গতকাল রোববার গভীর রাতে এক নারী প্রধান শিক্ষককে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। সবিতা রানী বালা (৫৭), যিনি চরদৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন, তাঁর মরদেহ বাড়ির ঘরে পাওয়া যায়। দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে তাঁকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার ও ল্যাপটপ নিয়ে গেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এটি লুটের উদ্দেশ্যে হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নড়াইল, ২১ অক্টোবর: নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের চরদৌলতপুর গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সবিতা রানী বালা (৫৭) কে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে নিজ বাড়ির ঘর থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সবিতা রানী বালা চরদৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন এবং এলাকার একজন সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

নিহতের স্বামী পরিতোষ কুমার মণ্ডল জানান, তাঁরা একটি টিনশেড ঘরে বসবাস করতেন। ঘরটিতে টিনের চালা ও বেড়া রয়েছে, মেঝে ও দেয়াল কাঁচা মাটির। সাধারণত সবিতা রানী শয়নকক্ষের পাশের একটি ছোট কক্ষে পড়াশোনা ও অফিসের কাজ করতেন এবং সেখানেই রাতে একা ঘুমাতেন। গতরাতেও তিনি সেই ঘরেই ঘুমিয়েছিলেন।

পরিতোষ কুমার মণ্ডল বলেন, “রাত ১২টার দিকে সবিতা পড়াশোনা শেষ করে ঘুমাতে যান। রাত সাড়ে তিনটার দিকে পূজা-অর্চনা করতে উঠি, তখন দেখি তাঁর ঘরের বাইরে শিকল দেওয়া। অন্যদের ডেকে শিকল খুলে ঘরে ঢুকে দেখি বিছানায় তাঁর মরদেহ পড়ে আছে। তাঁর গলায় কাপড় ঢোকানো, হাত-পা বাঁধা। তাঁর গহনা এবং ল্যাপটপও নেই।”

তিনি আরও জানান, দুর্বৃত্তরা কক্ষের পাশে মাটি খুঁড়ে (সিঁদ কেটে) ঘরে প্রবেশ করে এবং তাঁকে হত্যা করে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। নিহতের হাতের বালা, গলার চেইন, কানের দুল, একটি আংটি এবং ব্যবহৃত ল্যাপটপ খোয়া গেছে।

ঘটনাস্থলে লোহাগড়া থানার পুলিশ উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্বর্ণালংকার ও ল্যাপটপ লুটের উদ্দেশ্যে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই নির্মম ঘটনায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী শোকাহত ও আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনা তদন্ত করে দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করতে তাঁরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

তারিখ ২৬.১০.২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় হিন্দু গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা, নগদ অর্থ-স্বর্ণালংকার লুট

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের দৌলাতদিয়াড় গ্রামের এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে অঞ্জলি প্রামাণিক (৫০) নামের এই নারীকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে এবং বাড়ি থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশসহ গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং তদন্ত কাজ শুরু করে। নিহতের পরিবার শোকাহত ও আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গায় হিন্দু গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা, নগদ অর্থ-স্বর্ণালংকার লুট

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের দৌলাতদিয়াড় গ্রামের এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে অঞ্জলি প্রামাণিক (৫০) নামের এই নারীকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে এবং বাড়ি থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশসহ গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং তদন্ত কাজ শুরু করে। নিহতের পরিবার শোকাহত ও আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা, ২০ অক্টোবর: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় আজ রোববার সকালে অঞ্জলি প্রামাণিক (৫০) নামের এক গৃহবধূকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আলুকদিয়া ইউনিয়নের দৌলাতদিয়াড় গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় তাঁর নিজ বাড়িতে এই নির্মম ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা হত্যাকাণ্ডের পর ঘর থেকে নগদ ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। অঞ্জলি প্রামাণিক ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা নরসুন্দর গণেশ প্রামাণিকের স্ত্রী। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে একা ছিলেন, আর তাঁর স্বামী গণেশ প্রামাণিক স্থানীয় আলুকদিয়া বাজারে তাঁর সেলুনে ছিলেন।

বেলা ১১টার দিকে গণেশ প্রামাণিকের ভাতিজি ঐশি বিশ্বাস (১৭), যিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী, অসুস্থ পিসিকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে তাঁদের বাড়িতে আসেন। তবে গেট ভেতর থেকে বন্ধ থাকায় বারবার ধাক্কা দিয়ে সাড়া না পেয়ে ঐশি প্রতিবেশী মিতালী সূত্রধরকে সহায়তার জন্য ডাকেন। এরপর মিতালী সূত্রধরের সহায়তায় কয়েকজন কিশোর প্রাচীর টপকে গেট খুলে দেয়। ঘরে ঢুকে তাঁরা অঞ্জলি প্রামাণিকের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান।

পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে সদর থানা-পুলিশ, গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এর একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নিহতের দেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। এ সময় বাড়ির ভেতরে নিহতের স্বজনদের আহাজারি শোনা যায়।

নিহতের স্বামী গণেশ প্রামাণিক জানান, বাড়িতে জমি বিক্রির বায়নার টাকা এবং কিছু স্বর্ণালংকার ছিল। ঘটনার পর খুনিরা নগদ টাকা ও কিছু স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে বলে ধারণা করছেন তিনি। তবে তাঁর পরিবার কারও সাথে শত্রুতার কোনো ঘটনা মনে করতে পারছে না। গণেশ প্রামাণিক আরও বলেন, তিনি এই হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত নন।

নিহতের পরিবারের সূত্রে জানা যায়, ২০ বছর আগে গণেশ-অঞ্জলি দম্পতির একমাত্র সন্তান সঞ্চিতা বিশ্বাস শ্বশুরবাড়িতে পারিবারিক অশান্তির কারণে আত্মহত্যা করেন। এরপর থেকেই গণেশ-অঞ্জলি দম্পতি তাঁদের দৌলাতদিয়াড়ের আধাপাকা টিনশেডের বাড়িতে একসঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী জানান, এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সদর থানা-পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং সিআইডি তদন্ত শুরু করেছে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে এবং ঘটনার কারণ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনায় আতঙ্কিত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর প্রশ্ন তুলেছেন।

তারিখ ২৬.১০.২০২৪

বাংলাদেশের হিন্দুদের পাশে দাঁড়াতে হবে ভারত ও বিশ্ব হিন্দুদের: মোহন ভাগবত

আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, বাংলাদেশে নির্যাতিত হিন্দু সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়াতে হবে ভারত সরকার ও বিশ্বজুড়ে হিন্দুদের। দশেরার এক সমাবেশে তিনি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, এই নির্যাতন দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, এবং যতক্ষণ না কট্টরপন্থী মানসিকতা দূর হচ্ছে, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিপদ কাটবে না। তিনি অবৈধ অনুপ্রবেশ ও তার ফলে ভারতে জনসংখ্যা ভারসাম্যহীনতার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ভাগবত বলেন, হিন্দুরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকে, তবে নির্যাতনের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
বাংলাদেশের হিন্দুদের পাশে দাঁড়াতে হবে ভারত ও বিশ্ব হিন্দুদের: মোহন ভাগবত

আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, বাংলাদেশে নির্যাতিত হিন্দু সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়াতে হবে ভারত সরকার ও বিশ্বজুড়ে হিন্দুদের। দশেরার এক সমাবেশে তিনি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, এই নির্যাতন দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, এবং যতক্ষণ না কট্টরপন্থী মানসিকতা দূর হচ্ছে, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিপদ কাটবে না। তিনি অবৈধ অনুপ্রবেশ ও তার ফলে ভারতে জনসংখ্যা ভারসাম্যহীনতার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ভাগবত বলেন, হিন্দুরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকে, তবে নির্যাতনের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

নয়াদিল্লি, ১২ অক্টোবর: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত শনিবার (১২ অক্টোবর) বলেছেন, বাংলাদেশে নির্যাতিত হিন্দু সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়াতে হবে ভারত সরকার এবং সারা বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়কে। দশেরার এক সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংস অভ্যুত্থানের তাৎক্ষণিক কারণ থাকলেও, এটি সেখানে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একটি নির্যাতনের ঐতিহ্যকেই নির্দেশ করে।”

মোহন ভাগবত বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় একত্রিত হয়ে নিজ নিজ ঘর থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, যার ফলে কিছুটা সুরক্ষা পাওয়া গেছে। তবে যতক্ষণ না সেই নির্যাতনকারী ও উগ্রবাদী মনোভাব দূর হচ্ছে, ততক্ষণ হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলি হুমকির সম্মুখীন হয়েই থাকবে।

এদিকে, বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ এবং এর ফলে ভারতে জনসংখ্যার ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি জনসাধারণের জন্য একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। ভাগবত বলেন, “এটি জাতীয় নিরাপত্তা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রশ্ন উত্থাপন করে।”

বাংলাদেশের নির্যাতিত হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে ভাগবত বলেন, “বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানো জরুরি, বিশেষত ভারত সরকার ও বিশ্বজুড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে।” তিনি আরও বলেন, মানবতা, দানশীলতা ও সদিচ্ছার পক্ষে যারা আছেন, তাদের উচিত এই সংকটময় মুহূর্তে এগিয়ে এসে সমর্থন জোগানো।

হিন্দুদের উদ্দেশ্যে ভাগবত বলেন, বাংলাদেশ পরিস্থিতি থেকে শেখার বিষয় হলো যে, হিন্দুরা যদি বিভক্ত ও দুর্বল থাকে, তবে দুষ্ট শক্তিরা নির্যাতনের সুযোগ পাবে। তিনি বলেন, “হিন্দুরা একতাবদ্ধ না হলে তাদের উপর নির্যাতন নেমে আসবে, এবং সেই জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

মোহন ভাগবত বলেন, “বাংলাদেশে কিছু আলোচনায় বলা হচ্ছে, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে সহায়তা করতে পারে কারণ তাদের পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে এবং তারা ভারতকে রুখে দিতে পারবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এমন আলোচনা এবং মতবাদ প্রচারিত হচ্ছে যে ভারতকে বাধা দেওয়ার জন্য কিছু শক্তি কাজ করছে।

তিনি বলেন, “আমরা জানি কারা এই ধরনের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রচেষ্টা কেবল বাংলাদেশেই নয়, ভারতেও এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করতে তৎপর। এ ধরনের শিল্পগুলো কাজ করছে, যাতে ভারতকে রুখে দেওয়া যায়। গত বছরও এ বিষয়ে আমি আলোচনা করেছি এবং কয়েকজন বলেছিল যে, এই বিষয়গুলো এখানে নেই, তবে এগুলো অনেক দিন ধরেই রয়েছে।”

দশেরা উপলক্ষে আরএসএসের প্রতিষ্ঠা দিবসে বক্তৃতা রাখতে গিয়ে ভাগবত হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশ পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে উগ্রবাদী মানসিকতা অব্যাহত থাকবে, ততদিন হিন্দু সম্প্রদায় এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুরা চরম সংকটে থাকবে।

তারিখ ১৩.১০.২০২৪

দুর্গাপূজার পর ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজ ধরতে সাঁড়াশি অভিযান

দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার পর দেশব্যাপী ছিনতাই, মাদক, ও চাঁদাবাজদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম। পূজার সময়কালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পূজা চলাকালে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন প্রায় তিন লাখ সদস্য। আইজিপি দৃঢ়ভাবে বলেন, অপরাধীরা কোনোভাবেই ছাড় পাবে না, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে, রাজনৈতিক পরিচয়েও কেউ রেহাই পাবে না।
দুর্গাপূজার পর ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজ ধরতে সাঁড়াশি অভিযান

দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার পর দেশব্যাপী ছিনতাই, মাদক, ও চাঁদাবাজদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম। পূজার সময়কালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পূজা চলাকালে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন প্রায় তিন লাখ সদস্য। আইজিপি দৃঢ়ভাবে বলেন, অপরাধীরা কোনোভাবেই ছাড় পাবে না, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে, রাজনৈতিক পরিচয়েও কেউ রেহাই পাবে না।

ঢাকা, ১২ অক্টোবর: দুর্গাপূজার পর দেশজুড়ে ছিনতাই, মাদক ও চাঁদাবাজি রোধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম। তিনি কঠোরভাবে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, কোনো ঘটনা ঘটিয়ে অপরাধীরা পার পাবে না। রাজনৈতিক পরিচয়ে কোনো অপরাধীকেও ছাড় দেওয়া হবে না। আইজিপি শনিবার রাজধানীর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে দুর্গাপূজার মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

আইজিপি জানান, আগামীকাল রবিবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা শেষ হবে। বিসর্জনের জন্য বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ বছর সারা দেশে ৩২ হাজারের বেশি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন হচ্ছে। পূজা নির্বিঘ্নে, শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে প্রায় সোয়া দুই লাখ আনসার সদস্য নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছেন। পুলিশ বাহিনীর ৭৫ হাজার সদস্য সরাসরি এই নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন রয়েছে।

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এবং কন্ট্রোল রুম সার্বক্ষণিক চালু রয়েছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, যখনই পূজাসংক্রান্ত কোনো অভিযোগ আসছে, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, পূজাকে কেন্দ্র করে ১ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে ৪৩টি ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৪টি মামলা হয়েছে, ২৯টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আইজিপি ময়নুল ইসলাম আরও বলেন, যারা পূজার সময় অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করেছে তারা সংখ্যায় খুবই কম। কিন্তু কোনো অপরাধীই ছাড় পাবে না। অপরাধী যেই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, রাজনৈতিক পরিচয়ে কোনো অপরাধীকেও ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পুলিশের এই অভিযান পূজার পর আরও কঠোর হবে বলে তিনি জানান।

এই সময়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাইনুল হাসানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পূজার সময়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি দুর্গাপূজা শেষে সুনির্দিষ্ট অভিযানের মাধ্যমে সমাজে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, এবং মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আইজিপি।

তারিখ ১৩.১০.২০২৪

নেত্রকোনায় ভারত অনুপ্রবেশের চেষ্টায় বাবা-মেয়েসহ আটক ৫

নেত্রকোনার দুর্গাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন ভারতীয়ও রয়েছেন। বিজিবি তাদের আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশি ও ভারতীয় মুদ্রা এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আটক ব্যক্তিরা হলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আলীপুর জেলার শামুকতলা উপজেলার বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ (৫৬), নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাড়ইপাড়া গ্রামের জীবন দেবনাথ (২২), কলমাকান্দা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের অজিত দেবনাথ (৫২), একই গ্রামের পরিমল দেবনাথ (৪৫) ও তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা দেবনাথ (১৬)।
নেত্রকোনায় ভারত অনুপ্রবেশের চেষ্টায় বাবা-মেয়েসহ আটক ৫

নেত্রকোনার দুর্গাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন ভারতীয়ও রয়েছেন। বিজিবি তাদের আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশি ও ভারতীয় মুদ্রা এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আটক ব্যক্তিরা হলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আলীপুর জেলার শামুকতলা উপজেলার বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ (৫৬), নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাড়ইপাড়া গ্রামের জীবন দেবনাথ (২২), কলমাকান্দা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের অজিত দেবনাথ (৫২), একই গ্রামের পরিমল দেবনাথ (৪৫) ও তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা দেবনাথ (১৬)।

নেত্রকোনা, ১২ অক্টোবর: নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় পাঁচজনকে আটক করেছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ভারতীয়ও রয়েছেন। বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার দুপুরে বিজয়পুর সীমান্ত এলাকার ১১৫৪/৪-এস পিলারের কাছ থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আলীপুর জেলার শামুকতলা উপজেলার বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ (৫৬), নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাড়ইপাড়া গ্রামের জীবন দেবনাথ (২২), কলমাকান্দা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের অজিত দেবনাথ (৫২), একই গ্রামের পরিমল দেবনাথ (৪৫) ও তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা দেবনাথ (১৬)। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে ৩৮ হাজার ৪৯০ ভারতীয় রুপি, ৫ হাজার ৪৬৯ বাংলাদেশি টাকা এবং তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

বিজিবি নেত্রকোনা-৩১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, বিজয়পুর মনতলা স্থানে টহল দেওয়ার সময় বিজিবির সদস্যরা সন্দেহজনকভাবে পাঁচজনকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন যে, তারা ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাফিউল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক মো. সাইফুল রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথকে। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ, বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে নিজের কাছে রাখা এবং মানবপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাঁচজনকেই গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং তাদের আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।

এ ধরনের মানবপাচার রোধে সীমান্ত এলাকায় বিজিবির নজরদারি আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামান।

তারিখ ১৩.১০.২০২৪

ঢাকায় পূজামণ্ডপে হামলা ও সাতক্ষীরায় মুকুট চুরিতে ভারতের উদ্বেগ

ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে পেট্রলবোমা হামলা এবং সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে স্বর্ণের মুকুট চুরির ঘটনায় ভারতের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই হামলা ও চুরির ঘটনা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থানগুলোতে পরিকল্পিত আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই বিবৃতি এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ প্রকাশ করেছেন।
ঢাকায় পূজামণ্ডপে হামলা ও সাতক্ষীরায় মুকুট চুরিতে ভারতের উদ্বেগ

ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে পেট্রলবোমা হামলা এবং সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে স্বর্ণের মুকুট চুরির ঘটনায় ভারতের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই হামলা ও চুরির ঘটনা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থানগুলোতে পরিকল্পিত আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই বিবৃতি এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ প্রকাশ করেছেন।

নয়াদিল্লি, ১২ অক্টোবর: ঢাকার পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে পেট্রলবোমা হামলা এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে স্বর্ণের মুকুট চুরির ঘটনায় ভারত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ শনিবার এক বিবৃতিতে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের ধর্মীয় স্থানগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই বিবৃতি এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ প্রকাশ করেছেন।

ভারতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে হামলা এবং সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে স্বর্ণের মুকুট চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করার একটি পরিকল্পিত আক্রমণ। আমরা আশা করছি, বাংলাদেশের সরকার হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”

পেট্রলবোমা হামলার ঘটনা ঘটে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকায়। স্থানীয়দের মতে, পূজামণ্ডপের পাশে গলিতে দাঁড়িয়ে কয়েকজন যুবক পূজার মঞ্চ লক্ষ্য করে একটি বোতল ছুড়ে মারেন। এতে পেট্রলবোমার বিস্ফোরণ ঘটে এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবকরা হামলাকারীদের থামাতে গেলে তারা ছুরিকাঘাত করেন, এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং মণ্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে, সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে স্বর্ণের মুকুটটি চুরি হয়েছে। মন্দিরের প্রতিমার মাথায় পরানো এই স্বর্ণের মুকুটটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালে তার বাংলাদেশ সফরের সময় উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। মুকুট চুরির ঘটনায় মন্দির কর্তৃপক্ষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, এটি একটি সুপরিকল্পিত চুরি এবং এর সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা চলছে।

এই ধরনের হামলা ও চুরির ঘটনায় বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দুর্গাপূজার মতো বৃহৎ উৎসবের সময় এ ধরনের হামলা ও চুরির ঘটনা আরও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ধরনের আক্রমণগুলিকে নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানিয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে।

তারিখ ১৩.১০.২০২৪

ময়মনসিংহে সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্রকে কুপিয়ে হত্যা

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়া এলাকায় নিজ বাসার সামনে সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্র (৬৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঘটে যাওয়া এই নৃশংস ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার দাবি করেছে, ফেসবুকে লেখালেখির কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ এক তরুণকে আটক করেছে। হত্যাকাণ্ডটি এলাকায় ব্যাপক শোক ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। পুলিশ ও স্থানীয়দের দাবি, আটককৃত সাগর মিয়া একজন বখাটে ও মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত। ঘটনার তদন্ত চলছে।
ময়মনসিংহে সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্রকে কুপিয়ে হত্যা

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়া এলাকায় নিজ বাসার সামনে সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্র (৬৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঘটে যাওয়া এই নৃশংস ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার দাবি করেছে, ফেসবুকে লেখালেখির কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ এক তরুণকে আটক করেছে। হত্যাকাণ্ডটি এলাকায় ব্যাপক শোক ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। পুলিশ ও স্থানীয়দের দাবি, আটককৃত সাগর মিয়া একজন বখাটে ও মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত। ঘটনার তদন্ত চলছে।

ময়মনসিংহ, ১২ অক্টোবর: ময়মনসিংহ সদর উপজেলার শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়া এলাকায় নিজ বাসার সামনে সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্র (৬৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঘটে যাওয়া এই নৃশংস ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত স্বপন কুমার ভদ্র তারাকান্দা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি পূর্বে ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্বজন পত্রিকায় তারাকান্দা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। যদিও বর্তমানে তিনি কোনো গণমাধ্যমে কর্মরত ছিলেন না, তবুও ফেসবুকে সামাজিক ইস্যুতে নিয়মিত লেখালেখি করতেন।

স্বপন কুমার ভদ্রের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, তাঁর লেখালেখির কারণেই তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। পরিবার জানিয়েছে, এক বছর আগেও তাঁর ওপর হামলা হয়েছিল। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ সাগর মিয়া (১৮) নামের এক তরুণকে আটক করেছে। সাগর মাঝিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মিয়ার ছেলে এবং এলাকায় বখাটে ও নেশাগ্রস্ত হিসেবে পরিচিত।

নিহত স্বপন কুমার ভদ্রের ভাতিজা জুয়েল ভদ্র জানান, “আজ বেলা ১১টার দিকে উনি নিজ বাসার সামনে বসে ছিলেন। সেই সময়ে তাঁকে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। এমনকি তাঁর বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। উনার স্ত্রীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে এবং তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়, যেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

আজ দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বপন কুমার ভদ্রের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আবুল কাশেম। তিনি বলেন, “স্বপন ভদ্রের ঘাড়ে ছয়টি কোপের চিহ্ন রয়েছে এবং বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপানোর চিহ্ন পাওয়া গেছে।”

নিহত স্বপন ভদ্রের ভাগনে মানিক সরকার অভিযোগ করে বলেন, “মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট করার কারণেই আমার মামাকে হত্যা করা হয়েছে। লেখালেখির জন্য তাঁর ওপর রাগ ছিল, আর সে কারণেই তাঁর হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।”

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম খান জানান, আটক সাগর এলাকায় একজন বখাটে হিসেবে পরিচিত এবং মাদকাসক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মানুষকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগও রয়েছে। সাগর আগেও স্বপন ভদ্রকে আঘাত করেছিল এবং তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে স্বপন ভদ্র প্রতিবাদ করেছিলেন। ওসি আরও জানান, “আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে সাগরই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চলছে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত জানানো হবে।”

এই নির্মম হত্যাকাণ্ডটি স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী এমন একটি জঘন্য ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন। স্বপন কুমার ভদ্রের পরিবার শোকাহত অবস্থায় বিচার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা প্রত্যাশা করছেন।

ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, “এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং আটককৃত সাগর একজন অপরাধী। আমরা পুরো ঘটনার তদন্ত করছি এবং শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।”

এদিকে, স্বপন কুমার ভদ্রের লেখালেখি ও প্রতিবাদমূলক কার্যক্রমের জন্য তাঁকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

তারিখ ১৩.১০.২০২৪

বাংলাদেশের মন্দির থেকে কালী মায়ের মুকুট চুরি, গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস

বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার যশোরেশ্বরী কালী মন্দির থেকে দেবী কালী মায়ের মুকুট চুরি যাওয়ার ঘটনাটি হিন্দু সম্প্রদায়কে মর্মাহত করেছে। মুকুটটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহার হওয়ায় এর গুরুত্ব আরও বেড়েছে। এই ঘটনা সাধারণ চুরি নয়, বরং হিন্দুদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং বাংলাদেশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। চুরির ঘটনা এবং সাম্প্রতিক কালে হিন্দুদের ওপর চলা নির্যাতন এবং মন্দির ভাঙচুরের খবর এই ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করছে।
বাংলাদেশের মন্দির থেকে কালী মায়ের মুকুট চুরি, গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস

বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার যশোরেশ্বরী কালী মন্দির থেকে দেবী কালী মায়ের মুকুট চুরি যাওয়ার ঘটনাটি হিন্দু সম্প্রদায়কে মর্মাহত করেছে। মুকুটটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহার হওয়ায় এর গুরুত্ব আরও বেড়েছে। এই ঘটনা সাধারণ চুরি নয়, বরং হিন্দুদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং বাংলাদেশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। চুরির ঘটনা এবং সাম্প্রতিক কালে হিন্দুদের ওপর চলা নির্যাতন এবং মন্দির ভাঙচুরের খবর এই ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করছে। সুত্র: [আইএএনএস]

নয়াদিল্লি, ১১ অক্টোবর: বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার বিখ্যাত যশোরেশ্বরী কালী মন্দির থেকে দেবী কালী মায়ের মুকুট চুরি যাওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশ ও ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দুর্গাপূজা, যা বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের সবচেয়ে বড় উৎসব, এই বছর শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে, তবে এই চুরির ঘটনা পূজার উত্সবের রেশ ম্লান করেছে।

মুকুটটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহার, যা তিনি ২০২১ সালে তাঁর বাংলাদেশ সফরের সময় যশোরেশ্বরী মন্দিরে প্রদান করেছিলেন। এই মন্দিরটি ৫১টি শক্তিপীঠের একটি বলে হিন্দু পুরাণে বর্ণিত, যার ফলে এর ধর্মীয় গুরুত্ব অসীম। কালী মায়ের মুকুট চুরি হওয়ায় ভারত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং চুরির তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছে।

এই চুরির ঘটনাটি অনেকেই স্রেফ একটি চুরির ঘটনা মনে করতে পারেন, তবে এই মুকুট চুরিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষত, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে হিন্দুদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও মন্দিরে আক্রমণ বহুগুণে বেড়েছে। এই ষড়যন্ত্রের পেছনে বিভিন্ন উগ্রপন্থী ইসলামী দল জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যারা বাংলাদেশকে শরিয়াহ আইন দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজে এক সন্দেহভাজনকে মন্দিরে ঢুকে কালী মায়ের মুকুট চুরি করতে দেখা গেছে। যদিও এটি সাধারণ চুরির ঘটনা বলে অনেকে মনে করছেন, কিন্তু সাম্প্রতিক কালে হিন্দুদের ওপর চলা নির্যাতন এবং মন্দির ভাঙচুরের খবর গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস দিচ্ছে। শেখ হাসিনার ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন, তাদের সম্পত্তি দখল এবং মন্দিরে আক্রমণের ঘটনা বেড়ে চলেছে।

দুর্গাপূজার সময় অনেক পূজা কমিটি থেকে অর্থ দাবি করা হয়েছিল এবং তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে, যদি ৫ লক্ষ টাকা না দেওয়া হয়, তবে তাদের পূজামণ্ডপ স্থাপন করতে দেওয়া হবে না। বিশেষ করে খুলনা জেলার বিভিন্ন পূজা কমিটিকে এই ধরনের হুমকি দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা চিঠি পাঠিয়েছিল। পূজার সময়ে বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা ভাঙচুরের খবরও এসেছে।

২০২১ সালেও মৌলবাদীর সঙ্গে যুক্ত একটি উগ্রপন্থী দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে, তারা দুর্গাপূজা মণ্ডপে একটি ইসলামিক ধর্মগ্রন্থ রাখার গুজব ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূত্রপাত করেছিল। সেই ঘটনার ফলে বাংলাদেশজুড়ে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে এবং পাঁচজন নিহত হয়। অনেক হিন্দু পরিবারের বাড়িঘরও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এসব ঘটনা শেখ হাসিনা সরকারের বিরোধিতা করে দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে এবং হিন্দুদের ভীতির মধ্যে রাখতে করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যশোরেশ্বরী মন্দিরের মুকুট চুরির ঘটনাটি মৌলবাদী দলের কাজ, যারা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে এবং হিন্দুদের ওপর তাদের নির্ভরশীলতা ও ভীতির বার্তা দিতে চায়। এ ধরনের ঘটনা শুধু বাংলাদেশের হিন্দুদের নয়, ভারতসহ উপমহাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্যও একটি সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এ বছর বাংলাদেশের দুর্গাপূজা কিছুটা সংযতভাবে পালিত হয়েছে, যা এই বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করে যে, হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি অন্তর্নিহিত ভয় এবং উদ্বেগ রয়েছে।

সুত্র: আইএএনএস

তারিখ ১২.১০.২০২৪

বাংলাদেশের হিন্দুদের সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি আসামের ধুবড়ি পূজামণ্ডপে

আসামের ধুবড়ির ৩ নম্বর বালুরচর সার্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপ এবার হিন্দুদের ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠেছে। মণ্ডপটি বিশেষভাবে বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর সংঘটিত নির্যাতন এবং ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় ঢাকেশ্বরী প্রতিমার কলকাতায় স্থানান্তরের ঘটনা তুলে ধরেছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের সময় বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর ঘটে যাওয়া সহিংসতার কথাও স্মরণ করিয়েছে। মণ্ডপটির নকশা ও শিল্পকর্ম দর্শকদের মধ্যে ইতিহাস, ধর্ম, এবং সামাজিক অন্যায়ের ওপর সচেতনতা সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশের হিন্দুদের সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি আসামের ধুবড়ি পূজামণ্ডপে

আসামের ধুবড়ির ৩ নম্বর বালুরচর সার্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপ এবার হিন্দুদের ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠেছে। মণ্ডপটি বিশেষভাবে বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর সংঘটিত নির্যাতন এবং ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় ঢাকেশ্বরী প্রতিমার কলকাতায় স্থানান্তরের ঘটনা তুলে ধরেছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের সময় বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর ঘটে যাওয়া সহিংসতার কথাও স্মরণ করিয়েছে। মণ্ডপটির নকশা ও শিল্পকর্ম দর্শকদের মধ্যে ইতিহাস, ধর্ম, এবং সামাজিক অন্যায়ের ওপর সচেতনতা সৃষ্টি করেছে।

ধুবড়ি, ১১ অক্টোবর: দুর্গাপূজার জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে ধুবড়ির ৩ নম্বর বালুরচর সার্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপ বিশেষ নজর কাড়ছে। এবারের মণ্ডপটি ইতিহাস ও সমসাময়িক সময়ে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সংঘটিত নির্যাতনের ঘটনাগুলোকে তুলে ধরেছে, যা দর্শনার্থীদের মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতা দিচ্ছে। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের সময় বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর সংঘটিত নির্যাতনের বিষয়টি এতে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

এই বছরের পূজামণ্ডপটি এক আবেগঘন এবং চিন্তাশীল উপস্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান নির্যাতন এবং ইতিহাসের নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে প্রতিফলিত করেছে। মণ্ডপের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হলো ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় ঢাকেশ্বরী প্রতিমার ঢাকা থেকে কলকাতায় স্থানান্তরের ঐতিহাসিক ঘটনা। এটি দেশভাগের সময় পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশ) হিন্দুদের যন্ত্রণার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে, যারা দাঙ্গা এবং সহিংসতার কারণে তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল।

৩ নম্বর বালুরচর সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির সদস্য জনার্দন পাল এই প্রতিচ্ছবির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, “৯০০ বছর পুরোনো ঢাকেশ্বরী প্রতিমাটি, যা দেবী দুর্গার একটি রূপ, দেশভাগের সময় ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে কলকাতার কুমারটুলিতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। এটি সেই সব বাঙালি হিন্দুদের প্রতিরোধ এবং বিশ্বাসের প্রতীক হয়ে ওঠে, যারা পূর্ববঙ্গের সহিংসতার কারণে তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল।”

দেশভাগ, যা দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, লক্ষ লক্ষ মানুষের যন্ত্রণাদায়ক স্থানান্তরের সাক্ষী ছিল। পূর্ববঙ্গের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য ঢাকেশ্বরী মন্দির ছিল আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। তবে, দেশভাগের সময় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মধ্যে অনেক হিন্দু পরিবারকে পালিয়ে যেতে হয়। প্রতিমার এই স্থানান্তর ছিল দেবী ও তাঁর ভক্তদের উত্তরাধিকারের সংরক্ষণ, যা তাদের বিশ্বাসকে সুরক্ষিত রাখতে এবং নতুন আশ্রয়ে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করেছিল।

বালুরচর মণ্ডপে দর্শকদের একটি প্রতীকী যাত্রার মাধ্যমে ঢাকেশ্বরী প্রতিমার স্থানান্তরের ঘটনাটি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, কিভাবে শরণার্থী হিন্দুদের সঙ্গে প্রতিমাটি ঢাকা থেকে কলকাতার দিকে পাড়ি জমায়। এ দৃশ্যগুলোতে ভয়ের অনুভূতি, হারানোর বেদনা এবং সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে। দেবী দুর্গার প্রতিমার মতোই তাঁর ভক্তরাও নতুন আশ্রয়ে তাঁদের বিশ্বাস ধরে রেখেছেন।

মণ্ডপটি শুধু ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোতেই থেমে থাকেনি। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর সংঘটিত নির্যাতন, বিশেষ করে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের সময়ের সহিংসতা, এটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বেড়েছে, এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার শিকার হয়ে সংখ্যালঘু হিন্দুরা চরম নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

এই মণ্ডপের মাধ্যমে ৩ নম্বর বালুরচর সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি এই সব নির্যাতিত হিন্দুদের পক্ষে একটি মর্মস্পর্শী বার্তা দিয়েছে। এর নান্দনিক শিল্পকর্ম ও স্থাপনাগুলো দর্শকদের জন্য কেবল একটি পূজা স্থল নয়, বরং একটি শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতাও প্রদান করেছে, যেখানে অতীত ও বর্তমানের নির্যাতনের কাহিনীকে সংযুক্ত করা হয়েছে।

একজন স্থানীয় দর্শনার্থী বলেন, “এ বছরের থিমটি আমাদের গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমরা যখন আনন্দ-উৎসবের মধ্যে আছি, তখনও এমন সম্প্রদায় আছে, যারা দেবীর সঙ্গে নিজেদের সম্পর্কটি যন্ত্রণা এবং উদ্বাস্তু হওয়ার মধ্য দিয়ে পালন করেছে।”

বর্তমানে কলকাতার কুমারটুলিতে অবস্থানরত ঢাকেশ্বরী প্রতিমাটি এই সংযোগের প্রতীক হয়ে আছে। যদিও প্রতিমাটি আর ঢাকার মূল মন্দিরে নেই, তবুও এটি বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে একতা এবং বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে পূজিত হয়ে আসছে।

এই অনন্য উদ্যোগটি শুধু পূজার আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করেনি, বরং ইতিহাসের আঘাত এবং দক্ষিণ এশিয়ার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের চলমান সংকট নিয়েও সচেতনতা সৃষ্টি করেছে। শিল্প, ইতিহাস এবং ধর্মের মিশ্রণে বালুরচর মণ্ডপটি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অতীত ও বর্তমান সংগ্রামের একটি মর্মস্পর্শী প্রতীক হয়ে উঠেছে।

ধুবড়ির এই মণ্ডপটি হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্ভীকতার সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে নির্যাতন সত্ত্বেও তাঁরা তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। হাজার হাজার দর্শনার্থী যখন বালুরচর দুর্গাপূজার সৌন্দর্য ও বার্তা দেখতে আসেন, তাঁরা তখন হিন্দুদের টিকে থাকার, স্থানান্তরের এবং ন্যায়বিচারের সংগ্রামের বৃহত্তর কাহিনীটিও স্মরণ করেন।

তারিখ ১২.১০.২০২৪

সাতক্ষীরায় মোদির উপহার দেওয়া স্বর্ণমুকুট চুরি, ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্বেগ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহার দেওয়া স্বর্ণমুকুট চুরি হয়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন। ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদি এই মুকুটটি দেবীর মূর্তিতে পরিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে চুরি হওয়া মুকুট এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ভারতীয় হাইকমিশন এই চুরির দ্রুত তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া একটি পোস্টে ভারতীয় হাইকমিশন এই প্রতিক্রিয়া জানায়।
সাতক্ষীরায় মোদির উপহার দেওয়া স্বর্ণমুকুট চুরি, ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্বেগ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহার দেওয়া স্বর্ণমুকুট চুরি হয়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন। ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদি এই মুকুটটি দেবীর মূর্তিতে পরিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে চুরি হওয়া মুকুট এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ভারতীয় হাইকমিশন এই চুরির দ্রুত তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া একটি পোস্টে ভারতীয় হাইকমিশন এই প্রতিক্রিয়া জানায়।

ঢাকা, ১১ অক্টোবর: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহার দেওয়া স্বর্ণমুকুট চুরি হয়ে গেছে। চুরির এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন। শুক্রবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া একটি পোস্টে ভারতীয় হাইকমিশন এই প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা এই চুরির দ্রুত তদন্ত এবং চুরি হওয়া মুকুটটি উদ্ধার করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

২০২১ সালের ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরের অংশ হিসেবে সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দির পরিদর্শনে যান। এটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি বিশেষ পূণ্যস্থান এবং হিন্দু ধর্মের ৫২ পীঠের একটি পীঠ। মন্দিরটি পরিদর্শনের সময় নরেন্দ্র মোদি নিজ হাতে কালীপ্রতিমার মাথায় স্বর্ণের একটি মুকুট পরিয়ে দিয়েছিলেন, যা ছিল ভারতীয় জনগণের পক্ষ থেকে একটি স্মারক উপহার। ওই মুকুটটিই বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্দির থেকে চুরি হয়ে যায়।

মন্দিরের পুরোহিত দিলীপ কুমার মুখার্জি জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মতো গতকাল দুপুরে পূজা শেষ করে তিনি বাড়ি চলে যান। কিছুক্ষণ পর মন্দিরের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা মন্দির পরিষ্কারের সময় দেখতে পান যে, কালীমাতার মূর্তির মাথার মুকুটটি নেই। খবরটি সঙ্গে সঙ্গেই মন্দির কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মুকুট চুরির বিষয়ে তদন্ত শুরু করে।

সাতক্ষীরার পুলিশ প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা এই ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শ্যামনগর থানার ওসি তাইজুল ইসলাম জানান, মন্দিরের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার জন্য তদন্ত চলছে।

এদিকে, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্টের মাধ্যমে এই চুরির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা লিখেছে, “সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহার দেওয়া স্বর্ণমুকুট চুরির ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে। আমরা এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত মুকুটটি উদ্ধার এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

মুকুট চুরির ঘটনা স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ এবং উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মন্দিরটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র একটি স্থান হওয়ায় অনেকেই এই ঘটনাকে তাঁদের ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন। তারা দ্রুত চোরদের শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়ার দাবি তুলেছেন।

এদিকে, মন্দির কমিটি এবং স্থানীয় প্রশাসন মিলে মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মন্দিরের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা প্রশাসনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন এবং মুকুট উদ্ধারের ব্যাপারে আশাবাদী।

পুলিশ এবং প্রশাসন এই ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চোরদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

তারিখ ১২.১০.২০২৪

তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে পেট্রলবোমা হামলা, ছুরিকাঘাতে আহত ৫

পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে দুর্গাপূজার মণ্ডপে শুক্রবার সন্ধ্যায় পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। যদিও পেট্রলবোমাটি বিস্ফোরিত হয়নি, ঘটনার পরপরই পূজা উদ্‌যাপন কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা হামলাকারীদের ধরার চেষ্টা করলে তারা পালানোর সময় ছুরিকাঘাত করে। এতে পাঁচজন আহত হন, যাদের মধ্যে চারজন স্বেচ্ছাসেবক এবং একজন দর্শনার্থী রয়েছেন।। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। স্থানীয়দের মতে, পূজামণ্ডপে নাশকতার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়, তবে পুলিশ এটিকে ছিনতাইয়ের ঘটনা হিসেবে দেখতে চাইছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে এবং তারা আশঙ্কামুক্ত আছেন।
তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে পেট্রলবোমা হামলা, ছুরিকাঘাতে আহত ৫

পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে দুর্গাপূজার মণ্ডপে শুক্রবার সন্ধ্যায় পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। যদিও পেট্রলবোমাটি বিস্ফোরিত হয়নি, ঘটনার পরপরই পূজা উদ্‌যাপন কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা হামলাকারীদের ধরার চেষ্টা করলে তারা পালানোর সময় ছুরিকাঘাত করে। এতে পাঁচজন আহত হন, যাদের মধ্যে চারজন স্বেচ্ছাসেবক এবং একজন দর্শনার্থী রয়েছেন।। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। স্থানীয়দের মতে, পূজামণ্ডপে নাশকতার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়, তবে পুলিশ এটিকে ছিনতাইয়ের ঘটনা হিসেবে দেখতে চাইছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে এবং তারা আশঙ্কামুক্ত আছেন।

ঢাকা, ১১ অক্টোবর: পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে শুক্রবার সন্ধ্যায় দুর্গাপূজার মণ্ডপে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, পূজামণ্ডপের পাশে একটি গলিতে কয়েকজন যুবক জড়ো হয়ে পূজামণ্ডপের মঞ্চ লক্ষ্য করে একটি কাচের বোতল ছুড়ে মারেন। সেই বোতলটিতে পেট্রল ছিল এবং তা থেকে সামান্য আগুন ধরে যায়। তবে বিস্ফোরণ ঘটেনি এবং কারও তেমন ক্ষতি হয়নি। ঘটনার পরপরই পূজা উদ্‌যাপন কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা হামলাকারীদের ধরার চেষ্টা করলে তারা পালানোর সময় ছুরিকাঘাত করে। এতে পাঁচজন আহত হন, যাদের মধ্যে চারজন স্বেচ্ছাসেবক এবং একজন দর্শনার্থী রয়েছেন।

আহত ব্যক্তিরা হলেন দীপ্ত দে (২৬), ঝন্টু ধর (৫০), খোকন ধর (৪০), সাগর ঘোষ (২৬) ও মো. রমিজ উদ্দিন (৩০)। তাদের সবাইকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. লিটন জানান, তাদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।

এ ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং তিনজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করে। আটক ব্যক্তিরা হলেন গাইবান্ধার আকাশ (২৩), পটুয়াখালীর মো. হৃদয় (২৩) ও নোয়াখালীর মো. জীবন (১৯)। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং তারা বর্তমানে কোতোয়ালি থানা হেফাজতে আছেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক সাংবাদিকদের জানান, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এটি ছিনতাইয়ের ঘটনা। আমরা আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা করছি।” তবে তাঁতীবাজার পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয় শাহ এ ঘটনার সঙ্গে ছিনতাইয়ের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান। তার মতে, এটি একটি পরিকল্পিত নাশকতার চেষ্টা ছিল এবং পূজামণ্ডপে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই এই হামলা করা হয়েছে।

এই ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পূজামণ্ডপে উপস্থিত অনেকেই ভয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পেট্রলবোমাটি মঞ্চের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, কিন্তু বিস্ফোরিত না হওয়ায় বড় ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।

পূজামণ্ডপে নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি পূজা উদ্‌যাপন কমিটির স্বেচ্ছাসেবকেরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাদের একজন স্বেচ্ছাসেবক জয় শাহ জানান, “হামলাকারীরা পালানোর সময় আমরা তাদের ধরার চেষ্টা করলে তারা আমাদের উপর আক্রমণ করে এবং ছুরিকাঘাত করে পালানোর চেষ্টা করে। এতে আমাদের চারজন স্বেচ্ছাসেবক এবং একজন দর্শনার্থী আহত হন।”

তাঁতীবাজার পূজামণ্ডপটি সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। সেখানকার একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, তিনজন যুবক গলিতে জড়ো হয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন। এরপর তারা পূজামণ্ডপের কাছে এসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেন।

পূজা উদ্‌যাপন কমিটি এবং স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে।

তারিখ ১২.১০.২০২৪

ঢাকায় রামকৃষ্ণ মঠে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত, নিরাপত্তা নিশ্চিত করল সেনাবাহিনী

ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে প্রায় ২০,০০০ হিন্দু ভক্ত অংশ নেন। পুরুষ ও নারী উভয়ই এ পূজায় অংশগ্রহণ করেন, যা হিন্দুদের জন্য বহু বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যের অংশ। প্রাথমিকভাবে নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে পূজা না করার চিন্তা করা হলেও, সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফের আশ্বাসে পূজা সম্পন্ন হয়। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হলেও, পূজা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।
ঢাকায় রামকৃষ্ণ মঠে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত, নিরাপত্তা নিশ্চিত করল সেনাবাহিনী

ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে প্রায় ২০,০০০ হিন্দু ভক্ত অংশ নেন। পুরুষ ও নারী উভয়ই এ পূজায় অংশগ্রহণ করেন, যা হিন্দুদের জন্য বহু বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যের অংশ। প্রাথমিকভাবে নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে পূজা না করার চিন্তা করা হলেও, সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফের আশ্বাসে পূজা সম্পন্ন হয়। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হলেও, পূজা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।

ঢাকা, ১১ অক্টোবর: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পুরনো অংশে অবস্থিত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন প্রাঙ্গণে এই বছরও কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত এই পূজায় প্রায় ২০,০০০ হিন্দু ভক্ত উপস্থিত ছিলেন। পুরুষ ও নারী উভয়ই এ পূজায় অংশগ্রহণ করেন, যা হিন্দুদের জন্য বহু বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যের অংশ। রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ বলেন, “কুমারী পূজা হিন্দুদের জন্য পবিত্রতার প্রতীক। কুমারী দেবীকে পূজা করা হয় তাঁর পবিত্রতা ও শুভ গুণাবলির কারণে।”

কুমারী পূজা হলো ছোট মেয়েদের দেবী দুর্গার প্রতীক হিসেবে পূজা করার এক ধর্মীয় আচার, যা হিন্দুদের মধ্যে বিশেষভাবে পালিত হয়। এবার পূজাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর। রামকৃষ্ণ মঠের কর্মকর্তারা প্রথমে নিরাপত্তার কারণে পূজা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কারণ প্রায় ২০,০০০ মানুষের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ এসে পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দেন এবং বলেন, “যত সেনাবাহিনী প্রয়োজন, আমরা দেব। তাই চিন্তা করবেন না, পূজা সম্পূর্ণ শান্তিতে পালন করতে পারবেন।”

স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ আরও বলেন, “আমি ভেবেছিলাম যে সময় হাতে নেই এবং খরচের বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিদিনই সেনাবাহিনী এখানে এসে পর্যবেক্ষণ করছে এবং তারা আমাদের সম্পূর্ণ আশ্বস্ত করেছে যে কোনো সমস্যাই হবে না।”

এই বছর পূজার আয়োজনের আগে বাংলাদেশ সংখ্যালঘু সংযুক্ত মঞ্চ একটি সমাবেশ করে, যেখানে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান নির্যাতন নিয়ে আলোচনা করা হয়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা অভিযোগ করেন যে ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার পর থেকে হিন্দুদের ওপর আগুন লাগানো, ভাঙচুর, লুটপাট, জবরদখল, হত্যা, ধর্ষণ, দেশ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি এবং ভিড়ের রায়ে হত্যার মতো নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে।

অন্যদিকে, স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আমাদের প্রাঙ্গণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো। প্রতিদিনই সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আমরা সম্পূর্ণ নিরাপত্তার মধ্যে আছি।”

এভাবে কুমারী পূজার মতো ধর্মীয় আচার পালন করতে পারায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। সেনাবাহিনীর আশ্বাস ও তৎপরতার ফলে পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

তারিখ ১২.১০.২০২৪

পূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর সেনাবাহিনী: সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, দেশের পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত ও তৎপর রয়েছে। শুক্রবার রমনা কালীমন্দির পরিদর্শনকালে তিনি জানান, দেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখা সেনাবাহিনীর মূল উদ্দেশ্য। নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন এবং সবাইকে দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানান। পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং অসামরিক প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
পূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর সেনাবাহিনী: সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, দেশের পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত ও তৎপর রয়েছে। শুক্রবার রমনা কালীমন্দির পরিদর্শনকালে তিনি জানান, দেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখা সেনাবাহিনীর মূল উদ্দেশ্য। নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন এবং সবাইকে দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানান। পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং অসামরিক প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা, ১১ অক্টোবর: দেশজুড়ে দুর্গাপূজার মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী সব সময় সতর্ক ও প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। শুক্রবার রাজধানীর রমনা কালীমন্দির পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা, যাতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই তাদের উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, “অতীতের মতো এবারও আমরা দেশের সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সহযোগিতা ও সম্প্রীতি বজায় রাখব এবং সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।”

এ সময় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “নৌবাহিনী পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে। আমরা আশা করি, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদ্‌যাপন করবেন।”

বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশের নিরাপত্তা রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিমানবাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। তিনি সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সহযোগিতা ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান।

সেনাপ্রধানের স্ত্রী সারাহনাজ কমলিকা জামানও পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন। তিনি সেখানে অন্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সদস্য ও উপস্থিত দর্শনার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং অসামরিক প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিনিধি এই সফরটি কভার করতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

সেনাপ্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমানবাহিনী প্রধানের এই উপস্থিতি দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে উৎসাহ ও সুরক্ষার বার্তা দিয়েছে। পূজামণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় থাকা সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা সকলের প্রতি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।

তারিখ ১২.১০.২০২৪

পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত বিতর্ক: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস

চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলে দুর্গাপূজার মণ্ডপে ইসলামি সংগীত পরিবেশনকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেন, যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন। মঞ্চে সংগীত পরিবেশনকারী সংগঠনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, সংশ্লিষ্ট পক্ষ তা অস্বীকার করেছে।
পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত বিতর্ক: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস

চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলে দুর্গাপূজার মণ্ডপে ইসলামি সংগীত পরিবেশনকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেন, যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন। মঞ্চে সংগীত পরিবেশনকারী সংগঠনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, সংশ্লিষ্ট পক্ষ তা অস্বীকার করেছে।

চট্টগ্রাম, ১০ অক্টোবর: চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলে দুর্গাপূজার মণ্ডপে ইসলামি সংগীত পরিবেশন করা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির ছয়জন শিল্পী দুটি গান পরিবেশন করেন, যার একটি ছিল ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’। এ ঘটনাটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে সন্ধ্যা সাতটার দিকে, যখন মণ্ডপে উপস্থিত কিছু দর্শক এই ইসলামি সংগীত পরিবেশনের ভিডিও তাদের মুঠোফোনে ধারণ করেন এবং তা ফেসবুকে শেয়ার করেন। প্রায় তিন মিনিটের ভিডিওতে দেখা যায়, মঞ্চে ছয়জন তরুণ ইসলামি সংগীত পরিবেশন করছেন। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর দ্রুত এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন অনেকে।

ঘটনার পরপরই, রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ঘটনাস্থলে যান। তিনি পূজামণ্ডপের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং দ্রুত এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন। ডিসি ফরিদা খানম বলেন, “এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, রাতের মধ্যেই মামলা নেওয়া হবে।”

এই বিতর্কিত ঘটনাটি নিয়ে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান প্রথম আলোকে বলেন, “আমরা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণে সেখানে সংগীত পরিবেশন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে সম্প্রীতির গান গাওয়া হয়েছে, কেউ যদি তা ভুলভাবে উপস্থাপন করে থাকে, সেটি তাদের দোষ।”

তবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও যাচাই করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার জানিয়েছে যে, পূজামণ্ডপে পরিবেশিত গানের ভিডিওটি আসল এবং এডিটেড নয়।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানানো হয়। তবে, জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা নিশ্চিত করেন যে, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি একটি জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এই ঘটনা সম্পর্কে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের অর্থ সম্পাদক সুকান্ত মহাজন বলেন, “কয়েকজন তরুণ এসে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করার কথা বলে মঞ্চে ওঠেন। তারা দুটি গান গেয়ে মঞ্চ থেকে নেমে যান। তাদের গান পরিবেশনের সময় কেউ তাদের বাধা দেয়নি বা প্রতিবাদ করেনি।”

অন্যদিকে, পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে চট্টগ্রামের আদালত ঘোষিত সিটি মেয়র এবং নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। তবে, শাহাদাত হোসেন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিতর্কিত এই ঘটনার পর পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত পরিবেশনের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

তারিখ ১১.১০.২০২৪

যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে নরেন্দ্র মোদির উপহৃত স্বর্ণের মুকুট চুরি

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহার হিসেবে দেওয়া স্বর্ণের মুকুট চুরি হয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্দিরে পূজা শেষে মুকুটটি চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে। ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদি শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী মন্দিরে পরিদর্শনে এসে স্বর্ণের মুকুটটি কালীপ্রতিমার মাথায় নিজ হাতে পরিয়ে দেন। ঘটনাটি জানার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোর শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে নরেন্দ্র মোদির উপহৃত স্বর্ণের মুকুট চুরি

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার যশোরেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহার হিসেবে দেওয়া স্বর্ণের মুকুট চুরি হয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্দিরে পূজা শেষে মুকুটটি চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে। ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদি শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী মন্দিরে পরিদর্শনে এসে স্বর্ণের মুকুটটি কালীপ্রতিমার মাথায় নিজ হাতে পরিয়ে দেন। ঘটনাটি জানার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোর শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

সাতক্ষীরা, ১০ অক্টোবর: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহৃত স্বর্ণের মুকুট চুরি হয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের মন্দির প্রাঙ্গণে এ চুরির ঘটনা ঘটে। মন্দিরের পুরোহিত দিলীপ কুমার মুখার্জি জানান, প্রতিদিনের মতো আজও বেলা দুইটার দিকে পূজা শেষ করে তিনি বাড়িতে যান। পূজা শেষে কিছুক্ষণ পর মন্দিরের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা মন্দির পরিষ্কার করতে গেলে তাঁরা দেখতে পান, প্রতিমার মাথায় থাকা স্বর্ণের মুকুটটি উধাও।

দিলীপ কুমার মুখার্জি বলেন, ২০২১ সালের ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে পরিদর্শনে আসেন। এই মন্দিরটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র এবং এটি হিন্দু ধর্মের ৫২ পিটের মধ্যে একটি। পরিদর্শনের সময় নরেন্দ্র মোদি নিজ হাতে মন্দিরের কালীপ্রতিমার মাথায় স্বর্ণের মুকুটটি পরিয়ে দেন। সেই থেকে মুকুটটি মন্দিরে বিশেষভাবে রক্ষিত ছিল।

মন্দিরের পুরোহিত আরও জানান, মুকুটটি মন্দিরের ঠাকুরের মাথায় প্রতিদিন সুরক্ষিতভাবে রাখা হতো। কিন্তু আজকের চুরির ঘটনায় মন্দিরের ভক্তদের মধ্যে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে মুকুটটি ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করছিল।

পুলিশের তদন্ত কার্যক্রম
চুরির ঘটনা জানার পরপরই সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান এবং শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাইজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান জানান, পুলিশ পুরো ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং মুকুটের সন্ধানে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

শ্যামনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তাইজুল ইসলাম বলেন, মন্দিরে স্থাপিত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। স্থানীয় পুলিশ এবং প্রশাসন এই ঘটনার দ্রুত সমাধানের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।

স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তদের মধ্যে চুরির ঘটনায় চরম ক্ষোভ এবং উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মন্দির কমিটির সদস্যরা জানান, মুকুটটি শুধু একটি মূল্যবান উপহার নয়, বরং এটি ছিল হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। এটি হারানো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে বলে তারা মন্তব্য করেন।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে এবং মুকুটটি উদ্ধার করে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি করেছে।

ধর্মীয় ও সামাজিক গুরুত্ব
যশোরেশ্বরী কালীমন্দির বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এক পবিত্র তীর্থস্থান। এটি সনাতন ধর্মের অন্যতম ৫২ পিটের একটি, যা দীর্ঘকাল ধরে পূজার্চনার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে, এই লিংক ভিজিট করুন।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই মন্দিরে আগমন এবং স্বর্ণের মুকুট উপহার দেওয়া দুই দেশের সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল। মুকুটটি চুরি হওয়ার পর স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম শোক এবং উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

বর্তমানে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং মন্দির কর্তৃপক্ষও তাদের পূর্ণ সহযোগিতা দিচ্ছে।

তারিখ ১১.১০.২০২৪

সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনা বিচারের আওতায় আনা হবে: বিএনপি

বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) জানিয়েছে, তারা ক্ষমতায় এলে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত প্রতিটি নির্যাতনের ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। বুধবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপূজা পরিদর্শনকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আট দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান এবং অতীতের মতো ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। মির্জা ফখরুল বলেন, একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্যরাই অতীতে সংখ্যালঘুদের জমি ও সম্পত্তি দখলের সাথে জড়িত ছিল। তিনি আরও দাবি করেন, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি প্রতিটি নির্যাতনের ঘটনা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করবে এবং প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনা বিচারের আওতায় আনা হবে: বিএনপি

বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) জানিয়েছে, তারা ক্ষমতায় এলে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত প্রতিটি নির্যাতনের ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। বুধবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপূজা পরিদর্শনকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আট দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান এবং অতীতের মতো ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। মির্জা ফখরুল বলেন, একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্যরাই অতীতে সংখ্যালঘুদের জমি ও সম্পত্তি দখলের সাথে জড়িত ছিল। তিনি আরও দাবি করেন, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি প্রতিটি নির্যাতনের ঘটনা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করবে এবং প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

ঢাকা, ৯ অক্টোবর: বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) বুধবার জানিয়েছে, তারা ক্ষমতায় এলে দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সংঘটিত প্রতিটি নির্যাতনের ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপূজা পরিদর্শনকালে এই প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, “আপনারা [হিন্দু সম্প্রদায়] যে আট দফা দাবি উত্থাপন করেছেন, আমরা সেগুলোর প্রতি পূর্ণ সহানুভূতি জানাচ্ছি এবং যথাযথ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা অতীতেও আপনাদের পাশে ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও একইভাবে পাশে থাকব। আমরা আপনাদের যে কোনো সংকটে সহায়তা করেছি এবং ভবিষ্যতেও সমর্থন দিয়ে যাব।” মির্জা ফখরুল দাবি করেন, যে রাজনৈতিক দলটি (পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে) সংখ্যালঘুদের সবচেয়ে বড় রক্ষক হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করে, তাদেরই সদস্যরা অতীতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অধিকাংশ নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিল।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি ও সম্পত্তি দখলের ঘটনাতেও ওই দলের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিল।” তবে, তিনি কোনো নির্দিষ্ট নাম উল্লেখ করেননি।

বিচার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি
মির্জা ফখরুল বলেন, “যদি আমাদের দল ভবিষ্যতে সরকার গঠন করে, তাহলে প্রতিটি নির্যাতনের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। আমাদের লক্ষ্য হবে দোষীদের যথাযথ শাস্তি দেওয়া।”

তিনি আরও বলেন, কিছু বিদেশি মিডিয়া বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার লক্ষ্যে পক্ষপাতমূলক এবং মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছে। তবে তিনি স্বীকার করেন, “আমি বলছি না যে কিছুই ঘটেনি। কিছু ঘটনা ছিল, তবে সবই সাম্প্রদায়িক নয়, অনেক ক্ষেত্রে সেগুলো ছিল রাজনৈতিক ঘটনা।”

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আট দফা দাবি
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা দুর্গাপূজা উদযাপনের শুরুতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আট দফা দাবি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, “সংখ্যালঘুদের প্রতি সংঘটিত অন্যায় ও নিপীড়নের ন্যায়বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

এই আট দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: সংখ্যালঘুদের জমি ও সম্পত্তি দখলের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এবং বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুত কার্যকর করা। সন্তোষ শর্মা আরও বলেন, “আমরা চাই আমাদের অধিকার রক্ষা করা হোক এবং যে কোনো ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।”

অতীতের ঘটনাগুলোর প্রতি ইঙ্গিত
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের দল অতীতেও সংখ্যালঘুদের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে।” তিনি আওয়ামী লীগের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “যে দল নিজেদের সংখ্যালঘুদের রক্ষক বলে দাবি করে, তাদেরই নেতাকর্মীরা অধিকাংশ নির্যাতনের ঘটনার পেছনে ছিল।”

তিনি বলেন, “আমরা ক্ষমতায় গেলে, প্রতিটি ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হবে এবং প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে।” মির্জা ফখরুল এই প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করেন এবং জানান, “আমাদের মূল লক্ষ্য হবে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।”

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জ
মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিটি ঘটনা যাতে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে সমাধান করা হয়, সেই লক্ষ্যে তারা একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন। তিনি আরও জানান, “বিএনপি সংখ্যালঘুদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

বক্তব্যের শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে সবাই সমান অধিকার ভোগ করতে পারবে। আমাদের সরকার হবে সংখ্যালঘু-বান্ধব এবং তাদের অধিকার রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”

আলোচনার সময় অন্যান্য বক্তারাও সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন এবং তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।

তারিখ ১০.১০.২০২৪

মন্দির পরিচালনা কমিটি নির্বাচিত হওয়া উচিত হিন্দুদের গণতান্ত্রিক ভোটে

রাজধানীর শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দির ও শ্রী মা আনন্দময়ী আশ্রমে দুর্গাপূজার মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা। পরিদর্শন শেষে তাঁরা অভিযোগ করেছেন যে, মন্দিরটি ধর্মীয় পূজামণ্ডপের বদলে রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। মন্দিরের পূজা আয়োজনে রাজনৈতিক নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মঞ্চে দলীয় বক্তব্য রাখার প্রচেষ্টা ছিল, যা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক চেতনায় আঘাত হানছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ মন্দির ও মণ্ডপ পরিচালনায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করে, হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি পরিচালনা কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্দির পরিচালনা কমিটি নির্বাচিত হওয়া উচিত হিন্দুদের গণতান্ত্রিক ভোটে

রাজধানীর শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দির ও শ্রী মা আনন্দময়ী আশ্রমে দুর্গাপূজার মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা। পরিদর্শন শেষে তাঁরা অভিযোগ করেছেন যে, মন্দিরটি ধর্মীয় পূজামণ্ডপের বদলে রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। মন্দিরের পূজা আয়োজনে রাজনৈতিক নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মঞ্চে দলীয় বক্তব্য রাখার প্রচেষ্টা ছিল, যা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক চেতনায় আঘাত হানছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ মন্দির ও মণ্ডপ পরিচালনায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করে, হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি পরিচালনা কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা, ৯ অক্টোবর: আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দিরে দুর্গাপূজার মণ্ডপ পরিদর্শনে আসেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা। তাঁদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিনসহ অন্যান্য সদস্যরা। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁরা মন্দিরের পরিচালনা পরিষদের কার্যালয়ে যান এবং মন্দির পরিচালনা পরিষদের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এই সময় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মন্দিরের পরিবেশে পূজামণ্ডপের বদলে একটি দলীয় কার্যালয়ের ছাপ স্পষ্ট। তাঁরা মন্দিরের মঞ্চে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য ও দলীয় প্রচার কার্যক্রমের উপস্থিতিতে হতাশা ব্যক্ত করেন। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “আজকে রমনা কালীমন্দিরে এসে এটিকে কোনো পূজামণ্ডপ মনে হচ্ছে না। এটিকে একটি দলীয় কার্যালয় বলে মনে হচ্ছে।” তিনি বলেন, “ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দখলের যে রাজনীতি বাংলাদেশে চলমান, এ ধরনের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের আহ্বান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ধর্মীয় জায়গায়ই রাখা হোক, যেন এদের পবিত্রতা রক্ষা হয়।”

আজ সন্ধ্যায় রমনা কালীমন্দিরের পূজামণ্ডপে মহাষষ্ঠীর মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের জন্য মঞ্চে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর। মঞ্চ থেকে মাইকে বিএনপি ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ছাত্রদল ও যুবদলের নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন বক্তব্য দেওয়া হয়। নাগরিক কমিটির সদস্যরা যখন মন্দিরে আসেন, তখন রুহুল কবির রিজভী মন্দিরে পৌঁছাননি। তবে, মন্দিরের পূজায় রাজনৈতিক নেতাদের অতিথি করার বিষয়টি নিয়ে নাগরিক কমিটির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন। তাঁর মতে, ধর্মীয় স্থানগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এসব ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা উচিত।”

তিনি রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধর্মীয় জায়গাতেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবি। আমরা চাই, হিন্দু সম্প্রদায়ের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই মন্দিরের দায়িত্ব পালন করবেন, যেন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পবিত্রতা ও ধর্মীয় ঐতিহ্য রক্ষা পায়।”

এদিকে, রমনা কালীমন্দিরের পূজায় বিভিন্ন দলীয় নেতাদের উপস্থিতি এবং তাঁদের বক্তব্যের বিষয়টি নিয়ে পূজা উদ্‌যাপন কমিটির মধ্যেও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করেন, মন্দিরের মতো পবিত্র স্থানে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক চেতনায় আঘাত হানে এমন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ হিন্দু সমাজের দাবী, “ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে এবং পূজামণ্ডপ ও মন্দিরের পরিচালনা কমিটি নির্বাচিত হওয়া উচিত হিন্দু সম্প্রদায়ের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।”

তারিখ ১০.১০.২০২৪

দুর্গাপূজা: প্রতিমা ভাঙচুর, মারামারির - গ্রেপ্তার ৮

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে আট দিনে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে প্রতিমা ভাঙচুর, চুরি, মারামারি এবং ঢিল নিক্ষেপের মতো ঘটনাগুলোর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা এবং ২১টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পূজামণ্ডপের সুরক্ষায় মোতায়েন করা হয়েছে ৭৫ হাজারের বেশি পুলিশ এবং ২ লাখেরও বেশি আনসার সদস্য।
দুর্গাপূজা: প্রতিমা ভাঙচুর, মারামারির - গ্রেপ্তার ৮

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে আট দিনে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে প্রতিমা ভাঙচুর, চুরি, মারামারি এবং ঢিল নিক্ষেপের মতো ঘটনাগুলোর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা এবং ২১টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পূজামণ্ডপের সুরক্ষায় মোতায়েন করা হয়েছে ৭৫ হাজারের বেশি পুলিশ এবং ২ লাখেরও বেশি আনসার সদস্য।

ঢাকা, ৯ অক্টোবর: বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া প্রতিমা ভাঙচুর, চুরি, ঢিল নিক্ষেপ এবং সংঘর্ষের ঘটনায় গত আট দিনে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় মোট ১৭টি মামলা এবং ২১টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত দেশজুড়ে ৪৭টি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর, চুরি এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে মানসিক ভারসাম্যহীন এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের দ্বারা। এ ধরনের ঘটনা হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে এবার ৩২ হাজার ৬৬৬টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে মণ্ডপগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে—সাধারণ, গুরুত্বপূর্ণ এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৬৩৯টি সাধারণ মণ্ডপ, ১০ হাজার ৯২৯টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ৮ হাজার ৯৮টি অতি গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব মণ্ডপের নিরাপত্তায় ৭৫ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য এবং ২ লাখ ১২ হাজার ১৯২ জন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অতি গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে ৮ জন আনসার সদস্য এবং গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ মণ্ডপগুলোতে ৬ জন করে আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান থাকা সত্ত্বেও, বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১ অক্টোবর রংপুরের কোতোয়ালি ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সুন্দরগঞ্জের ঘটনায় ভবেশ চন্দ্র দাস নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, ভবেশ মানসিক ভারসাম্যহীন এবং মাদকাসক্ত। বাঁশ দিয়ে আঘাত করে তিনি দুর্গা প্রতিমার মাথা ভেঙে দেন।

২ অক্টোবর সুনামগঞ্জের দোয়ারবাজারে পূজামণ্ডপের সামনে নাচ-গানের সময় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে থানায় একটি জিডি হয়। একই দিনে পাবনার সুজানগরে পাঁচটি প্রতিমার মাথা ভাঙা অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। নড়াইল সদরেও একটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙার ঘটনা ঘটে।

৩ অক্টোবর কিশোরগঞ্জ সদরে প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার করা হয়। ৪ অক্টোবর মানিকগঞ্জ সদরে পূজার চাঁদা নিয়ে মন্দিরের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এতে দুই ব্যক্তি আহত হন। একই দিনে বরিশালের বাকেরগঞ্জের একটি মন্দিরে প্রতিমার বিভিন্ন অংশ ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়। এর ফলে ওই এলাকার থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়।

৬ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রতিমার একটি অংশ ভাঙার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই দিনে নীলফামারীর ডিমলায় একটি মাটির ঢিবি ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়, যা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি অথবা দুর্ঘটনাজনিত কারণে ভেঙে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াতেও প্রতিমার উদ্দেশ্যে ইটের টুকরো নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

৭ অক্টোবর খাগড়াছড়ির রামগড়ে মন্দিরের প্রতীক চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়। পরদিন, ৮ অক্টোবর রাজবাড়ীর কালুখালীতে ভারী বর্ষণের কারণে মন্দিরের দেয়াল ধসে পড়লে প্রতিমার মাথা এবং হাত ভেঙে যায়। একই দিনে সাতক্ষীরার আশাশুনিতে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি পূজামণ্ডপে ঢিল ছুঁড়লে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৯ অক্টোবর রংপুরের গঙ্গাচড়া এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করায় রফিকুল নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, “দুর্গাপূজা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো নিরাপত্তা শঙ্কা নেই। তবে, আমরা সতর্ক রয়েছি। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কেউ কোনো ধরনের অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূজা উপলক্ষে প্রতিটি মণ্ডপে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। তবে, হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করে কেবল ধর্মীয় পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। সম্প্রদায়ের নেতারা জানান, এ ধরনের আক্রমণ শুধু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে না, এটি সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতির পরিবেশকেও নষ্ট করে।

পুলিশের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার করার জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন পূজামণ্ডপগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তাঁদের সার্বিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন।

তারিখ ১০.১০.২০২৪

শাঁখারীবাজারের প্রতিমা শিল্পীদের দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যস্ত সময়

বাংলাদেশে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিমা নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাকার শাঁখারীবাজারের প্রতিমা শিল্পীরা। প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় তাদের কারখানাগুলোয় এক ধরনের সৃজনশীল ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। এবার, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর সাম্প্রতিক আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে, পূজার প্রস্তুতি যেন আরও বেশি অর্থবহ হয়ে উঠেছে। বহু প্রজন্ম ধরে চলে আসা এই প্রতিমা তৈরির কাজ শুধু শিল্প নয়, বরং পূজা ও ভক্তির একটি অংশ। শাঁখারীবাজারের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রতিমা শিল্পী বলাই পালের ওয়ার্কশপে ১৬ জন কারিগর এই কঠিন সময়েও অক্লান্ত পরিশ্রম করে দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে নিয়োজিত আছেন।
শাঁখারীবাজারের প্রতিমা শিল্পীদের দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যস্ত সময়

বাংলাদেশে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিমা নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাকার শাঁখারীবাজারের প্রতিমা শিল্পীরা। প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় তাদের কারখানাগুলোয় এক ধরনের সৃজনশীল ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। এবার, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর সাম্প্রতিক আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে, পূজার প্রস্তুতি যেন আরও বেশি অর্থবহ হয়ে উঠেছে। বহু প্রজন্ম ধরে চলে আসা এই প্রতিমা তৈরির কাজ শুধু শিল্প নয়, বরং পূজা ও ভক্তির একটি অংশ। শাঁখারীবাজারের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রতিমা শিল্পী বলাই পালের ওয়ার্কশপে ১৬ জন কারিগর এই কঠিন সময়েও অক্লান্ত পরিশ্রম করে দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে নিয়োজিত আছেন।

শাঁখারীবাজারের সরু গলি

ঢাকা, ৮ অক্টোবর: প্রতি বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশের প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করেন। ঢাকার পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক শাঁখারীবাজার এলাকাটি এই শিল্পীদের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এখানে প্রতিমা শিল্পীরা বছরের বিভিন্ন সময় দেব-দেবীর প্রতিমা তৈরিতে নিয়োজিত থাকলেও, দুর্গাপূজা উপলক্ষে তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় বহুগুণ। দুর্গাপূজা, যা বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অন্যতম প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান, শুধু ধর্মীয় নয়, বরং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকও বটে।

শাঁখারীবাজারের সরু গলি

শাঁখারীবাজারের ওয়ার্কশপগুলোতে কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ চলে। এরমধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হল শ্রী শ্রী প্রণ বল্লভ জিউ মন্দিরের কারখানা, যেখানে প্রতিমা শিল্পী বলাই পালের নেতৃত্বে ১৬ জন কারিগর দিনরাত কাজ করে চলেছেন। তাদের কারখানার বয়স প্রায় ১৩০ বছর এবং এটি ঢাকার সবচেয়ে বড় প্রতিমা তৈরির ওয়ার্কশপ হিসেবে পরিচিত। এই ওয়ার্কশপে প্রতিমা তৈরির কাজটি শুধু একটি পেশা নয়, বরং এটি ভক্তির প্রতীক, যেখানে কারিগররা দেবী দুর্গার প্রতি তাদের নিবেদন প্রদর্শন করেন।

শাঁখারীবাজারের সরু গলি

কারিগরদের কঠিন পরিশ্রম:
শাঁখারীবাজারের সরু গলির ভিতর দিয়ে প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো কিছু স্থাপনার মধ্যে দিয়ে এই ওয়ার্কশপে পৌঁছানো সহজ নয়। সরু পথ, রিকশার হর্ন, আর পুরান ঢাকার সিগনেচার খাবারের গন্ধের মাঝে বলাই পালের কারখানা এক অনন্য স্থান, যেখানে প্রতিমা তৈরির এক গভীর ঐতিহ্য লালিত হয়ে আসছে। ওয়ার্কশপে প্রবেশ করতেই, বাহিরের সকল কোলাহল যেন মিলিয়ে যায়। ঘরে শুধু শোনা যায় তুলি ও মাটির ছোঁয়ার শব্দ, যা প্রতিমা তৈরির সৃজনশীলতা ও সাধনার পরিচয় দেয়।

শাঁখারীবাজারের সরু গলি

প্রতিমা তৈরির কাজে কারিগররা সাধারণত দিনে আট থেকে নয় ঘণ্টা কাজ করেন। তবে দুর্গাপূজার সময় এই সময়সীমা বেড়ে দাঁড়ায় ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা। পূজার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই তারা ওয়ার্কশপেই খাওয়া-ঘুম করা শুরু করেন, যাতে সময়মতো প্রতিমা প্রস্তুত করতে পারেন। এই প্রচেষ্টার পেছনে আছে তাদের কঠোর পরিশ্রম ও দেবী দুর্গার প্রতি অগাধ ভক্তি।

শাঁখারীবাজারের সরু গলি

ঐতিহ্যবাহী কৌশল ও আধুনিকতার মিশ্রণ:
প্রতিমা তৈরিতে শতাব্দী প্রাচীন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, যেখানে বাঁশ, খড়, কাঠ এবং মাটি দিয়ে প্রতিমার অবয়ব তৈরি করা হয়। প্রতিটি প্রতিমা নির্মাণে প্রায় চার থেকে পাঁচ সপ্তাহ সময় লাগে। প্রথমে বাঁশ ও কাঠের কাঠামো বানানো হয়, তারপরে তাতে মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়। প্রতিমার গায়ে একাধিক মাটির স্তর দেওয়ার পর, তা শুকিয়ে সাদা রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়। এরপর বলাই পাল নিজে চোখ ও মুখের সূক্ষ্ম অংশগুলো আঁকেন। এই পুরো প্রক্রিয়াটি দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করার জন্য নিখুঁত মনোযোগ ও সময়ের প্রয়োজন হয়।

শাঁখারীবাজারের সরু গলি

আগের সময়ে দুর্গার প্রতিমাগুলোতে মাটির উপরে তুলনামূলকভাবে কম রঙের ব্যবহার করা হতো, এবং সাজসজ্জাও ছিল বেশ সরল। কিন্তু বর্তমানে, প্রতিমার পোশাক ও অলংকারের ক্ষেত্রে অনেক নতুনত্ব আনা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বলিউডের ট্রেন্ড অনুযায়ী প্রতিমার সাজসজ্জা এবং পোশাকেও এসেছে পরিবর্তন। আগে যেখানে মাটির রঙের সাথে মিশে থাকা তুলার শাড়ি ব্যবহার করা হতো, সেখানে এখন উজ্জ্বল রঙের সিনথেটিক কাপড়ের ব্যবহার বেশি দেখা যায়।

শাঁখারীবাজারের সরু গলি

ভক্তির প্রতীক:
প্রতিমা তৈরির কাজটি শুধু একটি আর্ট নয়, বরং এটি এক ধরনের পূজা। এখানে কাজ করা প্রতিমা শিল্পীরা মনে করেন, তাদের কাজের মাধ্যমে তারা দেবী দুর্গাকে পূজা করছেন। তারা মাটির প্রতিমা তৈরি করার সময় কোনো ধরনের মাংস বা মদ্যপান থেকে বিরত থাকেন। কারিগর নীলান্দ্রি, যিনি এই ওয়ার্কশপে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছেন, বলেন, “দেবী দুর্গার শক্তি আমাদের এমন পরিশ্রম করতে সক্ষম করে। তিনি আমাদের হাতকে পরিচালনা করেন, যাতে আমরা তার অবয়বকে সঠিকভাবে তৈরি করতে পারি।”

শাঁখারীবাজারের সরু গলি

উৎসবের শেষ পর্ব:
দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমী, যা প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে পূর্ণতা লাভ করে। ঢাকার শাঁখারীবাজারে প্রতিমা বিসর্জনের সময় হাজারো মানুষ একত্রিত হয়। তারা প্রতিমাগুলোকে বুড়িগঙ্গা নদীতে নিয়ে গিয়ে জলে বিসর্জন দেয়, যা দেবী দুর্গার তার স্বামী শিবের কাছে ফিরে যাওয়ার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। এই সময়ে আনন্দের পাশাপাশি বিষাদও লক্ষ্য করা যায়, কারণ ভক্তরা দেবীকে বিদায় জানায়। বিসর্জনের পরে, প্রতিমা শিল্পীরা মনে করেন, তাদের এক বছরের সাধনা পূর্ণতা পেয়েছে এবং তারা পরের বছর আবারও এই পরিশ্রমের জন্য প্রস্তুত হন।

শাঁখারীবাজারের সরু গলি

বলাই পালের মতো প্রতিমা শিল্পীরা শুধু শিল্পী নন, বরং তারা বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক এবং বাহক। তাদের কর্মশক্তি ও ভক্তি দুর্গাপূজাকে একটি গভীর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় উপলক্ষ হিসেবে তুলে ধরে।

শাঁখারীবাজারের সরু গলি

সূত্র: বিবিসি

তারিখ ১০.১০.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের দুর্দশা - ভারতীয় সমস্যা

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সরকার পরিবর্তনের পর থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে বিভিন্ন হুমকি, প্রতিমা ভাঙচুর এবং জোরপূর্বক চাঁদা দাবির মতো ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। বাংলাদেশ সরকার পূজা চলাকালীন সময়ে আযান চললে পূজার কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে, যা স্থানীয় উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে আরও উৎসাহিত করছে। এই পরিস্থিতির ফলে অনেক সংখ্যালঘু শরণার্থী ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে শরণার্থীদের প্রবেশ বেড়েছে, যা সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং সঠিক পরিকল্পনার অভাব স্পষ্ট হচ্ছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের দুর্দশা - ভারতীয় সমস্যা

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সরকার পরিবর্তনের পর থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে বিভিন্ন হুমকি, প্রতিমা ভাঙচুর এবং জোরপূর্বক চাঁদা দাবির মতো ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। বাংলাদেশ সরকার পূজা চলাকালীন সময়ে আযান চললে পূজার কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে, যা স্থানীয় উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে আরও উৎসাহিত করছে। এই পরিস্থিতির ফলে অনেক সংখ্যালঘু শরণার্থী ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে শরণার্থীদের প্রবেশ বেড়েছে, যা সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং সঠিক পরিকল্পনার অভাব স্পষ্ট হচ্ছে। সূত্র: [টাইমস অফ ইন্ডিয়া]

নয়াদিল্লী, ৯ অক্টোবর: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সরকার পরিবর্তনের পর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে, শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চাঁদা দাবি, হুমকি, এবং পূজামণ্ডপে হামলার মতো ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। বাংলাদেশের স্থানীয় উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো বিভিন্ন পূজামণ্ডপে জোর করে চাঁদা আদায় করছে এবং পূজা চলার অনুমতি দেওয়ার শর্তে মন্দির ও পূজা কমিটিগুলোর কাছ থেকে ‘প্রোটেকশন মানি’ দাবি করছে। এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বরং, বাংলাদেশ সরকার একটি বিতর্কিত নির্দেশ জারি করেছে, যেখানে পূজা চলাকালীন আযান চললে পূজার কার্যক্রম স্থগিত রাখার কথা বলা হয়েছে। এই ধরনের সরকারি নির্দেশনার ফলে উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো পূজার কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছে।

এই পরিস্থিতিতে অনেক হিন্দু শরণার্থী বিভিন্ন উপায়ে ভারত সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছে। দালালরা উভয় পক্ষের সীমান্তে শরণার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে এবং এই অমানবিক অবস্থার সুযোগ নিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে শরণার্থীদের প্রবেশ বেড়েছে এবং রাজ্য সরকারগুলো এ নিয়ে কেন্দ্রের ওপর দায় চাপাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড সরকারের দাবি, সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (BSF) কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে, তাই সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ করা তাদের দায়িত্ব।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণে সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই এ ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্তের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর উচিত ছিল সম্ভাব্য শরণার্থী প্রবাহের বিষয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া। কিন্তু বাস্তবে এমন কোনো পরিকল্পনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে শরণার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, কিন্তু আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মেঘালয়ের মতো রাজ্যগুলোতে এই সংখ্যা কম। এর কারণ এই রাজ্যগুলোর সরকার অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

পশ্চিমবঙ্গে ১৯৫১ সালে মুসলিম জনসংখ্যার হার ছিল ২০% (প্রায় ৫.১ মিলিয়ন), যা ২০১১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭% (প্রায় ২৪.৬ মিলিয়ন)। এর পেছনে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ থেকে মুসলিম শরণার্থীদের অনুপ্রবেশ অন্যতম কারণ। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের পর এই সংখ্যা ৩০ মিলিয়ন অতিক্রম করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই সমস্যার দিকে চোখ বুজে আছে, যা ভবিষ্যতে রাজ্যের সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে।

ভারত সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) প্রণয়ন করেছে, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রতিবেশী দেশগুলোর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের সুরক্ষা ও নাগরিকত্ব প্রদান। এই আইনের আত্তা ও উদ্দেশ্য স্পষ্ট—বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সুতরাং, ভারতের উচিত ছিল এই ধরনের শরণার্থীদের জন্য পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং বৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের আশ্রয় প্রদান করা। তাদেরকে অস্থায়ী শিবিরে রাখার ব্যবস্থা এবং সঠিক যাচাই-বাছাইয়ের পর বৈধভাবে তাদের আশ্রয় দেওয়া উচিত ছিল, যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি বা গোষ্ঠী প্রবেশ করতে না পারে।

সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (BSF) এবং স্থানীয় প্রশাসনকে একযোগে কাজ করার প্রয়োজন ছিল। ৪,১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে প্রতিটি গজে প্রহরী বা চেকপয়েন্ট বসানো অসম্ভব, কিন্তু আকাশপথে নজরদারি, হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো যেতে পারত। এর ফলে শরণার্থীদের অবৈধ প্রবেশ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হতো। বাস্তবে এই ধরনের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে প্রমাণ নেই।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডে শরণার্থীদের অবাধ প্রবেশ একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধুমাত্র সংখ্যালঘু হিন্দু বা খ্রিস্টান নয়, বরং মুসলিম শরণার্থীদেরও প্রবেশ বেড়েছে। ভারতে আসা এসব শরণার্থীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ কীভাবে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মিশে যাবে, তা একটি গুরুতর প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের উচিত ছিল সংখ্যালঘু শরণার্থীদের গ্রহণ ও নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আগে থেকেই একটি সুসংগঠিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা, যা বর্তমানে অনুপস্থিত।

বর্তমান পরিস্থিতিতে, সব শরণার্থীকে অনায়াসে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া যাবে না। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর প্রায় ১.৫ মিলিয়ন শরণার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল এবং তাদের নিয়ে আজও সমস্যা চলছে। তাই আবার সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করা উচিত নয়। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ১৭ মিলিয়ন (৭.৯% হিন্দু এবং ১.১% অন্যান্য) লোক যদি সহজেই ভারতে প্রবেশের সুযোগ পায়, তবে এটি দেশের নিরাপত্তার জন্য বড় সংকট হতে পারে। সুতরাং, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে একসঙ্গে সমন্বয় করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং CAA আইনের আত্তা বজায় রেখে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজতে হবে।

সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া

তারিখ ১০.১০.২০২৪

বাংলাদেশের সংবিধানে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার স্বীকৃতির দাবী

ক্ষুদ্র জাতিসত্তা নিয়ে একটি আলোচনাসভায় বক্তারা বাংলাদেশের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর অস্তিত্ব সংকট সমাধানে রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বক্তারা বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানকে বিভাজনমূলক আখ্যা দিয়ে বলেন, এতে বিভিন্ন জাতিসত্তা ও ধর্মের অধিকারকে উপেক্ষা করা হয়েছে। সভায় মণবেন্দ্র নারায়ণ লারমার সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের অধিকারের কথা উল্লেখ করা হয়। আলোচকরা বলেন, সঠিক পরিকল্পনা ও রাজনীতির মাধ্যমে পাহাড়ি অঞ্চলের সংকট নিরসন করতে হবে এবং একটি বহুজাতিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশের সংবিধানে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার স্বীকৃতির দাবী

ক্ষুদ্র জাতিসত্তা নিয়ে একটি আলোচনাসভায় বক্তারা বাংলাদেশের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর অস্তিত্ব সংকট সমাধানে রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বক্তারা বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানকে বিভাজনমূলক আখ্যা দিয়ে বলেন, এতে বিভিন্ন জাতিসত্তা ও ধর্মের অধিকারকে উপেক্ষা করা হয়েছে। সভায় মণবেন্দ্র নারায়ণ লারমার সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের অধিকারের কথা উল্লেখ করা হয়। আলোচকরা বলেন, সঠিক পরিকল্পনা ও রাজনীতির মাধ্যমে পাহাড়ি অঞ্চলের সংকট নিরসন করতে হবে এবং একটি বহুজাতিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে।

ঢাকা, ৮ অক্টোবর: বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে বক্তারা সংবিধানে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিকার অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা জোর দিয়ে বলেছেন। তাদের মতে, ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর অস্তিত্ব রক্ষায় এটি একটি জরুরি রাজনৈতিক সমাধান। বক্তারা বলেন, একটি প্রকৃত জাতীয় অগ্রগতির জন্য এবং বহুজাতিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে সংবিধানে এই সম্প্রদায়গুলোর স্বীকৃতি অত্যন্ত জরুরি।

আলোচনা সভাটি “মণবেন্দ্র নারায়ণ লারমার সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি: জুলাই মাসের গণজাগরণ, রাষ্ট্র সংস্কার ও আদিবাসী অংশীদারিত্ব” শিরোনামে মাওরুম জার্নাল ও আইপিনিউজ বিডির যৌথ আয়োজনে মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আলোচকরা বর্তমান সংবিধানকে সংকীর্ণ ও বিভাজনমূলক বলে আখ্যা দেন এবং মণবেন্দ্র নারায়ণ লারমার দৃষ্টিভঙ্গির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করেন। তারা উল্লেখ করেন যে, লারমা সব সম্প্রদায়ের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য একটি বৈচিত্র্যময় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র কাঠামোর পক্ষে ছিলেন, যা বর্তমান সংবিধানে অনুপস্থিত।

লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ আলোচনার সূচনা করেন এবং এতে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রবায়েত ফেরদৌস, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, লেখক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামন্তা শারমিন।

বহুত্ববাদ ও অন্তর্ভুক্তির আহ্বান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রবায়েত ফেরদৌস বলেন, বর্তমান সংবিধান পুরুষতান্ত্রিক এবং বিভাজনমূলক। এটি বাঙালি ও মুসলিমদের অধিকারকে প্রাধান্য দেয়, কিন্তু অন্যান্য জাতিসত্তা, ধর্ম ও ভাষার অধিকারের বিষয়ে চুপ থাকে। তিনি বলেন, “আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলি, কিন্তু আমাদের সংবিধান কেবল পুরুষদের জন্য, কেবল বাঙালিদের জন্য, কেবল মুসলিমদের জন্য এবং কেবল বাংলা ভাষার জন্য।”

ড. আমেনা মহসিন পাহাড়ি অঞ্চলগুলোর জন্য প্রযোজ্য আইনগুলোর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন এবং চুক্তির অসংগতিগুলোকে তুলে ধরেন, যা ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর অধিকার ক্ষুণ্ণ করছে। তিনি বলেন, “বাঙালি শ্রেষ্ঠত্বের দৃষ্টিভঙ্গির আড়ালে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে সরলীকরণ ও হেয় করার প্রচেষ্টা চলছে।”

লারমার দৃষ্টিভঙ্গি
লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, লারমার দৃষ্টিভঙ্গি আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। তিনি একটি বহুজাতিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ছিলেন, যেখানে সমস্ত সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা পাবে এবং এককভাবে বাঙালি পরিচয়কে প্রাধান্য দেওয়া হবে না।

মাওরুম জার্নালের সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন ক্ষিসা বলেন, লারমা ১৯৭২ সালের গণপরিষদে বহুত্ববাদ ও আওয়ামী স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে এককভাবে লড়াই করেছিলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কারের যে কোনো প্রয়াসে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কণ্ঠস্বরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”

নতুন প্রজন্মের ভূমিকা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন নতুন প্রজন্মকে এই বিষয়গুলো নিয়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান এবং তাদেরকে এমন সংস্কার দাবি করতে বলেন, যা প্রান্তিক সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষিত করবে। তিনি বলেন, “পাহাড়ি জনগণের প্রতি আমাদের ঔপনিবেশিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে এবং তাদেরকে এই দেশের পূর্ণ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।”

লেখক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ সংবিধান সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের অনুপস্থিতির বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেন এবং বলেন, “সংখ্যালঘুদের মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই শুরু হয়েছিল যখন শেখ মুজিবুর রহমান তাদেরকে বাঙালি হিসেবে আত্মীকরণ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।”

কবি ও লেখক মিথুন রক্ষম উত্তরবঙ্গে সাম্প্রতিক বন্যার সময় সরকারের উদাসীনতার কথা উল্লেখ করেন এবং এর সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের প্রতি সরকারের প্রতিক্রিয়ার তুলনা করেন। তিনি বলেন, “অন্তর্ভুক্তিমূলক সাংবিধানিক স্বীকৃতির অভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীগুলো সবসময় বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।”

সম্মুখপথ
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ও সাংবাদিক অনীক রায় বলেন, “পাহাড়ি সমস্যা একটি রাজনৈতিক সংকট, যা কেবল একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের শোষণের মাধ্যমে কখনো সমাধান করা সম্ভব নয়। এটি একটি সমান অধিকার ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলার মধ্যেই নিহিত।”

আইনজীবী ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য শায়ক চাকমা বলেন, “জুলাই মাসের গণজাগরণে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অবদানকে অবমূল্যায়ন করা যাবে না এবং তাদেরকে সমান অংশীদার হিসেবে দেখতে হবে, যদি আমরা সত্যিই একটি ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই।”

আলোচনাটি পরিচালনা করেন আইপিনিউজের ডেপুটি এডিটর সতেজ চাকমা। এই আলোচনা সভার মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিকারকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়।

তারিখ ১০.১০.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার আহ্বান জানালো যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সময় তাদের অধিকার সুরক্ষিত দেখতে চায়। সম্প্রতি, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ বেড়েছে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তার দেশত্যাগের পর থেকে। এ প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত উভয়েই বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। একটি জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সাম্প্রতিক সহিংসতায় ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও রয়েছেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার আহ্বান জানালো যুক্তরাষ্ট্র

ওয়াশিংটন, ৮ অক্টোবর: যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সময় তাদের অধিকার সুরক্ষিত দেখতে চায়। সম্প্রতি, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ বেড়েছে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তার দেশত্যাগের পর থেকে। এ প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত উভয়েই বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত উভয়েই বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবগুলো শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে পারে।

বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সময় তাদের সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সম্প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে, বিশেষ করে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তার দেশত্যাগের পর থেকে। এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্র চায় যে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করা হোক।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা চাই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত হোক, যেভাবে সারা বিশ্বেই সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা চাই।” তিনি আরও জানান যে, ধর্মীয় মৌলবাদীদের দ্বারা হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর যে হুমকি সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।

এই বক্তব্যটি এমন একটি সময়ে এসেছে, যখন বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় তাদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা উদযাপন করছে এবং বিভিন্ন এলাকায় পূজা মণ্ডপে আক্রমণ ও নিরাপত্তার অভাব দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতায় অন্তত ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও রয়েছেন।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তার দেশত্যাগের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠেছে। সাময়িক সরকার গঠনের পর থেকে, দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ বেড়ে গেছে এবং সহিংসতার মাত্রা বাড়ছে। সাময়িক সরকারের প্রধান, ড. ইউনুসের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান যে, তারা যেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শন করে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

ভারতও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবগুলো যেন শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যাতে তারা নির্ভয়ে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারে।

এদিকে, বাংলাদেশে ধর্মীয় সহিংসতার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ বেড়ে গেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশে সহিংসতায় ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও রয়েছেন। তবে, এখনো পর্যন্ত এই সহিংসতায় জড়িত কাউকেই বিচারের আওতায় আনা হয়নি। এটি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক এবং উদ্বেগের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলের দাবি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নির্যাতন এবং সহিংসতা চলছে, তা বন্ধ করা এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ধর্মীয় সহিংসতা এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার কারণে হিন্দু সম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারছে না। অনেক পূজা মণ্ডপে আক্রমণ হয়েছে, মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়েছে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত উভয়েই বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবগুলো শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে পারে।

সূত্র: প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া

তারিখ ০৯.১০.২০২৪

বাংলাদেশে দুর্গাপূজায় হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

বাংলাদেশে আসন্ন দুর্গাপূজা উৎসবের আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিভিন্ন মৌলবাদী ইসলামিক গোষ্ঠী এই উৎসবের বিরোধিতা করছে এবং নিরাপত্তার অজুহাতে হিন্দুদের পূজা উদযাপনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সাময়িক সরকার ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার আশ্বাস দিলেও, পূজা মণ্ডপে আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে এবং হিন্দু সম্প্রদায় আতঙ্কে রয়েছে। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপনের প্রতিশ্রুতি দিলেও, পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ২০৫টি হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে দুর্গাপূজায় হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

ঢাকা, ৮ অক্টোবর: বাংলাদেশে আসন্ন দুর্গাপূজা উৎসবের আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিভিন্ন মৌলবাদী ইসলামিক গোষ্ঠী এই উৎসবের বিরোধিতা করছে এবং নিরাপত্তার অজুহাতে হিন্দুদের পূজা উদযাপনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সাময়িক সরকার ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার আশ্বাস দিলেও, পূজা মণ্ডপে আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে এবং হিন্দু সম্প্রদায় আতঙ্কে রয়েছে। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপনের প্রতিশ্রুতি দিলেও, পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ২০৫টি হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আগে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, বিভিন্ন মৌলবাদী ইসলামিক গোষ্ঠী দুর্গাপূজা উদযাপন নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছে এবং হিন্দুদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

এ বছর ৯ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলা এবং বৈষম্যের অভিযোগ সামনে এসেছে। বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠন দাবি করেছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত এবং তাই তারা দুর্গাপূজা উদযাপন বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

সম্প্রতি, কিশোরগঞ্জের বত্রিশ গোপীনাথ জিউর আখড়ায় একটি দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লা জেলায় আরেকটি দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর ও মন্দিরের দানবাক্স লুটের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকে পূজা বন্ধ রাখার দাবিতে মিছিল ও শ্লোগানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। “পূজা করতে দেবো না” (পূজো হ’তে দেবো না) শ্লোগান দিয়ে তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।

ঢাকার সেক্টর ১৩-এ ইনসাফ কিমকারি ছাত্র-জনতা নামের একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী গত মাসে হিন্দুদের দুর্গাপূজার জন্য মাঠ ব্যবহার বন্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। তারা দুর্গাপূজা বন্ধ করার ১৬ দফা দাবির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা পরিবেশগত ক্ষতির কথা উল্লেখ করেছে এবং অভিযোগ করেছে যে, দুর্গাপূজার জন্য সরকারি তহবিলের অপব্যবহার হচ্ছে। তাদের দাবি, এই ধর্মীয় উৎসব মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সমাজের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে এবং এ ধরনের উদযাপন বন্ধ হওয়া উচিত।

এছাড়াও, এই গোষ্ঠী দাবি করেছে যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্দির “দখল করা জমির উপর” নির্মিত হয়েছে এবং এসব মন্দির ভেঙে ফেলার প্রয়োজন। তারা দেশের সব মন্দিরে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যানার ও শ্লোগান প্রদর্শনের দাবি জানিয়েছে, যাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভারত-সমর্থনের ধারণা দূর করা যায়।

এদিকে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, “এই বছরের দুর্গাপূজা উদযাপন অন্যান্য বছরের তুলনায় সর্বোত্তম হবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেব।” তিনি আরও জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্যান্ডেল ও মণ্ডপের নিরাপত্তা তদারকির জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হবে এবং নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি চালানো হবে।

সরকারি নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, পূজা মণ্ডপে যেকোনো প্রকারের উত্তেজনাপূর্ণ বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানো বন্ধ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া নজরদারি রাখা হবে। পূজা উদযাপন কমিটিগুলোকে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা সার্বক্ষণিক মণ্ডপের নিরাপত্তা তদারকি করতে পারে।

সেপ্টেম্বর মাসে, বাংলাদেশ সরকার পূজা কমিটিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল, তারা যেন আজান ও নামাজের সময় তাদের বাদ্যযন্ত্র ও সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখে। সাময়িক সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেন বলেছিলেন, “যারা ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করবে বা পূজামণ্ডপে আক্রমণ করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা প্রায় ৮ শতাংশ, যা ১৭ কোটির দেশের মোট জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর, হিন্দুদের উপর আক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হাসিনার পতনের এক সপ্তাহের মধ্যে হিন্দুদের উপর প্রায় ২০৫টি আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, এবং এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

শেখ হাসিনার পতনের পর, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ ইউনুস দেশটিতে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। কেউ এমন কিছু করবেন না যা ধর্মীয় সম্প্রীতিতে আঘাত হানে।” এছাড়া, তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করে আশ্বস্ত করেছেন যে, তার সরকার হিন্দু সম্প্রদায় ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেবে।

সূত্র: firstpost

তারিখ ০৯.১০.২০২৪

দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে সাধারণ ছুটি ঘোষণা

বাংলাদেশ সরকার দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সাধারণত একদিনের ছুটি থাকলেও, এবার তা বাড়িয়ে দুই দিন করা হয়েছে, যার সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো মিলিয়ে মোট চার দিনের ছুটি থাকবে। এই ঘোষণা হিন্দু সম্প্রদায়ের আট দফা দাবির প্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও করেছে। সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে পূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, এবং বিভিন্ন স্তরে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু উদযাপনের আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।
দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে সাধারণ ছুটি ঘোষণা

ঢাকা, ৮ অক্টোবর: বাংলাদেশ সরকার দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সাধারণত একদিনের ছুটি থাকলেও, এবার তা বাড়িয়ে দুই দিন করা হয়েছে, যার সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো মিলিয়ে মোট চার দিনের ছুটি থাকবে। এই ঘোষণা হিন্দু সম্প্রদায়ের আট দফা দাবির প্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও করেছে। সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে পূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, এবং বিভিন্ন স্তরে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু উদযাপনের আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার এ বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার দুর্গাপূজার জন্য মোট চার দিন ছুটি থাকবে, যা আগে ছিল একদিন। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯ শতাংশ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। কিন্তু সম্প্রতি দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। আগস্ট মাসে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিলে, হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন।

এই অতিরিক্ত ছুটির ঘোষণা হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে উত্থাপিত আট দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে। আজাদ বলেন, “এতদিন বাংলাদেশে দুর্গাপূজার জন্য কেবল একদিন ছুটি ঘোষণা করা হতো, কিন্তু এবার দুই দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং এর সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে মোট চার দিন ছুটি থাকবে।”

আজাদ আরও জানান, এই অতিরিক্ত ছুটি কার্যকর করা হবে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে, যা আজই জারি করা হবে। তিনি বলেন, “সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগস্ট মাসে পরিবর্তনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ফলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।”

সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দুর্গাপূজা চলাকালীন সকল প্রকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সতর্ক থাকতে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উত্তেজনাপূর্ণ বা বিভেদমূলক বক্তব্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। পূজা উদযাপন কমিটিগুলোকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে মণ্ডপগুলো সার্বক্ষণিক তদারকির আওতায় থাকে।

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে মন্দির ও মণ্ডপের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়লেও, সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে এবং আশ্বাস দিয়েছে যে, কোনো ধরনের আক্রমণ সহ্য করা হবে না। ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেন বলেছেন, “যারা ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের দেশের সকল সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকার রক্ষার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

অন্যদিকে, হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে। তাদের আশা, অতিরিক্ত ছুটি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে তারা এবার শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারবেন।

সূত্র: নিউজ ডেস্ক

তারিখ ০৯.১০.২০২৪

দুর্গাপূজার শুরু: মহাষষ্ঠী বুধবার

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হবে আগামী বুধবার, মহাষষ্ঠীর দিনে। পাঁচ দিনের এই শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরুতে দেবী দুর্গার পূজা অনুষ্ঠিত হবে দেশের বিভিন্ন মন্দির ও মণ্ডপে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের সব মণ্ডপে কড়া নজরদারি রাখা হবে। রাজধানী ঢাকায় ২৫৭টি মণ্ডপসহ সারা দেশে ৩২,৬৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন হবে।
দুর্গাপূজার শুরু: মহাষষ্ঠী বুধবার

ঢাকা, ৭ অক্টোবর: বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হবে আগামী বুধবার, মহাষষ্ঠীর দিনে। পাঁচ দিনের এই শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরুতে দেবী দুর্গার পূজা অনুষ্ঠিত হবে দেশের বিভিন্ন মন্দির ও মণ্ডপে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের সব মণ্ডপে কড়া নজরদারি রাখা হবে। রাজধানী ঢাকায় ২৫৭টি মণ্ডপসহ সারা দেশে ৩২,৬৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন হবে।

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হবে আগামী বুধবার মহাষষ্ঠীর দিনে। এ দিন দেশব্যাপী মন্দির এবং অস্থায়ী মণ্ডপে দেবী দুর্গার পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হবে সকালে কাল্পারম্ভের মাধ্যমে, যার পরে বিকেলে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা অনুষ্ঠিত হবে, যেমন অধিবাস এবং আমন্ত্রণ।

১০ অক্টোবর, উৎসবের দ্বিতীয় দিনে মহাসপ্তমী পূজা সকালে অনুষ্ঠিত হবে। এদিন নবপত্রিকা, যা নয়টি উদ্ভিদসহ একটি কলাগাছ এবং একটি সাদা শাড়ি দিয়ে আবৃত থাকে, সেটি গঙ্গার পবিত্র জলে স্নান করিয়ে গণেশের পাশে স্থাপন করা হবে।

১১ অক্টোবর, মহাঅষ্টমী পূজার সময় বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে থাকবে অষ্টমী পূজা, অঞ্জলি প্রদান, কুমারি পূজা এবং সন্ধি পূজা। এ বছর মহা নবমী তিথি একই দিন শুরু হবে, যা ১২ অক্টোবর সকাল ৬:১২ পর্যন্ত চলবে।

১২ অক্টোবর দাশমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবটি ১৩ অক্টোবর দেবীর মূর্তি নিকটবর্তী নদী বা পুকুরে বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, দুর্গাপূজা চলাকালে দেবী দুর্গা স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আসেন, এবং এ বছর তিনি পালকি নিয়ে আগমন করবেন।

সরকারি তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে ৩২,৬৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন হবে, যার মধ্যে ২৫৭টি মণ্ডপ রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত। ঢাকায় প্রধান পূজা মণ্ডপগুলো হলো ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশন, বনানী, কালাবাগান, শাখারী বাজার, সিদ্ধেশ্বরী কালিমন্দির, রামনা কালিমন্দির, জগন্নাথ হল (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), খামারবাড়ি (ফার্মগেট), লালবাগ রিশিপাড়া, রাজারবাগ কালিমন্দির এবং পুরানো ঢাকার অন্তর্ভুক্ত তাঁতি বাজার।

ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি ভক্তি গানের পরিবেশন, বস্ত্র বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা এবং স্বেচ্ছাসেবী রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হবে।

দুর্গাপূজা বাংলাদেশে বড় আকারে উদযাপিত হবে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেটসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে এবং ফরিদপুর, দিনাজপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা জেলাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে।

হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, ত্রেতা যুগে, রাজা রামচন্দ্র দশানন রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। রামচন্দ্র দেবী আদ্যাশক্তি মহামায়ার (দেবী দুর্গা) পূজা করে ছিলেন, যা পাপের বিনাশ এবং রামচন্দ্রের সীতা উদ্ধার ও রাবণকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ছিল। সেই থেকে হিন্দু সম্প্রদায় শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করে আসছে।

দুর্গাপূজা উদযাপনের সময় সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে। প্রতি বছর ন্যায়, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে একটি কেন্দ্রীয় পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হবে, যা মণ্ডপগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা মনিটরিং করবে।

সূত্র: বিএসএস নিউজ

তারিখ ০৮.১০.২০২৪

ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন দুর্গাপূজা উদযাপন করবে অডিটোরিয়ামে

বাংলাদেশে সহিংসতার বৃদ্ধির কারণে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন এ বছর কুমারী পূজা উদযাপন করতে পারছে না। দুর্গাপূজা এবার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি বিবেচনা করে, পূজা কমিটিগুলোকে প্যান্ডেল স্থাপনের জন্য ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে বলা হচ্ছে। সহিংসতার শিকার হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা ক্রমশ কমছে, যা উদ্বেগের বিষয়। সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন দুর্গাপূজা উদযাপন করবে অডিটোরিয়ামে

ঢাকা, ৭ অক্টোবর: বাংলাদেশে সহিংসতার বৃদ্ধির কারণে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন এ বছর কুমারী পূজা উদযাপন করতে পারছে না। দুর্গাপূজা এবার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি বিবেচনা করে, পূজা কমিটিগুলোকে প্যান্ডেল স্থাপনের জন্য ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে বলা হচ্ছে। সহিংসতার শিকার হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা ক্রমশ কমছে, যা উদ্বেগের বিষয়। সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

বাংলাদেশে সহিংসতার বেড়ে ওঠার কারণে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন এ বছর কুমারী পূজা উদযাপন করতে পারবে না। দুর্গাপূজা এবার অডিটোরিয়ামে উদযাপন করা হবে। মিশনের এক উচ্চপদস্থ কর্মী জানান, “বর্তমান পরিস্থিতির অস্থিরতা বিবেচনা করে, রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গাপূজা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে, কারণ উগ্রপন্থীরা কোনও আওয়াজ সহ্য করতে পারছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুরা আতঙ্কিত।”

পূজা কমিটিগুলোকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা প্যান্ডেল স্থাপন করতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক এলাকায় কনক এবং সঙ্গীতের শব্দ সহ্য করা হচ্ছে না।

সূত্র অনুযায়ী, ৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে প্রায় ২০১০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটে, যা হিন্দুদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে বাড়ি, ব্যবসা, উপাসনালয় এবং এমনকি গণপিটুনির মতো ঘটনাও।

বর্তমান সরকার পূজা প্যান্ডেল এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, কোনও অভিযুক্তকে এখনও আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকার এক সংখ্যালঘু কর্মী। তিনি জানান, “বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আজ উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। বর্তমান সরকার তাদের আওয়ামী লীগের সমর্থক মনে করে।”

বাংলাদেশের হিন্দু/সংখ্যালঘু জনসংখ্যার হার পূর্ব পাকিস্তান অবস্থায় ২৮.৭% থেকে কমে ১৯৭১ সালে ২১% এবং বর্তমানে ৮.৭%-এ দাঁড়িয়েছে।

২০২৩ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৩২,০০০ পূজা প্যান্ডেল ছিল, তবে আসন্ন উৎসবের জন্য এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।

সূত্র: New Indian Express

তারিখ ০৮.১০.২০২৪

দুর্গাপূজা উদযাপন নিয়ে উগ্র ইসলামী গোষ্ঠীর প্রতিবাদ

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হবে আগামী বুধবার, মহাষষ্ঠীর দিনে। পাঁচ দিনের এই শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরুতে দেবী দুর্গার পূজা অনুষ্ঠিত হবে দেশের বিভিন্ন মন্দির ও মণ্ডপে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের সব মণ্ডপে কড়া নজরদারি রাখা হবে। রাজধানী ঢাকায় ২৫৭টি মণ্ডপসহ সারা দেশে ৩২,৬৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন হবে।
দুর্গাপূজা উদযাপন নিয়ে উগ্র ইসলামী গোষ্ঠীর প্রতিবাদ

ঢাকা, ৭ অক্টোবর: দুর্গাপূজা উৎসবের নিকটে আসার সাথে সাথে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর বাড়ছে চাপ, বিশেষ করে কিছু উগ্র ইসলামী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে। ঢাকার সেক্টর ১৩-এ “ইনসাফ কিমকারি ছাত্র-জনতা” নামের একটি উগ্র ইসলামী সংগঠন দুর্গাপূজা উদযাপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা দাবি করেছে যে, দুর্গাপূজাকে জাতীয় ছুটি হিসেবে বাতিল করা উচিত এবং মন্দিরগুলোতে ভারতবিরোধী ব্যানার প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশে দুর্গাপূজা উৎসবের দিনগুলি কাছে আসার সাথে সাথে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উগ্র ইসলামী গোষ্ঠীগুলোর চাপ বাড়ছে। তারা পবিত্র উৎসবের সময় সাধারণ উত্সব, মূর্তিপূজা এবং বিসর্জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানাচ্ছে।

ঢাকার সেক্টর ১৩-এ “ইনসাফ কিমকারি ছাত্র-জনতা” নামক একটি উগ্র ইসলামী সংগঠন সম্প্রতি একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে, যেখানে তারা স্থানীয় একটি খেলার মাঠে দুর্গাপূজা উদযাপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। খেলার মাঠটি বহু বছর ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বারা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির সাথে সাথে, একাধিক ইসলামী সংগঠনগুলো পাবলিক উৎসবের বিরোধিতা করেছে।

প্রতিবাদকারীরা বাংলা ভাষায় লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে তাদের দাবি তুলে ধরেছেন, যার মধ্যে ছিল মূর্তির বিসর্জনে পরিবেশের ক্ষতি এবং জনসাধারণের পূজার জন্য সড়ক বন্ধ করার বিষয়। তারা যুক্তি দিয়েছেন যে, এমন অনুষ্টান অযৌক্তিক, বিশেষ করে যেহেতু বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র অল্প শতাংশ হিন্দু।

প্রতিবাদকারীদের মূল দাবি ছিল দুর্গাপূজাকে জাতীয় ছুটি হিসেবে বাতিল করা। তারা দাবি করেছেন যে, উৎসবটি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের জন্য অপ্রয়োজনীয় অসুবিধা সৃষ্টি করে। ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’র একটি প্রতিবেদনের অনুযায়ী, এই সংগঠনটি “দখলকৃত জমিতে” নির্মিত মন্দিরগুলোর ধ্বংসের দাবি তুলেছে, যা ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে।

বিক্ষোভকারীরা আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে দাবি করেছেন, বাংলাদেশে অবস্থিত মন্দিরগুলোতে ভারতবিরোধী ব্যানার প্রদর্শন করতে হবে যাতে দেশের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ পায়। তারা যুক্তি দেখিয়েছে যে, হিন্দু নাগরিকদের ভারতীয় সংযোগ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে হবে, যা বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশের সাথে বৃহত্তর ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রতিফলন।

সূত্র: এমএসএন

তারিখ ০৮.১০.২০২৪

সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের প্রতিবাদে বৌদ্ধদের কঠিন চীবর দান উৎসব বাতিল

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নিপীড়ন, “দুর্গাপূজা” উদযাপনের সময় হিন্দুদের প্রতি উগ্রপন্থীদের হুমকি এবং “জিজিয়া” (অমুসলিম জনসংখ্যার মুসলিম শাসকদের প্রতি প্রদেয় কর) দাবি করার পর, চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলের স্থানীয় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা নিরাপত্তার উদ্বেগে “কঠিন চীবর দান” উৎসব পালন করবেন না বলে ঘোষণা করেছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি সংঘটিত সহিংসতা এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের প্রতিবাদে বৌদ্ধদের কঠিন চীবর দান উৎসব বাতিল

রাঙামাটি, ৬ অক্টোবর: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নিপীড়ন, “দুর্গাপূজা” উদযাপনের সময় হিন্দুদের প্রতি উগ্রপন্থীদের হুমকি এবং “জিজিয়া” (অমুসলিম জনসংখ্যার মুসলিম শাসকদের প্রতি প্রদেয় কর) দাবি করার পর, চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলের স্থানীয় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা নিরাপত্তার উদ্বেগে “কঠিন চীবর দান” উৎসব পালন করবেন না বলে ঘোষণা করেছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি সংঘটিত সহিংসতা এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর চলমান নিপীড়ন এবং নিরাপত্তাহীনতার প্রেক্ষাপটে চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলের বৌদ্ধ সম্প্রদায় এই বছর “কঠিন চীবর দান” উৎসব পালন করবে না বলে ঘোষণা করেছেন। ৬ অক্টোবর, দুপুরে রাঙামাটির মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারে অনুষ্ঠিত এক প্রেস কনফারেন্সে “পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ”-এর সভাপতি শ্রদ্ধালঙ্কার মহাথেরো এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে, নিরাপত্তাহীনতার কারণে এই বছর কোনও মন্দিরে এই উৎসব উদযাপিত হবে না। কঠিন চীবর দান উৎসব প্রতি বছর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হয় এবং এটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় ধর্মীয় উদযাপন।

বৌদ্ধ ভিক্ষুরা অভিযোগ করেছেন যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় সক্রিয় এবং পরোক্ষভাবে জড়িত। তারা জানান, তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও, কোনও সাম্প্রদায়িক হামলার তদন্ত করা হয়নি।

শ্রদ্ধালঙ্কার মহাথেরো উল্লেখ করেছেন, ১৮ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি পাহাড়ি অঞ্চলে সংঘটিত সহিংসতা সাধারণ জনগণের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ঘটায়। এই হামলায় চারজন আদিবাসীর মৃত্যু ঘটে, যাদের মধ্যে একজন ছাত্রও ছিল। পাশাপাশি, বৌদ্ধ মন্দিরের দানের বাক্স লুট করা হয়েছে এবং বুদ্ধের মূর্তিগুলোর প্রতি অবমাননা করা হয়েছে।

বৌদ্ধদের এ উদ্বেগের মাঝে, দুর্গাপূজার সময় হিন্দু মূর্তি ভাঙার ঘটনার শিকার হন তারা। ২৮ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর রাজশাহী বিভাগের সুজনগর উপজেলার রিশিপাড়া বারোয়ারী পূজা মন্ডপ এবং মণিকাদি পালপাড়া বারোয়ারী পূজা মন্ডপে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি ভাঙা হয়। ৩ অক্টোবর গোপীনাথ জিউর আখড়া দুর্গা পূজা মন্ডপেও সাতটি দেবতার মূর্তি ভাঙা হয়। মাত্র ছয় দিনে তিনটি মন্দির এবং ষোলটি দেবতার মূর্তির উপর হামলা হয়।

নতুন শাসন ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠার পর ৫ আগস্ট থেকে হিন্দু মন্দির, দোকান ও ব্যবসায়ে হামলা ঘটে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলেছে।

অতীতে এই উৎসবের সময়, বৌদ্ধদের কঠিন চীবর দান পালনের ঐতিহ্য রয়েছে, যেখানে তারা ভিক্ষুকে দান হিসেবে “চিবার” পরিধান করান। এই উদযাপন বৌদ্ধ ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং এটি সংস্কৃতির পরিচায়ক।

বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বানে স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এই সিদ্ধান্ত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া সহিংসতা এবং নিপীড়নের ঘটনা থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করছেন ধর্মীয় নেতারা।

সূত্র: OpIndia

তারিখ ০৮.১০.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষার দাবিতে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণসমাবেশ

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান নির্যাতন ও সহিংসতার প্রতিবাদে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজার হাজার সংখ্যালঘু সদস্যের অংশগ্রহণে এক বিশাল গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সনাতনী হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন। তারা সরকারের কাছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ৮ দফা দাবির দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান। বক্তারা বলেন, গত দুই মাস ধরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর, হত্যা ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে চলেছে, যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষার দাবিতে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণসমাবেশ

ঢাকা, ৪ঠা অক্টোবর: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান নির্যাতন ও সহিংসতার প্রতিবাদে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজার হাজার সংখ্যালঘু সদস্যের অংশগ্রহণে এক বিশাল গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সনাতনী হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন। তারা সরকারের কাছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ৮ দফা দাবির দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান। বক্তারা বলেন, গত দুই মাস ধরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর, হত্যা ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে চলেছে, যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষা ও অধিকার রক্ষার দাবিতে শুক্রবার, ৪ঠা অক্টোবর, ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক বিশাল গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ সংখ্যালঘু ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই সমাবেশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজার হাজার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ যোগ দেন।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। দুই মাস আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন এবং তিনি ভারত চলে যান। এর পরপরই শান্তিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পরপরই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নানা ধরনের সহিংসতা শুরু হয়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দাবি করেছে, এই সহিংসতাগুলো ধর্মীয় নয়, বরং রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে। কিন্তু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এটিকে নিছক রাজনৈতিক সংঘাত হিসেবে মানতে নারাজ এবং তারা বলছে যে, এ ধরনের হামলা তাদের ধর্মীয় ও জাতিগত সত্ত্বাকে লক্ষ্য করে ঘটানো হয়েছে।

৮ দফা দাবি

সমাবেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা ৮ দফা দাবি পেশ করেন, যা হলো:

১. সংখ্যালঘু নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা: সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

২. সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন: সংখ্যালঘু সুরক্ষার জন্য একটি পৃথক আইন প্রণয়ন করে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, অধিকার ও সম্পত্তি সুরক্ষিত করতে হবে।

৩. সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন: সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমস্যা ও তাদের অধিকার সুরক্ষার জন্য একটি “সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়” গঠন করতে হবে।

৪. হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের উন্নয়ন ও সংখ্যালঘু ফাউন্ডেশন গঠন: হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে “হিন্দু ফাউন্ডেশন”-এ উন্নীত করতে হবে এবং একইসঙ্গে বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কল্যাণ ট্রাস্টগুলোকেও ফাউন্ডেশনে রূপান্তর করতে হবে।

৫. দখলকৃত দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সুরক্ষার জন্য আইন প্রণয়ন: দখলকৃত দেবোত্তর সম্পত্তি ও সংখ্যালঘুদের জমি পুনরুদ্ধার ও সুরক্ষার জন্য একটি কার্যকর আইন প্রণয়ন করতে হবে।

৬. বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে উপাসনালয় নির্মাণ: দেশের প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ করতে হবে এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনার ঘর বরাদ্দ দিতে হবে।

৭. শারদীয় দুর্গাপূজার জন্য ৫ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা: দুর্গাপূজার জন্য ৫ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করতে হবে এবং প্রতিটি সংখ্যালঘু ধর্মীয় উৎসবের জন্য প্রয়োজনীয় ছুটি নিশ্চিত করতে হবে।

৮. সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ডের আধুনিকায়ন: সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ডকে আধুনিকায়ন করতে হবে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।

বক্তাদের বক্তব্য

সমাবেশে বক্তারা বলেন, “প্রতিদিন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নির্যাতন এবং বৈষম্যের ঘটনা ঘটছে। আমরা সরকারের কাছে আমাদের অধিকার, নিরাপত্তা ও মর্যাদা সুরক্ষার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই।” তারা আরও বলেন, “সরকার যদি দ্রুত আমাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে আমাদের আন্দোলন আরও তীব্র ও ব্যাপক হবে। আমরা আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার সুরক্ষিত করতে মাঠে থাকব।”

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান

সমাবেশে বক্তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানান। তারা বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও সম্পত্তি দখলের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে অবহিত করতে হবে। আমরা চাই, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করুক।”

প্রশাসনের কাছে আহ্বান

গণসমাবেশে উপস্থিত সংখ্যালঘু নেতারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সরকারকে অবিলম্বে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা চাই, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিটি মানুষের জানমাল ও সম্পত্তি সুরক্ষিত থাকুক এবং এ দেশের প্রতিটি নাগরিক যেন সমান সুযোগ ও মর্যাদা ভোগ করতে পারে।”

সমাবেশের প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া

সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হলেও উপস্থিত অনেকেই প্রশাসনের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এই বিষয়ে উদাসীনতা পরিহার করতে হবে।”

ভবিষ্যতের কর্মসূচি

বক্তারা আরও জানান, “এই ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না। প্রয়োজনে আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের এ আন্দোলন শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিকভাবে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চালিয়ে যাব।”

গণসমাবেশে উপস্থিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সরকারের সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়িত হবে এবং দেশে শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ ফিরে আসবে।

তারিখ ০৪.১০.২০২৪

বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিমা ভাঙচুর: ভারতের উদ্বেগ প্রকাশ

দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাকে অবাঞ্ছিত এবং উদ্বেগজনক হিসেবে চিহ্নিত করেছে ভারত। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এই ধরনের ঘটনা উৎসবের প্রকৃত বার্তা দেয় না এবং এটি সামাজিক সম্প্রীতির জন্য ক্ষতিকর। ভারত সরকার বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এই বিষয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিমা ভাঙচুর: ভারতের উদ্বেগ প্রকাশ

নয়াদিল্লী, ৪ঠা অক্টোবর: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাকে অবাঞ্ছিত এবং উদ্বেগজনক হিসেবে চিহ্নিত করেছে ভারত। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এই ধরনের ঘটনা উৎসবের প্রকৃত বার্তা দেয় না এবং এটি সামাজিক সম্প্রীতির জন্য ক্ষতিকর। ভারত সরকার বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এই বিষয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা একেবারেই অনভিপ্রেত এবং সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা দেয় না। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা ব্যাহত

রণধীর জয়সোয়াল আরও বলেন, দুর্গাপূজার মতো উৎসবগুলো সাধারণত শান্তি, সম্প্রীতি এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে মিলনের বার্তা দেয়। কিন্তু প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা সেই উৎসবের মূল উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটি সামাজিক সম্প্রীতির বার্তার বিপরীতে কাজ করে এবং এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশের সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবি

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বাংলাদেশের প্রশাসনের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা আশা করছি, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের প্রতি যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং তাদের ওপর কোনো ধরনের আক্রমণ ও হেনস্তা যেন না হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।’

কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রসঙ্গ

ব্রিফিংয়ে ভারতসহ অন্যান্য দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রণধীর জয়সোয়াল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘যেকোনো দেশের কূটনীতিকদের নিযুক্তি, বদলি বা প্রত্যাহার করা সম্পূর্ণ তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা এর ওপর কোনো মন্তব্য করব না।’

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে ভারতের উদ্বেগ প্রকাশ এবং সার্ক পুনরুজ্জীবন প্রসঙ্গে ভারতের মতামত বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মন্তব্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সংহতি বৃদ্ধির জন্য ভারতের সার্কের পাশাপাশি বিমসটেককে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

তারিখ ০৪.১০.২০২৪

কিশোরগঞ্জে দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর: পূজার আয়োজন কমিটির হতাশা

কিশোরগঞ্জের শহরে প্রথমবারের মতো দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য তৈরি করা সাতটি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে, যখন বত্রিশ এলাকার মণিপুরঘাট রোডের শ্রীশ্রী জিউর আখড়ায় পূজা উদযাপনের জন্য প্রতিমাগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছিল। গোপীনাথ সংঘের সদস্যদের উদ্যোগে আয়োজিত এই পূজায় প্রথমবারের মতো স্থানীয় বাসিন্দারা একত্রিত হয়েছিলেন। তাদের দাবি, দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
কিশোরগঞ্জে দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর: পূজার আয়োজন কমিটির হতাশা

কিশোরগঞ্জ, ৩ অক্টোবর: কিশোরগঞ্জের শহরে প্রথমবারের মতো দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য তৈরি করা সাতটি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে, যখন বত্রিশ এলাকার মণিপুরঘাট রোডের শ্রীশ্রী জিউর আখড়ায় পূজা উদযাপনের জন্য প্রতিমাগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছিল। গোপীনাথ সংঘের সদস্যদের উদ্যোগে আয়োজিত এই পূজায় প্রথমবারের মতো স্থানীয় বাসিন্দারা একত্রিত হয়েছিলেন। তাদের দাবি, দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের শ্রীশ্রী জিউর আখড়ায় প্রথমবারের মতো আয়োজিত দুর্গাপূজার সাতটি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে শহরের মণিপুরঘাট রোড হিন্দুপাড়ার গোপীনাথ সংঘ আয়োজিত পূজায় এই ঘটনা ঘটে। সংঘের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল এবং এখন শুধু রং করার কাজ বাকি ছিল। মহালয়া পার হয়ে দুর্গাপূজার মাত্র সাত দিন বাকি থাকতেই এমন ঘটনার শিকার হতে হলো।

প্রতিমা ভাঙচুরের সময়

গোপীনাথ সংঘের সদস্য অপু কান্তি রায় জানান, রাতে তারা পাঁচজন মন্দির পাহারায় ছিলেন। রাত চারটা পর্যন্ত পাহারায় থাকার পর বৃষ্টি শুরু হলে তারা ঘুমাতে যান। এরপর ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান যে দুর্গা, লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিকসহ মোট সাতটি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। অপু কান্তি বলেন, “পূজা করতে দূরে যেতে হতো, তাই এবারই প্রথম আমরা এলাকাবাসী মিলে নিজেদের এলাকায় দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু এমন ঘটনায় আমরা মুষড়ে পড়েছি।”

স্থানীয়দের ক্ষোভ ও উদ্বেগ

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুর্গাপূজার উৎসবের জন্য প্রতিমা তৈরির কাজ একপ্রকার শেষ হয়ে গিয়েছিল। এবারই প্রথমবারের মতো তাঁরা তাঁদের এলাকায় একত্রিত হয়ে পূজার আয়োজন করেছিলেন, যা স্থানীয় সনাতনীদের জন্য একটি বড় মাপের উদযাপন হতে চলেছিল। কিন্তু দুর্বৃত্তদের এই আক্রমণের ফলে সবাই ভীষণভাবে হতাশ এবং নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি লিটন সরকার ও সাধারণ সম্পাদক সজীব কুমার সাহা বলেন, “এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে প্রথমবারের মতো দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলাম, কিন্তু এভাবে প্রতিমাগুলো ভেঙে দেওয়ায় আমরা সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। প্রশাসনের কাছে আমাদের একমাত্র দাবি, যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।”

পুলিশ প্রশাসনের বক্তব্য

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। দুষ্কৃতকারী যে–ই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।” তিনি আরও আশ্বাস দেন যে, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনার পেছনে যাদের হাত রয়েছে, তাদের শনাক্ত করতে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে এবং তদন্তের অগ্রগতি দ্রুত জানানো হবে।

পূজা উদ্‌যাপনের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি

গোপীনাথ সংঘের সদস্য ও স্থানীয় সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা জানান, এবারই প্রথম তাঁরা নিজেদের এলাকায় পূজার আয়োজন করেছেন। সাধারণত, এলাকার হিন্দু পরিবারগুলোকে দূরের মন্দিরে গিয়ে পূজা করতে হতো। কিন্তু এবার তাঁরা নিজেদের জায়গাতেই দুর্গাপূজা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ছোট থেকে বড় সবাই মিলে একত্রিত হয়ে প্রতিমা তৈরির কাজে সহায়তা করেছেন। কিন্তু মহালয়ার পরে যখন তাঁরা পূজার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন, তখনই দুর্বৃত্তরা তাদের স্বপ্ন নষ্ট করে দিল।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

এ ঘটনার পর স্থানীয় সনাতনী সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, এ ধরনের আক্রমণ শুধু তাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে না, বরং এটি তাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও বড় ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করে। এলাকাবাসীর দাবি, মন্দিরের নিরাপত্তা জোরদার করা হোক এবং পূজা উদ্‌যাপন যেন কোনো বাধা ছাড়াই সম্পন্ন হয়, সেজন্য প্রশাসনকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

পূজার আয়োজক কমিটির নেতৃবৃন্দের দাবি, “আমরা প্রশাসনের কাছে জোরালো আবেদন জানাই, যারা এই কাজটি করেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। এটি শুধু প্রতিমা ভাঙচুর নয়, আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর আঘাত। যদি এই ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে, যা আমাদের ধর্মীয় সহাবস্থানের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”

কিশোরগঞ্জের এই প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা শুধু স্থানীয় সনাতনী সম্প্রদায়ের জন্য নয়, সমগ্র দেশের ধর্মীয় সহাবস্থানের জন্য একটি হুমকিস্বরূপ। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের মাধ্যমে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা অত্যন্ত জরুরি। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, প্রশাসন দ্রুত দোষীদের শনাক্ত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করবে এবং পূজার মতো উৎসবগুলো যাতে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হতে পারে, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করবে।

তারিখ ০৪.১০.২০২৪

নাটোরে হিন্দু গৃহবধূকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ, আতঙ্কে পরিবার

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বুধবার গভীর রাতে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হিন্দু গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক যুবকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর স্বামী বাড়ির বাইরে থাকাকালে, অভিযুক্ত সন্ত্রাসী রবিউল ইসলাম বাড়ির রেলিং দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে এবং গৃহবধূকে হুমকি দিয়ে এই জঘন্য কাজ করে। ঘটনার পর ভুক্তভোগী প্রাণভয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরবর্তীতে তিনি থানায় মামলা করেন। পুলিশ ইতোমধ্যে ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করেছে এবং ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবক রবিউল ইসলামের দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্থানীয় হিন্দু সমাজ।
নাটোরে হিন্দু গৃহবধূকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ, আতঙ্কে পরিবার

নাটোর, ২৫ সেপ্টেম্বর: নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বুধবার গভীর রাতে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হিন্দু গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক যুবকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর স্বামী বাড়ির বাইরে থাকাকালে, অভিযুক্ত সন্ত্রাসী রবিউল ইসলাম বাড়ির রেলিং দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে এবং গৃহবধূকে হুমকি দিয়ে এই জঘন্য কাজ করে। ঘটনার পর ভুক্তভোগী প্রাণভয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরবর্তীতে তিনি থানায় মামলা করেন। পুলিশ ইতোমধ্যে ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করেছে এবং ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবক রবিউল ইসলামের দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্থানীয় হিন্দু সমাজ।

নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায় গভীর রাতে নিজের ঘরে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক সন্ত্রাসী যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে উপজেলার ছোট চৌগ্রাম (কামারপাড়া) এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ নিজেই সিংড়া থানায় গিয়ে অভিযুক্ত রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত সন্ত্রাসী রবিউল ছোট চৌগ্রামের বাসিন্দা ফজলু বিশ্বাসের ছেলে।

ভুক্তভোগীর স্বামী জানান, প্রতিদিনের মতো রাত ১টার দিকে তিনি মাছ ধরার জন্য বাড়ির পাশের বিলে চলে যান। এই সুযোগে রবিউল বাড়ির রেলিং বেয়ে ভেতরে প্রবেশ করে এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। এসময় ভুক্তভোগীকে হুমকি দিয়ে সে পালিয়ে যায়। অভিযুক্ত রবিউল পালানোর সময় বলে, “এই কথা যদি কারও কাছে বলিস, তাহলে তোকে এবং তোর সন্তানদের মেরে ফেলব।”

ঘটনার পর আতঙ্কে থাকা গৃহবধূ দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে পাশের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন এবং সেখান থেকে থানায় খবর দেন। এই নৃশংস ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অভিযুক্ত রবিউলের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সিংড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি চান মোহন হালদার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এ ধরনের অপকর্ম যারা করে, তারা সমাজ ও জাতির শত্রু। এদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যেন ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করতে সাহস না পায়।” তিনি আরও জানান, “আমাদের সমাজে নারীরা যদি নিজের ঘরে পর্যন্ত নিরাপদ না থাকে, তাহলে এই পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। এই ধরনের অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।”

এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে সিংড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। সিংড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আকবর আলী জানান, “ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা মামলা নিয়েছি এবং ধর্ষণের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”

পুলিশ আরও জানায়, অভিযুক্ত রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে আগেও নানা অপরাধমূলক কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে, তবে কোনো শাস্তির ব্যবস্থা না হওয়ায় সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা বলেন, “অভিযুক্ত দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নানা ধরনের অপকর্ম করে আসছে, কিন্তু প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবে সে পার পেয়ে গেছে।”

ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তার পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। গৃহবধূর স্বামী বলেন, “আমার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে এখন আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। অভিযুক্ত ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় আমরা ভয় পাচ্ছি, সে আবার এসে আমাদের ক্ষতি করবে।”

ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয়রা এবং তাঁরা একত্রিত হয়ে অপরাধীর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “আমরা সবাই একসঙ্গে আছি, আমরা চাই, এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে এবং অভিযুক্ত যেন দ্রুত শাস্তি পায়।”

(সূত্র: চ্যানেল ২৪ বিডি)

তারিখ ২৭.০৯.২০২৪

গৌরীপুরে শ্রীশ্রী গোবিন্দ জিউর মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর, একজন আটক

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার শ্রীশ্রী গোবিন্দ জিউর মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর একজনকে আটক করা হয়েছে, যিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করা হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি পঙ্কজ পাল। তবে প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপ এখনো দৃশ্যমান হয়নি। সংখ্যালঘুদের পক্ষ থেকে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গৌরীপুরে শ্রীশ্রী গোবিন্দ জিউর মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর, একজন আটক

ময়মনসিংহ, ২৬ সেপ্টেম্বর: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার শ্রীশ্রী গোবিন্দ জিউর মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর একজনকে আটক করা হয়েছে, যিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করা হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি পঙ্কজ পাল। তবে প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপ এখনো দৃশ্যমান হয়নি। সংখ্যালঘুদের পক্ষ থেকে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার শ্রীশ্রী গোবিন্দ জিউর মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোররাতে মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করা হয়। এই ঘটনায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। ঘটনার পরে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে মন্দির প্রাঙ্গণে জড়ো হন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি পঙ্কজ পাল ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোরের দিকে অজ্ঞাতপরিচয় কিছু লোক মন্দিরের গেটে ঢুকে প্রতিমা ভাংচুর করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে একজনকে আটক করে। আটককৃত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত না করা গেলেও তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে স্থানীয়রা এই দাবি নিয়ে সন্দিহান এবং ঘটনাটির পেছনে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা, তা তদন্তের দাবি তুলেছেন।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ জানান, “আমাদের মন্দির ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলোতে এ ধরনের আক্রমণ একের পর এক ঘটছে। কিন্তু প্রতিবারই প্রশাসন দোষীদের মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দায় এড়িয়ে যায়। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে প্রশাসনের আরও কঠোর ভূমিকা প্রয়োজন।”

ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা দেখেন, মন্দিরের প্রধান প্রতিমাটি সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মন্দিরের অন্যান্য স্থাপনায়ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মন্দিরের পুরোহিত জানান, “এই মন্দিরটি এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের একমাত্র উপাসনাস্থল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা-অর্চনা করে আসছি। কিন্তু এমন ঘটনা আমাদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে বাধ্য করছে।”

প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনার পর থেকেই এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং তাঁরা প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রতন চন্দ্র দাস বলেন, “এ ধরনের ঘটনা আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। প্রশাসন যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।”

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আটককৃত ব্যক্তির মানসিক অবস্থার পরীক্ষা করা হবে এবং এ ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করা হবে। গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, “আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করছি, আটককৃত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। ঘটনার পেছনে যদি অন্য কোনো কারণ থেকে থাকে, তাহলে আমরা দোষীদের আইনের আওতায় আনব।”

এদিকে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপের অভাব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের দাবি, “প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটার পরও প্রশাসন এখনো কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”

এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসন দ্রুত উদ্যোগ নেবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরা আশা করছেন, সরকার সংখ্যালঘুদের প্রতি তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করবে যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।

সূত্র: সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন

তারিখ ২৬.০৯.২০২৪

উত্তরায় ১৩ নম্বর সেক্টরে দূর্গাপূজার আয়োজন, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নতুন স্থান নির্ধারণ

ঢাকার উত্তরা এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা এ বছর ১৩ নম্বর সেক্টরের খেলার মাঠের একাংশে অনুষ্ঠিত হবে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় এবং স্থানীয় জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের মাঠে পূজার আয়োজনের বিরোধিতা করায় এবং নতুন স্থান নির্ধারণের জন্য এলাকাবাসী মানববন্ধন করলে, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আলোচনার মাধ্যমে নতুন স্থান চূড়ান্ত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের মেজর খন্দকার জাহিদুল হক।
উত্তরায় ১৩ নম্বর সেক্টরে দূর্গাপূজার আয়োজন, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নতুন স্থান নির্ধারণ

ঢাকা, ২৬ সেপ্টেম্বর: ঢাকার উত্তরা এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা এ বছর ১৩ নম্বর সেক্টরের খেলার মাঠের একাংশে অনুষ্ঠিত হবে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় এবং স্থানীয় জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের মাঠে পূজার আয়োজনের বিরোধিতা করায় এবং নতুন স্থান নির্ধারণের জন্য এলাকাবাসী মানববন্ধন করলে, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আলোচনার মাধ্যমে নতুন স্থান চূড়ান্ত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের মেজর খন্দকার জাহিদুল হক।

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দূর্গাপূজার আয়োজন নিয়ে সম্প্রতি সৃষ্ট জটিলতার অবসান ঘটেছে। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে এ বছর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের খেলার মাঠের একাংশে পূজার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তরা দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। উত্তরা দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের কর্মকর্তা মেজর খন্দকার জাহিদুল হক সোমবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গত কয়েক বছর ধরে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের খেলার মাঠে দূর্গাপূজার আয়োজন করা হতো। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা মাঠটি শিশুদের খেলার জন্য ব্যবহারের দাবি জানিয়ে পূজা আয়োজন অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য মানববন্ধন করেন। এলাকাবাসীর এই দাবির প্রেক্ষিতে উত্তরা দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্থানীয় সনাতন ধর্মালম্বী নেতা ও সেক্টর কল্যাণ সমিতির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ জামান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সালাউদ্দিন ভূঁইয়া, সেক্টরবাসীর প্রতিনিধি মাহমুদ নাছের, ফরিদ উদ্দিন, এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নিত্য গোপাল, কমল কান্তি। এছাড়াও সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি উত্তরা পশ্চিম শাখার সভাপতি নিত্য গোপাল জানান, “১১ নম্বর সেক্টরের এলাকাবাসীর আপত্তির কারণে এ বছর প্রাথমিকভাবে আমাদের ১৩ নম্বর সেক্টরে পূজার আয়োজন করতে বলা হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তায় পূজার স্থান নির্ধারণের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা লিখিত অনুমতি পেলেই পূজার প্রস্তুতি শুরু করব। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আমরা এ বছর পূজার আয়োজন যথাযথভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করব।”

উত্তরা দিয়াবাড়ি ক্যাম্পের মেজর খন্দকার জাহিদুল হক সাংবাদিকদের জানান, “স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যাতে নির্বিঘ্নে পূজার আয়োজন করতে পারে, সেজন্য আমরা এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতে ১৩ নম্বর সেক্টরের খেলার মাঠের একটি অংশ নির্ধারণ করেছি। আশা করি, তাঁরা শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে তাঁদের ধর্মীয় উৎসব সম্পন্ন করতে পারবেন।”

অপরদিকে, পূজা কমিটির সহ-সভাপতি সন্দীপ কুমার রুদ্র বলেন, “লিখিত অনুমতি পাওয়ার পর আমরা কাল থেকেই কাজ শুরু করব। সেনাবাহিনীর এমন সহযোগিতায় আমরা অত্যন্ত খুশি। আমাদের আশা, এ বছর ১৩ নম্বর সেক্টরের মাঠে শান্তিপূর্ণভাবে পূজার আয়োজন করতে পারব।”

গত মাসে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের কিছু বাসিন্দা পূজা বন্ধের দাবিতে মিছিল করেন। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও বাসিন্দাদের নিয়ে বৈঠকে বসা হয় এবং সর্বসম্মতিতে ১৩ নম্বর সেক্টরের মাঠে পূজার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে এখনো আনুষ্ঠানিক অনুমতি না পাওয়ায় পূজা কমিটি কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, যদি চূড়ান্ত অনুমতি না মেলে, তবে পূজার প্রস্তুতি যথাসময়ে শুরু করা সম্ভব হবে না। তাঁরা দ্রুত প্রশাসনের কাছে লিখিত অনুমতি প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন।

উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরটি তুলনামূলক নতুন এলাকা হওয়ায় সেখানে পূজার আয়োজন নিয়ে কিছুটা শঙ্কা আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও আশা, এ বছর ১৩ নম্বর সেক্টরের মাঠে সুষ্ঠুভাবে দূর্গাপূজার আয়োজন হবে এবং উত্তরা এলাকার পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকবে।

সূত্র: সকালের সময়

তারিখ ২৬.০৯.২০২৪

রংপুরে হিন্দু ছাত্রীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করার অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকসহ দুই শিক্ষক বরখাস্ত

রংপুর শহরের দাসপাড়ায় মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে হিন্দু ছাত্রীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করার অভিযোগে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফিজুর রহমান ও ধর্মীয় শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রেজাউল করিম জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রংপুরে হিন্দু ছাত্রীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করার অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকসহ দুই শিক্ষক বরখাস্ত

রংপুর, ২৫ সেপ্টেম্বর: রংপুর শহরের দাসপাড়ায় মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে হিন্দু ছাত্রীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করার অভিযোগে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফিজুর রহমান ও ধর্মীয় শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রেজাউল করিম জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রংপুর শহরের দাসপাড়ার মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে হিন্দু ছাত্রীদের হিজাব পরতে বাধ্য করার অভিযোগে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বুধবার দুপুরে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে। এ ঘটনার জেরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান শিক্ষক মোফিজুর রহমান এবং ধর্মীয় শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছে।

বুধবারের বিক্ষোভে শতাধিক হিন্দু ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা অংশগ্রহণ করেন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয় এবং স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

বিক্ষোভরত ছাত্রীদের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষক ও ধর্মীয় শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমান তাঁদেরকে হিজাব পরতে বাধ্য করার চেষ্টা করছিলেন এবং এই বাধ্যবাধকতা মানতে না চাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপে রাখা হয়। ছাত্রীদের দাবি, ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে কাউকে কোনো পোশাক পরতে বাধ্য করা উচিত নয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম এবং পরিস্থিতি শান্ত রাখতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা করেছি। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”

বিক্ষোভের সময় ছাত্রীদের অভিযোগের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে আরও বেশি মানুষ এই বিষয়ে অবগত হন। ভিডিওতে কয়েকজন ছাত্রীকে হিজাব পরার বাধ্যবাধকতার কথা বলতে দেখা যায়, যা রংপুরের স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করে। এতে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, “বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে যে, প্রধান শিক্ষক ও ধর্মীয় শিক্ষক তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গিয়ে হিজাব পরতে বাধ্য করার চেষ্টা করেছেন। শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর, তাই আমরা বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “গতকাল (বুধবার) বিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি জানার পর আমি নিজে সেখানে ছুটে যাই এবং সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ে বসেই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও ধর্মীয় শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। এর ফলে পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত হয়।”

ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক মোফিজুর রহমানকে যোগাযোগ করা হলে তিনি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অন্যদিকে, ধর্মীয় শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমানের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক ও ধর্মীয় শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে শ্লোগান দেয় এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়। শিক্ষার্থীদের পক্ষে অভিভাবকরা বলেন, “আমাদের মেয়েদেরকে ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো কিছু করতে বাধ্য করা হবে, এটা আমরা মানতে পারি না। বিদ্যালয়ের পরিবেশকে শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা চাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এই ঘটনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছে এবং অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে, জেলা প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে যে, দ্রুত তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ২৬.০৯.২০২৪

কানাডা পার্লামেন্ট ভবনের সামনে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে

বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও নির্যাতন বন্ধ এবং তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে কানাডার বিভিন্ন শহরে বসবাসরত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা অটোয়ার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। এই সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ, উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং আসন্ন দুর্গাপূজার শান্তিপূর্ণ উদযাপন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। সমাবেশে কানাডার সরকার ও বিরোধীদলের সংসদ সদস্যরাও সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। আন্তর্জাতিক মহলকে এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
কানাডা পার্লামেন্ট ভবনের সামনে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে

কানাডা, ২৪ সেপ্টেম্বর: বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও নির্যাতন বন্ধ এবং তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে কানাডার বিভিন্ন শহরে বসবাসরত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা অটোয়ার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। এই সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ, উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং আসন্ন দুর্গাপূজার শান্তিপূর্ণ উদযাপন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। সমাবেশে কানাডার সরকার ও বিরোধীদলের সংসদ সদস্যরাও সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। আন্তর্জাতিক মহলকে এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতন বন্ধ এবং তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে কানাডার বিভিন্ন শহরে বসবাসরত বাংলাদেশি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্যরা অটোয়ার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। টরন্টো, মন্ট্রিয়ল, ক্যালগেরি এবং অটোয়া থেকে আসা শতাধিক মানুষ ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন নিয়ে সমবেত হন এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাঁদের দাবি তুলে ধরেন।

সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের ব্যানার ও পোস্টারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং আসন্ন দুর্গাপূজার সময় কোনো ধরনের হামলা বা সহিংসতা এড়াতে উপাসনালয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানান। তাঁরা বলেন, “আমাদের দাবি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করা হোক এবং তাঁদের উপর যে আক্রমণ চলছে, তা বন্ধ করা হোক।”

অটোয়ার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে আয়োজিত এই সমাবেশে কানাডার সরকার ও বিরোধীদলের সংসদ সদস্যরাও সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ-কানাডা পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের চেয়ার ব্র্যাড রেডিকপ এমপি, সালমা জাহিদ এমপি, চন্দ্রা আরিয়া এমপি, টিম উপপাল এমপি, শুভালয় মজুমদার এমপি, জসরাজ সিং হাল্লান এমপি, অর্পণ খান্না এমপি প্রমুখ।

সংসদ সদস্যরা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, “ধর্মীয় স্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার এবং তা নিশ্চিত করা প্রতিটি দেশের দায়িত্ব। সারা বিশ্বের সব ধর্মের মানুষই নির্ভয়ে তাঁদের ধর্ম পালনের অধিকার পেতে চায়। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং তাঁদের উপর চলমান নির্যাতন বন্ধ করবে।”

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, “বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও আদিবাসীরা আজ ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তাঁদের উপর হামলার ঘটনা বারবার ঘটছে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, তাঁরা যেন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেন।”

এছাড়াও, সমাবেশে উপস্থিত বাংলাদেশি নেতৃবৃন্দ জানান, “বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির ফলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপাসনালয় ও বাড়িঘরে আক্রমণ বেড়ে গেছে। এমনকি দুর্গাপূজার মতো বড় ধর্মীয় উৎসবের সময়ও তাঁদের আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে। আমরা চাই, আসন্ন দুর্গাপূজায় যেন কোনো ধরনের সহিংসতা না ঘটে এবং সবাই যেন শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পারে।”

সমাবেশে সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষার দাবিতে বক্তারা কানাডা সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকারের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করার জন্য অনুরোধ জানান। তাঁরা বলেন, “বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা ক্রমাগতভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে আমরা আন্তর্জাতিক মহল এবং কানাডার সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করি।”

বাংলাদেশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার আন্দোলনকারীরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক সমর্থন ও চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব। তাঁরা আরও জানান, “আমরা আশা করছি, কানাডা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় আমাদের পাশে থাকবে এবং তাদের উপর নির্যাতন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।”

সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন

তারিখ ২৬.০৯.২০২৪

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রতিবাদে পুরান ঢাকায় বিশাল সমাবেশ

গত ৫ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর একের পর এক অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হুমকি, মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে চলেছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সংগঠিত হয়ে ‘সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন’ এর ব্যানারে ২৩ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার মালিটোলা পার্কের সামনে একটি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। বিক্ষোভে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ দলমত নির্বিশেষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে এবং ৮ দফা দাবি জানায়। (সূত্র: সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন)
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রতিবাদে পুরান ঢাকায় বিশাল সমাবেশ

ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর: গত ৫ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর একের পর এক অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হুমকি, মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে চলেছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সংগঠিত হয়ে “সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন” এর ব্যানারে ২৩ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার মালিটোলা পার্কের সামনে একটি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। বিক্ষোভে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ দলমত নির্বিশেষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে এবং ৮ দফা দাবি জানায়। (সূত্র: সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন)

গত ৫ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা, লুটপাট, মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল ২৩ সেপ্টেম্বর “সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন” এর ডাকে পুরান ঢাকার মালিটোলা পার্কে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনকারীরা দলমত নির্বিশেষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এক বিশাল সমাবেশের আয়োজন করে, যা শেষ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিক্টোরিয়া পার্কে গিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভকারীরা জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে ধরনের নির্যাতন চলছে, তা কোনো স্বাধীন, গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে গ্রহণযোগ্য নয়। এই হামলা, লুটপাট, হুমকি এবং মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সাধারণ মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। সমাবেশে বক্তারা ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা, ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির ও প্রতিমা পুনর্নির্মাণ, এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি চলমান সহিংসতা বন্ধ করার দাবিগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বক্তারা জানান, গত কয়েক মাসে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। অনেক মন্দিরে অগ্নিসংযোগ, প্রতিমা ভাঙচুর এবং ধর্মীয় স্থাপনায় লুটপাট চালানো হয়েছে। এছাড়াও, সংখ্যালঘুদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করতে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। বক্তারা বলেন, সরকার ও প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আর কোনো ধরনের হামলা না হয় এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশের সময় বক্তারা আরও জানান, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক স্বাধীনতা চর্চায় বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। তারা সরকার ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানান, যেন সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

এসময় বক্তারা বলেন, “আমরা আর ঘরে বসে থাকতে পারি না। আমাদের নিজেদের অধিকারের জন্য মাঠে নামতে হবে। আমাদের দাবিগুলো দ্রুত মানা না হলে আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবো।” তারা আরও বলেন, “এই আন্দোলন শুধু সংখ্যালঘুদের জন্য নয়, এটি সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য যারা ধর্মীয় ও সামাজিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে।”

প্রতিবাদকারীরা উল্লেখ করেন যে, পুরান ঢাকার তাঁতী বাজার মোড়ে শুরু হওয়া এই সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা রায় সাহেব বাজার মোড় পর্যন্ত অগ্রসর হয়ে মালিটোলা পার্কে জড়ো হয়। এরপর তারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিক্টোরিয়া পার্কে গিয়ে এই কর্মসূচির শেষ পর্বে যোগ দেয়। সেখানে আরও একাধিক সংগঠন এবং ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন, যারা সংখ্যালঘুদের প্রতি হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান করেন।

সূত্র: সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন

তারিখ ২৪.০৯.২০২৪

রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধ বিহারে ভাঙচুর ও লুটপাটের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

রাঙ্গামাটিতে মৈত্রী বিহারে ভাঙচুর, লুটপাট এবং সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ। ২০ সেপ্টেম্বর ঘটে যাওয়া এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সংগঠনটি সোমবার সকালে মৈত্রী বিহারে এক সংবাদ সম্মেলন করে তাদের দাবি জানায়। এসময় সংঘবদ্ধ হামলায় বিহারের সম্পত্তি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং দুটি দানবাক্স লুট করা হয়। স্বাধীন ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে এসব হামলার নিন্দা জানিয়ে তারা দ্রুত বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ ও ক্ষতিপূরণের দাবি করেন। (সূত্র: পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ)
রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধ বিহারে ভাঙচুর ও লুটপাটের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

রাঙ্গামাটি, ২৩ সেপ্টেম্বর: রাঙ্গামাটিতে মৈত্রী বিহারে ভাঙচুর, লুটপাট এবং সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ। ২০ সেপ্টেম্বর ঘটে যাওয়া এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সংগঠনটি সোমবার সকালে মৈত্রী বিহারে এক সংবাদ সম্মেলন করে তাদের দাবি জানায়। এসময় সংঘবদ্ধ হামলায় বিহারের সম্পত্তি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং দুটি দানবাক্স লুট করা হয়। স্বাধীন ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে এসব হামলার নিন্দা জানিয়ে তারা দ্রুত বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ ও ক্ষতিপূরণের দাবি করেন। (সূত্র: পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ)

রাঙ্গামাটির মৈত্রী বিহারে সাম্প্রদায়িক হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনার দ্রুত বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ। সোমবার সকালে মৈত্রী বিহারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই দাবি তুলে ধরা হয়। ভিক্ষুরা জানান, ২০ সেপ্টেম্বরের হামলায় বিহারের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করা হয় এবং বুদ্ধমূর্তি ভাঙচুর, ত্রিপিটক ছিঁড়ে ফেলা ও আসবাবপত্রসহ বিহারের বিভিন্ন সম্পত্তি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই সঙ্গে দানবাক্স লুট করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি শ্রদ্ধালঙ্কার মহাথের লিখিত বক্তব্যে বলেন, “২০ সেপ্টেম্বর একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে মৈত্রী বিহারে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। তারা বিহারের বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র এবং বুদ্ধমূর্তি ভেঙে ফেলে। এমনকি ত্রিপিটকের পবিত্র গ্রন্থও ছিঁড়ে ফেলা হয়, যা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে।” এছাড়াও তিনি বলেন, “আমরা একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশে বাস করি, যেখানে এ ধরনের হামলা সহ্য করা যায় না। তাই আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”

হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিহারের সম্পত্তি পুনঃস্থাপনের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবিও জানান তিনি। একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিককালের অন্যান্য ঘটনারও তদন্তের দাবি করেন, বিশেষ করে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাগুলোতে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য পার্বত্য চুক্তির সঠিক বাস্তবায়ন ও পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতন্ত্র নিশ্চিত করা জরুরি। তারা সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান, যাতে এ ধরনের হামলা ভবিষ্যতে আর না ঘটে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য উপস্থিত ভিক্ষুরাও এই ঘটনার নিন্দা জানান। পূণ্যজ্যোতি মহাথের, শীলানন্দ মহাথের, নাইন্দাচারা মহাথের, শীলজ্যোতি মহাথের এবং মৈত্রী বিহারের সভাপতি পূর্নেন্দু বিকাশ চাকমা এই দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তাদের মতে, এই ধরনের হামলা শুধু ধর্মীয় সম্প্রীতিতে আঘাত নয়, বরং সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি স্বরূপ।

এ ধরনের ঘটনা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে এবং পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত বিভিন্ন ধর্ম ও জাতিসত্তার মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বক্তারা। তারা উল্লেখ করেন, সরকার ও প্রশাসনকে এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

মৈত্রী বিহারের ঘটনায় দায়ের করা মামলার দ্রুত তদন্তের দাবিতে পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানায়। তারা আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করছে এবং এই সম্প্রীতি নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তারা একযোগে প্রতিরোধ করবে।

সংবাদ সম্মেলনের শেষে বক্তারা আরও জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ সম্প্রদায় এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ এবং তারা সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন, যাতে ধর্মীয় সহিংসতা বন্ধ হয় এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে।

সূত্র: একাত্তর টিভি

তারিখ ২৪.০৯.২০২৪

মোদি ও বাইডেনের বৈঠকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত মাসেও দুই নেতা টেলিফোনে কথা বলেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হলো এবং দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হলো। (সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)
মোদি ও বাইডেনের বৈঠকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা

ডেলাওয়ার, যুক্তরাষ্ট্র ২১ সেপ্টেম্বর: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত মাসেও দুই নেতা টেলিফোনে কথা বলেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হলো এবং দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হলো। (সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে সম্প্রতি একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের বর্তমান অবস্থার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান সহিংসতা এবং নির্যাতনের বিষয়টি সামনে আনেন। মোদি এই বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে তুলে ধরে জানান যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি স্বরূপ হতে পারে।

গত মাসে দুই নেতার মধ্যে টেলিফোনে আলোচনার সময়ও একই বিষয় নিয়ে কথা হয়েছিল। সেই আলোচনাতে মোদি বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং বিশেষ করে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর সহিংসতার ব্যাপারে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মোদি ও বাইডেন উভয়েই বাংলাদেশে একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে আগ্রহী, যেখানে সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

বৈঠকে বাইডেন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সরকারকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। মোদি ও বাইডেন উভয়েই একমত যে বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি উন্নতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সচেতন হতে হবে। তারা মনে করেন, এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা অপরিহার্য।

বৈঠকে আলোচনা হয় যে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের ঘটনা শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু নয়, বরং এটি প্রতিবেশী দেশগুলোর নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এই সমস্যার সমাধানের জন্য আন্তরিক ও সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

এছাড়াও, পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি জানিয়েছেন যে, দুই নেতা বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রেও আলোচনা করেছেন এবং দেশটির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং নিরাপত্তার ওপর আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নির্ভরশীল, এবং তাই ভারতের কূটনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে দেশটি বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নে সরাসরি অংশগ্রহণ করছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ধরনের বৈঠকগুলোকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করা এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ভারতের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

এই বৈঠকটি দুই দেশের মধ্যে চলমান কূটনৈতিক সহযোগিতার অংশ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

তারিখ ২২.০৯.২০২৪

খুলনার দাকোপে দুর্গাপূজা কমিটির কাছে চাঁদা চেয়ে উড়োচিঠি

খুলনার দাকোপ উপজেলায় দুর্গাপূজা উদযাপন করতে চাইলে প্রতিটি মন্দিরকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে—এমন একটি উড়োচিঠি পেয়েছেন বিভিন্ন মন্দির কমিটির নেতারা। এই চাঁদা না দিলে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি প্রশাসন বা সাংবাদিকদের জানালে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। উড়োচিঠি পাওয়ার পর থেকে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কিছু মন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এ বছর পূজা উদযাপন করবে না। এরই মধ্যে চারটি মন্দির থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
খুলনার দাকোপে দুর্গাপূজা কমিটির কাছে চাঁদা চেয়ে উড়োচিঠি

খুলনা, ২১ সেপ্টেম্বর: খুলনার দাকোপ উপজেলায় দুর্গাপূজা উদযাপন করতে চাইলে প্রতিটি মন্দিরকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে—এমন একটি উড়োচিঠি পেয়েছেন বিভিন্ন মন্দির কমিটির নেতারা। এই চাঁদা না দিলে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি প্রশাসন বা সাংবাদিকদের জানালে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। উড়োচিঠি পাওয়ার পর থেকে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কিছু মন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এ বছর পূজা উদযাপন করবে না। এরই মধ্যে চারটি মন্দির থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

খুলনার দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরে দুর্গাপূজা উদযাপন করতে হলে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে—এমন হুমকিসহ উড়োচিঠি পেয়েছেন মন্দির কমিটির নেতারা। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যদি এই চাঁদা না দেওয়া হয়, তবে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। চাঁদা না দিলে এবং বিষয়টি প্রশাসন বা সাংবাদিকদের জানালে কচুকাটা করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এতে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কিছু মন্দির ইতোমধ্যে পূজা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত বুধবার বিভিন্ন মন্দিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের কাছে এই উড়োচিঠি পাঠানো হয়। শুক্রবার পর্যন্ত অন্তত চারটি মন্দির থেকে দাকোপ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। মন্দির কমিটির নেতারা চিঠির হুমকির বিষয়ে গভীর চিন্তায় আছেন এবং অনেকেই পূজা উদযাপন না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। কয়েকটি মন্দির ইতিমধ্যে পূজা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দাকোপ উপজেলার কামারখোলা সর্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শেখর চন্দ্র গোলদার জানান, এবছর পূজা ছোট আকারে করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু উড়োচিঠি পাওয়ার পর অনেক সদস্যই আগ্রহ হারিয়েছেন এবং এ বছর পূজা বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। একইভাবে, দাকোপের রামনগর ঠাকুরবাড়ি দুর্গাপূজা মণ্ডপের আয়োজকরাও একই ধরনের চিঠি পেয়েছেন।

চিঠিগুলো কম্পিউটারে কম্পোজ করা এবং হলুদ খামে পাঠানো হয়েছে। চিঠিগুলোর ভাষা প্রায় একই ধরনের, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘হানিফের প্রজেক্টে যেমন করেছি, তোদের পরিণতিও তেমন হবে।’ স্থানীয়দের মতে, হানিফের প্রজেক্ট বলতে বোঝানো হয়েছে গত ৫ আগস্টের একটি ঘটনা, যেখানে সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের নেতা মাহবুব উল আলম হানিফের চিংড়িঘেরে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনা থেকেই এই চিঠির হুমকির উৎস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, চারটি মন্দির থেকে এই উড়োচিঠির বিষয়ে জিডি করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মন্দিরগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ এবং ইউনিয়নভিত্তিক পুলিশ কর্মকর্তারাও সার্বক্ষণিক টহলে আছেন।

উড়োচিঠির ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। অনেকে পূজা উদযাপন বন্ধ রাখার কথা চিন্তা করছেন, তবে প্রশাসনের আশ্বাসে কিছু মন্দির এখনো পূজা উদযাপনের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ২১.০৯.২০২৪

ধোবাউড়ায় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে হিন্দু পরিবারের পাঁচটি দোকান দখলের অভিযোগ

ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় এক হিন্দু পরিবারের পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জোরপূর্বক দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী পরিবার দাবি করেছে, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম ওরফে টিটু তাঁদের পাঁচটি দোকানঘর দখল করে নিয়েছেন এবং তাঁদের জীবিকা নির্বাহের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। দোকানঘর দখলের প্রতিবাদে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁদের কষ্ট ও দুর্দশার কথা তুলে ধরেন।
ধোবাউড়ায় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে হিন্দু পরিবারের পাঁচটি দোকান দখলের অভিযোগ

ময়মনসিংহ, ২১ সেপ্টেম্বর: ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় এক হিন্দু পরিবারের পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জোরপূর্বক দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী পরিবার দাবি করেছে, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম ওরফে টিটু তাঁদের পাঁচটি দোকানঘর দখল করে নিয়েছেন এবং তাঁদের জীবিকা নির্বাহের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। দোকানঘর দখলের প্রতিবাদে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁদের কষ্ট ও দুর্দশার কথা তুলে ধরেন।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার পঞ্চনন্দপুর মোড়ে এক হিন্দু পরিবারের পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জোরপূর্বক দখল করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম ওরফে টিটুর বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ৬ আগস্ট কবিরুল তাঁর কয়েকজন সহযোগী নিয়ে দোকানঘরগুলোতে জোরপূর্বক তালা লাগিয়ে দেন এবং নিজেদের জমি দাবি করে দোকানের সামনে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন।

আজ শনিবার দুপুরে ধোবাউড়া প্রেসক্লাবে ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতুল সরকার, তাঁর ভাই অখিল সরকার ও ভাতিজা পলাশ সরকার। লিখিত বক্তব্যে অতুল সরকার জানান, ১৯৯৭ সালে তাঁর পরিবার মৃত শাহেদ আলী মুন্সির কাছ থেকে ১৫ শতক জমি কিনে সেখানে দোকান নির্মাণ করেন। ২০০৮ সালেও একই যুবদল নেতা জমির মালিকানা দাবি করে সমস্যার সৃষ্টি করেছিলেন, কিন্তু তখন স্থানীয়ভাবে সালিসে তাঁদের পক্ষে রায় আসে।

অতুল সরকার বলেন, “আমরা জমির প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে জমি কিনেছি। ১৯৯৭ সাল থেকে আমাদের দোকানগুলোতে ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু কবিরুল রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে আমাদের দোকানগুলো দখল করে নিয়েছে। এ নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আগে সালিসও হয়েছিল এবং সেখানে আমাদের মালিকানা প্রমাণিত হয়।”

তিনি আরও বলেন, “দোকানগুলো জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছি। আমাদের পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস এই দোকানগুলো। কিন্তু এখন দোকানগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় পরিবারে অভাব-অনটন দেখা দিয়েছে। আমরা আইনানুগ বিচার চাই, যেন আমাদের দোকানগুলো ফেরত পাই।”

সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরপরই উপজেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম দলীয় কিছু সহযোগী নিয়ে দোকানঘরগুলোর সামনে হাজির হন। এরপর তারা দোকানের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে সবকিছু জোর করে দখলে নিয়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন। তাঁদের দাবি, জমির প্রকৃত মালিকানা তাঁদের কাছে থাকা দলিলপত্রে প্রমাণিত।

অতুল সরকার আরও বলেন, “২০০৮ সালে কবিরুল তিন শতক জমি কেনার দাবি করেছিল। তখনও স্থানীয়ভাবে সালিসে বসে তাঁর দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতার পরিবর্তনের পর আবার আমাদের দোকানগুলো দখল করে নিয়েছে। আমাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার কোনো উপায় নেই বলে মনে হচ্ছে। একদিকে প্রশাসন নীরব, অন্যদিকে আমরা প্রতিদিন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।”

অতিরিক্ত চাপ ও উৎকণ্ঠার মধ্যেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এখনো আইনি ও প্রশাসনিক সহযোগিতা পাওয়ার আশায় আছে। পরিবারের সদস্যরা জানান, জমির প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে তাঁরা জমি কিনেছিলেন এবং সে সময়ের সব কাগজপত্র তাঁদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে এখন আবার নতুন করে জমির মালিকানা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা তাঁদের হতাশ করে তুলছে।

ধোবাউড়ার স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, জমির প্রকৃত মালিকানা নির্ধারণে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং দুই পক্ষের দাবির সঠিকতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করছে।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি এখনো তাঁদের দোকানগুলো ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁরা প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণের কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে তাঁদের সমস্যার সমাধান চান।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ২৬.০৯.২০২৪

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে সংঘর্ষের পর বৃহস্পতিবার রাতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিনজন নিহত এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে জুনান চাকমা, ধনঞ্জয় চাকমা ও রুবেল চাকমা রয়েছেন। সংঘর্ষের ফলে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে, এবং স্থানীয়রা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেট সেবা সীমিত করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে।
খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

খাগড়াছড়ি, ১৯ সেপ্টেম্বর: খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে সংঘর্ষের পর বৃহস্পতিবার রাতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিনজন নিহত এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে জুনান চাকমা, ধনঞ্জয় চাকমা ও রুবেল চাকমা রয়েছেন। সংঘর্ষের ফলে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে, এবং স্থানীয়রা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেট সেবা সীমিত করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে।

খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০)।

গোলাগুলির ঘটনার সূত্রপাত হয় বৃহস্পতিবার বিকেলে দীঘিনালা লারমা স্কয়ার এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে সংঘর্ষের পর। স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার রাতে মোহাম্মদ মামুন নামের এক ব্যক্তিকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মারধরের ঘটনা ঘটে। মামুন বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে, তার মৃত্যুর প্রতিবাদে বাঙালিরা দীঘিনালায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এই মিছিল চলাকালীন সময়ে পাহাড়িরা মিছিলে বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে পাহাড়িদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে পাহাড়িরা নিরাপত্তার জন্য তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পাহাড়ের গহীনে পালিয়ে যান।

খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে আহত অবস্থায় ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে তিনজন মারা যান। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৯ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে বলে তিনি জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাঙালিদের বিক্ষোভ মিছিলের সময় পাহাড়িদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপরই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে এবং গোলাগুলি শুরু হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি, অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন, যারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত ও আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই পাহাড়ি সম্প্রদায়ের সদস্য।

এই সংঘর্ষের পর খাগড়াছড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তার জন্য অনেক বাসিন্দা তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ইন্টারনেট সেবা সীমিত করে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মোতায়েন করে।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি শান্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পুলিশ সুপারসহ ঘটনাস্থলে যাচ্ছি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।’

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, দীঘিনালায় সংঘর্ষের সময় ১০২টি দোকান পুড়ে গেছে, যার মধ্যে চাকমা সম্প্রদায়ের ৭৮টি এবং বাঙালি সম্প্রদায়ের ২৪টি দোকান রয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে আরও চারটি দোকান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাসিন্দারা শঙ্কিত এবং আতঙ্কিত অবস্থায় আছেন। পরিস্থিতি পুনরায় স্বাভাবিক করতে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ২০.০৯.২০২৪

৫–২০ আগস্ট: হামলার শিকার সংখ্যালঘুদের ১০৬৮টি ঘরবাড়ি

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ব্যাপক হামলার ঘটনা ঘটেছে। ৫ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রিস্টান, ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ১ হাজার ৬৮টি ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ও উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ২২টি উপাসনালয়। হামলায় দুজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নিহত হয়েছেন। খুলনা বিভাগে সবচেয়ে বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ২৯৫টি স্থাপনা ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। হামলাগুলো মূলত সরকার পতনের পর বিজয় মিছিল থেকে সংগঠিত হয়। হামলার শিকাররা হামলাকারীদের চিহ্নিত করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাস্তি হয়নি।
৫–২০ আগস্ট: হামলার শিকার সংখ্যালঘুদের ১০৬৮টি ঘরবাড়ি

ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর: আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ব্যাপক হামলার ঘটনা ঘটেছে। ৫ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রিস্টান, ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ১ হাজার ৬৮টি ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ও উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ২২টি উপাসনালয়। হামলায় দুজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নিহত হয়েছেন। খুলনা বিভাগে সবচেয়ে বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ২৯৫টি স্থাপনা ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। হামলাগুলো মূলত সরকার পতনের পর “বিজয় মিছিল” থেকে সংগঠিত হয়। হামলার শিকাররা হামলাকারীদের চিহ্নিত করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাস্তি হয়নি।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রথম দুই দিনে হামলার মাত্রা সবচেয়ে বেশি ছিল। ৫ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত অনুসন্ধান চালিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তত ১ হাজার ৬৮টি ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। একই সময়ে ২২টি উপাসনালয়েও হামলা হয়।

এই সময়ের মধ্যে খুলনা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে, যেখানে সংখ্যালঘুদের ২৯৫টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। রংপুরে ২১৯টি, ময়মনসিংহে ১৮৩টি, রাজশাহীতে ১৫৫টি এবং ঢাকায় ৭৮টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হামলায় নিহত হয়েছেন দুজন। প্রথমজন বাগেরহাটের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মৃণাল কান্তি চ্যাটার্জি, যাকে ৫ আগস্ট রাতে হত্যা করা হয়। দ্বিতীয়জন খুলনার পাইকগাছার স্বপন কুমার বিশ্বাস, যাকে ৮ আগস্ট বাড়ি ফেরার পথে হত্যা করা হয়।

হামলার ঘটনা দেশের ৪৯টি জেলায় ঘটেছে। প্রতিবেদকরা ৫৪৬টি ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা সরেজমিনে দেখে এবং বাকি তথ্য বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগ্রহ করেছেন।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ১২.০৯.২০২৪

মাদারীপুরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা বিএনপি নেতার দখলে

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় বিএনপির নেতা সোহেল হাওলাদারের বিরুদ্ধে প্রখ্যাত কবি ও ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা দখলের অভিযোগ উঠেছে। সোহেল হাওলাদার ও তার সহযোগীরা একটি টিনশেড ঘরে তালা ভেঙে প্রবেশ করেন এবং সুনীলের ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি, বই ও ছবি ভাঙচুর করেন। পরে ওই ঘরে ওএমএসের চাল মজুত করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং জেলা প্রশাসক দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সাহিত্যপ্রেমীরা দখলদারদের শাস্তি নিশ্চিত করে লেখকের পৈতৃক ভিটা পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।
মাদারীপুরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা বিএনপি নেতার দখলে

মাদারীপুর, ৯ সেপ্টেম্বর: মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় বিএনপির নেতা সোহেল হাওলাদারের বিরুদ্ধে প্রখ্যাত কবি ও ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা দখলের অভিযোগ উঠেছে। সোহেল হাওলাদার ও তার সহযোগীরা একটি টিনশেড ঘরে তালা ভেঙে প্রবেশ করেন এবং সুনীলের ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি, বই ও ছবি ভাঙচুর করেন। পরে ওই ঘরে ওএমএসের চাল মজুত করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং জেলা প্রশাসক দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সাহিত্যপ্রেমীরা দখলদারদের শাস্তি নিশ্চিত করে লেখকের পৈতৃক ভিটা পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় বিএনপির নেতা সোহেল হাওলাদারের বিরুদ্ধে প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা দখলের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র ও প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে অবস্থিত। শনিবার দুপুরে সোহেল হাওলাদার ও তার সহযোগীরা একটি টিনশেড ঘরে তালা ভেঙে প্রবেশ করেন। এরপর তারা ঘরের ভেতরে থাকা সুনীলের ব্যবহৃত বই, আসবাব ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ বিভিন্ন সামগ্রী ভাঙচুর করেন। পরে তারা ঘরটিতে ওএমএসের এক ট্রাক চাল রেখে নতুন তালা লাগিয়ে দেন।

স্থানীয় এক ব্যক্তি, যিনি সুনীলের ভিটা দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন, জানান, সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই সোহেল হাওলাদার জমিটি নিজের বলে দাবি করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের কর্মী–সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলার অভিযোগও রয়েছে, যা ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করেনি। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশীদ খান বলেন, “সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা দখলের খবর আমরা পেয়েছি। দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইউএনও এবং এসি ল্যান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেবেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় জেলার সাহিত্যপ্রেমী ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা সুনীলের পৈতৃক ভিটা সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে বলেন, এটি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাঁরা দখলদারদের শাস্তি নিশ্চিত করে লেখকের শেষ স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ০৯.০৯.২০২৪

চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গী বাজারে গণেশপূজার মণ্ডপে ভাঙচুর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী

চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গী বাজার সেবক কলোনিতে শনিবার সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা গণেশপূজার মণ্ডপে ভাঙচুর চালায়। ভাঙচুরের সময় গণেশের মূর্তি, পূজার ঘট ও চেয়ার–টেবিল ভেঙে ফেলা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পূজা পুনরায় শুরু করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত চলছে।
চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গী বাজারে গণেশপূজার মণ্ডপে ভাঙচুর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী

চট্টগ্রাম, ৭ সেপ্টেম্বর: চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গী বাজার সেবক কলোনিতে শনিবার সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা গণেশপূজার মণ্ডপে ভাঙচুর চালায়। ভাঙচুরের সময় গণেশের মূর্তি, পূজার ঘট ও চেয়ার–টেবিল ভেঙে ফেলা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পূজা পুনরায় শুরু করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত চলছে।

চট্টগ্রামের নগরের ফিরিঙ্গী বাজার সেবক কলোনিতে গণেশপূজার মণ্ডপে দুর্বৃত্তদের দ্বারা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ হামলা চালানো হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী গণেশপূজার আয়োজন চলাকালীন একদল দুর্বৃত্ত পূজামণ্ডপে ঢুকে ভাঙচুর করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, হামলাকারীরা গণেশের মূর্তি লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে মূর্তি, পূজার ঘট এবং সামনে থাকা চেয়ার ও টেবিল ভেঙে ফেলে।

ঘটনার পরপরই সনাতন ধর্মাবলম্বী বিক্ষুব্ধ নারী-পুরুষরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এলাকাবাসীর প্রতিবাদে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কয়েকটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, মণ্ডপে ভাঙা পূজার সামগ্রী পড়ে আছে এবং পূজা পুনরায় শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

এক পূজারি মহিলা ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, “৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল এসে পূজার ঘট ও মূর্তি ভাঙচুর করে। তারা পাথর ছুড়ে মূর্তি ভেঙে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে আমাদের বলে পূজার কাজ পুনরায় শুরু করতে।”

পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দলগুলো মণ্ডপের বাইরে পাহারা দিচ্ছে। কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক সাজেদ কামাল বলেন, “পরিস্থিতি বর্তমানে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং পূজার বাকি কাজ সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে এবং তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ০৮.০৯.২০২৪

চট্টগ্রামের পটিয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল দাশের ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই

চট্টগ্রামের পটিয়ার বাইপাস সড়কে একটি বাস থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল দাশের কারিগরের কাছ থেকে ৬৫ ভরি স্বর্ণসহ নগদ টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যুবদল নেতা মোহাম্মদ মামুনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ২৭ আগস্ট চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কচুয়াই ফারুকীপাড়া এলাকায় এই ছিনতাই হয়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।
চট্টগ্রামের পটিয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল দাশের ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই

চট্টগ্রাম, ২৭ আগস্ট: চট্টগ্রামের পটিয়ার বাইপাস সড়কে একটি বাস থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল দাশের কারিগরের কাছ থেকে ৬৫ ভরি স্বর্ণসহ নগদ টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যুবদল নেতা মোহাম্মদ মামুনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ২৭ আগস্ট চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কচুয়াই ফারুকীপাড়া এলাকায় এই ছিনতাই হয়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।

চট্টগ্রামের পটিয়ায় ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় যুবদল নেতাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত ২৭ আগস্ট দুপুরে পটিয়ার কচুয়াই ফারুকীপাড়া এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে একটি বাস থেকে এই ছিনতাই ঘটে। স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল দাশের কারিগর রূপন দাশ ২১ ক্যারেটের ৬৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে চট্টগ্রামে যাচ্ছিলেন। বাসটি পটিয়া বাইপাস ফারুকীপাড়া এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেল ও নোহা গাড়িতে থাকা চারজন অজানা ব্যক্তি বাসটি থামায়।

এ সময় চারজন ব্যক্তি বাসে উঠে রূপন দাশের আসনের সামনে এসে তাঁকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে অভিযুক্ত করে এবং দাবি করে, তিনি চার থেকে পাঁচজনকে খুন করে পালিয়ে যাচ্ছেন। এ কথা বলার পরপরই তাঁরা রূপন দাশকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে এবং টেনেহিঁচড়ে বাস থেকে নামিয়ে নোহা গাড়িতে তোলে। তাঁরা গামছা দিয়ে রূপন দাশের চোখ বেঁধে, গলায় ছুরি ধরে তাঁর কাছে থাকা ব্যাগ থেকে ৬৫ ভরি স্বর্ণ (যার মূল্য প্রায় ৬৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা), একটি মুঠোফোন, দুই ভরি রুপার ব্রেসলেট এবং নগদ ৫,৭০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাঁকে চোখ বাঁধা অবস্থায় চলন্ত নোহা থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।

পটিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুর রহিম সরকার জানান, সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। যুবদল নেতা মোহাম্মদ মামুন ও তাঁর সহযোগী মো. মনিরসহ চারজনকে মামলার আসামি করা হয়েছে। বাদী রুবেল দাশ কক্সবাজারের ঈদগাঁও এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী এবং তাঁর দোকানের জন্য নতুন গয়না তৈরির উদ্দেশ্যে এই স্বর্ণ পাঠানো হয়েছিল।

এদিকে পটিয়া পৌরসভা বিএনপির সদস্যসচিব গাজী আবু তাহের বলেন, যদি প্রমাণ হয় যে দলীয় কর্মীরা এই অপরাধের সাথে জড়িত, তবে দলের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের কেউ অপরাধ করলে, তাদের কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ০৭.০৯.২০২৪

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বন্ধের দাবিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মশাল মিছিল

সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ থেকে জানানো হয়েছে, দাবি পূরণ না হলে আগামী ৫ অক্টোবর লংমার্চ করে ঢাকা অবরোধ করা হবে। মিছিলটি শুক্রবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত চলে। মিছিল থেকে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলের আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আট দফা দাবি বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বন্ধের দাবিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মশাল মিছিল

ঢাকা, ৬ সেপ্টেম্বর: সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ থেকে জানানো হয়েছে, দাবি পূরণ না হলে আগামী ৫ অক্টোবর লংমার্চ করে ঢাকা অবরোধ করা হবে। মিছিলটি শুক্রবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত চলে। মিছিল থেকে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলের আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আট দফা দাবি বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। সমাবেশে উপস্থিত নেতারা বলেন, দাবি না মানা হলে ঢাকায় বড় ধরনের অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে রাজধানীতে মশালমিছিল করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তারা দাবি করেছে, ৫ অক্টোবরের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সারা দেশ থেকে মানুষ ঢাকায় এসে অবরোধ করবে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত যায়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ কর’, ‘আমার মন্দিরে হামলার জবাব চাই’, ‘আমার মাটি আমার মা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। মিছিল শুরুর আগে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

সমাবেশে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতারা বলেন, তাদের পূর্বঘোষিত আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে করা, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন। ৫ অক্টোবর ঢাকায় লংমার্চ করে বড় ধরনের অবরোধ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মূল বক্তব্য, সরকার এখনও তাদের কোনও দাবি পূরণ করেনি। সবাই বলেন, সরকার আসে, সরকার যয়, কিন্তু সমস্যা থেকেই যাচ্ছে।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ০৬.০৯.২০২৪

ফেসবুকে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে খুলনায় উৎসব মন্ডল নামে এক কিশোরকে মারধর

খুলনায় ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য পোস্ট করার অভিযোগে এক কলেজ ছাত্রকে উত্তেজিত জনতা মারধর করেছে। বুধবার রাতে সোনাডাঙ্গা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রের নাম উৎসব মন্ডল (১৮)। প্রথমে তার মৃত্যুর গুজব ছড়ালেও, বৃহস্পতিবার সকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে তিনি জীবিত আছেন এবং চিকিৎসাধীন। তার নিরাপত্তার স্বার্থে অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে। উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
ফেসবুকে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে খুলনায় উৎসব মন্ডল নামে এক কিশোরকে মারধর

খুলনা, ৫ সেপ্টেম্বর: খুলনায় ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য পোস্ট করার অভিযোগে এক কলেজ ছাত্রকে উত্তেজিত জনতা মারধর করেছে। বুধবার রাতে সোনাডাঙ্গা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রের নাম উৎসব মন্ডল (১৮)। প্রথমে তার মৃত্যুর গুজব ছড়ালেও, বৃহস্পতিবার সকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে তিনি জীবিত আছেন এবং চিকিৎসাধীন। তার নিরাপত্তার স্বার্থে অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে। উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

খুলনায় ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে এক কলেজ ছাত্রকে উত্তেজিত জনতা মারধর করেছে। বুধবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে সোনাডাঙ্গা এলাকায় উপপুলিশ কমিশনারের (দক্ষিণ) কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রের নাম উৎসব মন্ডল (১৮), তিনি খুলনার এক কলেজের শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উৎসব মন্ডল ফেসবুকে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য পোস্ট করেন। এই পোস্টের খবর ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যা ৮টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে খুঁজে বের করে এবং উপপুলিশ কমিশনার মো. তাজুল ইসলামের কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

এরপর খবর ছড়িয়ে পড়লে কার্যালয়ের বাইরে উত্তেজিত জনতা জড়ো হয়ে উৎসবকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে, কিছুক্ষণ পর জনতা কার্যালয়ে ঢুকে উৎসবকে মারধর করে।

উপপুলিশ কমিশনার তাজুল ইসলাম বলেন, আইন অনুযায়ী উৎসবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে এবং তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে বলে জনতাকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও জনতা তার ওপর হামলা চালায় এবং তাকে গুরুতর আহত করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মসজিদের মাইক থেকে উৎসবের মৃত্যুর খবর প্রচার করা হয়, তবে পরবর্তীতে পুলিশ নিশ্চিত করে যে তিনি জীবিত আছেন এবং নিরাপত্তার জন্য তার অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে।

সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন

তারিখ ০৫.০৯.২০২৪

ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা গ্রেপ্তার

ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। মঙ্গলবার রাতে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে সোনা ও হীরা চোরাচালান, প্রতারণা, জালিয়াতি, এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাও রয়েছে, যার ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে অভিযোগের প্রমাণ নিয়ে কিছুটা সন্দেহও উত্থাপন করা হচ্ছে। সিআইডি ইতিমধ্যে এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে এবং দিলীপ কুমার আগরওয়ালার সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান চলছে।
ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা গ্রেপ্তার

ঢাকা, ৪ সেপ্টেম্বর: ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। মঙ্গলবার রাতে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে সোনা ও হীরা চোরাচালান, প্রতারণা, জালিয়াতি, এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাও রয়েছে, যার ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে অভিযোগের প্রমাণ নিয়ে কিছুটা সন্দেহও উত্থাপন করা হচ্ছে। সিআইডি ইতিমধ্যে এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে এবং দিলীপ কুমার আগরওয়ালার সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান চলছে।

ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে র‌্যাব আটক করেছে। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়েছে।

তাঁর বিরুদ্ধে সোনা ও হীরা চোরাচালান, অর্থ পাচার, প্রতারণা এবং জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বিভিন্ন জায়গায় নামমাত্র শোরুমের মাধ্যমে উন্নতমানের কাচের টুকরাকে ডায়মন্ড হিসেবে বিক্রি করেছেন। আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি দুবাই ও সিঙ্গাপুরে সোনা চোরাচালান সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন এবং ভারতের কলকাতায় তিনটি জুয়েলারি দোকান ও ১১টি বাড়ি, মালয়েশিয়া, দুবাই ও কানাডায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।

সিআইডি আরও জানিয়েছে, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে অবৈধভাবে একটি ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার চেষ্টা করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে মানি লন্ডারিং আইনে তাঁর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

তাছাড়া, সম্প্রতি রাজধানীর বাড্ডা থানায় মো. শাহাদাত হোসেন খান বাদী হয়ে তাঁর নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি গত ২৩ আগস্ট রুজু করা হয় এবং তিনি এই মামলায় ২০ নম্বর আসামি হিসেবে অভিযুক্ত হয়েছেন। এই মামলার ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

যদিও এসব অভিযোগের প্রমাণ নিয়ে কিছুটা সন্দেহ রয়েছে, তবুও তদন্ত চলমান রয়েছে। তাঁর গ্রেপ্তারের পর, অনেকেই অভিযোগের ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

কে এই দিলীপ কুমার আগরওয়ালা:

দিলীপ কুমার আগরওয়ালা চুয়াডাঙ্গার এক ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা স্থানীয়ভাবে ব্যবসা করতেন এবং দিলীপও প্রথমদিকে কনস্ট্রাকশন ব্যবসায় নিযুক্ত ছিলেন। ২০০০ সালে দিলীপ ঢাকায় আসেন, ডায়মন্ডের ব্যবসা শুরু করার জন্য। একজন বন্ধুর অনুপ্রেরণায় ডায়মন্ডের বাজারে প্রবেশ করেন, যদিও সে সময় বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ডায়মন্ডের প্রতি তেমন আগ্রহ ছিল না। প্রথমে ব্যাংকের এলসি করাতে অনেক সময় এবং কষ্ট হলেও দিলীপ ধীরে ধীরে তার ব্যবসা গড়ে তোলেন।

২০০৫ সালে দিলীপ তার প্রতিষ্ঠান “ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড” প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যবসার শুরুতে তিনি দেশের বিভিন্ন দোকানে হোলসেলে ডায়মন্ড সরবরাহ করতেন এবং ক্রেতাদের চাহিদা নিয়ে গবেষণা করতেন। তারপর, দলগত প্রচেষ্টায় ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের শোরুম স্থাপন করেন এবং বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠানটির ১৯টি আউটলেট রয়েছে।

দিলীপ কুমার আগরওয়ালা এফবিসিসিআই এর পরিচালক হিসেবে ২০১৫-২০১৭ এবং ২০১৭-২০১৯ মেয়াদে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন, যেখানে তিনি স্বর্ণ আমদানি নীতিমালা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার লক্ষ্য ছিল ডায়মন্ড জুয়েলারিকে মধ্যবিত্ত মানুষের নাগালে নিয়ে আসা।

দিলীপের আরেকটি বড় স্বপ্ন হল গোল্ড ব্যাংকিং চালু করা, যেখানে মানুষ তাদের সোনা জমা রেখে তার বিনিময়ে ঋণ পেতে পারে। তিনি এফবিসিসিআই এর পরিচালক হিসেবে কাজ করার সময়ও তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কাজ করেন।

তিনি বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগেও জড়িত, যেমন তার মা ‘তারা দেবী’র নামে একটি ফাউন্ডেশন স্থাপন করা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ওল্ডকেয়ার হোম স্থাপনের পরিকল্পনা।

সূত্র: প্রথম আলো এবং চ্যানেল আই অনলাইন

তারিখ ০৪.০৯.২০২৪

ঢাকা মেডিকেলে হামলা: সন্দেহের ঘেরাটোপে গ্রেপ্তার সঞ্জয় পাল জয়

গত শনিবার রাতে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর একাধিকবার হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সঞ্জয় পাল জয়কে হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, তাকে নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের মতে, সঞ্জয় পাল জয় আসলেই হামলার সঙ্গে জড়িত কি না, তা নিয়ে এখনো কিছুটা সন্দেহ রয়েছে। হামলার সময়ের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ বা সাক্ষ্য পাওয়া এখনো বাকি। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে তার গ্রেপ্তার নিয়ে কিছু মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে, বিশেষ করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সুনির্দিষ্ট প্রমাণের অভাব নিয়ে।
ঢাকা মেডিকেলে হামলা: সন্দেহের ঘেরাটোপে গ্রেপ্তার সঞ্জয় পাল জয়

ঢাকা, ২ সেপ্টেম্বর: গত শনিবার রাতে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর একাধিকবার হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সঞ্জয় পাল জয়কে হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, তাকে নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের মতে, সঞ্জয় পাল জয় আসলেই হামলার সঙ্গে জড়িত কি না, তা নিয়ে এখনো কিছুটা সন্দেহ রয়েছে। হামলার সময়ের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ বা সাক্ষ্য পাওয়া এখনো বাকি। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে তার গ্রেপ্তার নিয়ে কিছু মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে, বিশেষ করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সুনির্দিষ্ট প্রমাণের অভাব নিয়ে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় সঞ্জয় পাল জয় নামে একজনকে গাইবান্ধা জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর একাধিকবার হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে, যা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাজ বন্ধ করার কারণ হয়। পরে অন্যান্য চিকিৎসকরাও তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করলে হাসপাতালের সব বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যায়।

চিকিৎসকরা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করেন এবং সারা দেশে চিকিৎসক ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসে তাদের কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়। হামলার পর ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২ প্ল্যাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

হামলার পর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এবং অন্যান্য চিকিৎসকরা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করেন। এছাড়াও, সারা দেশে চিকিৎসক ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জোরালো দাবি ওঠে। তাদের দাবি পূরণের জন্য আশ্বাস না মেলায় রোববার দুপুরে চিকিৎসকরা ছয় দফা দাবি ঘোষণা করেন এবং সারা দেশে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন। তাদের এই আন্দোলনে ঢাকা মেডিকেলের নার্স ও কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন।

পরে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের সঙ্গে বৈঠকের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত করেন। এদিকে, ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২ প্ল্যাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত সঞ্জয় পাল জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে, তবে তার বিরুদ্ধে সন্দেহের মেঘ কাটতে আরও তদন্তের প্রয়োজন।

সূত্র: কালবেলা

তারিখ ০২.০৯.২০২৪

লিটন দাসের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ

রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ দল এক ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখোমুখি হলেও লিটন দাসের অসাধারণ সেঞ্চুরিতে ম্যাচে ফিরে এসেছে। মাত্র ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় থাকা দলকে টেনে তুলতে লিটন এবং মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে ১৬৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। এই জুটি বাংলাদেশের ফলোঅন এড়াতে সহায়ক হয় এবং দলের ভেতর থেকে ফিরে আসার সাহস যোগায়। শেষ পর্যন্ত লিটন অপরাজিত ১১৫ রানে দলের ইনিংস চালিয়ে যাচ্ছেন, যদিও মিরাজ ৭৮ রানে আউট হন। ম্যাচের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৩৭ রান, যা এখনো পাকিস্তানের থেকে ৩৭ রানে পিছিয়ে।
লিটন দাসের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ

রাওয়ালপিন্ডি, ১ সেপ্টেম্বর: রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ দল এক ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখোমুখি হলেও লিটন দাসের অসাধারণ সেঞ্চুরিতে ম্যাচে ফিরে এসেছে। মাত্র ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় থাকা দলকে টেনে তুলতে লিটন এবং মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে ১৬৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। এই জুটি বাংলাদেশের ফলোঅন এড়াতে সহায়ক হয় এবং দলের ভেতর থেকে ফিরে আসার সাহস যোগায়। শেষ পর্যন্ত লিটন অপরাজিত ১১৫ রানে দলের ইনিংস চালিয়ে যাচ্ছেন, যদিও মিরাজ ৭৮ রানে আউট হন। ম্যাচের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৩৭ রান, যা এখনো পাকিস্তানের থেকে ৩৭ রানে পিছিয়ে।

রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনের সকালে বাংলাদেশ দল এক বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়। পাকিস্তানকে ২৭৪ রানে অলআউট করার পর, মাত্র ২৬ রানে বাংলাদেশের ৬ উইকেট পড়ে যায়। সেই সময় দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন লিটন দাস। মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে তিনি ১৬৫ রানের এক অসাধারণ পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। এই জুটি বাংলাদেশের ফলোঅন এড়াতে সহায়ক হয় এবং দলকে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে আসে।

লিটন দাস ১১৫ রানে অপরাজিত থাকেন, যদিও মেহেদী হাসান মিরাজ দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৭৮ রানে আউট হন। ম্যাচের এই অবস্থায় বাংলাদেশ ৭১ ওভারে ৮ উইকেটে ২৩৭ রান সংগ্রহ করে, তবে পাকিস্তানের চেয়ে এখনো ৩৭ রানে পিছিয়ে।

বাংলাদেশের এই ঘুরে দাঁড়ানো মুহূর্তে লিটন দাসের দৃঢ়তা এবং মেহেদী হাসান মিরাজের সহায়ক ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাদের এই জুটি দলকে সংকটের ভেতর থেকে টেনে তুলে এক নতুন আশা জাগায়। বাংলাদেশ দল ফলোঅন এড়াতে সক্ষম হলেও ম্যাচের বর্তমান পরিস্থিতিতে শেষ দুই উইকেটের অবদান এবং লিটনের ইনিংস কতদূর যেতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

লিটন দাসের সংক্ষিপ্ত জীবনী

লিটন কুমার দাস (জন্ম: ১৩ অক্টোবর, ১৯৯৪) একজন বাংলাদেশি ক্রিকেটার। তিনি ডানহাতি ব্যাটার এবং উইকেট-কিপার হিসেবে পরিচিত। লিটন ২০১৫ সালের জুনে বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক করেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর (১৭৬) করার গৌরব তাঁর। এছাড়াও তিনি মাত্র ১৮ বলে অর্ধশতক করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডধারী। লিটন বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়।

লিটন দাসের জন্ম দিনাজপুর জেলার একটি বাঙালি হিন্দু পরিবারে। তাঁর পিতা বাচ্চু চন্দ্র দাস এবং মাতা অনিতা দাস। লিটনের দুই ভাই রয়েছে। তিনি বিকেএসপিতে শিক্ষাগ্রহণ করেন এবং সেখানে বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলেছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে, লিটন ২০১৯ সালের জুলাই মাসে দেবশ্রী বিশ্বাস সঞ্চিতাকে বিবাহ করেন, যিনি মিরপুরে একজন কৃষিবিদ। ২০২৩ সালের নভেম্বরে তাদের পরিবারে একটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে।

সূত্র: কালবেলা

তারিখ ০১.০৯.২০২৪

বরিশালের বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ শুক্লা রানী হালদারকে পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় নিন্দার ঝড়

বরিশালের বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ শুক্লা রানী হালদারকে পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ১৪তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা শুক্লা রানী হালদার, যিনি ২০২২ সালে কলেজে যোগ দেন, ২৯ আগস্ট একদল শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের দ্বারা চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এই ঘটনায় প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ শুক্লা রানী হালদারকে পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় নিন্দার ঝড়

বাকেরগঞ্জ, ২৯ আগস্ট: বরিশালের বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ শুক্লা রানী হালদারকে পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ১৪তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা শুক্লা রানী হালদার, যিনি ২০২২ সালে কলেজে যোগ দেন, ২৯ আগস্ট একদল শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের দ্বারা চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এই ঘটনায় প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।

বরিশালের বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ শুক্লা রানী হালদারকে অবরুদ্ধ করে পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ১৪তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা শুক্লা রানী হালদার ২০২২ সালের মাঝামাঝি বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন। এর আগে তিনি বরিশালের সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।

২৯ আগস্ট দুপুরে একদল শিক্ষার্থী ও বহিরাগত লোকজন তাঁকে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। অবরুদ্ধ অবস্থায় অধ্যক্ষের অসহায় ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যা দেখে তাঁর প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় মানুষজন ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই দিন সকাল ১০টা থেকে কলেজে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের চেয়ে বাইরের লোকজনের উপস্থিতি বেশি ছিল। বিক্ষোভকারীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি এবং কলেজে নিয়মিত উপস্থিত না হওয়ার অভিযোগ তোলেন। পরে তাঁকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হয় এবং একটি সাদা কাগজে ‘পদত্যাগ করলাম’ লিখতে বাধ্য করা হয়।

এই ঘটনার পর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) বরিশাল জেলা শাখার সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা জানান, অধ্যক্ষের সঙ্গে এমন আচরণ দেখে তিনি অত্যন্ত দুঃখিত এবং এটি সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।

অধ্যক্ষ শুক্লা রানী হালদার বলেন, “আমি যাদের পড়িয়েছি, তাদের কয়েকজন আমাকে চরম অপমান করেছে। তবে শিক্ষার্থীদের চেয়ে এখানে বহিরাগত বেশি ছিল। কোনোভাবে তাদের শান্ত করতে না পেরে পদত্যাগ করলাম লিখে দিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলির কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে, তাঁদের একটি পক্ষ এই পরিস্থিতি তৈরি করতে সহায়তা করেছেন।”

এই ঘটনাটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন অধ্যক্ষ।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ৩১.০৮.২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ: মোদি-বাইডেনের আলোচনা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপের পর মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন এবং সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে আসার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও ধর্মীয় স্থাপনা ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে, যেখানে কিছু রাজনৈতিক দলের নাম উঠে আসে। মোদি ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণেও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ: মোদি-বাইডেনের আলোচনা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপের পর মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন এবং সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে আসার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও ধর্মীয় স্থাপনা ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে, যেখানে কিছু রাজনৈতিক দলের নাম উঠে আসে। মোদি ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণেও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর আহ্বান জানান।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার এক্স (পূর্বে টুইটার) হ্যান্ডলে জানিয়েছেন, তারা বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিশেষত, বাংলাদেশে চলমান সংকট এবং সেখানে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর তারা গুরুত্বারোপ করেছেন।

৫ আগস্ট জনবিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে আসেন। এর পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ এবং ধর্মীয় স্থাপনা ভাঙচুরের একাধিক ঘটনা ঘটে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এসব আক্রমণের পেছনে কিছু কট্টরপন্থী দলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।

ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্ট দিল্লির লালকেল্লা থেকে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “১৪০ কোটি ভারতীয় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। ভারত সবসময় বাংলাদেশের অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা কামনা করে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশে পরিস্থিতি শীঘ্রই স্বাভাবিক হবে এবং সেখানে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।”

মোদি তার বক্তব্যে আরও বলেন, ভারত বাংলাদেশের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে এবং দেশটির উন্নয়নে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সূত্র: আনন্দবাজার

তারিখ ২৭.০৮.২০২৪

রাজশাহীর হিন্দুপল্লিতে হামলার পর চলছে রাত জেগে পাহারা, আতঙ্কে বাসিন্দারা

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিদ্যাধরপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ায় ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর একদল লোক হামলা চালায়। মিছিল থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় পাড়ার ২৫টি হিন্দু পরিবারের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আতঙ্কে গ্রামের নারীরা পালিয়ে ফসলের মাঠে আশ্রয় নেন। হামলার পর থেকে স্থানীয় হিন্দুপাড়ার মানুষেরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। ১৪ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আশ্বাস দেন যে, আর কোনো হামলা হবে না।
রাজশাহীর হিন্দুপল্লিতে হামলার পর চলছে রাত জেগে পাহারা, আতঙ্কে বাসিন্দারা

রাজশাহী, ৫ আগস্ট: রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিদ্যাধরপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ায় ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর একদল লোক হামলা চালায়। মিছিল থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় পাড়ার ২৫টি হিন্দু পরিবারের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আতঙ্কে গ্রামের নারীরা পালিয়ে ফসলের মাঠে আশ্রয় নেন। হামলার পর থেকে স্থানীয় হিন্দুপাড়ার মানুষেরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। ১৪ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আশ্বাস দেন যে, আর কোনো হামলা হবে না।

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিদ্যাধরপুর গ্রামে ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মিছিল থেকে একদল লোক হিন্দুপাড়ায় হামলা চালায়। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হঠাৎই বিদ্যুত্‍ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, আর সেই সুযোগেই হামলাকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হিন্দু পরিবারের বাড়িঘরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। প্রায় ৩০-৪০ মিনিট ধরে চলা এই হামলায় অন্তত ২৫টি হিন্দু পরিবারের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আতঙ্কে গ্রামের নারীরা ফসলের মাঠে পালিয়ে যান, আর যারা পালাতে পারেননি, তারা বাইরের দরজা বন্ধ করে ঘরের ভেতরে লুকিয়ে থাকেন।

হামলাকারীরা কোনো স্লোগান দেয়নি, হঠাৎ করেই একদিক থেকে হিন্দুপাড়ায় ঢুকে বাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর শুরু করে এবং অন্যদিক দিয়ে দ্রুত চলে যায়। এ সময় হামলা প্রতিহত করতে গেলে আমরাইল উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকুমার প্রামাণিক (৪৫) গুরুতর আহত হন। তিনি হামলাকারীদের সামনে গিয়ে তাদের প্রশ্ন করেন, ‘তোমরা এসব করছ কেন?’ কিন্তু তার প্রতিবাদের পরেই তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়, যার ফলে তার বাঁ হাত ভেঙে যায়। পরবর্তীতে হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার হাতের চিকিৎসা করা হয়। সুকুমার প্রামাণিকের কথায়, গ্রামের হিন্দু-মুসলমান সবাই তাকে সম্মান করত। তার বিশ্বাস ছিল না যে গ্রামের ছেলেরা তার ওপর হামলা চালাতে পারে।

পাড়ার অন্য বাসিন্দা, ভীমনগর হাইস্কুলের শিক্ষক শ্যামল কুমারের বাড়িতেও সেদিন হামলা হয়। হামলাকারীরা তার ঘরের টিনের চালা ভেঙে ফেলে। তার স্ত্রী সুচিত্রা রানী বলেন, ‘ওরা যখন বাড়ির গেট ভাঙার চেষ্টা করে, তখন ভেতরে আমরা ভয়ে প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম।’

মোহনপুর কলেজের শিক্ষক ববিন কুমার সরকার এবং তার ভাই বিপুল কুমার সরকারের বাড়ির টিনের চালা, জানালা এবং শৌচাগারের পাইপ ভেঙে দেওয়া হয়। বিপুল কুমারের স্ত্রী পপি রানী সরকার বলেন, ‘আমরা বাইরের গেট বন্ধ করে ভেতরে লুকিয়ে ছিলাম। ওরা চেষ্টা করেও গেট ভাঙতে পারেনি।’

গ্রামের আরও কয়েকটি পরিবারের বাড়িতে হামলা হয়েছে। বিশ্বজিৎ প্রামাণিকের বাড়ির জানালার থাই গ্লাস এবং পানির ট্যাংক ভেঙে ফেলা হয়েছে। আশুতোষ প্রামাণিকের বাড়ির জানালার দুটি গ্লাস ভাঙচুর করা হয়, যার মধ্যে একটি মেরামত করতে ৩,৩০০ টাকা খরচ হয়েছে। উপেন প্রামাণিকের গরুর ঘরের চালা এবং তার দোকানও ভাঙচুর করা হয়। তার স্ত্রী আরতি প্রামাণিক বলেন, ‘দোকানে তখনো মালামাল তোলা হয়নি। এই অবস্থায় দোকানটি ভেঙে ফেলা হয়, এখন দোকান চালু করার সাহস পাচ্ছি না।’

সুদর্শন চন্দ্র সরকারের বাড়ির জানালার গ্লাস ভেঙে দেওয়া হয়, আর বিদ্যুতের মিটারও ভাঙচুর করা হয়। হামলার সময় তার বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য ছিলেন না, মেয়েরা ভয়ে দরজা বন্ধ করে ভেতরে ছিলেন। দীপক সরকারের বাড়ির তিনটি জানালার গ্লাস ভাঙচুর করা হয়েছে, যা এখনো মেরামত করা হয়নি। নারায়ণ সরকারের বাড়ির বারান্দার চালা, অজিত সরকারের দোকান, পরশুরাম প্রামাণিকের বাড়ির দুটি বারান্দার চালা এবং সুষেন প্রামাণিকের শৌচাগারের পাইপও ভাঙচুর করা হয়। অবিনাশ সাহার বাড়ির জানালার কাচ, রান্নাঘরের চালা এবং ঘরের ভেন্টিলেটর ভাঙা হয়। তার স্ত্রী মলিনা সাহা বলেন, ‘হামলার সময় আমরা ভেতরে দরজা বন্ধ করে ছিলাম। ওরা দরজা ভাঙার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি।’

অজিত সরকারের চায়ের দোকানও ভাঙচুর করা হয়। হামলার পর থেকে বিদ্যাধরপুর হিন্দুপাড়ার মানুষজন আতঙ্কে আছেন, তারা রাত জেগে মন্দির ও বাড়িঘর পাহারা দিচ্ছেন।

মোহনপুর থানায় গিয়ে জানা যায়, বিদ্যাধরপুরের কেউই এ ঘটনায় কোনো মামলা করেননি। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরিদাস মণ্ডল গ্রাম পরিদর্শন করেছেন এবং বলেন, স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। মৌগাছি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউনুস আলী বলেন, এটা মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

১৪ আগস্ট রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়শা সিদ্দিকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে বিদ্যাধরপুর মন্দির পরিদর্শনে আসেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে আশ্বাস দেন যে, ভবিষ্যতে এমন কোনো হামলার ঘটনা আর ঘটবে না। এরপর ১৬ আগস্ট স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়, যেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় নেতারা প্রতিশ্রুতি দেন যে, এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। তার পর থেকে আর কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ২৩.০৮.২০২৪

বগুড়ার গাবতলীর পালপাড়ায় হামলা, আতঙ্কে বাসিন্দারা

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বামুনিয়া পালপাড়ায় ৫ আগস্ট রাতে একদল দুর্বৃত্তের হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে। প্রায় ১৫০-২০০ জনের একটি দল লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে পালপাড়ার ১০টি বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আক্রমণ চালায়। আগুন লাগিয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি একটি সংখ্যালঘু কৃষকের গোয়াল থেকে চারটি গরু লুট করা হয়। হামলার পর থেকে পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাসিন্দারা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। পুলিশ টহল দিলেও এলাকাবাসীর মধ্যে এখনও ভয় এবং উদ্বেগ বিরাজ করছে।
বগুড়ার গাবতলীর পালপাড়ায় হামলা, আতঙ্কে বাসিন্দারা

বগুড়া, ৫ আগস্ট: বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বামুনিয়া পালপাড়ায় ৫ আগস্ট রাতে একদল দুর্বৃত্তের হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে। প্রায় ১৫০-২০০ জনের একটি দল লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে পালপাড়ার ১০টি বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আক্রমণ চালায়। আগুন লাগিয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি একটি সংখ্যালঘু কৃষকের গোয়াল থেকে চারটি গরু লুট করা হয়। হামলার পর থেকে পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাসিন্দারা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। পুলিশ টহল দিলেও এলাকাবাসীর মধ্যে এখনও ভয় এবং উদ্বেগ বিরাজ করছে।

৫ আগস্ট রাতে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বামুনিয়া পালপাড়ায় ১৫০-২০০ জন দুর্বৃত্ত হামলা চালায়। লাঠি ও ধারালো অস্ত্রসহ তারা ১০টি বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করে। লাল মোহন পাল ও তাঁর পরিবার বাড়ি থেকে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন। পালপাড়ার অধিকাংশ মানুষ মাটির তৈজসপত্র ও প্রতিমা তৈরি করে জীবনযাপন করেন। হামলার পর থেকে পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে, বিশেষত সন্ধ্যার পর থেকে ভয় আরও বাড়ে। বাসিন্দারা দলবদ্ধ হয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।

উপজেলার পীরগাছা বাজারের নিকটবর্তী বামুনিয়া গ্রামের এই এলাকায় প্রায় ৬৫টি পাল পরিবার বসবাস করে। তাঁরা কেউ তেমনভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন, তবুও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তাদের ওপর এই আক্রমণ হয়েছে বলে জানা যায়। হামলায় লাল মোহন পালের বাড়ি, পাশাপাশি আরও কয়েকটি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংখ্যালঘু এক কৃষকের গোয়াল থেকে চারটি গরু লুট হয়, যেগুলোর মধ্যে তিনটি স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যস্থতায় ফেরত পাওয়া গেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আপন চন্দ্র পাল জানান, তাঁর দোকানে সাত লাখ টাকার বস্তা ও মেশিন লুট করা হয়েছে, যা তাঁর ব্যবসাকে বিপর্যস্ত করেছে। এছাড়া স্বপন চন্দ্র পাল ও শ্যামল চন্দ্র পালের মুদিদোকান থেকেও মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়। রিপন পালের স্ত্রী বিউটি রানী পাল জানান, তাঁর বিয়েতে পাওয়া তিন ভরি সোনার গয়না লুট হয়েছে।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টহল বাড়ালেও বাসিন্দারা এখনও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ২০.০৮.২০২৪

সুনামগঞ্জের একটি গ্রামে সামাজিক অনুষ্ঠানে গানবাজনা নিষিদ্ধ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামে সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে গানবাজনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গ্রামের মাতব্বরদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিয়ে, জন্মদিন বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দের গানবাজনা করলে তা শাস্তিযোগ্য হবে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূলত অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করা হয়েছে। গ্রামে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করলেও সিদ্ধান্তটি প্রধানত মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্ধান্তটিকে আইনসম্মত ও ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সুনামগঞ্জের একটি গ্রামে সামাজিক অনুষ্ঠানে গানবাজনা নিষিদ্ধ

সুনামগঞ্জ, ১৮ আগস্ট: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামে সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে গানবাজনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গ্রামের মাতব্বরদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিয়ে, জন্মদিন বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দের গানবাজনা করলে তা শাস্তিযোগ্য হবে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূলত অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করা হয়েছে। গ্রামে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করলেও সিদ্ধান্তটি প্রধানত মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্ধান্তটিকে আইনসম্মত ও ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামে বিয়ে, জন্মদিন বা অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে গানবাজনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গ্রামের মাতব্বররা ১৭ আগস্ট রাতে।

মাতব্বরদের ভাষ্যযমতে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে গানবাজনার কারণে গ্রামের অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ ধরনের অসুবিধার কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ইসলাম ধর্মে গানবাজনা নিষিদ্ধ থাকার বিষয়টিও সিদ্ধান্তের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।

গ্রামের ইউপি সদস্য শফিকুল হক জানিয়েছেন, চিকসা গ্রামটি সদর ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় গ্রাম, যেখানে মুসলিম ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। গ্রামে ৮০ শতাংশের বেশি পরিবার মুসলিম। নতুন নিয়ম মানতে অস্বীকৃতি জানালে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুনাব আলী জানান, উচ্চ শব্দে গানবাজনা আইনত নিষিদ্ধ। গ্রামবাসীরা যেটি করেছেন, তা একটি ইতিবাচক উদ্যোগ।

সূত্র: কালবেলা

তারিখ ১৯.০৮.২০২৪

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোনালাপ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। আলোচনা মূলত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে ছিল, যেখানে ইউনূস তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। এই সংলাপ শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষাপটে হলো। মোদী বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভারতের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোনালাপ

ঢাকা, ১৬ আগস্ট – বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। ফোনালাপে উভয়ের মধ্যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। মোদী তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এই ফোনালাপের বিষয়টি জানিয়েছেন।

মোদীর পোস্ট অনুযায়ী, তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, এবং প্রগতিশীল বাংলাদেশের জন্য ভারতের সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ইউনূস ফোনালাপে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বাস দেন।

এর আগে, ভারতের স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর মোদী ইউনূসকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফার পর থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, দেশের কিছু এলাকায় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা উদ্বেগজনক।

ভারত সরকারও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে। ফোনালাপে মোদী ও ইউনূস উভয়ে এই পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।

ইতিমধ্যে, মুহাম্মদ ইউনূস সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।

তারিখ ১৬.০৮.২০২৪

ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি ভাঙা নিয়ে রাজশাহীতে উত্তেজনা

বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক কুমার ঘটকের পৈতৃক বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনা নিয়ে রাজশাহীতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। নগরের ঘোড়ামারা মহল্লার মিয়াপাড়ায় অবস্থিত এই বাড়ি ভাঙার খবর জানার পর বুধবার দুপুরে স্থানীয় চলচ্চিত্রকর্মীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। সেখানে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় তাদের।
ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি ভাঙা নিয়ে রাজশাহীতে উত্তেজনা

রাজশাহী, ১৪ আগস্ট – বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক কুমার ঘটকের পৈতৃক বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনা নিয়ে রাজশাহীতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। নগরের ঘোড়ামারা মহল্লার মিয়াপাড়ায় অবস্থিত এই বাড়ি ভাঙার খবর জানার পর বুধবার দুপুরে স্থানীয় চলচ্চিত্রকর্মীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। সেখানে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় তাদের।

ঠিকাদারের দাবি অনুযায়ী, কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বাড়িটি ভাঙা হয়েছে। তবে কলেজের অধ্যক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি ভেঙেছে তাদের সাবেক শিক্ষার্থীরা।

ঋত্বিক ঘটকের জীবনের শুরুর সময়টা কেটেছে রাজশাহীর এই বাড়িতে। এখানেই তিনি রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়াশোনা করেন এবং সাহিত্য ও নাট্যচর্চায় যুক্ত ছিলেন। তাঁর স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়ি একসময় সাহিত্য ও নাট্য আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল। বাড়িটির একটি অংশ ২০১৯ সালে ভেঙে সাইকেল গ্যারেজ তৈরির চেষ্টা হয়েছিল, যা নিয়ে তখনও ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছিল।

চলচ্চিত্রকর্মীদের দাবি, বাড়ি ভাঙার পর এখন সেখানে কেবল ইটের স্তূপ পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শ্রমিকদের ভাষ্যমতে, তারা কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাজ করছেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে এবং দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানিয়েছেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা ও আইসিটি) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজও পর্যালোচনা করা হচ্ছে, যা তদন্তে সহায়ক হতে পারে। প্রশাসন ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিতে চায় এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

চলচ্চিত্রকর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁরা ঋত্বিক ঘটকের নামে স্থায়ীভাবে কিছু নির্মাণের দাবি তুলেছেন। জেলা প্রশাসনও এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে যে, ভবিষ্যতে একটি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে যা ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি ধরে রাখবে।

সূত্র: প্রথম আলো

তারিখ ১৫.০৮.২০২৪

সংবাদ ২০২২

এই অংশে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে সর্বশেষ ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ খবর, নির্যাতন-নিপীড়নের আপডেট, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়সহ সব ধরনের প্রাসঙ্গিক সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করা হয়। এটি কমিউনিটির বাস্তব চিত্র তুলে ধরার একটি নির্ভরযোগ্য উৎস।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার

বাংলাদেশ সরকার সমগ্র দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পে ১ মার্চ, ২০১৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখের মধ্যে ২২৮ কোটি ৬৯ লাখ খরচ করার কথা। খোঁজ করে দেখুন তো, সত্যি আপনার এলাকার কোন মন্দির বা প্রতিষ্ঠান কোন সাহায্য পেয়েছে কিনা, পেয়ে থাকলে কত পেয়েছে?
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার

বাংলাদেশ সরকার সমগ্র দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পে ১ মার্চ, ২০১৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখের মধ্যে ২২৮ কোটি ৬৯ লাখ খরচ করার কথা। খোঁজ করে দেখুন তো, সত্যি আপনার এলাকার কোন মন্দির বা প্রতিষ্ঠান কোন সাহায্য পেয়েছে কিনা, পেয়ে থাকলে কত পেয়েছে?

প্রকল্প

সমগ্র দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়ঃ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাঃ হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট

প্রকল্প পরিচালকঃ রনজিৎ কুমার, যুগ্ম সচিব

প্রকল্প শুরুর তারিখঃ ১ মার্চ, ২০১৯

প্রকল্প শেষ করার তারিখঃ ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১

প্রাক্কলিত ব্যয়ঃ ২২৮,৬৯,০০,০০০ টাকা

অর্থায়নের ধরণঃ জিওবি

প্রকল্প ব্যবস্থাপনাঃ

১. প্রকল্পটি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হবে।

২. প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সংস্থা পর্যায়ে একটি প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ইউনিট এবং সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করা হবে।

৩. তাছাড়া মন্দির, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে।

৪. প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ই্উনিটে প্রয়োজনীয় কারিগরি জনবল প্রেষণ/সরাসরি / আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ করা হবে।

৫. প্রকল্প বাস্তবায়নে ইউনিটে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলীগণ দরপত্র আহ্বান করবেন।

৬. ঠিকাদারদের বিল পরামর্শকের সুপারিশক্রমে প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে সরাসরি ঠিকাদারগণের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হবে।

৭. স্থানীয় কোন সমস্যা দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা প্রকৌশলীর সহায়তা গ্রহণ করা হবে।

সূত্র: বাংলাদেশ সরকার

তারিখ ৩১.০১.২০২২

মহানগর পর্যায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার

মহানগর পর্যায়ের মন্দিরসমূহের নাম, যারা বাংলাদেশ সরকারের ধর্মীয় প্রকল্পে ১ মার্চ, ২০১৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পে টাকা পেয়েছেন। খোঁজ করে দেখুন তো, আপনার এলাকার কোন মন্দির বা প্রতিষ্ঠান কোন সাহায্য পেয়েছে কিনা, পেয়ে থাকলে কত পেয়েছে?
মহানগর পর্যায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার

মহানগর পর্যায়ের মন্দিরসমূহের নাম, যারা বাংলাদেশ সরকারের ধর্মীয় প্রকল্পে ১ মার্চ, ২০১৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পে টাকা পেয়েছেন। খোঁজ করে দেখুন তো, আপনার এলাকার কোন মন্দির বা প্রতিষ্ঠান কোন সাহায্য পেয়েছে কিনা, পেয়ে থাকলে কত পেয়েছে?

প্রকল্প

সমগ্র দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়ঃ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাঃ হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট

প্রকল্প পরিচালকঃ রনজিৎ কুমার, যুগ্ম সচিব

প্রকল্প শুরুর তারিখঃ ১ মার্চ, ২০১৯

প্রকল্প শেষ করার তারিখঃ ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১

প্রাক্কলিত ব্যয়ঃ ২২৮,৬৯,০০,০০০ টাকা

অর্থায়নের ধরণঃ জিওবি

প্রকল্প ব্যবস্থাপনাঃ

১. প্রকল্পটি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হবে।

২. প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সংস্থা পর্যায়ে একটি প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ইউনিট এবং সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করা হবে।

৩. তাছাড়া মন্দির, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে।

৪. প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ই্উনিটে প্রয়োজনীয় কারিগরি জনবল প্রেষণ/সরাসরি / আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ করা হবে।

৫. প্রকল্প বাস্তবায়নে ইউনিটে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলীগণ দরপত্র আহ্বান করবেন।

৬. ঠিকাদারদের বিল পরামর্শকের সুপারিশক্রমে প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে সরাসরি ঠিকাদারগণের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হবে।

৭. স্থানীয় কোন সমস্যা দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা প্রকৌশলীর সহায়তা গ্রহণ করা হবে।

মহানগর পর্যায়ের মন্দিরসমূহ

ক্রমিকজেলা/মহানগরউপজেলা/পৌরসভাস্কিমের নামইউনিয়ন/ ওয়ার্ড নং
ঢাকামহানগর উত্তরবিটিসিএল সার্বজনীন পূজা মন্দিরকড়াইল, বনানী
ঢাকামহানগর উত্তরশ্রীশ্রী মহাপ্রভুর আখড়া মন্দিরশেরেবাংলা রোড, রায়ের বাজার,মোহাম্মদপুর
ঢাকামহানগর উত্তরশ্রীশ্রী কালী মন্দিররড় বেরাইদ, হাউজাল খুষিপাড়া,বেরাইদ, বাড্ডা
ঢাকামহানগর উত্তরশ্রীশ্রী রক্ষাকালী মন্দিরমাওসাইদ, উজামপুর, উত্তরখান
ঢাকামহানগর উত্তরমিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরসেকশন-২, ওয়ার্ড-৭, মিরপুর
ঢাকামহানগর উত্তরআগারগীও তালতলা সার্বজনীন পূজা মন্দিরতালতলা সরকারী কলোনী
ঢাকামহানগর উত্তরশ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ মন্দিরমিরপুর ডিওএইচএস
ঢাকামহানগর দক্ষিনশ্রীশ্রী লক্ষ্মীনারাণ জিউর মন্দিরশেখসাহেব বাজার, লালবাগ
ঢাকামহানগর দক্ষিনপোস্তগলা জাতীয় মহাশ্মশানশ্যামপুর থানা
১০ঢাকামহানগর দক্ষিনশ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ মিশনআর কে মিশন রোড
১১ঢাকামহানগর দক্ষিনবাংলাদেশ রেলওয়ে সার্বজনীন পূজা মন্দিরশাহজাহানপুর
১২ঢাকামহানগর দক্ষিনজগন্নাথ হল উপাসনালয়ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৩ঢাকামহানগর দক্ষিনজয়কালী মন্দিরটিকাটুলী
১৪ঢাকামহানগর দক্ষিনগৌড়ীয় মঠনারিন্দা
১৫ঢাকামহানগর দক্ষিনশ্রীশ্রী দুর্গা মন্দিরগণকটুলী সিটি কলোনি, হাজারীবাগ
১৬ঢাকামহানগর দক্ষিনশ্রীশ্রী যমুনা মাঈ আশ্রম৮৭ ডলক নগর লেন, গেন্ডারিয়া
১৭ঢাকামহানগর দক্ষিনশ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামী আখড়া মন্দির৫৬ পশ্চিম জুরাইন, আইভি গেইট,শ্যামপুর
১৮ঢাকামহানগর দক্ষিনঅরুণিমা দেবকল্যাণ দেবালয়এজিবি কলোনি, মতিঝিল
১৯ঢাকামহানগর দক্ষিনআনন্দময়ী সংঘ১৪ সিদ্ধেন্বরী লেন, ঢাকা -১২১৭
২০গাজীপুরমহানগরশ্রীশ্রী কৃপাময়ী কালী মন্দিরজয়দেবপুর বাজার
২১গাজীপুরমহানগরশ্রীশ্রী ইন্দ্রেশ্বর শিব মন্দির মহাম্মশানমহানগর এলাকা
২২গাজীপুরমহানগরমাধববাড়ি শ্রীশ্রী গৌরাঙ্গ মন্দিরমহানগর এলাকা
২৩নারায়ণগঞ্জমহানগরশ্রীশ্রী গোপাল জিউড় আখড়া২২ জমিদারী কাচারী গলি, নিতাইগঞ্জ
২৪নারায়ণগঞ্জমহানগরশ্রীশ্রী রাজা লক্ষ্মী নারায়ণ জিউড় আখড়া৭৮ এলএনএ রোড, দেওভোগ
২৫নারায়ণগঞ্জমহানগররামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমনারায়ণগঞ্জ মহানগর
২৬ময়মনসিংহমহানগরশ্রীশ্রী শিববাড়ি মন্দিরগাঙ্গিনার পাড়
২৭ময়মনসিংহমহানগরশ্রীশ্রী দুর্গাবাড়ি মন্দিরদুর্গাবাড়ি রোড
২৮ময়মনসিংহমহানগরশ্রীশ্রী লোকনাথ বাবার মন্দিরবড় কালীবাড়ি রোড ১৯২
২৯ময়মনসিংহমহানগররাজা বিজয়সিংহ দুরধরিয়া শিব মন্দিরকালীবাড়ি রোড
৩০ময়মনসিংহমহানগররামকৃষ্ণ আশ্রমময়মনসিংহ
৩১ময়মনসিংহমহানগরআমলাপাড়া সার্বজনীন পুজা মন্দিরআমলাপাড়া
৩২ময়মনসিংহমহানগরশ্রীশ্রী সার্বজনীন দুর্গামাতা মন্দিরহরিজন পল্লী
৩৩ময়মনসিংহমহানগরসৎসঙ্গ আশ্রমদুর্গাবাড়ি রোড
৩৪বরিশালমহানগরঅমৃত অঙ্গননতুন বাজার
৩৫বরিশালমহানগরপাশানময়ী কালীমাতার মন্দিরকালীবাড়ি
৩৬বরিশালমহানগরসার্বজনীন শ্রীশ্রী দুর্গা মন্দিরটিয়াখালী , সাগরদি
৩৭বরিশালমহানগররাধাগোবিন্দ জিউর মন্দিরবাজার রোড, সদর
৩৮কুমিল্লামহানগরশ্রীশ্রী কাত্যায়নী কালীবাড়িকান্দিরপাড়, ১১ নং ওয়ার্ড
৩৯কুমিল্লামহানগরশ্রীশ্রী রাজ রাজেন্বী কালীবাড়িমনোহরপুর, ১০ নং ওয়ার্ড
৪০কুমিল্লামহানগরশ্রীশ্রী কালী মন্দিরঘোষপাড়া, ২২ নং ওয়ার্ড
৪১খুলনামহানগরছোট বয়রা কালীবাড়ি সার্বজনীন পূজা মন্দির(পুজাখোল)ছোট বয়রা, সোনাডাঙ্গা
৪২খুলনামহানগরগল্লামারি সার্বজনীন বিভাগীয় হরিমন্দিরগল্লামারি
৪৩খুলনামহানগরশ্রীশ্রী কালীবাড়ি কয়লাঘাট মন্দিরসাউথ সেন্ট্রাল রোড
৪৪খুলনামহানগরতালতলা আয মন্দিরতালতলা মসজিদ রোড
৪৫রাজশাহীমহানগররাজারহাটা কালী মন্দিররাজারহাটা, ১১ নং ওয়ার্ড
৪৬রাজশাহীমহানগরপীচু মন্ডল আখড়া মন্দিরষোড়াখারা
8৭রাজশাহীমহানগরপঞ্চবটি মহাম্মশান ও মন্দির কমপ্লেক্সরামচন্দ্রপুর
৪৮রাজশাহীমহানগররামকৃষ্ণ আশ্রমসুলতানাবাদ
৪৯সিলেটমহানগরশ্রীশ্রী গোবিন্দ জিউর আখড়াতালতলা
৫০সিলেটমহানগরবলরাম জিউর আখড়ামিরা বাজার
৫১সিলেটমহানগরশ্রীশ্রী তিনমন্দির শিববাড়িলামাবাজার
৫২সিলেটমহানগরশ্রীশ্রী শ্যাম সুন্দর জিউ দেবতার আখড়াবিলপার, লামাবাজার
৫৩সিলেটমহানগরসিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরসিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
৫৪রংপুরমহানগরআনন্দময়ী সেবাশ্রমকলেজ রোড, সদর
৫৫রংপুরমহানগরশ্রী বারোয়ারী কালী মন্দিরপশ্চিম জুম্মাপাড়া
৫৬রংপুরমহানগরবোতলাপাড়া হরি মন্দিররোতলা শালবন
৫৭রংপুরমহানগররামকৃষ্ণ মিশনমাহিগঞ্জ

সূত্র: বাংলাদেশ সরকার

তারিখ ৩১.০১.২০২২

সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হয় না

বাংলাদেশে যেকোনো সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও রাজনীতি হয়, কিন্তু বিচার হয় না৷ ফলে থামছে না নির্যাতনের ঘটনাও৷ অভিযোগ, নেপথ্যে ক্ষমতাসীনরা জড়িত থাকায় তাদেরকে আইনের আওতায় আনা যায় না৷ সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত পুলিশ হামলায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে৷ সবশেষ গ্রেপ্তার হয়েছেন ‘মূল আসামি’ শহীদুল ইসলাম স্বাধীন ওরফে স্বাধীন মেম্বার৷ স্থানীয় গণমাধ্যমে তাকে যুবলীগ সভাপতি বলা হলেও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, তিনি যুবলীগের কেউ নন৷
সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হয় না

বাংলাদেশে যেকোনো সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও রাজনীতি হয়, কিন্তু বিচার হয় না৷ ফলে থামছে না নির্যাতনের ঘটনাও৷ অভিযোগ, নেপথ্যে ক্ষমতাসীনরা জড়িত থাকায় তাদেরকে আইনের আওতায় আনা যায় না৷ সুনামগঞ্জে হিন্দু পল্লীতে হামলা হয় মাইকে ঘোষণা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে৷ সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত পুলিশ হামলায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে৷ সবশেষ গ্রেপ্তার হয়েছেন ‘মূল আসামি’ শহীদুল ইসলাম স্বাধীন ওরফে স্বাধীন মেম্বার৷

সুনামগঞ্জের শাল্লা

স্থানীয় গণমাধ্যমে শহীদুল ইসলাম স্বাধীনকে যুবলীগ সভাপতি বলা হলেও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, তিনি যুবলীগের কেউ নন৷

এদিকে হামলার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে এখন তৎপর হলেও ঘটনার ১২ ঘণ্টা আগে খবর পেয়েও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ৷ এই ঘটনার একদিন আগে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে ঝুমন দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ অন্যদিকে আটক স্বাধীন মেম্বার হামলার পর শাল্লা থানার ওসির সাথেই ছিলেন বলে গ্রেপ্তারের আগে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন৷

রামু, কক্সবাজার

২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে রামুতে বৌদ্ধ পল্লীতে হামলার ঘটনা ঘটে৷ প্রায় নয় বছর পার হলেও কোন বিচার এখনও হয়নি৷ এই ঘটনায় মোট ১৯টি মামলা হয়েছিল৷ একটি মামলার চার্জশিট হলেও বিচার শুরু হয়নি৷ যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো তারা সবাই জামিনে আছেন৷ আর যে উত্তম বড়ুয়ার নামে ফেসবুক পোস্টের অজুহাতে রামু, উখিয়া এবং টেকনাফে তাণ্ডব চালানো হয়েছিল তিনি জামিন পেলেও এখন নিখোঁজ রয়েছেন৷ যদিও তদন্তে তার ফেসবুক পোস্টের কোনো প্রমাণ মেলেনি৷

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর

২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু বসতিতে হামলার তদন্ত প্রায় পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি৷ ওই সময় যাদের আটক করা হয়েছিল তারাও জামিনে মুক্ত৷ অন্যদিকে লেখাপড়া না জানা যে রসরাজের ফেসবুক পোস্টের ধর্মীয় অবমাননার কথা তুলে হামলা হয়েছিল তাকেই উল্টো দীর্ঘদিন জেলে থাকতে হয়েছে৷ এখন জামিন পেলেও আতঙ্কে তার দিন কাটছে৷

এর শেষ কোথায়?

গত বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর এই সাত মাসে ৬০টি পরিবারকে গ্রামছাড়া করা হয়েছে৷ মন্দিরে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ২৩টি ঘটনা ঘটেছে৷ ওই সময়ে হত্যার শিকার হয়েছেন ১৭ জন সংখ্যালঘু৷ হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে ১১ জনকে৷ ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩০ জন৷ অপহরণের শিকার হয়েছেন ২৩ জন৷

২৭টি প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে৷ বসতভিটা, জমিজমা, শ্মশান থেকে উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে ২৬টি৷ সাতজনকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে, ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে চারজনকে৷ বসত-ভিটা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ৮৮টি৷ হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ২৪৭ জন৷

সংবাদ সূত্র: ডয়চে ভেলে

তারিখ 19.11.2021

সংখ্যালঘু নির্যাতন, গুম-ক্রসফায়ারে আর ভয়ের চাদরে ২০২১

বিদায়ী বছরটিতে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি কেমন ছিল? আগের বছরগুলোর তুলনায় পরিস্থিতির কী কোন উন্নতি হয়েছে? মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, পরিস্থিতির তো কোন উন্নতি হয়নি, বরং মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে সহ্যসীমা সেটা অতিক্রম করার পর্যায়ে রয়েছে।
সংখ্যালঘু নির্যাতন, গুম-ক্রসফায়ারে আর ভয়ের চাদরে ২০২১

ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার পরিস্থিতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত উদ্বেগজনক ছিল ২০২১ সাল। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমীর দিন (১৩ অক্টোবর) কুমিল্লার নানুয়ার দীঘি পূজামন্ডপে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ও তার পরপর চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিমা ভাঙচুর, বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, মারধরের ঘটনা ঘটে।

কেমন ছিল ২০২১

বিদায়ী বছরটিতে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি কেমন ছিল? আগের বছরগুলোর তুলনায় পরিস্থিতির কী কোন উন্নতি হয়েছে? মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, পরিস্থিতির তো কোন উন্নতি হয়নি, বরং মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে সহ্যসীমা সেটা অতিক্রম করার পর্যায়ে রয়েছে। সংখ্যালঘু নির্যাতন, গুম, ক্রসফায়ারে এখন ভয়ের চাদরে আবৃত হয়ে গেছে মানবাধিকার।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র রিপোর্ট

২০২১ সালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের পর্যবেক্ষন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাদের পর্যবেক্ষণ হলো, “বিচারহীনতা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, ধর্ষণসহ সমাজে এমন একটি অবস্থা তৈরি হয়েছে, যা ভীতিকর। সারাদেশ আজ ভয়ের চাদরে আবৃত। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ নানা কারণে বছরজুড়ে মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষক, নারী-অধিকারকর্মী, বিরোধী দল, সমালোচক ও আইনজীবীদের জন্য পরিস্থিতি প্রতিকূলে ছিল।” বিশেষ করে গুমের সংখ্যা কিছুটা কমলেও ক্রসফায়ার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ অনেক বেড়েছে। ক্রসফায়ারের সংখ্যা আগের বছরগুলোর তুলনায় কমেনি।

সুলতানা কামাল

মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, “মানবাধিকারের যে সূচকগুলো আছে সেগুলো যদি আমরা বিশ্লেষণ করি, তাহলে দেখবেন বাংলাদেশের কতজন মানুষ মনে করছেন তারা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেন? বা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন বা স্বাধীনভাবে প্রতিদিনকার জীবন নির্বাহ করতে পারেন? এটা একটা সূচক। আরেকটা সূচক হল, মানুষের যদি কোন অধিকার লঙ্ঘিত হয় তাহলে তারা কী ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন? কেউ কী মনে করেন, আমি এই সমাজের একজন নাগরিক আমার অধিকার লঙ্ঘিত হলে আমি ন্যায়বিচার পাব? এই প্রত্যাশা কতখানি বিরাজমান সমাজে?

তৃতীয় সূচকটা হল, তারা কতখানি নির্ভয়ে বসবাস করতে পারছে? আমি যে ধর্মের হই না কেন, পরিচয় যাই হোক না কেন এই দেশটা এমন একটা দেশ যেখানে আমি নির্ভয়ে বাস করতে পারি? সবকিছু বাদ দিয়ে যদি এই তিনটা সূচক নিয়েই যদি আমরা বিশ্লেষণ করি, তাহলে দেখব মানবাধিকার পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রশাসন বা সরকারের জবাবদিহির অভাব রয়েছে। যে কারণে সড়ক দুর্ঘটনা, লঞ্চডুবি বা নারী নির্যাতন হোক আর সংখ্যালঘু নির্যাতন হোক কোথাও কোন বিচার হচ্ছে না। পূজার সময় হিন্দুদের উপর যে নির্যাতনটা হয়ে গেল সেটার কোন বিচার হয় না। রাষ্ট্রের মানবাধিকার রক্ষা করার যে দায়িত্ব সেটা সুচারুভাবে পালিত হচ্ছে না। এটা প্রতিনিয়ত নিম্নমুখী। কোথাও এটার উন্নতির কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।”

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৮০ জন। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ বা গুলিবিনিময়ে নিহত হয়েছেন ৫১ জন। বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নিহত হয়েছেন ৮ জন। এর মধ্যে গ্রেফতারের পর শারীরিক নির্যাতনে ৬ জন, গ্রেফতারের আগে ১ জন ও হার্ট অ্যাটাকে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশের কারাগারগুলোতে এ বছর অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা গেছেন ৮১ জন। এর মধ্যে কয়েদী ২৯ জন এবং হাজতি ছিলেন ৫২ জন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটির মহাসচিব নূর খান লিটন ডয়চে ভেলেকে বলেন, “মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এটা বলার সুযোগ নেই। বরং মানুষের যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সহ্যক্ষমতা আছে, যে পর্যন্ত হয়ত মানুষ সহ্য করতে পারে সেই পর্যায় অতিক্রম করতে যাচ্ছে। শুধু সংখ্যা দেখে তো লাভ নেই। কিছু কিছু ঘটনা নীতি-নির্ধারকেরা এমনভাবে উপস্থাপন করতে চান যে, এই ধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি। বরং ঘটনার কথা যারা বলছে, তারা প্রকারন্তরে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন। এমন ধারণা যখন নীতি-নির্ধারকেরা সমাজে দিতে থাকেন তখন স্বাভাবিক কারণেই মানবাধিকার পরিস্থিতির শুভ কোন বার্তা আমরা দেখি না। পরিস্থিতির আরও অবনতি ও চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছেছে বলে আমরা মনে করি।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট

বিদায়ী বছরে মানবাধিকার নিয়ে সবচেয়ে বড় সংকটে পড়তে হয়েছে সরকারকে। বছরের শেষে মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের র‌্যাবের বর্তমান ও সাবেক প্রধানসহ সাত জন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যা নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে এলিট ফোর্স র‌্যাবকে। যদিও সরকারের একাধিক মন্ত্রী এই নিষেধাজ্ঞার তীব্র সমালোনা করেছেন। কিন্তু বছর শেষ হলেও সেই নিষেধাজ্ঞা এখনও প্রত্যাহার হয়নি।

অপহরণ, গুম ও নিখোঁজ

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম ও নিখোঁজের শিকার হন সাত জন। এর মধ্যে পরবর্তী সময়ে ছয় জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন একজন। নিখোঁজ ইমাম মাহাদী হাসান ডলারের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায়। তার স্ত্রী গণমাধ্যম ও আসককে জানিয়েছেন, গত ৬ নভেম্বর বিকেলে বাড়ি ফেরার সময় দুইটি মোটরসাইকেল ও সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে একদল লোক তাকে জোরপূর্বক তুলে নেয়।

ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়

সংগঠনটি বলছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার পরিস্থিতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত উদ্বেগজনক ছিল ২০২১ সাল। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমীর দিন (১৩ অক্টোবর) কুমিল্লার নানুয়ার দীঘি পূজামন্ডপে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ও তার পরপর চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিমা ভাঙচুর, বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, মারধরের ঘটনা ঘটে। বিদায়ী বছরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২০৪টি প্রতিমা, পূজামণ্ডপ, মন্দির ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৮৪টি বাড়িঘর ও ৫০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৩০০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

ভিন্নমত দমন করার লক্ষ্যে হয়রানিমূলক মামলা, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের ঘটনাও থেমে ছিল না বছরজুড়ে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ছিল কমপক্ষে এক হাজার ১৩৪টি। এর মধ্যে বিভিন্ন থানায় ৮৮৩টি এবং সরাসরি আদালতে ২৫১টি মামলা হয়েছে। করোনা মহামারির মধ্যে থেমে ছিল না ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, পারিবারিক নির্যাতন, সালিশ ও ফতোয়াসহ নারীর প্রতি বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঘটনা। ২০২১ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট এক হাজার ৩২১ জন নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৭ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন নয় জন। ২০২১ সালে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে ১৮ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

উপসংহার

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, “বিদায়ী বছরটিতে মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো ছিল এটা বলা যাবে না। এটা শুধু বাংলাদেশে না, সারা বিশ্বেই পরিস্থিতির খারাপ ছিল। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও। আমাদের সরকার যে চেষ্টা করছে না তা নয়। আসলে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কোন একটা সংস্থা নয়, সবগুলো সংস্থাকেই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সরকার নিশ্চয় সে চেষ্টা করবে।”

সংবাদ সূত্র: ডয়চে ভেলে

তারিখ 31.12.2021

১৮ বছরেও পরিবারের ১১ জনের হত্যার বিচার পাননি বিমল

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল বাবা-মাসহ পরিবারের ১১ জনকে৷ ১৮ বছরেও বিচার পাননি বিমল শীল৷ ২০০৩ সালে বাড়িতে আগুন দিয়ে ১১ জনকে পুড়িয়ে মারার মামলাটির এখনও নিষ্পত্তি হয়নি৷ সেই পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য বিমল শীল আদালত, আইনজীবীসহ প্রশাসনের কর্তব্যক্তিদের কাছে বিচারের আশায় ছুটছেন ১৮ বছর ধরে।
১৮ বছরেও পরিবারের ১১ জনের হত্যার বিচার পাননি বিমল

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল বাবা-মাসহ পরিবারের ১১ জনকে৷ ১৮ বছরেও বিচার পাননি বিমল শীল৷ ২০০৩ সালে বাড়িতে আগুন দিয়ে ১১ জনকে পুড়িয়ে মারার মামলাটির এখনও নিষ্পত্তি হয়নি৷ সেই পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য বিমল শীল আদালত, আইনজীবীসহ প্রশাসনের কর্তব্যক্তিদের কাছে বিচারের আশায় ছুটছেন ১৮ বছর ধরে।

২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর

২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর গ্রামের শীলপাড়ায় বাইরে থেকে ঘরে তালা লাগিয়ে গানপাউডার ছড়িয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাতে পুড়ে মারা যান তেজেন্দ্র লাল শীল (৭০), তার স্ত্রী বকুল শীল (৬০), ছেলে অনিল শীল (৪০), অনিলের স্ত্রী স্মৃতি শীল (৩২), অনিলের তিন সন্তান রুমি শীল (১২), সোনিয়া শীল (৭) ও চার দিন বয়সী কার্তিক শীল, তেজেন্দ্র শীলের ভাইয়ের মেয়ে বাবুটি শীল (২৫), প্রসাদি শীল (১৭), অ্যানি শীল (৭) এবং কক্সবাজার থেকে বেড়াতে আসা আত্মীয় দেবেন্দ্র শীল (৭২)। অল্পের জন্য বেঁচে যান তেজেন্দ্র শীলের ছেলে বিমল শীল৷ পরে তিনিই বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

উচ্চ আদালতের নির্দেশ

২০১৯ সালের ২৩ জুন এই মামলার বিচার ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দেয় উচ্চ আদালত। তারপরও পেরিয়েছে ২৮ মাস। কিন্তু বিচার শেষ হওয়া তো দূরের কথা, অর্ধশতের বেশি সাক্ষীর অর্ধেকের সাক্ষ্যও এখনও নেওয়া হয়নি।

বিমল জানান, ‘‘মামলা ঝিমিয়ে আছে। সাক্ষ্য গ্রহণ ঢিলেঢালা। চলতি বছর কোনো সাক্ষী (সাক্ষ্যগ্রহণ) হয়নি। ২২ জন সাক্ষী দিয়েছেন মোট। আশা করেছিলাম, আর কয়েকজন সাক্ষ্য দিলেই শেষ হবে।”

‘‘এখন যে অবস্থা এমনিতে সাক্ষী আসবে না। ওয়ারেন্ট করাতে হবে। কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সাক্ষী যেমন- সে সময়ের বাঁশখালী থানার ওসি, তদন্তকারী পুলিশের এএসপি তাদের সাক্ষ্যই হয়নি। সরকারি আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে এদের সাক্ষী করালেই বিচার এগিয়ে যায়।” এখন নিজের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত বিমল, ‘‘আওয়ামী লীগ নেতারা ওয়াদা করেছিল, তারা ক্ষমতায় গেলে বিচার হবে। গত এক যুগ ধরে আশায় বুক বেঁধে আছি। আশ্বাস দিয়েছিল- নিরাপত্তা দেবে, ঘর দেবে। হয়নি। বাড়িতে একটা পুলিশ ক্যাম্প ছিল, সেটাও তুলে নিয়ে গেছে কয়েক বছর আগে।”

মামলাটি ১৮ বছর ধরে যেভাবে চলছে

আলোচিত এই মামলা বর্তমানে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস ওয়াহিদের আদালতে বিচারাধীন৷ সাত তদন্ত কর্মকর্তার হাত ঘুরে অষ্টম তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার হ্লা চিং প্রু ২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

ওই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ডাকাতির উদ্দেশ্যে অগ্নিসংযোগ, খুন ও লুটতরাজের অভিযোগে ৩৮ আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ ২০১২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলাটিতে সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের নতুন অভিযোগ আনে। এরপর ওই বছরের ১৯ এপ্রিল নতুন করে ওই ধারায় ৩৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়।

২০১২ সালের ১২ মে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ওই বছরের ২ অক্টোবর মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় ২০১৩ সালের নভেম্বর আবার তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি ফেরত আসে।

রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পিপি লোকমান হোসেন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন রয়েছে।

দেরির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘গত বছর বেশ কয়েক মাস বিচারক শূন্য ছিল। পরে করোনার কারণে লকডাউন ও আদালতের কার্যক্রম বন্ধ ছিল।”

সাক্ষীদের পাওয়া নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘‘ইতিপূর্বে কয়েকজন সাক্ষীকে হাজির করতে ওয়ারেন্ট পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপর হয়ত লকডাউনের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। আবার নতুন করে সমন করাতে হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, মামলার ৩৮ জন আসামির মধ্যে দুজন মাত্র কারাগারে আছেন; জামিনে আছেন ১৭ জন। বাকি ১৯ আসামি পলাতক।

সংবাদ সূত্র: ডয়চে ভেলে

তারিখ 19.11.2021

সর্বোচ্চ আদালতে তৃতীয় নারী বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ

চার দশকের বিচারিক কর্মজীবন পার করে তিনি এখন আপিল বিভাগের বিচারপতি। স্বপ্নজয়ী এই ব্যক্তি হলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ।
সর্বোচ্চ আদালতে তৃতীয় নারী বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ

চার দশকের বিচারিক কর্মজীবন পার করে তিনি এখন আপিল বিভাগের বিচারপতি। স্বপ্নজয়ী এই ব্যক্তি হলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। বছরখানেক আইন পেশায় নিয়োজিত থাকার পর ১৯৮১ সালের ৮ ডিসেম্বর জুডিশিয়াল সার্ভিসে মুনসেফ (বর্তমান সহকারী জজ) হিসেবে নিয়োগ পান কৃষ্ণা দেবনাথ।

ছোটবেলা

১৯৬৪ সাল। ঢাকার সদরঘাটের ইস্টবেঙ্গল স্কুলে চর্তুথ শ্রেণিতে পড়ে একটি শিশু। তার বাবা দীনেশ চন্দ্র দেবনাথ তখন ঢাকার আদালতের পঞ্চম সাবজজ। প্রতিদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে মেয়েটি বাবার কাছে যেত। এজলাসের পাশে বসে দেখত বাবার বিচার কার্যক্রম। তখন থেকেই তার স্বপ্ন, বড় হয়ে বিচারক হবে। মাত্র ২৬ বছর বয়সে মুনসেফ (সহকারী জজ) হয়ে স্বপ্নের প্রথম ধাপটিতে পা রাখেন তিনি। চার দশকের বিচারিক কর্মজীবন পার করে তিনি এখন আপিল বিভাগের বিচারপতি। স্বপ্নজয়ী এই ব্যক্তি হলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। এই অবস্থানে আসতে তাঁকে পার হতে হয়েছে নানান প্রতিকূলতা ও বাধাবিপত্তি।

স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বাবা

পাকিস্তান আমলে ১৯৪৮ সালে সাব–অর্ডিনেট জুডিশিয়ারিতে (অধস্তন আদালত) যোগদান করেন দীনেশ চন্দ্র দেবনাথ। বিচার বিভাগে কর্মরত অবস্থায় তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নিগ্রহের শিকার হন তিনি। ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে বিচারক হিসেবে কর্মজীবন শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে শিক্ষকতায় যোগ দেন তিনি। বাবাকে দেখেই বিচারক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন কৃষ্ণা দেবনাথ। আর এই স্বপ্ন পূরণে সব সময় তাঁর পাশে ছিলেন মা বেনু দেবনাথ।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পুড্ডায় দীনেশ চন্দ্র দেবনাথের গ্রামের বাড়ি। তবে বাবার কর্মস্থল রাজবাড়ী মুনসেফ কোয়ার্টারে ১৯৫৫ সালের ১০ অক্টোবর জন্ম নেন কৃষ্ণা দেবনাথ। তাঁরা দুই ভাই ও তিন বোন। রাজবাড়ীতে ভাইবোনের সঙ্গে কাটে শৈশব। বাবার বদলির চাকরি হওয়ায় যেতে হয়েছে বিভিন্ন জেলায়। ১৯৭০ সালে সিলেট গার্লস স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন (মাধ্যমিক) পাস করেন তিনি। লক্ষ্য যেহেতু বিচারক হওয়া, তাই উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন। রংপুর বেগম রোকেয়া কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি জুর (আইনে স্নাতক) ও এম জুর (আইনে স্নাতকোত্তর) পাস করেন। পরে রাজশাহী জেলা আইন সমিতিতে আইন পেশা শুরু করেন।

২৬ বছর বয়সেই বিচারক

বছরখানেক আইন পেশায় নিয়োজিত থাকার পর ১৯৮১ সালের ৮ ডিসেম্বর জুডিশিয়াল সার্ভিসে মুনসেফ (বর্তমান সহকারী জজ) হিসেবে নিয়োগ পান কৃষ্ণা দেবনাথ। ১৯৯২ সালে তৎকালীন সরকারের আমলে সাবজজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে তাঁর পদোন্নতি আটকে দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের ফুল কোর্ট সভায় পরপর তিনবার তাঁকে পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। পদোন্নতির তালিকার শীর্ষে ছিল তাঁর নাম। তারপরও পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। এ সময় এগিয়ে আসেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, ড. কামাল হোসেন ও আইনজীবী এম আমীর–উল ইসলাম। আর পাশে থেকে সাহস জোগান তখনকার অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুল হক। তাঁদের পরামর্শে প্রায় প্রতিটি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা রিট করেন। এতে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে ‘পরামর্শ’ শব্দটি সরকারের জন্য মানা বাধ্যতামূলক—মর্মে নির্দেশনা চাওয়া হয়। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ১৯৯৪ সালে রুল দেন। রুল নিষ্পত্তির আগেই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের হস্তক্ষেপে ওই বছরই কৃষ্ণা দেবনাথকে অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ১৯৯৮ সালে জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।

ভবিষ্যৎ দেখতে পান মুনসেফ বাবা

১৯৯২ সালের দুর্বিষহ ওই ঘটনার সময় চাকরিই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন বিচারক কৃষ্ণা দেবনাথ, সত্যি বলতে, সঙ্গে পদত্যাগপত্র রাখতেন। এতে আপত্তি জানিয়ে বরাবরই সাহস জুগিয়ে আসছিলেন তাঁর বাবা, এমনটিই বললেন এই বিচারপতির এক স্বজন। তিনি জানান, তাঁর বাবা বলতেন, তিনি মেয়ের ভবিষ্যৎ দেখতে পান। তবে এই ভবিষ্যৎ যে এত দূর পর্যন্ত (আপিল বিভাগের বিচারপতি হওয়া) বিস্তৃত ছিল, তা কেউ কেউ হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি। দীনেশ চন্দ্র দেবনাথ (মৃত্যু ২০০০) মেয়ে কৃষ্ণা দেবনাথকে জেলা জজ হিসেবে এবং বেনু দেবনাথ (মৃত্যু ২০১৭) হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে দেখে গেছেন। বেঁচে থাকলে আজ সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন তাঁরা, জানান ওই স্বজন।

পাশে ছিল পরিবার

রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী স্বপন দত্তের সঙ্গে ১৯৮১ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কৃষ্ণা দেবনাথ। বিয়ের আগে মায়ের উৎসাহ ও প্রেরণা পেয়েছেন, বিয়ের পর সেই দলে যুক্ত হলেন স্বামী। স্ত্রীর বদলির চাকরি। এক বছর এই জেলায়, তো পরের বছর অন্য জেলায়। কিন্তু এতে বিরক্ত হননি, বরং স্ত্রীকে দায়িত্ব পালনে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন তিনি। একসময় এই দম্পতির ঘর আলো করে আসে দুই কন্যাসন্তান—আনন্দী কল্যাণ ও ইন্দিরা কল্যাণ। তাদের পড়াশোনা, দেখভাল—বেশির ভাগটাই সামাল দিয়েছেন কৃষ্ণা দেবনাথের স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা। মেয়েরাও একপর্যায়ে বুঝে গেছেন তাঁদের মায়ের কাজের ধরন। স্ত্রীর এই অর্জনে স্বভাবতই অনেক খুশি ও গর্বিত স্বপন দত্ত। দুই মেয়েই শিক্ষকতা করছেন। বড় মেয়ে ড. আনন্দী কল্যাণ ও ছোট মেয়ে ড. ইন্দিরা কল্যাণ এবং তাঁদের স্বামীরা আমেরিকার পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।

অধস্তন আদালত থেকে সর্বোচ্চ আদালতে

বিভিন্ন জেলায় জেলা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি ঢাকার জেলা জজ হিসেবে দায়িত্ব পান কৃষ্ণা দেবনাথ। তিনিই ঢাকা জেলার প্রথম নারী জেলা জজ। এই দায়িত্ব পালনকালে ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল তাঁর নিয়োগ স্থায়ী হয়। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন কৃষ্ণা দেবনাথ। আপিল বিভাগের তিনি তৃতীয় নারী বিচারপতি। তাঁর অবসরের বয়স চলতি বছরের ৯ অক্টোবর।

প্রথা অনুসারে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে নবনিযুক্ত বিচারপতিদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়ে থাকে। ৯ জানুয়ারি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছিলাম বলেই আজ এই আসনে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছি।’ শপথের পর বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ বলেন, ‘কাজের স্বীকৃতি পেয়েছি। এই নিয়োগ দেশে নারীর ক্ষমতায়নে অবদান রাখবে।’

অবসরে লিখবেন বই

বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ মানুষকে আপ্যায়ন করতে ভালোবাসেন এবং অবসরে গান শুনতে পছন্দ করেন, জানালেন তাঁর আরেক ঘনিষ্ঠজন। ২০০০ সালে তিনি কন্যা তোমার ঠিকানা কী? নামে প্রচারিত একটি নাটকের কাহিনি লেখেন। ঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তি আরও জানান বিচারপতির অবসরকালীন পরিকল্পনা। দীনেশ চন্দ্র দেবনাথ নিজের জীবন নিয়ে কত কথা কত স্মৃতি নামে বই লিখেছেন। অবসরে গিয়ে কত কথার পরের কথা নামে বই লিখবেন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। এ ছাড়া দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় আইন নিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য সাধারণ ভাষায় ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে তথ্যচিত্র দিয়ে গল্প বলবেন—এমন ইচ্ছাও আছে তাঁর।

ধৈর্য, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ

বদলির চাকরি নারীদের জন্য বেশি চ্যালেঞ্জিং। বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের ক্ষেত্রে পরিবার ও কর্মক্ষেত্র সমান গুরুত্ব পেয়েছে। যখন তিনি মেহেরপুরের জেলা জজ, তখন তাঁর ছোট মেয়েটি অনেক ছোট। ধৈর্য, সততা ও কাজের প্রতি নিষ্ঠা তাঁকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে—বলছিলেন বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ও আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব উম্মে কুলসুম (সিনিয়র জেলা জজ)। বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। উম্মে কুলসুম বলেন, জুনিয়র বিচারকদের জন্য তিনি সব সময় প্রেরণার উৎস। তিনি সব সময় বলতেন, ধৈর্য, সততা ও কাজের প্রতি নিষ্ঠা থাকলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

সংবাদ সূত্র: প্রথম আলো

বাংলাদেশে কেউ ‘সংখ্যালঘু নয়’, কোবিন্দকে জানালেন হাসিনা

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা সফররত কোবিন্দের সঙ্গে বুধবার বিকালে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনা। সেখানে তাদের আলোচনায় ওই প্রসঙ্গ আসে। পরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, “দুর্গাপুজার পর যে সমস্যা হয়ে ছিল, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, আমাদের দেশে সংখ্যালঘু হিসাবে কাউকে ট্রিট করা হয় না। সকলের সমান অধিকার দেওয়া হয়।”
বাংলাদেশে কেউ ‘সংখ্যালঘু নয়’, কোবিন্দকে জানালেন হাসিনা

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা সফররত কোবিন্দের সঙ্গে বুধবার বিকালে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনা। সেখানে তাদের আলোচনায় ওই প্রসঙ্গ আসে। পরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, “দুর্গাপুজার পর যে সমস্যা হয়ে ছিল, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, আমাদের দেশে সংখ্যালঘু হিসাবে কাউকে ট্রিট করা হয় না। সকলের সমান অধিকার দেওয়া হয়।”

কুমিল্লা শহরের মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর প্রসঙ্গ

দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির পাড়ে একটি পূজা মণ্ডপে ‘কোরআন অবমাননার’ কথিত অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।

এর জের ধরে চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপরে হামলা হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণহানিও ঘটে।

অন্যান্য প্রসঙ্গ

বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ এমন স্লোগানের প্রশংসা করেছেন ভারতীয় রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গী আসামের দুই সংসদ সদস্য।

“তারা বলেছেন, ভারতবর্ষের সবাই এক বাক্যে এটা বলে, সব লোক এটা পছন্দ করেছে।” কানেকটিভিটি ও রোহিঙ্গা সঙ্কটের মত বিষয়গুলোও আলোচনায় এসেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন ও সীমান্ত হত্যার মত অমীমাংসিত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না- সেই প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রীও তার বৈঠকে বলেছেন যে, আমরা অনেক সমস্যার সমাধান করেছি।

“বাকি যেগুলি আছে, মোটা দাগে সবগুলিকে এক জায়গায় নিয়ে এসে উনি বলেছেন, আমরা আলোচনার মধ্য দিয়ে এগুলি সমাধান করতে পারব।”

মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের আয়োজনে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে বুধবার সকালে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের রাষ্ট্রপতি।

বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সেখানে ভারতীয় রাষ্ট্রপতিকে গালগালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার বিজয় দিবসে বাংলাদেশের উদযাপনে সঙ্গী হবেন রাম নাথ কোবিন্দ। সফর শেষে শুক্রবার তার ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

সংবাদ সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর

তারিখ 15.12.2021

৩৩ থেকে ৮ শতাংশ, বাংলাদেশে ক্রমশ কমছে হিন্দুদের সংখ্যা

ব্রিটিশ আমলের পূর্ববঙ্গ, পাকিস্তান আমলের পূর্ব পাকিস্তান আর বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যার হিসাব পাওয়া যায় বিভিন্ন সময়ে হওয়া আদমশুমারিতে। এসব তথ্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরোতে রক্ষিত আছে। ১৯০১ সালে যা ছিল ৩৩ শতাংশ, বর্তমানে সেটা নেমে এসেছে ৮ শতাংশে!
৩৩ থেকে ৮ শতাংশ, বাংলাদেশে ক্রমশ কমছে হিন্দুদের সংখ্যা

ব্রিটিশ আমলের পূর্ববঙ্গ, পাকিস্তান আমলের পূর্ব পাকিস্তান আর বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যার হিসাব পাওয়া যায় বিভিন্ন সময়ে হওয়া আদমশুমারিতে। এসব তথ্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরোতে রক্ষিত আছে। ১৯০১ সালে যা ছিল ৩৩ শতাংশ, বর্তমানে সেটা নেমে এসেছে ৮ শতাংশে!

বাংলাদেশের সংবিধান ও হিন্দু

সেই তথ্য থেকে কী জানা যায়, তার আগে দেখে নেব বাংলাদেশে হিন্দুদের ইতিহাস ও সেই দেশের সরকার বা সংবিধান হিন্দুদের কীভাবে দেখে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে পৃথক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধানে বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু, ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ নিজেকে ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে।

বাংলাদেশে হিন্দুদের পরিসংখ্যান

২০১১ সালে বাংলাদেশে সর্বশেষ আদমশুমারি হয়। সেই পর্যন্ত তথ্য পাওয়া গিয়েছে।

সালমুসলিম জনসংখ্যা (%)হিন্দু জনসংখ্যা (%)
১৯০১৬৬.১৩৩
১৯১১৬৭.২৩১.৫
১৯২১৬৮.১৩০.৬
১৯৩১৬৯.৫২৯.৪
১৯৪১৭০.৩২৮
১৯৫১৭৬.৯২২
১৯৬১৮০.৪১৮.৫
১৯৭৪৮৫.৪১৩.৫
১৯৮১৮৬.৭১২.১
১৯৯১৮৮.৩১০.৫
২০০১৮৯.৬৯.৩
২০০১৮৯.৬০৯.৩
২০১১৯০.০৮.৫

উপরের পরিসংখ্যান থেকেই পরিষ্কার, সংযুক্ত ভারতের একটা অংশ অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ৩০ শতাংশেরও বেশি। কিন্তু, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ ও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর সেই দেশে হিন্দুদের সংখ্যা ক্রমশ কমেছে। তার কারণ দেশভাগের সময় তৎকালীন পাকিস্তান ছেড়ে বিপুল সংখ্যক হিন্দু চলে এসেছিলেন ভারতে। আবার বাংলাদেশ ভাগ হওয়ার সময় ও সেদেশ ছেড়ে বাধ্য হয়েছিলেন অনেক হিন্দু।

সংবাদ সূত্র: আজতক বাংলা

তারিখ ২০-১০-২০২১

কুমিল্লার দুর্গাপূজা এবং হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা পরিক্রমা

কুমিল্লায় শুরু - ১৩ অক্টোবর বুধবার দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন কুমিল্লার নানুয়া দীঘি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে চকবাজার এলাকায় (কাপুড়িয়াপট্টি) শত বছরের পুরনো চাঁন্দমনি রক্ষাকালী মন্দিরে সকাল ১১টায় প্রথম হামলা হয়৷ এর আগে সকালে পূজা মণ্ডপ থেকে পবিত্র কোরআন উদ্ধার করেন কোতোয়ালী থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম৷ কোরআন রাখার অভিযোগে ইকবাল হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে৷
কুমিল্লার দুর্গাপূজা এবং হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা পরিক্রমা

কুমিল্লায় শুরু - ১৩ অক্টোবর বুধবার দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন কুমিল্লার নানুয়া দীঘি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে চকবাজার এলাকায় (কাপুড়িয়াপট্টি) শত বছরের পুরনো চাঁন্দমনি রক্ষাকালী মন্দিরে সকাল ১১টায় প্রথম হামলা হয়৷ এর আগে সকালে পূজা মণ্ডপ থেকে পবিত্র কোরআন উদ্ধার করেন কোতোয়ালী থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম৷ এরপর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা।

অন্যান্য জেলায় হামলা

কুমিল্লা ছাড়াও একইদিন চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, গাজীপুর, কুড়িগ্রাম, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, ভোলা, চট্টগ্রাম, ও কক্সবাজারে হামলা হয়েছে বলে ১৬ অক্টোবর জানায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ৷ এছাড়া ১৪ অক্টোবর বান্দরবান ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হামলার ঘটনা ঘটে৷ আর ১৫ অক্টোবর নোয়াখালীর চৌমুহনী ও চট্টগ্রামে হামলা হয়েছে৷

তিন দিনে ৭০ মণ্ডপে হামলা

১৬ অক্টোবর শনিবার হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জানায়, দুর্গাপূজায় দেশের বিভিন্ন স্থানে তিন দিনে ৭০টি পূজা মণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে৷ এসবের বাইরে ৩০টি বাড়ি এবং ৫০টি দোকানেও ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে৷

ফেনীতে হামলা

মন্দিরে মণ্ডপে হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বানে সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছিল৷ ফেনীতে সেই কর্মসূচির প্রস্তুতি চলার সময় হামলা হয়৷ এরপর শহরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়৷ কয়েকটি মন্দির ও হিন্দুদের মালিকানাধীন বেশ কিছু দোকানপাটে ভাঙচুর, যানবাহনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া যায়৷ বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ফেনীতে থেমে থেমে সংঘর্ষ হয়েছে৷

রংপুরের পীরগঞ্জে হামলা

১৭ অক্টোবর রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জের এক হিন্দু তরুণের ফেসবুকে ইসলাম অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে রামনাথপুর ইউনিয়নে জেলেপল্লির হিন্দু পরিবারের উপর হামলা হয়৷ হামলাকারীরা ঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি লুটপাটও করে৷

জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ

কুমিল্লায় কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে ১৫ অক্টোবর শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘মালিবাগ মুসলিম সমাজ’ এর ব্যানারে ঢাকার বায়তুল মোকাররম থেকে মিছিল বের করেন কয়েকশ মানুষ৷ কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড়ের কাছে পুলিশ বাধা দিলে মিছিলকারীরা দুই ভাগ হয়ে যান৷ তাদের একটি অংশ বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে শুরু করে৷ পুলিশ তখন বিভিন্ন গলির মুখে অবস্থান নেয় এবং টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছোঁড়ে৷

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিক্ষোভ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ব্যানারে প্রায় দশ হাজার মুসলিম ১৬ অক্টোবর শনিবার বায়তুল মোকাররমের সামনে বিক্ষোভ করেন৷ ইসলাম অবমাননার অভিযোগে তারা এই বিক্ষোভ করেন৷

মাশরাফির প্রতিক্রিয়া

সোমবার ফেসবুকে পীরগঞ্জে হামলার ছবি শেয়ার করে মাশরাফি লেখেন, এই ঘটনা তার হৃদয় ভেঙে চুরমার করেছে৷ ‘‘এ লাল সবুজতো আমরা চাইনি৷ কতো কতো স্বপ্ন, কতো কষ্টার্জিত জীবন যুদ্ধ এক নিমিষেই শেষ৷ আল্লাহ আপনি আমাদের হেদায়েত দিন৷’’

১০২ মামলা, গ্রেপ্তার ৫৮৩

হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপ, প্রতিমা ও বাড়িঘরে সাম্প্রদায়িক হামলায় শুক্রবার পর্যন্ত ১০২টি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস৷ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫৮৩ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্যও দিয়েছে তারা৷

নয় বছরে ৩,৬৭৯ হামলা

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব বলছে, ২০১৩ সাল থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর তিন হাজার ৬৭৯টি হামলা হয়েছে৷ এর মধ্যে এক হাজার ৫৫৯টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা৷ ৪৪২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা৷ আর প্রতিমা, পূজামণ্ডপ, মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ৬৭৮টি৷ এসব হামলায় আহত হয়েছেন ৮৬২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী৷ নিহত হয়েছেন ১১ জন৷

প্রতিবাদ

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ১৮ অক্টোবর সোমবার হিন্দুদের প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছে৷ শাহবাগের আন্দোলনকারীরা তিন দফা দাবি পূরণ করতে সরকারকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন৷ দাবিগুলো হলো, দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে দোষীদের বিচার; ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির, বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংস্কারে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং আহত ও নিহতদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন৷

সংবাদ সূত্র: ডয়চে ভেলে

তারিখ ২২.১০.২০২১

বাংলাদেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যম মতাদর্শিকভাবে সাম্প্রদায়িক?

১৩ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ৬দিনে মন্দির ও পূজামণ্ডপসহ ১০১টি ধর্মীয় স্থাপনা, এবং ১৮১টি বাড়ি ও দোকানপাটে হামলা হয়েছে৷ কিন্তু এবারই প্রথম একটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে, সেটি হলো- কুমিল্লার ঘটনার পর আমাদের টিভি চ্যানেলসহ বেশিরভাগ গণমাধ্যম পুরোপুরি নিশ্চুপ ছিল৷ যেখানে তেলাপিয়া মাছের প্রজনন ক্ষমতার গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া আমাদের টিভি চ্যানেলগুলো একটি ফিতা কাটার খবর সরাসরি সম্প্রচার করতে পিছপা হয় না সেখানে তারা এত বড় একটি ঘটনাকে ব্ল্যাক আউট করেছিল৷ এ নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যেও প্রশ্ন দেখা দেয়৷
বাংলাদেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যম মতাদর্শিকভাবে সাম্প্রদায়িক?

১৩ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ৬দিনে মন্দির ও পূজামণ্ডপসহ ১০১টি ধর্মীয় স্থাপনা, এবং ১৮১টি বাড়ি ও দোকানপাটে হামলা হয়েছে৷ কিন্তু এবারই প্রথম একটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে, সেটি হলো- কুমিল্লার ঘটনার পর আমাদের টিভি চ্যানেলসহ বেশিরভাগ গণমাধ্যম পুরোপুরি নিশ্চুপ ছিল৷ যেখানে তেলাপিয়া মাছের প্রজনন ক্ষমতার গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া আমাদের টিভি চ্যানেলগুলো একটি ফিতা কাটার খবর সরাসরি সম্প্রচার করতে পিছপা হয় না সেখানে তারা এত বড় একটি ঘটনাকে ব্ল্যাক আউট করেছিল৷ এ নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যেও প্রশ্ন দেখা দেয়৷

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতন

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতন বাংলাদেশে নতুন কোনো ঘটনা নয়৷ ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুতে, ২০১৩ সালে পাবনার সাঁথিয়ায়, ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে, ২০১৭ সালে রংপুরের গঙ্গাচড়ায়, ২০১৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে, ২০১৯ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিনে, চলতি বছর সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দুপল্লিতে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে৷ বাংলাদেশে গত দুই দশকে যেসব নির্বাচন হয়েছে, সেগুলোতে যে দলই জিতুক না কেন প্রতিটি নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুরা ব্যাপক হামলার শিকার হয়েছে৷

গণমাধ্যমগুলোতে উপস্থাপনা

প্রতিবারই আমাদের গণমাধ্যমগুলোতে দু ধরনের উপস্থাপনা দেখা গেছে, এক. লিবারেল মতাদর্শে বিশ্বাসী গণমাধ্যমগুলোতে ঘটনার সাদামাটা প্রকাশ; দুই. ইসলামী মতাদর্শে বিশ্বাসী গণমাধ্যমগুলোতে ঘটনাগুলোর একপেশে ও খণ্ডিত উপস্থাপনা ছিল৷ এবারই প্রথম দেখা গেলো, বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় নীরব থাকার উদাহরণ৷

২০০২ সালে গুজরাট (গোধরা) দাঙ্গার পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বা দাঙ্গার ঘটনা অনেকদিন ধরেই গণমাধ্যমে খবর হতো না৷ ব্যাপক সমালোচনার পর ২০১৭ সাল থেকে আবার তারা দাঙ্গার খবর পুরোদস্তুর প্রচার করতে শুরু করে৷ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বা সহিংসতার খবর প্রচার না করার পেছনে পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিকদের যুক্তিটি ছিল, এ ধরনের খবর প্রকাশ হলে সেগুলো অন্যান্য জায়গায় সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়াতে উস্কানি দেবে৷

বাংলাদেশেও কুমিল্লার পূজামণ্ডপে হামলার খবর ব্ল্যাকআউট করার পেছনে টকশোতে একটি টিভির কর্তাব্যক্তিকে একই যুক্তি দিতে শুনেছি৷ পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতবর্ষের সাংবাদিকরা তাদের আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন দুটি কারণে৷ প্রথমত: গণমাধ্যমের চিরায়ত যে দায়িত্ব সঠিক ও নির্ভুল তথ্য তুলে না ধরলে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের প্রতিকার পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়৷ নির্যাতিতরা এমনিতেই প্রান্তিক অবস্থানে থাকেন৷ ফলে গণমাধ্যম যদি তার প্রহরীর ভূমিকা থেকে সরে যায় তাহলে তারা আরও প্রান্তিক অবস্থানে চলে যান৷ শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতীয় উপমহাদেশের প্রত্যেকটি দেশে চিরায়তরূপে সাম্প্রদায়িকতা জনজীবনের একটি নিয়মিত অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং সাম্প্রদায়িক সংঘাত হলো এর কুৎসিত অভিব্যক্তি৷ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত বা হামলায় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে কোন গবেষণা না হলেও ভারতে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে৷

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার খবর ব্ল্যাক আউট

২০০২ সালে গুজরাটের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও দাঙ্গায় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, স্থানীয় টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রগুলো যখন সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক খবর এবং মতামত প্রকাশ করেছিল তখন জাতীয় ইংরেজি দৈনিকগুলো প্রকৃত খবর প্রকাশ করেছিল, যার কারণে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নির্যাতন বন্ধে তড়িৎ পদক্ষেপ নেয়া হয়৷

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার খবর ব্ল্যাক আউটের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দ্বিতীয় কারণটি হলো সামাজিক গণমাধ্যমের প্রভাব ও ভুয়া খবরের আধিক্য৷ এখন সামাজিক মাধ্যম এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, অনেক সময়ে বিকৃত করে এমন কিছু তথ্য ছড়ানো হয় যাতে দাঙ্গা, সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়ে৷ সামাজিক মাধ্যমের এই চাপ আটকাতে গেলে সত্যিটা জানাতে হবে, বাস্তবে কী হচ্ছে, সেটা দেখাতে হবে৷

সামাজিক মাধ্যমের গুজবের সমান্তরালে বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যমগুলোর দায়িত্বশীলভাবে সংবাদ পরিবেশন এখন সময়ের দাবি৷ ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গায় ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা ছিল সবচেয়ে লজ্জাজনক৷ সরকারি চাপে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো প্রথমে কিছুই ঘটেনি এমন ভাব নিয়েছিল৷ পরে নির্যাতিত শিখদের বিরুদ্ধে একপেশে সংবাদ পরিবেশন করেছিল৷ ফলশ্রুতিতে শিখরা একেধারে স্থানীয় ও জাতীয় উভয় পর্যায়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছিল৷ ভারতীয় গণমাধ্যম গবেষকরা মনে করেন, ১৯৮৪ ও ২০০২ সালের দুটো ঘটনায় গণমাধ্যম তার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করতে পারলে অর্থাৎ যা ঘটেছে তা ঠিক এবং যথাযথভাবে তুলে ধরলে হতাহতের ঘটনা অনেক কম হত৷

গণমাধ্যমের দায়িত্ব

প্রতিবারই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনার পর এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আমরা গণমাধ্যমে দেখি৷ দেখি কিছু সাদামাটা রিপোর্ট৷ কিন্তু সব সরকারের আমলেই সংখ্যালঘু নির্যাতন ও তাদের সম্পত্তি দখলের পেছনে রাজনৈতিক দলগুলোর যে প্রভাব তা নিয়ে গণমাধ্যমে কোন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেখা যায় না৷ প্রতিবার নির্বাচনের পর ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনাগুলো নিয়ে কি আমাদের কোন গণমাধ্যম আজ পর্যন্ত কোন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছে? ২০০১ সালের নির্বাচনের পর দেশব্যাপী হামলার পর তদন্ত কমিটির যে সুপারিশ করেছিল সেগুলো কেন বাস্তবায়িত হয়নি সে প্রশ্ন কি কখনও বাংলাদেশের গণমাধ্যম করেছে? কেন একটি হামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার আজও হয়নি সে কারণ অনুসন্ধান করেছে? সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করা, অপরাধীদের শাস্তির বিধান করা, নির্যাতনের কারণগুলো চিহ্নিত করে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিকারের ব্যবস্থা করা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা—এসব কিছুই বাংলাদেশে হয়নি৷ এতগুলো অনিবার্য প্রয়োজন কেন সম্পাদন হলো না সে প্রশ্ন রাখার কথা ছিল বাংলাদেশের মূলধারা গণমাধ্যমগুলোর, কিন্তু তারা রাষ্ট্রের মতই তারা জনগণের একটি অংশকে কার্যত অবহেলা করে গেছে৷ বাংলাদেশে যে ধরনের হাইব্রিড শাসন ব্যবস্থা (গণতন্ত্রও নয়, একনায়কতন্ত্র নয়) তাতে গণমাধ্যমের এ দায়িত্ব পালন করা সবচেয়ে জরুরি।

রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীদের প্রভাব বলয়ে বাংলাদেশের মিডিয়া

বসুন্ধরা গ্রুপ

বসুন্ধরার ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের তিনটি সংবাদপত্র কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং ডেইলি সান৷ আছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম এবং টিভি চ্যানেল নিউজ ২৪৷ এছাড়া এফএম রেডিও স্টেশন রেডিও ক্যাপিটালও তাদের৷ এই মিডিয়া কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর৷

বেক্সিমকো গ্রুপ

এই গ্রুপের টেলিভিশন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি৷ মালিক বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান৷

স্কয়ার গ্রুপ

এই গ্রুপের টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টেলিভিশন৷ এর কর্ণধার স্কয়ার গ্রুপের অধীনে থাকা স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী৷

ইমপ্রেস গ্রুপ

টেলিভিশন চ্যানেল, চ্যানেল-আই এর মালিকানা ইমপ্রেস গ্রুপের৷ এর কর্ণধার ফরিদুর রেজা সাগর৷

মাল্টিমিডিয়া প্রোডাকশান কোম্পানি

টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলা এবং এটিএন নিউজ এই কোম্পানির৷ এর কর্ণধার মাহফুজুর রহমান৷

ইত্তেফাক গ্রুপ অফ পাবলিকেশনস লিমিটেড

সুপরিচিত পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাক এই কোম্পানির৷ এর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী৷ বর্তমানে ইত্তেফাকের সম্পাদক জাতীয় পার্টি নেতা, সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর স্ত্রী তাসমিমা হোসেন এবং প্রকাশক মঞ্জু-তাসমিমা দম্পতির কন্যা তারিন হোসেন৷

এইচআরসি গ্রুপ

বাংলা পত্রিকা যায় যায় দিন এবং ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউএজ এই গ্রুপের৷ এর মালিক আওয়ামী লীগ নেতা সাবের হোসেন চৌধুরীর ভাই সাঈদ হোসেন চৌধুরী৷ সাবের হোসেন চৌধুরী কর্ণফুলি গ্রুপের মালিক৷ সেই সুবাদে দেশ টিভির কর্ণধার তিনি৷

সিটি পাবলিশিং হাউজ লিমিটেড

এই কোম্পানির পত্রিকা দৈনিক দিনকাল৷ এর মালিক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷

হামিম গ্রুপ

চ্যানেল-২৪ টেলিভিশন এবং সমকাল পত্রিকার মালিক৷ এর কর্ণধার আওয়ামী লীগ নেতা একে আজাদ৷

ট্রান্সকম গ্রুপ

বাংলাদেশের জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক প্রথম আলো এবং ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের মালিক এই গ্রুপ৷ প্রয়াত শিল্পপতি লতিফুর রহমান এই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা৷ প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের অনলাইন সংস্করণও রয়েছে৷

বেঙ্গল গ্রুপ

টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির মালিক বেঙ্গল গ্রুপ৷ এর কর্ণধার মোর্শেদ আলম এমপি৷

এনটিভি

বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য মোসাদ্দেক আলী ফালু এর মালিক৷ তিনি একজন ব্যবসায়ী৷

গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবার

জনকণ্ঠ পত্রিকার মালিক এই শিল্প পরিবার৷

রূপায়ন গ্রুপ

দৈনিক পত্রিকা দেশ রূপান্তর এই গ্রুপের৷ রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল৷

সিটি গ্রুপ

সময় টেলিভিশনের মালিক এই গ্রুপ৷ সবেক আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ভাই এর কর্ণধার৷

মেঘনা গ্রুপ

একাত্তর টেলিভিশন এই গ্রুপের৷ মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান মোস্তাফা কামাল এই গ্রুপের কর্ণধার৷ তবে সাংবাদিক মোজাম্মেল হক বাবু’র শেয়ার রয়েছে এতে৷

শ্যামল বাংলা মিডিয়া

টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশন এই মিডিয়া কোম্পানির৷ এর কর্ণধার আবদুল হক৷ তবে নেপথ্যে মালিকানায় বিএনপির প্রয়াত সাংসদ সাদেক হোসেন খোকার নাম শোনা গেলেও নথিপত্রে তার নাম নেই বলে প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে৷

যমুনা গ্রুপ

দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা এবং যমুনা টেলিভিশন এই গ্রুপের৷ প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুলের মৃত্যুর পর থেকে তার স্ত্রী সালমা ইসলাম এই গ্রুপের চেয়ারম্যান৷ সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য তিনি৷

(‘হু ওনস দ্য মিডিয়া ইন বাংলাদেশ’ গবেষণা প্রতিবেদনটির লেখক যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ এবং গবেষক মো. সাজ্জাদুর রহমান৷ প্রকাশক সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ,ঢাকা)

সংবাদ সূত্র: ডয়চে ভেলে

তারিখ ২২.১০.২০২১

৯ বছরে হিন্দুদের উপর ‘৩৬৭৯ হামলা’

কুমিল্লাসহ কয়েকটি জেলায় পূজামণ্ডপে হামলা ভাংচুরের মধ্যে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, গত নয় বছরে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ৩ হাজার ৬৭৯টি হামলা হয়েছে। বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থাটি প্রতিবছরই মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি প্রতিবেদন দেয়। ২০১৩ সাল থেকে হিন্দুসহ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর হামলার ঘটনাগুলোও তারা প্রতিবেদনে আলাদাভাবে দিয়ে আসছে।
৯ বছরে হিন্দুদের উপর ‘৩৬৭৯ হামলা’

কুমিল্লাসহ কয়েকটি জেলায় পূজামণ্ডপে হামলা ভাংচুরের মধ্যে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, গত নয় বছরে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ৩ হাজার ৬৭৯টি হামলা হয়েছে। বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থাটি প্রতিবছরই মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি প্রতিবেদন দেয়। ২০১৩ সাল থেকে হিন্দুসহ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর হামলার ঘটনাগুলোও তারা প্রতিবেদনে আলাদাভাবে দিয়ে আসছে।

আসকের প্রতিবেদন

আসকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আট বছর নয় মাসে হিন্দুদের উপর ৩ হাজার ৬৭৯টি হামলা হয়েছে।

এর মধ্যে ১ হাজার ৫৫৯টি বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। এই সময়ে হিন্দুদের ৪৪২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে।

প্রতিমা, পূজামণ্ডপ, মন্দিরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৬৭৮টি।

এসব হামলায় আহত হয়েছে ৮৬২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। নিহত হয়েছে ১১ জন।

এর বাইরেও ২০১৪ সালে দুজন হিন্দু নারী ধর্ষণের শিকার হন। শ্লীলতাহানি করা হয় আরও চারজনের।

এছাড়া ২০১৬, ২০১৭ ও ২০২০ সালে ১০টি হিন্দু পরিবারকে জমি ও বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দখলের অভিযোগ ওঠে।

আসকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত নয় বছরে হিন্দুদের উপর সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে ২০১৪ সালে।

ওই বছরের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল। এর পরবর্তী সহিংসতার শিকার হন হিন্দুরা। ৭৬১টি হিন্দু বাড়ি-ঘর, ১৯৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ২৪৭টি মন্দির-মণ্ডপে হামলা হয় ওই বছর। তখন নিহত হন একজন।

সবচেয়ে কম হামলা হয়েছে ২০২০ সালে। মহামারীর মধ্যে গত বছর ১১টি বাড়ি ও ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার তথ্য রয়েছে আসকের প্রতিবেদনে। তবে মন্দিরে হামলা হয়েছে ৬৭টি।

তথ্য ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিন্দু খুন হয়েছে ২০১৬ সালে, মোট সাতজন। এসব হত্যাকাণ্ডের অনেকগুলো ‘জঙ্গি হামলা’ বলে পরে জানিয়েছে পুলিশ।

রাজনৈতিক দোষারোপ

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনায় বরাবরই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ চলে।

এবারও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি এবং তাদের জোটসঙ্গী দলগুলোকে দায়ী করেছে হিন্দুদের উপর হামলার জন্য। আবার বিএনপি নেতারা দাবি করছেন, ক্ষমতাসীনরাই এসব ঘটিয়েছে।

মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হিন্দুদের উপর বারবার হামলা চলছে। একটা জিনিস স্পষ্ট, এটার নেপথ্যে রাজনীতি রয়েছে।

“যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তাদের কিছু লোকজন এসবে যুক্ত থাকেন। সরকারদলীয় মাঝারি গোছের নেতাদের সংশ্লিষ্টতা রামুতে দেখেছি, লামায় দেখেছি। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীনরা নিজেরা লাভবান হওয়ার একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।”

পাল্টাপাল্টি রাজনৈতিক দোষারোপ চললেও মূল অপরাধটি আড়াল হয়ে যায় বলে সঙ্কটের সমাধানও আসছে না বলে মনে করেন নূর খান।

“যখন যারা ক্ষমতায় থাকে, তখনই তারা বিরোধী দলের দিকে আঙুল তোলেন। যার ফলাফল এসবের কোনো বিচার হয় না। গত ১০/১৫ বছরের ঘটনা দেখলে দেখা যাবে, কোনোটারই বিচার হয়নি। এমন কোনো দৃষ্টান্ত তৈরি হয়নি, যাতে অপরাধীরা ভাবতে পারে যে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে পার পাওয়া যাবে না। যার ফলে ঘটনা ঘটেই চলেছে, মাত্রাও বাড়ছে।”

সংবাদ সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর

তারিখ ১৮-১০-২০২১